এ বছর হজ্বের সময় ৯ যিলহজ্ব মাগরিবের পর আমরা আরাফা থেকে হেঁটে মুযদালিফার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হই। এক জায়গায় এসে আমীর সাহেব বললেন, রাতে আমরা এখানেই অবস্থান করব। আমরা মনে করেছিলাম মুযদালিফার সীমানায় চলে এসেছি। কিন্তু হজ্বের পরে জানতে পারলাম যে, রাতে আমরা যে জায়গায় অবস্থান করেছি তা মুযদালিফার বাইরে ছিল। আমীর সাহেবকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, রাতে মুযদালিফায় অবস্থান করা জরুরি নয়। সকালে ফজরের পর কিছু সময়ের জন্য মুযদালিফায় অবস্থান করাই যথেষ্ট।
মুফতী সাহেবের কাছে প্রশ্ন হল, আমীর সাহেবের এ কথা কি ঠিক? রাতে মুযদালিফার বাইরে অবস্থানের কারণে আমাদের উপর কোনো জরিমানা ওয়াজিব হবে কি ?
এছাড়া সকালেও আমরা মুযদালিফায় অবস্থান করিনি। বরং মুযদালিফার উপর দিয়ে হেঁটে হেঁটে তা অতিক্রম করে গিয়েছি। এভাবে রাতে মুযদালিফার বাইরে অবস্থান করে সকালে হাঁটতে হাঁটতে মুযদালিফার সীমানা অতিক্রম করার দ্বারা মুযদালিফায় অবস্থানের ওয়াজিব আদায় হয়েছে কি? আর এ কারণে আমাদের উপর কোনো জরিমানা আসবে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।
১০ যিলহজ্ব সুবহে সাদিক থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত সময়ের মধ্যে এক মুহূর্তের জন্য মুযদালিফায় অবস্থান করলেও উকূফে মুযদালিফার ওয়াজিব আদায় হয়ে যায়। ওয়াজিব আদায়ের জন্য সেখানে দাঁড়ানো বা বসা জরুরি নয়; বরং পায়ে হেঁটে বা গাড়িতে মুযদালিফা অতিক্রম করলেও এ ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে।
সুতরাং আপনারা যদি সুবহে সাদিকের পর সূর্যোদয়ের পূর্বেই মুযদাফিলার সীমানায় প্রবেশ করে থাকেন তাহলে আপনাদের উকূফে মুযদালিফার ওয়াজিব আদায় হয়ে গেছে। আর যদি মুযদালিফার সীমানায় সূর্যোদয়ের পর প্রবেশ করে থাকেন তাহলে আপনাদের উকূফে মুযদালিফার ওয়াজিব আদায় হয়নি। এক্ষেত্রে মুযদালিফায় প্রবেশ করা সম্ভব হওয়া সত্ত্বেও যদি আপনারা সেখানে যথাসময়ে প্রবেশ না করে থাকেন তাহলে এ কারণে আপনাদের উপর দম ওয়াজিব হবে।
উল্লেখ্য যে, মুযদালিফায় ৯ তারিখ রাতে অবস্থান করা সুন্নাত এবং হজ্বের ফযীলতপূর্ণ আমল। তাই মুযদালিফায় পৌঁছা নিশ্চিত হয়েই অবস্থান করা উচিত। বিশেষ ওজর ছাড়া সেখানে রাতে অবস্থান ত্যাগ না করা উচিত।
-আলমাবসূত, সারাখসী ৪/৬৩, ১৬২; বাদায়েউস সনায়ে ২/৩২১, ৩৫৭; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৪১-২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৩০