গত ১১ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে রাজধানীর মিরপুরের ভাষানটেকে। এতে বিপুল ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয় স্থানীয় বাসিন্দারা।
প্রায় দশ থেকে বারোটি ফার্নিচারের দোকান, বেশ কয়েকটি টিনের বসতবাড়ি এবং জামিয়া মোহাম্মদীয়া মাদরাসার মূল শিক্ষালয় পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে ক্ষতিগ্রস্ত সবকটি ঘর-বাড়ির কিছুই অক্ষত নেই। বিশাল-বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে পড়ে আছে আগুনে পুড়ে যাওয়া ধ্বংসাবশেষ।
ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে জামিয়া মোহাম্মদীয়া মাদরাসার অফিস কক্ষসহ প্রায় সবকটি রুম। এতে মাদরাসার জরুরি কাগজ-পত্র, কিতাবাদি, ছাত্রদের পোশাক পরিচ্ছেদসহ সব আসবাবপত্রও পুড়ে যায়।
তাৎক্ষনিকভাবে আশপাশের কয়েকটি মাদরাসা থেকে কিছু কাপড় পাঠালে ছাত্ররা সেগুলো পরিধান করে এবং পাশের একটি মসজিদে আশ্রয় নেয়। এছাড়া সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও কিছু ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়।
ঘটনার দুদিন পর আজ (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ক্ষতিগ্রস্ত মাদরাসার পাশে দাঁড়িয়েছে কওমি তরুণদের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন টিম মালফুজাত। সংগঠনের পক্ষ থেকে নগদ অর্থ হস্তান্তর করা হয় মাদরাসা কর্তৃপক্ষের হাতে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্ট পরিষদের সদস্য মাওলানা তানবীর আহমদ, মাওলানা ইমরান রাইহান ও মাওলানা আনাস বিন ইউসুফ।
মাত্র কয়েক মাস আগে তরুণ সমাজের মাঝে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব স্থাপনের লক্ষ্যে কিছু উদ্যোমী তরুণদের নিয়ে গঠিত হয় টিম মালফুজাত। ইতিমধ্যেই সংগঠনের নেতৃত্বে দেশের বিভিন্ন জেলার একাধিক মাদরাসায় সফর করা হয়।
স্থানীয় লোকজনদের ধারণা, অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত বৈদ্যুতিক ত্রুটি থেকেই। গভীর রাতে আগুন ছড়িয়ে পড়লে লোকজন ছুটোছুটি করে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়।
পরে মিরপুর ফায়ার সার্ভিসের এগারোটা ইউনিটের প্রায় চার ঘন্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ততক্ষণে বহু স্বপ্ন অগ্নি-তাণ্ডবে নিঃশেষ হয়ে যায়।
মাওলানা ইমরান বলেন, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের ঈমানী দায়িত্ব। এখানে অনেক অসহায় মানুষও তাদের শেষ সম্বলটুকু হারিয়েছে। পাশাপাশি মোহাম্মদীয়া মাদরাসার পাশে দাঁড়ানো অধিক জরুরি।
দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাসস্থান মেরামত করতে না পারলে মাদরাসার শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যহত হবে। এতে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ মেয়াদী ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
-মুহাম্মদ আনাসের প্রকাশিত প্রতিবেদন