নবী করীম (না)-এর ঘোড়া ও অন্যান্য ৰাহনের বিবরণ
ইব ন ইসহাক ইয়াযীদ ইবন হাবীব হযরত আলী (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেছেন,
নবী করীম (না)-এর আলমুরতাজিয’ নামে একটি ঘোড়া, উফায়র’ নামে একটি শাখা এবং
দুলদুল’ নামে একটি খচ্চর ছিল ৷ আর তার তরবারির নাম ছিল যুলফাকার’ ৷ তার বর্মের নাম
যুলফুয়ুল’ ৷ ইমাম বায়হাকী (র) আল হাকামের হাদীস থেকে হযরত আলী (রা) সুত্রে
এরুপই বর্ণনা করেছেন ৷ বায়হাকী (র) বলেন, সুনান গ্রন্থে আমরা নবী (না)-এর সেই
ঘোড়াগুলির নামের বিবরণ দিয়েছি, যেগুলি সাঈদীদের কাছে ছিল ৷ লায্যায আল-লাহীফ
মতাম্ভরে আল-লাথীফ এবং আয্যরীর আর আবু তালহার যে ঘোড়ার তিনি আরোহণ
করেছিলেন তার নাম ছিল আল-মানদুব’ ৷ তার উটনীর নাম ছিল কাসওয়া’, আয্বা’,
জাদআ’ ৷ তার খচ্চর ছিল আশ-শাহ্বা’ ও বায়যা’ ৷ বায়হাকী (র) বলেন, কোন বর্ণনায় এ
কথা নেই যে, নবী করীম (সা) এসব রেখে ওফাত লাভ করেছিলেন ৷ তবে তার থচ্চর
আল-বায়যা’ সম্পর্কে রিওয়ায়াত পাওয়া যায় ৷ এ ছাড়া তার যুদ্ধের হাতিয়ার (বর্য যা জনৈক
য়াহুদীর কাছে বন্ধক ছিল) এবং তু-সষ্পত্তি, যা তিনি সাদকা করে দিয়েছিলেন ৷ আর তীর
পরিধেয় কাপড়-চােপড়, খচ্চর এবং আত্টি যার বিবরণ বর্তমান অধ্যায়ে বর্ণিত হয়েছে ৷
আবু দাউদ তড়ায়ালিসী (র) যামআ ইবন সালিহ্ সাহ্ল সাদ সুত্রে বর্ণনা করেন ৷ তিনি
বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (না) যখন ওফাত লাভ করেন তখন তার একটি পশমী জুবৃবা (পরিধেয়)
বোনা হচ্ছিল ৷ এ সনদটি বেশ উত্তম ৷ হাফিয আবু ইয়াল৷ তীর মুসনাদে’ রিওয়ায়াত
করেছেন, মুজাহিদ আনাস থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) কে তুলে
নেয়া হল আর তখন তার জন্য একটি বস্ত্র বোনা হচ্ছিল ৷ এ বর্ণনাটি পুর্ববর্তী বংনাির শাহিদ
বা সমর্থক ৷ আবু সাঈদ ইবনুল আরাবী সাদান ইবন নুসায়র ফাতিমা বিনত হুসায়ন সুত্রে
বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা ) যখন ওফাতপ্রাপ্ত হন তখন তার পরিধেয় দু’খানি চাদর র্তাতে
বোনা হচ্ছিল ৷ এই বর্ণনাটি মুরসাল’ ৷ আবুল কাসিম তাবারানী হাসান ইবন ইসহড়াক
ইবন আব্বাস সুত্রে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলছেন, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর একটি তরবারি ছিল ,
যার বীট ও বীটের প্রান্ত ছিল রুপার ৷ তিনি তার নাম দিয়েছিলেন যুলফাকার’ ৷ এ ছাড়া
আস্সাদাদ,’ নমে একটি ধনুক আল-জামা’ নামে একটি তুনীর, যাতুল ফুয়ুল’ নামে
তাম্রখচিত একটি বর্য, আসৃ সাগা’ নামে একটি বল্লম, আয্-যাকান’ নামে একটি ঢাল এবং
