Home » হৃদয়স্পর্শী কাহিনী » জান্নাতের বিনিময়ে মাথার টিউমার অপারেশন

জান্নাতের বিনিময়ে মাথার টিউমার অপারেশন

  • 3000+ Premium WORDPRESS Themes and Plugins
  • Download PHP Scripts, Mobile App Source Code
  • ৩১ ডিসেম্বর, রাত তখন ১১.৩০ মিনিট। ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হসপিটাল, কাকরাইল। অপারেশন থিয়েটারের বাইরে অপেক্ষমান হাফেজে কুরআন বালকটির স্বজনরা। সঙ্গে তার ওস্তাদ হাফেজ মাওঃ আহমদুল্লাহ।বাবা মায়ের চোখে পানি এক বুক শঙ্কা এবং আশা নিয়ে প্রিয় সন্তানের গুরুতর অপারেশনটি সফল হবার জন্য মালিকের দরবারে রোনাজারীতে মগ্ন। এরই মধ্যে সার্জন ডাঃ মাহফুজুর রহমান স্যার ওটির দরজা খুলে বের হলেন। রাত ১২.১০ মি.। ক্যালেন্ডার অনুযায়ী তখন ২০১৮ সালের প্রথম প্রহর! ডাক্তার বেরিয়ে হাসিমুখে বললেন, আপনাদের রোগীর অপারেশন সাকসেস। আলহামদুলিল্লাহ!অপারেশন সফল হবার খবর শুনেও যেন পুরো মাত্রায় খুশি হতে পারছেন না ছেলেটির বাবা-মা। অপারেশনের বিল ৬০০০০ টাকা। খুব বড় অংক না হলেও বালকটির পরিবারের জন্য এটা অনেক বড়। এতো টাকা কোথায় পাবে তারা? সর্বসাকুল্যেও জোগাড় করতে পারেননি এই অংকের পুরোটা।যদ্দুর পেরেছেন তা নিয়েই প্রিয় পুত্রের অপারেশনের জন্য চলে এসেছেন হসপিটালে। কিন্তু কসাই ডাক্তার কি আর ওসব কথা শোনবে? আমাদের দেশের ডাক্তারদের চরিত্র কে না জানে? রোগী যেন তার কোরবানীর গরু! জবাই করে টাকাটা নিয়েই চম্পট!সার্জন ডাঃ মাহফুজুর রহমান বালকটির বাবাকে ডেকে বললেন, অপারেশন তো হয়ে গেছে, এখন আপনারা বিলটা পরিশোধ করেন! আর মনে রাখবেন, আমরা মাত্র ৬০০০০ টাকায় করে দিলাম কিন্তু এই অপারেশন অন্য কোথাও আপনারা লক্ষ টাকার কমে করতে পারতেন না!ছেলেটার বাবা সামান্য মসজিদের ইমাম সাহেব। এই বিলটা থেকেই কিছু কমাবার অনুরোধ করবার ইচ্ছা করছিলেন কিন্তু ডাক্তারের কথা শুনে সেই সাহসটাও হারিয়েছেন। তবুও কাচুমাচু করে বললেন, স্যার, আমি গরীব মানুষ, এই হাফেজে কুরআন ছেলেটার বাবা। স্যার, আমার বুকের ধন ভয়াবহ টিউমারে আক্রান্ত হয়ে আমার চোখের সামনেই শেষ হয়ে যাবে! এটা তো আমার জন্য সহ্য করা সহজ হবে না! তাই যতটুকু জোগাড় করতে পেরেছি তা নিয়েই চলে এসেছি আপনার কাছে। কিন্তু স্যার, ৬০০০০ টাকা আমি কই পাবো! স্যার, আপনি একজন পিতা হয়ে আমার ছেলেটার সামনে আমাকে লজ্জা দিয়েন না! স্যার, আমাকে কিছুটা রেহাই দেন।ডাঃ মাহফুজুর রহমান সব শুনলেন।
    একদৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখলেন তার অক্ষমতা এবং কলিজার টুকরো সন্তানের জন্য মায়ার বিপুলতা। রাত ১২ টা পেরিয়ে গেছে তখন। এই মধ্য রাতে অপারেশন করবার পর এসব গল্প শোনবার টাইম আছে নাকি! বের করেন টাকা! রাখেন এসব বকওয়াস! এমনই হুংকার দেবার কথা ছিলো কসাই ডাক্তার হিসেবে। কিন্তু নাহ! তিনি এসব কিছুই বললেন না! তিনি কসাই না! তার ব্যক্তিত্বসম্পন্ন চেহারাটা দয়ার আবেশে নিষ্পাপ ফুলের মত হয়ে গেল। মায়ার পরশে স্থির চোখের কোনে কী যেন চিক চিক করে ওঠলো!