মুসলমানরা হারাম মাসকেও হল্দোল করা শুরু করেছে ৷ ইবন হিশাম বলেন, কবিতাটি আসলে
আবদুল্লাহ ইবন জাহাশের ৷ কবিতাটি হলো এরুপ :
তোমরা হারাম মাসে হত্যড়াকে বড় অপরাধ বলে গণ্য করছ, সত্য-সন্ধানী যদি দেখে তাহলে
তার চাইতেও জঘন্যতর হল-
মুহাম্মাদ যা বলেন, তাতে তোমাদের বাধা দান এবং আল্লাহ্কে অস্বীকার করা, আর
আল্লাহ্ভাে দেখেন এবং সাক্ষ্য দেন ৷
এবং মসজিদে হারাম থেকে তোমাদের বের করাটা তথাকার বাসিন্দাদের, যাতে দেখা না
যায় আল্লাহ্র ঘরে কোন সিজদাকারীকে ৷
আর আমরা ৷ যদিও তোমরা আমাদেরকে অভিযুক্ত কর তার হত্যার জন্য, ইসলাম বিদ্বেষী
আর বিদ্রোহী বলে পাল দাও ৷
নাখলায় ইবন হাযরামীর রক্তে সিক্ত করেছি আমাদের বর্শা, যখন ওয়াকিদ প্রজ্বলিত
করেছিল যুদ্ধের আগুন ৷
আর আমাদের হাতে বন্দী ছিল উছমান ইবন আবদুল্লাহ, কয়েদ থেকে তাকে মুক্ত করতে
প্রয়াসী হয় তারা ৷
অনুচ্ছেদ
হিজরী দ্বিতীয় সনে বদর যুদ্ধের পুর্বে কিবলা পরিবর্তন প্রসঙ্গে
কোন কোন ঐতিহাসিক বলেন : দ্বিতীয় হিজরীর রজব সালে এ ঘটনাটি ঘটে ৷ কাতাদা
এবং যায়দ ইবন আসলামও একথা বলেন এবং এটা মুহাম্মদ ইবন ইসহাকেরও একটি বর্ণনা ৷
ইমাম আহমদ (র) ইবন আব্বাস (রা) থেকে যা বর্ণনা করেন, তা থেকেও এটা প্রতীয়মান হয় ৷
বারা’ ইবন আমির-এর হাদীছ থেকে, যে সম্পর্কে পরে আলোচনা আসছে এবং ওটাই স্পষ্টতর ৷
আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷
কেউ কেউ বলেন, ঐ বছর শাবান মাসে এ ঘটনাটি ঘটে ৷ ইবন ইসহাক বলেন, আবদুল্লাহ
ইবন জাহাশ এর অভিযানের পর ৷ কেউ কেউ বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর মদীনায় আগমনের
১৮ মাসের মাথায় শাবান মাসে কিবলা পরিবর্ত্য৷ হয়েছিল ৷ ইবন জারীর সুদ্দী সুত্রে এ উক্তি
উদ্ধৃত করেছেন এবং এর সনদ ইবন আব্বাস, ইবন মাসউদ এবং কতিপয় সাহাবী সুত্রের ৷
জমহুরের মতে হিজরতের ১৮ মাসের মাথায় শাবান মাসের মধ্য ভাগে কিবলা পরিবর্তন হয় ৷
মুহাম্মদ ইবন সাআদ এবং ওয়াকিদী সুত্রে বর্ণিত আছে যে, মধ্য শাবানে মঙ্গলবার কিবলা
পরিবর্ভা হয় ৷ এভাবে সময় নির্দিষ্টকরণ সন্দেহাডীত নয় ৷
আকাশের দিকে তোমার বারবার তাকানাে আমি অবশ্যই লক্ষ্য করি ৷ সুতরাং তোমাকে
অবশ্যই এমন কিবলাব দিকে ফিরিয়ে দেবাে, যা তুমি পসন্দ করবে ৷ অতএব তুমি মড়াসজিদুল
হারামেব দিকে মুখ ফিরাও ৷৫ তোমরা যেখানেই থাকে৷ না কেন , সেদিকেই মুখ ফিরাও ৷ আর
যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে, তারা নিশ্চিতভাবে জানে যে, তা তাদের পালনকর্তার পক্ষ
থেকে সত্য ৷ তারা যা করে, সে বিষয়ে অ ৷ল্লাহ্ গাফিল নন (২ : ১৪৪) ৷
উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে আমি তাফসীর গ্রন্থে বিস্তারিত আলোচনা করেছি ৷ এর
আগে পরে নিবেধি ইয়াহ্রদী এবং মুনাফিক ও বড় বড় জা ৷হিলদের আপত্তি-অভিযােগেরও আমরা
