পালনকারী গোলাম বলল, তিনি সালাত আদায়ের ইচ্ছা করছেন না ৷ তবে তিনি উল্লেখ করেছেন
যে, নবী করীম (সা) এখানে পৌছলে পেশার করতেন ৷ তাই তিনি (ইবন উমার)-ও এখানে তা
করা পসন্দ করেছেন ৷
বুখারী (র) বলেন, মুসা জুওয়ায়রিয়া (র) নাফি (র) হতেতিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবন
উমর (রা) মুযদালিফায় মাগরিব ও ইশা একত্রিত করে আদায় করতেন ৷ তবে তিনি সে গিরিপথ
দিয়ে চলতেন যে পথে নবী করীম (সা) চলেছিলেন এবং সেখানে প্রবেশ করে ইসতিনজা ও উবু
করতেন এবং মুযদালিফায় উপনীত না হওয়া পর্যন্ত সালাত আদায় করতেন না ৷ এ সুত্রে বুখারী
(র) একাকী বর্ণনা করেছেন ৷ বুখারী (র) আরো বলেন, তিনি বলেন, আদম ইবন আবু যিব
(র)ইবন উমর (বা) হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, নবী করীম (সা) মুযদালিফায়
মাগরিব ও ইশা একত্র করে আদায় করলেন, প্রতি সালাত স্বতন্ত্র ইকামতে; এ দুয়ের মাঝে
কিৎবা এর কোন সালাতের অব্যবহিত পরে তাসবীহ (নকল সালাত) আদায় করেন নি ৷ মুসলিম
(র)-ও অনুরুপ রিওয়ায়াত করেছেন ৷ ইবন উমর (বা) হতে এ মর্মে যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা)
মুযদালিফায় মাগরিব ও ইশা একত্রে আদায় করলেন, পরবর্তী বর্ণনায় মুসলিম (র) বলেন,
হারমালা (র) ইবন উনার (রা) সনদে বর্ণিত রিওয়ায়াতে অতিরিক্ত বলেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা)
মাগরিব তিন রাকআত আদায় করলেন এবং ইশা আদায় করলেন দুই রাকআত ৷ তাই
আবদুল্লাহ্ (রা)-ও আজীবন মুযদালিফায় অনুরুপ পন্থায় সালাত আদায় করেছেন ৷ তারপর
মুসলিম (র) শুবা, সাঈদ ইবন জুবায়ের সুত্রে অনুরুপ রিওয়ায়াত করেছেন ৷ মুসলিম (র)-এর
পরবর্তী বণর্ন৷ আবু বকর ইবন আবু শায়বা (র) আবু ইসহাক (র) হতে তিনি বলেন, সাঈদ
ইবন জুবড়ায়র (র) বলেছেন, আমরা ইবন উমর (রা)-এর সংগে (ইফাযা: করে অর্থাৎ) আরাফাত
থেকে রওয়ানা করে মুযদালিফায় পৌছলাম ৷ তিনি আমাদের নিয়ে মাগরিব ও ইশা’ এক
ইমড়ামাতে আদায় করলেন ৷ এরপর ঘরে বসে বললেন রাসুলুল্লাহ (সা) এ স্থানে আমাদের নিয়ে
এ ভাবেই সালাত আদায় করেছেন ৷ বুখারী (র) ও নাসাঈ (র) জ্যিপ্ জ্যি সুত্রে অনুরুপ
রিওয়ায়াত করেছেন ৷
বুখারী (র)-এর পরবর্তী অনুচ্ছেদ উভয় সালাতের জ্যা স্বতন্ত্র আযান ইকামত প্রসঙ্গ
আমর ইবন খালিদ (র)আবু ইসহাক (র) সুত্রে (তিনি বলেন) আবদুর রহমান ইবন
ইয়াযীদ (র) কে আমি বলতে শুনেছি, আবদুল্লাহ ইবন উমর (রা) হজ্জ পালন করলেন ৷ আমরা
আতামা (ইশা)-র আযানের সময় কিৎবা তার কাছাকাছি সময়ে মুযদালিফা-য় পৌছলাম ৷
আবদুল্লাহ (বা) এক ব্যক্তিকে হুকুম করলে সে আযান দিল ও ইকামত বলল ৷ তিনি মাগরিব
সালাত আদায় করলেন এবং তারপরে দুই রাকআত আদায় করলেন ৷ তারপর র্তারা রাতের
খাবার আনিয়ে তা খেলেন ৷ তারপর এক ব্যক্তিকে আদেশ করলে সে আযান দিল (ও ইকামত
বলল ৷ তারপর ইশার সালাত দুই রাকআত আদায় করলেন ৷ পরে ফজরের সময় হলে
