সুগন্ধি মাখতাে তখন গোটা মদীনাবাসী তার সুবাস পেতেন ৷ তখন থেকে তারা এ বাড়ির
নামকরণ করলো সুগন্ধিওয়ালাদের বাড়ি বলে ৷৩ তবে হাদীসখানি অতি বিরল প্রকৃতির ৷
হাফিয আবু বকর আলু বায্যার মুহাম্মাদ ইবন হিশাম আনাস সুত্রে বর্ণনা করেন যে,
তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) যখন মদীনায় কোন পথ দিয়ে হেটে যেতেন তখন লোকেরা
তার থেকে সুগন্ধির ঘ্রাণ পেত, এবং বলাবলি করতে ন রাসুলুল্লাহ্ (না) এ পথে গমন
করেছেন ৷ তারপর বর্ণনাকারী বলেন, হযরত আনাসের বরাতে মু আয় ইবন হিশামও বর্ণনা
করেছেন যে, দেহের সুবাসের দ্বারা রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর অবস্থান বোঝা যেত ৷ রাসুলুল্লাহ্ (মা)
ছিলেন উত্তম ৷ তার দেহের ঘ্রাণও ছিল উত্তম, তা সত্বেও তিনি সুগন্ধি ভালবাসা তন ৷ ইমাম
আহমদ আবু উবায়দা আনাস সুত্রে বর্ণনা করেন যে , নবী করীম (সা ) বলেন :
নারী ও সুগন্ধিকে আমার প্রিয় করা হয়েছে-আর নামাযে আমার চোখের শীতলতা রাখা
হয়েছে ৷ আর আবুল মুনযির আনাস সুত্রে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ্
(সা) ইরশাদ করেনং :
পার্থিব কোন সামগ্রীর মাঝে নারী ও সুগন্ধিকে আমার প্রিয় করে দেয়৷ হয়েছে, আর
আমার চোখের শীত লতা রাখা হয়েছে সালাতে ৷ নাসাঈও এ পাঠেই ভিন্ন সুত্রে আনাস থেকে এ
হাদীসখানা রিওয়ায়াত করেছেন ৷ অবশ্য হাদীসখানি অন্য একটি সুত্রে ও ঈষৎ ভিন্ন পাঠে বর্ণিত
হয়েছে ৷ তবে এ পাঠে হাদীসখানি সুরক্ষিত নয়; কেননা, সালাত কোন পার্থিব ভোগ সামগ্রী
নয়; বরং তা হল পারলৌকিক অন্যতম গুরুত্বপুর্ণ বিষয় ৷ আল্লাহ্ই অধিক অবগত ৷
নবী (না)-এর স্কন্ধদ্বঘ্নের মধ্যবর্তী নুবুওয়াত-মোহর-এর বিবরণ
বুখারী মুহাম্মাদ ইবন উবায়দুল্পাহ্ আলজাদ সুত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বল্যেছন,
আমি সাইব ইবন ইয়াযীদকে বলতে শুনেছি (একবার) আমার খালা আমাকে রাসুলুল্লাহ্
(না)-এর কাছে নিয়ে গিয়ে বললেন ইয়৷ রাসুলাল্লাহ্! আমার (এই) বোনপোটি ব্যাথাক্রান্ত ৷
তনন তিনি আমার মাথায় হাত ৩বুলিয়ে আমার জন্যে বরকভ্রু৩ র দৃআ করলেন ৷ এরপর তিনি
উয়ু করলেন, তখন আমি তার উয়ুর পানি থেকে পান করলাম এবং তার পেছনে দাড়ালাম ৷
তখন আমি তার দুই স্কন্ধের মাঝামাঝি (নব বধুর বাসর শয্যার) গুটলির ন্যায় মোহর দেখতে
পেলাম ৷ এভাবেই মুসলিম কুতায়বা সুত্রে হাতিম ইবন ইসমাঈল থেকে ঐ সনদে তা
বর্ণনা করেছেন ৷ তারপর বুখারী বলেন, ৰুা শব্দটি অর্থাৎ ঘোড়ার
কপালের র্চাদ থেকে গৃহীত ৷ ইবরাহীম ইবন হাময৷ বলেন,
বলেছেন ৷ আবু আ বদুল্লাহ্ বলেন, ১)এ ৷ যা’ এর পুর্বে র৷ বিশুদ্ধ১ ৷ মুসলিম আবুবক্র ইর্বৃন
