রিওয়ায়াত করেছেন ৷ কারো কারো মতে, শুবা থেকে ৷ তবে বিশুদ্ধ হল, সাঈদ, কাতাদা
থেকে, তিনি আনাস (রা) থেকে ৷ তিনি (জানান) বলেন, যাওরাতে অবস্থানকালে রাসুলুল্লাহ্
(না)-এর কাছে একটি পানির পাত্র আনা হল ৷ তখন তিনি সালে তার হাত ধরে রাখলেন ৷
তখন তার আঙ্গুলসমুহের মধ্য থেকে পানি উৎসারিত হতে লাগল, তখন ণ্লাকেরা তা থেকে
উবু করল ৷ কাতদাে বলেন, আমি আনাস (রা)-ক্লে জিজ্ঞেস করলাম, আপনাদের সংখ্যা কত
ছিল ? জবাবে তিনি বললেন, তিনশ বা তিনশৱ কাছাকাছি ৷ এই হাদীসের পাঠ বুখারীর ৷
এ প্রসঙ্গে বারা ইবন আযিবের হাদীস
বুখারী মালিক ইবন ইসমাঈল বারা ইবন আযিব সুত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি
বলেছেন : হুদায়াবিয়ার দিন আমরা সংখ্যায় ছিলাম চৌদ্দশ ৷ আর হুদায়বিয়া একটি কুয়া,
আমরা (তা) এমনভাবে জলশুন্য করে ফেললাম যে, তাতে একযােটা পানিও অবশিষ্ট রইলো
না ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) তার পাড়ে বসে পানি আনালেন ৷ এরপর গড়পড়ার সাথে কুলি করে
সেই পানি কুয়াতে নিক্ষেপ করলেন ৷ অল্পক্ষণ পরেই আমরা সেই কুয়া থেকে পানি সংগ্রহ
করতে লাগলাম এভাবে আমরা পান করে তৃপ্ত হলাম এবং আমাদের বাহনসমুহও তৃপ্ত হল
অথবা ফিরে চলল ৷ এই বর্ণনাসুত্র ও পাঠ এককডাবে বুখারীর ৷
ৰারা ইবন আযিবেৱ অপর একটি হাদীস
ইমাম আহমদ, আফ্ফান ও হাশিম হযরত বারা (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি
বলেছেন, কোন এক সফরে আমরা রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সাথে ছিলাম ৷ তখন আমরা একটি
অল্প পানির (অগভীর) কুপে এসে উপনীত হলাম ৷ তিনি বলেন, তখন তাতে ছয় ব্যক্তি নামল,
আমি ছিলাম তাদের ষষ্ঠজন ৷ এরপর আমাদের কাছে একটি বালতি নামিয়ে দেয়া হল ৷ বারা
(রা) বলেন, এদিকে রাসুলুল্লাহ্ (সা) কুয়াটির পাড়ে ৷ তখন আমরা তাতে বালতিটির অর্ধেক
অথবা দুই-তৃভীয়াংশ ডুবিয়ে পানি উঠালাম, তারপর তা টেনে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর কাছে
উঠানো হল ৷ বারা (রা) বলেন, এরপর আমি আমার পাত্রে গলা তিজানাে পরিমাণ পানি সঞ্চাহ
করতে চেষ্টা করলাম ৷ কিন্তু আমি তাও পেলাম না ৷ এরপর বালতিটি নবী করীম (না)-এর
কাছে উঠিয়ে আনলাম ৷ তিনি তাতে হাত ডুবিয়ে যা বলার বললেন, এবং বালতিতে যেটুকু
পানি ছিল তাসহ-ই তা আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হল ৷ বাবা (মা) বলেন, এরপর দেখলাম
আমাদের একজনকে তার জলমগ্ন হওয়ার আশংকায় কাপড় ঝুলিয়ে বের করে আনা হল ৷
এরপর কুয়া থেকে বিরামহীনভাবে পানি উৎসারিত হতে লাগল ৷ এটি ইমাম আহমদের একক
বর্ণনা ৷ এর সনদও বেশ ভাল ও সরল ৷ আর দৃশ্যত এটা হুদায়বিয়ার দিন ভিন্ন অন্য কোন
ঘটনা ৷ সঠিক বিষয় আল্লাহ্ই অধিক জানেন ৷
এ প্রসঙ্গে জাবির (রা)-এর বরাতে আরেকটি হাদীস
