আদনান পর্যন্ত হিজাষের আরবদের উর্ধ্বতন
বংশ ধারা
আদনান-এর দুইজন পুত্র ছিলেন ( ১) সাদ (২) আক সুহায়লী বলেন : আর আদনানের
আরো দুইজন সন্তান ছিলেন একজনের নাম হারিছ এবং অপরজনকে বলা হতো মযহব ৷ তিনি
বলেন, তার সন্তানদের মধ্যে যাহ্হাক নামের আরেক জ্যনর উল্লেখ করা হয়েছে ৷ আবার কারো
কারো মতে যাহ্হাক ছিলেন সাদ-এর পুত্র, আদনান-এর নন ৷ তিনি বলেন : কেউ কেউ
বলেছেন যে, আদন-যার নামে আদন বা এডেন নগরীর নামকরণ করা হয়েছে এবং আবইয়ান
ও আদ্নান-এর অপর দৃইপুত্র ছিলেন ৷ এটি তাৰারীর বর্ণনা ৷
আর তাকে আশাআরির বংশে বিবাহ করেন এবং ইয়ামানে তাদের জনপদে বসবাস করেন
ফলে তারা একই ভাষাভাষী হয়ে যান এবং এর ফলে কোন কোন ইয়ামানবাসী ধারণা করেন
র্তারাও ঐ বংশের লোক ৷ ফলে তারা বলে তাকে ইবন আদনান ইবন আব্দুল্লাহ ইবনুল আয্দ্
ইবন ইয়াগুছ ৷ আবার কেউ কেউ বলেন, আক্ ইবন আদ্নান ইবন যাইব (মতান্তরে রাইস)
ইবন আব্দুল্লাহ ইবন আসাদ ৷ আর বিশুদ্ধ কথা হলো আমরা যা উল্লেখ করেছি যে, তারা আসলে
আদ্নান এর বংশধর ৷ এ প্রসঙ্গে করি আব্বাস ইবন মিরদাস বলেন
আক ইবন আদনান, যারা পাসসান গোত্রের সঙ্গে ক্রীড়া-কৌতৃক করতো, যতদিন পর্যন্ত না
তাদেরকে সম্পুর্ণরুপে বিতাড়িত করে দেয়া হয় ৷
আর সাদ এর ছিলেন৷ চার পুত্র নিযার, কুযাআ, কুন্ছ ও ইয়াদ ৷ আর কুযাআ ছিলেন
যা দের ভৈজ্যষ্ঠ সন্তান এজন্য তাকে আবু কুযা আ নামে অভিহিত করা হতো ৷ কুযা আ ৷সস্পর্কে
ইতিপুর্বে আমরা ভিন্ন মতের উল্লেখ করেছি ৷ কিভু ইবন ইসহাক প্রমুখের নিকট এটাই বিশুদ্ধ ৷
আল্লাহই ভালো জানেন ৷
আর কুনৃছ সম্পর্কে বলা হয় যে, তার বং শধারা ধ্বংস হয়ে গেছে, তাদের কেউই আর বেচে
নেই ৷ তবে অতীত ইতিহাস বেত্তাদের এক দলিলের মতে নু মান ইবন মুনযির যিনি ছিলেন
হীরায় কিসৃরার প্রতিনিধি, তিনি ছিলেন কুনৃছ-এর বংশধর ৷ ইতিপুর্বে উল্লেখ করা হয়েছে যে,
ভিন্ন মতে তিনি ছিলেন হিময়া ৷র বং শের লোক ৷ আল্লাহই ভালো জানেন ৷
আর নেবার-এর তিনপুত্র ছিলেন রবীআ, মুযার এবং আনসার ৷ ইবন হিশাম বলেন :
ইয়াদ নামক নেযার অপর এক পুত্র ছিলেন ৷ যেমন করি বলেন :
আর এমন অনেক যুবক আছে, যাদের চেহারা সুন্দর, তারা হচ্ছে ইয়াদ ইবন নিযার ইবন
মাদ এর সন্তান ৷
ইবন হিশাম বলেন : ইয়াদ ও মুযার ছিলেন সহোদর ভাই, র্তাদের ম৷ সাওদা ছিলেন আক
ইবন আদনানের কন্যা ৷ আর রবীআ ও আনসার-এর মা ছিলেন আক ইবন আদনান-এর অপর
কন্যা শাকীকা, মত তবে জুমআ বিনতঅ আক ৷ ইবন ইসহাক বলেন০ ং আনসার হচ্ছেন খাছআম
ও বাজীলার পি৩ ৷ ৷ জরীর ইবন আব্দুল্লাহ আল-বাজা লী এই বাজীলারই অধস্তন বংশধর ৷ তিনি
বলেন : আনসার ইয়ামাংন আগমন করে ইয়ামানীদের সঙ্গে ৷মলেমৈশে সেখানেই বসবাস
করেন ৷ ইবন হিশাম বলেন : ইয়ামানবাসীরা বলে যে, আনৃসাব ইবন আরাশ ইবন লাহ্ইয়ান
ইবন আমর ইবনুল গাওছ ইবন নাব্তৃ ইবন মালেক ইবন যায়ছ ইবন কাহলান ইবন সাবা ৷
আমি বলিং ইতিপুর্বে সাব৷ সম্পর্কে যা বলা হয়েছে ৷৩ তা থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় ৷ আল্লাহ
ভালো জানেন ৷ ঐতিহাসিকরা বলেনং : মুযার হচ্ছেন প্রথম ব্যক্তি যিনি হুদী গান গেয়ে গেয়ে উট
ইাকানাের প্রবর্তক ৷ কা ৷রণ, র্ত৷ ৷র কন্ঠস্বর ছিল সুমধুর ৷ একদিন উটের পিঠ থেকে পড়ে যান ;
মাটিতে পড়ে তার হাত ৫৩ সে গেলে তিনি বলে উঠেনং হায় আমার হাত ৷ হায় আমার হাত ৷ এ
থেকেই উটের দ্রুতগতির প্রচলন হয় ৷ ইবন ইসহাক বলেন : মুযার ইবন নিযারের দুই পুত্র
ছিলেন, ইলিয়াছ ও আইলান আর ইলিয়াসের ছিলেন তিন পুত্র মুদ্রিক৷ , তাবিখা এবং কুমআ ৷
আর এদের মতো ছিলেন খানদাফ বিনৃত ইমরান ইবন ইলহড়াফ ইবন কুযাআ ৷ ইবন ইসহাক
বলেন : মুদরিকার নাম ছিল আমের আর তাবিখার নাম ছিল উমর ৷ তবে তারা দু’জনে মিলে
একটা শিকার করেন ৷ তারা উভয়ে যখন তা রান্না করছিলেন, তখন ভয়ে উটটি পালিয়ে যায় ৷
আমের উটের খোজে বের হন এবং শেষ পর্যন্ত তা খুজে পান ৷ অপরজন রান্নায় ব্যস্ত ছিলেন ৷
উভয়ে পিতার নিকট এসে তাকে এ কাহিনী শুনালে তিনি আমেরকে বললেনং : তুমি হলে
মুদরিকা (পাকড়াওকা রী) আর আমরকে বললেনং তুমি হলে তাৰিখ৷ (রন্ধনকারী) ৷ তিনি আরো
বলেনং মুদাবের বং শধারা সম্পর্কে অবহিত ব্যক্তিদের ধারণা যে, খুযাঅ হাচ্ছেন আমর ইবন
লুহাই ইবন কুম আ ইবন ইলিয়াস এর বংশধর ৷ আমি বলিং এটা স্প্ষ্টি যে, তিনি তাদের বংশের
লোক, কিন্তু তাদের পিত তপুরুষ নন ৷ আর তারা যে হিমৃয়ার গোত্রের লোক, সে কথা আগেই
বলা হয়েছে ৷ আল্লাহই ভালো জানেন ৷
ইবন ইসহাক বলেন : মুদ্রিকার দুই ছেলে খুযায়ম৷ ও হুযাইল আর এদের উভয়ের মা
হচ্ছেন কুযাআ গোত্রের এক মহিলা ৷ আর খুযায়মার সন্তান ছিলেন কিনানা, আসাদ, উসদা
ও হাওন ৷ আবু জাফর তাবারী কিনানার সন্তানদের ব্যাপারে এ চারজনের অতিরিক্ত
আমের হারিছ, নাযীর, খানাম, সাদ আওযা, জারওয়াল, হিদাল এবং পায্ওয়ান এর
নাম উল্লেখ করেছেন ৷ তিনি বলেন : আর কিনানার সন্তান ছিলেন নযর , মালিক, আবদ
মানাত এবং মালকান ৷
কুরায়শ তথা বনু নযর ইবন কিনানা-এর বংশধারা ও শ্রেষ্ঠত্ব
ইবন ইসহাক বলেন : নযর-এর মা বাবা ছিলেন সুর ইবন উদ্ ইবন তাবিখার কন্যা ৷ আর
তার সমস্ত সত্তানৰা তার অন্য ত্রীর গর্ভজাত ৷ এ মতের ব্যিরাধিভা করেন ইবন হিশাম ৷ তার
মতে বাররা ৰিনৃত মুর হচ্ছেন নয্র, মালিক ও মাসুকান-এর মা ৷ আর আবৃদে মানতে-এর মা
হশ্নেন আয্দ সানুআ গোত্রের হানা বিনৃত সুয়াইদ ইবন গিতরীফ ৷ ইবন হিশাম বলেন : নঘৃরই
হচ্ছেন কুরাইশ আর তার সন্তানরাই কুরায়শী নামে পরিচিত হন ৷ তিনি এও বলেন যে, কারো
কারো মতে ফিহ্র ইবন মালিক হচ্ছেন কুরায়শ, আর ন্শুার সম্ভানরা কুরড়ায়শী ৷ যারা তার সন্তান
নয়, তারা কুরায়শী একাধিক কুলজিবিশারদ যথা শায়খ আবু উমর ইবন আব্দুল বার, যুবায়র
ইবন বাক্কার এবং মুহুআব প্রমুখ এ দুটি উক্তির উল্লেখ করেছেন ৷ আবু উবায়দ এবং ইবন
আব্দুল বাবু বলেন : আসআদ ইবন কারন-এর উক্তি মতে অধিকাত্শ ঐতিহাসিক এ মত
পোষণ করেন যে, কুরায়শ হচ্ছেন নযর ইবন কিনানা ৷
আমি বলবো : হিশাম ইবন মুহাম্মদ ইবন সাইব আল-কানবী এবং আবু উবায়দা মাযার
ইবন মুসান্ন৷ এ মতের সমর্থনে প্রমাণ উপস্থাপন করেছেন ৷ আর তিনি শাফিঈ মাযহড়াবের প্রসারে
অবদান রাখেন ৷ পক্ষান্তরে আবু উমর এ মত পোষণ করেন যে, কুরায়শ হচ্ছেন ফিহ্র ইবন
মালিক ৷ এ মতের সমর্থনে তিনি প্রমাণ উপস্থিত করে বলেন যে, বর্তমানে এমন কেউ নেই, যে
নিজেকে কুরড়ায়শী বলে দাবী করে অথচ সে ফিহ্র ইবন মালিক-এর বংশধর নয় ৷ অতঃপর
তিনি এ উক্তির পক্ষে যুবড়ায়র ইবন বাক্কার মুসআর ইবন যুবড়ায়র ৷ এবং আলী ইবন
কায়সান-এর নাম উল্লেখ করে বলেন : এ ব্যাপারেইত এরাই হচ্ছেন সর্বজন স্বীকৃত বিশেষজ্ঞ ৷
আর যুবড়ায়র ইবন বাক্কার বলেন : কুরায়শ ও অন্যান্য বংশধারা সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা একমত
যে ফিহ্র ইবন মালিকই হচ্ছেন কুরড়ায়শদের আদি পুরুষ ৷ ইবন মালিক-এর উর্ধ্বতন পুরুষদের
কেউই কুরায়শ নামে অভিহিত হননি ৷ অতঃপর এ বক্তব্যের সমর্থনে তিনি অনেক প্রমাণ দেন ৷
কুলায়ব ইবন ওয়ায়েল-এর সুত্রে বুখারী বর্ণনা করেন যে, আমি নবীব্জীর ঘরে লালিত যয়নবকে
বললাম, আমাকে জানান যে, নবী করীম (সা) কি মুযার গোত্রের লোক ছিলেলঃ তিনি
বললেনঃ তিনি নযর ইবন কিনানা গোত্রের মুযার গোত্রেরই ছিলেন ৷ আর তাবারানী জাশীশ
আল কিন্দীর বরাতে বর্ণনা করেন যে, রাসুল (না)-এর নিকট কিন্দা থেকে একদল লোক
আগমন করে বললাে৪ আপনি তো আমাদের বংশের লোক ৷ তখন তিনি বললেন, না, বরং
আমরা নসর ইবন কিনানা গোত্রের দোক ৷ আমরা আমাদের মাতৃপক্ষ সম্পর্কে কোন সন্দেহ
পোষণ করি না এবং আমাদের উর্ধ্বতন পিতৃ পুরুষ আমরা অস্বীকার করি না ৷
আশ-বিদায়া ওয়ান নিহায়া (২য় খণ্ড) ৪৯-
আর ইমাম আবু উসমান সাইদ ইবন ইয়াহ্ইয়া ইবন সাঈদ ইবন আব্বাস (রা) সুত্রে বর্ণনা
করেন, শিন্দা গোত্র থেকে জাশীস নামক জনৈক ব্যক্তি নবী করীম (না)-এর নিকট আগমন
করে বলেন : ইয়া রাসুলাল্লাহ ! আমরা মনে করি আবদ মানাফ আম্যাদর বংশের লোক ৷ নবী
করীম (সা) মুখ ফিরড়ায়ে নিলেন ৷ লোকটি ফিরে এসে অনুরুপ বললে তিনি তার থেকে পুনরায়
মুখ ফিরালেন ৷ লোকটি আবারও ফিরে এসে অনুরুপ কথা বললে তিনি বললেন : আমরা নসর
ইবন কিনানার বংশধর ৷ আমাদের মড়াতৃকুল সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করি না আর আমাদের
উর্ধ্বতন পিতৃ পুরুষকে অস্বীকার করি না ৷ তখন রাবী বললেন : আপনি প্রাথম দফায়ই চুপ
করে রইলেন না কেন? এইভাবে আল্লাহ তার নবীর পবিত্র মুখে তাদের দাবী নাকচ করে দেন ৷
এ সনদে হড়াদীসটি গরীব পর্যায়ের উপরন্তু কালবী হচ্ছেন একজন দুর্বল রানী ৷ আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ ৷
ইমাম আহমদ আশঅড়াছ ইবন কায়েস সুত্রে বলেন যে, কিন্দার প্রতিনিধি দলে আমিও নবী
করীম (সা)ষ্-এর নিকট আগমন করি ৷ তখন আমি বললাম : ইয়া রালুলাল্লাহ! আমাদের ধারণা ,
আপনি আমাদের বংশেরই লোক ৷ তখন নবী করীম পুর্বোল্লেখিত হাদীসের অনুরুপ জবাব
দেন ৷ এ বর্ণনার শেযাংশে আছে, অড়াশআস ইবন কায়েস বলেন, আল্লাহর কসম , কুরাইশরা যে
