Home » দাওয়াত ও তাবলীগ » বিশ্ব ইজতেমার আখেরী মুনাজাত কি বিদআত? শরয়ী সমাধান!

বিশ্ব ইজতেমার আখেরী মুনাজাত কি বিদআত? শরয়ী সমাধান!

  • 3000+ Premium WORDPRESS Themes and Plugins
  • Download PHP Scripts, Mobile App Source Code
  • ►প্রশ্ন : তাবলীগী জামা‘আতের টঙ্গি বিশ্ব ইজতেমার আখেরী মুনাজাত নিয়ে আহলে হাদীস নামক সম্প্রদায় অপপ্রচার চালাচ্ছেন যে, এটা নাকি বিদ‘আত। ইসলামে নাকি এর কোন ভিত্তি নেই! এ সম্পর্কে সঠিক সমাধান কামনা করছি।

    ►উত্তর : তাবলীগী জামা‘আতের টঙ্গি বিশ্ব ইজতেমার মুনাজাত সম্পূর্ণ শরীয়তসম্মত। তা মুস্তাহাব পর্যায়ের আমল। ইসলামী শরীয়তে এর স্বপক্ষে স্পষ্ট দলীল রয়েছে। তাই তাকে কোনভাবে বিদ‘আত বলা যায় না। অন্যথায় তা শরীয়তের এ সংক্রান্ত দলীল-প্রমাণ তখা বহু কুরআনের আয়াত ও হাদীস শরীফকে অস্বীকার করার শামিল হবে–যা কোন মুসলমান করতে পারেন না।

    সুতরাং আহলে হাদীস নামক সম্প্রদায়ের এ সংক্রান্ত অপপ্রচার তাবলীগ জামা‘আাতের বিরুদ্ধাচরণে তাদের দুরভিসন্ধিমূলক প্রোপাগাণ্ডা ছাড়া কিছু নয়–যা সম্পূর্ণ অমুলক ও ভিত্তিহীন। এটা তাদের মানুষকে তাবলীগ জামা‘আত ও বিশ্ব ইজতেমা থেকে দূরে সরানোর চক্রান্ত বৈকি।

    বলা বাহুল্য, তাবলীগী জামা‘আত একটি হকপন্থী দাওয়াতী জামা‘আত। তারা সহীহ দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে পথহারা মানুষদেরকে দ্বীনের পথে হিদায়াত দান করেন। এর মাধ্যমে তারা পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহর প্রদত্ত এ নির্দেশ অনুযায়ী দাওয়াতে দ্বীনের দায়িত্ব আনজাম দিচ্ছেন–

    وَلْتَكُن مِّنكُمْ أُمَّةٌ يَدْعُونَ إِلَى الْخَيْرِ‌ وَيَأْمُرُ‌ونَ بِالْمَعْرُ‌وفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ‌ وَأُولَـٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ

    “তোমাদের মধ্যে যেন এমন একটা দল হয়–যারা দাওয়াত দিবে কল্যাণের প্রতি; তারা নির্দেশ দেবে সৎকর্মের এবং নিষেধ করবে অন্যায় কাজ থেকে। আর তারাই হলো সফলকাম।”

    (সূরাহ আলে ইমরান, আয়াত নং ১০৪)

    দাওয়াত ও তাবলীগের এ কাজ নিয়ে তাবলীগী জামা‘আতের লোকেরা সারা পৃথিবী ব্যাপী সফর করে একচিল্লা, তিন চিল্লা, সাল প্রভৃতি মেয়াদে আল্লাহর পথে সময় লাগান। আর তাদের এ বিশ্বব্যাপী তাবলীগী কার্যক্রমকে বেগবান করার জন্য প্রতি বছর বাংলাদেশের টঙ্গিতে বিশ্ব ইজতেমা বা বিশ্বময় তাবলীগী মহাসম্মিলন অনুষ্ঠিত হয়।

    তাবলীগী জামা‘আতের সকল কাজ ইসলামের নির্দেশনার আলোকে সহীহভাবে প্রণীত। এ সম্পর্কে হক্কানী উলামায়ে কিরাম বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে আলোকপাত করেছেন। তেমনি তাবলীগী জামা‘আতের টঙ্গি বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন এবং এর উল্লিখিত মুনাজাত বা দু‘আ পবিত্র কুরআন ও হাদীসের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ সঠিক । অন্যায়ভাবে বিরোধিতা করা ছাড়া কেউ একে ইনকার করতে পারেন না।

