(না)-এর দেহের সুঘ্রাণ এবং তার হাতের কােমলতার ব্যাপারে হযরত আনাস থেকে মুতামির
ইবন সুলায়মান ও আলী ইবন আসিম এভাবেই হাদীসখানি রিওয়ায়াত করেছেন ৷ আর
হযরত আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত যুবায়দীর হাদীসে রয়েছে যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) সম্পুর্ণ পায়ের
তালু দিয়ে ভুমি মড়োতেন, তার পায়ের তলায় কোন ভুমি স্পর্শহীন অংশ ছিল না ৷ অবশ্য এর
বিপরীত বর্ণনাও রয়েছে যা অচিরেই আসছে ৷ ইয়াষীদ ইবন হারুন আবদৃল্লাহ্ ইবন ইয়াষীদ
মায়মুনা ইবন কারদাম সুত্রে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ্ (না)-কে মক্কায়
দেখেছি ৷ তখন তিনি তার উটনীতে সওয়ার ছিলেন ৷ আর আমি আমার আব্বার সাথে ছিলাম ৷
আর রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর হাতে লিপিকারের দোররার ন্যায় দােররা ছিল ৷ এ সময় আমার
পিতা তীর নিকটবর্তী হলেন এবং তার সামনে সামনে থাকতে লাগলেন, তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা)
তাকে ঐ কাজে বহাল রাখলেন ৷ মায়মুনা বলেন, আর আমি (এ সময় দেখা) নবী (না)-এর
সমস্ত আঙ্গুলের তুলনায় তার ধ্ পায়ের দ্বিতীয় আঙ্গুলটির দৈর্যোর কথা আজও ভুলিনি ৷ ইয়াষীদ
ইবন হারুন সুত্রে ইমাম আহমদ সবিস্তারে হাদীসখানি বর্ণনা করেছেন ৷ আর ঐ সুত্রে আবু
দাউদ আত্শিকভাবে তা বর্ণনা করেছেন; তন্ধ্রপ ভিন্ন সুত্রে ইবন মাজাও অন্য হাদীসখানি
রিওয়ায়াত করেছেন ৷ আল্লাহ্ই সম্যক অবগত ৷ বায়হাকী আলী ইবন আহমদ জাবির
ইবন সামুরা (রা) থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর পায়ের একটি আঙ্গুল অর্থাৎ
কনিষ্ঠাঙ্গুলিটি বেশ চোখে পড়ত ৷ এটা অবশ্য গরীব পর্যায়ের বর্ণনা ৷
তীর সুঠাম দেহাবয়ব ও সুবাস
সহীহ্ বুখারীতে হযরত আনাস থেকে বর্ণিত ৷ রাবীআর-হাদীস সংগ্রহে রয়েছে যে,
রাসুলুল্লাহ্ (মা) ছিলেন মধ্যম আকৃতির (অতি) লম্বাও না, বেটেও না ৷ হযরত বারা ইবন
আযিব এর বরাতে আবু ইসহাক বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) সুন্দরতম মুখাবয়ব এবং সুঠামতম
দেহাবয়বের অধিকারী ছিলেন ৷ (অতি) লম্বাও না, আবার বেটেও না ৷ বুখারী ও মুসলিমও
হাদীসখানি রিওয়ায়াত করেছেন ৷ নড়াফি ইবন জুবায়র হযরত আলী (রা) থেকে বর্ণনা করেন
যে , তিনি বলেছেন ষ্ক রাসুলুল্লাহ্ (সা অতি) লম্বাও ছিলেন না, বেটেও না, তার আগে বা পরে
তার মত আর কাউকেই আমি দেখিনি ৷ সাঈদ ইবন মনসুর হযরত আলী (রা) থেকে
বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) লম্বাও ছিলেন না, বেটেও না, তবে লম্বার
