আমি গতবার হজ্ব করি। হজ্বের মূল কার্যক্রম শেষ করে বিদায়ী তাওয়াফ না করে আমার বিভিন্ন বন্ধুর বাসায় এক মাস থাকি। অতপর কোনো তাওয়াফ না করে দেশে ফিরে আসি। আমার জানার বিষয় হল-
ক) হজ্বের মূল কাজ সম্পন্ন করার পর কেউ যদি দেশে না ফিরে কোনো উদ্দেশ্যে মক্কায় কিছুদিনের জন্য থাকে তাহলে বিদায়ী তাওয়াফ জরুরি কি না?
খ) তার জন্য বিদায়ী তাওয়াফ জরুরি হলে তা কখন আদায় করবে?
গ) তাওয়াফ না করে ফিরে আসার কারণে বর্তমানে আমার করণীয় কী? দয়া করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়ে উপকৃত করবেন।
ক) হজ্বের যাবতীয় কার্যক্রম শেষ করার পর মক্কায় কিছুদিন অবস্থান করে দেশে ফেরার ইচ্ছা থাকলেও বিদায়ী তাওয়াফ করা ওয়াজিব। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হাজিরা বায়তুল্লাহর সাথে শেষ সাক্ষাৎ না করে যেন ফিরে না আসে।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৩২৭
খ) তাওয়াফে যিয়ারত (ফরয তাওয়াফ) আদায়ের পর থেকে যে কোনো সময় বিদায়ী তাওয়াফ আদায় করা যায়।তবে উত্তম হল, দেশে ফিরার আগ দিয়ে বিদায়ী তাওয়াফ করা।
হযরত উমর ইবনে আবদুল আযিয রাহ. একবার বিদায়ী তাওয়াফ আদায় করে এক অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যান। এরপর তিনি আবার বিদায়ী তাওয়াফ আদায় করেন।-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১৬০৫৮
গ) প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি যদি তাওয়াফে যিয়ারতের পর কোনো নফল তাওয়াফ করে থাকেন তাহলে উক্ত তাওয়াফ করার দ্বারাই বিদায়ী তাওয়াফের ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে বর্তমানে আপনাকে আর কিছুই করতে হবে না। কিন্তু ফরয তাওয়াফ করার পর যদি কোনো তাওয়াফ না করে থাকেন তাহলে যখন সুযোগ হয় নিজে উমরার উদ্দেশ্যে গিয়ে উমরার কাজ শেষ করে ছুটে যাওয়া তাওয়াফটি আদায় করে নিবেন। বিলম্বে করার কারণে কোনো দম ওয়াজিব হবে না। আর যদি এভাবে সেখানে গিয়ে তাওয়াফ করা সম্ভব না হয় তাহলে তিনি কারো দ্বারা হেরেম এলাকার মধ্যে একটি ছাগল/দুম্বা জরিমানা দম হিসেবে কুরবানি করতে পারেন।-ফাতহুল কাদীর ২/৩৯৭; রদ্দুল মুহতার ২/৫২৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৫৪-৪৫৫; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩৩৪; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৫১