Home » মাসায়েল / ফতোয়া » মৃত্যু-জানাজা » ক) ফজরের নামাযে আওসাতে মুফাসসাল পড়লে নামাযের কোনো ক্ষতি হবে…

ক) ফজরের নামাযে আওসাতে মুফাসসাল পড়লে নামাযের কোনো ক্ষতি হবে…

  • 3000+ Premium WORDPRESS Themes and Plugins
  • Download PHP Scripts, Mobile App Source Code
  • প্রশ্ন

    ক) ফজরের নামাযে আওসাতে মুফাসসাল পড়লে নামাযের কোনো ক্ষতি হবে কি? আর এই তিলাওয়াত নিয়ে যদি কোনো ব্যক্তি সমালোচনা করে যে, নামায হবে না তাহলে সে শরীয়তের দৃষ্টিতে গুনাহগার হবে কি না?

    খ) শরীয়তের মধ্যে কবর দেখভাল করার সঠিক পদ্ধতি কী? দলিল-প্রমাণসহ জানালে কৃতজ্ঞ হব।

    উত্তর

    ক) ফজর নামাযে সাধারণ অবস্থায় তিওয়ালে মুফাসসালের সূরাগুলো থেকে তিলাওয়াত করা সুন্নত। অবশ্য তিওয়ালে মুফাসসালের সূরা সমপরিমাণ অন্য জায়গা থেকে পড়লেও সুন্নত আদায় হয়ে যাবে। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অধিকাংশ সময় ফজর নামাযে তিওয়ালে মুফাসসাল থেকেই তিলাওয়াত করতেন। আবার মুফাসসালাতের বাইরে থেকেও এ ধরনের লম্বা কিরাত পড়তেন। এ মর্মে একাধিক হাদীস বর্ণিত হয়েছে।

    সিমাক ইবনে হারব বলেন, আমি জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রা.কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নামায সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, … রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের নামাযে সূরা কাফ এবং এ ধরনের অন্য সূরাও পাঠ করতেন।-সহীহ মুসলিম ১/১৮৭

    সহীহ মুসলিমের অন্য এক বর্ণনায় আবু বারযা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজর নামাযে ষাট থেকে একশত আয়াত পরিমাণ তিলাওয়াত করতেন।-সহীহ মুসলিম ১/১৮৭

    তাই কোনো ওজর না থাকলে ফজর নামাযে অধিকাংশ সময় তিওয়ালে মুফাসসাল থেকেই পড়া উচিত।

    আর ওজর অবস্থায় কিংবা কখনো কখনো ফজর নামাযেও ছোট সূরা পড়া যাবে। যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজর নামাযে কিসারে মুফাসসাল থেকে সূরা যিলযাল তিলাওয়াত করেছেন বলে প্রমাণিত আছে।-সুনানে আবু দাউদ ১/১২৩

    অনুরূপ বাকি চার ওয়াক্তের কিরাতেও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো কখনো মুফাসসালাতের বাইরে থেকেও তিলাওয়াত করেছেন এমন বর্ণনা বিভিন্ন হাদীসে এসেছে।&

    তাই কোনো ইমাম কখনো যদি মুফাসসালাতের বাইরে থেকে তিলাওয়াত করেন তাহলে এ নিয়ে আপত্তি করা ঠিক নয়। আর এ কারণে নামায হবে না এমন কথা তো সম্পূর্ণ ভুল।

    বিশেষত যেখানে মুসল্লীদের অধিকাংশ শ্রেণী এমন হয়, যাদের জন্য দীর্ঘ কিরাতে নামায পড়া কষ্টসাধ্য, যেমন অধিকাংশ মুসল্লী ফ্যাক্টরির শ্রমিক বা বয়োবৃদ্ধ সেক্ষেত্রে ইমামের জন্য তাদের অবস্থার প্রতি লক্ষ্য রেখে কেরাত পড়া উচিত। (ইলাউস সুনান ৪/২৪)

    তবে এ ধরনের মুসল্লীদেরকেও সুন্নতের গুরুত্ব ও ফযীলত বলে কিরাতের ন্যূনতম পরিমাণের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা উচিত।

    উত্তর : খ) কবর ও কবরস্থান রক্ষণাবেক্ষণ করার ক্ষেত্রে জীবিতদের উপর গুরুত্বপূর্ণ কিছু কর্তব্য রয়েছে। তন্মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হল, কবর ও কবরস্থানকে সর্বপ্রকার শিরক-বিদআত ও শরীয়তবিরোধী কর্মকান্ড থেকে মুক্ত রাখা।

    কবরকে সিজদা না করা, চুম্বন না করা, তাজীম-সম্মানার্থে মাথা না ঝুকানো, কবরওয়ালার কাছে কিছু না চাওয়া। কেননা কবরের সাথে এসব আচরণ করা সম্পূর্ণ হারাম এবং এগুলোর কোনো কোনোটি শিরক।

    রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, (অর্থ) আল্লাহ তাআলা ইহুদ-নাসারাকে ধ্বংস করুন! তারা তাদের নবীগণের কবরকে সিজদার স্থান বানিয়েছে।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৫৩০

    অপর বর্ণনায় এসেছে, আল্লাহ তাআলা ঐ সকল লোকের প্রতি অভিসম্পাত করুন, যারা তাদের নবীগণের কবরকে সিজদার স্থান বানিয়ে নিয়েছে।-সুনানে নাসায়ী ১/২২৩