কাছাকাছি ছিলেন ৷ তার খান ছিল, মুক্তার ন্যায় ৷ এছাড়া সাঈদ রাওহ হযরত আলী থেকে
বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) অতি লম্বা ছিলেন না, তবে তিনি মধ্যম
আকৃতির চেয়ে একটু লম্বা ছিলেন, লোকদের সমাবেশে থাকলে তাদেরকে ছাপিয়ে থাকতেন,
তার মুখমণ্ডলের ঘাম ছিল মুক্তার ন্যায় ৷ যুবায়দী আবু হুরায়রা (রা ) থেকে বর্ণনা
করেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) মধ্যম আকৃতির ছিলেন, তবে কিছুটা লম্বাটে ৷ আর তিনি গোটা দেহে
সামনে তাকাতেন এবং গোটা দেহে পেছনের দিকে তাকাতেন ৷ ১ তার আগে ও পরে তার মত
কাউকে আমি দেখিনি ৷ বুখারী শরীফে আনাস (রা) থেকে বর্ণিত, হাম্মাদ ইবন যায়দের বর্ণিত
হাদীস থেকে সাব্যস্ত হয়েছে, তিনি (আনাস) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর হাতের তালুর
চাইতে কোমল কোন রেশমী কাপড় বা অন্য কোন কিছু কখনও স্পর্শ করিনি এবং তার দেহের
১ অর্থাৎ আড় চোখে তাকাতেন না ৷ জালালাবাদী (সম্পাদক)
ঘ্রড়াণের চাইতে অধিকতর সুগন্ধময় কােনঘ্রাণ শুকিনি ৷ মুসলিম তা রিওয়ায়াত করেছেন
আনাস (রা ) থেকে ৷ এছাড়া ইমাম মুসলিমও হাম্মাদ ইবন সালামা ও সুলায়মান ইবন মুর্গীরা
আনাস (রা) থেকে বর্ণনা করেছেন ৷ তিনি (আনাস) বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) ছিলেন
উজ্জ্বল ফর্স৷ বর্ণের অধিকারী ৷ তার ঘাম যেন মুক্তার ৷ তিনি যখন হীটতেন, সামনে ঝুকে
হীটতেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর হাতের তালুর চেয়ে কোমল কোন রেশমী কাপড় আমি স্পর্শ
করিনি এবং তার দেহের থ্রাণের চেয়ে অধিকতর সুগন্ধযুক্ত কোন মিশৃক বা আম্বরও আমি
শুকিনি ৷ ইবন আবু আদী হযরত আনাস সুত্রে ইমাম আহমদ বর্ণনা করেন যে, তিনি
(আনাস) বলেছেন, আমি কখনও রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর হাতের তালুর চেয়ে কোন কোমল
রেশমী কাপড় বা অন্য কিছু স্পর্শ করিনি এবং রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর দেহের ঘ্রড়াণের চেয়ে উত্তম
কোন ঘ্রাণ শুকিনি ৷ এই সনদটি ছুলাহী১ এবং বুখারী মুসলিমের শর্তোত্তীর্ণ; তবে সিহা সিত্তার
কোন সঙ্কলক এই সুত্রে হাদীসখানি উল্লেখ করেননি ৷ ইয়াকুব ইবন সুফিয়ান আমর ইবন
হাম্মাদ ইবন তালহা সুত্রে আর বায়হাকী আহমদ ইবন হাযিম ইবন আবু উরওয়া জাবির
ইবন সামুরা সুত্রে বর্ণনা করেন ৷ তিনি (জাবির) বলেন, আমি রাসুলুল্পাহ্ (না)-এর সাথে প্রথম
ওয়াক্তের সালাত আদায় করলাম ৷ তারপর তিনি তার ত্রী-পরিজনদের উদ্দেশেব্র বের হলেন,