আলমুজিয’ নামে একটি সাদা ঢাল ছিল ৷ আর ছিল আস সাকাব’ নামে একটি ঘোর কৃষ্ণ
বর্ণের ঘোড়া এবং আদৃদাজ’ নামে তার একটি জিন বা দুলদুল নামে ধুসর বর্ণের একটি খচ্চর,
আল-কাসওয়া’ নামক একটি উটনী, ইয়াকুব নামক একটি গাধা ৷ তদ্র্যপ তার আলকাবৃ’
নামক একটি গালিচা, আনপুনামির’ নামে একখানা নামিরা’ (বিছানার চাদর) , আস্সাদির
নামে চামড়ার একটি পানপাত্র, আল-মিরসা’ নামক একটি আয়না, আলজাহ্’ নামক একটি
র্কাচি এবং আলমাম্শুক নামক একটি তরবারি ছিল ৷
আমি (গ্রন্থকার) বলি, ইতিপুর্বে একাধিক সাহারা সুত্রে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা)
মৃত্যুকাংল্ কোন দিরহড়াম-দীনার (টাকা কড়ি) কিত্বা দাস-দাসী রেখে যাননি ৷ তিনি রেখে
গিয়েছিলেন একটি মাত্র মাদী খচ্চর এবং একখণ্ড ভুমি, যা তিনি সাদ্কারুপে নির্ধারিত
করেছিলেন ৷ এ বর্ণনার দাবি হল, নবী করীম (না) আমাদের উল্লেখিত তার সকল
— :
দাস-দড়াসীকে আযাদ করে দিয়েছিলেন এবং আমাদের উল্লেখিত ও অনুল্লোখিত সকল অস্ত্রশস্ত্র,
গৃহপালিত পশু ও বাহন গৃহসামগ্রী ও অন্যান্য সামগ্রী যার উল্লেখ আমরা করেছি বা কবিনি-
সব দান করে ফেলেছিলেন ৷ আর তার মাদী খচ্চরটি হল আশৃশাহ্বা’ (ধুসর বর্ণ) এবং এটি
বায়দাও’ বটে ৷ আল্লাহ্ই সমাধক অবগত ৷ আর বায়দা হচ্ছে সেই খচ্চর, যা তাকে
আলেকজাদ্রিয়ার শাসক মুকাওকিস উপচৌকন স্বরুপ দিয়েছিলেন ৷ উক্ত মুকাওকিসের আসল
নাম হচ্ছে জুরায়জ ইবন মীনা ৷ এটিই সেই বাহন, যার উপর আরোহণ করে হুনায়ন যুদ্ধের দিন
শত্রুব্যুহ যুহ্বখামুখি হয়ে আল্লাহর উপর ভরসা করে তার সম্মানিত নাম নিয়ে বীরতু ব্যঞ্জক ধ্বনি
দিচ্ছিলেন ৷ বর্ণিত আছে যে, এই খচ্চবটি নবী করীম (সা) এর ওফাতের পরও জীবিত ছিল
এবং হযরত আলী (রা) এর খিলাফতকালে তার কাছে ছিল ৷ এরপর তা দীর্ঘকাল বেচে ছিল,
এমনকি এরপর৩ তা আবদুল্লাহ ইবন জা ফরের কাছে ছিল ৷ আর এটি দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারণে
তিনি তার জন্য যব একত্র করে যেতে তেন ৷
আর নবী করীম (সা)-এর গাধা ইয়া কুব যাকে কখনো আদবের সাথে ক্ষুদ্রতা জ্ঞাপক শব্দ
প্ৰয়োগে উফায়র’ও বলা হত, তিনি মাঝে মাঝে তাতে আরোহণ করতেন ৷ এ প্রসঙ্গে ইমাম
আহমদ (র) মুহাম্মদ ইবন ইসহাকের হাদীস থেকে হযরত আলী (রা)-এর উদ্ধৃতিতে
বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ্ (সা) উফায়র নামে একটি গা ধায আরোহণ কররুতেন ৷ ইবন
মাসউদ সনদে আবু ইয়া লা আওন ইবন আবদুল্লাহ্ত তা বর্ণনা করেছেন ৷ একাধিক হাদীসে
এসেছে যে, নবী করীম (সা) গাধায় আরোহণ করেছেন ৷ বুখারী, মুসলিমে এসেছে, একবার
রাসুলুল্লাহ্ (সা) একটি পাধায় আরোহণ করে একটি মজলিশ অতিক্রম করলেন-যেখানে
