সেই সাফরা এলাকার একজন হচ্ছেন উবায়দা, তুমি তার জন্যে র্কাদো যিনি ছিলেন
যেহমান মুসাফিরের জন্যে নিবেদিত এবং বিপদকালে দুঃস্থ বিধবারা তার কাছে আসতাে ৷ তিনি
ছিলেন অসহড়ায়দের জন্যে বৃক্ষ স্বরুপ ৷
তুমি র্কার্দো সে সব লোকের উদ্দেশ্যে যারা প্রতেব্রক শীতের মওসুমে দুর্ভিক্ষের কারণে
দিগন্তরেখা লাল হয়ে যাওয়ার সময় তার নিকট আসতাে ৷
আর তুমি ইয়াডীমদের স্মরণে র্কাদো যারা ঝঞাবায়ু প্রবাহিত হলে তার কাছে এসে
আশ্রয় নিত ৷ আরও র্কড়াদো ডেগের নীচে আগুন জ্বালানাের জন্যে, যা দীর্ঘ দিন যাবত টগবগ
করে ফুটতেড়া ৷
এরপর যদি কখনও আগুনের তেজ কমে যেত, তখন তিনি মোটা মোটা কাঠ দিয়ে সে
আগুন আবার প্ৰজ্বলিত করে দিতেন ৷
এই ব্যবস্থা তিনি করতেন রাত্রিকালে আগমনকারী পথিক কিৎবা আপ্যায়নের প্ৰত্যাশী
লোকদের জন্যে এবং সেসব পথহারা পথিকদের জন্যে যারা কুকুরের আওয়াজ শুনে সেদিকে
অগ্রসর হয়ে তার কাছে উপস্থিত হত ৷
আতিকার কবিতা
উমাবী তার মাপাযী গ্রন্থে সাঈদ ইবন কুতৃন থেকে বর্ণনা করেন : আতিকা বিনত আবদুল
ঘুত্তালিব পুর্বে এক স্বপ্ন দেখেছিলেন ৷ বদর যুদ্ধের পর স্বপ্নের সাথে মিলে যাওয়ায় নিম্নোক্ত
কবিতা আবৃত্তি করেন :
অর্থ : আমার স্বপ্ন কি বাস্তবে পরিণত হয়নি এবং তার ব্যাখ্যা কি তোমাদের সামনে
আসেনি ? যখন সম্প্রদায়ের একদল লোক পলায়ন করল ৷
যে ব্যক্তি স্বচক্ষে দেখেছে যে, ধারাল তরবারি কী ভাবে সঞ্চালিত হয়েছে, তখন তােমাংদর
কাছে আমার যে স্বপ্ন বিশ্বাসযেগ্যে হয়েছে ৷
আমি তোমাদের নিকট সত্য কথা বলেছিলড়াম, মিথ্যা কথা বলি নাই ৷ বন্তুত আমাকে
মিথ্যাবাদী ঠাওরিয়েছে সে, যে নিজে,মিথুক্লক ৷
হাকীম তাে এমনিতে পালায়নি বরং মৃত্যুর ভয়ে সে পালিয়েছে ৷ অবশ্য পালিয়ে যাওয়ার
সকল পথই তার রুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল ৷
সে দিন তোমাদের মাথার উপরে ছিল ভারতীয় তরবারি এবং বাহরায়নের খৎ গোত্রে
নির্মিত বর্শা যা দেখতে চকমকে ও প্রতিপক্ষের উপর বিজয় নিশ্চিত করে ৷
সে তরবারির ধারাল অংশটি উজ্জ্বলতায় এমন ঝলমল করে যে, যদি কোন গর্জনকান্নী
সিংহরুপ বীরের হাতে পড়ে, তবে তা অগ্লিস্ফুলিঙ্গের ন্যায় মনে হয় ৷
হায় ! আমার পিতার কসম! সেদিন কি অবস্থাই না হয়েছিল, যে দিন মুহাম্মদের সাথে
মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় ৷ যে দিন তুমুল যুদ্ধের সময় গর্দানসমুহ কর্তিত হয়েছিল ৷
