জনৈক মুয়াযযিন সাহেব ঘড়ি দেখে সূর্য ডোবার সময় হয়েছে মনে করে মাগরিবের আযান দিয়েছেন। তার আযান শুনে মহল্লার অনেক লোক ইফতার করে ফেলেছেন। পরে মহল্লার অন্যান্য মসজিদের আযান, রেডিওর আযান ও রোযার চিরস্থায়ী ক্যালেন্ডারের মাধ্যমে দেখা গেল যে, বাস্তবে তারা সূর্য ডোবার আগেই ইফতার করেছিলেন। জানতে চাই, যারা ইফতার করে ফেলেছেন তাদের রোযা কি ভেঙ্গে গেছে? যদি ভেঙ্গে যায় তাহলে কাযা করলেই যথেষ্ট হবে নাকি কাফফারাও দিতে হবে?
প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী যারা সূর্যাস্তের আগেই ইফতার করেছেন তাদের রোযা নষ্ট হয়ে গেছে। তারা রোযাটি কাযা করবেন, কাফফারা দেওয়া লাগবে না। হাদীস শরীফে আছে, হযরত আসমা রা. বলেন, ‘রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যমানায় এক মেঘলা দিনে আমরা সূর্য ডুবে গেছে নিশ্চিত জেনে ইফতার করলাম। পরক্ষণেই মেঘ সরে গিয়ে সূর্য প্রকাশিত হল।’ হাদীসের রাবী হিশামকে জিজ্ঞাসা করা হল, তাদেরকে কি রোযা কাযা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল? তিনি বললেন, অবশ্যই রোযা কাযা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
হযরত বিশর ইবনে কায়েস থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি এক রমযানে বিকেল বেলা উমর রা.-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল। উমর রা. সূর্য ডুবে গেছে মনে করে নিজেও পানি পান করলেন এবং আমাকেও পান করালেন। পরক্ষণেই সূর্য দেখা গেল। উমর রা. বললেন, ‘সমস্যা নেই। এর পরিবর্তে একটি রোযা কাযা করাই যথেষ্ট হবে।’-সুনানে কুবরা ৪/৫৬৬; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৯১৩৮
হযরত ইবনে জুরাইজ রা. বলেন, আমি আতা রাহ.কে জিজ্ঞাসা করলাম, রমযানের এক মেঘাচ্ছন্ন দিনে সময় হয়েছে মনে করে ইফতার করেছি। এরপর সূর্য দেখা গেল। এখন আমি কি শুধু ঐ দিনের রোযার কাযা করব, না আমাকে কাফফারাও আদায় করতে হবে? আতা রাহ. বললেন, হ্যাঁ, (শুধু কাযা করবে)। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৯১৪৭)
বাদায়েউস সানায়ে ২/২৫৭; আলবাহরুর রায়েক ২/২৯১; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪০৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৩৬; হাশিয়াতুত তহতাবী আলামারাকী ৩৬৯