ইবন ইসহাক বলেন, আমি জানতে পেয়েছি, রাসৃলুল্লাহ্ (সা) বলেছিলেনাঃ আরবের শ্রেষ্ঠ
অশ্বারোহী যোদ্ধা আমাদের মধ্যে রয়েছে ৷ সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ্৷ সে
লোকঢি কে ? তিনি বললেন : উক্কাশা ইবন মিহ্সান ৷ তখন যিরর ইবন আয়ওয়ার বললেন,
ইয়৷ রাসুলাল্লাহ্! সে তো আমাদের গোত্রের লোক ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন : সে তোমাদের
লোক নয় বরং মৈত্রী সুত্রে যে আমাদের লোক ৷ বায়হাকী হাকিম থেকে ওয়াকিদী সুত্রে
উছমান খাশানীর ফুফু থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন উক্কাশা ইবন মিহ্সান বলেছেনং বদর
যুদ্ধে আমার নিজের তরবাবিটি৫ ভেঙ্গে যায় ৷ তখন রাসুলুল্লাহ (সা) আমাকে একখানা কাঠ
দিলেন ৷ আমার হাতে এলে তা একটি ঝকঝকে লম্বা তরবারিতে রুপান্তরিত হয়ে যায় ৷ আমি এ
তরবারি দ্বারা মুশরিকদের পরাজিত হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ করি ৷ মৃত্যু পর্যন্ত এ তরবাবির্তার কাছেই
ছিল ৷ ওয়াকিদী উসামা ইবন যায়দ সুত্রে দ উদ থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বনু আবদিল
আশহাল গোত্রের কয়েক ব্যক্তি থেকে বারবার শুনেছেন যে বনের যুদ্ধে সালামা ইবন হুরায়শের
তরবারিৰু তঙ্গে যায় ৷ তিনি নিরস্ত্র হয়ে পড়েন ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ স ) তবে একটা ভাল দেন
ইবন তাবের থেজুরবীথি থেকে তিনি এটা ৷সং গ্রহ করেছিলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেনং : তুমি
এটা দিয়ে শ্াত্রুকে আঘাত ৩কর ৷ ডালটি অমনি একটি উত্তম তরবারিতে পরিণত হয়ে যায় ৷ এ
রম্পোবিখানাত তার কাছে আবু উবায়দা ৷র নেতত্বে পরিচালিত জাসার’ যুদ্ধ পর্যন্ত অক্ষুগ্ন ছিল ৷
কাতাদার চক্ষু ফিরিয়ে দেয়ার ঘটনা
ইমাম বায়হাকী দালাইল’ গ্রন্থে আবু সাআদ আল-মালিনী সুত্রে কাতাদা ইবন নু’মান
(রা) থেকে বর্ণনা করেন, বদর যুদ্ধে তার চোখে দারুণভাবে আঘাত লাগে ৷ এতে চোখের
পুতুলি বের হয়ে গণ্ডদেশে ঝুলতে থাকে ৷ সাহাবাগণ ঝুলে থাকা চোখ কেটে ফেলার জন্যে
রাসুলুল্লাহ্ (সা)এর নিকট অনুমতি চান ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) সে অনুমতি না দিয়ে কাতদােকে
ডেকে কাছে এনে পুতুলিটি ধরে যথাস্থানে বসিয়ে দেন ৷ এতে তার চোখ এমন ভাল হয়ে যায়
যে, তিনি বুঝতে তই পারতেন না কোন চোখে আঘাত লেগেছিল ৷ অন্য এক বর্ণনায় আছে, তার
এ চােখটি অপর চোখের চেয়েও উত্তম দেখাভাে ৷
এ প্রসঙ্গে আযীরুল ঘু’মিনীন উমর ইবন আবদুল আযীয় থেকে একটি ঘটনা বর্ণিত
হয়েছে ৷ হযরত কাতাদার পৌত্র আসিম ইবন উমর উমর ইবন আবদুল আযীয়ের নিকট উক্ত
ঘটনা ব্যক্ত করে নিজ পরিচয় দিয়ে বলেন :
আমি সেই মহান ব্যক্তির সন্তান যার চোখ গালের উপর ঝুলে পড়েছিল ৷ তারপর মুহাম্মদ
মুস্তাফার পবিত্র হাতে তা উত্তমভা ৷রে পুনঃস্থাপিত হয়েছিল ৷” এ কথা শুনে জবাবে উমর ইবন
আবদুল আযীয় উমাইয়৷ ইবন আবিসৃ সালকৃ তর সেই কবিতাটি আবৃত্তি করেন যা তিনি সায়ফ
ইবন যী-ইয়াযানের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন ও
