আমার এক মুরববী অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও কিন্তু কোনো চিকিৎসা নিতে চান না। তাঁর কথা হল, চিকিৎসা নেওয়া তাওয়াক্কুলের পরিপন্থী। অথচ তার রোগের উন্নত ও শরীয়তসম্মত চিকিৎসা রয়েছে। জানতে চাই, শরীয়তে চিকিৎসা গ্রহণের বিধান কী? চিকিৎসা গ্রহণ করা কি তাওয়াক্কুলের পরিপন্থী?
অসুস্থ হলে চিকিৎসা নেওয়া জায়েয। এটি তাওয়াক্কুলের পরিপন্থী নয়। কারণ তাওয়াক্কুল হল, এই বিশ্বাস রাখা যে, উপায়-উপকরণ আল্লাহরই সৃষ্টি এবং তা আল্লাহর আদেশেই কাজ করে। তাই ফলাফলের জন্য আল্লাহর উপরই ভরসা করতে হবে। আল্লাহ যদি ইচ্ছা করেন তাহলে সুস্থতা আসবে অন্যথায় নয়। হাদীসে আছে, প্রতিটি রোগের চিকিৎসা রয়েছে। যখন রোগ অনুযায়ী চিকিৎসা করা হয় তখন আল্লাহ তাআলার হুকুমে আরোগ্য লাভ হয়।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৫৬৯৭
আর স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেখানে চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন এবং অন্যদেরকেও চিকিৎসা গ্রহণ করতে বলেছেন সেখানে একে তাওয়াক্কুলের পরিপন্থি মনে করা আদৌ ঠিক নয়। এ সম্পর্কিত কিছু হাদীস-আছার নিম্নে পেশ করা হল।
হযরত আবু দারদা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তাআলাই রোগ ও ঔষধ সৃষ্টি করেছেন এবং প্রত্যেক রোগের চিকিৎসাও তিনি সৃষ্টি করেছেন। অতএব তোমরা চিকিৎসা গ্রহণ কর।-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৩৮৬৪
হযরত উসামা ইবনে শুরাইক বলেন, কতিপয় মরুবাসী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, আমরা কি অসুস্থ হলে চিকিৎসা নিব? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ। আল্লাহর বান্দারা! তোমরা চিকিৎসা গ্রহণ করো।-জামে তিরমিযী
এক আনসারী সাহাবী বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক আহত ব্যক্তিকে দেখতে গেলেন। দেখে বললেন, তার জন্য অমুক গোত্রের চিকিৎসককে ডেকে আন।-মুসনাদে আহমদ ৫/৩৭১
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিঙা লাগিয়েছেন এবং নাকে বিশেষ ঔষধ দিয়েছেন যেন হাঁচির মাধ্যমে রোগ সেরে যায়।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫৬৯১
এছাড়া আরো অনেক হাদীস রয়েছে। এসব হাদীস থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, চিকিৎসা গ্রহণ করা জায়েয এবং এটি তাওয়াক্কুলের পরিপন্থী নয়।
-আসসিয়ারুল কাবীর ১/৯২; শরহুন নববী ২/২২৫; ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া ১৮/১২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৫৪; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৮০; আযযাখীরাহ ১২/৩০৭; আহকামুল আদবিয়্যিহ ৩৫; বাসায়িরে হাকীমুল উম্মত ৩৭১; আলমাওসূআতুল ফিকহিয়্যা ১১/১১৬
সম্পর্কিত পোস্ট:
বাথরুমে একাকী গোসল করার সময় অনাবৃত হওয়া যাবে কি না- বর্তমানে দেখা যায়, বরপক্ষের না বলার পরও কনেপক্ষ ফার্নিচার ইত্যাদি
- আমাদের এলাকার শরীফ সাহেব তার বন্ধুকে কথা দিয়েছিলেন যে নিজের
- আমরা সাধারণত নখ, চুল কেটে ফেলে দিই। কেউ কেউ বলে
- কোনো ব্যক্তি আত্মহত্যা করে মারা গেলে সেই মৃত ব্যক্তির জন্য
- আমরা জানি, গোবর নাপাক। কিন্তু আমাদের এলাকার লোকেরা গোবর জমা
- দাড়ি রাখা, দাড়ি কাটা ও এক মুষ্ঠির পরিমান
- কোন প্রতিষ্ঠানে নিজের দায়িত্ব অন্যকে দিয়ে করানো
- আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে মাঝে মাঝে মেসে দাবা খেলতাম। একদিন...
- হালাল-হারাম মিশ্রিত মালের তৈরি ঘর ব্যবহার
- আমরা বিভিন্ন পাঠাগার থেকে অনেক সময় কিতাব নিয়ে আসি। কখনো
- যুবকের অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে চুল-দাড়ি পেকে গেলে কালো খেযাব ব্যবহার করা
- বর্তমানে অনেক পণ্যের সাথে নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য গ্যারান্টি দিয়ে থাকে
- জনৈক মহিলা তার বাসায় কোন পুরুষ লোক না থাকায় সে
- পবিত্র অবস্থায় তাওয়াফে যিয়ারাহ আদায় করার পর জনৈকা মহিলার হায়েয
- চুল ও দাড়িতে খেজাব লাগানো
- বাথরুমে একাকী গোসল করার সময় অনাবৃত হওয়া যাবে কি না?
- আমাদের বাড়ির পাশে রাস্তায় এক ব্যক্তি বিভিন্ন ধরণের বড়ই বিক্রি
- জনৈক ব্যক্তিকে এক কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। পরবর্তীতে তার কবরের
- শাশুড়ির মামার সাথে দেখা সাক্ষাত করা যাবে কি
- আমাদের গ্রামে লোকেরা সাধারণত গাছ থেকে সুপারি পাড়ায় এ শর্তে
- কোনো জিনিষ ক্রয়ের পুর্বে তা থেকে কিছু খেয়ে দেখার বিধান
- আমার বুকে ও পিঠে অনেক পশম, আজকাল জেন্টস পার্লারে গিয়ে.
- ময়ুরের গোশত খাওয়া জায়েয আছে কি
- বাথরুমে হাই কমোড বানানো ও হাই কমোডে পেশাব পায়খানা করা
- আমাদের গ্রামের বাড়িতে একটি ব্যক্তিগত পুরাতন কবরস্থান রয়েছে। তাতে ১০
- কিছুদিন আগে আমি এক দোকান থেকে হাফ লিটার মিল্কভিটা দুধ
- পুরুষের জন্য হীরার পাথর বিশিষ্ট রোপার আংটি ব্যবহার করা
- শুধু পানি দিয়ে বড় ইস্তিঞ্জা করার হুকুম কী? যদি ঢিলা
- ঢিলা বা টয়লেট টিস্যু থাকা সত্বেও শুধু পানি দিয়ে ইস্তিঞ্জা করা