কেউ তাদেরকে ভ্রষ্টপথের দিকে আহ্বান করেছে ৷ আর তারাও সে ডাকে সাড়া দিয়েছে ৷
ভ্রষ্টপথে চলার নানাবিধ সুত্র ও উপায়-উপকরণ আছে, যেগুলো সেদিকে যাওয়ার জন্যে খুবই
আকর্ষণীয় ৷
অবশেষে তারা সীমালংঘন করে ও আর্তনাদ করে জাহান্নামের অতল গহ্ববে তলিয়ে
গেছে ৷
এই কবিতার জবাবে লিখিত হারিছের কবিতা ইবন ইসহাক তার গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন ৷
কিন্তু আমরা এখানে তার উল্লেখ থেকে বিরত থাকলাম ৷
কাআব ইবন মালিকের কবিতা
বদর যুদ্ধ সম্পর্কে কাব ইবন মালিক নিম্নলিখিত কবিতা রচনা করেন ৷
অর্থ : আমি আল্পাহ্র ফায়সড়ালায় চমৎকৃত ৷ তিনি যা ইচ্ছা করেন তা বাস্তবায়ন করতে
সক্ষম ৷ আল্পাহ্কে বাধ্য করার শক্তি কারও সেই ৷
বদরের দিনে তার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা সীমালংঘনকারী এক সম্প্রদায়ের মুকাবিলা
করি ৷ আর সীমালংঘনকারীরা মানুষের সাথে জুলুম-অত্যাচারের নীতি অবলম্বন করে থাকে ৷
তারা যে দিন সৈন্যসামন্ত একত্রিত করেছিল এবং আশ-পাশের লোকদেরও যুদ্ধে শরীক
হওয়ার জন্যে আহ্বান জানিয়েছিল ৷ ফলে তাদের দলে সৈন্যসংখ্যা অনেক বেশী হয়ে যায় ৷
বনু কাআব ও বনু আমির সহ সকলেই আমাদের দিকে এগিয়ে আসে ৷ আমরা ছাড়া আর
কেউ তাদের আক্রমণের লক্ষ্যবন্তু ছিল না ৷
আর আমাদের মাঝে রয়েছেন আল্লাহ্র রাসুল তার চারপাশে আছে আওস গোত্রের লোক
-যারা ছিল রাসুলের জন্যে দুর্গের ন্যায় শক্তিশালী ও সাহায্যকারী ৷
তার পতাকা তলে রয়েছে বনু নাজ্জারের দল ৷ হালকা ও সাদা বর্ম পরিধান করে তারা ধুলি
উড়িয়ে সম্মুখে অগ্রসর হচ্ছে ৷
আমরা যখন তাদের মুখোমুখি হই, তখন আমাদের প্রতিটি মুজাহিদ তার সাথীকে উৎসাহ
যােপায় ও দৃঢ়পদে অবস্থান করে ৷
আমরা সাক্ষ্য দিই যে, আল্লাহ্ ছাড়া আর কোন প্রভু নেই এবং আল্লাহ্র রাসুল সত্য নিয়ে
জয়ী হন ৷
তখন সাদা ও হালকা তরবারি খাপ থেকে বের করা হল ৷ দেখে মনে হচ্ছিল তা যেন
অগ্নিশিখা ৷ উত্তোলনকারী যেন তোমার দৃই চোখের সামনে নড়াড়াচাড়া করে চোখ ঝলসে দিঙ্গে ৷
এসব তরবারি দিয়ে আমরা তাদের দলকে বিধ্বস্ত করে দিয়েছি ৷ ফলে তারা ছত্রতংগ হয়ে
পড়ে এবং যারা তাদের মধ্যে উদ্ধত, তারা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ৷
শেষে দেখা গেল, আবু জাহ্ল উপুড় হয়ে পড়ে আছে, আর উতবাকে তারা ৰিপর্যস্ত
অবস্থায় ছেড়ে চলে যায় ৷
শায়বা ও তায়মীকে তারা রণক্ষেত্রে ফেলে চলে যায় ৷ এরা সকলেই ছিল আরশের
অধিপতির অবাধ ৷
এর ফলে তারা তাদের চিরস্থায়ী ঠিকানা জাহান্নামের ইন্ধনে পরিণত হল ৷ প্রত্যেক
কাফিরের গম্ভব্যস্থল হচ্ছে জাহান্নাম ৷
লৌহ-দও ও প্রস্তরে পরিপুর্ণ সে জাহান্নামেব অগ্নিশিখা তাদের উপর প্রজ্বলিত হচ্ছে প্রচণ্ড
তাপের পুর্ণ যৌবন সহকারে ৷
রাসুলুল্লাহ্ তাদেরকে বলেছিলেন, তোমরা আমার কাছে এসো ! বিন্দু তারা মুখ ফিরিয়ে নিল
এবং বলল, তুমি তো একজন জাদুকর ৷
