আবু দাউদ আবদুল আযীয ইবন আবু রাওওয়াদ ইবন উমর সুত্রে বর্ণনা করেন যে,
রাসুলুল্লাহ্ (সা) তার বাম “হাতে আৎটি পরিধান করতেন এবং তার মণি থাকত তার হাতের
তালুর ভিতরের দিকে ৷ আবু দাউদ বলেন, আবু ইসহাক ও উসামা ইবন যায়দ নাফি থেকে এ
হাদীসটি বর্ণনা করেছেন তার ডান হাতে’ ৷ আর হান্নড়াদ সুত্রে নাফি থেকে বর্ণিত আছে যে,
ইবন উমর (রা) তার বাম হাতে আংঢি পরতেন ৷ এরপর ইমাম আবু দাউদ আবদুল্লাহ ইবন
সাঈদ সুত্রে ইবন ইসহাক থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, আমি সাল্ত ইবন আবদুল্লাহ্ ইবন
নাওফল ইবন আবদুল মুত্তালিবকে তার ডান হাতের কনিষ্ঠাঙ্গুলিতে আৎটি পরতে দেখে জিজ্ঞেস
করলাম, এটা কী? তিনি বললেন, আমি ইবন আব্বাস (রা)-কে এভাবে তার আংটি পরতে
দেখেছি ৷ তিনি তার আৎটির মণি হাতের পিঠের দিকে করে রাখতেন ৷ সাল্ত বলেন, আর
ইবন আব্বাস সম্পর্কে এরুপই ধারণা করা যায় যে, তার স্মরণ ছিল যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা)
এভাবেই তার আত্টি পরিধান করতেন ৷ মুহাম্মাদ ইবন ইসহাক বর্ণিত হাদীস থেকে তিরমিযী
এভাবেই তা বর্ণনা করেছেন ৷ তারপর মুহাম্মাদ ইবন ইসমাঈল অর্থাৎ ইমাম বুখারী (র)
বলেন, সাল্ত সুত্রে বর্ণিত ইবন ইসহাকের হাদীসখানি হাসান (উত্তম) ণ্শ্রর্ণীভুক্ত ৷ আর
তিরমিযী তার শামাইলে হযরত আনাস, জাবির ও আবদুল্লাহ ইবন জাফর সুত্রে রিওয়ায়াত
করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) ডান হাতে আত্টি পরতেন ৷
বুখারী মুহাম্মদ ইবন আবদুল্লাহ্ আনসারী সুত্রে আনাস ইবন মালিক (রা) থেকে বর্ণনা
করেন, হযরত আবু বকর যখন খলীফা নির্বাচিত হলেন, তখন তার পক্ষ থেকে ফরমান
ইত্যাদি লেখা হল (এবং তাতে সীলমােহর করা হয়) ৷ আর তার আংটির নকশা (খােদইিকৃত)
ছিল তিন ছত্রে াপ্১ণ্ এক ছত্র, ৰু)টু, এক ছত্র, এবং ৰুএপু৷ এক ছত্র ৷ আবু আবদুল্লাহ্
বলেন, আল আনসারী সুত্রে আনাস ইবন মালিক (রা) থােক আবু আহমদ অতিরিক্ত (এই
অংশ) বর্ণনা করেছেন যে, নবী করীম (না)-এর আত্টি ছিল প্রথমে তার নিজের হাতে, তারপর
হযরত আবু বকবের হাতে, তারপর হযরত উমরের হাতে ৷ বর্ণনাকারী বলেন, এরপর যখন
হযরত উছমড়ান খলীফা হলেন ৷ তখন তিনি একদিন আরীস কুয়ার’ পাড়ে বসে আত্টিটি
নাড়াচাড়া করতে লাগলেন, হঠাৎ তা তার হাত থেকে কুয়াতে পড়ে গেল ৷ বর্ণনাকারী বলেন,
এরপর আমরা তিনদিন পর্যন্ত পালাক্রমে অবস্থান করলাম ৷ তারপর কুয়া ঘেচা হল, কিন্তু তিনি
আত্টিটি পেলেন না ৷ আর কুতায়বা সুত্রে ইবন উমর থেকে তিরমিযী শামাইলে যে হাদীস
রিওয়ায়াত করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) রুপা দিয়ে একটি আৎটি বানিয়েছিলেন, আর তিনি