নযর ইবন কিনানার বংশধর, একথা কাউকে অস্বীকার করতে ওনলে শবীয়তের দণ্ডবিধি
অনুযায়ী তাকে বেত্রাঘাত করবো ৷ ইবন মাজাহ্ও এ হাদীসটি উত্তম সনদে বর্ণনা করেছেন ৷ এ
হচ্ছে এ বিষয়ে শেষ কথা ৷ সুতরাং যে তার বিরুদ্ধাচরণ করে, তার কথার প্ৰতি ভ্রাক্ষেপ করা
যাবে না ৷ জারীর ইবন আতিয়া তামীমী হিশাম ইবন আব্দুল মালিক ইবন মারওয়ান-এর
প্রশংসায় বলেন :
যে মা কুরাইশকে জন্ম দিয়েছেন তার বংশে কোন কলংক নেই এবং তিনি বন্ধ্যাও নন,
কোন নেতা তোমাদের পিতৃপুরুষের চাইতে অধিকতর সস্রান্ত নয়, আর কোন মামা তামীম
গোত্রের চাইতে অধিক সম্মানিত নয় ৷
ইবন হিশাম বলেন : এ উক্তিটি নযর ইবন কিনানার মা সম্পর্কে ৷ আর তিনি হলেন তামীম
ইবন মুর-এর বোন বা,র্বা বিনৃত মুর ৷ কুরায়াশ শব্দের উৎপত্তি সম্পর্কে কথিত আছে যে,
তাকাররুশ শব্দ থেকে-এর উৎপত্তি যার অর্থ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর একত্র হওয়া ৷ আর
এটা হয়েছে কুসাই ইবন কিলাব-এর যমানায় ৷ তারা ছিল বিচ্ছিন্ন ৷ তিনি তাদেরকে হেরেম
শরীফে একত্র করেন ৷ পরে এর বিবরণ আসছে ৷ হুযাফা ইবন পানিম আলআদবী বলেন :
তোমাদের পিতা কুসাই সমবেতক্ড়ারী নামে অভিহিত হতেন ৷ তারই মাধ্যমে আল্লাহ
সমবেত করেছেন ফিহ্রের কবীলাকে ৷ কোন কোন ঐতিহাসিক বলেন : কুসাইকে বলা হতো
কুরাইশ, যার অর্থ একত্র করা ৷ আর তাকাররুশ অর্থও একত্র করা ৷ যেমন আবু খালদা আল
ইয়ড়াশকারী বলেন :
তাইয়েরা আমাদের বিরুদ্ধে জড়ো করেছে অপরাধের অভিযোগ, আমাদের যুগের এবং
প্রাচীন যুগের কাহিনীতে ৷
আবার কেউ কেউ বলেন, কুরাইশ নামকরণ করা হয়েছে তাকড়াররুশ ( এ )ও;; ) থেকে :
যার অর্থ উপার্জ্য৷ করা, ব্যবসা করা ৷ ইবন হিশাম এটি উল্লেখ করেন ৷ অভিধানবেত্তা জাওহারী
বলেন : কুরাইশ (এই এ) অর্থ উপার্জ্য করা, জড়ো করা আর ব্যাকরণবিদ ফাররা বলেন
এ নামেই কুরাইশ কবীলার নামকরণ করা হয়েছে ৷ তাদের পুর্বপুরুষ হচ্ছেন নযর ইবন
কিনানা ৷ তার সন্তানগণই কুরড়ায়শী-উর্ধতনরা নন ৷ আবার কারো কারো মতে, কুরাইশ নামকরণ
হয়েছে তাক্তীশ শব্দ থেকে ৷ হিশাম ইবন কালবী বলেন, নযর ইবন ল্কিনানার নাম রাখা হয়
কুরাইশ ৷ কারণ, তিনি মানুষের আভার-অনটনের খোজ খবর নিতেন এবং নিজের অর্থ দ্বারা
তাদের অভাব পুরণ করতেন ৷ আর তাকরীশ ( এণ্; এম্বু; ) অর্থ হম্মে তাফ্তীশ (এর্ট;ন্;ও) তথা
অনুসন্ধান ৷ আর র্তার সম্ভানরা মওসুমের সময়ে লোকজনের অভাব-অনটনের খোজ নিতেন ৷
যাতে লোকেরা দেশে ফিরে যেতে পারে, সে ব্যবস্থা তারা করতেন ৷ একারণে তাদের নামকরণ
করা হয় কুরাইশ ৷ এ নাম তাদের এ কাজের জন্য ৷ এই ,;: অর্থ যে তাফতীশ তথা অনুসন্ধান,
এ অর্থে করি হড়ারিস ইবন হিল্লিযা বলেনঃ
হে আমাদের সম্পর্কে অনুসন্ধানী বক্তা ! আম্র-এর নিকট, তার কি কোন স্থিতি আছেঃ এটি
যুরায়র ইবন বাক্কারের বর্ণনা ৷ আবার কেউ কেউ বলেন, কৃরায়শ শব্দটা কিংংণ ( এ এও)
শব্দের তাসপীর তথা ক্ষুদ্রতা জ্ঞাপক শব্দ ৷ আর এ এও অর্থ সমুদ্রে ৰিচরণকারী প্রাণী ৷ কোন
করি বলেন :
আর কুরায়শ হ্রুচ্ছ সমুদ্রে বসবাস করা প্রাণী, যে কারণে কুরায়শকে কুরায়শ নামে
আখ্যায়িত করা হয়েছে ৷
আবু রুকানা আল-আমিরী সুত্রে বলেন যে, মুআবিয়া (রা) ইবন আব্বাস (রা)-কে
জিজ্ঞাসা করলেন, কুরায়শের এরুপ নামকরণের কারণ কী? তিনি বললেন : একটি
সামুদ্রিক প্রাণীর কারণে, যা কিনা সমুদ্রের সর্ববৃহৎ প্রাণী ৷ তাকে বলা হয় কিরশ ৷ ক্ষুদ্র-
বৃহৎ যার নিকট দিয়ে এ প্রাণী অতিক্রম করে, তাকেই গ্রাস করে ৷ তিনি বললেন, এ প্রসঙ্গে
আমাকে কোন কবিতা আবৃত্তি করে শুনান ৷ তিনি আমাকে করি জুমাহীর কবিতা শুনালেন,
যাতে তিনি বলেন :
আর কুরায়শ সে প্রাণী, যে বাস করে সমুদ্রে, এ কারণে কুরায়শের নাম করণ করা
হয় কুরায়শ ৷
সে ক্ষুদ্র-বৃহৎ সবই গ্রাস করে নেয়, ছাড়ে না কোন পাখ৷ ওযালার পাখনা ৷
এভাবেই জনপদে কুরায়শ গোত্র, গ্রাস করে জনপদকে প্রচণ্ড ভাবে
আখেরী য়মানায় কুরায়শদের একজন নবী হবেন, যিনি তাদের অনেকের হত্যার ও যখমের
কারণ হবেন ৷ আবার কেউ কেউ বলেন, কুরায়শ ইবনুল হারিছ ইবন ইয়াখলাদ ইবন ফিনানার
নামানুসারে কুরায়শ নামকরণ করা হয়েছে ৷ আর তিনি ছিলেন বনু নম্বর-এর নেতা এবং তাদের
সঞ্চিত সম্পদের রক্ষক ৷ আরবরা ৰলতো, কুরায়শের দল এসেছে ৷ ঐতিহাসিকরা বলেন, ইবন
বল্ম ইবন কুরায়শ ছিলেন ঐ ব্যক্তি, যিনি ঐতিহাসিক বদর কুপ খনন করান, কুরআন মজীদে
এ যুদ্ধকে ইয়াওমুল ফুরকান তথা পার্থক্যের দিন এবং দুটি দলের মুখোমুখি হওয়ার দিন বলে
উল্লেখিত হয়েছে৷ আল্লাহ্ই ভালো জানেন ৷ কুরাইশের দিকে সম্পৃক্ত করে কারশী এবং কুরায়শী
বলা হয় ৷ জাওহারী বলেন, এটাই যুক্তি সঙ্গত ৷ করি বলেনঃ
সকল কুরড়ায়শী চেহারায় রয়েছে পাম্বীর্যের ছাপ ৷ দ্রুত ছুটে যায় সে বদানতো ও
সম্মানের দিকে ৷
অতিধানবেত্তা জাওহারী বলেন, কুরায়শ শব্দটি যদি শাখাগােত্র অর্থে ব্যবহৃত হয় ৷ তবে
তা হবে এ্,; আর যদি গোত্র অর্থে ব্যবহৃত হয় তবে তা হবে
প্রসঙ্গে জনৈক করি বলেন ৷
সমস্যার মুকাবিলার কুরায়শরা যথেষ্ট তাতে তারা নেতৃত্ব দেয় ৷১ আর মুসলিম তার সহীহ
গ্রন্থে ওয়াছিলা ইবনুল আসকা’ সুত্রে বলেন, ৰাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন : আল্লাহ তাআলা
ইসমাঈলের বংশধরদের মধ্য থেকে ফিনানাকে মনোনীত করেছেন, আর কুরড়ায়শকে মনোনীত
করেছেন ফিনানার সন্তানদের মধ্য থেকে এবং হাশিমকে মনোনীত করেছেন কুরায়শ থেকে
টীকা ১ এটি আদী ইবন রুফা এর কবিতার অংশ বিশেষ ৷ এতে তিনি লীেদ ইবন আব্দুস মালিকএব প্রশংসা করেন ৷
কবিতার প্রথমাংশ এই
এবং আমাকে মনোনীত করেছেন বনু হাশিম থেকে ৷ আবু উমর ইবন আব্দুল বার বরেন ;; বনু
আব্দুল মুত্তান্সিবকে বলা হয় রাসুলুল্লাহ্র পরিজন (এ প্) ৷ বনু হাশিম শাখা গোত্র ( ১ব্র)
বনু অব্দে মানাফ তার উপগোত্র (; ) এবং কুরায়শ তার গোত্র ( ও ) ঘুণ্; ) এবং বনু কিনানা
তার কবীল ড়া ( ৰুাস্) এবং মুযার তার কওম (এ্যা) ৷ কিয়ামতের দিন পর্যন্ত তার প্রতি
আল্পাহ্র পক্ষ থেকে সর্বদা দরুদ ও সালাম বর্ধিত হোক ৷ ইবন ইসহাক ৰ্লোঃ নযর ইবন
কিনানার সন্তান হচ্ছেন মালিক এবং মুখাল্লাদ ৷ ইবন হিশাম সাল্ত নামের তার আরেক
সন্তানের কথা উল্লেখ করেছেন ৷ এবং তাদের সকলের মা হচ্ছেন সা’দ ইবন যারব আল-
উদওয়ানী ৷ কান্থীর ইবন আব্দুর রহমান, যিনি খুযাআ গোত্রের অন্যতম সম্মড়ানীত ব্যক্তি এবং বনু
মুলাইহ্ ইবন আমর এর অন্তর্ভুক্ত ৷ ইবন হিশাম বলেন : বনু মুলায়হ্ ইবন আমর সালুৎ ইবন
নযর এর পুত্র হচ্ছেন ফিহ্র ৷ এই ফিহরের মা ছিলেন জন্দলা বিনতৃ হারিছ ইবন মুযায আল
আসগর ৷ আর ফিহ্র এর সন্তানরা হচ্ছেন পালিব, মুহারিব, হারিছ এবং আসাদ আর এদের যা
লায়লা বিনত সাআছ ইবন হুযাইল ইবন মুদৃরিক৷ ৷
ইবন হিশাম বলেনঃ জন্দলা বিনত ফিহ্র তাদের বৈমাত্রেয় বোন ৷ ইবন ইসহাক বলেনঃ
পালিব ইবন ফিহ্র এর সন্তান হচ্ছেন লুয়াই এবং তায়ম ৷ এদেরকে বলা হয় বনুল আদৃরাম আর
তাদের মা হচ্ছেন সালমা বিনৃতে আমর আল-খুযায়ী ৷ আর ইবন হিশাম বলেন ও কায়স ছিলেন
গালিবের অন্য এক সন্তান আর তার মা ছিলেন সালমা বিনত কাব ইবন আম্র আল খুযায়ী
আর ইনি হলেন লুয়াই-এর মা ৷ ইবন ইসহাক বলেনঃ লুয়াই ইবন পান্সিব-এর চার পুত্র কাব
আমির, সাদা এবং আওফ ৷
ইবন হিশাম বলেনঃ এমনও বলা হয় যে, তিনি জন্ম দেন হারিসকে, আর তারা হচ্ছে জসম
ইবনুল হারিস রবীআর হুযান গোত্রে এবং সায়াদ ইবন লুয়াইকে ৷ আর তারা হচ্ছে শাইবান ইবন
সালাবার বিনড়ানা গোত্র আর এরা হচ্ছে তাদের প্রতিপালনকারী ৷ আর থুযাইমা ইবন লুয়াই, যারা
শারবাম ইবন সা’লাবা গোত্রে আশ্রয় গ্রহণকারী ৷
অতপর ইবন ইসহাক সামা ইবন লুয়াই এর বর্ণনা প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন যে, সামা ওমানে
চলে যান এবং সেখানেই বসবাস করেন ৷ আর তিনি এটা করেন তার ভাই আমির-এয় সঙ্গে
শক্রতা আর বিদ্বেষের কারণে ৷ ভাই আমির তাকে ভয় দেখাংল তিনি তাতে ভীত হয়ে ওমানে
পলায়ন করেন এ ৎ সেখানেই মির্জা নিঃসঙ্গ অবস্থায় মারা যান ৷ আর তার কারণ এই হয়েছিল
যে, তিনি আপন উটনী ছেড়ে দিলে একটা সাপ এসে উটনীটির ঠোট জড়িয়ে ধরে ৷ তখন
উটনীঢি কাত হয়ে পড়ে যায় এবং সাপটি সামড়াকে দংশন করে ৷ ফলে তার মৃত্যু হয় ৷ কথিত
আছে যে, মৃত্যুর পুর্বে তিনি অঙ্গুলি দ্বারা মাটির উপর কয়েকটি পংক্তি লিখে যানঃ
চক্ষু! বোদন কর মামা ইবন লুয়াইর তরে, ঝুলে রয়েছিল তার সাথে যে ঝুলম্ভ বস্তু
ওওএেৰু
হে ইবন লুয়াই, তুমি চেয়েছিলে মৃত্যু ঠেকাতে, মৃত্যু যাকে গ্রাস করতে চায়, তার তো
ঠেকাবার ক্ষমতা নেই ৷
ইবন হিশাম বলেনঃ আমি জানতে পেরেছি যে, তার কোন এক সন্তান রাসুলুল্লাহ (সা) এর
নিকট আগমন করে মামা ইবন লুয়াইর সঙ্গে নিজের বং শর সম্পৃক্ততা ব্যক্ত করলে রাসুলুল্লাহ
(সা) তাকে বলেনঃ কবি মামা? তখন জনৈক সাহাবী তাকে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল,
আপনি যেন তার পংক্তিটির দিকে ইঙ্গিত করছেন :
কতো পানপাত্র প্রবাহিত করেছ হে ইবন লুয়াই, মৃত্যু ডান, তুমি তো ছিলে না তা
প্রবাহিত করার ৷
