আমার এক প্রতিবেশী, যিনি মাসিক ছয় হাজার টাকা বেতনের ছোট একটি চাকরি করেন। চাকরি ও ক্ষেতের ফসলের আয় দ্বারা তার সংসার মোটামুটি চলে। অতিরিক্ত বেশি কিছু থাকে না। এ ছাড়া তার তিনটি নারিকেল ও সুপারির বাগান রয়েছে, যেগুলোর মূল্য প্রায় তিন লক্ষ টাকা। তার দশ বছরের একটি ছেলেকে তিনি আমার কথায় মাদরাসায় পড়াতে রাজি হয়েছেন। কিন্তু তিনি মাদরাসার খরচাদি দিতে রাজি নন। তার কথা হল, আপনি পারলে আপনার দায়িত্বে নিয়ে পড়ান, অন্যথায় থাক। যদিও তিনি চেষ্টা করলে মোটামুটি খরচ বহন করতে পারবেন। এখন আমার প্রশ্ন হল, আমি কি আমার বা অন্য কারো যাকাতের টাকা থেকে ঐ ছেলের মাদরাসার খরচ চালাতে পারব?
প্রশ্নোক্ত বিবরণ থেকে এ কথা স্পষ্ট যে, আপনার প্রতিবেশী যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত নয়। কেননা প্রশ্নে উল্লেখিত নারিকেল ও সুপারির বাগানগুলি তার প্রয়োজন-অতিরিক্ত সম্পদ। এ সম্পদের কারণে তার উপর যদিও যাকাত ফরয নয়। কিন্তু এ কারণে সে যাকাত গ্রহণ করতে পারবে না। অতএব তার না-বালেগ সন্তানকেও যাকাতের অর্থ দেওয়া যাবে না। উল্লেখ্য যে, সন্তানদেরকে প্রয়োজনীয় ও দ্বীনী শিক্ষা দেওয়া পিতার কর্তব্য। পিতার সামর্থ্য থাকলে এর খরচ বহন করা তারই দায়িত্ব। মাদরাসায় পড়লেই অন্যের খরচে পড়াতে হবে এ মানসিকতা সহীহ নয়। অবশ্য ছেলেটির পিতা খরচ দিতে সম্মত না হলে আপনারা চাইলে নফল দান দ্বারা তার পড়াশোনার খরচ বহন করতে পারবেন। কিন্তু যাকাতের টাকা থেকে তার পেছনে খরচ করা যাবে না।
-বাদায়েউস সানায়ে ২/১৫৮; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/১২৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৮৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৪৭, ৩৪৯