রাসুলুল্লাহ (না) আরাফা হতে মুযদালিফায় চললেন ৷ আমি ছিলাম তার সহ-আরোহী ৷ তিনি
নিজের বাহনের লাগাম এমন শক্ত করে টেনে রাখতে লাগন্সেন-যে তার কর্ণমুল হাওদার সম্মুখ
ভাগ ছুয়ে য ড়াচ্ছিল প্রায় ৷ তিনি বলে চলেছিলেন-
লোক সকল ৷ শৃৎখলা সুস্থিরতা ও ভাব-গন্তীরতা রক্ষা করে চলবে; উট দ্রুত ছুটানােতে
কো ন বিশেষ পুণ্য নেই ৷ নাম সােঈ (র)এ হাদীসটি ভিন্ন ভিন্ন সুত্রে রিওয়ায়াত করেছেন ৷ তবে
যুসলিমের বর্ণনা ৷য় অধিক রয়েছে ৷ উসামা (রা) বলেছেন, এভাবে তিনি ধীর স্থিরতা ৷র সংগে
চলতে চলতে ঘুযদ৷ ৷লিফায় উপনীত হলেন ৷
পথিমধ্যে অবতরণ এবং একত্রিত প্রসংগ :
ইমাম আহমদ (র) বলেন, আহমদ ইবনুল হাজ্জাজ (র) ,উসামা ইবন যায়দ (বা) হতে,
এ মর্মে বনাি করেন যে, আরাফার দিন তিনি নবী করীম (সা) এর সহ-আরোহী হলেন ৷
অবশেষে গিরিপথে প্রবেশ করলে নবী করীম (না) (বাহন হতে নেমে পড়ে) পেশার করলেন
,তারপর উযু করে পুনরায় আরোহণ করলেন কিন্তু (মাগরিবের) সালাত আদায় করলেন না ৷
ইমাম আহমদ (র) আরো বলেন, আবদুস-সামাদ (র) উসামা ইবন যায়দ (রা) সুত্রে বলেন,
রাসুলুল্লাহ (সা) আরাফাত হতে চলে আসার সময় আমি তার সহ-আরোহী ছিলাম ৷ ঘুযদালিফায়
পৌছা পর্যন্ত তার বাহন তার পা উপর্বুপরি না তুলেই চলল, ইমাম আহমদ (র) বলেন, সুফিয়ান
(র) উসাম৷ ইবন যায়দ সুত্রে বর্ণনা করেন যে, নবী করীম (না) তাকে আরাফা হতে সহ-আরোহী
করলেন ৷ পাহাড়ী মােড়ে গুহার কাছে পৌছলে তিনি অবতরণ করে পেশার করলেন ৷ এ বর্ণনায়
রাবী পানি ঢাললেন বলেন নি ৷ আমি তাকে পানি ঢেলে দিলে তিনি সংক্ষিপ্ত উযু
করলেন ৷ আমি বললাম, সালাত ? তিনি বললেন এশ্০গ্রা ঢক্রোা“সালাত তোমার সম্মুখে ৷”
রাবী বলেন, তারপর যুযদালিফায় পৌছে মাগরিবের সালাত আদায় করলেন ৷ তারপর লোকেরা
হাওদা খোলার কাজ সেরে আসলে ইশার সালাত আদায় করলেন ৷ইমাম আহম্মদ (র) এরুপ
সনদেই অনুরুপ রিওয়ায়াত করেছেন ৷ আর নাসা ৷ঈ (র) ও ভিন্ন সুত্রে পুর্বানুরুপ সনদে
রিওয়ায়াত করেছেন ৷ বুখ৷ ৷রী (র) বলেন, আবদুল্লাহ ইবন ইউসুফ উসাম৷ ইবন যায়দ (রা) হতে
এ মমে বর্ণনা করেন যে, রাবী কুরায়ব (র) তা ৷কে বলতে শুনেছেন, রাসুলুল্পাহ্ (না) তা ড়ারাফা হতে
চলতে লাগলেন ৷ পথে গিরিপথে অবতরণ করে তিনি পেশ ৷ব করলেন, তারপর সংক্ষিপ্ত উযু
করলেন, আমি তখন তাকে বললাম ৷ সালাত? তিনি বললেন, “সালাত তোমার সামনে রয়েছে ৷