তখন রাসুলুল্লাহ (মা) বললেনঃ হী৷ ৷ আর সুহায়লী বলেনঃ কারো কারো মতে, মামা কোন
সন্তান রেখে যাননি ৷
যুবায়র বলেন, মামা ইবন লুয়াইর গড়ালিব নাকীত এবং হারিছ নামের তিন পুত্র ছিল ৷
ঐতিহাসিকরা বলেন যে, মামা ইবন লুয়াইর সত্তানরা ছিল ইরাকে, যারা হযরত আলী (রা ) এর
সঙ্গে বিদ্বেষ পোষণ করতেড়া ৷ তাদের মধ্যে একজন ছিল আলী ইবনল জাদ, যে তার আলী
নামকরণের জন্য আপন পিতাকে পালিগালাজ করতো ৷ বনু মামা ইবন লুয়াইর অন্যতম অধ্স্তন
পুরুষ আরআরা ইবনুল ইয়াযীদ ছিলেন ইমাম বুখারীর অন্যতম উস্তাদ ৷
ইবন ইসহাক বলেনঃ আওফ ইবন লুয়াই সম্পর্কে কথিত আছে যে, তিনি কুরায়শের
একদল অশ্বারােহী সঙ্গে বহির্গত হন ৷ পাতফান ইবন মাদ ইবন কায়স ইবন আয়লান-এর
জনপদে পৌছলে তিনি সেখানে রয়ে যান এবং তার সঙ্গীরা চলে যায় ৷ তখন তার নিকট
আগমন করেন ছালাবা ইবন সাদ ৷ তিনি বনু লুবৃইয়ানের জ্ঞাতি ভাই ছিলেন ৷ ছা’লাবা তাকে
এবং তার ত্রীকে সেখানে রেখেছেন এবং তার সঙ্গে ভ্রাতৃবন্ধন স্থাপন করার ফ্লে বনু লুবইয়ান
এবাং ছালাৰা গোত্রের মধ্যে তার বংশ বিস্তার ঘটে বলে ঐতিহাসিকরা ধারণা করেন ৷
ইবন ইসহাক বলেন : উমর ইবনল খাত্তাব (রা) বলেছেন : আমি যদি আরবের কোন
গোত্রের দাবীদার হতাম, অথবা তিনি বলেন যে, আমি যদি তাদেরকে আমাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত
বরেতড়াম তাহলে আমি বনু মুররা ইবন আওফের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার দাবী করতাম ৷ আমরা তাদের
মত লোকদেরকে চিনি, অথচ আমরা যে ব্যজ্যি অবস্থান স্থল সম্পর্কে জানি না , এই বলে তিনি
টীকা মুল আরবী গ্রন্থে মামা স্থলে উসামা মুদ্রিত হয়েছে ৷
আওফ ইবন লুয়াইর দিকে ইঙ্গিত করেন ৷ ইবন ইসহাক বলেন : আমি অভিযুক্ত করতে পারি
না এমন ব্যক্তি আমার নিকট হাদীস বর্ণনা করেন যে, উমর ইবন খাত্তাব (বা) কতিপয় ব্যক্তিকে
বলেন, তাদের মধ্যে বনু মৃররার লোকও ছিল ৷ তোমরা যদি নিজেদের বংশের দিকে ফিরে
যেতে চাও তবে যে দিকে ফিরে যাও ৷ ইবন ইসহাক বলেনঃ আর এরা ছিলেন গাতফান বংশের
নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি ৷ তারা ছিলেন গাতফান কায়েস বংন্শ্৷ সকলের মধ্যে সেরা ৷ তারা তাদের
সেই পরিচয় নিয়ে সেখানেই রয়ে যান ৷ ঐতিহাসিকরা বলেনঃ ওরা বলতে৷ যখন তাদের নিকট
ৎশের কথা বলা হতো, আমরা তা অস্বীকার করছি না, আমরা ত ৷র বিরোধিতা ৷ও করছি না৷
আর তা ই হচ্ছে আমাদের নিকট সবচেয়ে প্রিয় বংশধারা ৷ অতঃপর লুয়াই র সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন
প্রসঙ্গে তিনি তাদের কবিতার উল্লেখ করেছেন ৷
ইবন ইসহাক বলেন : এবং তাদের মধ্যে বুসল (নিষিদ্ধ) নামে একটা প্রথা চালু ছিল ৷ আর
সে প্রথাট৷ হচ্ছে আরবদের মধ্যে বছরের আট মম্সকে হারাম বা নিষিদ্ধ জ্ঞান করা ৷ আর
আরবরা তাদের এ প্রথা সম্পর্কে অবগত ছিল এবং ঐ সময়ে তারা তাদেরকে নিরাপত্তা দান
করতে৷ আর নিজেরাও নিরাপদ বোধ করতো ৷ আমি বলি, রবীআ এবং মৃযার গোত্রও বছরে
চারটি মাসকে নিষিদ্ধ জ্ঞান করতো ৷ সে মাসগুলাে হলো যুলকাদা যুলহিজ্জা, মুহররম ৷ চতুর্থ
মাস সম্পর্কে রবীআ আর মুযার এর মধ্যে মতভেদ রয়েছে মৃযার গোত্র বলে৪ সে মাসটি
হচ্ছে জুমাদ৷ ও শাবানের মধ্যবর্তী মাস অর্থাৎ রজব ৷ পক্ষাস্তরে রবীআ গোত্রের মতে সে
মাসটি হচ্ছে শা’বান ও শাওয়ালের মধ্যবর্তী মাস অর্থাৎ রমযান মাস ৷ সহীহ বুখারী ও সহীহ
যুসলিমে আবু বকর৷ থেকে হাদীস বর্ণিত হয়েছে যে রাসুলুল্লাহ (সা ) বিদায় হরুজ্জর ভাষণে
বলেছেনঃ আসমান-যমীন সৃষ্টির দিন আল্লাহ তা যেভাবে সৃষ্টি করেছেন, যে অবন্থায়ত ৩াফিরে
এসেছে ৷ বছর হচ্ছে ১২ মাসে ৷ সেগুলোর মধ্যে চারটি হচ্ছে হারাম মাস তিনটি মাস পরপর
৪ যুলকদা মুল হজ্জ ও ঘুহররম এবং মুযার-এর রজব, বা হচ্ছে জুমাদ৷ ও শাবান মাসের
মধ্যবর্তী মাস ৷ এ থেকে রবীআ নয়, বরং মুযার-এর উক্তির বিশুদ্ধত৷ প্রমাণিত হয় ৷ আল্লাহ
তা’আলা বলেন :
আল্লাহর নিকট মাসের পণনা তার কি৩ ৷বে ১২ মাস, যেদিন তিনি আসমান যমীন সুষ্টি
করেছেন, তার মধ্যে চারটি হচ্ছে হারাম মাস ৷ (৯ তা ৷ওবা ং ৩৬)
বনু আওফ ইবন লুয়াই যে, আটটি মাসকে হারাম গণ্য করে, উক্ত আয়াত দ্বারা ত৷ খণ্ডিত
হয়ে যায় ৷ আর তারা আল্লাহ্র বিধানে অতিরিক্ত সংযোজন করেছে এবং যা হারাম নয়, তাকে
হারামের অন্তর্ভুক্ত করেছে ৷ আর হাদীসে যে বলা হয়েছে৩ তিনটি মাস পরপর : এটা নাসী
পন্থীদের মতে তর খণ্ডন; যারা মুহররমের হুরমতকে সফর মাস পর্যন্ত পিছিয়ে দিত ৷ মহানবীর
বাণী মুযার এর রজব মাস এ কথায় খণ্ডিত হয়েছে রবী’ আ গো ৷ত্রের মতা
ইবন ইসহাক বলেন : কা’ব ইবনু লুয়াইর তিনজন পুত্র ছিলেন মুররা , আলী ও হাসীস ৷ এবং
মুররারও তিন সন্তান ছিলেন : কিলাব তায়ম এবং ইযাক্যা ৷ এদের প্রত্যেকের মা ভিন্ন ভিন্ন ৷
তিনি বলেন : কিদাবেরও দু’জন পুত্র ছিলেন : কুসাই এবং সহ্রা ৷ এ দুজনের মা হলেন
ফাতিমা বিনাত সদি ইবনু সায়্যা ৷ ইয়ামানের জা’সা আমাদের গোত্রের অন্যতম জুদারা ৷ এরা
ছিলেন বনু সায়প্স ইবন বকর (ইবন আরফ সানাত ইবনু কিনানাটুা-এর মিত্র ৷ এই ফাতিমার
পিতৃপুরুষ সম্পর্কে করি বলেন :
মানুষের মধ্যে আমরা দেখি না একজন মানুষকেও যাদেরকে আমরা জানি ৷ সাদ ইবন
সায়ল-এর মতো ৷
সুহায়লী বলেন : সংখ্যা এর নাম হচ্ছে কামর ইবনু জামালা ৷ আর তিনি হলেন সর্বপ্রথম
ব্যক্তি, যার তরবারীকে স্বর্ণ ও রৌপ্য খচিত করা হয় ৷
ইবনু ইসহাক বলেন : তাদেরকে জুদারা বলা হতো এ জন্য যে, আমির ইবন অড়ামর ইবন
খুযায়মা ইবন জাসড়ামা হারিছ ইবন মুসাম আল-জুরহুমীর কন্যাকে বিবাহ করেন ৷ তখন জুরহুম
গোত্র হিল বড়ায়তুল্পাহ্র সেবায়েত ৷ তিনি আনার জন্য প্রাচীর নির্মাণ করান ৷ এ কারণে আমর
এর নামকরণ হয় জাদীর তথা প্রাচীর নির্মাতা ৷ এ কারণে তার সন্তানদেরকে জুদারা বলা হয়ে
যাকে ৷
ফুসইি ইবন কিশাবের বৃত্তান্ত বড়ায়তুস্নাহ্র সেৰায়েতের দায়িত্ব কুরাইশের হাতে ফেরত
আনা এবং খুযআের নিকট থেকে তা মিলিয়ে সেরা :
কুসাইয়ের পিতা কিলাবের মৃত্যুর পর তার মাতা আয্রা গোত্রের রবীআ ইবন হারাযকে
বিবাহ করেন ৷ কুসাই তার মা এবং সৎ পিতাকে নিয়ে নিজ দেশে রওয়ানা হন ৷ অতঃপর কুসাই
যৌবনে মক্কায় ফিরে এসে খুযা’আ গোত্রের সর্দার হুলায়ল ইবন হুবৃশিয়ার কন্যা হুরায়কে বিবাহ
করেন ৷ থুযায়ীদের ধারণা এই যে, পুত্র পক্ষে বংশ ধারা বৃদ্ধি দেখে হুলায়ল কুসাইকে
বায়তুল্পাহ্র দায়িত্ব গ্রহণের জন্য ওসিয়ত করেন ৷ তিনি একথাও বলেন যে, এ দায়িতু পালনের
জন্য তুমি আমার চেয়ে বেশী যোগ্য ৷ ইবন ইসহাক বলেন : এ কথা তাদের কাছে ছাড়া অন্য
কারো কাছে আমরা শুনিনি ৷ আর অন্যদের ধারণা এই যে, কুসাই তার বৈমাত্রেয় ভাইদের
সাহায্য প্রার্থনা করেন ৷ মক্কার আশ-পাশের কুয়াইশ প্রমুখ, বনু কিনানা, বনু কুযা’আ এবং তার
ভাইদের দলপতি ছিলেন রাযাহ্ ইবন রৰী’আ ৷ তিনি বনু থুযাআকে নির্বাসিত করে নিজে
এককভাবে বয়েতৃল্লাহ্ব কর্তৃতু গ্রহণ করেন ৷ কারণ হাজীদের অনুমতি দানের কর্তৃতু ছিল
সুফা’দের হাতে ৷ আর সুফা বলা হতো পাওস ইবন মুর (ইবন উদ্দ ইবন তাবিখা ইবন ইলিয়াস
ইবন মুযার)-এর বংশধ্রদেরকে ৷ তারা কংকর নিক্ষেপ না করা পর্যন্ত অন্যরা যাত্রা নিক্ষেপ
করতো না এবং মিনা থেকে তারা যাত্রা না করা পর্যন্ত অন্যরা যাত্রা করতো না ৷ তাদের বংশ
নিঃশোষিত হওয়ার পুর্ব পর্যন্ত এ ভাবেই চলে আসছিল ৷ অতঃপর বনু সা’দ ইবন যায়দ মানাত
ইবন তার্মীম তাদের উত্তরাধীকারী হন ৷ তাদের প্রথম ব্যক্তি ছিলেন সাফওয়ান ইবনুল
হারিস ইবন শিজনা ইবন উতারিদ ইবন আওফ ইবন কা’ব ইবন সাদ ইবন যায়দ মানাত
ইবন তামীম ৷ আর এ দায়িতৃ তারই বংশে রয়ে যায় এবং তাদের শেষ ব্যক্তি কুরব ইবন
সাফওয়ানের আমলে ইসলামের অভ্যুদয় ঘটে ৷ আর মুযদান্সিফা থেকে যাত্রার অনুমতি
দানের কর্তৃত্ব ছিল আদওয়ান গোাত্রের হাতে এবং তাদের শেষ ব্যক্তি আবু সাইয়্যারা
আমীলা মতাম্ভরে আম ইবনুল আযালের আমলে ইসলাম কায়েম না হওয়া পর্যন্ত এ
ধারা অব্যাহত ছিল ৷ কারো কারো মতে, আযাল-এর নাম ছিল থড়ালিদ এবং তিনি তার কানা
গাধীর পৃষ্ঠে সওয়ার হয়ে লোকদেরকে অনুমতি দিতেন ৷ এভাবে চল্লিশ বছর অতিবাহিত
হয় ৷ তিনি হলেন প্রথম ব্যক্তি, যিনি রক্তপণ একশ উট সাব্যস্ত করেন আর তিনিই ছিলেন
প্রথম ব্যক্তি যিনি বলেনং২ টি সুহায়লীর বর্ণনা, অর্থাৎ ছবীর পর্বত
দেখা যাচ্ছে উট হীকাও !
আর আমির ইবনুল যারব আদওয়ালী এমন এক অবস্থানে ছিলেন যে আরবদের মধ্যে কোন
চরম বিরোধ দেখা দিলে সকলে ফয়সালার জন্য তার শরণাপন্ন হতো এবং তিনি যে সিদ্ধান্ত
দিতেন, তাতে সকলেই সত্তুষ্টি হতো ৷ একবার এক হিজড়ার উত্তরাধিকার নিয়ে তাদের মধ্যে
চরম বিরোধ দেখা দেয় ৷ এ নিয়ে চিন্তা করতে করতে তিনি বিনিদ্র রজনী যাপন করেন ৷ তার
এক দাসী তাকে এ অবস্থায় দেখতে পায় ৷ এ দাসী তার মেষপাল চড়াতাে ৷ তার নাম ছিল
সাথীলা ৷ সে রললো, কি হল আপনারা বিনিদ্র রজনী যাপন করতে দেখছি যে আপনাকে? কি
বিষয়ে চিন্তা করছেন, তাকে তিনি তা জানালেন ৷ তিনি মনে মনে একথাও বললেন যে,
হয়তো এ ব্যাপারে তার কাছে কোন সমাধান থাকতেও পারে ৷ দাসীটি তাকে বললো ?
