তারপর তিনি খেজুরগুলো নিয়ে দুআ করে তা কাপড়ের উপর ছড়িয়ে দিলেন এবং তার কাছের
একজনকে বললেন, পরিখাওয়ালাদের মাঝে ঘোষণা করে দাও, তোমরা খেতে চলে এসো ৷
তখন পরিখাওয়ালারা সকলে এসে তার পাশে জড়ো হলেন ৷ এরপর একদিক থেকে তারা
খেতে লাগলেন এবং অন্য দিক থেকে তা’ বৃদ্ধি পেতে থাকল, এমনকি খাওয়া শেষে তারা
সকলে চলে গেলেন; অথচ তখনো কাপড়ের প্রান্ত থেকে সমানে খেজুর পড়ছিল ৷
হযরত জাৰিরের ঘটনা
বুখারী নবুওয়াতের প্রমাণাদির বিবরণে আবু নু আয়ম জাবির (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন
যে, ঋণগ্রস্ত অবস্থায় তার পিতা ইনতিকাল করেন ৷ জাবির বলেন, তখন আমি নবী করীম
(না)-এর কাছে এসে বললাম, আমার পিতা ঋণগ্রস্ত অবস্থার মারা গিয়েছেন ৷ তার রেখে
যাওয়া খেজুর গাছের ফল ছাড়া আমায়আয়েব্ল অন্য কোন উৎস নেই ৷ আর এই সকল খেজুর
গাছের কয়েক বছরের হলেও তার ঋণ পরািশাধেব জন্য যথেষ্ট নয় ৷ তখন তিনি আমার সাথে
চললেন যাতে আমার পিতার ঋণদাতাদের জন্য পীড়াদায়ক না হয়ে যায় ৷ আমাকে সাথে নিয়ে
তিনি একটি খেজুর শুকানোর খলার চারপাশে ইাটলেন এবং দুআ করলেন ৷ এরপর তিনি
আরেকটি খলায় গেলেন ৷ তারপর সেখানে বসলেন ৷ আর তিনি বললেন, তোমরা তা বের
কর ৷ তখন তিনি তাদের প্রাপ্য পাওন৷ পুরোপুরি শোধ করে দিলেন এবং তাদেরকে যে
পরিমাণ দিলেন যে পরিমাণ বাকি থাকল ৷ এভাবেই বুখারী এখানে তা সংক্ষেপে রিওয়ায়াত
করেছেন ৷ এছাড়া আমির ইবন শুরাবীল সুত্রে জাবির (রা) থেকে বর্ণিত একাধিক সনদ তিনি
উল্লেখ করেছেন ৷ আর এ হাদীসখানি জাবির থেকে একাধিক সুত্রে একাধিক পাঠে বর্ণিত
হয়েছে ৷ আর এ বর্ণনার মুলকথা হল, রাসুলুদৃল্লাহ্ (সা) এর বরকতে, তার জন্য তার দু আয
তার বাগানে হাটার এবং তার খেজুর স্ত পের পাশে বসার আল্লাহ তার পিতার ঋণ পরিশোধের
ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন তিনি উহুদ যুদ্ধে নিহত হয়েছিলেন ৷ জাবির (রা) এর এ আশা ছিল
না যে, তিনি সে বছর কিংবা তার পরবর্তী বছর তার পিতার ঋণ পরিপুর্ণভাবে পরিশোধ করতে
পারবেন ৷ অথচ (আল্লাহর নবীর দু আর বরকতে তা তো আদায় হলই ৷) উপরন্তু তার
প্রত্যশোর চেয়ে বেশি খেজুর অবশিষ্ট রইল ৷ সকল প্রশংসা ও অনুগ্রহ আল্লাহ্ৱই ৷
হযরত সাস্মানের ঘটনা
ইমাম আহমদ, ইয়া কুব সালমান (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন,
আমি যখন বললাম, ইয়া রাসুলাল্পাহ্! (স্বর্ণের এই) ছোট্ট টুকরাটি দিয়ে আমার বিরাট ঋণের
কতটুকুই বা পরিশোধ হবে ? তখন আল্লাহর রাসুল সেটি নিলেন ৷ তারপর সেটিকে তার
জিহ্বার উপর উল্টিয়ে আমাকে বললেন, এবার নাও তা থেকে তাদ্দের পাওনা ণ্শাধ করে দাও ৷
তখন আমি তা নিলাম এবং তা থেকে তাদের প্রাপ্য চল্লিশ উকিয়া স্বর্ণ সব পরিশোধ করে
দিলাম ৷
আবু হুরায়রার (রা) পাখেয় ণলে ও তার খেজুর
ইমাম আহমদ বর্ণনা করেন ইউনুস আবু হুরায়রা (রা) সুত্রে তিনি বলেন যে,
একদিন আমি রাসুলুল্পাহ্ (না)-এর কাছে কয়েকটি খেজুর নিয়ে আসলাম এবং তাকে বললাম,