আবু শায়ব৷ জাবির ইবন সামুৱ৷ (রা) সুত্রে বলেন যে, তিনি বলেছেন, রাসুলুল্পাহ্ (সা) এর
মাথার চুল ও দাড়ির অগ্রভ ৷গে ঈষৎ পাক ধরেছিল ৷ তিনি যখন তেল যেখে তা আচড়ে
১ অন্য রিওয়ায়াতে শব্দটি রয়েছে, বাক্যটি দ্বারা গম্বুজ সদৃশ ঘর বঝানাে হয়েছে ৷ যা কাপড়
(গিলাফ) দ্বারা আচ্ছাদিত থাকে, যার বড় বড় বোতাম সদৃশ গুটলি থাকে ৷
রাখতেন তখন তা প্রকাশ পেত না, আর চুল এলোমেলো হলে তা প্রকাশ পেতাে ৷ আর তার
দাড়ি ছিল ঘন ৷ তখন এক ব্যক্তি বলল, আর তার চেহারা কি তরবারির মত (লম্বাটে) ছিল ?
তিনি বললেন, না; বরং তা চন্দ্র-সুর্যের ন্যায় ছিল এবং তা গোলাকার ছিল ৷ আর তার
স্কন্ধ-অস্থির নিকট তার মােহরে নুবুওয়াত আমি দেখেছি, তা ছিল কবুতরের ডিম সদৃশ এবং
তার গাত্রবর্ণের সাথে সাদৃশ্যপুর্ণ ৷ মুহাম্মাদ ইবন মুছান্না জাবির ইবন সামুরা সুত্রে বর্ণনা করেন,
তিনি বলেছেন, আমি রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর পৃষ্ঠদেশের উপরিভাগে মােহর চিহ্ন দেখেছি, যেন
তা কবুতরের ডিম ৷ এছাড়া ইবন নৃমায়র ভিন্ন সুত্রে অনুরুপ রিওয়ায়াত করেছেন ৷ ইমাম
আহমদ আবদুর রাজ্জাক আবদুল্লাহ্ ইবন সারজিসের বরাঃত উল্লেখ করেন যে, তিনি
বলেছেন, তোমরা এই বৃদ্ধকে দেখছ ৷ এ যাকে তিনি নিজের দিকে ইঙ্গিত করেন ৷ আমি
আল্পাহ্র নবীর সঙ্গে কথা বলেছি, তার সাথে পানাহার করেছি এবং তার স্কন্ধাস্থিদ্বয়ের মধ্যবর্তী
মােহরে নুবুওয়াত প্রত্যক্ষ করেছি ৷ তার অবস্থান ছিল তার ৰ্বা র্কাধের নরম হাড়ের পাশে ৷ যেন
তা মুষ্টিবদ্ধ হাত (এ কথা বলে তিনি তার হাত মুষ্টিবদ্ধ করলেন)-যার উপরে রয়েছে আচিল
আকৃতির তিলকগুচ্ছ ৷ ইমাম আহমদ, হাশিম ইবন কাসিম এবং আসওদ ইবন আমির সুত্রে
আবদুল্লাহ্ সারজিস থেকে বর্ণনা করেন ৷ আমি রাসুলুল্লাহ্ (সা)-কে দেখেছি, তাকে
সালাম করেছি, তার সাথে পানাহার করেছি এবং তার উচ্ছিষ্ট পানীয় পান করেছি এবং
নুবুওয়াতেব মোহর-চিহ্ন প্রত্যক্ষ করেছি ৷ হাশিম বলেন, তার বাম র্কাধের প্রান্তের নরম হাড়ের
পাশে যেন তা মুষ্টিবদ্ধ হাত, যাতে রয়েছে আচিল সদৃশ কালো তিলকগুচ্ছ ৷ আর তিনি
(মুসলিম) তা গুনদৃর সুত্রে আবদুল্লাহ ইবন সারজিস থেকে হাদীসখানির উল্লেখ
করেছেন ৷ আর শুবা সংশরগ্রস্ত হয়েছেন যে, তা (নুবুওয়াত চিহ্ন) বাম র্কাধের প্রান্তের নরম
হাতের কাছে ছিল , না কি ডান র্কাধের ৷ এ ছাড়া মুসলিম হাম্মাদ ইবন যায়দ প্রমুখ তিন জন
রাবী থেকে আবদুল্লাহ ইবন সারজিসের বরাতে তা রিওয়ায়াত করেছেন ৷ তিনি বলেন,
(একবার) আমি রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর কাছে এসে তার সাথে রুটি ও গোশত কিংবা ছারীদ
