তখন ন্যায়পরায়ণ শাসক আবু বকর বিন আয়ুব্রবের পুত্র বাদশাহ্ আল আশরাফ মুসা অঢেল
অর্থের বিনিময়ে তা খরিদ করতে চইিলেন ৷ কিন্তু ব্যবসায়ীটি তা বিক্রি করতে অস্বীকার
করলেন ৷ ঘটনাক্রমে এর কিছুদিন পর তার মৃত্যু হলে তা উল্লেখিত বাদশাহ্র অধিকারে এসে
যায় ৷ তিনি তা গ্রহণ করে যথাযোগ্য মর্যাদার সংরক্ষণ করেন ৷ তারপর যখন তিনি তথাকার
কিল্লার পার্শে দারুল হাদীস আল আশরাফিয়া নির্মাণ করেন তখন তার একটি ভাণ্ডারে তা
ৎরক্ষাণর ব্যবস্থা করেন এবং মাসিক চল্লিশ দিরহাম ভাতা নির্ধারণ করে এ জন্যে স্বতন্ত্র
তত্তুাবধায়ক নিয়োগ করেন ৷ উল্লেখিত দারুল হাদীসে তা আজও বিদ্যমান রয়েছে ৷ তিরমিযী
শামাইলে মুহাম্মাদ ইবন রাফি প্রমুখ সুত্রে আনাস (বা) থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন,
রড়াসুলুল্লাহ্ ( সা )-এর একটি কৌটা ছিল, যা থেকে তিনি সুগন্ধি ব্যবহার করতেন ৷
নবী করীম (না)-এর পানপাত্রের বিবরণ
ইমাম আহমদ (র) ইয়াহ্য়া ইবন আদম সুত্রে আসিম থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন,,
আমি হযরত আনাস (রা)-এর কাছে নবী করীম (সা )-এর পানপাত্র দেখেছি, তা’ রুপার পাতে
মােড়ানাে ছিল ৷ হাফিয বায়হাকী আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মদ ইবন আবদুল্লাহ বৃখারী আসিম
আলু আহ্ওয়াল সুত্রে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, আমি হযরত আনাস ইবন মালিকের কাছে
নবী কবীম (না)-এর পেয়ালা দেখেছি, তা ফেটে যাওয়ার কারণে রুপার পাত দিয়ে তিনি তা
মুড়িয়ে নিয়েছিলেন ৷ তিনি বলেন, তা ছিল অত্যুৎকৃষ্ট কাঠের চওড়া ও উত্তম পানপাত্র ৷ হযরত
আনাস বলেন, এই পানপাত্রে আমি নবী করীম (না)-কে এত এত বারের অধিক পান
করিয়েছি ৷ তিনি বলেন, ইবন সীরীন বর্ণনা করেছেন, তাতে লোহার একটি কড়া সংযুক্ত ছিল ৷
পরবর্তীতে হযরত আনাস (রা) তাতে স্বর্ণ বা রৌপোর কড়া সংযুক্ত করতে চইিলেন ৷ তখন
আবু তালহা (রা) তাকে বললেন, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর তৈরী কোন বন্তুতে পরিবর্ত্য৷ সাধন
করে৷ না, তখন আনাস (রা ) তার ইচ্ছা পরিত্যাগ করলেন ৷ এ ছাড়া ইমাম আহমদ (র ) রাওহ
ইবন উবাদা সুত্রে হাজ্জাজ ইবন আনাস থেকে বর্ণনা করে বলেন, একবার আমরা হযরত
আমাদের কাছে ছিলাম ৷ তখন তিনি একটি পানপাত্র আনলেন, যাতে তিনটি লোহার পাত এবং
একটি লোহার আৎটা সংযুক্ত ছিল ৷ তিনি একটি কাল গিলাকের (আবরণের) ভিতর হতে তা
বের করলেন ৷ আর তা ছিল এক চতু ৎশের চেয়ে কম এবং এক অষ্টমাংশের চেয়ে বেশি ৷
এরপর আনাস ইবন মালিকের নির্দেশে তাতে পানি তবে আমাদের কাছে আনা হল ৷ তখন
আমরা তা থেকে পান করলাম এবং আমাদের মাথায় ও মুখে ঢেলে নিলাম এবং দরুদ
পড়লাম ৷ এটি ইমাম আহমদের একক বর্ণনা ৷
নবী করীম (না)-এর ব্যবহৃত সুরমাদানি
ইমাম আহমদ য়াযীদ সুত্রে ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন,
রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর একটি সুরমাদানি ছিল ৷ প্রতিদিন নিদ্র৷ যাওয়ার সময় তিনি তা থেকে
উভয় চোখে তিনবার করে সুরমা লাগাতেন ৷ ইমাম তিরমিযী ও ইবন মাজা ইয়াযীদ ইবন
হারুনের হাদীস থেকে তা বর্ণনা করেছেন ৷ আলী ইবন মাদীনী বলেন, আমি ইয়াহ্য়া ইবন
সায়ীদকে বলতে শুনেছি (একবার) আমি আব্বাস ইবন মনসুরকে বললাম, আপনি কি
ইকরিমা থেকে এই হাদীস শুনেছেন? তখন তিনি বললেন, আমাকে ইবন আবু ইয়াহয়া দাউদ