তার প্রস্রাবের রাস্তা দেখে ফয়সালা করুন ! তিনি বললেন : আল্লাহর কসম সাথীলা , তুমি
তো সমস্যাটির সমাধান করে দিলে ৷ এবং তিনি সে অনুযায়ী ফয়সালা দিলেন সুহায়ালী
বলেন : এটা ছিল লক্ষণ বিচারে ফয়সালা দানের একটি দৃষ্টান্ত ৷ শরীয়তে এর ভিত্তি রয়েছে
আল্লাহ তাআলা বলেন :
“তারা তার জামা নিয়ে আসে মিথ্যা রক্তসহ” (ইউসুফ : ১৮৯) ৷
অথচ, তাতে বাঘের নখের কোন লক্ষণ ছিল না আল্লাহ তাআলা আরো বলেন :
“তার জামা যদি সামনে থেকে ছেড়া হয় তবে সে নারী সত্য বলেছে আর সে (ইউসুফ)
মিথ্যাৰাদী, আর যদি তার জামা সামনে থেকে ছেড়া হয়, তবে সে নারী মিথ্যা বলেছে এবং সে
পুরুষ সত্যবাদী ৷ (১২ ইউসুফ : ২৬) ৷ আর হাদীসে আছে : তোমরা নারীটির দিকে লক্ষ্য
করবে ৷ সে যদি ধুসর বর্ণের কেড়াকড়ানাে চুল বিশিষ্ট সন্তান প্রসব করে তা হলে তার বিরুদ্ধে
আনীত অভিযোগ সত্য ৷
ইবন ইসহাক বলেন : বনু ফকীম ইবন আদী (ইবন আমির ইবন ছালাবা ইবন হারিস ইবন
মালিক ইবন কিনানা ইবন থুযায়মা ইবন ইবন মুদরিয়া ইবন ইলিয়াস) ইবন মুযার গোত্রে
নাসী’ প্ৰথায় প্রচলন ছিল ৷ ইবন ইসহাক বলেন : সর্বপ্রথম যে ব্যক্তি আরবদের মধ্যে নড়াসী
প্রথার প্রচলন ঘটান তিনি ছিলেন আল কালাম্মাস’ আর তিনিই ছিলেন হুষড়াফা ইবন আব্দ ইবনু
ফড়াকীম ইবনু আদী ৷ তার পর তার পুত্র আব্বাদ তার পর তার পুত্র কালা তারপর উমাইয়া ইবন
কালা তারপর আওফ ইবন উমাইয়া ৷ এরপর ছিল তাদের সর্বশেষ ব্যক্তি আবু সামামা জানাদা
ইবন আওফ ইবন কালা ইবন অড়াব্বড়াদইবন হুযায়ফ৷ ৷ আর তিনিই হচ্ছে আল-কালাম্মাস ৷ এই
আবু সামামার কালেই ইসলামের আবির্ভাব ঘটে ৷ আর আরবরা হজ্জ শেষে তার কাছে এসে
একত্র হতো ৷ তিনি তাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতেন ৷ এ ভাষণে তিনি হারাম মাসের ঘোষণা
জারী করতেন ৷ সেসব হারাম মাসগুলোর মধ্যে কোন মড়াসকে হালাল করতে চাইলে মৃহররমকে
হালাল করতেন এবং তদন্থলে রাখতেন সফর মড়াসকে, যাতে আল্লাহ যেগুলো হারাম করেছেন,
সেগুলোর সংখ্যা পুর্ণ করতে পারে ৷ তখন তারা বলতে৷ : হে আল্লাহ ! আমি দুটি সফর মাসের
একটিকে হালাল করেছি আর অপরটি পিছিয়ে রেখেছি আগামী বছরের জন্য ৷ আর এ ক্ষেত্রে
আরবরা র্তারই অনুসরণ করতো ৷ এ ব্যাপারে উমায়র ইবন কায়স, যিনি ছিলেন বনু ফিরাস
ইবন গনম ইবন মালিক ইবন কিনানা’র অন্তর্ভুক্ত আর এই উমায়র ইবন কায়স জাদলুত্
তা’অ্যান নামে পরিচিত ছিলেন ৷ তিনি বলেন :
মাআদ গোত্র নিশ্চিত আসে যে, আমার সম্প্রদায় সকল মানুষের মধ্যে সম্মানিত ৷ সম্মান
রয়েছে তাদের তরে ৷
তবে কোন মানুষ, নিয়ে এসো আমাদের কাছে, তাদের কোন একজনকে, আর এমন কোন
লোক আছে, যার লাগান আমরা করে বীধিনিঃ
া
আমরা কি নই মায়দ গোত্রের উপর নাসী’ কারী ? হালাল মাসকে আমরা করি হারাম ৷
আর কুসাই ছিলেন তার জাতির নেতা ৷ সকলে র্তার নেতৃতু মেনে চলতে এবং তাকে সম্মান
করতো ৷ মোদ্দাকথা, তিনি জাযিরাতুল আরবের নানা স্থান থেকে এসে কুরায়শদেরকে এক
জায়গায় একত্র করেন এবং আরবের গােত্রসমুহের মধ্যে যারা তার আনুগত্য করে, তাদের
সাহায্য নেন খুযাঅড়ার যুদ্ধে এবং তাদেরকে বায়তৃল্লাহ থেকে নির্বাসিত করেন ৷ ফলে সকলে
বায়তৃল্লাহর দ যিতু তার হাতে অর্পণ করে ৷ এ নিয়ে তাদের মধ্যে অনেক যুদ্ধ হয় ৷ অনেক
তাজা রক্ত ঝরে ৷ অতঃপর সকলেই আপোষ রফার দাবী জানায় ৷ সকলে ফয়সালার ভ ৷র অর্পণ
করে ইয়ামার ইবন আওফ ইবন কা ’ব ইবন আমির ইবন লায়ছ ইবন বকর ইবন আবদ মানাত
ইবন কিনানা’র উপর ৷ তিনি ফয়সলা করেন যে, বায়ভুল্লাহ্র তত্ত্বাবধানে খুযা’অড়ার চেয়ে কুসাই
আধিকতর যোগ্য ব্যক্তি ৷ তাতে এ সিদ্ধান্ত ও গৃহীত হয় যে, কুসাই খুষাআ এবং বনু বকর-এর
যে রক্তপাত করেছেন, তা রহিত এবং পদত তলে নিম্পেযি৩ কিস্তু খুযা’অ৷ ও বনু বকর কুয়ায়শ
কিনানা এবং কুয৷ অ৷ গোত্রের যে রক্তপাত ঘটিয়েছে, সে জন্য তাদেরকে রক্তপণ আদায় করতে
হবে ৷ এ সিদ্ধ ন্তও গৃহীত হয় যে, মক্কা ও কা বার ক ৩ভৈ লর ব্যাপারে কেউ বাধ সাধতে পারবে
না ৷ তখন থেকে ইয়ামা র এর নাম করা করা হা শাদাখ ৷
ইবন ইসহ৷ ৷ক বলেন৪ ফলে কুসাই বায়তুল্লাহভ্ক্ট হং মক্কার কর্তৃত্বের অধিকারী হন এবং তার
সম্প্রদায়ের লোকজনকে নিজেদের মনযিল থেকে মক্কায় এনে একত্র করেন এবং তার সম্প্রদায়
আর মক্কাবাসীরা তার কর্তৃত্ব মেনে নিলে তারা সকলে ব্ৰুন্বাকে বাদশাহ বলে স্বীকার করে নেয় ৷
তিনি আরবদের ব্যাপারে একটা বিষয় মেনে নেন যে, তারা যা মেনে চলতো, তা মেনে চলবে ৷
কারণ তিনি এটাকেই নিজের দীন মনে করতেন ৷ যার পরিবর্তন অনুচিত ৷ ফলে সাফওয়ান
আদওয়ান, নাসয়৷ এবং মুরর৷ ইবন আওভ্রুফ্যা লোকজন এটা মেনে নেয় যে, তারা পুর্বে যে রীতি
মেনে চলতো, তা ই মেনে চলবে ৷ এ অবস্থায় ইসলামের আগমন ঘটলে আল্লাহ ইসলাম দ্বারা
সেসব রীতি-নীতির মুলোৎপাটন ঘটান সম্পুর্ণ রুপে ৷ কুসা ৷ই ছিলেন বনু কা বের প্রথম ব্যক্তি ,
যিনি বাদশাহ হন এবং তার জাতির লোকেরা তা মেনে নেয় ৷ ফলে বায়তুল্লাহ্র সেবা-যতু
হাজীদের পানি পান করানো তাদের আপ্যায়ন করা ৷পরামর্শ সভার ব্যবস্থাপনা এবং পতাকা
ধারণ করা তা ৷র দায়িত্বে ন্যস্ত হয় ৷ ফলে মক্কার মর্যাদা রক্ষা করার পুর্ণ কত হুতিনি লাভ করেন
এবং তিনি মক্কাকে তার লোকজনের মধ্যে কয়েক ভাগে বিভক্ত করলে কুযায়শের সকলে নিজ
নিজ মনযিলে এসে বসবাস শুরু করেন ৷
আমি বলি : ফলে সত্য তার স্ব-ন্থানে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সুবিচার লোপ পাওয়ার পর পুনঃ
প্রতিষ্ঠিত হয় ৷ এবং কুরায়শরা৩ তাদের নিজেদের আবাসভুমিতে প্রতিষ্ঠিত হয় ৷ খুযা’আ
গোত্রেকে বিতাড়নের ব্যাপারে তাদের উদ্দেশ্য সফল হয় ৷ প্রাচীন পবিত্র গৃহ (বায়তুল্লাহ)
তাদের হাতে ফেরৎ আসে ৷ কিন্তু খুযা’ আ গোত্রের উদ্ভাবিত মুর্তি পৃজাক ৷বার চতুষ্পার্থে মুর্তি
স্থাপন, মুর্তির উদ্দেশ্যে কুরবানী, মুর্তির নিকট আবেদন নিবেদন আর কা৩ র প্রার্থনা ও সাহায্য
কামনা মুর্তির নিকট জীবিকা ভিক্ষ৷ করার কুপ্রথ৷ সমুহ অব্যাহত থাকে ৷ কুসাই কুরাইশের
কতক গােত্রকে মক্কার কেন্দ্রস্থলে অন্যকতক পােত্রকে তিনি প্রতিষ্ঠিত করে মক্কার উপকষ্ঠে ৷
আবাদ করায় কুরাইশের কিছু গোত্রকে আর এ কারণে কুরাইশকে কুরায়শে বিতাহ এবং
কুরায়শে যাওযাহর নামে দৃ’ভাগে বিভক্ত করা হয় ৷ ফলে কুসাই ইবন কিলাব বায়তুল্লাহ্র
রক্ষণাবেক্ষণ, সেবা-যতু এবং পতাকা বহনের পুর্ণ কর্তৃতু লাভ করেন ৷ আবিচার দুর করা আর
বিরোধ নিস্পত্তির নিমিত্ত তিনি একটা ভবন নির্মাণ করে তার নাম লেন দারুন নাদওয়া তথা
মস্ত্রণালয়’ ৷ কোন তীব্র সংকট দেখা দিলে সমস্ত গোত্র প্রধানরা একত্র হয়ে পরামর্শ করতেন
এবং সমস্যার সমাধান করতেন ৷ দারুন নাদওয়ার সিদ্ধান্ত ছাড়া পতাকা উত্তোলন করা হতো না
এবং কোন বিয়ে শাদীও সংঘটিত হতো না ৷ দারুন নাদওয়ার সিদ্ধান্ত ছাড়া কোন দাসী কামিজ
পরিধান করতে পারতো না ৷ দারুন নাদওয়ার দরজা ছিল মসজিদে হারামের দিকে ৷ বনু
আবদৃদ দার এরপর দারুন নাদওয়ার দায়িতৃ পান হার্কীম ইবন হিযাম ৷ তিনি মুয়াবিয়া (রা)-এর
শাসনামলে তা’ এক লক্ষ দিরহামের বিনিময়ে বিক্রয় করলে মুয়াৰিয়া (রা ) সে জন্য তাকে
তিরস্কার করেন ৷ তিনি বলেন-এক লক্ষ দিরহামের বিনিময়ে তুমি নিজ জাতির মর্যাদা বিক্রয়
করে দিলে? জবাবে তিনি বলেন, এখনতো মর্যাদা কেবল তাকওয়ার সঙ্গে যুক্ত ৷ আল্লাহর
কসম, জাহিলী যুগে আমি তা ক্রয় করেছিলন এক মশক মদের বিনিময়ে; আর এখন তা বিক্রয়
করছি এক লক্ষ দিরহামের বিনিময়ে ৷ আমি তােমাদেরকে সাক্ষ্য ঢ: চ্ণ্’ধ্ বলছি যে, তার মুল্য
আমি আল্লাহর রাস্তায় সড়াদাকা করে দিলাম ৷ তাহলে আমাদের মধ্যে ণ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হলো? দারা
কুত্নী মুয়াত্তার আসমাউর রিজাল প্রসঙ্গে এ ঘটনা উল্লেখ করেছেন ৷ হাজীদেরকে পানি পান
করানোর দায়িত্বও ছিল তার ৷ ফলে তার কুয়াের পানি ছাড়া তারা পানি করতে পারতো না ৷
জুরহুমের যমানা থেকে তখন পর্যন্ত যমযম কুপ নিশ্চিহ্ন হয়ে পড়েছিল ৷ ফলে দীর্ঘ কাল থেকে
লোকেরা যমযম কুপের কথা ভৃলেই বসেছিল ৷ তা কোথায় ছিল সে কথাও তাদের জানা ছিল
না ৷ ওয়াকিদী বলেন : কুসাই ছিলেন প্রথম ব্যক্তি যিনি মুয্দালিফড়ায় অগ্নিপ্রজ্বলিত করেন ৷ যাতে
আরাফাত থেকে আগত ব্যক্তি মুয্দালিফার সন্ধান পেতে পারে ৷ আর রিফাদা হচ্ছে নিজগৃহে
ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত হাজীদের খাওয়া-দাওয়াব ব্যবস্থা করা ৷
ইবন ইসহাক বলেন : এটা এ জন্য যে, কুসাই হাজীদের খাওয়া দাওয়াব আয়োজন করা
কুরইিশদের উপর অবশ্য পালনীয় করে দেন ৷ তিনি কুরাইশদের উদ্দেশ করে বলেন : তোমরা
আল্লাহর প্রতিবেশী মক্কা আর হেরেমের বাসিন্দা ৷ আর হাজীরা আল্লাহর মেহমান এবং তার ঘর
যিয়ারতকারী ৷ তারাই যেহমানদারীর অধিকতর হকদার ৷ সুতরাং হজ্ঞেদ্বর সময় তোমরা তাদের
জন্যে পানাহারের আয়োজন করবে, যতক্ষণ না তারা ফিরে যায় ৷ কুরাইশের লোকেরা তার কথা
মতো কাজ করে ৷ এজন্য তারা প্রতি বছর নিজেদের সম্পদ থেকে এবল্টা অংশ বের করতো
এবং তা তার নিকট অর্পণ করতো ৷ তিনি হাজীদের মিনায় অবস্থানের দিনগুলোতে তা দ্বারা
খাবারের আয়োজন করতেন ৷ ইসলামের প্রতিষ্ঠা লাভের পুর্ব পর্যন্ত এ ধারা চালু ছিল এবং
পরেও সে ধারা চালু থাকে ৷ হজ্জ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সুলতান এখনো প্রতি বছর মিনায়
ভোজের আয়োজন করেন ৷
আমি বলি : ইবন ইসহাকেব পর সুলতানের আপ্যায়নের এধারার অবসান ঘটে ৷ তারপর
পর বায়তুলমাল থেকে হরুজ্জর উদ্দেশ্যে গমনকারী পথচারীদের জন্য পাথেয় এবং পানীয়
সরবরাহের ব্যবস্থা চালু হয় ৷ অনেক দিক থেকে এটা উত্তম কাজ ৷ তবে নির্ভেজাল বায়তুল
মালের সবচেয়ে হালাল অর্থ এতে ব্যয় করা উচিত ৷ আর সর্বোত্তম যাদের যিম্মায় হজ্জ ফরয
হয়েছে, তাদের থেকে পর্যায়ক্রমে হজ্জ করিয়ে নেওয়া কারণ সাধারণত তারা কা বা গৃহের
হজ্জ করেন৷ ৷ সে চাই ইহুদী বা খৃষ্টান হিসাবে মৃত্যুবরণ্ক্ষ্ করুক ৷ তাতে কিছু আসে যায় না ৷
কুসাইয়ের প্রশংসা এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে তার মর্যাদার বর্ণনায় কবি বলেন ও
পৌট্ট
আমার জীবনের শপথ, কুসাইকে বলতে হয় সমবেতকারী, আল্লাহ তার মাধ্যমে ফিহরের
অনেক গোত্রকে একত্র করেছেন ৷
তারা তার তোলে বাত্হাকে মর্যাদা আর নেতৃত্বে প্ আর তারা তাড়িয়ে দেয় আমাদের পক্ষ
থেকে পথভ্রষ্ট বনু বকর গােত্রকে ৷
ইবন ইসহাক বলেন : যুদ্ধ শেষে কুসাইর ভাই রেযাহ ইবন রবীআ সদলবলে স্বদেশে ফিরে
যায় এবং সঙ্গে নিয়ে যায় তার তিন বৈমাত্রেয় ভাইকে, তারা হলো : হান মাহ্মুদ এবং
জালহামা ৷ রেযাহ্ কুসাইয়ের আহ্বানে সাড়া দিতে গিয়ে বলেন ৷
যখন আসে কুসাইর পক্ষ থেকে দুত ,
দুত এসে বললো, বন্ধুর ডাকে সাড়া দাও ৷
আমরা ছুটে যাই তার পানে, পরিচালিত করি উত্তম অশ্বদল ৷ আর বোড়ে ফেলি আমাদের
থেকে অবসাদ ও ক্লাস্তি ৷
খুযাআকে আমরা বধ করেছি তাদের গৃহে, বধ করেছি বনু বকরকে অতঃপর প্রজন্মের পর
প্রজন্মকে ৷
বিতাড়িত করেছি আমরা তাদেরকে মালিকের দেশ থেকে, সমতুমিতে তারা আর পদচারণা
করতে পারবে না ৷
তাদের বন্দীরা হয় লোহার শেকলে আবদ্ধ আমরা সকল গোত্রের মনােকষ্ট দুর করি ৷
ইবন ইসহাক বলেন : রেযাহ স্বদেশে ফিরে পেলে আল্লাহ তার ভাই হানার বংশ বৃদ্ধি
করেন ৷ তারাই আজ পর্যন্ত আমরা গোত্রদ্বয় রুপে পরিচিত ৷
ইবন ইসহাক বলেন : এ প্রসঙ্গে কুসাই ইবন কিলাব বলেন :