তখন আমিও তার সাথে বের হলাম ৷ তখন কয়েকজন বালক তার মুখোমুখি হলো তিনি
তাদের একেকজনের গণ্ডদ্বয়ে হাত বৃলিয়ে দিতে লাগলেন ৷ জাবির (রা) বলেন, আর তিনি যখন
আমার গণ্ডে হাত বুলালেন তখন আমি তার অপুর্ব শীতলতা ও সুঘ্রাণ অনুভব করলাম, তিনি
যেন মাত্র সুগন্ধি বিক্রেতার পাত্র থেকে তা বের করেছেন ৷ আমর ইবন হাম্মাদ সুত্রে মুসলিমও
তা ঐ সনদে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷ মুহাম্মাদ ইবন জাফর সুত্রে হাকাম থেকে ইমাম
আহমদ বর্ণনা করেন ৷ (হাকাম বলেন) আমি আবু জুহায়ফাকে বলতে শুনেছি, দ্বিপ্রহরকালে
রাসুলুল্লাহ্ (সা) বাতহার (কঙ্করময় ভুখণ্ড) উদ্দেশ্যে বের হলেন, এরপর তিনি উয়ু করে যুহরের
নামায (কসর করে) দৃরাকাআত পড়লেন ৷ এ সময় তার সামনে একটি ছড়ি ছিল ৷ এ
রিওয়ায়াতে আওন তার পিতা থেকে অতিরিক্ত বর্ণনা দিয়ে বলেন-এই ছড়িটির সামনে দিয়ে
নারী ও মধ্যে অতিক্রম করছিল ৷ এই হাদীসে হাজ্জাজ বলেন, এরপর লোকেরা উঠে দাড়িয়ে
তার হাত ধরতে লাগল এবং সেই হাত তাদের মুখমণ্ডলে বুলড়াতে লাগল ৷ তিনি (রাবী) বলেন,
তখন আমি তার হাত ধরে তা আমার মুখমণ্ডলে রাখলড়াম , তখন আমার মনে হল তা বরফের
চেয়ে শীতল এবং মিশকের চেয়ে সুঘ্রাণময় ৷ হাসান ইবন মানসুর সুত্রে শুবা থেকে ইমাম
বুখারীও তা রিওয়ায়াত করেছেন এবং হুবহু তার অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷
আর মুল হাদীসখানি সহীহায়নে এভাবেই বিদ্যমান রয়েছে ৷ আর ইমাম আহমদ ইয়াযীদ
ইবন হারুন ইয়াযীদ ইবন আসওয়াদ সুত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, রাসুলুল্পাহ্ (সা)
মিনায় সালাত আদায় করলেন, তারপর যখন ঘুরে বললেন তখন লোকদের পিছনে দুই ব্যক্তিকে
পৃথক দেখতে পেলেন ৷ তখন তিনি তাদের দুজনকে কাছে ডাকলেন ৷ তখন কম্পনরত অবস্থায়
তাদেরকে উপ ত করা হল ৷ তিনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, কিসে তােমাদেরকে জামাতে
নামায পড়া থেকে বিরত রাখল ? তখন তারা দুজন বললেন, ইয়া রাসুলাল্পাহ্! আমরা
আমাদের র্তাবুতে নামায আদায় করেছি ৷ তখন তিনি বললেন, তাহলে তোমরা এমন করো না,
তোমাদের কেউ যদি স্বস্থানে নামায পড়ে নেয় এরপর ইমামের সাথে নামায পায় তাহলে যে
১ অর্থাৎ বর্ণনাকারী ও রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর মাত্র মাঝে তিনটি সুত্রীয় ধাপ যে সনদের ৷
যেন তার সাথে তা পড়ে নেয় ৷ কেননা, তা তার জন্য নফল রুপে গণ্য হবে ৷ রাবী বলেন,