তা সীলমেড়াহররুপে ব্যবহার করতেন, তা (সাধারণত) পরতেন না-এটি অত্যন্ত (বিরল) বর্ণনা ৷
আর সুনান গ্রন্থে হযরত আনাস (রা) থেকে যুহরীর বরাতে ইবন জুরায়জের হাদীস বিদ্যমান ৷
আনাস (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (না) যখন শৌচাগারে প্রবেশ করতেন তখন তার হাতের
আৎটিটি খুলে রাখতেন ৷
নবী (না)-এর তরবাবির আলোচনা
ইমাম আহমদ, শুরায়হ ইবন আব্বাস সুত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন : নবী
(সা) তার তরবারি যুলফাকারকে বদবের দিন বক্তিগত গনীমত রুপে পেয়েছিলেন ৷ উহুদ যুদ্ধের
দিন তিনি যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তা ছিল এ তরবারি সম্পর্কিত ৷ তিনি বলেন-আমি আমার
তরবারি যুলফাকারে ফাটল দেখতে পেয়েছি ৷ আমি তাকে তোমাদের মাঝে সৃষ্ট ভাঙ্গন রুপে
ব্যাখ্যা করেছি ৷ আমি আরো দেখেছি, আমি এক গোত্র প্রধানকে আমার পশ্চাতে আরোহণ
করিয়েছি ৷ আমি তার ব্যাখ্যা করেছি শত্রু বাহিনীর অধিনায়করুপে ৷ আর দেখেছি আমি রয়েছি
এক সুরক্ষিত বর্মের মধ্যে ৷ তখন আমি তার ব্যাখ্যা করেছি মদীনা রুপে ৷ এ ছাড়া একটি
গরুকে জবইি হতে দেখেছি, আল্লাহর কলম, গরু (জবাই অর্থাৎ শাহাদাত) উত্তম, আল্লাহর
শপথ, গরু উত্তম ৷ আর রাসুলুল্লাহ্ (না) যা বলেছিলেন রাস্তবেও তাই ঘটেছিল ৷ তিরমিযী ও
ইবন মাজা এ (হাদীসটি) আবুয্ যিনাদ থেকে রিওয়ায়াত করেছেন ৷ সুনান প্রণেতাগণ উল্লেখ
করেছেন যে, জনৈক কথককে বলতে শোনা গিয়েছে, তরবারি বলতে জুলফাকার ভিন্ন আর
কোনটি নয়; আর বীরপুরুষ বলতে আলী ভিন্ন আর কেউ নন ৷ তিরমিযী হ্রদ ইবন আবদুল্লাহ্
ইবন সাঈদ-মাষীদা ইবন জাবির (রা) সুত্রে বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ্ (না) যখন মক্কায়
(বিজয়কালে ) প্রবেশ করেন তখন তার তরবারি স্বর্ণ ও রৌপ্য খচিত ছিল ৷ তারপর তিনি
(তিরমিযী) মন্তব্য করেছেন, এটি গরীব পর্যায়ের হাদীস ৷ ইমাম তিরমিযী তার শামইিলে
মুহাম্মাদ ইবন বাশৃশার সাঈদ ইবন আবুল হাসান থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন,
রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর তরবারির বটি ছিল রুপা খচিত ৷ এছাড়া ইবন সীরীন সুত্রে উসমান ইবন
সাদের হাদীস থেকে বর্ণিত হয়েছে ৷ তিনি (ইবন সীরীন) বলেন, আমি হযরত সামুরার
তরবারির আদলে আমার তরবারি বানিয়েছি ৷ আর সামুরা দাবি করতেন যে, তিনি রাসুলুল্লাহ্
(সা) এর তরবারির আদলে তার তরবারি বানিয়েছেন ৷ আর নবী করীম (না)-এর তরবারিঢি
ছিল আহ্নাফী (অর্থাৎ আহনাফ ইবন কায়সের সাথে সম্পৃক্ত উৎকৃষ্ট শ্রেণীর তরবারি) ৷
রাসুলুল্পাহ্ (না)-এর একটি তরবারি হযরত আলীর পরিবারে পৌছেছিল ৷ হযরত হুসায়ন ইবন
আলী (রা) যখন কারবলো প্রান্তরে ফোরাত তীরে নিঃহ্ত হন, তখন এটি তার কাছে ছিল ৷