পরে তিনি মুযদালিফায় এসে পুর্ণাঙ্গ উযু করলেন ৷ তারপর সালাতের ইকামত দেয়া হলে
মাগরিরের সালাত আদায় করলেন ৷ তারপর লোকেরা নিজ নিজ অবতরণ ক্ষেত্রে নিজ নিজ উট
বসিয়ে এল ৷
তারপর সালাতের ইকামত বলা হলে তিনি ইশার সালাত আদায় করলেন এবং এ দৃয়ের
মাঝে (অন্য) কোন সালাত আদায় করলেন না ৷ বুখারী (র), মুসলিম (র) ও নাসাঈ (র) ভিন্ন
ভিন্ন সুত্রে হাদীসটি রিওয়ায়াত করেছেন ৷ কুরায়ব (র) বলেন, আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (বা)
আমাকে ফাযল (রা)-এর বরাতে জানিয়েছেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা) জামরায় পৌছা পর্যন্ত
তালবিয়া উচ্চারণ করতে থাকলেন ৷ মুসলিম (র) এ হাদীসখানা বিভিন্ন রাবীর বরাতে বংনাি
করেছেন ৷ ইমাম আহম্মদ (র) বলেন, ওয়ার্কী (র) উসামা ইবন যায়দ (বা) হতে এমর্মে বংনাি
করেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাকে আরাফা হতে রওয়ানা কালে সহ-আরোহী করলেন ৷ রাবী
বলেন, তখন লোকেরা বলাবলি করল যে, আমাদের এ সাথী (উসামা) তার (নবী করীম (সা)
এর কর্ম ধারা আমাদের অবহিত করতে পারবে ৷ (রাবী বলেন) উসামা (রা) বলেছেন, আরফো
থেকে চলতে শুরু করলে (প্রথমে) তিনি থেমে পড়লেন, তার বাহনের , মাথা এমন ভাবে
থামিয়ে রাখলেন যে, তার মাথা হাওদার মাঝ বরাবার পৌছে গিয়েছিল-কিৎৰা প্রায় পৌছে
ছিল ৷ তিনি হাতের ইশারায় লোকদের বলছিলেন,শৃৎখলা ! শৃৎখল৷ ! শৃৎখল৷ ! এভাবে মুযদালিফায়
উপনীত হলেন !
তারপর (পরের দিন) ফাযল ইবন আব্বাস (রা)-কে সহ-আরোহী করলেন ! রাবী বল্লেন,
তখন লোকেরা বলাবলি করল, আমাদের এ সাথী (উসামা) তার (নবী সা) এর কর্ম ধারা
আমাদের অবহিত করতে পারবে ৷ পরে ফাযল (রা) বললেন, নবী করীম (সা) মৃদু গতিতে গত
দিনের মতই ধীরে ধীরে চলতে থাকলেন ৷ ওয়াদী মুহাসসার (নিম্মভুমিতে) পৌছলে তিনি চলার
গতি দ্রুততর করে দিলেন, যতক্ষণ না বাহন তাকে নিয়ে সমতল ভুমিতে পৌছল ৷ বুখারী (র)
বলেন,সাঈদ ইবন আবু মারয়াম (র) ইবন আব্বাস (রা)-এর বরড়াতে হাদীস শুনিয়েছেন যে,
আরাফার দিন নবী করীম (সা) ঘুযদালিফার উদ্দেশ্যে চলতে শুরু করলেন ৷ নবী করীম (না)
তার পিছনে প্রচন্ড ইাক ডাক ও উট প্রহার করার আওয়ায শুনতে পেয়ে তার চাবুক দিয়ে তাদের
দিকে ইংগিত করে বললেন, লোক সকল! ক্রোঙ্ ৰুন্নুন্া; তোমরা শান্তি শৃৎখলা বজায় রেখে