আবদুল্লাহ ইবন উবাই ইবন সালুল; মুসলমান য়াহুদী এবং মুর্তি পুজারী মুশরিকদের দলের
সাথে একত্রে অবস্থান করছিল ৷ সেখানে পৌছে বাহন থেকে নেমে তিনি তাদেরকে আল্লাহর
দিকে আহবান করলেন ৷ এটি ছিল বদর যুদ্ধের পুর্ববর্তী সময়ের ঘটনা ৷ আর এসময় তিনি
অসুস্থ সাদ ইবন উবাদাকে দেখতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলেন ৷ তখন (মুনাফিক)
আবদুল্লাহ তাকে বলল, ওহে ব্যক্তি ! আপনার কথার চেয়ে উত্তম কথা হতে পারে না, আর তা
যদি সত্য হয়ে থাকে তাহলেও তা বলে আপনি আমাদের মজলিসে ঝামেলা বাধাবেন না ৷
এ ঘটনা ছিল ইসলাম প্রবল হওয়ার পুর্বেকার ৷ কোন কোন বর্ণনায় এসেছে রাসুলুল্লাহ্
(সা )-এব বাহনের পায়ের (উৎক্ষিপ্ত) ধুলা যখন সকলকে অচ্ছেন্ন করল তখন সে তার নাক
ঢেকে বলল : আপনার পাধার দুষ্ন্ধি দ্বারা আমাদেরকে বিরক্ত করবেন না ৷ তখন আবদুল্লাহ
ইবন রাওয়াহা (রা) তাকে লক্ষ্য করে বললেন, আল্লাহর কসম, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর গাধার
দুর্ণথব্ তোমার ঘ্রাণের চাইতেও অধিকতর সুগন্ধিময় ৷ আবদুল্লাহ ইবন রাওয়াহ৷ (রা) আরো
বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্! আপনি ঐ আরোহণ নিয়ে আমাদের মজলিসে আসবেন; কেননা,
আমরা তা পছন্দ করি ৷ এই বাদানুবাদের ফলে উভয় গোত্রের মাঝে চরম উত্তেজনা দেখা দিল
এবং তারা পরস্পর লড়াইয়ে প্রবৃত্ত হতে উদ্যত হল ৷ তখন রাসুলুল্লাহ (সা) তাদেরকে শান্ত
করলেন ৷ এরপর তিনি যা“ দ ইবন উবাদার কাছে গেলেন এবং তার কাছে আবদুল্লাহ ইবন
উবায়য়ের আচরণের অনুযোগ করলেন ৷ সা দ বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্!ত তার প্রতি আপনাকে
একটু কোমল হতে হবে ৷ শপথ ঐ সত্তার, যিনি সতাসহ আপনাকে প্রেরণ করেছেন, তাকে
আমাদের রাজা রুপে বরণ করার জন্য আমরাতাে তার রাজমাল্য প্রস্তুত করছিলাম ৷ এরপর
আল্লাহ যখন সতের আবির্ভাব ঘটালেন, তখন আপনার প্রতি বিদ্বেষে তার কষ্ঠনালী শুকিয়ে
গেল ৷ ইতিপুর্বে আমরা উল্লেখ করেছি, খয়বার অভিযান কালে নবী করীম (সা) কোন কোন
দিন পাধায় আরোহণ করেছেন ৷ এ বর্ণনাও এসেছে যে, একটি গাধায় হযরত মুআযকেসহ
আরেড়াহীরুপে বসিয়েছিলেন ৷ এ প্রসঙ্গের সব বিবরণ সনদ ও ভাষ্যসহ উল্লেখ করলে পরিচ্ছেদের
কলেবর বৃদ্ধি পেত ৷ আল্লাহ সমধিক অবগত ৷
আর কাযী ইয়ায ইবন মুসা সাবৃতী তার গ্রন্থ আশৃ-শিফাতে তার পুর্বে ইমামুল হারামায়ন
তার আল-কাবীর ফী উসুলুদ্দীন’ গ্রন্থে এবং অন্যান্যরা এই মর্মে যা উল্লেখ করেছেন যে, যিয়াদ
ইবন শিহাব নামে রাসুলুল্পাহ্ (না)-এর একটি শাখা ছিল এবং রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাকে কোন