আমি হলাম বনু লুয়াই বংশের রক্ষাকারীদের পুত্র ৷ মক্কায় আমার অবস্থান স্থল, সেখানেই
আমি প্ৰতিপালিত হই ৷
বাত্হ৷ পর্যন্ত ৷ মাআদ গোত্র তে৷ নিশ্চিত জানে ৷ তাদের বীরত্বে আমি মুগ্ধ ৷
আমি গালিবের কেউ নই যদি না কীদার আর নাবীত এর সন্তানদেরকে সুপ্রতিষ্ঠিত
করতে না পারি ৷
রেযাহ আমার সহায়ক তাকে নিয়ে আমি মর্যাদার আসনে উন্নীত হই ৷ সুতরাং ভয় করিনা
আমি জুলুমকে, যতে ৷ দিন আমি বেচে থা কবো৷
উমবী উল্লেখ করেছেন : কুসাই থুযা’অ৷ গোত্রকে নির্বাসিত করার পরই রেযাহ্র
আগমন ঘটেছিল ৷
অধ্যায়
কুস ই বৃদ্ধ বয়সে উপনীত হলে কুরাইশদের নে৩ ট্রু,তু রিফাদ৷ সিকায়া, হিজায়া, লিওবণ্ ,
মাদওয়৷ প্রভৃতি যে সব দায়িৎ তার উপর ন্যস্ত ছিল সে সব দায়িত্ব তিনি ন্যস্ত করেন পুত্র
আব্দুদ্দ৷ র এর উপর ৷ আর ইনি ছিলেন তার জ্যেষ্ঠ পুত্র ৷ তিনি জ্যেষ্ঠ পুত্রকে মনোনীত করেন
এজন্য যে, তার অন্যান্য ভাই আবৃদ মানাফ আবৃদ শামৃস এবং আবৃদ-এরা প্রতে দ্রকেই পিতার
জীবদ্দশায়ই প্রভুত মর্যাদা ও শক্তি-সামর্থোর অধিকারী হয়ে গিয়েছিলেন ৷ ফলে কুসাই তাদের
সঙ্গে অ ৷ব্দুদদারকে নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট করতে চেয়েছিলেন ৷ ত ই তিনি তাকে এ সব দায়িত্ব অর্পণ
করলেন ৷ ফলে ত ব ভাইয়েরা তার সঙ্গে ঝগড়া বিবাদে প্ৰবৃত্ত হননি ৷ অবশ্য তাদের আমল
শেষে তাদের সন্তানরা এ ব্যাপারে বিরোধে প্রবৃত্ত হয় ৷ তারা বলে কুস ই এ জন্য
অড়াবদৃদ্দারকে মনোনীত করেছিলেন যাতে ভাইদের সঙ্গে তাকে যুক্ত করতে পারেন ৷ সুতরাং
আমাদের পুর্ব পুরুষ যে সব ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন, তাতে আমাদেরও অধিকার রয়েছে ৷
আর আবদৃদ্দার এর সন্তানর৷ বললাে, কুসাই এ কাজটা আমাদের জন্য নির্ধারণ করেছেন,
সুতরাং আমরাই এর সবচেয়ে বড় হকদার ৷ এ নিয়ে তাদের মধ্যে প্রচণ্ড বিরোধ দেখা দেয় ৷
কুরাইশ বংশীয়র৷ দৃ’দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে ৷ একজন আবদুদ্দার এর নিকট আনুপতোর শপথ
নেয় এবং তাদের সঙ্গে থাকার অঙ্গীকার করে ৷ আর অপর দল বনু আব্দমানাফ এর হাতে ৷ এ
ব্যাপারে তারা শপথও করে এবং শপথকালে তারা একটা সুগন্ধিপুর্ণ পাত্রে হাত রাখে ৷ সেখান
থেকে উঠে গিয়ে তারা কাবার দেয়ালে হাত মুছে ৷ এ কারাণ তারা হিল্ফুল মুতইিব্যিবীনঃ তথা
সুগন্ধধারীদের শপথ নামে পরিচিত হয় ৷ তাদের মধ্যে ছিল কুরাইশদের অন্যতম গোত্র বনু
আসাদ ইবন আবদুল ওঘৃযা ইবন কুসাই, বনু যুহ্রা, বনু তায়ম, বনু হারিছ ইবনফিহ্র, আর
বনু আন্দুদ্দারের সঙ্গে ছিল বনু মখৃযুম , বনু সহম, রনু জুমুহ্ এবং বনু,আদী ৷ এ বিরোধ আর
বিবাদ বিসংবাদ থেকে দুরে ছিল বনু আমির ইবন লুয়াই এবং মুহারির ইবন ফিহ্র ৷ এরা উক্ত
দু’টি দলের কারো সঙ্গে ছিল না ৷ অতঃপর তারা ঐক্যমতে পৌছে এবং একটা পরিভাষা গড়ে
তোলে যে, রিফদাে তথা হাজীদের যেহমানদারী আর সিকায়া তথা হাজীদের পানি পান করাবার
দায়িত্ব থাকবে বনু আবৃদ মানাফের হাতে আর হিজাবা তথা রক্ষণাবেক্ষণ, লি ওয়া তথা পতাকা
বহন এবং নাদৃওয়া তথা পরামর্শ সভার দায়িতু থাকবে রন; আব্দুদ্দার এর হাতে ৷ এ সিদ্ধান্ত
অটল থাকে এবং এ ধারাই অব্যাহত থাকে ৷
উমাবী আবু উবায়দা সুত্রে বর্ণনা করেন : থুযাআর কিছু লোক মনে করে যে, কুসাই যখন
হুবাই বিনৃত হুলাযলকে বিবাহ করে এবং হুলাযলকে বায়তুল্লাহ্র তত্ত্বড়াবধান থেকে অপসারণ
করা হয় ৷ তখন তার দায়িত্ব ন্যস্ত করা হয়, কন্যা হুবাই-এর উপর এবং তার প্রতিনিধি করা হয়
আবু গাবশান সলীম ইবন অড়ামৃর ইবন লুয়ইি ইবন মালকান ইবন কুসাই ইবন হাবিছা ইবন
আমর ইবন আমিরকে ৷ তখন কুসাই এক মশক মদ আর একটা উষ্ট্র শাবকের বিনিময়ে তার
নিকট থেকে বায়তৃল্লাহ্র কর্তৃতু ক্রয় করে নেন ৷ তখন থেকে একটা প্ৰবাদবাক্য চালু হয়ে
আছে : অর্থাৎ আবুগাবৃশানের ক্রয়-বিক্রয়ের চেয়েও
সােকসান জনক ৷ খুযা’আ গোত্র এটা দেখে কুসাইর সঙ্গে কঠোর বিরোধিতায় লিপ্ত হয় ৷ এতে
তিনি আপন ভাইয়ের সাহায্য কামনা করেন, তাই তার সঙ্গী-সাথীদেরকে নিয়ে এগিয়ে আসেন
এবং যা ঘটবার ছিল তাই ঘটলাে ৷ অতঃপর কুসাই তার উপর ন্যস্ত সিদানা, হিজাবা প্রভৃতি
দায়িত্বসমুহ তার পুত্র আন্দুদ্দারের উপর ন্যস্ত করেন ৷ এ সম্পর্কে পরে বিস্তারিত আলোচনা করা
হবে এবং বিষয়টা আরো স্পষ্ট করা হবে ৷ মুয্দালিফা থেকে ফেরার অনুমতি দেয়ার কর্তৃত্
দানের কর্তৃতু আসে ফাকীম এর হাতে ৷ এভাবে অনুমতি আসে সুফার একটি দলের হাতে ৷ এ
সব বিষয়ে ইতিপুর্বে আলোচনা করা হয়েছে এবং তার আগে এ সব দায়িতৃ কাদের হাতে ছিল,
তা-ও সেখানে বলা হয়েছে
ইবন ইসহাক বলেন ;; কুসইি এর চার পুত্র এবং দুই কন্যা সন্তান ছিল ৷ তারা হলেন
আব্দমড়ানাফ, আব্দুদ্দার, আব্দুল ওয়যা অব্দে এবং তখোরযুর ও বারর৷ ৷ আর এদের সকলের মাতা
ছিলেন হুবাই বিনৃত হুলায়ল ইবন হুব শিয়া ইবন সাললি ইবন কা’ব ইবন আমর আল-খিযায়ী ৷
ইনি ছিলেন বনু খুযাআর বংশীয় বায়তুল্লাহ্র সর্বশেষ তত্ত্বারধায়ক ৷ তার হাত থেকে
বায়তুল্লাহ্র দায়িতৃ গ্রহণ করেন কুসাই ইবন কিলাব ৷ ইবন হিশাম বলেন : কুসাই পুত্র আব্দ
মানাফের চারজন পুত্র সন্তান ছিলেন এদের মধ্যে হাশিম, আব্দ, শাম্স এবং ঘুত্তালিবের মাতা
ছিলেন আতিকা বিনৃত যুররা ইবন হিলাল ৷ আর চতুর্থ সন্তান নওফলের মা ছিলেন ওয়াকিদা ৷
আবৃদে মানাফের আরো কয়েকজন সন্তান ছিলেন, যাদের নাম ছিল আবু আয্ৱ, তামাযুর,
কালাবা, হায়্যা রীতা উম্মল আপনার এবং উম্মে সুফিন ইবন হিশাম বলেন : হড়াশিমের চার পুত্র
এবং পড়াচ কন্যা সন্তান ছিলেন ৷ তারা হলেন আব্দুল ঘুত্তালিব, আসাদ, আবু ছাইফী, নায্লা,
শিফা, খালিদা, যয়ীফা, রুকাইয়া এবং হায়্যা আবদুল ঘুত্তালিব রুকাইয়্যার মা সালমা বিনত
আমুর ইবন যাযদ (ইবন লবীদ ইবন খাদাশ ইবন আমির ইবন গানাম ইবন আদী ইবন নাজ্জার)
ছিলেন মদীনাবাসী ৷ তিনি অন্যদের মায়ের বিষয়ও উলেখ করেছেন ৷ তিনি বলেন : আব্দুল
মুত্তালিবের দশ পুত্র ও ৬ কন্যা ছিলেন আব্বাস, হামৃযা, আব্দুল্ল-হৃপু আবু তালিব (তার আসল
নাম ছিল আব্দ মানাফ, ইমরান নয়) ঘুবড়ায়র, হুরিছ ৷ তিনি ছিলেন পিতার জ্যেড়াষ্ঠ সন্তান ৷
এজন্যেই তার নামেই তার পিতার কুনিয়ড়াত বা উপনাম হয়, জহস , (মতাস্তরের হজল ) তার
ধন-সষ্পদের আধিক্যের কারণে তার লকব হয় গীদাক ৷ মুকাওয়েম, যিরার, আবু লাহাব, (তার
নাম ছিল আবদুল ইস্যা সফিয়্যা, উম্মে হাকীম আল বায়দা আতিকা, উমায়ম৷ , আরওয়৷ , যারা ৷
তিনি এদের মাদেরও নাম উল্লেখ করেছেন ৷ তিনি বলেন : আবদুল্লাহ আবু তালিব , যুবাইর এবং
সফিয়্যা ছাড়া অবশিষ্ট কন্যাদের মাতা ছিলেন ফতিমা বিনৃত আমৃর ( ইবন অইিয ইবন ইমরান
ইবন মাখৃযুম ইবন ইয়াক্যা ইবন মুররা ইবন ইমরান ইবন মাখযুম ইবন ইয়াক্যা ইবন মন্সিক
ইবন নয্র ইবন কিনানা ইবন থুযাযমা ইবন মুদ্রিকা ইবন ইলইয়াস ইবন মুযার ইবন নিযার
মুয়াদ্দ ইবন আদনান) ৷ আবদুল্লাহ পুত্র মুহাম্মদ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়ামাল্লাম যিনি
হচ্ছেন আদম সন্তানদের সর্দার ৷ তার যা ছিলেন আমিনা ৰিনতে ওহব ইবন আব্দ মানড়াফ ইবন
যুহ্রা ইবন কিলাব ইবন মুররা ইবন কা’ব ইবন লুয়াই ৷ তারপর তিনি তাদের সকলের মায়ের
বিস্তরিতভাবে উল্লেখ করেন ৷ তারপর তিনি বলেন : বংশ পরম্পরা আর বৈবাহিক সুত্রের
আত্মীয়তার বিবেচনায় বনী আদমের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ও সবচেয়ে মর্ষাদাবান সন্তান ৷ পিতা মাতা
উভয় ফুলের বিবেচনায় তিনি হচ্ছেন সর্বশ্রেষ্ঠ ৷ তার উপর দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক আল্লাহর
পক্ষ থেকে কিয়ামত পর্যন্ত ৷
ওয়াসিলা ইবন আসকা’ সুত্রে শাদ্দাদ ইবন আবু আমার থেকে বর্ণিত ৷ আওয়ায়ী বর্ণিত
এমর্মের হাদীস ইতিপুর্বে উল্লেখ করা হয়েছে যে, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা
ইসৃমাঈলের সন্তানদের মধ্য থেকে কিনানা’ থেকে মনোনীত করেছেন কুরাইশকে, কুরইিশ
থেকে মনোনীত করেছেন হাশিমকে আর আমাকে মনোনীত করেছেন বনু হাশিম থেকে ৷
(মুসলিম) পরে নবী করীম (সা) এর মুৰারক জন্মবৃত্তাত আলোচনা করা হবে এবং এতদসক্রোন্ত
ধ্ হাদীস আর মনীষীদের উক্তিসমুহ উল্লেখ করা হবে ইনশা আল্লাহ ৷
জড়াহিলি যুব্শর কিছু ঘটনার সংক্ষিপ্ত আলোচনা
বনু ইসমাঈলের নিকট থেকে জুরহুম গোত্রের বায়তুল্পাহ্র দায়িত্ব গ্রহণ সম্পর্কে ইতিপুর্বে
আলোচনা করা হয়েছে ৷ এতে তারা আগ্রহী ছিল এজন্য যে, তারা ছিল কন্যা পক্ষের সন্তান
খুযাআ গোত্র জুরহুমদের উপর হামলা করে তাদের নিকট থেকে বায়তৃল্পাহ্র দায়িতু ছিনিয়ে
নেয়ার বিষয়ও সেখানে উল্লিখিত হয়েছে ৷ অতঃপর কুসাই এবং তার সন্তানদের নিকট তা’
ফিরে আসার কাহিনীও বর্ণিত হয়েছে ৷ রসুলুল্লাহ্ (না)-এর আবির্ভাবের পুর্ব পর্যন্ত তাদের হাতে
বায়তুল্লাহ্র সেবায়ােতর দায়িতু ছিল অব্যাহত ধারায় ৷ নবী করীম (সা) তা বহাল রাখেন ৷
জাহিলী যুগের কতিপয় প্রসিদ্ধ ব্যক্তিত্ব
খাশিদ ইবন সিনান আল-আৰাসী
তিনি ছিলেন হযরত ঈসা (আ) ও মহানবীর মধ্যবর্তী কালের লোক ৷ কারো কারো ধারণা
তিনি একজন নবী ছিলেন ৷ আল্লাহ্ই ভালো জানেন ৷
তাবারানী বলেন : আহমদ ইবন যুহায়র আত-তসেতাহুন্৷ আমাদের নিকট সাঈদ ইবন
জুবায়র এর বরাতে ইবন আব্বাস (বা) থেকে হাদীস বর্ণনা করে বলেন : খালিদ ইবন সিনানের
কন্যা রাসুলুল্লাহ (না)-এর নিকট আগমন করলে তিনি তার জন্য নািজঃৰ্ চাদর বিছিয়ে দেন
এবং বলেন : এেদ্ৰ ফ্তে ষ্ণ্শুশ্ম্ ; এ হচ্ছে এমন এক নবীর কন্যা, যাকে তার সম্প্রদায়
ধ্বংস করেছে ৷ বাজ্জারও ন্ডিন্নসুত্রে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ৷ তিনি বলেন, খালিদ ইবন
সিনানের উল্লেখ রাসুলুল্লাহ (না)-এর নিকট করা হলে তিনি বলেন, তিনি ছিলেন এমন এক
নবী, যাকে তার সম্প্রদায় ধ্বংস করেছে ৷ অতঃপর তিনি বলেন : এ সুত্র ছাড়া হাদীসটি মারকু’
পদ্ধতিতে বর্ণিত হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই ৷ আর এসুত্রের একজন রাবী কায়েস ইবন
রবী বিশ্বস্ত হলেও তার স্মৃতিশক্তি দুর্বল ছিল ৷ তিনি হাদীসে এমন কিছু অন্তর্ভুক্ত করতেন, যা
আসল হাদীস নয় ৷ আল্লাহ্ই ভালো জানেন ৷
বায্যার বলেন : সাঈদ ইবন জুবাঈর থেকে মুরসালরুপে হাদীসটি বর্ণিত ৷ আর হাফিজ
আবু ইয়ালা আল-মুছিলী ইবন আব্বাসের বরাতে বলেন, আব্বাস গোত্রের খালিদ ইবন
সিনান নামক জনৈক ব্যক্তি তার সম্প্রদায়কে বলেন : আমি তোমাদের উপর আসন্ন
কঙ্করময় উচ্চ ভুমির আগুন নিতিয়ে দেবাে ৷ তখন তার সম্প্রদায়ের জনৈক, ব্যক্তি তাকে
বললো, আল্লাহর কসম, হে খাপুিদ, তুমি তো সত্য ছাড়া আমাদের সঙ্গে কখনো কোন কথা
বলনি ৷ তবে তোমার এ বক্তব্যের অর্থ কী? তখন খালিদ তার জাতির কিছু লোক দিয়ে বের
হলেন ৷ তাদের মধ্যে অস্ফোরা ইবন যিয়াদও ছিল ৷ তিনি সেখানে আগমন করলে সে আগুন
পাহাড়ের ফীক থেকে বেরিয়ে আসছে দেখেন ৷ তখন খালিদ তাদের জন্য রেখা টড়ানলেন এবং
তাতে তাদেরকে বসালেন এবং বললেন : আমি তোমাদের নিকট আসতে হলে তোমরা আমার
নাম ধরে ডাকবে না ৷ তখন আগুন এমনভাবে বের হয়ে আসছিল যেন লাল রঙের অশ্বদল
একের পর এক ছুটে আসছে ৷ তখন খান্সিদ অগ্রসর হয়ে আপন লাঠি দিয়ে তাকে আঘাত
করছিলেন আর বলছিলেন :
আল-যিদায়া ওয়ান নিহায়া (২য় খণ্ড) ৫১
প্রকাশ পেয়েছে, প্রকাশ পেয়েছে, প্রকাশ পেয়েছে সকল হিদায়াত ৷ ইবনু রাঈয়া
