আমি বর্তমানে দুই তলা একটি বিল্ডিং এর মালিক। এই বাড়ি নির্মাণের সময় ব্যাংক থেকে ২৭ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছি। আবার চাকুরি শেষে ১৬ লক্ষ টাকা পেয়ে সেই টাকা এই ব্যাংকেই ফিক্সড ডিপোজিট করেছি। ডিপোজিটের লভ্যাংশ থেকে ২৭ লক্ষ টাকার ঋণ পরিশোধ হয়ে যাবে। ঋণ শেষ হতে আরো ১২ বছর সময় লাগবে। ১২ বছর পর ১৬ লক্ষ টাকা আবার নিজের অধীনে এসে যাবে। এছাড়া আরো ৩ লক্ষ টাকা বর্তমানে বিল্ডিংয়ের বাবদ ঋণ আছে। আমার নিকট বর্তমানে স্বর্ণ আছে ৭ ভরি। মাসিক আয়-ব্যয় সমান। মাসিক আয় থেকে আবার মাসিক ডিপিএস-এ জমা দেওয়া হয় ৫,০০০/-। আর ডিপিএস-এ জমা হয়েছে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। এই ডিপিএস থেকে অন্য একজন লোন নিয়েছে ৬০ হাজার টাকা। যেই ব্যক্তি লোন নিয়েছে সে ব্যক্তিই লোন পরিশোধ করছে। এমন অবস্থায় আমার উপর যাকাত ফরয হবে কি না? কিতাবের দলিলসহ জানালে উপকৃত হব।
বি. দ্র. : একটি ফ্ল্যাটে আমি থাকি। আর বাকি তিনটি ফ্ল্যাট ভাড়া দেওয়া। মূলত ভাড়ার অংশ করার জন্যই ঋণ করতে হয়েছে। শুধু এক ফ্ল্যাট করলে ঋণ করতে হত না।
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাকে ঐ সকল সম্পদের যাকাত দিতে হবে। অর্থাৎ ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট করা ১৬ লক্ষ টাকা, ৭ ভরি স্বর্ণ এবং ডিপিএস-এর ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকার যাকাত দিতে হবে।
বাড়ি বাবদ আপনার যে ঋণ আছে তা যাকাতযোগ্য সম্পদ থেকে কর্তন যাবে না। কারণ একে তো এই ঋণ প্রবৃদ্ধির জন্য করা হয়েছে। অর্থাৎ ভাড়া বাড়ি নির্মাণের জন্য করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত ঋণের বিপরীতে সম্পদও মজুদ আছে। তাই এ ঋণের কারণে যাকাত মওকুফ হবে না। আর ফিক্সড ডিপোজিট করলে টাকা যদিও নিজের হাতে নেই, কিন্তু নিজ প্রয়োজনে ও হেফাযতেই রাখা আছে। সুতরাং মূল জমার যাকাত দিতে হবে।
প্রকাশ থাকে যে, সাধারণ ব্যাংকের ফিক্সড ডিপোজিট এবং ডিপিএস সুদী একাউন্ট। সুদ জঘন্যতম হারাম। এর ভয়াবহতা সরাসরি কুরআন মজীদেই উল্লেখ হয়েছে। তাই এসব সুদী হিসাব দ্রুত বন্ধ করে দেওয়া দরকার। এসব হিসাব থেকে অতিরিক্ত যা পাওয়া যাবে তা সওয়াবের নিয়ত ব্যতীত সদকা করে দিতে হবে।
-আলমাআঈরুশ শরইয়াহ পৃষ্ঠা : ৫৭৩, ৫৮০