    তাবলীগ জামা‘আতের বিশ্ব ইজতেমার উক্ত দু‘আ-মুনাজাত অবশ্যই শরীয়তসম্মত। পবিত্র কুরআন ও হাদীস শরীফে এর সপক্ষে যথেষ্ট দলীল-প্রমাণ রয়েছে। এ সম্পর্কিত কিছু দলীল নিম্নে উল্লেখ করা হলো–

    পবিত্র কুরআনের দলীল:

    ১। ইখলাসের সাথে দু‘আ করার নির্দেশ : আল্লাহ তা‘আলা বান্দাদেরকে খাঁটি ইয়াকীনের সাথে দু‘আ করার নির্দেশ দিয়ে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন-

    وَادْعُوهُ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ

    “তোমরা আল্লাহর নিকট দু‘আ করো খাঁটি বিশ্বাস সহকারে।”

    (সূরাহ আ‘রাফ, আয়াত নং ২৯)

    ২। ভয় ও আশা নিয়ে দু‘আ করার আদেশ : আজাবের ভয় ও রহমতের আশা নিয়ে দু‘আ করার আদেশ দিয়ে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-

    وَادْعُوهُ خَوْفاً وَطَمَعاً إِنَّ رَحْمَةَ اللهِ قَرِيبٌ مِنَ المُحْسِنِينَ

    “তোমরা আল্লাহর নিকট দু‘আ করো ভয় ও আশা সহকারে। নিশ্চয় আল্লাহর রহমত সৎকর্মশীলদের নিকটে রয়েছে।”

    (সূরাহ আ‘রাফ, আয়াত নং ৫৬)

    ৩। দু‘আ করার জন্য তাকীদ প্রদান : আল্লাহ তা‘আলা বান্দাদেরকে দু‘আ করার হুকুম দিয়ে এবং দু‘আ থেকে বিমুখ হওয়ার ব্যাপারে হুঁশিয়ারী করে বলেন–

    وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِي سَيَدْخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ

    “তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমার কাছে দু‘আ্ করো, আমি তোমাদের দু‘আ কবুল করবো। যারা আমার ইবাদত (দু‘আ) থেকে ‍মুখ ফিরিয়ে নিবে, তারা সত্বরই লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে দাখিল হবে।” (সূরাহ মুমিন, আয়াত নং ৬০)

    উল্লিখিত আয়াতের প্রথমাংশে যেহেতু দু‘আ করার বলা হয়েছে, তাই শেষাংশে ইবাদত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার দ্বারা উদ্দেশ্য হলো- দু‘আ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া। এভাবে এ আয়াতে দু‘আকে ইবাদত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়টি নিম্নোক্ত হাদীসে সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে-

    عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ الدُّعَاءُ هُوَ الْعِبَادَةُ ثُمَّ قَرَأَ وَقَالَ رَبُّكُمْ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِي سَيَدْخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ

    হযরত নু‘মান ইবনে বাশীর (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “দু‘আই ইবাদত”। অতঃপর (এর সমর্থনে) রাসূলুল্রাহ (সা.) এ আয়াত পাঠ করেন– وَقَالَ رَبُّكُمْ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِي سَيَدْخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ (তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমার কাছে দু‘আ করো, আমি তোমাদের দু‘আ কবুল করবো। যারা আমার ইবাদত থেকে ‍মুখ ফিরিয়ে নিবে, তারা সত্বরই লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে দাখিল হবে)।” (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ১৩২৯/ জামি‘ তিরমিযী, হাদীস নং ২৯৬৯/ সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ৩৮২৯/ মুসানাদে আহমাদ, হাদীস নং ১৮৩৭৮)

    এতে বুঝা যাচ্ছে–দু‘আকে অবজ্ঞা করে যারা মুখ ফিরিয়ে নিবে, তাদের জন্য উক্ত আয়াতের বর্ণনানুযায়ী জাহান্নামের শাস্তি অবধারিত হবে। এটাই এ আয়াতের তাফসীর।

    (দ্রষ্টব্য : তাফসীরে ইবনে কাসীর, ৭ম খণ্ড, ১৫৩ পৃষ্ঠা)

    এভাবে দু‘আর ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে আরো বহু আায়াত রয়েছে। সেগুলো দ্বারা দু‘আর নির্দেশনা, গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়।

    হাদীস শরীফের দলীল:

    ৪। দু‘আর প্রতি গুরুত্বারোপ : দু‘আর আবশ্যকতা বর্ণনাপূর্বক এর নির্দেশনা প্রদান করে হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে-

    عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ الدُّعَاءَ يَنْفَعُ مِمَّا نَزَلَ وَمِمَّا لَمْ يَنْزِلْ فَعَلَيْكُمْ عِبَادَ اللَّهِ بِالدُّعَاءِ

    হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) হতে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন–“নিশ্চয়ই দু‘আ উপকার দেয় সেই মুসীবতে যা আপতিত হয়েছে এবং সেই মুসীবতে যা আপতিত হয়নি। সুতরাং হে আল্লাহর বান্দাগণ! তোমরা দু‘আ করাকে নিজেদের কর্তব্য বানিয়ে নাও।”

    (জামি‘ তিরমিযী, হাদীস নং ৩৫৪৮; অনুরূপ হাদীস : মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং ২২০৪৪, মুসতাদরাকে হাকীম, ১ম খণ্ড, ৪৯২ পৃষ্ঠা, মু‘জামে তাবরানী-কাবীর, ১০ খণ্ড, ১০৩ পৃষ্ঠা)

    ৫। দু‘আর মাহাত্ম্য সম্পর্কে আলোকপাত : দু‘আর ফজীলত ও মাহাত্ম্য প্রসঙ্গে হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে-

    عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَيْسَ شَيْءٌ أَكْرَمَ عَلَى اللَّهِ تَعَالَى مِنَ الدُّعَاءِ

    হযরত আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন–“আল্লাহ তা‘আলার নিকট দু‘আর চেয়ে অধিক সমাদৃত বিষয় নেই।”

    (বুখারী, আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদীস নং ৭১২/ জামি‘ তিরমিযী, হাদীস নং ৩৩৭০/ সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ৩৮২৯)

    দু‘আর ফজীলত ও মাহাত্ম্যের বর্ণনা এবং দু‘আর নির্দেশনা সম্পর্কে উপরে বর্ণিত কুরআনের আয়াত এবং এরপর বর্ণিত হাদীসের ন্যায় এরূপ অসংখ্য আয়াত ও হাদীস রয়েছে। উপরে উল্লিখিত এ সকল আয়াত ও হাদীসের হুকুম ব্যাপক ও বিস্তৃত–যা যে কোন সময়ে দু‘আ করাকে শামিল করে।

    আবার বিশেষ কোন স্থান, কাল বা পাত্র হিসেবে কিংবা বিশেষ মুহূর্তে দু‘আ করার কথাও পবিত্র কুরআন ও হাদীস শরীফে রয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ এ সম্পর্কিত কিছু আয়াত ও হাদীস নিম্নে উল্লেখ করা হলো-

    ৬। নিয়ামতের স্মরণে দু‘আ : আল্লাহ তা‘আলা বান্দাদেরকে স্বীয় নিয়ামতের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে একমাত্র তাঁর নিকট দু‘আ করার নির্দেশ প্রদান করে ইরশাদ করেন–

    هُوَ الَّذِي يُرِ‌يكُمْ آيَاتِهِ وَيُنَزِّلُ لَكُم مِّنَ السَّمَاءِ رِ‌زْقًا ۚ وَمَا يَتَذَكَّرُ‌ إِلَّا مَن يُنِيبُ فَادْعُوا اللَّـهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ وَلَوْ كَرِ‌هَ الْكَافِرُ‌ونَ

    “তিনিই সেই মহান সত্তা–যিনি তোমাদেরকে তাঁর নিদর্শনাবলী দেখান এবং তোমাদের জন্যে আসমান থেকে রিযিক নাযিল করেন। তারাই নসীহত গ্রহণ করে–যারা আল্লাহর দিকে রুজু হয়। অতএব, তোমরা দ্বীনকে খাঁটি করে আল্লাহ নিকট দু‘আ করো, যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে।”

    (সূরাহ মুমিন, আয়াত নং ১৩-১৪)

    ৭। নামাযের পর বিশেষ দু‘আ : নামায আদায়ের পর দু‘আ করার ব্যাপারে হাদীস শরীফে রয়েছে-

    عَنِ الْمُغيرَةِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ كَانَ النَّبِي صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم يَدْعُوْ فِيْ دُبُرِ صَلَاتِه