ইমাম আহমদ, সিনান ইবন হাতিম জাবির (বা) সুত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি
বলেছেন, একবার রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সাহাবীগণ তার কাছে পিপাসার অনুযােগ করলেন ৷
জাবির (রা) বলেন, তখন তিনি একটি বড় পেয়ালা আনালেন, এরপর তাতে সামান্য পানি
ঢালা হল এবং রাসুলুল্পাহ্ (সা) তাতে তার হাত রেখে বললেন, এবার তোমরা পান কর ৷ তখন
সকলে তা থেকে পান করলেন ৷ জাবির (রা) বলেন, এ সময় আমি তার আঙ্গুলসমুহের মধ্য
থেকে পানির ধারাসমুহ উৎসারিত হতে দেখেছি ৷ এ সুত্রে হাদীসখানি ইমাম আহমদের একক
বর্ণনা ৷ হাতিম ইবন ইসমাঈলের হাদীস সঞ্চাহ থেকে জাবির ইবন আবদুল্লাহ্র (রা)-এৱ
শ্বরাতে মুসলিয়ের যে দীর্ঘ একক বর্ণনা রয়েছে, তাতে রয়েছে (একবার) আমরা রাসুলুল্লাহ্
(না)-এর সাথে পথ চলে এক প্রশস্ত উপত্যকায় উপনীত হলাম ৷ তখন তিনি তার প্রাকৃতিক
প্রয়োজন পুরণ করার জন্য উঠে গেলেন, আমি একটি পানির পাত্র হাতে তড়াকে অনুসরণ
ক্যালাম ৷ কিন্তু রাসুলুল্লাহ্ (সা) আড়াল হওয়ার মত কোন গাছ-পালা দেখতে পেলেন না ৷ হঠাৎ
উপত্যকার পাড়ে দুটি গাছ দেখতে পেয়ে তিনি তার একটির দিকে অগ্রসর হলেন ৷ তারপর
তার একটি ভাল ধরে বললেন, আল্লাহ্র হুকুমে আমার অনুগত হয়ে যাও, তখন তা নাকে
লাগাম পরানো উটের ন্যায় অনুগত হয়ে নুয়ে পড়া ৷ এরপর তিনি অপর পাছটির কাছে এসে
তার একটি ভাল ধরে বললেন, আল্লাহর হুকুমে আমার অনুগত হয়ে যাও ৷ তখন ডালটিও তীর
সামনে নুয়েপড়ল ৷ এরপর উভয় ডালের মাঝে দাড়িয়ে সে দৃ’টিকে একত্র করে বললেন,
আল্লাহর হুকুমে আমাকে আবৃত করে তোমরা একত্র হয়ে যাও ৷ তখন ভাল দুটি একত্রে মিলে
গেল ৷ জাবির (রা) বলেন, রাসুলুল্পাছু (সা) আমার নৈকট্য অনুভব করে সরে যাবেন এই
আশংকায় আমি দৌড়ে সরে যেতে লাগলাম এবং বসে বসে মনে মনে ভাবতে লাগলাম ৷ হঠাৎ
আমার দৃষ্টি পতিত হন, তখন আমি রাসুলুল্লাহ্ (না)-কে (স্বাভাবিক অবস্থায়) দেখতে পেলাম
এবং গাছ ন্দৃটিকে দেখলাম তারা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় স্ব স্ব কাভে দন্ডায়মান ৷ তখন আমি নবী
ৰল্টীম (না)-কে একবার থেমে তার মাথা দ্বারা ডানে বামে ইঙ্গিত করতে দেখলাম ৷ তারপর
তিনি ফিরে আসলেন, তিনি যখন আমার কাছে পৌছলেন, তখন বললেন, হে জাবির ৷ তুমি কি
আমার অবস্থান স্থলটি দেখেছো ? তখন আমি বললাম , জী হী , ইয়া রাসুলাল্লাহ্! তিনি বললেন,
তুমি গাছ দৃটির কাছে যাও, এবং তাদের উভয়টি থেকে একটি করে ভাল কেটে নিয়ে আস,
আর তুমি যখন আমার অবস্থানে র্দাড়াবে তখন তোমার ডানপাশে একটি ভাল ছেড়ে দিবে,
,(রাখবে) বামপাশে একটি ভাল ছেড়ে দিয়ে (রাখবে) ৷
জাবির বলেন, তখন আমি দাড়িয়ে একটি পাথর নিলাম অতঃপর তা ভেঙে ধারালো
কালাম এরপর আমি গাছ দু’টির কাছে আসলাম এবং তাদের উভয়টি থেকে একটি করে ভাল