আল-সাবী মনে করেছে, আমি সেখান থেকে বের হবে৷ না ৷ আমার বস্ত্র তো আমার হাতেই ৷
একথা বলে তিনি সে ফাটলে ঢুকে পড়েন ৷ সেখানে তার বিলম্ব হলে আপনারা ইবন যিয়াদ
তাদের উদ্দেশ্যে বলেন : আল্পাহ্র কসম, তোমাদের সঙ্গী বেচে থাকলে অবশ্যই তোমাদের
নিকট এতক্ষণে ফিরে আসতেন ৷ তারা বললেন : তোমরা তাকে তার নাম ধরে ডাকো ৷ রাবী
বলেন, তারা বললাে : তিনি আমাদেরকে নাম ধরে ডাকতে নিষেধ করেছেন ৷ তখন তারা তার
নাম ধরে ডাকলো ৷ তখন মাথায় হাত তিনি মাথায় হাত রেখে বের হয়ে এলেন ধরে এবং
বললেন : আমি কি তােমাদেরকে আমার নামে ডাকতে নিষেধ করিনিন্ আল্লাহর কসম , তোমরা
তো আমাকে হত্যা করে ফেললে ৷ সুতরাং আমাকে দাফন করে ফেল ৷ যখন তোমাদের নিকট
দিয়ে কিছু গাধ৷ অতিক্রম করবে তখন তার মধ্যে একটি শাখা থাকবে লেজ কাটা তখন
তোমরা আমাকে কবর থেকে উঠালে জীবিত পাবে ৷ তারা তাকে ধাখন্ন করলো ৷ তখন তাদের
নিকট দিয়ে কিছু সংখ্যক গাধ৷ অতিক্রম করলো ৷ তার মধ্যে একটি শাখা সত্যিই লেজ কাটা
ছিল ৷ তখন আমরা একে অপরকে বললাম : কররট৷ খুড়াে ৷ কারণ তিনি আমাদেকে কবর
বোড়ার নির্দেশ দিয়েছেন ৷ তখন আম্মারা তাদেরকে বললেন ও না, তোমরা তার কবর খুড়বে
না ৷ আল্লাহ্র কসম , মুদার গোত্র যেন আমাদেকে বলতে না পারে যে, আমরা আমাদের মৃতদের
কবর খুড়ে থাকি ৷ থালিদতে৷ তাদেরকে বলছিলেন ; তার শ্রীর পেটের মাংসে রয়েছে দু’টি
ফলক ৷ তোমাদের কোন অসুবিধা দেখা দিলে সে দৃ’টির দিকে তাকাবে ৷ তোমরা যা চাইবে,
তার কাছে তা ৷ই পাবে ৷ রাবী বলেন, কোন ঋতু বতী শ্রী লোক যেন তা স্পর্শ না করে ৷ তারা
৷ তার ত্রীর নিকট ফিরে এসে তাকে সে বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে সে ঋ তুবভী অবন্থায়ত তাদের দিকে
তা বের করে আগে ৷ ফলে ফলকের সমস্ত উপদেশাবলী মুছে যায় ৷
আবু ইউনুস বলেন সাম্মাক ইবন হারব বলেছেন, তিনি সে সম্পর্কে নবী করীম (সা) কে
জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন : এতো এমন নবী, যাকে তার জাতি ধ্বংস করেছে ৷ আবু ইউনুস
সিমাক ইবন হারবের বরাতে বলেন, খালিদ ইবন সিনানের পুত্র নবী (না)-এর নিকট আগমন
করলে তিনি বললেন, মারহাবা হে ভাতিজ৷ ! এটি ইবন আব্বাসের উক্তি ৷ তাতে একথা নেই যে,
তিনি নবী ছিলেন ৷ আর সে সব মুরসল বর্ণনায় রয়েছে যে, তিনি নবী এ কথা সেগুলো
নির্ভরযোগ্য নয় ৷ খুব সম্ভব তিনি একজন পুণ্যবান ও কারামত সম্পন্ন লোক ছিলেন ৷ কারণ
তিনি যদি অম্ভবর্তীকালের লোক হয়ে থাকেন, তবে সহীহ বুখারীতে রাসুলুল্লাহ (সা) থেকে
প্রমাণিত আছে যে, তিনি বলেছেন০ ং ঈসা ইবন মারইয়ামের সবচেয়ে নিকটতম ব্যক্তি হচ্ছি
আমি ৷ কারণ ,তার আর আমার মধ্যথানে কোন নবী নেই ৷ আর তার পুর্বে হলেও তার নবী
হওয়ার সম্ভাবনা নেই ৷ কারণ, আল্লাহ বলেন :
“যাতে তুমি এমন এক জাতিকে সর্তক করতে পার” যাদের কাছে তোমার পুর্বে সতঘকািৰী
আসেনি ৷ (২৮ কাসাস ৪৬) একাধিক আলিম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা ইসমাঈল (আ)-এর
পর আরবাদঃ মধ্যে কোন নবী প্রেরণ করেননি; কেবল শেষ নবী মুহাম্মদ (না)-ব্যতীত ৷ কাবা
শরীফের প্রতিষ্ঠাতা ইব্রাহীম (আ) তার জন্য দোয়া করেছিলেন ৷ কাবড়াকে আল্লাহ বিশ্ববাসীর
জন্য শরীয়ত সম্মত কিবলা করেছেন ৷ আর অন্যান্য নবীরা নিজ নিজ জাতিকে মহানবীর
আগমনের সুসংবড়াদ দান করেছেন ৷ সর্বশেষ যিনি এ সুসংৰাদ দিয়েছেন, তিনি হলেন ঈসা ইবন
মারয়াম (আ) ৷ আরবদের প্রতি প্রেরিত নবী ছিলেন বলে সুহায়লী প্রমুখ আলিমগণ যা
বলেছেন, এত তা রদ হয়ে যায় ৷ মাদয়ানরাসী সুয়ায়ব ইবন লু সিহ্যাম ইবন শুয়ায়ব ইবন
ছাফওয়ান, অনুরুপ ভাবে তাদের এ বক্তব্য রদ হয়ে যায় ৷ আরবে হানযালা ইবন সাফওয়ান
এরও নবীরুপে আগমন ঘটে এবং তাকে অস্বীকার করলে আল্লাহ তাদের উপর বুখৃত নসরকে
বিজয়ী করেছিলেন ৷ তিনি তাদের হত্যা আর বন্দী করেন ৷, যেমন ঘটেছিল বনী ইসরাঈলের
ক্ষেত্রে ৷ আর এটা ঘটে মাআদ ইবন আদমান এর স্ন্ব’সনামলে ৷ স্পষ্টত এরা ছিলেন নেককার
লোক, কল্যাণের দিকে তারা ভাকতেন ৷ আল্লাহ ভালো জানেন ৷ জরহুমের পর খুযাআদের
বৃত্তান্ত প্রসঙ্গে আমর ইবন লুহাই ইবন কিমআ ইবন খন্দফ সম্পর্কে ইতিপুর্বে আলোচনা করা
হয়েছে ৷
হাতিম ভাই : জাহিলী যুগের অন্যতম প্রধান দাতা
তিনি হাতিম ইবন আবদুল্লাহ (ইবন সাআদ ইবন হাশরাজ ইবন ইমরাউল কায়েস ইবন
আদী ইবন আহ্যাম ইবৃদ আবু আহযাম ) তার আসল নাম ছারুমা ইবন রবীআ ইবন জারওয়াল
ইবন সা’ল ইবন অড়াম্র ইবন গাওছ ইবন তাই আবু সড়াফফানা আত-তাঈ সাহাবী অড়াদী ইবন
হাতিম তারই পুত্র ৷ জাহিলী যুগে তিনি ছিলেন বিপুল প্রশংসিত বড়দাতা ৷ অনুরুপ ভাবে
ইসলামী যুগে তার পুত্রও ছিলেন একজন নামকরা দাতা ৷ হাতিমের বদান্যতার অনেক কিৎবদন্তী
ও চমকপ্রদ কাহিনী প্রচলিত আছে ৷ তবে সেসব দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি আর পরকালের মুক্তি ও
কল্যাণ তার কাম্য ছিল না ৷ সেসবের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল লোকজনের প্রশংসা কুড়ানাে ৷
হাফিজ আবু বকর আল-বাযযার তার মুসনাদ গ্রন্থে ইবন উমর সুত্রে বর্ণিত আছে যে , মহানবী
(স)-এর নিকট হাতিমের প্রসঙ্গে আলোচনা করা হলে তিনি বলেন : তিনি যা চেয়েছিলেন তাই
পেয়েছেন ৷
আদী ইবন হাতিম সুত্রে বর্ণনা করেন : আমি রাসুলুল্পাহ (না)-কে বললাম : আমার পিতা
আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখতেন এবং নানা সৎ কাজ করতেন ৷ এজন্য তিনি কি পুণ্য লাভ
করবেনঃ জবাবে রাসুলুল্লাহ (সা) বললেন : তোমার পিতা যা চেয়েছিলেন, তাই পেয়েছেন ৷
আবু ইয়া’লা ও বাগাবী ভিন্ন ভিন্ন সুত্রে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷
সহীহ (ৰুখারীতে) উল্লিখিত হয়েছে যে, যে তিন ব্যক্তির জন্য জাহান্নামকে প্রজ্বলিত করা
হবে, তাদের মধ্যে একজন হয়ে যে ব্যক্তি, যে এজন্য দান করে, যেন তাকে দাতা বলা হয় ৷
দুনিয়াংত ৩াকে দা তা বল ই হবেত তার প্রতিদা ৷ন ৷ অনুরুপভা যে একজন আলিম এবং মুজাহিদের
জন্যও জ ৷হান্নামের অগ্নি প্রজ্বলিত করা হবে ৷
সহীহ (বুখারীতে) অপর এক হাদীসে আছে যে, সাহাবায়ে কিরাম রাসুলুল্লাহ (না)-কে
জিজ্ঞেস করেন, আবদুল্লাহ ইবন জাদ্আন ইবন অড়ামৃর ইবন কার ইবন সা’দ ইবন তায়ম ইবন
মুররা সম্পর্কে ৷ তারা বললেন ও তিনি অতিথি আপ্যায়ন করতেন, দাস মুক্ত করতেন এবং
দান খয়রাত করতেন ৷ এতে কি তার কোন কল্যাণ হবে? রাসুলুল্লাহ (সা) বললেন০ সে তাে
দীর্ঘ জীবনের মধ্যে একটা দিনও একথা বলেনি হে আমার পালনকর্তা! কিয়ামতে র দিন আমার
অপরাধ ক্ষমা করো ৷ অনুরুপভা বে অনেক খ্যাতনামা দাতা আছে, যার প্ ৷অভাব আর দুর্যোগের
সময় মানুষকে আহার করার (তাদের অবস্থাও এরুপই হবে) ৷ বায়হকী আলী ইবন আবু
তালিবের মন্তব্য উদ্ধৃত করেছেন এভাবে : সুবহানাল্লাহ! কতো মানুষ কতই না পুণ্য কাজ করে ৷
অবাক লাগে সে ব্যক্তির জন্য, যার কাছে তার একজন মুসলিম তাই অভাবের সময় আসে
অথচ, সে নিজেকে কল্যাণ কর্মের জন্য উপযুক্ত মনে করে না ৷ সে সওয়াবের আশা আর শাস্তির
ভয় না করলেও সৎকাজে তো তার ছুটে যাওয়া উচিৎ ৷ কারণ তা-তাে মুক্তির পথেই চালিত
করে ৷ তখন জনৈক ব্যক্তি তার দিকে এগিয়ে এস বললাে : হে আমীরুল মুমিনীন ৷ আমার
পিতা মাতা আপনার জন্য কুরবান হোন, আপনি কি আল্লাহ্র রাসুলের নিকট এমন কথা
শুনেছেনঃ তিনি বললেন, হাত তার চেয়েও উত্তম কথা হলো তার কবীলার বন্দী নারীদেরকে যখন
উপস্থিত করা হয়, তখন এক দ সী সামনে এলো, রক্তিম ওষ্ঠ ঘন-কালো লম্বা চুল, দীর্ঘ গর্দান,
ভীরের মতে ৷ ভীক্ষ্ণ নাক, অবয়ব মধ্যম স্তন সুডো ল, পায়ের গোছা মাং সল, চিকন কােমর , মরু
নিতম্ব ও নিটোল পিঠের অধিকড়ারিণী ৷ বর্ণনাকারী বলেন, তাকে দেখেই আমি বিযুগ্ধ হই এবং
বলি, আমি অবশ্যই তাকে পাওয়ার দাবী নিয়ে রাসুলের নিকট গমন করবো এবং রাসুল (মা)
তাকে আমার গনীমতের মালের অন্তর্ভুক্ত করবেন ৷ তার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আমি তার
সৌন্দর্যের কথা বিস্মৃত হই ৷ বিপুিত হই আমি তার কথা শুনে তার বাগ্নিতায় ৷ সে বললাে , হে
মুহাম্মদ! আপনি কি আমাকে মুক্ত করবেন? আরবের গোত্রদের ঠাট্ট৷ বিরুপ থেকে রক্ষা করবেনঃ
কারণ, আমি তো আমার গোত্রের সর্দার তনয়া ৷ আর আমার পিতা যাকে সাহায্য করা দরকার,
তাকে সাহায্য করতেন, যাকে রক্ষা করা দরকার, তাকে রক্ষা করতেন, তিনি রন্দীকে মুক্ত
করতেন, ক্ষুধাতৃরকে পেট পুরে খাওয়াতেন, বস্ত্রহীনকে বস্ত্রদান করতেন, অতিথিংক আপ্যায়ন
করতেন, লোকজনকে আহার করাতেন, সালাতের বিস্তার ঘটাতেন ৷ তিনি কখনো অভাবীকে
বিমুখ করেন নি ৷ আমি হাতিম তাই’র কন্যা ৷ তখন নবী (স) বললেনঃ হে বালিকা
এগুলোতে৷ সত্যিকার মু’মিনের গুণাবলী ৷ তে তামার পিতা মু’মিন হয়ে থাকলে আমরা
অবশ্যই তার প্ৰতি সদয় হবে৷ ৷ তিনি তখনি আদেশ দিলেন : তোমরা তাকে মুক্ত করে
দাও ৷ কারণ, তার পিতা উত্তম চরিত্রকে ভালোবাসতেন ৷ আর আল্লাহ তা আলা উত্তম চরিত্রকে
ভালোবাসেন ৷ তখন আবু বুরদ৷ ইবন ইয়ানড়ার দাড়িয়ে বললেনঃ হে আল্লাহ্র রাসুল! আল্লাহ
উত্তম চরিত্র ভ ৷লোবাসেনঃ তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লা ল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “যে সভার
হাতে আমার জীবন নিহি তার শপথ করে বলছি, সুন্দর চরিত্র ছাড়া কেন ব্যক্তি জান্নাতে
,প্ৰবেশ করতে পারবে না ৷”
আদী ইবন হাতিম এর বৈপিত্রেয় ভাই এর বরাতে বলেন০ ং হাতিম এর শ্রী নাওয়াবকে বলা
হয় হাতিম সম্পর্কে আমাদেরকে কিছু শুনাও ৷ তিনি বললেন, তার সব ব্যাপারই ছিল অবাক
হওয়ার মতো ৷ একবার আমরা দৃর্শিক্ষে আক্রান্ত হলাম ৷ তাতে সব কিছুই আক্র৷ ত হলো এর
ফলে মাটি ফেটে চৌচির হয়ে গেল ৷ আকাশ ধুলাবালিতে ছেয়ে গেলো ৷ স্তন্য দ ত্রীদের দুধ
শুকিয়ে গেল ৷ উটগুলো এমনই দুর্বল কঙ্কালসার হয়ে পড়ে যে , এক ফোটা দুধও দিতে পারছিল
না ৷ অর্থ সম্পদ নিশ্চিহ্ন করে দেয় যে দৃর্ভিক্ষ ৷ আমরা এক শীতের রাতে এক নির্জন প্রাম্ভেরে
ছিলাম ৷ ক্ষুধার তীব্রতায় শিশুরা চিৎকার জুড়ে দেয়, চিৎকার জুড়ে দেয় আব্দুল্লাহ ৷ আদী এবং
সাফানা ৷ থােদার কসম , আমরা কোন কিছু পেলে তা দিয়ে তাদেরই ব্যবস্থা করতাম ৷ তিনি
একটি শিশুকে এবং আমি কন্যাটিকে কোলে তুলে নিলাম এবং প্রবোধ দিতে লাগলাম ৷
আল্পাহ্র কলম, বেশ কিছু রাত অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত তারা নীরব হলো না ৷ অতঃপর
আমরা অপর পুত্রটির দিকে মনোনিবেশ করি ৷ তাভৈ?ণ্ক প্রবােধ দিলে অতিকা,ষ্ট তাকে চুপ করা
গেল ৷ অতঃপর আমরা শাম দেশীয় একটা মখমলের চাদব বিছাই এবং শিশুদেরকে তার
উপর শোয়াই ৷ তিনি আর আমি একটা কক্ষে ঘুমাই ৷ সন্তানরাও ছিল আমাদের মধ্যস্থলে ৷
এরপর তিনি আমার দিকে এগিয়ে এলেন আমাকে প্রবােধ দেয়ার জন্য যাতে আমি ঘুমাক্রুন্ন্
পারি ৷ আর তিনি যে কি চান, তা-ও আমি বুঝতে ৩পারি ৷ তখন আমি ঘুমেরভ তান ৷কবি ৷ আমাকে
বললেন, হলোটা কী? তুমি কি ঘুমিয়েছ গো? আমি চুপ করে রইলাম ৷ তখন, তিনি বললেন, সে
তো দেখছি ঘুমিয়েই পড়েছে ৷ অথচ আমার চোখে ঘুম ছিল না ৷ রাত্রি যখন তাদেরকে আচ্ছন্ন
করে নেয়, নক্ষত্র যখন অম্ভর্ধান করে চতুর্দিকের শব্দ আর কােলাহল থেমে গিয়ে যখন পুর্ণ
নিস্তব্ধত ৷ বিরাজ করে ৷
তখন র্তাবুটির কোন এককোণ কে একজন যেন উঠিয়ে দিল ৷ তখন তিনি বললেন, এখানে
কে? তখন সে ফিরে গেলো ৷ রাত ভোর হলে সে ফিরে আসে ৷ আবার তিনি বললেন : কে?