জবাব দিয়েছি ৷ কারণ এটা ছিল ইসলামে সংঘটিত প্রথম নাসৃখ বা রহিতকরণ এর ঘটনা ৷ আর
এটা এজন্য যে, আল্লাহ্ তাআলা ইতোপুর্বে-
আমি কোন আয়াত রহিত করলে কিৎবা বিস্মৃত হতে দিলে তার চ ই উত্তম না তার
সমতুল্য কোন আয়াত আনয়ন করি ৷ তুমি কি জা ন না যে, আল্লাহ্ই সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান ? (২
৪ ১০৬) ৷ এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইঙ্গিত করেন যে, এক আয়াত দ্বারা অপর আয়াতকে
রহিত করা জাইয আছে ৷ ইমাম বুখারী আবু নুআয়ম ধারা থেকে বর্ণনা করে বলেন, নবী
করীম (সা) বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে ১৬ বা ১৭ মাস নামায আদায় করেন; কিতু
তিনি পসন্দ করতেন যে, বায়তুল্লাহ্ তার কিবলা হোক ৷ বায়তৃল্লাহ্র দিকে মুখ করে তিনি প্রথম
নামায আদায় করেন আসরের ৷ আরো অনেকেই তার সঙ্গে নামায আদায় করেন ৷ তাদের সঙ্গে
নামায আদায় করেছেন এমন এক ব্যক্তি বেরিয়ে যান এবং দেখেন যে, মসজিদে লোকজন
নামায আদায় করছেন ৷ তখন তিনি বললেন : আমি আল্লাহ্কে সাক্ষী রেখে বলছি যে, আমি
নবী (না)-এর সঙ্গে মক্কার দিকে মুখ করে নামায আদায় করে এসেছি ৷ তারা তখন রুকুতে
ছিলেন ৷ সে অবন্থায়ই তারা বায়তুল্লাহ্র দিকে ঘুরে যান ৷ কিবলা পরিবর্তনের আগে যাদের
মৃত্যু হয়েছে, তাদের কি অবস্থা হয়ে ? এর জবাবে আল্লাহ তাআলা আয়াত না ৷যিল করেন :
আল্লাহ এমন নন যে, তোমাদের ঈমান পণ্ড করবেন ৷ নিঃসন্দেহে আল্লাহ মানুষের প্ৰতি
অবশ্যই অতি দয়ার্দ্র, মহা দয়ালু ৷ (বলা বাহল্য, উক্ত আয়াতে ঈমান বলতে নামায বুঝানো
হয়েছে) ৷ ইমাম মুসলিম ভিন্ন সুত্রে হাদীছটি বর্ণনা করেন ৷ ইবন আবু হাতিম বারা’ (রা)
থেকে বর্ণনা করে বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে (মুখ করে) সােল বা সতের
মাস নামায আদায় করেন ৷ কাবার দিকে মুখ করা তীর পসন্দনীয় ছিল ৷ তাই আল্লাহ আয়াত
নাযিল করলেন :
রাবী বলেন, তাই তিনি কাবার দিকে মুখ ফিরান, তখন নিবেধি ইয়দ্বহ্রদীরা বললো :
যে কিবলায় তারা প্রতিষ্ঠিত ছিল, তা থেকে কিসে তাদেরকে ফিরাল ? (২ : ১৪২) ৷ তখন
আল্লাহ নাযিল করলেন :
বল, পুর্ব-পশ্চিম আল্লাহর, তিনি যাকে ইচ্ছা সিরাতে মুন্তাকীমে চালিত করেন (২ : ১৪ ২)
সারকথা এই যে, রাসুলুল্পাহ্ (সা) মক্কায় বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে নামায আদায়
করতেন আর কাবা থাকতো তার সম্মুখে, যেমন ইমাম আহমদ (র) ইবন আব্বাস (বা) সুত্রে
বর্ণনা করেছেন ৷ কিত্তু মদীনায় হিজরত করার পর এটা সম্ভব ছিল না যে, তিনি দু’ কিবলা পানে
এক সঙ্গে মুখ করবেন ৷ তাই মদীনায় আগমনের শুরু থেকে ষোল অথবা সতের মাস কাবাকে
পেছনে রেখে নামায আদায় করেন ৷ সে হিসাবে এ ঘটনা হবে হিজরী দ্বিতীয় সনের রজব
মাসে ৷ আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷ আর নবী করীম (সা) ভালবাসতেন যে, হযরত ইব্রাহীম