কোন সাহাবাকে ডেকে আনতে পাঠাতেন ৷ তখন সে গিয়ে তাদের কারো বাড়ির দরজায় ঠক্
ঠক্ করলে তিনি বুঝতে পারতেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাকে তলব করেছেন ৷ এবং এই মর্মে
যে পাধাটি নবী করীম (না)-কে এ তথ্য দিয়েছিল যে, যে এমন সত্তরঢি পাবার অধ৪স্তন
ত্শ ধর , যাদের প্রতেদ্রকেই কোন না কোন নবীর বাহন ছিল এবং এই মর্মে যে, নবী (না)-এর
ওফাত হলে পাধাটি এক কুপে পড়ে মারা যায় ৷ এটি এমন এক হাদীস, যার সনদের আদৌ
কোন পরিচয় পাওয়া যায় না ৷ হাদীস বিশারদদের অনেকেই যেমন আবদুর রহমান ইবন আবু
হাতিম ও তার পিতা (র) প্রমুখসহ এ হাদীসটি প্রত্যাখ্যান করেছেন ৷ আমাদের শায়খ আবুল
হাজ্জাজ আল-মিয্যীকে একাধিকবার এই হাদীসখানি চরমভাবে প্রত্যাখ্যান করতে শুনেছি ৷
হাফিয আবুনুআয়ম তার দালাইলুন নুবুওত’ গ্রন্থে আবুবক্র আহমদ ইবন মুহাম্মদ ইবন মুসা
আমবারীর বরাতে মুআয ইবন জাবাল থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, খয়বারে
অবস্থানকালে নবী করীম (না)-এর কাছে একটি কাল গাধা এসে দাড়িয়ে গেল ৷ তখন তিনি
তাকে প্রশ্ন করলেন, তুমি কে? সে বলল, আমি অমুকের পুত্র আমর, আমরা ছিলাম সাত তাই,
আমাদের সকলকেই নবীগণ বাহন বানিয়েছেন ৷ আমি তাদের সকলের কনিষ্ঠ ৷ আমি ছিলাম
আপনার জন্য নির্ধারিত; কিভু জনৈক ইয়াহুদী আমার মালিকানা লাভ করে ৷ আমি যখন
আপনাকে স্মরণ করতাম তখন তাকে নিয়ে হোচট (খতাম তখন সে আমাকে ভীষণ প্রহার
করত ৷ তখন নবী করীম (মা) তাকে বললেন, তাহলে তুমি ইয়াকুর ৷ এটিও একটি বিরল
বর্ণনা ৷
পরিচ্ছেদ
এখন নবী চরিত্রের অবশিষ্ট সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি বর্ণনার সময় ৷ আর তা চারটি অধ্যায়ে
বিভক্ত :
১ শামাইল অর্থাৎ নবী (না)-এর অবয়ব-আকৃতি ও স্বভাব-চব্রিত্র, ২
দালাইলুন-নুবুওয়াতের অনুকুলে যুক্তি-প্রমাণ ও পুর্বাভাস ইত্যাদি, ৩ ফাযাইল-নবী করীম
(সা)এর মাহাত্ম্য ও গুণাবলী প্রসঙ্গ, : খাসাইস বা তার বৈশিষ্ট্য প্রসঙ্গ ৷ আল্লাহ সহায়,
তিনিই ভরসা ৷ পরড়াক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময় আল্লাহ ব্যতীত কোন শক্তি-সড়ামর্থ্য নেই ৷
কিতাবুশ শামাইল : রাসুল (না)-এর দেহাবয়ব ও পবিত্র স্বভাব
অতীতে এবং সাম্প্রতিককালে লেখক-সংকলকগণ এ বিষয়ে বহু স্বতন্ত্র ও সংযুক্ত গ্রন্থ রচনা
করেছেন ৷ এ সংক্রান্ত সর্বোত্তম, সর্বোৎকৃষ্ট ও সর্বাধিক উপযোগিতা সম্পন্ন গ্রন্থখানি হল আবু
ঈসা মুহাম্মাদ ইবন ঈসা ইবন সাওরা আৎ তিরমিযী (র)-এর ৷ এ: বিষয়ে তিনি তার
আশশামাইল’ নামক প্রসিদ্ধ কিতাব স্বতন্ত্রভাবে সংকলন করেছেন ৷ আর আমাদের কাছে তার
অবিচ্ছিন্ন সনদ বা সংগ্রহসুত্র বিদ্যমান রয়েছে ৷ এখানে আমরা শামাইলে তার সংকলিত
