Home » নাস্তিক্যবাদের জবাব » ধর্ম দর্শন – সংগৃহিত

ধর্ম দর্শন – সংগৃহিত

  • 3000+ Premium WORDPRESS Themes and Plugins
  • Download PHP Scripts, Mobile App Source Code
  • বায়ু সর্বদা প্রবাহিত হয়, পানি সবকিছুকে ভিজিয়ে দেয়, আগুন সবকিছুকে জ্বালিয়ে দেয়, এগুলিই ওদের ধর্ম। ওরা নীরবে ওদের ধর্ম মেনে চলে, যতক্ষণ না সৃষ্টিকর্তার অন্য কোন হুকুম আসে। যেমন আগুন ইবরাহীমকে পোড়ায়নি, নদী ইউনুসকে ডুবিয়ে মারেনি। বায়ু সুলায়মানকে উল্টে ফেলে দেয়নি। কিন্তু মানুষ? মায়ের গর্ভে চার মাসের ছোট্ট দেহে তার অদৃশ্য রূহটি প্রবেশ করল। ৯ মাস সেখানে থেকে পুষ্ট হয়ে তিন পর্দার গাঢ় অন্ধকার ভেদ করে দুনিয়ায় ভূমিষ্ট হ’ল। আস্তে আস্তে বড় হ’ল, জ্ঞান-বুদ্ধি বাড়ল। চিন্তা এল। কে তাকে সৃষ্টি করল? কেন করল? কি করবে সে এখন? কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পাস করে চিন্তার হাযার গলির মধ্যে ঢুকে পড়ল। জড়বাদী গলি, নাস্তিক্যবাদী গলি, বস্ত্তবাদী গলি, যুক্তিবাদী গলি, ধর্ম নিরপেক্ষ গলি, অদৃষ্টবাদী গলি, মুক্তবুদ্ধি গলি ইত্যাদি। এতগুলি চিন্তার সড়ক ও গলিপথ ঘুরতে ঘুরতে সে এক সময় বুদ্ধিহত হবার উপক্রম হয়। কিন্তু প্রশ্নের জওয়াব সে খুঁজে পায়না। ওদিকে সে এগিয়ে চলেছে জীবন নাট্যের শেষ অংকের দিকে। কেননা দেহ চলে তার নিজস্ব ধর্মে, তার সৃষ্টিকর্তার বিধান মতে।

    এদিকে আমার স্বাধীন চিন্তাশক্তি আমাকে স্থির থাকতে দিচ্ছে না। কখনো আমি আস্তিক, কখনো আমি নাস্তিক, কখনো অসীলাপূজারী, কখনো সংশয়বাদী, কখনো দিশেহারা। অবশেষে জীবন সৈকতে দাঁড়িয়ে আমি এখন নিশ্চিত হয়েছি যে, সূচনা ও লয়-এর পিছনে নিশ্চয়ই কোন সত্তা আছেন, যিনি চিরঞ্জীব, যিনি সবকিছু করছেন অদৃশ্যে থেকে, তাঁর দূরদর্শী পরিকল্পনা অনুযায়ী। যিনি স্রষ্টা। তাই সৃষ্টির চর্মচক্ষু তাঁকে দেখতে পায় না। যে রূহটি বিগত ৬০/৭০ বছর সর্বদা আমার সাথে আমার দেহে বিরাজ করছে, তাকে আজও আমি দেখতে পাইনি। কিন্তু ওটা যে আছে এবং ওটা যে জীবন্ত, তার প্রমাণ তো আমি নিজেই। অনুরূপভাবে স্রষ্টা যে আছেন, অসংখ্য সৃষ্টিই তার প্রমাণ। যিনি সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা ও বিধানদাতা। যিনি আদি, যিনি অন্ত, যিনি সকল শক্তির আধার ও সকল কিছুর ধারক।