কটিলাম ৷ তারপর আমি রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর অবস্থানে এসে র্দাড়ালাম এবং আমার ডান দিক
থেকে একটি এবং বাম দিক থেকে একটি ভাল ছাড়লাম এবং তার কাছে এসে বললাম, ইয়া
রাসুলাল্লাহ্ আমি তা” করেছি ৷ জাবির বলেন, আমি বললাম, এটা কেন ? তিনি বললেন, আমি
দুটি কবর অতিক্রম করলাম, যেখানে আযাব হচ্ছিল ৷ তইি আমি চইিলাম, আমার সুপারিশ
দ্বারা ভাল দু’টি তরতজাে থাকা পর্যন্ত তারা এই আমার থেকে অব্যাহতি পাক ৷ জাবির বলেন,
এরপর আমরা (দুজন) সেনাছাউনিতে ফিরে আসলাম, তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, হে
জাবির! সকলকে উবু করতে বল ৷ তখন আমি বললাম, কারোর উয়ুর প্রয়োজন আছে কি ?
কারো উয়ুর প্রয়োজন আছে কি? জাবির বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ্৷ আমি তো
গেটো বাহিনীতে এক ফৌটা পানি পাচ্ছি না, আনসারদের মধ্যকার এক ব্যক্তি রাসুলাল্লাহ্
(না)-এর জন্য পানি ঠান্ডা করত ৷ জাবির বলেন, তখন তিনি আমাকে বললেন, অমুক
আনসারীর কাছে গিয়ে দেখ, তার ভোলে কোন পানি আছে কিনা ? জাবির বলেন, তখন আমি
তার কাছে গিয়ে দেখলাম তাতে সামান্য কয়েক কোটা পানি রয়েছে, যদি আমি তা ঢালতে
যাই, তাহলেই তা নিঃশেষ হয়ে যাবে ৷ তখন আমি রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর কাছে এসে বললাম,
ইয়া রাসুলাল্পাহ্! আমি তাতে সামান্য কয়েক কোটা পানি দেখেছি, যদি আমি তা’ ঢালতে যাই,
তাহলেই তা নিঃশেষ হয়ে যাবে ৷ তিনি বললেন, তুমি যাও, তইি আমার কাছে নিয়ে এসো ৷
তখন আমি তা তার কাছে নিয়ে আসলাম এবং তিনি তা হাত দিয়ে ধরে কিছু একটা বলতে
লাগলেন আমি জানিনা তা কী ? আর এ সময় তিনি আমাকে তার হাত দ্বারা খোচা মারলেন,
তারপর আমাকে তা দিলেন ৷ তখন তিনি বললেন, হে জাবির ! একটি পাত্র আনতে বল ৷ তখন
আমি (উচ্চস্বরে) বললাম, কে আছ, একটি পাত্র নিয়ে এসো ৷ এরপর যখন তা’ আমার কাছে
আনা হল তখন আমি তা’ রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সামনে রাখলাম ৷ তখন তিনি এভাবে পাত্রের
মাঝে ইশারা করলেন, তারপর হাতের তালু প্রসারিত করে, আঙ্গুলসমুহ যগক করে তা পাত্রের
তলদেশে রাখলেন এবং বললেন, হে জাবির ! এটা ধর এবং বিসমিল্লাহ্ বলে (আমার হাতের
উপর) ঢাল ৷ তখন আমি বিসমিল্লাহ্ বলে (তার উপর) তা’ ঢাললাম ৷ এরপর দেখতে পেলাম
রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর আঙ্গুলসমুহের মধ্য থেকে পানি সবেগে উৎসারিত হচ্ছে ৷ তারপর পাত্রটির
পানি উৎসারিত হতে লাগল এবং পাত্রটি ঘুরতে লাগল এমনকি তা পুর্ণ হয়ে গেল ৷ তখন তিনি
বললেন, হে জাবির ! যাদের পানির প্রয়োজন আছে তাদেরকে ডেকে নাও ! জাবির বলেন,
এরপর লোকজন এসে পানি পান করে তৃপ্ত হল ৷ তখন আমি বললাম, আর কাংরা পানির
প্রয়োজন আছে কি ? তখন পাত্রটি পানিপুর্ণ অবস্থায় নবী করীম (সা) থেকে তার হাত