(একেবারে প্রথম ওয়াক্তে ফজর সালাত আদায় করে) তিনি বললেন, এ দিনের এবং এ
স্থানের এই সালাত ব্যতীত এত আগ মুহুর্তে নবী করীম (সা) অন্য কোন সময় ফজরের সালাত
আদায় করতেন না ৷” আবদুল্লাহ (বা) বলেছেন, এ দুই সালাত এমন যা স্থানতরিত করা হয়ে
থাকেণ্শ্মাগরিব আদায় করা হয় লোকজন মুয্দালিফায় এসে সমবেত হলে, আর ফজর সালাত
অন্য একটি সনদে সংযুক্তরুপে বর্ণিত হয়েছে ৷ তবে সে সনদটি দুর্বল ও অসমর্থিত ৷ তবে
ইমাম আহমদ এবং তিরমিযী (র) আমর ইবন শুআয়ব, র্তার পিতা, তার দাদা সুত্রে রিওয়ায়াত
করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন-
আরাফার দিনের শ্রেষ্ঠ দুআ এবং আমি ও আমার পুর্বেকার নবীগণের বলা উত্তম বাণী “এক
অড়াল্লাহ্ ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই ৷ যিনি একক, যার কোন শরীক ও অংশী নেই ৷ রাজত্ব,
রাজ্য তারই হামদ ম্ভতি তারই এবং তিনিই সব কিছুতেই ক্ষমতাবান ৷ আমর ইবন শুআয়ব (র)
তীর পিতা তার দাদা এ সনদে ইমাম আহমদ (র)এর আরও একটি রিওয়ায়াত রয়েছে তিনি
বলেন, আরাফার দিনে নবী করীম (না)-এর দৃআ ছিল,)
আবদুল্লাহ্ ইবন মানদা (র) বলেন, আহমদ ইবন ইসহাক ইবন আয়ুাব নিশাপুরী (র), ইবন
উমর (বা) হতে তিনি বলেন, রাসুলুল্পাহ্ (সা) বলেছেন-
আরাফার বিকেল বেলা আমার দৃআ এবং আমার পুর্ববর্তী নবীদের দৃআ হচ্ছে ৷
ইমাম আহমদ (র) বলেন, ইয়াষীদ অর্থাৎ ইবন আবদ রাব্বিহী আল জারজিসী (ব) ,
যুবায়র ইবনুল আওয়াম্মা (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ্ (না)-কে
যখন তিনি আরাফার ছিলেন এ আয়াত তিলাওয়াত করতে শুলেছি-
আল্পাহ্ সাক্ষ্য দেয় যে, তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ্ নেই; ফিরিশতাগণ এবং জ্ঞানীগণও (এ
সাক্ষ্য দেন) (আল্লাহ) ন্যায় নীতিতে প্রতিষ্ঠিত; তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ্ নেই; তিনি
পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময় ৷ (৩ : ১৮) ৷
তারপর বললেন, আমিও এ বিষয়ে অন্যতম সাক্ষী হে প্রতিপালক! হাফিজ আবুল কাসিম আত
তাবারানী (র) তার কিতাবুল মানাসিক অধ্যায়ে বলেছেন, হাসান ইবন যুছান্না ইবন মুআয আল-
আম্বারী (র) আলী (বা) হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন ৷ আরাফার
বিকেলে আমার এবং আমার পুর্ববর্তী নবীগণের বলা উত্তম কথা তিরমিযী (র) তীর আদ-দাওয়াত অধ্যায়ে বলেছেন, মুহাম্মদ ইবন হাতিম (রা) আলী
(বা) হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন যে, আরাফা দিবসে অবস্থান কালে রাসুলুল্লাহ্ (সা) যে
দৃআ অধিক পরিমাণে করেছিলেন তাছিল-
ইয়া আল্পাহ্; আপনারই জন্য হামদ, আপনি যেমন বলেন, তেমন এবং আমরা যেমন যদি
তার চেয়ে উত্তম ৷ ইয়া আল্লাহ! আপনাবই জন্য আমার সজ্যোত, আমার কুরবানীর (আমার
দৈহিক ও আর্থিক ইৰাদাত) এবং আমার জীবন ও মরণ এবং আপনাবই জন্য হে প্ৰতিপালক!