এরপর হযরত যায়নুল আবিদীন আলী ইবন হুসায়ন তা নিয়ে য়াযীদ ইবন মুআবিয়ার সাক্ষাতে
দিমাশকে আসেন, পরে তিনি সেটি নিয়ে মদীনায় ফিরে আসেন ৷ (বুখারী ও মুসলিমে)
নিসওয়ার ইবন মাখরামা থেকে সুসাব্যস্ত বর্ণনা রয়েছে যে, তিনি পথে যায়নুল আবিদীনের
সাথে সাক্ষাৎ করে তাকে বললেন, আপনি কি আমাকে আপনার কোন প্রয়োজন মেটানাের
নির্দেশ দেবেন? তখন তিনি বললেন, না ৷ তখন তিনি (মিসওয়ার) বললেন, আপনি কি আমার
কাছে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর তরবারিখানি অর্পণ করবেন? আমার আশঙ্কা হয় যে, শত্রুরা
আপনার থেকে তা ছিনিয়ে নেবে ৷ আল্লাহ্র কসম, আপনি যদি আমাকে তা অর্পণ করেন
তাহলে আমার জীবন থাকতে কেউ তার কাছে ঘেষতে পারবে না ৷
এ তরবারি ছাড়া নবী করীম (না)-এর আরো কতক যুদ্ধাত্রের উল্লেখ পাওয়া যায় ৷
সেগুলোর মধ্যে রয়েছে বর্মসমুহ যেমনটি একাধিক রড়াবী বর্ণনা করেছেন ৷ এদের মধ্যে সাইব
ইবন য়াযীদ ও আবদুল্লাহ ইবন যুবায়রও রয়েছেন ৷ তারা বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা)
উহুদ যুদ্ধের দিন একটি বর্মের উপর আরেকটি বর্ম পরিধান করেছিলেন ৷ সহীহ গ্রন্থদ্বয়ে হযরত
আনাস থেকে বর্ণিত মালিকের হাদীসে রয়েছে, মক্কা বিজয়ের দিন নবী করীম (সা) এর মাথায়
শিরস্ত্রড়াণ ছিল ৷ তিনি যখন সেটি খুলে ফেললেন তখন তাকে বলা হল যে, ইবন খড়াতাল
(আল্লাহ্ ও তীর রাসুলের ঘোরতম শত্রু) কাবার গিলাফ আকড়ে আশ্রয় গ্রহণ করেছে ৷ তখন
তিনি বললেন, তাকে হত্যা কর ৷ আর মুসলিম শরীফে আবু যুবায়র সুত্রে হযরত জাবির (রা) ’
থেকে বর্ণিত আছে, মক্কা বিজয়ের দিন মক্কায় প্রবেশকালে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর মাথায় কাল
পাগড়ি ছিল ৷ ওকী মুসাবির আলওয়াবরাক সুত্রে হুরায়ছ (রা) থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ্
(সা) লোকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন ৷ এ সময় তার মাথায় ছিল একটি তৈলাক্ত (কালচে)
পাপড়ি ৷ শেষোক্ত এই বর্ণনা দু ’টি ইমাম তিরমিযী তার শামাইলে উল্লেখ করেছেন ৷ এ ছাড়া
তিনি আদ্ দারাওয়ারদীয় হাদীস থেকে ইবন উমর (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেছেন,
রাসৃলুলাহ্ (সা) যখন পাগড়ি পরতেন তখন তা উভয় র্কাধের মাঝে ঝুলিয়ে দিতেন ৷ হাফিয
আবু বকর আল বাবয়ার তার মুসনাদে আবু শায়বা ইবরাহীম ইবন আবদুল্লাহ আনাস ইবন
মালিক থেকে বর্ণনা করেন যে তার (আমাদের) কাছে রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর একটি লাঠি জ্জি ৷
তিনি মৃ৩ তাববণ করলে লাঠিটি তার কাফন ও পাশ্বদৈশের মধাখানে রেখে তার সাথে দাফন