(আ)-এর কিবলা কাবার দিকে তার কিবলা হোক ৷ এজন্য তিনি আল্লাহর নিকট অতি বিনয়
আর মিনতি সহকারে দুআ করতেন ৷ তাই তো তিনি হাত তুলে দুআ করতেন আর তার দৃষ্টি
থাকতো আসমানের দিকে ৷ তখন আল্লাহ্ নাযিল করলেন :
কিবলা পরিবর্ত্যনর নির্দেশ এলো রাসুলুল্লাহ্ (সা) মুসলমানদের উদ্দেশ্যে খুতবা দেন এবং
তাদেরকে এটা অবহিত করেন ৷ এ মর্মে নাসাঈতে আবু সাঈদ ইবন মুআল্লা থেকে হড়াদীছ বর্ণিত
আছে ৷ আর এটা ছিল যুহরের সময় ৷ আবার কেউ কেউ বলেন, কিবলা পরিবর্তনের বিধান
আসে দু নামাযের মধ্যবর্তী সময়ে ৷ মুজাহিদ প্রমুখ একথা বলেন ৷ আর বুখারী-মুসলিমে বারা
(রা) থেকে বর্ণিত রিওয়ায়াত দ্বারা এ মতের সমর্থন পাওয়া যায় ৷ এতে বলা হয় যে, রাসুলুল্পাহ্
(সা) কাবায় মদীনায় দিকে প্রথম যে নামায পড়েন, তা ছিল আসরের নামায ৷ বিস্ময়ের ব্যাপার
এই যে, পরদিন ফজর পর্যন্ত কুবাবাসীদের নিকট এখবর পৌছেনি ৷ বুখারী-ঘুসলিমে ইবন উমর
(রা) সুত্রে একথাও প্রমাণিত ৷ তিনি বলেন, ফজরে কুবার লোকেরা নামাযে ছিলেন ৷ এসময়
জনৈক আগন্তুক এসে বললেন : রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর প্রতি আজ রাত্রে কুরআনের আয়াত নাযিল
হয়েছে, যাতে কাবার দিকে মুখ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে ৷ তখন তারা কিবলামুখী হলেন
এবং তাদের চেহারা ছিল সিরিয়া তথা বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে, তখন তারা কাবার দিকে
ঘুরে গেলেন ৷ সহীহ্ মুসলিমে আনাস ইবন মালিক (যা) থেকে অনুরুপ বর্ণনা রয়েছে ৷
আসল কথা এই যে, কাবার দিকে কিবলা পরিবর্ত্যনর আয়াত দ্বারা আল্লাহ তাআলা
বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে নামায পড়ার বিধান রহিত করে দেন ৷ তখন নির্বোধ্,
অজ্ঞ-মুর্থ আর গব্যেটর দল টিপ্পনি কেটে বলতে শুরু করলো— তারা যে কিবলার অনুসারী
ছিল, তাদেরকে তা থেকে ফিরালাে কিসে : অথচ আহলে কিতড়াবের কাফিররা জানভাে যে, এই
কিবলা পরিবর্তনটা আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়েছে ৷ কারণ, তাদের কিতাবেই তারা মুহাম্মদ
(না)-এর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানভাে যে, মদীনা হয়ে তার হিজরত স্থল ৷ তারা একথাও জানভাে
যে, কাবার দিকে মুখ করার জন্য অনতিবিলন্বে তাকে নির্দেশ দেয়া হবে ৷ যেমন আল্লাহ বলেন
আর যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে, তারা নিশ্চিত আসে যে, তা তাদের পালনকর্তার পক্ষ
থেকে আগত সত্য ৷
এসব সত্বেও আল্লাহ তাআলা তাদের প্রশ্নের জবাব দিয়ে বলেন :
অর্থাৎ, আল্লাহ্ এমন মালিক, কর্তৃত্ব প্রয়ােগকারী এবং হুকুমদাতা, যার হুকুম কেউ রদ
করতে পারে না ৷ আপন সৃষ্টির ব্যাপারে তিনি যা ইচ্ছা তাই করেন এবং শরীআতের ব্যাপারেও