    হযরত মুগীরা (রা.) হতে বর্ণিত, “নবী কারীম (সা.) স্বীয় নামাযের পর দু‘আ করতেন।” (বুখারী-তারীখে কাবীর, ৬ষ্ঠ খণ্ড, ৮০ পৃষ্ঠা)

    অপর রিওয়ায়াতে রয়েছে-

    عَنْ اَبِىْ اُمَامَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ قِيْلَ لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَىُّ الدُّعَاءِ اَسْمَعُ قَالَ جَوْفَ اللَّيْلِ الْاَخِرِ وَدُبُرَ الصَّلَوَاتِ الْمَكْتُوْبَاتِ

    হযরত আবু উমামা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট জিজ্ঞাসা করা হলো–কোন দু‘আ সবচেয়ে বেশী কবূল হয়? তিনি ইরশাদ করলেন–“শেষ রাতের মাঝে এবং ফরজ নামাযসমূহের পরে।”

    (জামি‘ তিরমিযী, হাদীস নং ৩৮৩৮)

    ৮। বিশেষ সময়ের মাকবুল দু‘আ : আযানের সময় ও দ্বীনের জন্য যুদ্ধ করার মুহূর্তে দু‘আ কবূল হওয়া সম্পর্কে নিম্নোক্ত বর্ণিত হয়েছে-

    عن سهل بن سعد رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قال قال رسول الله صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثِنْتَانِ لا تُرَدَّانِ أو قَلَّما تُرَدّان الدعاءُ عند النداءِ وعند البأس حين يُلْحِمُ بعضهم بعضاً

    হযরত সাহল ইবনে সা‘দ (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন–“দু’টি দু‘আ ফেরানো হয় না অথবা বলেছেন, খুব কমই ফেরানো হয় : আযানের সময় দু‘আ ও যুদ্ধের সময় দু‘আ–যখন একে অপরের সাথে মুকাবিলায় অবতীর্ণ হয়।”

    (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৩০৭৯/ বাইহাকী-দাওয়াতে কাবীর, হাদীস নং ৫১)

    ৯। ব্যক্তিবিশেষের দু‘আর কবূলিয়্যাত : বিশেষ ব্যক্তিদের দু‘আর কবূলিয়্যাত সম্পর্কে নিম্নবর্ণিত হাদীসে বিবরণ রয়েছে-

    عن أبي هريرة رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ثَلاثُ دَعَوَاتٍ يُسْتَجَابُ لَهُنَّ لا شَكَّ فِيهِنَّ دَعْوَةُ الْمَظْلُومِ وَدَعْوَةُ الْمُسَافِرِ وَدَعْوَةُ الْوَالِدِ لِوَلَدِه

    হযরত আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন–“তিন ব্যক্তির দু‘আ এমন যে, তা কবূল হয়–এতে কোন সন্দেহ নেই : মজলুমের দু‘আ, মুসাফিরের দু‘আ ও সন্তানের ব্যাপারে জন্মদাতার (পিতা/মাতার) দু‘আ।”

    (জামি‘ তিরমিযী, হাদীস নং ৩৪৪৮/ সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ১৫৩৬/ সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ৩৮৬২/ মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং ৩৪৮ ও ৪৭৮)

    ১০। অবস্থার প্রেক্ষিতে বিশেষ দু‘আ : মৃতব্যক্তিকে কবরে দাফন করার পর দু‘আ করা সম্পর্কে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে-

    عن ابن مسعود رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قال رأيت رسول الله صلى الله عليه وسلم في قبر عبد الله ذي النجادين الحديث وفيه فلما فرغ من دفنه استقبل القبلة رافعا يديه

    হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন–“আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)কে আবদুল্লাহ যুন নাজ্জাদাঈনের কবরে দেখেছি।…… সেই হাদীসে রয়েছে–“যখন রাসূলুল্লাহ (সা.) তার দাফন থেকে ফারেগ হলেন, তখন কিবলার দিকে মুখ করলেন (দু‘আয়) স্বীয় হস্তদ্বয় উত্তোলন করা অবস্থায়।”

    (সহীহ আবু ‘আওয়ানাহ/ ফাতহুল বারী, ১১ খণ্ড, ১৪৪ পৃষ্ঠা)