ৰু সে দিন সামনা-সামনি যুদ্ধে পাতলা ধারাল তরবারিগুলাে তোমাদের উপর দিয়ে এমন ভাবে
অতিক্রম করে গেল, যেমন দক্ষিণের যেঘমালা আকাশ পথ অতিক্রম করে যায় ৷
এরপর তার অনেক তরবারি কর্ম সম্পাদন করে শীতল হয়ে যায় এবং যে সেগুলোকে
দুঢ়তর করতো, যে ওগুলো ওলট-পালট করে রেখে দেয় ৷
কী দশা আজ সে সব নিহত লোকদের যাদের লাশ বদরের পুরনো নােৎরা কুপে নিক্ষিপ্ত
হয়েছে ৷ আর তড়াদেরই বা কী দুর্দশা, যারা যুদ্ধ করতে এসে আমার ভাইপোর কাছে বন্দী
অবস্থায় আছে ৷
এরা কী দুর্বল নারী ছিল ? নাকি আল্লাহ্র পক্ষ থেকে মৃত্যু এসে তাদেরকে সেখানে হীকিয়ে
নিয়ে গিয়েছিল ? আর মৃত্যু তো একটা র্ফড়াদ হিসাবেই গণ্য হয়ে থাকে ক্ষ্
তাহলে রণাঙ্গনে মুকাবিলার সময় মুহাম্মদকে তার চাচাত ভাইয়েরা কী প্রকৃতিতে
দেখেছিল ? আর অভিজ্ঞতার পরীক্ষা তো যুদ্ধের ময়দানেই হয়ে থাকে ৷
তরবারির প্রচণ্ড আঘাত ণ্তামাদেরকে কি এমন ভাবে সংকীর্ণ করে ফেলেনি, যা প্রত্যক্ষ
করে কাপুরুষরা ঘাবড়ে যায় এবং দিনের বেলায়ই (তরবারির ঝিলিকে) চোখে আকাশের তারা
দেখা যায় ৷
আমি কসম করে বলছি তারা যদি প্রত্যাবর্ত্য৷ করে, তা হলে তুমি তাদেরকে সমুদ্রে
নিক্ষেপ করবে, তারা সেখানে গিয়ে পড়বে ৷ অশ্ববাহিনী যা পরীক্ষা করে অভিজ্ঞতা অর্জন
করেছে ৷
এ যুদ্ধে ব্যবহৃত তরবারির উজ্জ্বলতা যেন সুর্যের কিরণ ৷ সে তরবারির আলোর শিখায় যেন
প্রভাতকালীন সুর্যের লালিমা প্রস্ফুঢিত হচ্ছে ৷
উমাবী তার কিভাবে নিম্নের কবিতাটিও আতিকার বলে উল্লেখ করেছেন ৷
অে
অর্থ : বদর যুদ্ধে নবী মুহাম্মদের জন্যে কেন তোমরা ধৈর্য প্রদর্শন করনি ? আর যুদ্ধে যে
জড়িয়ে যায় ধৈর্যশীল হওয়া তার জন্যে অপরিহার্য ৷ তোমরা সেই তীক্ষ্ণ ধারাল তরবারির আঘাত
থেকে কেন ফিরে এলে না, যে তরবারি বহনকারী মু’মিনদের হাতে ঝলসে উঠছিল ৷
সেই শুভ্র তরবারির সামনে কেন তোমরা সহনশীল হতে পারলে না, যায় ফলে চিহ্নিত স্বল্প
ৎখ্যক মু’মিনের হাতে তোমরা বন্দী হয়ে গেলে ৷
আর তোমরা যুদ্ধের ময়দান থেকে পালিয়ে এলে ৷ সেই লোক কখনও বীর হতে পারে না,
যে অস্ত্র নিয়ে লড়াই করতে গিয়ে পলায়ন করে ৷
মুহাম্মদ তো তোমাদের নিকট সেই বাণী-ই নিয়ে এসেছেন ৷ যে বাণী নিয়ে এসেছিলেন
পুর্ববর্তী নবীগণ ৷ আর আমার ডাইপাে (মুহাম্মদ) একজন পুণ্যবান ও সত্যবাদী ৷ তিনি কোন
করি নন ৷