করে দেন ৷ বর্ণনা শেষে বায্যার মন্তব্য করেন যে, মিখওয়াল ইবন রাশিদ ব্যতীত অন্য কোন
রাবী এই ঘটনা বর্ণনা করেছেন বলে আমাদের জ না সেই ৷ তিনি স৩ ৷বাদী,৩ তবে শিয়াপন্থী ৷
আর এ বর্ণনাটিকেও শিয়াপ্রীতির প্রকাশ বলে ধরে নেয়া যায় ৷ আর হাফিয বায়হাকী এই হাদীস
বর্ণনা করার পর মন্তব্য করেন, এই হাদীসখানি মিখওয়াল ইবন রাশিদ সুত্রে বর্ণিত ৷ তিনি
শিয়াপন্থী এবং ইসরাঈল সুত্রে এমন সব বর্ণনার অবতারণা করে থাকেন, যা অন্য কেউ করে
না ৷ আর তার বর্ণিত হাদীসসমুহে দৃর্বলত৷ প্রকাশ্য ও সুস্পষ্টা
নবী করীম (না)-এর ব্যবহৃত পাদুকার বর্ণনা
সহীহ বুখারীতে ইবন উমর (রা ) সুত্রে প্রামাণ্য বর্ণনা রয়েছে যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) সিবভী
(পাকা চামড়ার) পাদুকা পরতেন ৷ আর তা হল লোমমুক্ত পাকা চামড়ার পাদুকা ৷ এ ছাড়া
ইমাম বুখারী তার সহীহ গ্রন্থে মুহাম্মদ ইবন যুকাতিল ঈসা ইবন৩ তাহমড়ান থেকে বর্ণনা
করেন যে,৩ তিনি বলেছেন, একদা হযরত আনাস (বা) আমাদের কাছে ফিতাযুক্ত এক জোড়া
পাদুকা নিয়ে আসলেন ৷ তখন ছাবিত আল বুনানী বললেন, এ হল নবী করীম (সা) এর
পাদুকা ৷ হাদীসখানি ইমাম বুখারী কি৩ তাবুল থুমুস এ আবদুল্লাহ ইবন মুহাম্মদ ঈসা ইবন
তাহমান (র) সুত্রে আনাস (রা) থেকে রিওয়ায়াত ৩করেছেন ৷ ঈসা বলেন, (একবার) আনাস
(রা) আমাদের কাছে একজােড়া পশমবিহীন চামড়ার জুতা বের করে আনলেন, যাতে দুটি করে
ফিতা ছিল ৷ পরবর্তীতে হযরত আনাসের বরাতে ছাবিত বুনানী আমাকে বর্ণনা করেছেন যে,
বন্তুত সে দু’টি নবী করীম (সা) এর পাদুকা ছিল ৷ আহমদ ইবন মানী সুত্রে ইমাম তিরমিযী
শামাইল অধ্যায়ে তা বর্ণনা করেছেন ৷ শামাইলে ইমাম তিরমিযী আবু কুরায়ব সুত্রে ইবন
আব্বাস (বা) থেকে আরো বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর পাদৃকার ফিতা
ছিল দু ত’াজ করা ৷ ইসহাক ইবন মনসুর সুত্রে আবু হুরায়রা (রা) থেকে তিনি আরো বলেন,
রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর পাদুকার দুটি ফিতা র্হিণ্৷ ৷ মুহাম্মাদ ইবন মাবয়ুক সুত্রে আবু হুরায়রা (বা )
থেকে তিরমিযী বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর পাদৃকার দুটি ফিতা ছিল
(গিরাযুক্ত ) , হযরত আবু বকর ও উমরেরও এরুপই ছিল ৷ আর তাতে প্রথম একটি গিরা দেন
হযরত উসমান (রা ) ৷ জাওহারী বলেন, (কাফ হরফে কাসরা যোগে ) হল পায়ের
মধ্যমা ও তার স লগ্ন আঙ্গুলের মধ্যবর্তী ফিতা ৷ আমার (গ্রন্থকারের) বক্তব্য হল ছয়শ
হিজবীর ক্রান্তিকাল ও তার পরবর্তীকালে ইবন আবুল হাদরাদ নামক এক ব্যবসায়ীর কাছে
র রক্ষিত এক পাটি পাদুকার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে যে,৩ তা নবী করীম (সা)-এর ব্যবহৃত পাদুকা ৷