তিনি বলে উঠলেন, আপনার এতটুকু ছেলে হাফেজে কুরআন? জ্বী, স্যার! কোথায় পড়েছে ও? জামেয়া ইসলামিয়া ফজলুল উলুম মাদ্রাসায়। ডাক্তার আর ছেলের বাবার এই কথোপকথন শুনে এগিয়ে এলেন অদূরেই দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটার ওস্তাদ।বললেন, জ্বী, স্যার! ও আমার কাছেই হাফেজ হয়েছে। ভালো ইয়াদ আছে। আসন্ন বোর্ড পরিক্ষায় ওকে নিয়ে আমাদের স্বপ্নও আছে। ডাক্তার আরো বিগলিত হয়ে গেলেন। আবেগে ফুলে ফুলে ওঠছিলেন যেন। বললেন, ধন্য আপনারা! এমন সন্তান আমাদের দেশের গৌরব! এ জাতির গৌরব! আমার সৌভাগ্যের সোপান!এই বলেই তিনি ছেলেটার বাবার হাত ধরে বললেন, আসুন! আমরা ওর কাছে যাই! বাবা কিন্তু তখনো কনফিউশানে ভুগছেন। কী হচ্ছে? কিছু ছাড় দেবেনই বা কিনা? ছেলেটার শিয়রে এসে ডাক্তার বললেন, আব্বু, কেমন বোধ করছ এখন? স্যার, মোটামুটি! ভয় করোনা দ্রুতই সেরে ওঠবে ইনশাআল্লাহ।ডাঃ মাহফুজুর রহমান বললেন, আব্বু, তুমি কি কুরআনের হাফেজ? সমগ্র কুরআন তুমি মুখস্থ করেছ? জ্বী, স্যার!আচ্ছা, একজন হাফেজে কুরআন কতজন মানুষকে সুপারিশ করে জান্নাতে নিতে পারবে? জানো তুমি? জ্বী স্যার, অন্তত ১০ জনকে নিতে পারবে। আব্বু, তুমি কি আমাকে ওয়াদা দিতে পারো যে, যদি তুমি সেদিন এই বিশেষ ক্ষমতা লাভ করো, তাহলে আমার জন্যও সুপারিশ করবে? ছেলেটা একটু দম নিয়ে বললো, জ্বী স্যার, ইনশাআল্লাহ আল্লাহ আমাকে এই সুযোগ দিলে আপনার জন্য আমি সুপারিশ করবো!ডাঃ মাহফুজুর রহমানের চোখের কোনে চিকচিক করে ওঠলো রূপালী আলো। শিশিরভেজা ঘাসে রোদেলা সকালে যেমন বিভায়িত হয়! তিনি কিছুক্ষণ থেমে থেকে ধরে যাওয়া বললেন, আব্বু! আমি পবিত্র কুরআনের বিনিময়ে তোমার অপারেশন করে দিলাম! তোমার আব্বুকে এক টাকাও বিল পরিশোধ করতে হবেনা! আমি কুরআন চাই! আমি রোজ হাশরে হাফেজে কুরআনের সুপারিশ চাই!ছেলেটার বাবা চোখের পানি ছেড়ে দিলেন। সদ্য অপারেশন হওয়া হাফেজে কুরআন বালকটাও কেঁদে ফেললো। অপারেশনের যন্ত্রণায় না বরং আবেগের তাড়নায়। পরিবেশে এক ভাবাবেগ তৈরি হলো। সহযোগী সার্জন, নার্স সবাই বিস্ময় নিয়ে দেখছিলো, কী হচ্ছে এসব!? মাহফুজুর রহমান স্যার তখন বললেন, সবাই নতুন বছর উদযাপন করেছে থার্টি ফাস্ট নাইটের নোংরামি দ্বারা আর আমরা শুরু করলাম কুরআন দ্বারা!এরপর ডাঃ সাহেব সদ্য অপারেশন হওয়া হাফেজে কুরআন বালকটিকে একটা রিকোয়েস্ট করলেন। আব্বু, তুমি একটু কুরআন তিলাওয়াত করতে পারবে এখন? রাজি হলো সে। হৃদয়স্পর্শী সেই তিলাওয়াত মোবাইলে ধারণ করলেন তিনি। বললেন, এটা একটা স্মৃতি! ভালো কাজের একটা দলিল।এটা কোনো গল্প নয়! সদ্য বিগত ২০১৭ সালের বিদায়ী রাত এবং ২০১৮ সালের প্রথম প্রহরের ঘটনা। ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হসপিটাল, কাকরাইলের এই ঘটনার প্রমাণ করে মানবতা আজো মরেনি। ডাঃ মাহফুজুর রহমান স্যারদের বুকে আজো বেঁচে আছে মানবতার সবুজ চারাটি।স্যার!স্যালুট আপনাকে….. স্যালুট আপনার মত যারা তাদেরকে…. স্যালুট যারা কুরআনের খাদেমদেরকে সম্মান করে….আল্লাহ তাদেরকে সম্মানিত করুন। মানবতা আজো জয়ধ্বনি করুক মানবের আঙ্গিনায় …উল্লেখ্য, হাফেজে কুরআন ছেলেটার নাম ওবায়দুল্লাহ্। জামেয়া ইসলামিয়া ফজলুল উলুমের হিফজ বিভাগের ছাত্র।এখানকার হিফজ বিভাগের প্রধান শিক্ষক হাফেজ মাওঃ আহমদুল্লাহ সাহেবের থেকে ঘটনাটি শোনা।


