আমাদের এলাকায় এক লোক হজ্ব ফরয হওয়ার পর তা আদায়ের আগেই ইনে-কাল করেন। এখন তার ওয়ারিশগণ তার পক্ষ থেকে হজ্ব আদায় করতে চাচ্ছেন। জানতে চাই
ক) ঐ ব্যক্তি হজ্ব আদায়ের অসিয়ত করে গেলে তার এলাকা থেকেই লোক পাঠিয়ে হজ্ব করানো জরুরি, নাকি মক্কায় অবস’ানরত কাউকে দিয়ে হজ্ব করালেও তা আদায় হয়ে যাবে?
খ) অসিয়ত না করলে ওয়ারিশগণ স্বেচ্ছায় তার রেখে যাওয়া সম্পদ থেকে হজ্ব করাতে চাইলে হজ্ব করাতে পারবে কি না এবং এর জন্য তার এলাকা থেকে কাউকে পাঠানো জরুরি, নাকি অন্য এলাকা থেকেও কারো মাধ্যমে হজ্ব করাতে পারবে?
(ক) প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির অনাদায়ী ঋণ থাকলে প্রথমে তার সম্পদ থেকে তা আদায় করতে হবে। এরপর অবশিষ্ট সম্পদের এক তৃতীয়াংশ থেকে বদলী হজ্বের ঐ অসিয়তটি পূর্ণ করতে হবে। এক তৃতীয়াংশ সম্পদ দ্বারা মৃতের এলাকা থেকে হজ্বের জন্য প্রেরণ করা সম্ভব হলে তার এলাকা থেকেই প্রেরণ করা জরুরি। এক্ষেত্রে মক্কা কিংবা সৌদী আরবে অবস’ানরত কাউকে দিয়ে হজ্ব করালে অসিয়ত আদায় হবে না। কিন’ এক তৃতীয়াংশ সম্পদ দ্বারা যদি তার এলাকা থেকে হজ্ব করানো সম্ভব না হয় তাহলে ঐ টাকা দিয়ে যেখান থেকে হজ্ব করানো যায় সেখান থেকেই করাবে। অবশ্য ওয়ারিশগণ চাইলে এক্ষেত্রে নিজ সম্পদ থেকে কিছু দিয়ে মৃতের এলাকা থেকে প্রেরণের ব্যবস’া করতে পারবে।
উত্তর : (খ) মৃত ব্যক্তি হজ্বের অসিয়ত না করে থাকলেও ওয়ারিশগণ তার পক্ষ থেকে বদলী হজ্ব করাতে পারবে। এক্ষেত্রে মৃতের অবন্টিত পরিত্যক্ত সম্পদ দ্বারা বদলী হজ্ব করাতে চাইলে দু’টি শর্ত জরুরিভাবে লক্ষণীয়। ১. সকল ওয়ারিশদের স্বতঃস্ফূর্ত সম্মতি থাকতে হবে। ২. ওয়ারিশদের কেউ নাবালেগ থাকলে কিংবা কারো সম্মতি না থাকলে তার অংশ থেকে নেওয়া যাবে না। আর অসিয়ত না করলেও মৃতের এলাকা থেকেই বদলী হজ্ব করানো উত্তম। তবে এক্ষেত্রে অন্য কোনো দেশ থেকে যেমন সৌদি আরবের কোনো এলাকা থেকেও হজ্ব করানোর সুযোগ আছে।
আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৮০; মানাসিক মোল্লা আলী কারী পৃ. ৪৪০; মাবসূত সারাখসী ৪/১৫৪; আততাজরীদ ৪/১৬৪১; আলবাহরুর রায়েক ৩/৬৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৫৫৬; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৬০; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩০৭; গুনইয়াতুন নাসিক পৃ. ৩২৯; আলমুগনী ইবনে কুদামা ৫/৩৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/৬০৫