Home » মাসায়েল / ফতোয়া » খাওয়া-পোশাক » পাগড়ি পরিধানের হুকুম কী? বিস্তারিত জানতে চাই। অনেককে দেখা যায়,…

পাগড়ি পরিধানের হুকুম কী? বিস্তারিত জানতে চাই। অনেককে দেখা যায়,…

  • 3000+ Premium WORDPRESS Themes and Plugins
  • Download PHP Scripts, Mobile App Source Code
  • প্রশ্ন

    পাগড়ি পরিধানের হুকুম কী? বিস্তারিত জানতে চাই। অনেককে দেখা যায়, শুধু ফরয নামাযের সময় পাগড়ি পরিধান করে। এজন্য যে, পাগড়ি বেঁধে নামায আদায় করলে ১ রাকাতে সত্তর রাকাতের ছওয়াব পাওয়া যায়। এবং অনেককে এটাও বলতে শোনা যায় যে, যদি ইমাম সাহেব পাগড়ি বেঁধে নামায পড়ান তাহলে ইমাম ও মুক্তাদিরা নামাযে সত্তর গুণ সওয়াব লাভ করবেন। আমার জানার বিষয় হল, তাদের কথা কতটুকু সঠিক? জানালে উপকৃত হব। তাছাড়া একটি বইয়ে দেখতে পেলাম, পাগড়ি পরে নামায আদায় করলে সত্তর গুণ সওয়াব পাওয়া যায়। আবার আরেকটি বর্ণনায় রয়েছে পঁচিশ গুণ সওয়াব পাওয়া যায়। এরপর উক্ত বইয়ে লেখা হয়েছে যে, এ হাদীসগুলো দুর্বল হলেও বেশি দুর্বল নয় আর ফাযায়েলের ক্ষেত্রে যয়ীফ হাদীসের উপর আমল করতে কোনো অসুবিধা নেই। উক্ত বইয়ের বক্তব্য কি সঠিক?

    উত্তর

    পাগড়ি মাসনূন পোশাকের অন্তর্ভুক্ত। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাধারণত যে সকল পোশাক ব্যবহার করতেন পাগড়িও তার অন্তর্ভুক্ত। তিনি বিভিন্ন সময় পাগড়ি ব্যবহার করেছেন তা সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত আছে। সাহাবা-তাবেয়ীনও নামাযে এবং নামাযের বাইরে ব্যাপকভাবে পাগড়ি পরতেন বহু হাদীস ও আসারে বিশুদ্ধ সূত্রে প্রমাণিত আছে। পাগড়ি তাদের নিকট পছন্দনীয় পোশাক ছিল। তাঁরা অন্যান্য পোশাকের ন্যায় তা ব্যবহার করতেন।

    রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সাহাবায়ে কেরাম ও সালাফের অনুসরণে পাগড়ি ব্যবহার করলে অবশ্যই সওয়াব হবে।

    আর পাগড়ি নামাযের বিশেষ পোশাক নয়; বরং নামাযে এবং নামাযের বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই সমভাবে পরিধানযোগ্য একটি পোশাক। সাহাবা-তাবেয়ীন শুধু নামাযের সাথে এটাকে সীমাবদ্ধ করতেন না। তাই শুধু নামাযের সময় ব্যবহার করা, অন্য সময় ব্যবহার না করা সালাফের রীতি পরিপন্থী।

    আর পাগড়ি বেঁধে নামায আদায় করলে সত্তর রাকাতের সওয়াব পাওয়া যায় এ সংক্রান্ত যে বর্ণনাটি উল্লে­খ করা হয়েছে তা সহীহ নয়। এটি একটি ভিত্তিহীন বর্ণনা। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রাহ. স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, এটি একটি মিথ্যা ও বাতিল কথা। -শরহু জামেইত তিরমিযী, ইবনে রজব রাহ. ২/৮৩১

    ইমাম সাখাবী রাহ. পাগড়ি বেঁধে নামায আদায় করার ফযীলত সম্পর্কিত যে তিনটি বর্ণনা প্রমাণিত নয় বলে উল্লে­খ করেছেন তন্মধ্যে এ বর্ণনাটিও রয়েছে। -আলমাকাসিদুল হাসানাহ ৩৪৬

    অনুরূপ পাগড়ি বিশিষ্ট দু’রাকাত নামায পাগড়িহীন পঁচিশ রাকাতের সমান এবং পাগড়ি বিশিষ্ট একটি জুমআ পাগড়ি বিহীন সত্তর জুমআর সমান- যে বর্ণনা রয়েছে সেটিও গ্রহণযোগ্য নয়। হাফেয ইবনে হাজার আসকালানী রাহ. এ বর্ণনাটিকে মওযূ অর্থাৎ জাল বলেছেন। -লিসানুল মীযান ৩/২৪৪

    হাফেয সাখাবী রাহ. এ বর্ণনাটিকেও প্রমাণিত নয় বলেছেন। -আলমাকাসিদুল হাসানাহ ৩৪৬

    হাফেয সুয়ূতী রাহ. যাইলুল লাআলিল মাসনূআতে (১/৪২৭) ইবনে হাজার রাহ.-এর উক্ত কথা উদ্ধৃত করেছেন।