    নোটঃ জান্নাতের বিনিময়ে মাথার টিউমার অপারেশন Download করতে কোন ধরনের সমস্যা হলে আমাদেরকে জানান। যোগাযোগ করতে এখানে ক্লিক করুন।

    মীযান জামাতের সমস্ত কিতাব PDF Download

    নাহবেমীর জামাতের কিতাব PDF Download

    হেদায়াতুন নাহু জামাতের কিতাব PDF Download

    কাফিয়া জামাতের কিতাব PDF Download

    শরহে জামী জামাতের কিতাব PDF Download

    জালালাইন জামাতের কিতাব PDF Download

    মেশকাত জামাতের কিতাব PDF Download

    দাওরায়ে হাদিসের কিতাব সমূহ PDF Download

    মাদানী নেসাবের কিতাবসমূহ PDF Download

    3 thoughts on “জান্নাতের বিনিময়ে মাথার টিউমার অপারেশন”

    1. আমাদের দেশের সব ডাক্তার যেন এরকম হয়ে যান .
      সত্যি যদি সমাজের সব অবহেলিত জনগোষ্টি এই সুবিধা পেতো :

    2. হে মহান আরশের মালিক তুমি ডাঃ মাহফুজ স্যারকে জান্নাতুল ফেরদাউসের মেহমান বানিয়ে দিও। ( ঘটনাটি যদি সত্য হয়ে থাকে)

    3. আমাদের দেশে রাষ্ট্রিয় ভাবে কুরআনের হাফেজদেরকে সম্মাননা প্রদানের সিদ্ধান্ত হোক। এবং একটানা বিনা লোকমায়/নির্ভূলভাবে কুরআনের হাফেজের জন্য ফ্লাট বরাদ্দ দেয়ার আবেদন করছি।

    Leave a Comment

    This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.