উঠালেন ৷ জাবির বলেন, এদিকে ৫লাকেরা রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর কাছে ক্ষুধার অনুযোগ করল ৷
তখন তিনি বললেন, অচিরেই আল্লাহ তােমাদেরকে খাওয়াবেন ৷ এরপর আমরা যখন সমুদ্রের
তীরে পৌছলাম তখন তা আমাদের জন্য বিশাল এক মাছ ভাসিয়ে তীরে উঠিয়ে দিল ৷ তখন
আমরা তা রান্না করে এবং আগুনে ঝলসিয়ে থেয়ে তৃপ্ত হলাম ৷ জাবির বলেন, আমি এবং
অমুক, অমুক ও অমুক এভাবে তিনি পড়াচজনের উল্লেখ করলেন, সেই মাছের চক্ষু কােটরে
অনায়াসে প্রবেশ করলাম, বাইরে থেকে কেউ আমাদেরকে দেখতে পেল না ৷ অবশেষে আমরা
তা থেকে বের হয়ে তার একটি পড়াজরের হাড় ধনুকাকৃতিতৈ রাখলাম এরপর আমাদের সাথের
সবচে’ বিশাল আরােহী ও সবচে বড় বোঝাবাহী উট ডেকে আনলাম ৷ তখন সে মাথা না
ঝুকিয়েই অনায়াসে তার নীচে প্রবেশ করল ৷
আর বুখারী মুসা ইবন ইসমাঈল জাবির ইবন আবদুল্লাহ (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন যে,
তিনি বলেছেন, হুদায়বিয়ার দিন লোকজন পিপাসার্ত হল ৷ সে সময় নবী করীম (সা) তীর
সামনে রাখা একটি পাত্র থেকে উবু করছিলেন, এ সময় সকলে তার শরণাপন্ন হলেন ৷ তিনি
জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের কী হয়েছে ? তারা বললেন, আপনার সামনের এই যৎসামান্য
পানিটুকু ব্যতীত আমাদের উয়ু করা এবং পান করার মত কোন পানি নেই ৷ তখন তিনি
পাত্রটিতে তার হাত রাখলেন এবং তৎক্ষণাৎ তার আঙ্গুলসমুহের মধ্য থেকে প্রস্রবণের ধারার
ন্যায় পানি উৎসারিত হতে লাগল ৷ তখন আমরা (তা থেকে) পান করলাম এবং উয়ু করলাম ৷
(সালিম বলেন) আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ সময় আপনারা সংখ্যায় কতজন ছিলেন ? তিনি
বললেন, যদি আমাদের সংখ্যা এক লক্ষও হত তাহলেও ঐ পানি আমাদের জন্য যথেষ্ট হত ৷
আমরা ছিলাম পনের শ’ ৷ হোসায়নের হাদীস সংগ্রহ থেকে মুসলিম এভাবেই তা রিওয়ায়াত
করেছেন এবং তারা উভয়ে আ’মাশের হাদীস সংগ্রহ থেকেই তা রিওয়ায়াত করেছেন ৷
ইমাম আহমদ, ইয়াহ্ইয়া ইবন হাম্মাদ শাকীক আলআবদী সুত্রে বর্ণনা করেন যে,
জাবির ইবন আবদুল্লাহ (বা) বলেন, একবার আমরা রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর সাথে সফরে বা
যু দ্ধাভিযানে বের হলাম, এ সময় আমাদের সংখ্যা ছিল দুশ’ দশের কিছু বেশি ৷ পথে নামায়ের
সময় হল, তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, লোকদের কাছে কি পানি আছে ? তখন একব্যক্তি
দৌড়ে তার কাছে একটি পানির পাত্র নিয়ে আসল, যাতে সামান্য পানি ছিল ৷ রাবী বলেন,
তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) তা একটি পেয়ালায় ঢাললেন, তারপর তা থেকে অতি উত্তমভাবে উবু
করে পেয়ালাটি রেখে ফিরে গেলেন ৷ তখন লোকেরা এই বলে পেয়ালিটির উপর হুমড়ি খেয়ে