চলো; কেননা, উট তড়াড়ানােতে কোন বিশেষ পুণ্য নেই ৷ এ সুত্রে একাকী বুখারী (র) এ
হাদীসটি রিওয়ায়াত করেছেন ! আর ইমাম আহমদ, মুসলিম ও নাসাঈ (র) কর্তৃক আতা ইবন
আবু রাবাহ, ইবন আব্বাস, উসামা ইবন যায়দ (রা)-এ সনদে হাদীসটি রিওয়ায়াতের বিবরণ
পুর্বেই উল্লেখিত হয়েছে ৷ আল্পাহই সমধিক অবগত ৷
ইমাম আহমদ (র) বলেন, এ হাদীস উদ্ধৃত করা কালে অতিরিক্ত বলেছেন ৷ বর্ণনাকারী
বলেন, তারপরে তার মুযদালিফায় অবতরণ করা পর্যন্ত কোন পড়া তুলে চলাচন্সকারী (অর্থাৎ
কোন বাহন) কে ছুটে এগিয়ে যেতে দেখিনি ৷
ইমাম আহমদ (র) আরো বলেন, হুসায়ন ও আবু নুআয়ম (র) তিনি ইবন আব্বাস (রা)
থেকে এ মর্মে উদ্ধৃত করেছেন যে, আরাফাত ও ঘুযদালিফায় নবী কবীম (সা) যখনই কোথাও
অবতরণ করেকেরেছেন তা শুধু প্ৰশ্রবের জন্য ইমাম আহমদ (র) বলেন, ইয়াযীদ ইবন হারুন
(র)-আনাস ইবন সীবীন (র) হতে, তিনি বলেন, আমি ইবন উমার (রা)-এর সংগে আরাফাতে
ছিলাম ৷ তিনি কোথাও বের হওয়ার সময় হলে আমিও তার সাথে রেরোতাম ৷ শেষ পর্যন্ত তিনি
ইমামের সাথে প্রথম ওয়াক্ত (যুহর) ও আসর সালাত আদায় করলেন ৷ তারপর তিনি এবং
আমার সংগীদের নিয়ে আমি ও তার সাথে অবস্থান করলাম ৷ পরে ইমাম মুযদালিফার উদ্দেশ্যে
চলতে শুরু করলে আমরাও তার সাথে চলতে শুরু করলাম ৷ আমরা গিরিপথদ্বয়ের আগের
অপরিসর স্থানে পৌছলে তিনি উট বসালেন ৷ আমরাও উট বসালাম ৷ আমরা অনুমান করছিলাম
যে, তিনি এখানে (মাণরিব) সালাত আদায় করতে মনস্থ করছেন ৷ তখন তার বাহনের দায়িত্
পালনকাবী গোলাম বলল, তিনি সালাত আদায়ের ইচ্ছা করছেন না ৷ তবে তিনি উল্লেখ করেছেন
যে, নবী করীম (সা) এখানে পৌছলে পেশার করতেন ৷ তাই তিনি (ইবন উমার)-ও এখানে তা
করা পসন্দ করেছেন ৷
বুখাবী (র) বলেন, মুসা জুওয়ায়রিয়া (র) নাফি (র) হতে–তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবন
উমর (রা) যুযদালিফায় মাগরিব ও ইশা একত্রিত করে আদায় করতেন ৷ তবে তিনি সে গিরিপথ
দিয়ে চলতেন যে পথে নবী করীম (সা) চলেছিলেন এবং সেখানে প্রবেশ করে ইসতিনজা ও উয়ু
করতেন এবং মুযদালিফায় উপনীত না হওয়া পর্যন্ত সালাত আদায় করতেন না ৷ এ সুত্রে বৃখাবী
(র) একাকী বর্ণনা করেছেন ৷ বুখারী (র) আরো বলেন, তিনি বলেন, আদম ইবন আবু যিব
(র)ইবন উমর (বা) হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, নবী করীম (সা) যুযদালিফায়