(রাবীর সন্দেহ) থেলাম ৷ তখন আমি তাকে বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ্! আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা
করুন, তিনি বললেন, তােমাকেও ৷ (আসিম বলেন) আমি বললাম আল্লাহ্র রাসুল আপনার
জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন? তিনি বললেন, হী এবং তোমাদের জন্যেও ৷ তারপর তিনি
তিলাওয়াত করলেন ও
“ক্ষমা প্রার্থনা কর তোমার এবং মু’মিন নর-নারীর ত্রুটির জন্য” ( : ৭ : ১৯) ৷
তিনি বলেন, আমি তার পিছন দিকে ঘুরলাম; তারপর তার স্কন্ধদদ্বয়ের মাঝে বাম র্কাধের
অন্থি-প্রাস্তের নরম অংশের কাছে মােহরে নুবুওয়াতেব দিকে তাকালাম, যেন তা মুষ্টিবদ্ধ হাত,
যার উপর আচিলের ন্যায় তিলকগুচ্ছ বিদ্যমান ৷ আবু দাউদ তায়ালিসী কুর্রা থেকে বর্ণনা
করেন ৷ তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর কাছে এসে বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ্৷ আমাকে
আপনার নুবুওয়াত চিহ্ন (মোহর) দেখান ৷ তখন তিনি বললেন, তোমার হাত ঢুকাও ৷ তখন
আমি আমার হাত তার আমার মধ্যে ঢুকালাম ৷ তারপর সন্ধানী দৃষ্টিতে তার নুবুওয়াত চিহ্ন
খুজতে লাগলাম ৷ দেখতে পেলাম, তার অবস্থান তার স্কন্ধের প্রান্তের কোমল অস্থির কাছে ডিম
সদৃশ ৷ আর তা র্তাকে আমার জন্য দৃআ করতে বিব্ল সৃষ্টি করলো না, অথচ আমার হাত
তখনও তার আমার কলারের ভিতরে ৷ ইমাম নাসাঈ তা আহমদ ইবন সাঈদ সুত্রে ঐ সনদে
বর্ণনা করেছেন ৷ কুবৃরা ইব ন খালিদ থেকে ইমাম আহমদ ওকী সুত্রে আবু রিমছা
আত-তায়মী থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, (একবার) আমি আমার আব্বার সাথে বের
হয়ে রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর কাছে আসলাম, তখন আমি তার মাথায় মেহেদীর চিহ্ন এবং তার
কাধে আপেল আকৃতির নুবুওয়াত চিহ্ন দেখতে পেলাম ৷ তখন আমার আব্বা বললেন আমি
একজন চিকিৎসক, আপনার হয়ে কি আমি এর চিকিৎসা করব না? তিনি বললেন, যিনি তা
সৃষ্টি করেছেন তিনিই তার চিকিৎসক ৷ বর্ণনাকারী বলেন, আর তিনি আমার পিতাকে বললেন,
এটা কি তোমার ছেলে? তিনি বললেন হী ৷ তিনি ইরশাদ করলেন :
৷ মে
“শুনে রেথো ! তার অপরাধে তুমি দায়ী হবে না এবং তোমার, অপরাধে সে দায়ী হবে না” ৷
ইয়াকুব ইবন সুফিয়ান আবু নুআয়ম আবু রাবীআ বা রিম্ছা সুত্রে বর্ণনা করেন ৷
তিনি বলেন, একবার আমি আমার পিতার সাথে নবী করীম (সা)-এর কাছে গেলাম, তখন
তিনি তার স্কন্ধদ্বয়ের মাঝে ঈষৎ উদ্ভিন্ন অংশবিশেষ দেখে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্ (সা) !