    এ সম্পর্কে আরো দেখুন : তাযকিরাতুল মাওযূআত ১/১৫৫; আলআসারুল মারফুআ ১/২৩২; আলমাসনূ ১/১১৮

    সুতরাং এ ধরনের বাতিল ও অগ্রহণযোগ্য বর্ণনাকে আমলযোগ্য যয়ীফ বলা ঠিক নয়। হাদীস শাস্ত্রজ্ঞ ইমামগণের সুস্পষ্ট বক্তব্যের বিপরীতে এমন কথা গ্রহণযোগ্য নয়।

    প্রকাশ থাকে যে, আমলের ফযীলত বিষয়ে যয়ীফ হাদীস গ্রহণযোগ্য- এটি মুহাদ্দিসগণের একটি স্বীকৃত কথা। তবে এর জন্য কিছু শর্ত রয়েছে। অন্মধ্যে অন্যতম একটি শর্ত হল, বর্ণনাটি মাতরুক বা মুনকার পর্যায়ের না হতে হবে। তাই ব্যাপকভাবে যে কোনো যয়ীফ হাদীসই আমলযোগ্য বলা ঠিক নয়।

    হাফেয ইবনে হাজার আসকালানী রাহ. বলেন, যয়ীফ হাদীসের উপর আমল করার জন্য শর্ত হল, ক) সনদের দুর্বলতা বেশি না হতে হবে। এটি সর্বসম্মত বিষয়। সুতরাং যয়ীফ হাদীসের শ্রেণী থেকে ঐ বর্ণনা বের হয়ে যাবে, যার মধ্যে কোনো রাবী মিথ্যুক রয়েছে বা মিথ্যার অভিযোগে অভিযুক্ত কিংবা তিনি বেশি ভুল করেন।

    খ) ঐ আমল শরীয়তের কোনো না কোনো মূলনীতির অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে।

    গ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এটি সুপ্রমাণিত এমন আকীদা পোষণ না করতে হবে। -আলকওলুল বাদী ১৯৫

    ইবনে হাজার রাহ.-এর এই তিন শর্তের কথা হানাফী মাযহাবের বিখ্যাত ফতোয়ার কিতাব দুরারুল হুক্কাম ১/১২;আদ্দুররুল মুখতার এবং রদ্দুল মুহতারেও উল্লে­খ রয়েছে।

    আল্লামা হাসকাফী রাহ. যয়ীফ হাদীসের উপর আমল করার উক্ত শর্তসমূহ উ­েল্লখ করার পর বলেন, মওযূ হাদীসের উপর তো কোনো অবস্থাতেই আমল করা জায়েয নয়। -আদ্দুররুল মুখতার ১/১২৮

    অতএব পাগড়ি পরিধান করে নামায আদায় করলে সত্তর গুণ, পঁচিশ গুণ সওয়াব পাওয়া সংক্রান্ত যে বর্ণনা রয়েছে সেগুলো তো হাদীস শাস্ত্রজ্ঞ ইমাম ও মুহাদ্দিসীনে কেরামের সুস্পষ্ট ভাষ্যমতে মওযূ ও বাতিল বর্ণনা। এসব বর্ণনাকে ভিত্তি করে অধিক ফযীলত পাওয়ার আশায় পাগড়িকে শুধু নামাযের সময় ব্যবহার করা ঠিক নয়।

    আর ইমাম পাগড়ি বেঁধে নামায পড়ালে ইমাম ও মুক্তাদি সকলেই সত্তর গুণ সওয়াব লাভ করবে- প্রশ্নের এ কথার সপক্ষে কোনো হাদীস বা আসার পাওয়া যায় না। তাই নির্ভরযোগ্য প্রমাণাদি ছাড়া এ ধরনের কথা বলা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।

    উল্লেখ্য যে, উপরোক্ত অগ্রহণযোগ্য বর্ণনাগুলো বিশ্বাস না করে পাগড়িকে নিয়মিত পোশাকের অংশ বানানো যে উত্তম কাজ তা পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। পাগড়ি মুসলমানদের বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত পোশাক এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে এটি নামাযের সময়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত নয়।

    উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
    পাগড়ির ইতিহাস
    পাগড়ি পরা কি সুন্নত
    পাগড়ি পরার নিয়ম
    পাগড়ি আল কাউসার
    পাগড়ী পড়ার ফজিলত
    পাগড়ির দাম
    পাগড়ি নিয়ে উক্তি

    সম্পর্কিত পোস্ট:


    নোটঃ পাগড়ি পরিধানের হুকুম কী? বিস্তারিত জানতে চাই। অনেককে দেখা যায়,… Download করতে কোন ধরনের সমস্যা হলে আমাদেরকে জানান। যোগাযোগ করতে এখানে ক্লিক করুন।

    মীযান জামাতের সমস্ত কিতাব PDF Download

    নাহবেমীর জামাতের কিতাব PDF Download

    হেদায়াতুন নাহু জামাতের কিতাব PDF Download

    কাফিয়া জামাতের কিতাব PDF Download

    শরহে জামী জামাতের কিতাব PDF Download

    জালালাইন জামাতের কিতাব PDF Download

    মেশকাত জামাতের কিতাব PDF Download

    দাওরায়ে হাদিসের কিতাব সমূহ PDF Download

    মাদানী নেসাবের কিতাবসমূহ PDF Download

    Leave a Comment

    This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.