মম্পোরিব ও ইশা একত্র করে আদায় করলেন, প্রতি সালাত স্বতন্ত্র ইকামতে; এ দুরের মাঝে
কিৎবা এর কোন সালাতের অব্যবহিত পরে তাসবীহ (নফল সালাত) আদায় করেন নি ৷ মুসলিম
(র)-ও অনুরুপ রিওয়ড়ায়াত করেছেন ৷ ইবন উমর (বা) হতে এ মর্মে যে, রাসুলুল্পাহ্ (সা)
ঘুযদালিফায় মাগরিব ও ইশা একত্রে আদায় করলেন, পরবর্তী বর্ণনায় মুসলিম (র) বলেন,
হারমালা (র) ইবন উমার (রা) সনদে বর্ণিত রিওয়ায়াতে অতিরিক্ত বলেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা)
মাপরিব তিন রাকআত আদায় করলেন এবং ইশা আদায় করলেন দুই রাকআত ৷ তাই
আবদুল্লাহ্ (রা)-ও আজীবন মুযদালিফায় অনুরুপ পস্থায় সালাত আদায় করেছেন ৷ তারপর
মুসলিম (র) শুবা, সাঈদ ইবন জ্বায়ের সুত্রে অনুরুপ রিওয়ায়াত করেছেন ৷ মুসলিম (র)-এর
পরবর্তী বণর্ন৷ আবু বকর ইবন আবু শায়বা (র) আবু ইসহাক (র) হতে তিনি বলেন, সাঈদ
ইবন জুবায়র (র) বলেছেন, আমরা ইবন উমর (রা)-এর সংগে (ইফাযা: করে অর্থাৎ) আরাফাত
থেকে রওয়ানা করে মুযদালিফায় পৌছলাম ৷ তিনি আমাদের নিয়ে মাগরিব ও ইশা’ এক
ইমামাতে আদায় করলেন ৷ এরপর ঘরে বসে বললেন রাসুলুল্লাহ (সা) এ , স্থানে আমাদের নিয়ে
এ ভাবেই সালাত আদায় করেছেন ৷ বুখাবী (র) ও নসােঈ (র) ভিন্ন ভিন্ন সুত্রে অনুরুপ
রিওয়ড়ায়াত করেছেন ৷
বুখারী (র) এর পরবর্তী অনুচ্ছেদ উভয় সালাতের জ্যা স্বতন্ত্র আমান ইকামত প্রসঙ্গ
আমর ইবন খালিদ (র)আবু ইসহাক (র) সুত্রে (তিনি বলেন) আবদুর রহমান ইবন
ইয়াযীদ (র)-কে আমি বলতে শুনেছি, আবদুল্লাহ ইবন উমর (রা) হজ্জ পালন করলেন ৷ আমরা
আতামা (ইশা)-র আযানের সময় কিংবা তার কাছাকাছি সময়ে যুযদালিফা-য় পৌছলাম ৷
আবদুল্লাহ (বা) এক ব্যক্তিকে হুকুম করলে সে আমান দিল ও ইকামত বলল ৷ তিনি মাগরির
সালাত আদায় করলেন এবং তারপরে দুই রাকআত আদায় করলেন ৷ তারপর তারা রাতের
খাবার আনিয়ে তা খেলেন ৷ তারপর এক ব্যক্তিকে আদেশ করলে সে আমান দিল ও ইকামত
বলল ৷ তারপর ইশার সালাত দুই রাকআত আদায় করলেন ৷ পরে ফজরের সময় হলে
(একেবারে প্রথম ওয়াক্তে ফজর সালাত আদায় করে) তিনি বললেন, এ দিনের এবং এ
স্থানের এই সালাত ব্যতীত এত আগ মুহুর্তে নবী করীম (সা) অন্য কোন সময় ফজরের সালাত
আদায় করতেন না ৷ ” আবদুল্লাহ (রা) বলেছেন, এ দুই সালাত এমন যা স্থানন্তরিত করা হয়ে
থাকে-মাগরিব আদায় করা হয় লোকজন ঘুয্দালিফায় এসে সমবেত হলে, আর ফজর সালাত