আমি যেমন অন্য লোকদের চিকিৎসা করি, আপনার জন্যও কি এর চিকিৎসা করব? তিনি
বললেন, না ! এর চিকিৎসক তিনিই, যিনি তা সৃষ্টি করেছেন ৷ বায়হাকী বলেন, ছাওরী ইয়াদ
ইবন লাকীত সুত্রে এই হাদীস উল্লেখ করেছেন ৷ হঠাৎ দেখা গেল তার দৃই স্কন্ধের মাঝে
আপেল আকৃতির চিহ্ন বিশেষ ৷ আর আবু রিমছার বরাতে আসিম ইবন বাহ্দালা বলেন ৷ হঠাৎ
দেখা গেল তার ষ্কন্ধান্থির কোমল প্রাত-অস্থি বরাবর উটের একটি লাদি অথবা কবুতরের ডিম
আকৃতির কিছু একটা ৷ এরপর ইমাম বায়হাকী সিমাক হারব সালমান ফারেসী সুত্রে
বলেন যে, তিনি বলেছেন, (একবার) আমি রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর কাছে আসলাম ৷ তখন তিনি
তার চাদর খুলে আমাকে বললেন, হে সালমান! তুমি যার আদেশ প্রাপ্ত হয়েছ তা দেখে নাও ৷
তিনি বলেন, তখন আমি তার দুই কাধের মাঝে কবুতরের ডিম সদৃশ (মােহরে নুবুওয়াত)
দেখতে পেলাম ৷ ইয়াকুব ইবন সুফিয়ান হুমায়দী সুত্রে তানুখী থেকে যাকে হিরাক্লিয়াস
রাসুলুল্পাহ্ (না)-এর কাছে পাঠিয়েছিলেন, তার বরাতে বর্ণনা করেন, যখন তিনি র্তাবুতে
অবস্থান করছিলেন-এরপর তিনি পুর্ণ হাদীসখানি উল্লেখ করেছেন ৷ যেমনটি আমরা তাবুক
অভিযানের বর্ণনায় উল্লেখ করেছি-যাতে তিনি বলেছেন ৷ তখন তিনি তার পিঠ জড়ানো চাদর
খুলে ণ্ল্দোলেন ৷ তারপর বললেন, তুমি যার জন্য আদিষ্ট হয়েছ তার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য
এদিকে এস ৷ তানুখী বলেন, তখন আমি পিঠে দৃষ্টি বুলাতে লাগলাম ৷ তখন হঠাৎ একটি
ণ্মাহর চিহ্ন দেখতে পেলাম, যার অবস্থান ছিল কাধের প্রান্তের কোমল অস্থি বরাবর এবং
আকৃতি ছিল বিশাল রক্তমোক্ষণ চিহ্নের ন্যায় ৷
ইয়াকুব ইবন সুফিয়ান, মুসলিম ইবন ইব্রাহীম আত্তাব সুত্রে বর্ণনা করেন ৷ তিনি
বলেন, আমি আবু সাঈদকে বলতে শুনেছি, নবী করীম (সা)-এর স্কন্ধদ্বয়ের মাঝে যে
(নবুওয়াতের) সােহর চিহ্ন ছিল, তা ছিল উদ্ভিন্ন মাংসপিও ৷ ইমাম আহমদ শুরায়হ গিয়াছ
আল বাকরী সুত্রে বংনাি করেন যে, তিনি বলেছেন, মদীনায় আমরা আবু সাঈদ খুদরী (রা)-এর
সাথে উঠাবসা করতাম (একবার) আমি র্তাকে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর স্কন্ধদ্বয়ের মধ্যবর্তী
নুবুওয়াতের মােহর চিহ্ন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম ৷ তখন তিনি তার তর্জনী দ্বারা এভাবে ইঙ্গিত
