আজ থেকে প্রায় আট-নয় বছর পূর্বে আমাদের এলাকায় একটি পাঞ্জেগানা মসজিদ নির্মিত হয়। প্রাথমিক অবস্থায় এর জন্য কোনো স্থায়ী জায়গার ব্যবস্থা না হওয়ায় অস্থায়ীভাবে একটি ঘরে এক দুই মাস পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ার পর একটি স্থায়ী জায়গার ব্যবস্থা হয়। জায়গাটি এক বৃদ্ধা মহিলার ছিল। তিনি এখানে পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ার ও সাবাহী (প্রভাতী) মকতব পড়ানোর জন্য স্থায়ী অনুমতি দিয়ে দেন। ফলে এলাকাবাসী এই জায়গা ও দক্ষিণ পাশ থেকে (অন্য মালিকানাধীন) আরো কিছু জায়গা নিয়ে এখানে একটি ঘর করেন এবং নির্দিষ্ট একজন হুজুরের মাধ্যমে পাঁচ ওয়াক্ত নামায ও সাবাহী মকতব চলতে থাকে। কিছুদিন পর বৃদ্ধার জায়গাটিকে সাবাহী মকতবের নামে ওয়াকফ করে লিখিত আকারে দলীল করে দেন।
কিন্তু বর্তমানে জনসংখ্যা ও মুসল্লী বৃদ্ধির কারণে সামাজিকভাবে এখানে একটি জামে মসজিদ করা অতি প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আশপাশে কোথাও আলাদাভাবে জামে মসজিদ করার মতো উপযোগী জায়গা না থাকায় এলাকাবাসী পাঞ্জেগানা মসজিদ-মকতবের নামে ওয়াকফকৃত উক্ত জায়গা এবং দক্ষিণ পাশে আরো এই পরিমাণ জায়গা (এটির মালিক ঐ জায়গা মসজিদের নামে ওয়াকফ করতে প্রস্তুত) সহ এখানে একটি জামে মসজিদ করতে চাচ্ছে। তারা সাবাহী মকতবের জন্য মসজিদের বারান্দাকে নির্দিষ্ট করে দিবে।
জানার বিষয় হল, বৃদ্ধা মহিলা কর্তৃক লিখিত আকারে মকতবের নামে ওয়াকফকৃত উক্ত পাঞ্জেগানা মসজিদ ও মকতবের জায়গা মসজিদের সীমানায় নিয়ে এলাকাবাসীর প্রয়োজনে
প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী আপনারা যেভাবে উক্ত পাঞ্জেগানা মসজিদ ও সাবাহী মকতবের জায়গাসহ নতুন জায়গা মিলিয়ে জামে মসজিদ বানাতে চাচ্ছেন তা করতে পারবেন। এক্ষেত্রে মসজিদের বারান্দা সাবাহী মকতবের জন্য নির্দিষ্ট থাকবে। তা সর্বদা সাবাহী মকতবের জন্য সংরক্ষিত থাকবে এবং তা লিখিত আকারে রাখতে হবে। যেন পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে কোনো জটিলতা না হয়। অবশ্য মকতবের সময় ছাড়া অন্য সময় বারান্দাটি মসজিদের কাজে ব্যবহার করা যাবে।
উল্লেখ্য যে, দানকারিনী মহিলা যেহেতু লিখিতভাবে ওয়াকফ করার পূর্বেই জায়গাটি মসজিদ ও মকতবের জন্য যৌথভাবে দান করেছিলেন তাই পরবর্তীতে শুধু মকতবের নামে ওয়াকফ করলেও তা মসজিদ ও মকতব উভয়ের জন্য ওয়াকফ হিসেবে বিবেচিত হবে। এতে মকতবের একক মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হবে না।
আলবাহরুর রায়েক ৫/২৫৫; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৩৭৮-৩৭৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৯/১২৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৪৫৭; ফাতহুর কাদীর ৫/৪৪৫; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/২৯২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/৮৪১