সে বললো-হে আদীর পিতা ৷ আমি তোমার অমুক প্ৰতিবেশিনী ৷ চিংকার করে রোদন করা আর
ডাকার জন্য তোমাকে ছাড়া আর কা ৷উকে আমি প৷ ৷ইনি ৷ আমার এমন সন্তানদের নিকট থেকে
তোমার কাছে এসেছি, যারা ক্ষুধায় নেকভ্রুড়র মতে ৷ চীৎকার দিচ্ছে ৷ তিনি বললেন দেরী না
করে এক্ষুণইতু তাদেরকে আমার কাছে নিয়ে এসে৷ ৷ নাওয়ার বললে? আমি ছুটে এসে
বললাম তুমি একি করেছ? শুয়ে পড়ো ৷ আল্লাহর কলম, তোমার সন্তানরা ক্ষুধায় ছটফট
করছে ৷ তাদেরকে প্ৰবােধ দেয়ার মতে৷ কিছু তুমি পাওনি ৷ কি হবে ঐ মহিলা আর তার
সন্তানদের নিয়ে? তিনি বলললেন৪ তুমি থাম ৷ ইন্শা আল্লাহ আমিও তামাকে তৃপ্ত করবো ৷ তিনি
বলেন, সে মহিলাটি এগিয়ে আসে, দু’জন শিশুকে সে বহন করছিল আর চারজন শিশু হেটে
চলছিল তার ডানে বারে ৷ যেন সে উটপাথী আর তার চাবিপার্শে বাচ্চাগুলো ৷ হাতিম আপন
ঘোড়ার দিকে এগিয়ে যান এবং তার বুকে বর্শা দিয়ে আঘাত করে তারপর চক্মকি পাথর ঘষে
আগুন জ্বালান ৷ এরপর ছোরা দিয়ে চামড়া ছিলে ফেলে তার শ্রী লোকদের হাতে তুলে দিয়ে
বললেন, তুমি নিয়ে যাও ৷ তিনি এবং তোমার সন্তানদেরকে পাঠ৷ ৷ও ৷ সেত তার শিশু সন্তানদের
পাঠায় ৷ এরপর তিনি বলেন : শরম শরম তোমরা কি চর্মসার লোকগুলােকে রেখে খাবে ৷
এরপর তিনি তাদের মধ্যে ঘুরতে শুরু করেন ৷ এক পর্যায়ে তাদের সংকোচ দুর হয় এবং তারা
তার কাছে ঘেষে এবং তার কাপড় জড়িয়ে ধরে ৷ এরপর তিনি কাত হয়ে এককােণে শুয়ে
পড়েন, আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকেন ৷ আল্লাহ্র কসম, তিনি এক র্টুকরা পােশত বা এক
ঢেকে পানিও স্পর্শ করলেন না ৷ অথচ তার প্রয়োজন ছিল সবচেয়ে বেশী ৷ এ অবস্থায় আমাদের
ভোর হল ৷ আর আমাদের কাছে ঘোড়াটির হাডিদ্র আর খুর ছাড়া আর কিছুই ছিল না ৷
দারা কুতনী বলেন : কাযী আবু আবদুল্লাহ আল মাহামিলী আমার নিকট বর্ণনা করে
বলেন : হাতিমের স্তী হড়াতিমকে বললেন, হে আবু সাফানা, আমি এবং ভুমি একাভে খাবার
যেতে চাই, যেখানে আর কেউই থাকবে না ৷ স্বামী ত্রীকে সে অনুমতি দিলেন ফলে তিনি তার
র্তাবু লোকালয় থেকে এক ক্রোশ দুরে সরিয়ে নিলেন এবং তাকে খাদ্য প্রন্তুতের নির্দেশ দান
করলেন এবং সে মতে খাদ্য প্রস্তুত করা হলো ৷ এসময় স্বামী স্তী উভয়ের জন্য পর্দা ঝুলড়ানাে
হল ৷ খাদ্য পাক সম্পন্ন হওয়ার সময় ঘনিয়ে এলে হাতিম মাথা বের করে বললেন :
আমার উপর তোমার পর্দায় আড়াল রেখে পাকড়াবে না এমন হৰু:ল তুমি যা পাকায়ে, তা
আমার জন্য হারাম হবে ৷ কিন্তু তা পাকানাের সময় হলে পাক করবে, আগুন জ্বালারে ৷
বর্ণনাকারী বলেন, এর পর তিনি পর্দা উন্মেড়াচন করেন,খাদ্য সম্মুখে এগিয়ে দেন এবং
লোকজনকে ডাকলেন, তিনি এবং অন্যরা মিলে খাবার খেলেন ৷ তখন হাতিম তাই’র ত্রী
বললেন : আমাকে যা বলেছিলে , তা তো পুরণ করলে না ! তখন জবাবে তিনি বললেন : আমার
মন আমার নিকট অধিক সম্মানের পাত্র ৷ প্রসংসা পাওয়ার উর্ধে আমার মন ৷ আর আমার
বদান্যতা তো পুর্ব থেকেই খ্যাত ৷ অতঃপর তিনি বললেন :
১াএ
আমার প্ৰতিবেশিনী আমার সম্পর্কে এছাড়া কোন অভিযোগ করেন৷ যে, যখন তার স্বামী
দুরে থাকে আমি তাকে দেখতে যইি না ৷
আমার দান পৌছবে তার নিকট এবং ফিরে আসবে তার স্বামী অথচদ্ভ ভেদ ঘরা হবে
না তার পর্দা ৷
হাতিম তাই’র আরো কিছু কবিতার পংক্তি :
আমি যখন রজনী যাপন করি প্রভাবিত করি আমার প্রতিবেশীর শ্ৰীকে, যাতে আধার ঢেকে
নেয় আমাকে, আমি আর গোপন থাকি না ৷
আমি লজ্জিত করবো আমার প্রতিবেশিনীকে আর বিশ্বাষ ঘাতঘতা করবো আমার
প্ৰতিবেশীর সঙ্গে ৷ না, আল্লাহ্র কসম, যতদিন বেচে থাকি, তা করতে পারিনা ৷
হাতিম তাইর আরো কিছু কাবতার পংক্তি :
চক্ষু মুদে নেই যখন বের হয় আমার প্রতিবেশিনী, এমনকি ঢেকে নেয় আমার
প্রতিবেশিনীকে পর্দা ৷
হাতিম ভাইয়ের আরো কিছু কবিতার পংক্তি :
অড়ামর স্বভাব নয় চাচাভাে ভাইকে পালি দেওয়া, যে আমার নিকট কিছু কামনা করে , আমি
তাকে নিরাশ করি না ৷
বিনা দােষে নিন্দুক আর হিংসুকের কথা , আমি ণ্ডান্ৰ বলি-চলে যাও আর আমাকে রক্ষা
কর ৷
তাদের নিন্দাবাদ আমাকে ক্লান্ত করে না এবং তা আমাকে ঘর্মাক্ত করে না ৷
আর মিলিত হয় আমার সঙ্গে ম্বিমুখী ব্যক্তি (মুনাফিক) হাসি-খুশী, তার অম্ভর্ধান আমাকে
ব্যথিত করে না ৷
আমি জয় করে নেই তার ঘোষ এবং বিরত থাকি তার থেকে, আমার বংশ আর ধর্ম রক্ষা
করার কারণে ৷
তার আরো কিছু কবিতা থেকে
হে উম্মে মালিক, শীতার্ত বিপন্ন ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করো, যখন সে আসে আমার কাছে
আগুন আর জবাইখানার মাঝে ৷
কাযী আবুল ফারজল মুআফী আবু উবায়দার সুত্রে বলেন, করি যুতালম্মিস এর এ নিম্নোক্ত
উক্তি শুনে হাতিম প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন-
সামান্য সম্পদ তার মালিকের কল্যাণ সাধন করে, আর তা দীর্ঘস্থায়ী হয়, আর বিপর্যয়ের
সঙ্গে রেশী সম্পদও দীর্ঘস্থায়ী হয় না ৷
আর সম্পদ উজাড় করার চেয়ে তা রক্ষা করা উত্তম, আর কোন রকম পুজি ছাড়া দেশ
ভ্রমণ ভ্রষ্টতারুপ ৷
এ কবিতা শুনে তিনি বলেন তার হয়েছে কী? আল্লাহ তার জিহ্বা ক৩ ’:; করুন তিনি
মানুষকে কৃপণতার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছেন ৷ তিনি কেন বলেননি
বদান্যতা সম্পদ বিনাশ করে না ধ্বংসের পুর্বে, আর কৃপণতা বৃদ্ধি সাধন করে না কৃপণের
সম্পদে ৷
অনটনে জীবন যাপনের জন্য সম্পদ কামনা করবে না, সকল ন৩ ভুন দিনের জন্য নতুন
জীবিকা আছে, যা আসরেই ৷
তুমি কি লক্ষ্য কর না যে, সম্পদ সকালে আসে আর বিকালে চলে যায় , আর তোমাকে
যিনি দান করেন তিনি তোামােটেই দুরে নন ৷ কাযী আবুল ফারাজ বলেন হাতিম তাঈ কী
চমৎকার কথাই না বলেছেন, ওোমাকে যিনি দিয়ে থাকেন তিনি মোটেই দুরে নন ৷ তিনি যদি
ইসলাম গ্রহণ করতেন তাহলে পরকা সে তার মুক্তির আশা করা যেতো ৷ আল্লাহ তা আলা তার
কিভাবে বলেছেন :
তোমরা আল্লাহ্র নিকট তার অনুগ্রহ৩ ভিক্ষাকর ৷ (৪ নিসাং : ৩২)
আল্লাহ আরো বলেন :
আমার বান্দারা আমার সম্পর্কে তোমাকে জিজ্ঞেস করলে (তুমি বলবে) আমি তো নিকটেই
আছি ৷ আহ্বানকারী যখন আমাকে ডাকে, আমি তার ডাকে সাড়া দেই ৷ ( ২ বাকারা : ১৮৬)
ওয়াযাহ্ ইবন মা বাদ আ ঈ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনং হাতিম তাঈ একদা নু’মান
ইবন মুনৃযির এর অতিথি হলে তিনি অতিথিকে সসম্মানে বরণ করে নেন, নিকটে বসান এবং
ফিরে যাওয়ার সময় তাকে দুই উট বোঝাইার্ণ-রৌপ্য দান করেন ৷ এ ছাড়াও তিনি অনেক
দেশীয় উপহার সামগ্রী দান করেন ৷ সে সব সামগ্রী নিয়ে তিনি প্রস্থান করেন ৷ তিনিাজনদের
নিকটবর্তী হলে তায় কবীলার বেদৃইনদের সঙ্গে তার সাক্ষাত ঘটে ৷ তারা বললো : হে হাতিম !
তুমি তো এসেছ বাদশাহের নিকট থেকে আর আমরা এসেছিাজনদের নিকট থেকে দারিদ্র্য
নিয়ে ৷ তখন হাতিম বললেন : এসো, আমার সম্মুখে যা কিছু আছে তা নিয়ে যাও ৷ তারা তার
সম্মুখ থেকে ছোবল মেরে তা নিয়ে নিজেদের মধ্যেই তাপ-বণ্টন করে নেয় ৷ এমনকি তার
সম্মুখ থেকে নুমানের প্রদত্ত সমস্ত বিশেষ উপটোকনও তারা বণ্টন করে ফেলে ৷ এসময়
হাতিমের দিকে এগিয়ে আসে তার দাসী তরীফা এবং বলে, আল্লাহ্কে ভয় কর এবং নিজের
জন্যও কিছু অবশিষ্ট রাখ ৷ এরা তো দেখছি দীনার-দিরহাম আর উটছাগলভেড়া কিছুই বাদ
দেবে না ৷ তখন তিনি বলেন :
তরীফা বললো, থাকবেনা আমাদের একটা দিরহাম’ও আমাদের তো অপচয় করার বা দান
করার কিছুটা রইলাে না৷ ৷
আমাদের নিকট যা আছে তা ফুরিয়ে গেলেও আল্লাহ দেবেন আমাদেরকে জীবিকা, এমন
লোকদের নিকট থেকে, যারা আমাদের অন্তর্গত নয় ৷ আমরা তো নিজেরা নিজেদের জীবিকা
দাতা নই ৷
জোড়া লাপাতে পাবেনা আমাদের ক্ষরিষ্ণু দিরহাম আমাদের ছিন্ন বস্ত্রকে তবে কিনা তার
উপর দিয়ে বয়ে যায় এবং শেষ পর্যন্ত চলে যায় ৷
কোন দিন যদি একত্র হয় আমাদের দিরহাম তাহলে আমরা এমন যে, আমাদের দিরহাম
প্রতিযোগিতায় প্ৰবৃত্ত হয়ে এগিয়ে যায় কল্যাণকর কাজে ৷
আবু বকর ইবন আইয়াশ বলেন : একদা হাতিম তাঈকে জিজ্ঞেস করা হয়, আরবে কি
আপন্যার চাইতে অধিকতর বদান্যশীল কেউ আছেন? জবাবে তিনি বলেন, প্রতিটি আরবই
আমার চেয়ে বড় দাতা ৷ অতঃপর তিনি বলতে শুরু করেন, এক রাত্রে আমি আরবের এক
এতীম বালকের অতিথি হলাম ৷ এতীম বালকটির ছিল একশ ছাগল ৷ সেখান থেকে সে আমার
জন্য একটা রকরী জৰাই করলো ৷ এবং তা (পাক করে) আমার নিকট উপস্থিত করলো ৷
বালকটি আমার নিকট বকরীর মগজ উপস্থিত করলে আমি তাকে বললাম-কতই না মজাদার এ
মগজ ৷ তিনি বলেন, এ ভাবে সে (এক এক করে বার বার) মগজ আনতে থাকে ৷ অবশেষে
যখন ভোর হলো যে একশ টা বকরীই জবাই করে ফেলেছে ৷ তার কাছে আর একটিও নেই ৷
হড়াতিমকে তখন জিজ্ঞেস করা হলো, তখন আপনি কী করলেন? তিনি বললেন ও সব কিছু
করেও কী করে আমি তার পুর্ণ শুকরিয়া আদায় করতে পড়ারতামঃ তিনি বললেন, যাই হোক
আমার উৎকৃষ্ট উক্ট্রগুলাের মধ্য থেকে তাকে আমি একশ উষ্ঠী দান করলাম ৷
মুহাম্মদ ইবন জা’ফর আল-থারাইতী তার মাকারিমুল আখলাক’ গ্রন্থে তাঈ গোত্রের জনৈক
বৃদ্ধার বরাতে বলেন, হাতিম তাই এর মাতা আনৃতারা বিনতি আফীফ ইবন আমৃর ইবন
ইমরাউল কায়েস বদান্যতা-দানশীলতার কোন কিছুই বাদ দিতেন না ৷ তার ভাইয়েরা তাকে
আল-বিদায়া ওয়ান নিহড়ায়া (২য় খণ্ড) ৫২-
বারণ করতো, তিনি তাদের বাধা মানতেন না ৷ আর তিনি ছিলেন ধনাচ্য মহিলা ৷ ফলে তার
লোকজন তাকে একটা ঘরে এক বছর বন্দী করে রাখে এবং সেখানে তাকে প্রাণে ৰীচড়ার
পরিমাণ খাদ্য সরবরাহ করে, যাতে তিনি তার বদান্যতা থােক বিরত থাকেন ৷ এক বছর পর
তারা তাকে সেখান থেকে বের করে আগে ৷ তাদের ধারণা ছিল হয়তো তিনি আগের অভ্যাস
ছেড়ে দিয়েছেন ৷ ফলে তার লোকজন তার সম্পদ থেকে একখণ্ড রৌপ্য মহিলার নিকট সমর্পণ
করে এবং বলে এগুলো ভোগ-ব্যবহার করবে ৷ একদা হাওরাযিন গোত্রের এক মহিলা তার
নিকট আগমন করে ৷ তিনি তখন নিজের সম্পদ লুকিয়ে রাখেন ৷ আগন্তুক মহিলাটি তার নিকট
যাড্ডা করে ৷ তখন তিনি বলেন, সম্পদের এই রৌপ্য খণ্ডটি তুমি নিয়ে যাও ৷ আল্লাহর কসম,
আমার এমন ক্ষুধার অভিজ্ঞতা হয়েছে যে, কোন প্রার্থীকে বিমুখ করবে না বলে আমি শপথ
করেছি ৷ তখন তিনি আবৃত্তি করতে শুরু করেনঃ
আমার জীবনের শপথ; ক্ষুধা আমাকে এমনই আঘাত করেছে যে, আমি শপথ করেছি-
জীবনে কোন ক্ষুধাতুরকে বিমুখ করবো না ৷
তাই আজ তোমরা এই ভর্ন্তসনাকারীকে বলো আমাকে মাফ কর; আর তা না করলে
আঙ্গুল কামড়াও ৷
তবে কি তোমরা বা তোমাদের মত নিবৃ কারীরা তোমাদের বোনকে ভ€সনা ছাড়া অন্য
কিছু বলবে বলে কি আশা করা যায় ?