বিবরণের মুখ্য অংশ উল্লেখ করছি ৷ উপরন্তু এমন কিছু অতিরিক্ত বিষয় আলোচনা করব, হাদীস
ও ফিকাহবিদগণ যার অভাব বোধ না করে পারেন না ৷ প্রথমে আমরা তার চোখ র্ধাধানো
সৌন্দর্যের আলোচনা করব ৷ তারপর তার বিশদ বিবরণ উপস্থাপন করব ৷ আর এই মুহুর্তে
আমাদের বক্তব্য হল (সহায়রুপে) আল্লাহ্ই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনিই সর্বোত্তম
কর্মবি ধায়ক ৷
নবী করীম (সা)শ্এর দীপ্তিময় ও অনুপম সৌন্দর্যের বিবরণ
ইমাম বুখারী (র) আহমদ বিন সাঈদ আবু আবদুল্লাহ সুত্রে আবু ইসহাকের বরাতে
উল্লেখ করেছেন যে, তিনি বলেছেন, আমি বারা ইবন আযিব (রা)-কে বলতে শুনেছি, নবী
করীম (সা) লোকদের মাঝে সুন্দরতম চেহারা ও সর্বোত্তম স্বভাবের অধিকারী ছিলেন ৷ অতি
দীর্ঘকায়ও নন কিৎবা খর্বাকৃতিও নন ৷ আবু কুরায়ব সুত্রে ইমাম মুসলিমও এরুপই বর্ণনা
করেছেন ৷ এছাড়া বুথারী (র) জাফর ইবন উমরের সুত্রে বারা ইবন আযিব (রা) থেকে বর্ণনা
করেন ৷ তিনি বলেন, নবী করীম (সা) ছিলেন মধ্যম আকৃতির, তার ইে কাধের মধ্যে বেশ
ব্যবধান ছিল ৷ তার কেশ তার উভয় কানের লতি পর্যন্ত পৌছে থাকত ৷ আমি তাকে লাল বর্ণের
জোড়া পােশাকে দেখেছি ৷ তার চাইতে অধিকতর সুন্দর কিছু আমি কখনো দেখিনি ৷ এ
রিওয়ায়াতে য়ুসুফ ইবন আবু ইসহাক তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তার চুল পৌছত তার
উভয় র্কাধ পর্যন্ত ৷ ইমাম আহমদ ওয়াকী সুত্রে হযরত ধারা থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি
বলেন, লাল জোড়া পােশাকেরাসুলুল্লাহ্ (না)-এর চেয়ে সুদর্শন কোন বাবরি চুলবিশিষ্ট লোক
আমি দেখিনি ৷ তার মাথার চুল উভয় র্কাধ্ স্পর্শ করত আর তার উভয় কাধের মধ্যে বেশ
ব্যবধান ছিল ৷ তিনি দীর্ঘকায় নন, বেটেও নন ৷ আর ইমাম মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিযী ও
নাসাঈ ওকী বর্ণিত হাদীস থেকে এ সনদে তা রিওয়ড়ায়াত করেছেন ৷ ইমাম আহমদ আসওদ
ইবন আমির আবুইসহাক সুত্রে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, আমি হযরত বারা (রা)-কে বলতে
শুনেছি, আল্লাহর সৃষ্টিকুলে লাল জোড়া পােশাকে আমি আল্লাহর রাসুলের চাইতে অধিকতর
সুন্দর কাউকে দেখিনি ৷ আর তার বাবরি চুল তার উভয় র্কাধ স্পর্শ করত ৷ ইয়াহ্য়া ইবন আবু
বুকায়র বলেন, তীর উভয় কাধের কাছাকাছি পৌছত ৷ ইবন ইসহড়াক বলেন, আমি তাকে
বারংবার এ হাদীস রিওয়ায়াত করতে শুনেছি ৷ যখনই তিনি এ হাদীসটি বর্ণনা করতেন তখনই
তিনি হাসতেন ৷ আর বুখারী এই হাদীসটি ইসরইিল সুত্রে পরিচ্ছদ’ অধ্যায়ে, তিরমিযী
শামইিল’ অধ্যায়ে এবং নাসাঈ সাজসজ্জা’ অধ্যায়ে ৷