তিনি যেমনটা ইচ্ছে হুকুম করেন ৷ আর তিনিই যাকে ইচ্ছা সরল পথে চালিত করেন ৷ আর
যাকে ইচ্ছা সুষ্ঠু পথ থেকে বিচ্যুত করেন ৷ এতে রয়েছে তার হিকমত ও রহস্য, সে জন্য সন্তুষ্ট
থাকা এবং তা মেনে নেয়া কর্তব্য ৷
তারপর আল্লাহ তাআলা বলেন :
এভাবে আমি তােমাদেরকে এক মধ্যপন্থী (শ্রেষ্ঠ) উম্মতরুপে প্রতিষ্ঠিত করেছি, যাতে
তোমরা মানব জাতির জন্য সাক্ষী স্বরুপ হও এবং রাসুল তোমাদের জন্য সাক্ষী স্বরুপ হন ৷
(২ : ১৪৩)
অর্থাৎ, যেভাবে আমি৫ আমাদের জন্য নামাযে উত্তম দিক নির্ধারণ করে দিয়েছি এবং
তোমাদের পিতা ইব্রাহীম (আ) এর কিবলার দিকে তোমাদেরকে চালিত করেছি, যিনি ছিলেন
আবুল আম্বিয়া’ তথা তৎপরবর্তী নবীগণের পিতা, যে কিবলার দিকে মুখ করে মুসা (আ) এবং
প তার পুর্ববর্তী নবীগণ নামায আদায় করতে ন, ঠিক সেভাবেই আ আমাদেরকে সর্বোত্তম জাতি
করেছি, করেছি সকল জনগোষ্ঠীর মধ্যে সম্মান আর মর্যাদার অধিকারী, করেছি বিশ্বের
সাবনির্য স এবং নতুন পুরান সকলের মধ্যে সবচেয়ে বেশী সম্মানের অধিকারী, যাতে তোমরা
কিয়ামচ তর দিন মানুষের উপর সড়াক্ষী হতে পায়, যখন তারা জড়ো হবে তোমাদের নিকট এবং
তারা তোমাদের দিকে গ্রেষ্ঠত্বের ইঙ্গিত করতে পারে, যেমন সহীহ বুখারীতে প্রমাণিত আছে ৷
আবু সাঈদ থেকে মারকু রুপে বর্ণিত আছে যে কিয়ামতে তর দিন এ উন্মতের জন্য নুহ (আ) কে
সাক্ষী রুপে হাযির করা হবে ৷ আর সময়ের দিক থেকে অনেক আগের হওয়া সত্বেও যদি নুহ্
(আ ) কে এ উম্মতে তর জন্য সাক্ষীরুগে পেশ করা হয় তাহলে পরবভীর্টদেরকে ( তা অতি
উত্তমরুপেই পেশ করা হতে পারে ৷ এরপর এ ঘটনায় সন্দেহ্ পাে ড়াযণকারীর প্রতিশ্ ৷৷স্তি আপতিত
এবং এ ঘটনাকে সত্য বলে যে মেনে নেয়, তার প্রতি নিআমত বর্ষণের যুক্তিও তাৎপর্য বর্ণনা
করে আল্লাহ্ তা জানা বলেন-
তুমি যে কিবলার অনুসারী ছিলে, তাকে আমি এ জন্য প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম যাতে আমি
জানতে পারি কে রাসুলের অনুসরণ করে (২ং : ১৪৩) ৷ ইবন আব্বাস (রা) বলেন, আমরা
কেবল দেখতে চাই কে রাসুলের অনুসরণ করে আর কে পেছনে ফিরে যায় ৷
যদিওত ৩বড় অর্থাৎ যদিও ঘটনা হিসাবে এটা বড় এবং ব্যাপার হিসাবে কঠিন কঠোর,
তবে তার জন্য নয়, যাকে আল্লাহ্ হিদায়াত করেন ৷ অর্থাৎ তারা যে ঘটনা বিশ্বাস করে, তা
মেনে নেয়, সে সম্পর্কে মনে কোন রকম সন্দেহ-সংশয় পোষণ করে না, বরৎস সন্তুষ্টচিত্তে ঈমান
আনে এবং সে মতে আমল করে ৷ কারণ, তারা মহান বিধানদাতার বান্দা , যিনি মহাশক্তিশালী,
পরম ধৈর্যশীল , সুক্ষ্মদর্শী এবং সর্বজ্ঞ ৷
আর আল্লাহ্ এমন নন যে, তোমাদের ঈমান পণ্ড করবেন, মানে বায়তৃল মুকাদ্দাসের দিকে
মুখ করার বিধান দিয়ে এবং সেদিকে ফিরে নামায আদায় করা দ্বারা ৷
আর আল্লাহ্ তো মানুষের প্রতি অবশ্যই অতি ৩দয়াময়, বড় যেহেরবান ৷ এ সম্পর্কে অসংখ্য
হাদীছ রয়েছে, তাফসীর গ্রন্থে তা বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে ৷ ততোধিক বিস্তারিত
