একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের জনগণের
গৌরবোজ্জ্বল একটি দিন। এটি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবেও
সুপরিচিত। বাঙালি জনগণের
ভাষাআন্দোলনের মর্মন্তুদ ও গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিবিজড়িত একটি দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। ১৯৫২ সালের এই দিনে (৮ ফাল্গুন, ১৩৫৮) বাংলাকে পাকিস্তানের
অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনরত
ছাত্রদের ওপর পুলিশের নির্বিচারে গুলিবর্ষণনে কয়েকজন আত্নোৎস্বর্গী মহান তরুণ
শহীদ হন। তাই এ দিনটি শহীদ দিবস হিসেবে
চিহ্নিত হয়ে আছে। ২০১০ খ্রিস্টাব্দে জাতিসংঘ
কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিবছর একুশে
ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা
দিবস পালন করা হয়।১৯৫৩ সাল থেকে প্রতি বছর ফেব্রুয়ারির ২১
তারিখে মহান ভাষা আন্দোলনের শহিদদের
স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয়। এদিন
প্রত্যুষে সর্বস্তরের মানুষ নগ্ন পায়ে
প্রভাতফেরীতে অংশগ্রহণ এবং শহিদ
মিনারে গিয়ে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন ও পুষ্পার্ঘ্য
অর্পণ, তাদের স্বরণে ১মিনিট মুর্তির সামনে দাড়িয়ে থাকার মত চুপচাপ নিরবতা পালন,তাদের শোকের চিহ্ণস্বরুপ কালো ব্যাজ ধারন প্রভৃতি বিজাতিয় সংস্কৃতির নামে অপসংস্কৃতির সরোবরে গা ভাসিয়ে স্নান না করে…………. আমরা যদি তদের মত মহীয়ান মহীরুহদের স্বর্গীয় আত্নার আর্শীবাদের বাগানে অবগাহন করতে চাই, তাহলে তাদের বিদেহী রুহের মাগফিরাত কামনা এবং তাদের জন্য ইসালে সওয়াব ছাড়া বিকল্প অন্য কোন শ্রেষ্ট তোহফা নেই এছাড়া আলোচনা সভা,
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদির মাধ্যমে ভাষা
আন্দোলনের স্মৃতি অর্পণ করা হয় এবং ভাষা
আন্দোলনের শহিদদের আত্মার মাগফিরাত ও
শান্তি কামনা করা হয়। কিন্তু এসমস্ত প্রাণহীন আমদানীকৃত বিদেশি অপসাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে আমাদের প্রাণের স্পন্দন ভাষা শহীদদের আত্নাকে ক্রমাগত আহত ও ক্ষতবিক্ষত করে চলছি এবং তাদের মত স্বর্গীয় দূতদের প্রতি সীমাহীন অবিচারের খড়ক লেপন করছি যা কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। দেখুন আমরা এখনও কিভাবে বৃটিষ বেনিয়াদের সাংসকৃতিক গোলামিতে বোঁদ হয়ে আছি? ১৯৭১ সালে স্বাধীন
বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর থেকে দিনটি কখনো
জাতীয় শোক দিবস, কখনোবা জাতীয় শহিদ দিবস
হিসাবে রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপিত হয়ে আসছে।
২০০১ সাল থেকে দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে।
বাংলাদেশে এদিনে সরকারি ছুটি। বাংলাদেশ
বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন
গণমাধ্যমে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরা হয়। দৈনিক
সংবাদপত্রসমূহে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা
হয়। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে আয়োজিত অমর
একুশে গ্রন্থমেলা অনুষ্ঠিত হয় পুরো ফেব্রুয়ারি
মাস জুড়ে। বাংলাদেশ সরকার বাংলা ভাষা
আন্দোলনকে ঘিরে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের একুশে
পদক প্রদান করে। অমর একুশে মনে করিয়ে দেয় ত্যাগ আর অগণিত
প্রাণের বিনিময়ে বাঙালির প্রাপ্তি। বিশ্বে
বাঙালিরা একমাত্র জাতি যাদের ভাষার জন্য
প্রাণ দিতে হয়েছে।’অমর একুশে’ নিয়ে যায় ৫২’র
একুশে ফেব্রুয়ারিতে যেই দিনে-ভাষার জন্য
ছাত্ররা মিছিল করেছিল। পুলিশের গুলিতে
সালাম, বরকত, রফিক, শফিক, জব্বার প্রমুখের
তাজা প্রাণের লাল রক্তে বাঙালিরা নিজের
ভাষায় কথা বলার অধিকার অর্জন করে। ‘অমর একুশে’ মা-বাবার কোলে সন্তানের লাশকে দেখায়। মহান ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে কংক্রীটের শরীরে জীবন্ত করেছেন শিল্পী জাহানারা পারভীন। শিল্পী ‘অমর একুশ’ ভাস্কর্য কর্মে তাঁর লালিত স্বপ্ন এবং জাতীয় চেতনাকে স্থায়ীরূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ‘অমর একুশে’ নামের মধ্যে বায়ান্নের সেই উত্তাল সময়কে যেমন ধরে রাখা হয়েছে তেমনি একটি শাণিত চেতনাকেও স্মরণ করা হয়েছে। এই ভাস্কর্যে একজন মায়ের কোলে শায়িত ছেলের পথিকৃৎ দেখা যায় এবং এর পেছনে শ্লোগানরত অবস্থায়
একজনের প্রতিকৃতি দেওয়া হয়েছে। আমি কি ভুলিতে পারি? আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী!আমি কি ভুলিতে পারি?
ছেলেহারা শত মায়ের অশ্রু গড়ায়ে ফেব্রুয়ারী.
আমি কি ভুলিতে পারি?
আমার সোনার দেশের রক্তে জাগালো ফেব্রুয়ারী!
আমি কি ভুলিতে পারি?
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী.
আমি কি ভুলিতে পারি?
জাগো নাগিনীরা জাগো নাগিনীরা জাগো
কালবৈশাখীরা
শিশু হত্যার বিক্ষোভে আজ কাঁপুক বসুন্ধরা,
দেশের সোনার ছেলে খুন করে রোখে মানুষের দাবী
দিন বদলের ক্রান্তিলগ্নে তবু তোরা পার পাবি?
না, না, না, না খুন রাঙা ইতিহাসে শেষ রায় দেওয়া
তারই
একুশে ফেব্রুয়ারি!একুশে ফেব্রুয়ারি!!
আমি কি ভুলতে পারি?না না না….
ফয়েজ আল হুসাইনী
Home » আখবার »
3000+ Premium WORDPRESS Themes and Plugins
Download PHP Scripts, Mobile App Source Code
নোটঃ আমি কি ভুলিতে পারি?ভাষা শহীদদের Download করতে কোন ধরনের সমস্যা হলে আমাদেরকে জানান। যোগাযোগ করতে এখানে ক্লিক করুন।
আমি কি ভুলিতে পারি?ভাষা শহীদদের
নোটঃ আমি কি ভুলিতে পারি?ভাষা শহীদদের Download করতে কোন ধরনের সমস্যা হলে আমাদেরকে জানান। যোগাযোগ করতে এখানে ক্লিক করুন।