    তদ্রূপ কবরকে কেন্দ্র করে কোনো প্রকার উরস-উৎসব না করা, আলোকসজ্জা, মোমবাতি-আগরবাতি না জ্বালানো। কেননা কবরকে কেন্দ্র করে এগুলো করাও হারাম।

    কবরে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনকারীদের প্রতি হাদীস শরীফে অভিসম্পাত এসেছে। আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবরে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনকারীদের উপর লানত করেছেন।-সুনানে নাসায়ী ১/২২৩

    কবরকে পাকাপোক্ত ও চাকচিক্যময় না করা। কবরের উপর ছাদ না করা। কেননা হাদীসে এ থেকে নিষেধ করা হয়েছে।

    জাবের রা. বর্ণনা করেন, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবরকে পাকাপোক্ত ও চুনকর্ম করতে নিষেধ করেছেন।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৯৭০

    মোটকথা কবরকে সব ধরনের বিদআত রুসূমাত থেকে মুক্ত রাখা জীবিতদের কর্তব্য।

    দ্বিতীয়ত কবরের বাহ্যিক পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণের দিকটি। সেক্ষেত্রে কর্তব্য হল মৃত ব্যক্তির সম্মানহানী হয় এমন কোনো আচরণ কবরের সাথে না করা। যেমন কবরের উপর চলাচল করা, বসা ইত্যাদি।

    আবু মারসাদ রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমরা কবরে বসবে না এবং কবরকে সামনে রেখে নামায পড়বে না।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৯৭২

    অন্য বর্ণনায় এসেছে, উমারা ইবনে হাযম রা. বলেন, একদা রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে কবরের উপর বসা দেখতে পেয়ে বললেন, কবর থেকে নেমে যাও। কবরস্থ ব্যক্তিকে কষ্ট দিও না।-আলমুজামুল কাবীর, তবারানী , মাজমাউয যাওয়াইদ ৩/১৯১

    জামে তিরমিযীতে জাবের রা. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবরের উপর চলাচল করতে নিষেধ করেছেন।

    অনুরূপ কবরে যেন গরু-ছাগল প্রবেশ না করে এবং কবর অপবিত্র না করে সেদিকেও লক্ষ্য রাখা। কবরের উপর গাছ তরু-লতা বা ঘাস ইত্যাদি থাকলে তা না কাটা। কেননা এগুলোর তাসবীহাত দ্বারা মৃতের উপকার হতে পারে। অবশ্য ঘন জঙ্গল হয়ে গেলে তা পরিষ্কার করা যাবে। অনুরূপ শুকনো ঘাস, ডালপালা থাকলে তা পরিষ্কার করা যাবে।-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৭৬

    বাহ্যিক পরিচর্যার আরেকটি বিষয় হল, বৃষ্টি বা কোনো কারণে কবরের মাটি সরে গেলে প্রয়োজন অনুযায়ী মাটি ভরাট করে দেওয়া যাবে। অনুরূপ কবরের চিহ্ন মুছে গেলে পাথরখন্ড বা কোনো কাঠ ইত্যাদি দিয়ে চিহ্নিতও করা যাবে। এরূপ চিহ্নিত করে রাখা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত আছে। দেখুন : সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৩১৯৮

    জীবিতদের প্রতি হাদীসের আরেকটি নির্দেশনা হল, কবর যিয়ারত করা। হাদীস শরীফে কবর যিয়ারতের প্রতি বিশেষভাবে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।

    রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা কবর যিয়ারত কর। কেননা তা মৃত্যুর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৩২১৬

    অন্য বর্ণনায় এসেছে, তা আখেরাতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৩২১৬

    তাই মৃত্যুর কথা স্মরণ হওয়ার দ্বারা একদিকে যেমন যিয়ারতকারীর ঈমানী ফায়েদা হয় তেমনি এতে মৃতেরও বড় উপকার হয়। কেননা মৃত ব্যক্তি যিয়ারতকারীর দুআ-ইস্তিগফার ও নেক আমলের ইসালে ছওয়াব দ্বারা উপকৃত হয়।

    উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
    নামাজে সর্বনিম্ন কত আয়াত পড়তে হবে
    কোন নামাজে কোন সূরা পড়া সুন্নত
    বিশুদ্ধ কেরাতের শর্ত কয়টি
    জুমার নামাজে কোন সূরা পড়া সুন্নত
    একাকী নামাজে কেরাত পড়ার নিয়ম
    নামাজে কেরাত পড়ার বিধান কি
    নামাজের সুন্নত কেরাত
    নামাজে সুরা পড়ার নিয়ম

    সম্পর্কিত পোস্ট:


    নোটঃ ক) ফজরের নামাযে আওসাতে মুফাসসাল পড়লে নামাযের কোনো ক্ষতি হবে… Download করতে কোন ধরনের সমস্যা হলে আমাদেরকে জানান। যোগাযোগ করতে এখানে ক্লিক করুন।

    মীযান জামাতের সমস্ত কিতাব PDF Download

    নাহবেমীর জামাতের কিতাব PDF Download

    হেদায়াতুন নাহু জামাতের কিতাব PDF Download

    কাফিয়া জামাতের কিতাব PDF Download

    শরহে জামী জামাতের কিতাব PDF Download

    জালালাইন জামাতের কিতাব PDF Download

    মেশকাত জামাতের কিতাব PDF Download

    দাওরায়ে হাদিসের কিতাব সমূহ PDF Download

    মাদানী নেসাবের কিতাবসমূহ PDF Download

    Leave a Comment

    This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.