    আল্লাহকে পেলাম। কিন্তু তাঁর বিধান কোথায় পাব? অন্য সব সৃষ্টি চলছে স্ব স্ব বিধান মতে। কিন্তু আমার চলার পথ কি? সে পথের বিধান কি? আমার সামনে মদ আছে, দুধ আছে। কোন্টা খাব। অথচ আমারই গোয়ালের গরু দিব্যি ঘাস ও শুকনো বিচালী চিবাচ্ছে ও শক্ত-সমর্থ হচ্ছে। তাকে জোর করলেও সে বিয়ার-হুইস্কি খাবে না বা গাঁজা টানবে না। কিন্তু আমার অবস্থা কী? আমাকে যে জ্ঞান ও চিন্তার স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। আমি এখন কোন্ পথে চলব? রাস্তা দিয়ে রথ যাচ্ছে। নিজেদের হাতে গড়া দেবমূর্তি নিয়ে মানুষ চলছে। সারাদিন পূজা দিয়ে এবার তাকে ডুবিয়ে দেবে। কি হলো এতে? কি পেলাম তাতে? কোন জবাব না পেয়ে কবি গেয়েছেন, ‘রথযাত্রা সমারোহ মহা ধূমধাম, ভক্তেরা সব লুটিয়ে শির করিছে প্রণাম। রথ ভাবে আমি দেব, পথ ভাবে আমি। মূর্তি ভাবে আমিই দেব হাসে অন্তর্যামী’। আমার চিন্তা থমকে গেল। যে সৃষ্টিকর্তা তার অন্য সৃষ্টিকে বিধান দিলেন, তিনি কি তার সেরা সৃষ্টি মানুষকে কোন বিধান দেননি? নিশ্চয়ই তিনি দায়িত্বহীন সৃষ্টিকর্তা নন। তাইতো দেখছি নবী-রাসূলগণ বলছেন, আমরা আল্লাহর বার্তাবহ। হে মানুষ! আল্লাহর বিধান মানো ও আমাদের আনুগত্য কর। তুমি হালাল খাও, হারাম খেয়ো না। তুমি দুধ খাও, মদ খেয়ো না’। তাইতো এ যে আমার বিবেকের প্রতিধ্বনি। মন বলছে মদ খাই। হারাম খাই, কিন্তু বিবেক যে নিষেধ করছে। মন বলছে সুদ খাই, ঘুষ খাই, চুরি করি, মানুষ খুন করি। কিন্তু বিবেক যে ধিক্কার দিচ্ছে। তাহ’লে তো দেখছি আমার স্বভাবধর্ম নবী-রাসূলগণের অনুগত। তাহ’লে কেন আমি দিশেহারা হয়ে ঘুরছি? আদম থেকে ঈসা পর্যন্ত যুগে যুগে সকল নবী মানুষকে এক আল্লাহর দাসত্ব করার প্রতি আহবান জানিয়ে গেছেন। শেষনবী মুহাম্মাদ (ছাঃ) বিগত সকল নবীর সত্যয়ন করে গেছেন। তাঁর মাধ্যমে আল্লাহ বিশ্ববাসীর জন্য চূড়ান্ত ও পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান প্রেরণ করেছেন। কুরআন ও হাদীছ রূপে যা আমার সামনে বিদ্যমান। তাহ’লে কেন আমি দিশেহারার মত এ পথে ওপথে দেঁŠড়াচ্ছি? শেষনবীর রেখে যাওয়া ছিরাতে মুস্তাক্বীম তথা সরল পথ ছেড়ে কেন আমি অন্য পথে আছি?

    সৃষ্টিকর্তাকে পেলাম, তাঁর বিধান পেলাম, এক্ষণে আমার শেষ ঠিকানা কোথায়? যে রূহ এসেছিল একদিন অদৃশ্য লোক থেকে মায়ের গর্ভে, যা এখন আমার দেহের অভ্যন্তরে অবস্থান করে আমাকে কর্মতৎপর করে রেখেছে, এ রূহ যখন দেহ পিঞ্জর ছেড়ে চলে যাবে, তখন আমার পরিণতি কি হবে? আমার সবকিছু কি এই মাটিতেই শেষ? আমি নিয়ত দেখছি যালেম তার শক্তি ও বুদ্ধির জোরে অসহায় ও দুর্বলের উপর যুলুম করে যাচ্ছে। এরপরেও সে দুনিয়াতে খ্যাতি ও প্রশংসা পাচ্ছে। অন্য দিকে সৎ ও নিরপরাধ হওয়া সত্ত্বেও মযলূম মার খাচ্ছে ও বদনাম কুড়াচ্ছে। এভাবে যালেম ও মযলূম উভয়ে এক সময় দুনিয়া থেকে বিদায় হয়ে যাচ্ছে। অথচ যালেম তার শাস্তি পেল না। মযলূম তার প্রতিদান পেল না। এটাই কি সৃষ্টিকর্তার বিধান? মনটা বিদ্রোহী হয়ে উঠল।

