এক মেযের সাথে আমার গোপনে পরিচয় হয়। স্থায়ী সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠার নিমিত্তে আমার কয়েকজন বন্ধুবান্ধবসহ একটি রেস্টুরেন্টে একত্রিত হই। আমার এক বন্ধু কাজী অফিসের পিয়ন হিসেবে একজনকে নিয়ে আসে। সে কাজী অফিস থেকে বিবাহ রেজিস্ট্রি করার কাগজপত্র সঙ্গে নিয়ে আসে। এছাড়াও সরকারি দলিল-স্ট্যাম্পে একটি বিবাহ হলফনামা নিয়ে আসে। সেখানে আমরা উভয়ে স্বেচ্ছায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার নিমিত্তে স্বাক্ষর করি এবং নিকাহনামা রেজিস্টারেও উভয়ে স্বাক্ষর করি। সেখানে চারজন পুরুষও উপস্থিত ছিল। এছাড়া বিবাহ পড়ানোর উপযুক্ত কোনো ব্যক্তি বা কাজী অফিসের কেউ উপস্থিত ছিল না। উক্ত কাগজপত্রে স্বাক্ষরের মাধ্যমে ১,০০,০০১ টাকা দেনমোহরের শর্তে আমরা বিবাহ সম্পন্ন করি। কিন্তু এক্ষেত্রে আমরা কেউই ইজাব-কবুল বলিনি। পিয়ন আমাদের বললেন, আপনারা দুজন স্বামী স্ত্রী। এরপর আমরা যার যার মতো চলে আসি।
বিয়ের ২-৩ মাসের পর থেকে আমাদের মধ্যে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে বাকবিতন্ডা হয়। ৩-৪ মাস পর এক পুরুষ শিক্ষক নিয়ে পর্দার ব্যাপারে আমার সাথে ওর ঝগড়া হয়। আমি রাগ করে একপর্যায়ে বলেছিলাম, তুমি যদি কালকে, পরশু এবং এর পরের দিন তার কাছে পড় তাহলে তুমি যথাক্রমে এক তালাক, দুই তালাক, তিন তালাক। পরে জানতে পারি, সে তিন দিনই পড়েছিল। এখন প্রশ্ন হল, ক) আমাদের বিবাহ কি সঠিক হয়েছিল? খ) আমাদের মধ্যে তালাক হয়েছিল কি? গ) এখন আমি পারিবারিকভাবে ওকে ঘরে তুলতে বা বিয়ে করতে চাই। এজন্য আমার কী করা উচিত বা আদৌ কি তা সম্ভব?
প্রশ্নের বর্ণনা অনুসারে আপনাদের মাঝে ঐ বিবাহই সংঘটিত হয়নি। কারণ প্রশ্নে উল্লেখ করেছেন যে, আপনাদের মধ্যে বিবাহের ইজাব-কবুল হয়নি। মৌখিক ইজাব-কবুল না হলে শুধু লেখালেখির দ্বারা বিবাহ সম্পন্ন হয় না। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাদের হলফনামা ও নিকাহনামাটি অবাস্তব। আর আপনাদের মাঝে যেহেতু বিবাহই হয়নি তাই পরবর্তীতে তালাকও পতিত হয়নি। আর আপনাদের পরস্পর এতদিন যাবত দেখা-সাক্ষাত ও মেলামেশা এবং ফোনে যোগাযোগ রাখা সম্পূর্ণ অবৈধ ও হারাম হয়েছে। আল্লাহ তাআলার দরবারে উভয়কে তওবা-ইস্তিগফার করতে হবে। সামনে একত্রে সুষ্ঠুভাবে ঘরসংসার করতে চাইলে যথানিয়মে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে।
-ফাতহুল কাদীর ৩/১০২; রদ্দুল মুহতার ৩/, ২২৭, ১২; আলবাহরুর রায়েক ৩/৮৩