    ১১। স্থানসংশ্রিষ্ট বিশেষ ‍দু‘আ : বিশেষ স্থানে বিশেষ আমলের মুহূর্তে ‍দু‘আ করার বিষয়ে বহু হাদীস বর্ণিত রয়েছে। হজ্বের সময় তাওয়াফে বাইতুল্লাহ, ওকূফে আরাফাহ্, সায়ীয়ে সাফা-মারওয়া প্রভৃতিতে দু‘আ করার বিষয়ে বহু হাদীস বিদ্যমান–যা খুবই প্রসিদ্ধ। তেমনি কোন বিশেষ স্থানে গমন কালে দু‘আ করার কথা নিম্নোক্ত হাদীসে রয়েছে–

    عن عبد الرحمن بن طارق عن أبيه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم كان إذا جاز مكانا من دار يعلى استقبل القبلة فدعا

    হযরত আবদুর রহমান ইবনে ত্বারীক (রা.) স্বীয় পিতা হতে বর্ণনা করেন যে, “রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন দারে ইয়া‘লার কোন স্থান অতিক্রম করতেন, তখন কিবলার দিকে মুখ করতেন, অতঃপর দু‘আ করতেন।” (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ২০০৭ / সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং ২৮৯৬)

    ১২। বিশেষ আমল করে দু‘আ : কোন গুরুত্বপূর্ণ নেক আমল করে যেমন, কুরআন শরীফ খতম ইত্যাদির পর দু‘আ করার কথাও হাদীস শরীফে রয়েছে। এ সম্পর্কে একটি আছার নিম্নরূপ–

    عن قتادة قال كان أنس بن مالك رضي الله عنه إذا ختم القرآن جمع أهله ودعا

    হযরত কাতাদাহ (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, “হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) যখন কুরআন শরীফ খতম করতেন, তখন স্বীয় পরিবারকে একত্রিত করতেন এবং দু‘আ করতেন।”

    (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবাহ, ৬ষ্ঠ খণ্ড, ১২৮ পৃষ্ঠা)

    এ সকল হাদীস দ্বারা বিভিন্ন বরকতময় সময়, স্থান, পাত্র, আমল ইত্যাদি উপলক্ষে দু‘আ করা শরীয়তসম্মত বলে প্রমাণিত হয়। সুতরাং তা মুস্তাহাব হওয়ার ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।

    আর এ জাতীয় ক্ষেত্রে শুধু মৌখিক দু‘আ নয়, হাত তুলে মুনাজাত করাও শরীয়তসম্মত। কারণ, শুধুমাত্র যে সকল দু‘আ সুনির্দিষ্ট–যা বিভিন্ন কাজকর্মের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে বর্ণিত হয়েছে, যেমন, খানা খাওয়ার আগের বা পরের দু‘আ, ইস্তিঞ্জাখানায় প্রবেশ ও বাহির হওয়ার দু‘আ, ঘুমানোর সময় এবং ঘুম থেকে উঠে পড়ার দু‘আ, আযানের পরের দু‘আ ইত্যাদি দু‘আ-ওজীফাসমূহ হাত না তুলে পড়া সুন্নাত, এ জাতীয় দু‘আ ছাড়া সাধারণভাবে কখনো নিজের হাজত পেশ করে দু‘আ করলে, তখন হাত তুলে দু‘আ বা মুনাজাত করা নিষেধ নয়। বরং তা মুস্তাহাব। আবার দু‘আর পর হাত মুখমণ্ডলে মুছে নেয়াও মুস্তাহাব হুকুম। এ সম্পর্কে দলীল নিম্নে বর্ণনা হলো-

    ১৩। হাত তুলে দু‘আ-মুনাজাত করার দলীল:

    দু‘আ করার সময় হাত তোলা দু‘আর বিশেষ আদব। দু‘আর সময় হস্তদ্বযের করতলের পেট সীনা বরাবর তুলে মুখের সামনে আসমানের দিকে করে রাখতে হয়। এ সম্পর্কে দলীল নিম্নবর্ণিত হাদীসে রয়েছে-

    عن مَالِكِ بْنَ يَسَارٍ رضي الله عنه أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِذَا سَأَلْتُمْ اللَّهَ فَاسْأَلُوهُ بِبُطُونِ أَكُفِّكُمْ وَلا تَسْأَلُوهُ بِظُهُورِهَا

    হযরত মালিক ইবনে ইয়াসার (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন–যখন তোমরা আল্লাহর নিকট চাইবে, তখন তোমাদের হাতের করতলসমূহের পেটের মাধ্যমে (হাথেলীর পেটের অংশ মুখের সামনে করে) চাও। সেগুলোর পিঠের মাধ্যমে (হাথেলীর পিঠের অংশ মুখের সামনে করে) চাইবে না।”