তখন তাদের একজন বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ্ ! আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন ৷ তখন তিনি
তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করলেন ৷ তিনি বলেন, এ সময় লোকেরা রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর কাছে
উঠে গেল এবং আমিও তাদের সাথে উঠলাম ৷ আর তখন আমি সকলের চেয়ে শক্ত সমর্থ
যুবক ৷ তিনি বলেন, তড়িৎ আমি (সহজেই) লোকদের ভিড় ঠেলে ঠেলে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর
কাছে পৌছে গেলাম ৷ তারপর তার হাত ধরে তা আমার মুখমণ্ডলে অথবা বুকে রাখলাম ৷ রাবী
বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর হাতের চেয়ে শীতল ও সুঘ্রাণযুক্ত কিছু আমি পাইনি ৷ আর সে
সময় তিনি মসজিদে খায়ফে ছিলেন ৷ তারপর তিনি তা আসওয়াদ ইবন আমির ও আবুনৃ নযর
সুত্রেও ইয়াযীদ ইবন আসওয়াদের পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর
সাথে ফজরের নামায পড়েছেন ৷ তারপর তিনি হাদীসথানি উল্লেখ করে বলেন, এরপর
লোকজন তার হাত ধরে তা তাদের মুখমণ্ডলে বুলাতে লাগল ৷ তিনি বলেন, তখন আমিও তার
পবিত্র হাত ধরে আমার মুখমণ্ডলে বুলিয়ে নিলাম ৷ আমি তা বরফের চেয়ে শীতল এবং
মেশকের চেয়ে সুগন্ধময় পেলাম ৷ আর আবু দাউদ শু’বার সুত্রে এবং তিরমিযী ও নাসাঈ
হুশায়ম সুত্রে তা ঐ সনদে রিওয়ায়াত করেছেন ৷ তিরমিযী বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ্
স্তরের ৷
ইমাম আহমদ আবু নুআয়ম আবদুল জাব্বার ইবন ওয়ইিল সুত্রে বর্ণনা করেন ৷ তিনি
বলেন, আমার স্বজনরা আমার পিতার বরাতে আমাকে বর্ণনা করেছেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এৱ
কাছে এক বালতি পানি আনা হল, তখন তিনি তা থেকে পান করলেন, তারপর বালতিতে
কুলি করলেন, পরে সেই বালতির পানি কুয়ােতে ঢেলে দেয়া হল, অথবা (রাবীর সন্দেহ) তিনি
বালতি থেকে পান করলেন ৷ তারপর তা কুয়ােতে ঢেলে দিলেন, তখন তা থেকে মিশকের
সুঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়া ৷ এ হাদীসথানি বায়হাকী ইয়াকুব ইবন সুফিয়ান সুত্রে বর্ণনা করেছেন ৷
ইমাম আহমদ হাশিম আনাস (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ্ (না)
যখন ফজরের নামায পড়তেন তখন মদীনায় খাদিমরা তাদের পাত্র সমুহে পানি নিয়ে হাযির
হত ৷ নিয়ে আসা সকল পাত্রেই তিনি হাত চুবাতেন, কখনও যা তারা শীতের সকালে হাবিব
হত, তখন তিনি তা’ তার পবিত্র হাতে ছুয়ে দিতেন ৷ মুসলিম আবুনৃ নযর থেকে ঐ সনদে তা
রিওয়ায়াত করেছেন ৷ ইমাম আহমদ হুজায়ন ইবনুল মুছান্না সুত্রে আনাস (রা) থেকে
বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) উম্মে সুলায়মের গৃহে প্রবেশ করতেন এবং তার
বিছানায় ঘুমাতেন, আর তখন উম্মে সুলায়ম সেখানে থাকতেন না ৷ রাবী বলেন, একদিন যখন
তিনি এসে তার বিছানায় ঘুমিয়ে পড়লেন তখন উম্মে সুলড়ায়ম সেখানে আগমন করলেন ৷ তখন
তাকে বলা হল এই যে আল্লাহ্র রাসুল তোমার ঘরে তোমার বিছানায় ঘুমিয়ে আছেন ৷ রাবী
বলেন, তিনি তখন এসে দেখলেন, তিনি খামার ফলে তার ঘাম বিছানায় উপরের একটি
চামড়ার টুকরার উপর জমা হয়ে আছে ৷ তখন উষ্মে সুলড়ায়ম তার সুগন্ধির কৌটা খুললেন এবং
সেই ঘাম শুষে নিয়ে তা নিংড়ে তার শিশিগুলিতে রাখতে লাগলেন ৷ তখন নবী করীম (না)
ঘুম থেকে জেগে বললেন, ওহে উম্মে সুলায়ম, তুমি কী করছ? তখন তিনি বললেন, ইয়া
রাসুলাল্লাহ্! আমরা আমাদের শিশুদের জন্য তার বরকত প্রত্যাশা করি ৷ তিনি বললেন, তুমি
(তাহলে)ন্ঠিকই করেছ ৷ মুসলিম মুহাম্মাদ ইবন রাফি সুত্রে ঐ সনদে তা বর্ণনা করোছা ৷
আর ইমামশ্র হ্ামদ হাশিম ইবন কাসিম সুত্রে আনাস থেকে বর্ণনা করে বলেন :
একবার রাসুলুলুন্হ্ (সা ) আমাদের কাছে আসলেন, এরপর দ্বিপ্ৰহর কালে সামান্য ঘুমিয়ে
বিশ্রাম নিলেন ৷ এ সময় তিনি থেমে গেলেন; তখন আমার আশা একটি বো৩ ল নিয়ে এসে
তাতে ঘাম সংগ্রহ করতে লাগলেন ৷ এমন সময় রাসুলুল্লাহ্ (সা) জেগে গেলেন এবং বললেন
হে উম্মে সুলায়ম , এ তুমি কী করছ? তিনি বললেন, আপনার নাম আমাদের সুগন্ধিতে মিশিয়ে
নিচ্ছি, তা হল সর্বোত্তম সুগন্ধি ৷ মুসলিম ইমাম আহমদ ভিন্ন ভিন্ন সুত্রে হযরত আনাস
থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) উম্মে সুলায়মের গৃহে দুপুরে বিশ্রাম নিতেন ৷
আর তার শরীর থেকে প্রচুর ঘাম ঝরত ৷ তাই উম্মে সুলায়ম৩ তার জন্য একটি চামড়ার
বিছানার ব্যবস্থা করলেন, যাতে তিনি দিবা বিশ্রাম করতেন ৷ আর উম্মে সুলায়ম তার পদদ্বয়ের
নিচে কোন কিছু একটা দিয়ে রাখতেন, যা তার ঘাম শুয়ে নিতে এবং৩ তিনি তা সংরক্ষণের
ব্যবস্থা করতেন ৷ এ সময় একদিন নবী আলায়হিস সালাম বললেন, হে উম্মে সুলায়ম, এটা
কী? তিনি বললেন, ইয৷ রাসুলাল্লাহ্! আপনার ঘাম আমার সুগন্ধিতে মেশাচ্ছি ৷ বর্ণনড়াকারী
বলেন, তখন তিনি তার জন্য উত্তমরুপে দু আ করলেন এই সুত্রে এটি ইমাম আহমদের একক
বর্ণনা ৷ এ ছ৷ ৷ড়৷ ইমাম আহমদ মুহাম্মদ ইবন আবদুল্লাহ সুত্রে হযরত আনাস থেকে বর্ণনা
করেন যে, তিনি বললেন, নবী করীম (সা) যখন ঘুমাতেন তখন বেশ ঘামাতে ন ৷ তখন তিনি
(উম্মে সুলায়ম) একখণ্ড তৃলার দ্বারা শুষে তা একটি শিশিতে সংরক্ষণ করতেন এবং পরে তা