আমার উত্তরাধিকার ৷ আপনার কাছে স্মরণ মাগি কবরের আমার হতে, মনের ওয়াসওয়াসা
এবং ৰিশৃত্খল অবস্থা হতে ৷ ইয়া আল্লাহ! আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করি বায়ু যা নিয়ে
চলাচল করে তার অকল্যাণ হতে ৷ তারপর তিরমিযী (র) মন্তব্য করেছেন, হাদীসটি বর্ণনা সুত্রে
বিরল এবং এ সনদ সবল নয় ৷ বায়হাকী (র) এ হাদীছ ৰিওয়ায়াত করেছেন মুসা ইবন
উবড়ায়দা (র)আলী (বা) সুত্রে তিনি বলেন, ৱাসুলুল্পাহ্ (সা) বলেছেন আমার পুর্বে ঘীরা
ছিলেন তাদের এবং আরাফার দিনে আমার অধিকাংশ দুআ হলো-
“এক আল্লাহ্ ব্যতীত আর কোন ইলাহ্ নেই, যিনি একক, র্যার কোন শরীক নেই ৷ তারই
জন্য হড়ামৃদ, তারই জন্য রাজ্য এবং এবং তিনি সব কিছুতেই ক্ষমতাবাণ ৷ ইয়া আল্লাহ! আমার
চোখে নুর দিয়ে দিন ৷ ইয়া আল্লাহ! আমার সিনা উন্মুক্ত ও বিকশিত করে দিন এবং আমার
কাছে আমার কাজ সহজ করে দিন! ইয়৷ আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চইি মনের
কুমস্ত্রনা হতে, কাজ-কর্মের ৰিশৃৎখলা হতে, কবরের ফিতনা ও পরীক্ষার অকল্যান হতে, রাতে
যা অনুপ্রবেশ করে তার অকল্যাণ হতে, বায়ু যা নিয়ে চলাচল করে তার অনিষ্ট হতে এবং সময়
ও কাল চত্রেল্ম অনিষ্ট হতে ৷” তারপর বায়হাকী (র) বলেছেন, মুসা ইবনৃ উবড়ায়দা: (র)
একাকী এ হাদীছ বষ্নাি করেছেন এবং তিনি দুর্বল রাবী, আর তার রিওয়ায়াতের উৎস তার
ভাই আবদুল্লাহ আলী (রা) এর সাক্ষাত লাভ করেন নি ৷
তাবারানী (র) তীর মানাসিক-এ বলেছেন, ইয়াহয়া ইবন উছমান আন-নাসরী (র) ইবন
আব্বাস (বা) হতে, তিনি বলেন, বিদায় হচজ্জ রাসুলুল্পাহ্ (সা) যে সব দুআ করেছিলেন তার
মাঝে ছিল-
ইয়া আল্লাহ্! আপনি আমার কথা শুনাত পান, আমার অবস্থান দেখতে পান, আমার গোপন ও
প্রকাশ্য বিষয় জানেন, আপনার কাছে আমার কোন বিষয়-ই গোপন নয় ৷ আমি ৰিপদঃস্তে, অভাবী,
ফরিয়াদকারী, অশ্রোয় প্রার্থী, ভীত-সস্ত্রস্ত, পাপ ও অপরাধের স্বীকারােক্তিকারী ! আপনার সকাশে
মিসর্কীনের ন্যায় ভিক্ষা প্রার্থী, আপনার কাছে হীন দৃর্বলের ন্যায় কাকুতি মিনতি কারী ৷ শংকিত
পতিতের ন্যায় আপনার কাছে দৃআ করছি-যার পর্দান আপনার সমীপে অবনত, যার অশ্রু
আপনার জন্য প্রবাহিত, মার দেহ আপনার কাছে আবনমিত, যার নাক (মর্যাদা) আপনার কাছে
ধুলি লুষ্ঠিত ৷ ইয়৷ আল্লাহ আপনার সকাশে দৃআর ওয়াসিলায় আমাকে, হে প্রতিপালকা দুর্ভাগা
বানাবেন না; আমার প্রতি হোন স্লেহশীল, দয়াবান ৷ হে শ্রেষ্ঠ প্রার্থনা শ্রবণকায়ী ! হে শ্রেষ্ট দাতা !