    (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ১৪৮৬)

    ১৪। দু‘আর পর হাতদ্বয় মুখমণ্ডলে মোছার দলীল:

    দু‘আর সময় হাত তোলার পর দু‘আর শেষে হস্তদ্বয় মুখমণ্ডলে মুছে নেয়া সুন্নাত–যা দু‘আর বরকত হাসিলের জন্য একটি বিশেষ আদব। নিম্নোক্ত হাদীসে এ বিষয়ে দলীল রয়েছে–

    عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا رَفَعَ يَدَيْهِ فِي الدُّعَاءِ لَمْ يَحُطَّهُمَا حَتَّى يَمْسَحَ بِهِمَا وَجْهَهُ

    হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন–“রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন দু‘আয় হাত তুলতেন, তখন হস্তদ্বয় নামাতেন না যাবত না সেগুলো মুখমণ্ডল মুছে নিতেন।”

    (জামি‘ তিরমিযী, হাদীস নং ৩৩৮৬)

    অপরদিকে এসব ক্ষেত্রে একাকি দু‘আ করা যেমন বিধিসম্মত, তেমনি সকলে মিলে ইজতেমায়ীভাবে দু‘আ করাও মুস্তাহাব। এক্ষেত্রে একজন দু‘আ করবেন এবং অন্যরা “আমীন” “আমীন” বলবেন। নিম্নে এর দলীল বর্ণনা করা হলো-

    ১৫। ইজতেমায়ী মুনাজাতের স্বপক্ষে দলীল

    ইনফিরাদী দু‘আর ন্যায় ইজতেমায়ী দু‘আ-মুনাজাতও বিধিসম্মত। নিম্নের হাদীসে এর দলীল রয়েছে-

    عن أبي هبيرة عن حبيب بن مسلمة الفهري وكان مستجاباً ( أي للدعوة) … .. قال للناس سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول لا يجتمع ملأ فيدعو بعضهم ويؤمن سائرهم إلا أجابهم الله

    হযরত আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি মুস্তাজাবুত দাওয়াহ হযরত হাবীব ইবনে মাসলামা ফিহরী (রা.) হতে বর্ণনা করেন,

    তিনি লোকদেরকে বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)কে বলতে শুনেছি–“যখনই কোন একদল লোক একত্রিত হবে, অতঃপর তাদের কেউ দু‘আ করবে এবং অন্য সকলে ‘আমীন’ বলবে, তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদের দু‘আ কবূল করবেন।”

    (মাজমা‘উয যাওয়ায়িদ, ১০ম খণ্ড, ২৬৬ পৃষ্ঠা/ মু‘জামে তাবরানী, ৪র্থ খণ্ড, ২১ পৃষ্ঠা )

    এমনি করে বিশেষ ক্ষেত্রে এ রকম ইজতেমায়ী দু‘আয় শরীক হওয়ার জন্য লোকদেরকে আহবান করা এবং তাদেরকে ‘আমীন’ বলার জন্য উদ্বুদ্ধ করাও শরীয়তসম্মত। এ সম্পর্কে নিম্নবর্ণিত আছারে প্রমাণ রয়েছে-

    أن عمر بن الخطاب رضي الله عنه عندما تولى الخلافة صعد المنبر فحمد اللّه وأثنى عليه ثم قال يا أيها الناس إني داع فأمنوا اللهم إني غليظ فَلَيِّني لأهل طاعتك بموافقة الحق ابتغاء وجهك والدار الآخرة …

    হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)খিলাফতের দায়িত্ব গ্রহণের লগ্নে মিম্বারে আরোহণ করলেন, অতঃপর মহান আল্লাহর তা‘রীফ করলেন এবং তাঁর গুণ বর্ণনা করলেন। অতঃপর বললেন-

    “হে লোকসকল! আমি দু‘আ করছি, এতে আপনারা ‘আমীন’ বলুন : আয় আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি কঠিন মানুষ, আপনি আপনার আনুগত্যশীল বান্দাদের জন্য ন্যায়ানুগভাবে আপনার সন্তুষ্টি ও দারে আখিরাতের অন্বেষণে আমাকে নম্র করে দিন।”

    (আল-ইক্বদুল ফারীদ, লি-ইবনে আবদে রাব্বী, ৪র্থ খণ্ড, ৩৫ পৃষ্ঠা)