তার মিশকের সাথে মেশাতেন ৷ এই হাদীসের সনদ বুখারী ও মুসলিমের শতে র্টত্তীর্ণ এবং
ছুলাহী অর্থাৎ বর্ণনাকারী রাবী ও রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর মাঝে মাত্র তিনটি স্তরের পার্থক্য
বিদ্যমান ৷ কিন্তু তাদের উভয়ে কোন একজন তা রিওয়ায়াত করেননি ৷ বায়হাকী মুহাম্মাদ
ইবন আবদুল্লাহ আর ইমাম মুসলিম আবু বকর ইবন শায়বা সুত্রে হযরত আনাস থেকে
বর্ণনা করেন৷ আর তিনি উম্মে সুলায়ম থেকে এই মর্মে যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) তার ঘরে
আসতেন এবং তার কাছে দিবা বিশ্রাম করতে ন ৷ এ সময় তিনি তাকে একটি চামড়ার মাদুর
বিছিয়ে দিতেন আর তিনি তাতে বিশ্রাম করতেন ৷ তিনি প্রচুর ঘামতে ,ন উম্মে সুলায়ম তার
দেহ নি ংসৃত এই নাম সংগ্রহ করতেন এবৎ৩ ৷ সুগন্ধিতে মেশাতেন এবং বোতলে সংরক্ষণ
করতেন ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, হে উম্ম সুলায়ম , এসব কী? জবাবে তিনি বললেন,
আপনার ঘাম , আমি আমার সুগন্ধিতে মিশিয়ে নিচ্ছি-এটা মুসলিমের পাঠ ৷
আবু ইয়ালা মাউসিলী তার মুসনাদ’ গ্রন্থে বুসর হযরত আবু হুরায়রা সুত্রে বর্ণনা
করেন যে, তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা)এর কাছে এক ব্যক্তি এসে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ্া
আমি আমার মেয়ের বিবাহ দিয়েছিষ্ এখন আমার আকাগ্রা আপনি কিছু একটা দিয়ে
আমাকে সাহায্য করবেন ৷ তিনি বললেন, এখনতে ৷ আমার কাছে কিছুই নেই, তবে
আপামীকাল ভুমি প্রশস্তমুখ একটি বোতল এবং একটি গাছের ডাল নিয়ে আমার কাছে আসবে,
আর তোমার ও আমার মাঝের সংকেত হল যে, তুমি দরজার প্রান্তে টোক৷ দেবে ৷ বর্ণনাকারী
বলেন কথহ্বমত সেই ব্যক্তি একটি প্রশস্তমুখ বোতল এবং একটি গাছের ডাল নিয়ে আসল ৷
বর্ণনাকারী বালন তখন তিনি তার বাহুদ্বয় থেকে নাম নিং ড়াতে লাগলেন, এমনকি বো৩ লটি
পুর্ণ হয়ে গেল ৷ তিনি বললেন, এটি নিয়ে যাও এবং৫ তামার মেয়েকে বলবে, এই কাঠিটি
বোতলে চ্নিয়ে তা যেন সৃগন্ধিরুপে ব্যবহার করে ৷ বর্ণনাকারী বলেন, সেই মেয়েটি যখন তার
সুগন্ধি মাখতাে তখন গোটা মদীনাবাসী তার সুবাস পেতেন ৷ তখন থেকে তারা এ বাড়ির
নামকরণ করলো সুগন্ধিওয়ালাদের বাড়ি বলে ৷৩ তবে হাদীসখানি অতি বিরল প্রকৃতির ৷
হাফিয আবু বকর আলু বায্যার মুহাম্মাদ ইবন হিশাম আনাস সুত্রে বর্ণনা করেন যে,
তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) যখন মদীনায় কোন পথ দিয়ে হেটে যেতেন তখন লোকেরা
তার থেকে সুগন্ধির ঘ্রাণ পেত, এবং বলাবলি করতে ন রাসুলুল্লাহ্ (না) এ পথে গমন