    কিন্তু না, নেমে এসেছে আসমানী তারবার্তা। শেষনবীর মুখে ঐ যে শোনা যায় গুরু গম্ভীর ঘোষণা। ‘ওরা পরস্পরে কি বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে?’ ‘(ক্বিয়ামতের) মহা সংবাদ সম্পর্কে?’ ‘যে বিষয়ে ওরা মতভেদ করে?’ ‘কখনোই না। শীঘ্র ওরা জানতে পারবে’। ‘অতঃপর কখনোই না। শীঘ্র ওরা জানতে পারবে’ (নাবা ১-৫)। হে মানুষ! ‘ভয় কর তোমরা সেই দিনকে, যেদিন তোমরা ফিরে আসবে আল্লাহর কাছে। অতঃপর প্রত্যেকেই তার কর্মের ফল পুরোপুরি পাবে এবং তাদের প্রতি কোনরূপ অবিচার করা হবে না’ (বাক্বারাহ ২৮১)।

    হাঁ এক্ষণে আমি খুঁজে পেয়েছি আমার শেষ ঠিকানা। আমি এখন নিশ্চিন্ত। তাওহীদ, রিসালাত ও আখেরাত- এই তিনটি আলোকস্তম্ভের নির্দেশনায় আমার জীবন তরী চলবে। এর বাইরে সবকিছু শয়তানী খোশ-খেয়াল ও মায়া-মরীচিকা মাত্র। আল্লাহ বলেন, ‘তুমি তোমার চেহারাকে দীনের প্রতি একনিষ্ঠ কর। এটাই আল্লাহর ফিৎরত বা স্বভাবধর্ম। যার উপরে তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই। এটাই সরল ধর্ম। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানেনা’। ‘সবাই তোমরা তাঁর অভিমুখী হও এবং তাঁকে ভয় কর’… (রূম ৩০-৩১)। পিতা-মাতার কারণে কিংবা ভ্রান্ত পরিবেশের কারণে মানুষ কাফের, মুশরিক, বিদ‘আতী হ’তে পারে। কিন্তু সত্য গ্রহণের যোগ্যতা প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই সুপ্ত থাকে।

    আর সেটা হ’ল ‘ইসলাম’। আল্লাহ বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহর মনোনীত দ্বীন হ’ল ‘ইসলাম’ (আলে ইমরান ১৯)। তিনি বলেন, আমি জিন ও ইনসানকে আমার দাসত্ব ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করিনি’ (যারিয়াত ৫৬)। এভাবে মানব প্রকৃতির মধ্যেই আল্লাহর প্রতি দাসত্ব ও আনুগত্যের জাযবা ও যোগ্যতা সৃষ্টি করা হয়েছে। যদিও মানুষ শয়তানী ধোঁকায় পড়ে সাময়িকভাবে প্রতারিত হয়। এটাই হ’ল প্রকৃত ধর্মদর্শন। এর বাইরে সবকিছু কল্পনা মাত্র। আল্লাহ আমাদের সরল পথে পরিচালিত করুন- আমীন!!


    নোটঃ ধর্ম দর্শন – সংগৃহিত Download করতে কোন ধরনের সমস্যা হলে আমাদেরকে জানান। যোগাযোগ করতে এখানে ক্লিক করুন।

    মীযান জামাতের সমস্ত কিতাব PDF Download

    নাহবেমীর জামাতের কিতাব PDF Download

    হেদায়াতুন নাহু জামাতের কিতাব PDF Download

    কাফিয়া জামাতের কিতাব PDF Download

    শরহে জামী জামাতের কিতাব PDF Download

    জালালাইন জামাতের কিতাব PDF Download

    মেশকাত জামাতের কিতাব PDF Download

    দাওরায়ে হাদিসের কিতাব সমূহ PDF Download

    মাদানী নেসাবের কিতাবসমূহ PDF Download

    Leave a Comment

    This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.