ইবন হুসায়ন সুত্রে৩ তার (ইকবিমার) থেকে আমাকে এই হাদীস বর্ণনা করেছেন ৷ (প্রন্থকার
বলেন) আমার কাছে এ সংব ৷দ পৌছোছ যে, মিশরে একটি দর্শনীয় স্থান রয়েছে, যেখানে নবী
করীম (না)-এর ব্যবহৃত স্মৃতি ৩চিহ্নজা তীয় বহু বস্তু রয়েছে ৷ পরবত্তীকািলে কয়েকজন মত্রী৩া
ৎরক্ষণের ব্যাপারে যতুবান হন ৷ তন্মধ্যে একটি সুরমাদা ৷নি রয়েছে ৷ কথিত আছে, তাতে তার
ব্যবহৃত চিরুনি প্রভৃতিও রয়েছে ৷ আল্লাহ্ই অধিকতর অবগত ৷
নবী করীম (না)-এর চাদর
হাফিয বায়হাকী (র) বলেন, খলীফাদের কাছে যে চাদর রয়েছে, সে সম্পর্কে মুহাম্মাদ
ইসহাক সুত্রে তাবুকের ঘটনায় আমাদেরকে বর্ণনা করা হয়েছে যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) আয়লা
বাসীদেবকে যখন নিরাপত্তা সনদ লিখে দেন, তখন (নিরাপত্তার প্রতীক রুপে) তাদেরকে তার
ব্যবহৃত একটি চাদরও দিয়েছিলেন ৷ পরবর্তীতে বনু আব্বাসের প্রথম খলীফা আবুল আব্বাস
আবদুল্লাহ ইবন মুহাম্মদ (সাফফাহ্)৩ তিনশ’ দীনারে তা খরিদ করে নেন ৷ বংশ পরম্পরায় বনু
আব্বাস এই চাদরের উত্তরাধিকারীরু হতে ৩থাকেন ৷ ঈদের দিন খলীফা তার উভয় র্কাধের উপর
দিয়ে ঝুলিয়ে তা পরতেন এবং তার এক হাতে নবী (সা) এর বলে কথিত লাঠি ধারণ
করতেন ৷ অতঃপর চোখ ধাধানাে ও সমীহ উদ্রেককারী ধৈর্য ও গান্তীর্যের সাথে বের হতেন ৷
আর তারা জুম আ ও ঈদের দিনগুলিতে কাল বস্ত্র পরতেন ৷ আর এটা তারা করতেন গোত্রবর্ণ
নির্বিশেষে সকল আবববাসীর মহান নে৩ তা সাব্যিদুল মুবসালীনের অনুকরণে ৷ আর তাদের এ
কাজের সমর্থন পাওয়া যায় হাদীস শাস্তেব দুই বরেণ্য ইমাম বুখারী ও মুসলিমের হাদীসে, যা
মালিক আয় যুহ্রী সুত্রে আনাস (রা) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) শিরস্ত্রাণ মাথায়
মক্কায় প্রবেশ করেন ৷ অন্য রিওয়ায়াতে আছে, এ সময়ও তার মাথায় কাল পাগড়ি ছিল ৷ আর
একটি রিওয়ায়াতে আছে, তিনি তার পাগড়ির শামলা উভয় কাধের মধ্যে ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন ৷
বুখারী মুসাদদাদ সুত্রে আবু বুরদা থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, (একবার) হযরত
আইশা (রা) আমাদেরকে একটি চাদর ও মোটা লুঙ্গি বের করে দিয়ে বললেন, এই দুটি
কাপড় পবিহিত অবস্থায়ই নবী করীম (না)-এর রুহ কবঘৃ করা হয়েছিল ৷ আর যুহ্রী বর্ণিত
হাদীসে হযরত ৩আইশা (রা) ও ইবন আব্বাসের বরাতে বুখারী রিওয়ায়াত করেন ৷ তারা দুজন
বলেন রাসুলুল্লাহ্ (সা) অন্তিম মুহুর্তে বারবার একটি চাদর দিয়ে তার মুখমণ্ডল আবৃত
করছিলেন ৷ আর যখন দমবন্ধ হয়ে আসতো তখন চাদর মুখ থেকে সরিয়ে বলছিলেন য়াহুদী
ও নাসারাদের উপর আল্লাহর লা নত হোক, তারা তাদের নবীদের কবরসমুহকে মসজিদ
বানিয়েছে ৷ তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে স৩ র্ক করে তিনি এ কথা বলছিলেন ৷ আমি বলি, এই
তিনটি পরিচ্ছেদে বর্ণিত বন্তুগুলি শেষ পর্যন্ত কি হয়েছিল, সে সম্পর্কে কিছু জানা যায় না ৷
ইতিপুর্বেই বলা হয়েছে যে, করবে তার নিচে একটি লাল চাদর বিছিয়ে দেয়৷ হয়েছিল, যাতে
তিনি জীবদ্দশায় নামায পড়তে তন ৷ এখন যদি আমরা তার জীবদ্দশায় ব্যবহৃত সকল পোশাক
পরিধেয়ের বিশদ বিবরণ উল্লেখ কবি৩ তাহলে পবিচ্ছেদটি দীর্ঘ হয়ে যাবে ৷ আল্লাহ্ চাইলে
কিতাবুল আহকাম আল-কাবীর’ এর পোশাক পবিচ্ছদ অধ্যায়ই এর উপযুক্ত স্থান ৷ আল্লাহ্
চাইলে তো তা সেখানেই আলোচনা করব ৷ আর তার উপরই আমাদের ভরসা ৷