পড়া যে, তোমরা তার অবশিষ্টাত্শ শরীরে মুছে নাও ৷ তিনি যখন তাদেরকে এরুপ বলতে
শুনলেন তখন বললেন, তোমরা একটু ক্ষাম্ভ হও ৷ রাবী বলেন, একথা বলে তিনি ঐ অবিশষ্ট
পানিতে তার হাতের তালুরাখলেন ৷ তারপর বিসমিল্লাহ্ বললেন ৷ তারপর বললেন, তোমরা
তোমাদের উবু পুর্ণ করে নাও ৷ জাবির বলেন, শপথ ঐ সভার, যিনি আমার দৃষ্টি শক্তির
ব্যাপারে আমাকে পরীক্ষা করেছেন, সেদিন আমি বাসুলুল্লাহ (সা) এর আঙ্গুলসমুহের মাঝ
থেকে পানি ঝর্ণার ন্যায় উৎসারিত হতে দেখেছি ৷ ঐ পানি দ্বারা তারা সকলে উবু করার পুর্বে
তিনি তার হাত উঠাননি ৷ এ হাদীসের সনদ বেশ ভাল, আর এটি ইমাম আহমদের একক
বর্ণনা ৷ আর বাহ্যত এটা পুর্বের ঘটনা নয়,৩ ভিন্ন একটি ঘটনা ৷
মুসলিম শরীফে সালামা ইবন আকওয়ার সুত্রে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ্
(না)-এর সাথে যখন আমরা হুদায়ৰিয়ার পদার্পণ করলাম, তখন আমাদের সংখ্যা চৌদ্দশ’
ক্কিহ্বা ততোধিক ৷ আর আমাদের সাথের পঞ্চাশটি পানিবাহী উট আমাদের পিপাসা নিবারণে
সক্ষম ছিল না ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) কুয়ার পাড়ে বসে দুআ করে তাতে থুক দিলেন ৷
সালামা (রা) বলেন, তখন সবেগে কুয়া থেকে পানি উৎসারিত হতে লাগল এবং আমাদের
ৰাহনগুলোকে পান করালাম এবং নিজেরাও পান করলাম ৷
বুখারী শরীফে যুহরীর হাদীস সংগ্রহ থেকে মিসওয়ার ও মাৱওয়ান ইবনুল হাকাম সুত্রে
ৰ্র্ণিত হুদায়ৰিয়ার সন্ধি বিষয়ে সুদীর্ঘ হাদী সে রয়েছে, তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাদেরকে পাশ
কাটিয়ে হুদায়ৰিয়ার দুরতম প্রান্তে সামান্য পানির এক গর্তের পাশে অবস্থান নিলেন ৷ অল্প
সময়ের ব্যবধানেই লোকেরা সেই পানি শেষ করে ফেলল এবং রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর কাছে
ণিপাসার অনুযােগ করল ৷ তখন তিনি তার তুণী থেকে একটি তীর নিয়ে তাদেরকে তা সেই
গ্র্তের মধ্যে গেড়ে দিতে বললেন ৷ আল্লাহ্র শপথ, সেখান থেকে চলে যাওয়ার পুর্বপর্যন্ত সেই
ৰ্লাশয়টি তাদেরকে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করল ৷ হুদায়ৰিয়ার সন্ধি প্রসঙ্গে সম্পুর্ণ হাদীসখানি
ইতিপুর্বে গিয়েছে বিধায় এখানে আর তা পুনরায় উল্লেখের প্রয়োজন নেই ৷ কোন এক রাবীর
সুৰ্াত্র ইবন ইসহাক বর্ণনা করেন যে, তীর নিয়ে যিনি গর্ভে নেমেছিলেন তিনি হলেন উট চালক
নাজিয়া ইবন জুনদুব ৷ তিনি বলেন, কেউ কেউ বলেছেন, এই ব্যক্তি ছিলেন হযরত বারা ইবন
ধ্াষিব (রা) ৷ তারপর ইবন ইসহাক প্রথম টিকে প্রাধান্য দিয়েছেন ৷
এ প্রসঙ্গে ইবন আব্বাস থেকে বর্ণিত একটি হাদীস
ইমাম আহমদ, হুসায়ন আল আশকর ইবন আব্বাস (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন যে,
তিনি বলেছেন, একদিন প্রত্যুষে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সৈন্যশিবিরে কোন পানি পাওয়া গেল না ৷