হাত তোলা প্রসংগে
ইমাম আহমদ (র) বলেন, হুশায়ম (র)উসামা ইবন যায়দ (র) সুত্রে বলেন, আরাফাতে
আমি নবী করীম (না)-এর সহ-আরােহী ছিলাম ৷ তিনি দ,আ করার জন্য দৃহাত তুললেন ৷
তখন তার উটনী ঝুকে পড়লে তার লাগাম পড়ে গেল ৷ (উসামা বলেন) , তিনি এক হাত দিয়ে
লাগাম ভুলে নিলেন এবং অন্য হা ৷ত (দৃআর জন্য) উর্দ্ধ দিকে তুলে রেখেছিলেন ৷ ইমাম
সােঈ (র) ও অনুরুপ রিওয়ায়াত করেছেন ৷ হাফিজ বায়হা ৷কী (র) বলেন ৷ অ ৷বু আবদুল্লাহ্
আল-হাফিজ (র) ইবন আব্বাস (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আ ৷মি রাসুলুল্লাহ
(না)-কে আরাফ৷ তে দু আ করতে দেখেছি ৷ ফকীর-মিসকীনদের খাদ্য ভিক্ষা ৷র তংগিমায়
দু হাত বুক পর্যন্ত তুলে ৷
উম্মাজাে জন্য দু আ প্রসংগ :
আবু দাউদ তায়ালিসী (র) তার ঘুসনাদে বলেছেন, আবদুল কাহির ইবনুস সারীয়া আব্বাস
ইবন মিরদাস (বা) সুত্রে এ মর্মে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা) আরাফা দিবসের বিকেল
বেলা তার উম্মতের জন্য মাগফিরাত ও রহমতের দুআ করলেন এবং খুব বেশী বেশী দৃআ
করলেন ৷ তখন আল্লাহ পাক তার কাছে ওহী পাঠালেন যে-
আমি তা (কবুল) করেছি ৷ তাদের পরস্পরের প্রতি ত্তস্থেম অনাচ৷ র ব্যতীত, আর আমার হক
ৎক্রান্ত পাপ সমুহ আ ৷মি মাফ করে দিলাম ৷ তখন নবী করীম (সা) বললেন, হে প্ৰতিপ৷ লক ৷
আপনি তো ঐ মাযলুমর্কে তার নিপীড়িত হওয়ার পরিমাণের চাইতে উত্তম বিনিময় দিতে এবং এ
জালিমকে মাফ করে দিতে পারেন ৷ কিন্তু ঐ বিকেলে তার এ দৃআ কবুল করা হল না ৷ পরে
মুযদালিফার সকালে (দশ তারিখে) তিনি পুনরায় দৃআ করলে আল্লাহ্ তাআলা তা কবুল
করলেন “আমি তাদের মাফ করে দিলাম, তখন রড়াসুলুল্লাহ্ (না)-কে মৃদু
হাসতে দােখ কোন কোন সাহাবী তাকে বললেন ৷ ইয়৷ রাসুলুল্লাহ্ ! আপনি এমন একটি সময়
হাসলেন যে মুহুর্তে সাধারণত আপনি হাসতেন না ৷ তিনি বললেন, আমি স্মিত হাসি হেসেছি ণ্
আল্লাহর দৃশমন ইবলীসের দুরবস্থা দেখে, সে যখন জানতে পেল যে, যহীয়ান গরিয়ান আল্লাহ
আমার উম্মা;তর ব্যাপারে আমার দৃআ কবুল করলেন, তখন হায় কপাল, হায় মরণ ! বলে চিৎকার
জুড়ে দিল এবং নিজের মাথায় ধুল৷ বালি ছিটাতে লাগল ৷” আবু দাউদ সিজিসতানী (র) তার
সুনান গ্রন্থে এ হাদীছটি আব্বাস ইবন যিরদাস-এর সনদে সংক্ষেপে রিওয়ায়াত করেছেন ৷
ইমাম ইবন সাজা (র) আয়ুযে ইবন মুহাম্মদ আল-হাশিমী (র) সুত্রে ঐ সনদে আনুপুর্বিক
রিওয়ায়াত করেছেন ৷ ইবন জারীর (র) তার তাফসীবেঃ এ হাদীছটি রিওয়ায়াত করেছেন ৷