আজ তোমরা যা দেখছ, তাতাে আমার স্বভাব ৷ তবে হে মোর মায়ের সন্তান ! কিরুপে আমি
আমার স্বভাব বিসর্জ্য দিতে পারিঃ হায়ছাম ইবন আদী আদীর বরাতে বলেন : আমি হাতিমের
নিকট উপস্থিত ছিলাম ৷ তিনি নিজেকে ভর্ন্তসনা করছিলেন ৷ আমাকে বললেন, বৎস ! আমি মনে
মনে তিনটি অত্যাসের প্রতিজ্ঞা করছি ৷ আল্লাহর কসম, আমি প্রতিবেশীর ত্রীর সঙ্গে কোন
সন্দেহজনক আচরণ করিনি কখনো ৷ আমার নিকট যে আমানত রাখা হয়েছে, তা অবশ্যই
ফেরৎ দান করেছি এবং আমি কোন দিন কারো মনে কষ্ট দেইনি ৷ আবু বকর আল-খারাইভী
বলেন : আলী ইবন হারব আবু হুরাইরড়ার আযাদকৃত গেলাম মুহাররার থেকে বর্ণনা করেনঃ
আবদুল কায়েস গোত্রের একদল লোক হাতিম তাঈর কবরের নিকট দিয়ে যাওয়ার সময়
সেখানে অবতরণ করে ৷ ঐ দলের আবুল খায়বারী নামক এক ব্যক্তি দাড়িয়ে তার কবরে
প্যায়ের ঘেড়াচা দিয়ে বলেন ; হে আবু জাদ! আমাদের যেহমানদারী করুন ৷ তখন জনৈক সঙ্গী
র্তাকে বলে , তুমি কি হাডিদ্রর সঙ্গে কথা বলছ তড়াভাে পচে-পলে গেছে ৷ তারপর রাত হলে তারা
সকলে ঘুমিয়ে পড়লাে ৷ উক্ত আবুল খায়বারী ব্যাকুল হয়ে দীড়িয়ে বললেন হে আমার
সম্প্রদায়! নিজ নিজ সওয়ারী গ্রহণ কর ৷ কারণ, হাতিম স্বপ্নে আমার নিকট আগমন করে
আমাকে কবিতা আবৃত্তি করে শুনিয়েছেন ৷ আমি তা মুখস্থু করেছি ৷ তিনি বলেন :
হে আবুল খয়বরী! তুমি তো এমন এক ব্যক্তি যে স্বজনের প্রতি অবিচর করে ও
তাদেরকে গলমন্দ করে ৷
তুমি আগমন করেছ সঙ্গী সথী নিয়ে কামনা কর তুমি আতিথেতড়ায় কবরবসীর নিকট, যার
মাথার থুলিতে মারিচা ধরে গােছ ৷
তুমি কি কামনা কর আমার জন্য পাপ রাত্রি যম্পোনকারীর নিদ্র কালে ৷ অথচ তোমার নিকট
রয়েছে তঈ গোত্র আর তার পশুকুল ৷
আমরা অবশ্যই তৃপ্ত করবো আমাদের অতিথিদেরকে রজনীতে আগমন ঘটবে আমাদের
উষ্ঠীর এবং তা দােহন করবো ৷
বর্ণনাকরী বলেন, তখন হঠাৎ করে উক্তি ক বীর উষ্ঠী আহত হয়ে আগমন করলে তারা
তাকে যব ই করে এবং তৃপ্ত হয়ে খায় ৷ তারা বলে, আল্লাহর কসম , হ নিম জীবিত আর মৃত
অবস্থায় আমাদের রুমহমনদরী করেছেন ৷ বর্ণনকরী বলেন, ভোরে সম্প্রদায়ের লোকেরা
তাদের সঙ্গী-সাথী নিয়ে সওয়ার হয়ে গমন করে ৷ তখন জনৈক ব্যক্তি সওয়ার হয়ে অসছিল
এবং তাদেরকে উচু স্বরে আহ্বান করছিল আর তার সাথে ছিল আরেকটি উট ৷ তখন লেকটি
বলে, তোমাদের মধ্যে কে আবুল খায়বারী? তিনি বললেন, আমি ৷ লোকটি বললাে , হাতিম
রজনীতে স্বপ্নে আমার কাছে এসে বলেন যে, তিনি তোমার সঙ্গীদের তোমার উট দিয়ে
মেহমানদা রী করেছেন এবং তোমার নিকট এ উট নিয়ে আমার জন্য আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন ৷
এই হলো যে উট ৷৩ তা নাও এবং এই বলে তাকে উটটি দিয়ে দিল ৷
আবদৃল্ল ইবন জাদআন এর কিছু বৃত্তান্ত
তিনি আবদুল্লাহ ইবন জাদ্ আন ইবন আমৃর ইবন কা ব ইবন সা আদ ইবন তাইম ইবন
মুররহ, যিনি ছিলেন বনু৩ তাইমের নেতা এবং তিনি ছিলেন আবু বকর সিদ্দীক রদিয়াল্লাহ
অনহুর চাচাতাে ভাই ৷ তিনি ছিলেন জা হিলী যুগের অন্যতম দ৩৷ ও দয়ালু ৷ জাহিলী যুগে যারা
বয়স্কদেরকে খাদ্য দান করতে, তিনি ছিলেন তাদের অন্য৩ তম ৷ তার নিজের হাতে ছিল তার
ব্যাপার ৷ তিনি আহর্য দান করতেন তীব্র দারিদ্র্যক্লিষ্ট ফকীর ব্যক্তিকে ৷ তিনি এমনই দুষ্ট
প্রকৃতির লোক ছিলেন যে, অনেক অপরাধ সংগঠন করেন ৷ এর ফলে জাতি, বংশ-গােত্র পাড়া
প্রতিবেশী সকলেই তাকে ঘৃণা আর নিন্দর চোখে দেখতাে ৷ সকলের ঘৃণা-নিন্দা আর বর্জ্যনর
মুখে একদিন তিনি ৰিচলিত হয়ে মক্কার গিরিপথে বেরিয়ে পড়েন ৷ পর্বতের মধ্যে একটা গর্ত
দেখে তিনি মনে করলেন, এতে ক্ষতিকর কিছু থাকতে পারে ৷ তিনি সেখানে গেলেন এই আশায়
যে, হয়তো সেখানে মারা গিয়ে জীবন যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন ৷ তিনি পর্ভের নিকট গমন
করলে একটা আযদাহা তার দিকে ছুটে আসে ৷ আযদাহড়াঢি তাকে দং শন করতে উদ্যত হয় ৷
তিনি তা থেকে দুরে সরে গিয়ে বরং তার উপর হামলা করতে উদ্যত হন ৷ কিন্তু তিনি
আযদাহড়াটির নিকট এসে দেখতে পেলেন যে, তা-তাে স্বর্ণের আর তার চক্ষু মুক্তার ৷ তিনি তা
ভেঙ্গে চুরে প-র্তে নিয়ে যান , গর্ভে প্রবেশ করে দেখেন যে সেখানে রয়েছে জুরহড়াম গোত্রের
শাসকদের কবর ৷ তাদের মধ্যে হারিস ইবন মুযাযও রয়েছেন, যিনি দীর্ঘ দিন অত্তর্ধানে ছিলেন ৷
ফলে তিনি কোথায় কি অবস্থায় আছেন, কিছুই জানা যায় না ৷ তিনি তাদের মাথার দিকে একটা
ফলক দেখতে পান, যাতে তাদের মৃত্যুর তারিখ লেখা রয়েছে ৷ সে ফলকে তাদের রাজভৃকালও
লেখা আছে ৷ লাশ গুলোর নিকট রয়েছে মণি-মুক্তা সোনা-রপা অনেক কিছু ৷ তিনি সেখান
থেকে নিজের প্রয়োজন পরিমাণ গ্রহণ করে বেরিয়ে পড়েন ৷ গঃত্ন্থরি দরজা সম্পর্কেও তিনি জ্ঞান
লাভ করলেন ৷ জাতির লোকজনের নিকট ফিরে এসে তিনি তাদেরকে সে সব থেকে দান
করেন ৷ ফলে তারা তাকে ভালোবাসে নেতা রানায় আর তিনিও জাতির লোকজনকে আহার
করান ৷ হাতের সম্পদ ফুরিয়ে গেলে তিনি আবীর সে গর্ভে গমন করে প্রয়োজন পরিমাণ নিয়ে
আসতেন ৷ যাদের নিকট থেকে আমরা এ কাহিনী উল্লেখ করছি, তাদের মধ্যে আছেন আবদুল
মালিক ইবন হিশাম ৷ তিনি কিতাবুত র্তীজান-এ এ কাহিনী উল্লেখ করেছেন তার রচিত
কিতাবের নাম হচ্ছে :
তার একটা বড় পেয়ালা ছিল ৷ আরোহী ব্যক্তি সওয়ারীর পৃষ্ঠে বসে এ পেয়ালায়
আহার করতো ৷ পেয়ালাটা এমনই বড় ছিল যে, তাতে একজন ছোটখাট মানুষ পতিত
হলে ডুবে যেতো ৷
ইবন কুতাইবা প্রমুখ উল্লেখ করেন যে, রাসুলুল্পাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম বলেছেন,
আবদুল্লাহ ইবন জাদআন-এর ডেগছির ছায়ায় আমি আশ্রয় নিতাম ৷ তা ছিল এক লিখিত
দলীল অর্থাৎ দৃপুরের সময় ৷ আবু জহল এর হত্যার হাদীসে আছে যে, রাসুলুল্লাহ (না) তার
সাহাবীদেরকে বলেনং নিহত ব্যক্তিদের লাশের মধ্যে তোমরা তাকে খুজবে ৷ হাটুতে
আঘাতের চিহ্ন দ্বারা তােমরা তাকে চিনতে পারবে ৷ কারণ, সে এবং আমি আবদুল্লাহ ইবন
জাদ আন এর দস্তরখানে মল্ল যুদ্ধে প্রবৃত্ত হলে সে পড়ে গিয়ে হীটুতে অ্যাঘাত পা এবং তা ভেঙ্গে
যায় ৷ তার হাটুতে এখনো সে চিহ্ন বর্তমান রয়েছে ৷ রাসুল (সা) যেমন বলেছেন, তাকে
তেমনই পাওয়া যায় ৷
ঐতিহাসিকরা উল্লেখ করে না যে, আবদুল্লাহ ইবন জাদআন খেজুর আর ছাভু থেতেন এবং
দুধ পান করতেন ৷ তিনি উমাইয়া ইবুন ল্লুাৰুছ ছালত এর এ উক্তি শ্রবণ করেন
কথা আর তাদের কর্ম আমি দেখেছি, তাদের মধ্যে সবচেয়ে সম্মানিত পেয়েছি আমি
বনু দাইয়্যানকে
“নেকী তোমায় জ্ঞানী করে তাদের খাদ্যে উপস্থিতি দ্বুারা, তদ্বারা নয়, বনু জাদআন যে
লানত করে ৷ ’অতঃপর জাদ আন পুত্র শাম দেশে দু হাজার উষ্ট্র বোঝাই গম, মধু এবং ঘী
প্রেরণ করে ৷ প্ৰড়ােকরাতেৰু একজন ঘোষণাকারী ক্৷ বার পৃষ্ঠ থেকে ঘোষণা দেয়, ইবন
জাদআন-এর ভোকর দিকে তোমরা ছুটে এসো ৷ এ প্রুসঙ্গে উমাইয়া৷ বলেন :
তার জন্য মক্কায় আছেন একজন আহ্বানকারী মশালবাহী, অপরজন আছেন কাবার ছাদে ,
যিনি আহ্বান করেন ৷ ,
আহ্বান জ ৷নায় দীর্ঘ সময় থােক কালো কাঠ নির্মিত পুর্ণ পাত্র পানে জ্ঞানের দ্বার পানে, যা
সাক্ষ্য দ্বারা তোমাকে জ্ঞানী করে ৷
এতসব কিছু সত্বেও সহীহ মুসলিমে উল্লেখিত আছে যে; আবেশা সিদ্দীকা (বা) বলেছেনঃ
হে অ ল্পা৷হ্র রাসুল, জাদ আন পুত্র আহা র করাতেন এবং অতিথির মেহমানদা ৷রী করতেন ৷ এতে
তার কো ন উপক৷ ৷র হবে? কিয়ামতের দিন এসব কি তা ৷র কোন কাজে আসবে? রাসুলুল্লাহ
(সা) বললেন, না সে তো কে ন দিন একথা রলেনি হে পালনকর্তা, কিয়ামতে র দিন আমার
অপরাধ ক্ষমা করে দেবে ৷
জাহেলিয়াত আমলের কবিদের কাব্য সং কলন সাব যে মু অ ৷ল্লাকার ইমরুল কায়সের
অংশটুকু সর্বাধিক উন্নত ও প্রসিদ্ধ যার প্রথম পংক্তি হলো
এে
— দাড়াও, প্রিয়তমা ও তার বাসগৃহের বিরহে একটু কেদে র্ধনই ৷
ইমাম আহমদ (র) হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন
রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন : “ইমরুল কায়স জাহান্নড়ামপামী কবিদের পতাকাবাহী ৷ বিভিন্ন সুত্রে
হাদীসটি বর্ণিত হলেও এটির সনদ বিশুদ্ধ ৷
হাফিজ ইবনে আসাকির বলেছেন, ইক্রো কায়সের বংশ লতিকা হলো, ইমরুল কায়স
ইবন হাজার ইবন হারিছ ইবন আমর ইবন হুজ্বর ইবনে আমর ইবন মুআবিয়া ইবন হারিছ
ইবনে ইয়া’ রাব ইবন ছাওর ইবন মুর৩ তড়া ইবনে মু আবিয়া ইবন কিনৃদা ৷ উপনাম আবু ইয়াষীদ,
মতান্তরে আবু ওহাব ও আবুল হারিছ আল কিনদী ৷ তিনি দামেশক এলাকায় বাস করতেন ৷
তিনি তার কবিতায় ঐ এলাকার বিভিন্ন স্থানের উল্লেখ করেছেন ৷ তার দুটি পংক্তি নিম্নরুপঃ
ষ্ঠেগ্রা-১-ট্ট এ১ইশ্ছা এে
এএে ব্লু
— “তোমরা দীড়াও, এসো, আমরা প্রিয়তমা
ও তার বাসস্থানের বিরহে একটু কেদে নিই,
যে বাসস্থান বালির টিলার চুড়ায় দাথুল ও হাওমাল ,
তৃযিহ ও মাকরাত নামক স্থানের মাঝে অবস্থিত ,
উত্তর ও দক্ষিণের বায়ু প্রবাহ সত্বেও যার চিহ্ন মুছে যায়নি ৷”
এইগুলি হ্ররান অঞ্চলের প্রসিদ্ধ স্থান ৷
হাফিজ ইবনে আসাকির অন্য এক সুত্রে বর্ণনা করেন যে আফীফ ইবন মাদীকরব
বলেছেন, আমরা একদিন রাসুলুল্লাহ (সা) এর নিকট বসা ছিলাম ৷ সে সময়ে ইয়ামানের একটি
প্রতিনিধি দল এসে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! ইমরুল কায়সের কবিতার দু’টি পংক্তির উসিলায়
আল্লাহ্ আমাদের জীবন রক্ষা করেছেন ৷ রাসুলুল্লাহ (সা) বললেন, তা কীভাবো তারা বলল,
আমরা আপনার সাথে সাক্ষড়াতের উদ্দেশ্যে আসছিলাম ৷ কিছুদুর এসে আমরা পথ হারিয়ে