তখন এক ব্যক্তি তার কাছে এসে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ্৷ বাহিনীতে কোন পানি নেই ৷ তিনি
বললেন, তেমাের কাছে কি কোন পানি আছে ? যে ব্যক্তি বলল, জী, হী ৷ তিনি বললেন, তুমি
তা নিয়ে এসো ৷ রাবী বলেন, তখন সেই ব্যক্তি তার কাছে একটি পাত্র নিয়ে আসল যাতে
সামান্য পানি ছিল ৷ রাবী বলেন, এরপর রাসুলুল্লাহ্ (সা) পাত্র মুখে তার আঙ্গুলসমুহ রেখে
সেগুলোকে ছড়িয়ে দিলেন তখন তার আঙ্গুলসমুহের মধ্য থেকে পানির ঝর্ণাধারা উৎসারিত
হতে লাগল ৷ আর তিনি বিলাল (রা)-কে নির্দেশ দিলেন, লোকদের মাঝে ঘোষণা কর, তারা
যেন বরকতপুর্ণ উবু করে নেয় ৷ এটা আহমদের একক বর্ণনা ৷ ইমাম তাবারানী, আমির
আশ্শা’বীর হাদীস সংগ্রহ থেকে ইবন আব্বাসের বরাতে হাদীসখানি অনুরুপ রিওয়ায়াত
করেছেন ৷
এ প্রসঙ্গে আবদুল্লাহ ইবন মাসউদের একটি হাদীস
বুখারী, মুহাম্মাদ ইবনুল মুছান্নড়া আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন
যে, তিনি বলেছেন, আমরা তো আল্লাহর নিদর্শনাদিকে বরকত’ বলে গণ্য করতাম, অথচ
তোমরা তাকে ভরের কারণ বলে গণ্য করে থাক ৷ একবার আমরা রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সাথে
ছিলাম ৷ ত,খন আমাদের পানির সংকট দেখা দিল ৷ তখন তিনি বললেন, তোমরা কোন পানির
উচ্ছিষ্ট অংশ নিয়ে এসো ৷ তখন তারা একটি পাত্র নিয়ে আসল, যাতে সামান্য একটু পানি
ছিল ৷ তখন তিনি সেই প্নড়াত্রে তার হাত প্রবেশ করিয়ে সকলের উদ্দেশ্যে বললেন, তোমরা
বরকতময় পবিত্রতা অর্জনুে এগিয়ে এসো ৷ আর বরকত তো আল্লাহ্র পক্ষ থেকেই হয়ে থাকে ৷
ইবন মাসউদ (বা) বলেন, আমি তখন রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর আঙ্গুলসমুহের মধ্য থেকে পানি
উৎসারিত হতে দেখেছি, আর আমরা তো খাবার যখন খাওয়া হত তখন তার থেকে তাসবীহ’
শুনতে পেতাম ৷ বুনদার থেকে তিরমিযী হাদীসখানি রিওয়ায়াত করেন এবং বলেন, হাদীসখানি
হাসান সহীহ ৷ ,
এ প্রসঙ্গে ইমরান ইবন হুসায়ন এর হাদীস
বুখারী, আবুল ওলীদ ইমরান ইবন হুসায়ন (বা) সুত্রে বর্ণনা করেন যে, কোন এক
সফরে তারা রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সাথে ছিলেন ৷ এ সময় তারা রাতভর পথ চললেন, ভোর
বেলায় যাত্রা বিরতি করে তারা বিশ্রাম গ্রহণ করলেন, তখন তারা অনিচ্ছা সত্বেও (ক্লান্তিজনিত
কারণে) ঘুমিয়ে গেলেন ৷ এদিকে বেলা উঠে গেল ৷ এরপর সর্বপ্রথম যিনি জাগলেন, তিনি
ছিলেন হযরত আবু বকর, আর রাসুলুল্লাহ্ (সা) নিজ থেকে না জাগলে তার ঘুম ভাঙ্গানাে হতে
না ৷ এরপর উমর (রা) জাগ্রত হলেন, তখন আবু বকর (বা) তার শিয়রে বসে উচ্চ স্বরে
তাকবীর বলতে লাগলেন, ফলে নবী করীম (সা) জাগ্রত হলেন এবং (তাবু থেকে) নেমে এসে
আমাদেরকে ফজরের নামায পড়ালেন ৷ এ সময় এক ব্যক্তি আমাদের সাথে নামায না পড়ে