করেছেন ৷ তারপর বর্ণনাকারী বলেন, হযরত আনাসের বরাতে মু আয় ইবন হিশামও বর্ণনা
করেছেন যে, দেহের সুবাসের দ্বারা রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর অবস্থান বোঝা যেত ৷ রাসুলুল্লাহ্ (মা)
ছিলেন উত্তম ৷ তার দেহের ঘ্রাণও ছিল উত্তম, তা সত্বেও তিনি সুগন্ধি ভালবাসা তন ৷ ইমাম
আহমদ আবু উবায়দা আনাস সুত্রে বর্ণনা করেন যে , নবী করীম (সা ) বলেন :
নারী ও সুগন্ধিকে আমার প্রিয় করা হয়েছে-আর নামাযে আমার চোখের শীতলতা রাখা
হয়েছে ৷ আর আবুল মুনযির আনাস সুত্রে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ্
(সা) ইরশাদ করেনং :
পার্থিব কোন সামগ্রীর মাঝে নারী ও সুগন্ধিকে আমার প্রিয় করে দেয়৷ হয়েছে, আর
আমার চোখের শীত লতা রাখা হয়েছে সালাতে ৷ নাসাঈও এ পাঠেই ভিন্ন সুত্রে আনাস থেকে এ
হাদীসখানা রিওয়ায়াত করেছেন ৷ অবশ্য হাদীসখানি অন্য একটি সুত্রে ও ঈষৎ ভিন্ন পাঠে বর্ণিত
হয়েছে ৷ তবে এ পাঠে হাদীসখানি সুরক্ষিত নয়; কেননা, সালাত কোন পার্থিব ভোগ সামগ্রী
নয়; বরং তা হল পারলৌকিক অন্যতম গুরুত্বপুর্ণ বিষয় ৷ আল্লাহ্ই অধিক অবগত ৷
নবী (না)-এর স্কন্ধদ্বঘ্নের মধ্যবর্তী নুবুওয়াত-মোহর-এর বিবরণ
বুখারী মুহাম্মাদ ইবন উবায়দুল্পাহ্ আলজাদ সুত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বল্যেছন,
আমি সাইব ইবন ইয়াযীদকে বলতে শুনেছি (একবার) আমার খালা আমাকে রাসুলুল্লাহ্
(না)-এর কাছে নিয়ে গিয়ে বললেন ইয়৷ রাসুলাল্লাহ্! আমার (এই) বোনপোটি ব্যাথাক্রান্ত ৷
তনন তিনি আমার মাথায় হাত ৩বুলিয়ে আমার জন্যে বরকভ্রু৩ র দৃআ করলেন ৷ এরপর তিনি
উয়ু করলেন, তখন আমি তার উয়ুর পানি থেকে পান করলাম এবং তার পেছনে দাড়ালাম ৷
তখন আমি তার দুই স্কন্ধের মাঝামাঝি (নব বধুর বাসর শয্যার) গুটলির ন্যায় মোহর দেখতে
পেলাম ৷ এভাবেই মুসলিম কুতায়বা সুত্রে হাতিম ইবন ইসমাঈল থেকে ঐ সনদে তা
বর্ণনা করেছেন ৷ তারপর বুখারী বলেন, শব্দটি অর্থাৎ ঘোড়ার
কপালের র্চাদ থেকে গৃহীত ৷ ইবরাহীম ইবন হাময৷ বলেন, স্থলে ,
বলেছেন ৷ আবু আ বদুল্লাহ্ বলেন, ১)এ ৷ যা’ এর পুর্বে র৷ বিশুদ্ধ১ ৷ মুসলিম আবুবক্র ইর্বৃন
আবু শায়ব৷ জাবির ইবন সামুৱ৷ (রা) সুত্রে বলেন যে, তিনি বলেছেন, রাসুলুল্পাহ্ (সা) এর
মাথার চুল ও দাড়ির অগ্রভ ৷গে ঈষৎ পাক ধরেছিল ৷ তিনি যখন তেল যেখে তা আচড়ে
১ অন্য রিওয়ায়াতে এে ১ ৷ ! ১ ) শব্দটি রয়েছে, বাক্যটি দ্বারা গম্বুজ সদৃশ ঘর বঝানাে হয়েছে ৷ যা কাপড়
(গিলাফ) দ্বারা আচ্ছাদিত থাকে, যার বড় বড় বোতাম সদৃশ গুটলি থাকে ৷