    এ হাদীস দ্বারা বিশেষ করে কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজ আনজাম দেয়ার শুরুতে ইজতেমায়ীভাবে দু‘আ করার বিষয় প্রমাণিত হয়। সুতরাং তা নিঃসন্দেহে শরীয়তসম্মত।

    তেমনিরূপে ইজমেমায়ীভাবে দু‘আ করার জন্য মুনাসিব কোন স্থানে একত্রিত হওয়াও শরীয়ত অনুমোদন করে। এ প্রসঙ্গে নিম্নের আছারে দলীল রয়েছে-

    ১৬। মুনাজাতের জন্য কোন স্থানে একত্রিত হওয়ার দলীল:

    عن سعد بن أبي وقاص أن عبد الله بن جحش قال له يوم أحد : ألا تدعو الله ؟ فخلوا في ناحية فدعا سعد فقال: يا رب إذا لقيت العدو فلقني رجلا شديدا بأسه ، شديدا حرده ، أقاتله ويقاتلني فيك، ثم ارزقني الظفر عليه حتى أقتله وآخذ سلبه ، فأمن عبد الله بن جحش

    হযরত সা‘দ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে জাহাশ (রা.) তাঁকে গাযওয়ায়ে উহুদের দিন বললেন, আল্লাহর নিকট দু‘আ করবেন না? তখন তারা এককোণে আলাদা হয়ে গেলেন। অতঃপর সা‘দ (রা.) (দু‘আয়) বললেন, হে পরওয়ারদেগার! যখন আমি দুশমনের সাথে মিলিত হই, তখন আমাকে কঠিন লড়াইকারী ও কঠোর মুকাবিলাকারী পুরুষ বানিয়ে দিন। যেন আমি তার সাথে লড়তে পারি এবং সে আমার সাথে লড়ে; আর আমার এ কাজ হয় আপনার ওয়াস্তে। অতঃপর আমাকে তার উপর কামিয়াবী দান করুন, যেন তাকে হত্যা করতে পারি এবং তার সালাব গ্রহণ করি। তখন হযরত আবদুল্লাহ ইবনে জাহাশ (রা.)‘আমীন’ বললেন।

    (মু্স্তাদরাকে হাকিম, ২য় খণ্ড, ৮৬ পৃষ্ঠা/ মু‘জামে তাবরানী, / মাজমা‘উদ যাওয়ায়িদ, ৯ম খণ্ড, ৪৯৭ পৃষ্ঠা)

    এভাবে দু‘আ ও মুনাজাতের সাথে বিশেষ সময়, বিশেষ স্থান ও বিশেষ আমলের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে এবং হাত তুলে ও ইজতেমায়ী মুনাজাতের স্বপক্ষে স্পষ্ট বর্ণনা সম্বলিত উল্লিখিত আয়াত ও হাদীসসমূহের দ্বারা তাবলীগ জামা‘আতের বিশ্ব ইজতেমার মুনাজাত নিঃসন্দেহে মুস্তাহাব প্রমাণিত হয়। এ ব্যাপারে কারো আপত্তি তোলার কোন অবকাশ থাকে না।

    বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ:

    পরিশেষে কথা হলো, তাবলীগ জামা‘আতের বিশ্ব ইজতেমার উক্ত মুনাজাতকে না-জানা সাধারণ লোকেরা বা না-ওয়াকিফ মিডিয়া আখেরী মুনাজাত বললেও যারা এর বাস্তবতা সম্পর্কে ওয়াকিফহাল, তারা ভাল করেই জানেন যে, তাবলীগ জামা‘আতের লোকেরা এটাকে আখেরী মুনাজাত বলে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণা করেন না এবং সেভাবে পালন করেন না। বরং বিশ্ব ইজতিমার সম্মেলন তিনদিন যে মঞ্চ থেকে পরিচালনা করা হয়–শেষ দিন বাদ ফজর বয়ানের মাধ্যমে তা সমাপ্ত হয়ে যায়। এরপর তিনদিনের মেহনতে যারা তাবলীগের চিল্লায় বের হওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েছেন, তাদেরকে আলাদা করে তাশকীলের কামরায় একত্রিত করে তারা তাবলীগের কাজ কিভাবে আনজাম দিবেন–সে সম্পর্কে দিক নির্দেশনামূলক হিদায়াতী বয়ান পেশ করা হয় এবং পরিশেষে সেই কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য মহান আল্লাহর সাহায্য চেয়ে এবং বিশ্বমুসলিমের কল্যাণ কামনা করে দু‘আ করা হয়।