এগুলোর মাঝে বরকতের জন্য দু’আ করুন ৷ রাবী বলেন, তখন তিনি তার সামনে সেগুলোকে
সারিবদ্ধ করলেন ৷ তারপর দুআ করে আমাকে বললেন, এগুলো একটি থলেতে ব্লেখে দাও ৷
তারপর তার তিঃরে তোমার হাত ঢুকিয়ে তা বের করতে থাকবে ৷ থলে থেকে ঢালবে না
আবু হুরায়রা (বা) বলেন, এরপর আমি তা থেকে এত এত পরিমাণ আল্লাহ্র পথে বিলিয়েছি,
এছাড়া আমরা নিজেরা খেয়েছি এবং অন্যদের খইিয়েছি, আর এই থলে কখনও আমার কােমর
ছাড়া হতো না ৷ পরবর্তীতে যখন হযরত উছমান (রা) নিহত হলেন তখন তা আমার কােমর
থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে গেল ৷ এছাড়া তিরমিযী হাদীসখানি রিওয়ায়াত করেছেন, ইমরান ইবন
মুসা আল কাঘৃযায রাফী ইবন আবুল আলিয়া সুত্রে ৷ তারপর তিরমিযী মন্তব্য করেন,
এই সুত্রে হড়াদীসটি হাসান গরীব ৷
তার থেকে অন্য একটি সুত্র
হাফিয আবু বকর বায়হাকী, আবুল ফাতহ হিলাল ইবন মুহাম্মদ ইবনজাৰ্টফর আবু
হুরায়রা সুত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, একবার রাসুলুল্লাহ্ (সা)ব্লযুদ্ধাতিযানে বের
হলেন ৷ তখন তাদের খাদ্যাভাব দেখা দিল ৷ এ সময় তিনি বললেন, হে আবু হুরায়রা ! তোমার
কাছে কি (খাওয়ার মত) কিছু আছে ? আবু হুরায়রা বলেন, আমি বললাম, আমার একটি
থলেতে সামান্য কয়েকটি খেজুর রয়েছে ৷ তিনি বললেন, তা’ নিয়ে এসো! তখন আমি থলেটি
নিয়ে আসলাম ৷ এরপর তিনি বললেন, এবার একটি চামড়ার দস্তরখান নিয়ে এসো ৷ তখন
আমি তা এনেবিছিয়ে দিলাম ৷ আর তিনি থলেতে হাত ঢুকিয়ে খেজুর হাতে নিতে লাগলেন ৷
এভাবে একুশটি খেজুর পাওয়া গেল ৷ এরপর তিনি প্রতিটি খেজুর আল্লাহর নাম নিয়ে চামড়ার
ওপর রাখতে লাগলেন এমনকি সবগুলো রাখা শেষ হল তখন তিনি এভাবে হাত দিয়ে
সেগুলোকে একত্র করে বললেন, অমুক ও তার সঙ্গীদের ডেকে নিয়ে এসো ৷ “তারা এসে পেট
ভরে খেল এবং চলে গেল ৷ অতঃপর বললেন, অমুক ও তার সঙ্গীদের ডেকে এলো ৷ তখন
তারাও এসে পেট ভয়ে খেল এবং চলে গেল ৷ এরপরও তা’ অবশিষ্ট রয়ে গেল ৷ তারপর তিনি
আমাকে বললেন, এবার তুমি বস ৷ তখন আমি বসলাম এরপর তিনি খেলেন এবং আমিও
খেলাম ৷ এরপর যে কয়েকটি খেজুর অবশিষ্ট রয়ে গেল ৷ আমি সেগুলোকে আমার থলেতে ভরে
নিলাম আর তিনি আমাকে বললেন, হে আকুহুরায়রা! যখন তোমার প্রয়োজন হবে তখনই
থলেতে হাত দিয়ে খেজুর বের করে নিও ৷ আর বন্ধ করো না তাহলে তোমার থেকেও বন্ধ করা
হবে ৷ তিনি বলেন, এরপর যখনই আমি খেজুর নিতে চাইতাম তখনই তাতে আমার হাত
প্রবেশ করাতাম ৷ এরপর আমি তা থেকে পঞ্চাশ ওয়াসাক্ পরিমাণ খেজুর আল্লাহর রাহে দান
করেছি ৷ আবু হুরায়রা বলেন, আমার হাওদার পিছনে তা’ সংযুক্ত ছিল ৷ এরপর হযরত উছমান
(রা)এর খিলাফতকালে তা’ পড়ে খেয়ো যায় ৷
এ প্রসঙ্গে হযরত আবু হুরায়রা থেকে জাি একটি সুত্র
বায়হাকী দু’টি সুত্রে সাহ্ল ইবন আসলাম আল-আদবী আবু হুরায়রা সুত্রে বর্ণনা
করেন ৷ তিনি বলেন, ইসলাম গ্রহণের পর আমি এমন তিনটি বিপদে আক্রান্ত হয়েছি যার মত
বিপদে আমি আর কখনও আক্রান্ত হ্ইনি ৷ ১ আল্লাহ্র রাসুলের মৃত্যু আর আমি ছিলাম তার