আমি একটি গুনাহের কাজ থেকে তাওবার নিয়তে এভাবে কসম করি যে, আল্লাহর কসম আমি আর এই কাজ করব না। কখনো বলি, আল্লাহর কসম আমি আর করব না। কখনো বলি, আল্লাহর জালালিয়াতের কসম, আমি আর এই কাজ করব না। তবে কি করব না তা মুখে উল্লেখ করিনি। কিন্তু অন্তরে ঐ কাজের নিয়ত ছিল। শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে প্রতি বারই আমার দ্বারা ঐ কাজ সংঘটিত হয়ে যায় এবং একবার কসম করে ভঙ্গ করার মাঝে কয়েকবার এভাবে কসম করি।
এখন প্রশ্ন হল, আমি কসম ভঙ্গকারী হয়েছি কি না? হলে কয়টি কাফফারা আদায় করতে হবে? যে কয়বার ভঙ্গ হয়েছে সে কয়টি নাকি যে কয়বার কসম করেছি সে কয়টি। জানিয়ে বাধিত করবেন।
উল্লেখ্য, আমি এভাবে কতবার যে কসম করে ভঙ্গ করেছি তা জানা নেই। এখন কী করতে পারি? সুপরামর্শ চাই।
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কসম ভঙ্গ করার কারণে আপনাকে কাফফারা আদায় করতে হবে। এক্ষেত্রে একবার কসম করে তা ভাঙ্গার পূর্বে সেই বিষয়ের কসম বারবার পুনরাবৃত্তি করার দ্বারা যদি আপনি ভিন্ন করে কসমের উদ্দেশ্য না নিয়ে থাকেন; বরং পূর্বের কসমেরই পুনরাবৃত্তি করা এবং তা দৃঢ় করা উদ্দেশ্য হয়ে থাকে তাহলে এক্ষেত্রে প্রতি কসমের উপর কাফফারা আসবে না। বরং এভাবে কসমগুলো করার পর যখন কসম ভঙ্গ হয়েছে তখন একটি কাফফারা দিতে হবে। এরপর যদি আবার কসম করা হয় এবং তা ভঙ্গ করা হয় তাহলে পুনরায় কাফফারা দিতে হবে।
একটি কসমের কাফফারা হল, দশজন গরীব মিসকীনকে দু বেলা তৃপ্তিসহ খানা খাওয়ানো। অথবা তাদের প্রত্যেককে এক জোড়া করে কাপড় দেওয়া। এ দুটির সমার্থ্য না থাকলে এক নাগাড়ে তিনটি রোযা রাখা।
এখন আপনার কর্তব্য হল, উপরোক্ত মাসআলা অনুযায়ী কতবার কসম ভঙ্গ করেছেন যথাসম্ভব তার সঠিক হিসাব বের করার চেষ্টা করা। সঠিক হিসাব বের করা না গেলে প্রবল ধারণার ভিত্তিতে কাফফারার সংখ্যা নির্ধারণ করে তা আদায় করবেন এবং আল্লাহ তাআলার নিকট ভুলভ্রান্তির জন্য ইস্তিগফার করবেন।
প্রকাশ থাকে যে, গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার সংকল্পের ক্ষেত্রে বান্দার দায়িত্ব হল বারবার কসম না করে বরং আল্লাহ তাআলার প্রতি মুতাওয়াজ্জেহ হওয়া এবং তার তাওফীক কামনা করা এবং কোন আল্লাহওয়ালা বুযুর্গের সংশ্রব অবলম্বন করা ও বেশি বেশি দুআ করতে থাকা
।-সূরা মায়েদা : ৮৯; কিতাবুল আসল ৩/২৩৮, ৩/১৯৬; আলমাবসূত, সারখসী ৮/১৫৭; ইলাউস সুনান ১১/৪২৬; রুহুল মাআনী ৭/১৪