“ঐটা ছিল একটি বিশেষ ফযীলত ৷ বিক্ষু বর্তমানে এর সাথে তুলনা করা যায় এমন দু’টি
পেয়ালার সাথে যায় একটিতে আছে শুভ্র দুধ এবং অপরটিতে পানি ৷ কিন্তু পরিবর্তীতে উভয়টিই
প্রস্রাবে পরিণত হয়ে যায় ৷”
অনুরুপ আরেকটি ঘটনা
ইমাম বায়হাকী বলেন : আবু আবদুল্লাহ আল-হাফিয রাফি’ ইবন মালিক থেকে বর্ণিত ৷
তিনি বলেন, বদর যুদ্ধে এক পর্যায়ে উবাই ইবন খাল্ফের চারপাশে লোকজনের জটলড়া দেখতে
পাই ৷ আমি অগ্রসর হয়ে সেখানে গেলাম ৷ দেখলাম, তার পরিহিত বর্ম বগলের নীচ থেকে
কাটা ৷ সেই র্কাক দিয়ে তরবারি ঢুকিয়ে আমি তাকে আঘাত করলাম ৰু এ সময় যুদ্ধক্ষেত্র থেকে
একটি তীর এসে আমার চোখ কুড়ে যায় ৷ রাসুল (সা) আমার চোখে একটু থুথু দিলেন ও দৃআ
করলেন ৷ এতে আমার চোখে আর কোন কষ্ট অনুভব হল না ৷ হড়াদীছটি বর্ণিত সুত্রে খুবই
অপরিচিত, যদিও এর সনদ উত্তম ৷ সিহাহ্ সিত্তাহ্র মুহাদ্দিছগণ এ হাদীছটি বর্ণনা করেননি ;
অবশ্য তাবারানী এটা ইবরাহীম ইবন মুনযির থেকে বর্ণনা করেছেন ৷ বদর যুদ্ধে হযরত আবু
বকর সিদ্দীক তার পুত্র আবদুর রহমানকে ডেকে বললেন, হে দৃরাচড়ারা আমার ধন-সম্পদ
কোথায় ? আবদুর রহমান তখনও মুসলমান হননি এবং ঘুশরিকদের পক্ষ হয়ে যুদ্ধ করতে
এসেছিলেন ৷ তিনি কবিতার মাধ্যমে জবাবে বললেন : (কবিতার অর্থ৪) ঘোড়া, যুদ্ধাস্ত্র ও
পথভ্রষ্ট বৃদ্ধদের হত্যা করার তরবারি ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই ৷ উমাবীর মাগড়াযী গ্রন্থ সুত্রে
আমরা বর্ণনা করেছি যে, বদর যুদ্ধ শেষে রাসুলুল্লাহ্ (সা) ও আবু বকর সিদ্দীক নিহত শত্রুদের
লাশের মধ্য দিয়ে ইাটছিলেন ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন : আমরা এদের শিরগুলাে
কাটবাে ৷ আবু বকর সিদ্দীক (রা) বললেন : যারা আমাদের উপর অত্যাচার-নিপীড়ন
চালিয়েছিল এবং অহংকার প্রদর্শন করত এগুলো হচ্ছে তাদেরই শির ৷
বদর কুয়ায় কাফির সর্দারদের লাশ নিক্ষেপ
ইবন ইসহাক বলেন : ইয়াযিদ ইবন রুমান উরওয়া সুত্রে আইশা (রা) থেকে আমার নিকট
বর্ণনা করেন ৷ বদর যুদ্ধে নিহত কাফিরদেব লাশ বদর কুয়ায় নিক্ষেপ করতে রাসুলুল্লাহ্ (সা)
নির্দেশ দেন ৷ নির্দেশ মত লাশগুলাে তাতে নিক্ষেপ করা হয় ৷ কিন্তু উমাইয়া ইবন খালফেব লাশ
নিক্ষেপ করা হল না ৷ কেননা, তার লাশ ফুলে-কেপে পরিহিত বর্মের সাথে আটকে গিয়েছিল ৷
সাহাবীগণ বর্মের ভিতর থেকে লাশ টেনে বের করার চেষ্টা করলে মাংস ছিড়ে যেতে থাকে ৷
তখন ঐ অবস্থায় রেখেই তাকে মাটিচাপা দেয়া হয় ৷ লাশ নিক্ষেপ শেষ হলে রাসুলুল্লাহ্ (সা)
কুপের পাশে দাড়িয়ে তাদের উদ্দেশ করে বলেন : হে কুপের অধিবাসীরা ৷ তোমাদের
প্রতিপালক তোমাদের সাথে যে ওয়দাে করেছিলেন, তা কি তোমরা যথাযথভাবে পেয়েছ ?
আমার প্রতিপালক আমার সাথে যে ওয়দাে করেছিলেন, তা তো আমি যথাযথভাবে পেয়েছি ৷
হযরত আইশা (রা) বলেন, সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ্! আপনি মৃত লোকদের
সাথে কথা বলছেন ? জবাবে রড়াসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, তারা এখন ভালভাবে জোন গিয়েছে যে,
তাদের প্রতিপালক তাদের সাথে যে ওয়দাে করেছিলেন তা সঠিক ৷ হযরত আইশা (রা) বলেন :