আল্লাহ্র ফায়সালা ছিল কড়াফিররা এখানে ধ্বংস হয়ে ৷ আর আল্লাহর ফায়সালা বাতিল
করার সাধ্য কারও নেই ৷
বদর যুদ্ধ সম্পর্কে কাআব ইবন মালিক আরও বলেন :
া
অর্থ : শুনাে৷ বনু পাসৃসানের বাড়ীঘর দুরে হওয়া সত্বেও কি তাদের নিকট এ সংবাদ
পৌছেছে ? আর কোন বিষয়ের সংবাদ সেই উত্তমভাবে বলতে পারে যে সে বিষয়ে ভালভাবে
জ্ঞাত ৷
এই সংবাদ যে মাআদ বংশের মুর্থ ও জ্ঞানী সকলে মিলে আমাদের প্রতি তীর-ধনুক তাক
করেছে শত্রুতারশত ৷
শত্রুতা এ জন্যে যে, দায়িত্বশীল রাসুল যখন আমাদের মাঝে অড়াসলেন তখন আমরা
জান্নাতের আশায় আল্লাহ্র দাসতু কবুল করি, অন্য কারও দাসতৃ করি না ৷
তিনি এমন একজন নবী , যিনি নিজ কওমের মধ্যে উত্তরাধিকার সুত্রে সম্মানের অধিকারী,
সৎ গুণারলীর অধিকারী ৷ তাকে তার বংশীয় ঐতিহ্য মহান ব্যক্তিত্বে গড়ে তুলেছিল ৷
তারাও অগ্রসর হল, আমরাও অগ্রসর হলাম যখন আমরা পরস্পরে মুখোমুখি হলাম, তখন
আমাদেরকে সিংহের মত মনে হল যায় ধারা থেকে বীচাৱ আশা করা যায় না ৷
আমরা তাদেরকে তরবারি দ্বারা আঘাত হানি ৷ আমাদের প্রচণ্ড আঘাতে লুআই বংশের বড়
বড় নেতা ও বীর অতি শোচনীয় ভাবে গর্তেব মধ্যে উপুড় হয়ে পড়তে লাগলো ৷
অবশেষে তারা রণে তংগ দিয়ে পলায়ন করল আর আমরা সাদা ঝলমলে ধারাল তরবারি
দ্বারা তাদেরকে সাবাড় করে দিতে লাগলাম এবং এ বিষয়ে তাদের ও তাদের মিত্রদের মধ্যে
পার্থক্য করতাম না সমানে হত্যা করেছি ৷
এ প্রসংগে কাআব ইবন মালিকের আরও কবিতা
অর্থ : হে লুআই-এব পুত্রদ্বয় ৷ তোমাদের পিতার শপথ, তোমাদের অহংকার ও পর্বের
উপর ৷
বদর যুদ্ধে তোমাদের অশ্বারোহীরা ৫৩ ৷মাদেরকে মোটেই রক্ষা করতে পারেনি ৷ আর
মুকাবিলার সময়ও ত ৷রা দৃঢ়ভা বে টিকে থাকতে পারেনি ৷
আমরা আল্লাহ্র নুর নিয়ে সেখানে উপনীত হই, যা আমাদের :থকে অন্ধকার ও আবরণ
দুর করে আলোক-উদ্ভাসিত করে দেয় ৷
তিনি হলেন আল্লাহ্র রাসুল, যিনি আল্লাহ্র একটি নির্দেশের দিকে আমাদের অগ্রসর
করাচ্ছিলেন ৷ আল্লাহ্র চুড়ান্ত ফায়সালায় তা দৃঢ়ভা লাভ করে ৷
এ কারণে বদরে তোমাদের অশ্বারোহী বাহিনী জয়ীও হতে পারেনি এবং তোমাদের নিকট
সহীহ্-সালামতে প্রত্যাবর্তনও করতে পারেনি ৷
অতএব, হে আবু সুফিয়ানা তাড়াহুড়া করো না; বরং কুদ৷ উপত্যকা ৷হতে উত্তম ঘোড়া
বেরিয়ে আসা র অপেক্ষা কর ৷
সে দলের সাথে থাকবে আল্লাহর সাহায্য, থাকবে রুহুল কুদ্স জিবরাঈল ও মীককাি
ফেরেশতা ৷ কতই না উত্তম হবে যে দল !
হাসৃসান ইবন ছাবিতের কবিতা
নিম্নে উল্লিখিত কবিতাটি করি হাসৃসান ইবন ছাবিতের ৷ কিন্তু ইবন হিশাম বলেছেন, কেউ
কেউ একে আবদুল্লাহ ইবন হারিছের কবিতা বলে দাবী করেন ৷
অর্থ : তাদের সম্মুখে ছিলেন এমন এক মহান ব্যক্তিতু, র্ষার বাহ্যিক আলামত ছিল পরিধাঙ্গে
কড়া লাগান শক্ত লৌহ-বর্ম ৷ তিনি ছিলেন কােমলহৃদয়, দৃঢ়চেতা ও নির্তীক ৷
অর্থাৎ- তিনি সৃষ্টি জগতের স্রষ্টা কর্তৃক প্রেরিত রাসুল মাঝে তিনি তাকওয়া ৩
বদান্যতা দ্বারা সৃষ্টির উপর শ্রেষ্ঠতৃ দান করেছেন ৷