আলোচনা করবো আমার আল-আহকামুল কাবীর’ গ্রন্থে ৷ ইমাম আহমদ বর্ণনা করেন যে,
আলী ইবন আসিম আইশা (রা) সুত্রে বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন (আর্থাৎ) আহ্লে
কিতাব সম্পর্কে তারা আমাদেরকে জুমুআর দিন এবং কিবলার চাইতে অন্য কোন জিনিসের
জন্য বেশী হিৎ না করে না আল্লাহ আমাদেরকে জুমুআর দিন দান করেছেন ৷ আর ইয়াহ্রদীরা
এ সম্পর্কে গােমরাহ হয়েছে ৷ আল্লাহ আমাদেরকে কিবলার দিকে হিদায়াত করেছেন ইয়াহ্রদীরা
কিবলা সম্পর্কে গােমরাহ ৷ ইমামের পিছনে আমীন বলার জন্যও চারা আমাদেরকে হিংসা
করে ৷
দ্বিতীয় হিজরীতে বদর যুদ্ধের পুর্বে রমাযান
মাসের রোয৷ ফরম হওয়া প্রসঙ্গে
ইবন জারীর বলেন : এই সনে রমাযানের রােয়৷ ফরম করা হয় ৷ কেউ কেউ বলেন যে ,
এবইি বছর শাবান মাসে রোযা ফরম করা হয় ৷ এরপর তিনি বর্ণনা করেন যে রাসুলুল্লাহ (সা )
মদীনায় আগমন করে দেখতে পান যে ইয়াহুদীর৷ আশুরার দিন রােযা পালন করছে ৷
সম্পর্কে তিনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করলে তারা বলে৪ এ এমন একটা দিন যেদিন আল্লাহ মুসএা
(আ)-কে নাজাত দেন (এবং এ দিনে ফিরআওনের লোকজনকে ডুবিয়ে মারেন ), তখন
রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন : তোমাদের চাইতে আমরাই বরং মুসার বেশী ঘনিষ্ঠ ৷ তাই তিনি
নিজে আশুরার রােযা রাখেন এবং লোকজনকে এ দিনে রোয৷ রাখার নির্দেশ দেন ৷ বুখারী এবং
মুসলিম শরীফে ইবন আব্বাস (রা) সুত্রে হাদীছটি বর্ণিত আছে ৷ আল্লাহ তাআল৷ বলেন :
হে ঈমানদ৷ ৷রগণ! তোমাদের জন্য সিয়ামের বিধান দেয়া হলো, যেমন বিধান দেয়া হয়েছিল
তোমাদের পুর্ববর্তিগণকে, যাতে করে তে ড়ামরা মুত্তাকী হতে পার (সিয়াম) স্বল্প
কয়েকদিনের ৷£ তোমাদের মধ্যে কেউ পীড়িত হলে বা সফরে থাকলে অন্য সময় এ স০ খ্যা পুরণ
করে নিতে হবে ৷ এটা যাদেরকে অতিশয় কষ্ট দেয় তাদের কর্তব্য এর পরিবর্তে ফিদয়া-
একজন অভাবগ্রস্তকে খাদ্য দান করা ৷ যদি কেউ স্বত৪স্ফুর্তভাবে সৎকার্য করে তবে তা তার
পক্ষে অধিক কল্যাণকর ৷ আর সিয়ড়াম পালন করাই তে ৷মাদের জন্য অধিকতর কল্যাণকর-
যদি তোমরা জানতে ৷ রমযান মাস, এ মাসে মানুষের দিশারী, সৎপথের স্পষ্ট নিদর্শন ও
সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরুপে কুরআন নাযিল হয়েছে ৷ সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এ মাস
পাবে তারা যেন এতে রোযা পালন করে ৷ আর কেউ পীড়িত থাকলে বা সফরে থাকলে অন্য
সময় এ স০ খ্যা পুরণ করবে ৷ আল্লাহ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান, যা কষ্টকর তা চান না
এ জন্য যে তোমরা স০ খ্যা পুর্ণ করবে এবং৫ তোমাদেরকে সৎপথে পরিচালিত করার জন্য
তোমরা আল্লাহর মহিমা ঘোষণা করবে এবং যাতে তোমরা শুকরিয়া আদায় করতে পার (২ :
১৮৩-১৮৫) ৷