তোমরা তোমাদের নবীর যে ক্ষতি সাধন করেছ, তা অচিরেই পুষিয়ে যাবে এবং বনু আমর
ও বনু আমির উভয় গোত্রই তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসবে ৷
আবু তালিব পুত্র তালিবের কবিতা
আবু তালিবের পুত্র তালিব রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর প্ৰশংসায় নিম্নোক্ত কবিতা রচনা করেন ৷
এর মধ্যে তিনি বদর যুদ্ধে নিহত ও কুপে নিক্ষেপ্ত কুরায়শদের জন্যে শোক প্রকাশ করেছেন ৷ এ
সময় তিনি তার স্ব-সম্প্রদায়ের ধর্মের উপরই প্রতিষ্ঠিত ছিলেন ৷
অর্থ : শুনে রাখ! আমার চোখ বনু কাআবের জ্যন্য কেদে কেদে অশ্রুশুন্য হয়ে পড়েছে ৷
কিন্তু বনুকাআবকে সে চোখে দেখেনি ৷
জেনে রাখ ! বনু কাআব যুদ্ধ-বিগ্রহে পারস্পরিক সহযোগিতা পরিত্যাগ করেছে এবং
অপরাধে জড়িত হয়ে পড়েছে ৷ ফলে কালের করলে প্রাসে তারা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে ৷
আর বনু আমিরের অবস্থা এই যে, প্রত্যুষে বিপদ এসে পড়লে তারা কাদতে থাকে ৷ হায় ,
যদি আমি জানতাম যে, এ উভয় গোত্রের লোকদেরকে কখন নিকট থেকে দেখার সুযোগ হবে ?
সুতরাং হে আমার ভাইয়েরাৰু হে বনু আবদে শামস ও বনু নাওফিল ৷ আমি তোমাদের
জন্যে নিজেকে উৎসর্গ করে বলছি, তোমরা আমাদের মধ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে দিয়ো না ৷
আর পারস্পরিক ঐক্য ও সংহতি গড়ে ওঠার পর এমন কোন ঘটনা সৃষ্টি করে উপাখ্যানে
পরিণত হয়ে যেয়ো না যে , বিপদগ্রস্ত হওয়ার জন্যে একে অপরকে দােষারোপ করতে থাকবে ৷
তোমাদের কি জানা নেই যে, দাহিস’ যুদ্ধের পরিণতি কী হয়েছিল ৷ আর আবু ইয়াকসুমের
যুদ্ধের কথাও কি স্মরণ নেই যখন তারা ভৈসন্যবাহিনী দিয়ে গিরিপথ ভরে ফেলেছিল ?
যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রতিহত করা না হত যিনি ব্যতীত অন্য কিছুই নেই, তাহলে
বীচার জন্যে তোমরা মাটির নীচে কোন সুড়ৎগও খুজে পেতে না ৷
কুরায়শদের মধ্যে আমরা বড় ধরনের কোন অপরাধ করিনি ৷ শুধু এই কাজটি ব্যতীত যেৰু
ভু-পৃষ্ঠে বিচরণকারীদের মধ্যে সর্বোত্তম লোকটিকে আমরা হিফাযত করেছি ৷
তিনি নির্ভরযোগ্য, বিপদের বন্ধু, তার গুণাবলী মাহাত্ম্যপুর্ণ ৷ তিনি কৃপণ নন এবং
ঝগড়াটেও নন ৷
কল্যাণপ্রাথীরা তার শরণাপন্ন হয় ৷ তারা সর্বক্ষণ তার দৃয়ারে ভীড় করে থাকে ৷ তারা এমন
একটি নহরের কাছে আসে, যার পানি কখনওহ্রড়াস পায় না এবং শুকিয়েও যায় না ৷