করে তার দৃই র্কাধের মধ্যবর্তী স্থানে উদ্ভিন্ন মাংস পিণ্ডের কথা বুঝালেন ৷ এ সুত্রে ইমাম
আহমদ এককতাবে হাদীসটি বংনাি করেছেন ৷ আর হাফিয আবুল খাত্তাব ইবন দিহ্ইয়ামিসৃরী
তার গ্রন্থ ৷) এ আবু আবদুল্লাহ্ মুহাম্মাদ ইবন
আলী যিনি হাকীম তিরমিষী নামে প্রসিদ্ধ, তার বরাতে বনাি করেন, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্
(না)-এর স্কন্ধদ্বয়ের মাঝে নুবুওয়াতের যে মােহর চিহ্ন ছিল, তা যেন ছিল কবুতরের একটি
তিন, বার অভ্যন্তরে ৷ লিখিত ছিল ৷ আর তার বহির্ভাগে লিখিত ছিল :
“ষেদিকে ইচ্ছা আপনি অভিযুখী হোন, আপনি সাহায্যপ্রাপ্ত হবেন” ৷ তারপর তিনি মন্তব্য
করেন, এটা অতি গরীব আর মুনকার-অগ্রহণষেগ্যে ৷ আর কেউ কেউ বলেছেন, তা ছিল
নুরের ৷ ইমাম আবু যাকারিয়াইয়াহ্য়া ইবন মালিক তার গ্রন্থ , তা উল্লেখ
করেছেন ৷ এ ছাড়া তিনি আরও একাধিক অদ্ভুত ও অভিনব কথার অবতারণা করেছেন ৷
নুবুওয়াতের মোহর চিহ্ন রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর স্কন্ধদ্বয়ের মাঝে অবস্থিত হওয়ায় রহস্য সম্পর্কে
ইবন দিহ্ইয়া ও তার পুর্ববর্তী আলিমগণ যা উল্লেখ করেছেন তার সর্বোত্তম কথা হল এটা এই
ইঙ্গিতবাহী যে, আপনার পর আর কোন নবীর অস্তিত্ব নেই, যিনি আপনার পর আগমন
করবেন ৷ ইবন দিহ্ইয়া বলেন, কারো কারো মতে তা ছিল তার স্কন্ধান্থির কোমল প্রান্তে ৷
কেননা, বলা হয় এ স্থান দিয়েই শয়তান মানুষের মাঝে প্রবেশ করে-তইি এটি ছিল শয়তান
থেকে নবী করীম (না)-এর রক্ষাকবচ ৷
আমি বলি,
মুহাম্মদ তোমাদের মধ্যে কোন পুরুষের পিতা নয়, বরং সে আল্লাহর রাসুল ও শেষ নবী,
আল্পাহ্ সর্ব বিষয়ে সর্বজ্ঞ ৷ — এই আঘাতের তাফসীরকালে আমরা সবিস্তারে ঐ সকল
হাদীসসমুহ উল্লেখ করেছি, যা একথা প্রমাণ করে দিয়েছে যে, তার পরে আর কোন নবী নেই;
রাসুলও নেই ৷
অধ্যায়
রাসুল (সা)এর দেহাবয়ব ও স্বভাব বর্ণনা বিষয়ক বিচ্ছিন্ন হাদীস
হযরত আলী ইবন আবু তালিবের বরাতে নাফি ইবন জুবায়রের রিওয়ায়াতে ইতিপুর্বে
বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি আলী রা বলেন ং তার পুর্বে ও পরে তার মত কাউকে আমি
দেখিনি ৷ আর ইয়া কুব ইবন সুফিয়ান আবদুল্লাহ ইবন মুসলিম ও সাঈদ ইবন মানসুর সুত্রে
হযরত আলীর কোন এক পুত্র থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, হযরত আলী যখন
রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর দেহাবয়ব বর্ণনা করতেন, তখন বলতেন : তিনি বেশি লম্বাও ছিলেন না,
আবার খুব বৈটে সেটেও না ৷ তিনি ছিলেন মধ্যম আকৃতির লোক ৷ আর মাথার চুল অতি
ফোকাড়ানােও ছিল না, আবার একেবারে সােজাও ছিল না, তা ছিল ঈষৎ ফোকড়ানাে ৷ তার
দেহ মােটাসােটা ও মেদবহুল ছিল না এবং তার চেহারা একেবারে ভরাট গোলাকারও নয় ৷
তবে তার মুখমণ্ডল গোলাকৃতির ছিল, তার গাত্রবর্ণ ছিল লালাভ ফর্সা, চক্ষুদ্বয় ছিল ডাপর কাল,
চোখের পাতা পাপড়িপুর্ণ, তার অঙ্গ-প্রতাঙ্গ ও র্কাধের অস্থিসন্ধিসমুহ শক্ত ও মোটা, দেহ
অতিরিক্ত পশমবডিতি, বুকে নিম্নমুখী পশমের রেখা, ভরটি ও কোমল হাত ও পায়ের তালুর
অধিকারী ৷ ইাটার সময় পা তুলে দ্রুত হাটতেন যেন তিনি চালু ভুমিতে নামহ্নেষ্ক, যখন ঘুরে
তাকাতেন গোটা দেহ ঘুরে তাকাতেন, তার উভয় স্কন্ধান্থির মাঝে নুবুওয়াতের মােহর চিহ্ন
সর্বাধিক উদার হস্ত ও প্রশস্ত বক্ষ, সর্বাধিক সত্যভাষী ও শ্রেষ্ঠতম প্রতিশ্রুতি পুর্ণকারী,
কোমলতম স্বভাবের অধিকারী, পারিবারিক জীবন যাপনে সেরা কর্তব্য পরায়ণ ৷ হঠাৎ কেউ
তাকে দেখলে তীর প্রতি সমীহ সৃষ্টি হত, আর কেউ ঘনিষ্ঠভাবে তার সাথে পরিচিত হলে তার
প্রতি ৩অনুরক্ত হতো ৷ তার দেহাবয়ব বর্ণনাকারী বলেন, তার আগে বা পরে তার তুলা কাউকে
আমি দেখিনি ৷ ইমাম আবু উবায়দ বাসিম ইবন সাল্লাম এ এই হাদীসখানা
বর্ণনা করেছেন ৷
অতঃপর তিনি কিসাঈ, আসমায়ী ও আবু আমর থেকে তার দুর্বোধ্য ও জটিল শব্দগুলির
অর্থ ও ব্যাখ্যা উল্লেখ করেছেন ৷ এ প্রসঙ্গে তার উল্লেখিত বিবরণের সারাংশ হল, স্পে;া৷ ৷ হল
ভরাটদেহী ৷৷ অতি গোলাকৃতির মুখমণ্ডলের অধিকারী ৷ অর্থাৎ তিনি মেদবহুল
অতিমােটা ছিলেন না, আবার কৃশকায় দুর্বলও ছিলেন না; বরং এ দুয়ের মধ্যবর্তী দেহাবয়বের
অধিকারী ছিলেন ৷ তার মুখমণ্ডল একেবারে গোলাকৃতির ছিল না, বরং তা কিছুটা উপবৃত্তাকার
ছিল, যা আরবদের কাছে এবং রুচিবানদের কাছে প্রিয়দর্শন ৷ তিনি ছিলেন লালাভ ফর্সা-দুধে
আলতায় মেশানাে বর্ণের আর এটাই সুন্দর৩ ম গাত্রবর্ণ ৷ এ কারণেই তিনি অতি শুভ্র বর্ণ ছিলেন
না ৷ হল ভোমর কাজল চক্ষুমণির অধিকারী ,বিশাল বিশাল অস্থিপ্রান্ত
বা জোড় ৷র অধিকারী ৷ যেমন হাটুদ্বয়, কনুইদ্বয় ও স্কন্ধদ্বয়,াএ ৷ হল কাধের সংযোগস্থল ও
তার সংলগ্ন৷ শরীর আর অর্থাৎ ভারী ও মোটা হাতের তালুর অধিকারী আর