    বস্তুত টঙ্গি ইজতেমার সকল বয়ানের ন্যায় এ বিশেষ বয়ান ও দু‘আ করা হয় কোনরকম ই‘লান ও রসমী আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই এবং তার জন্য নির্দিষ্ট সময়ও ঘোষণা করা হয় না। যদ্দরুণ কেউ বলতে পারেন না যে, এ বয়ান ও মুনাজাত কখন হবে। যে জন্য এ বছর (২০১৪ খৃষ্টাব্দ) বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বে উক্ত বয়ান ও মুনাজাত জোহরের সময়ে করা হলেও দ্বিতীয় পর্বে তা সকল ১০টার দিকে শেষ হয়ে যায়। তাতে অনেকে জানতেও পারেন নি যে, মুনাজাত কখন হয়ে গেলো এবং মুনাজাতে অংশগ্রহণের জন্য বহু দূর-দুরান্ত থেকে বহু লোক এসেও তারা তাতে শরীক হতে পারেননি।

    মূলত তাবলীগ জামা‘আতের বিশ্ব ইজতেমার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে মূল বয়ানে অংশগ্রহণই কাম্য, কিন্তু মূল বয়ানে শরীক না হয়ে শুধু আখেরী মুনাজাতে শরীক হওয়ার জন্য অসংখ্য মানুষ শেষদিন সকালে ইজতেমামুখী হয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ভিড় বাড়িয়ে মূল ইজতেমায় অংশগ্রহণকারীগণের জন্য বিড়ম্বনারই কারণ হন–যা তাবলীগ জামা‘আতের মুরব্বীগণ কামনা করেন না। সে জন্য এবার দ্বিতীয় পর্বে অনেক আগেই মুনাজাত শেষ করা হয়।

    শেষ কথা:

    বিশেষ সময়ে বিশেষ উপলক্ষে ইজতেমায়ী দু‘আ-মুনাজাতের ব্যাপারে উপরে বর্ণিত দলীল-প্রমাণ দ্বারা তাবলীগ জামা‘আতের টঙ্গির বিশ্ব ইজতেমার মুনাজাত শরীয়তসম্মত বলে প্রমাণিত হয়। তদুপরি যথাসম্ভব ইহতিয়াত অবলম্বন করে এ দু‘আ ও মুনাজাতের মুস্তাহাব আমল পালন করা হয়। এতদসত্ত্বেও আহলে হাদীস নামক লোকদের এ মুনাজাতের বিরুদ্ধে কটূক্তি করা তাবলীগ জামা‘আতের বিরুদ্ধে দূরভিসন্ধিমূলক অপপ্রচার ছাড়া আর কিছু নয়। তাদের তাবলীগবিরোধী এ অপপ্রয়াস হকের পথ থেকে মুসলমানদেরকে দুরে সরোনোর শামিল। তাই তাদের এ অপতৎপরতা থেকে মুসলমানদের দুরে থাকা কর্তব্য।

    দ্বীনী এ পোস্টকে শেয়ার করে ইসলামের আলো পৌঁছে দিন প্রিয়জনদের কাছে। দ্বীনের হিদায়াতের সমূজ্জ্বল আলোকরশ্নিতে আলোকিত হোক মুমিনদের হৃদয়।

    আখেরি মোনাজাতের দোয়া
    আখেরি মোনাজাত কি
    আখেরী মোনাজাত

    সম্পর্কিত পোস্ট:


    নোটঃ বিশ্ব ইজতেমার আখেরী মুনাজাত কি বিদআত? শরয়ী সমাধান! Download করতে কোন ধরনের সমস্যা হলে আমাদেরকে জানান। যোগাযোগ করতে এখানে ক্লিক করুন।

    মীযান জামাতের সমস্ত কিতাব PDF Download

    নাহবেমীর জামাতের কিতাব PDF Download

    হেদায়াতুন নাহু জামাতের কিতাব PDF Download

    কাফিয়া জামাতের কিতাব PDF Download

    শরহে জামী জামাতের কিতাব PDF Download

    জালালাইন জামাতের কিতাব PDF Download

    মেশকাত জামাতের কিতাব PDF Download

    দাওরায়ে হাদিসের কিতাব সমূহ PDF Download

    মাদানী নেসাবের কিতাবসমূহ PDF Download

    Leave a Comment

    This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.