আমি বিগত ২০০৯ সালে ই-লিংকস নামক একটি মাল্টি লেভেল মার্কেটিং কোম্পানিতে জয়েন করি এবং ৩ বছর কাজ করি। তাতে আমার কাছে ২ লক্ষ টাকার মতো সঞ্চয় হয়েছে। প্রশ্ন হল, এই টাকা আমার জন্য হালাল হবে নাকি হারাম?
কোম্পানির প্রোডাক্ট : বায়ো এনার্জেটিক ব্রেসলেট। প্রজেক্ট সিস্টেম : কোম্পানি থেকে কেউ বেনিফিটেড হতে চাইলে তাকে প্রথমে একটা প্রোডাক্ট ক্রয় করতে হবে। প্রডাক্ট ক্রয় করলে সে কোম্পানির একজন মেম্বার হয়ে যাবে। মেম্বার হওয়ার জন্য আলাদা কোনো চার্জ দিতে হয় না বা টাকা দিয়ে মেম্বার হওয়া যায় না। বরং প্রোডাক্ট ক্রয়ের মাধ্যমেই মেম্বার হতে হয়। মেম্বার হওয়ার পর যদি একটি প্রোডাক্ট সেল করাতে পারি তাহলে সাথে সাথে এসপি (ডাইরেক্ট সেল) বাবদ ৩৫০/- টাকা দেওয়া হয়। মনে করি, আমি একটি প্রোডাক্ট সেল করার কারণে ডিরেক্ট সেল বাবদ আমাকে ৩৫০/- টাকা দিয়ে দিল কোনো শর্ত ছাড়া। আবার আরেকটি সেল করার দ্বারা আবার কোনো শর্ত ছাড়া আমাকে ৩৫০/- টাকা দিয়ে দিত। এবং আমার বাম ও ডানে জোড়া মিলার কারণে আরো ৫০০/- টাকা দিয়ে দিত।
এখন আমার নিচে যদি সেল হয় তাহলে যে স্পন্সর করবে সে সেলের জন্য ৩৫০/- টাকা পেয়ে যাবে। এবং আমার ডান-বামে জোড়া মিলে যাওয়ার কারণে আমি কমিশন পেয়ে যাব। মোটকথা হল আমি ঐ কোম্পানিতে ৩ বছর ছিলাম। তাতে যা উপার্জন করেছি তার ৯৫ ভাগ আমি সবার মাঝে খরচ করেছি (যা সবাই করে না।) এখন ৬ মাস আগে আমি তা ছেড়ে দিয়েছি। আমার কাছে আনুমানিক ২ লক্ষ টাকা লাভ আছে। আমার জন্য এ টাকা হালাল হবে নাকি হারাম? কেননা এই টাকাটা একটা ব্যবসায় লাগিয়েছি, যা থেকে প্রত্যেক মাসে কিছু লাভ আসে।
মাল্টিলেভেল মার্কেটিং শরীয়ত পরিপন্থী একটি কারবার। এতে শরীয়ত নিষিদ্ধ আলগারার, উজরত বিলা-আমল ও আকলুল মাল বিলবাতিল ইত্যাদি বড় বড় খারাবি বিদ্যমান রয়েছে। একই কারণে ই-লিংকস কোম্পানির প্রশ্নে বর্ণিত কারবারও বৈধ নয়। সুতরাং এই কোম্পানির মার্কেটিং পদ্ধতিতে জড়িত হয়ে মূলধনের অতিরিক্ত যত টাকা অর্জন করেছেন তা হালাল নয়। তাই তা সদকা করে দিতে হবে। এক্ষেত্রে শুধু মূলধনই নেওয়া জায়েয হবে।
প্রকাশ থাকে যে, মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কেন অবৈধ এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য পড়তে পারেন মাসিক আলকাউসার, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ ২০১২ সংখ্যাগুলো। যা পরবর্তীতে মাকতাবাতুল আশরাফ থেকে ‘মাল্টি লেভেল মার্কেটিং : তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ ও শরয়ী হুকুম’ নামে পুস্তিকা আকারে প্রকাশিত হয়েছে।