সূদী ব্যাংকের কাজ করা নিষিদ্ধ এবং আপনার জন্য বৈধ নয় কাজ চালিয়ে যাওয়া কেননা তা পাপ এবং সীমালঙ্ঘনের কাজে সহায়তার মধ্যে পড়ে।
❑ আমি ব্যাংকের একজন সাধারণ কর্মচারী। আমি তো সূদ খাই না! আমার উপার্জন তো হালাল?
আপনি সুদী ব্যাংকের জন্য সফটওয়্যার তৈরি করছেন, ডাটাবেজ বানাচ্ছেন, দারোয়ানের চাকুরী করছেন, সিকিউরিটির চাকুরী করছেন, নেটওয়ার্ক ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছেন কিংবা ড্রাইভার হিসেবে আছেন … যা-ই করুন না কেন আপনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সূদী কারবারে সহযোগিতা করছেন।
❑ ইসলামী ব্যাংকের চাকরী তো হালাল?
সূদমুক্ত ব্যাংকে চাকরী অবশ্যই হালাল। কিন্তু বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশের কোন ব্যাংকই শতভাগ সূদমুক্ত নয়। ইসলামী ব্যাংকগুলো সুদভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মাঝে কার্যক্রম পরিচালনা করে বিধায় তারা কিছু ক্ষেত্রে সুদমুক্ত লেনদেন করতে পারে না। যেমন- কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাথে যে বাধ্যতামূলক সঞ্চিতি, (SRR) এবং Foreign Currency Clearing Account এ জমাকৃত বৈদেশিক মুদ্রার উপরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদ দেয়। বিদেশী ব্যাংকগুলোর সাথে ইসলামী ব্যাংকের যে Nostro Account থাকে, সেটা চলতি হিসাব হলেও Overnight lending থেকে তারা সেখান থেকে সুদ পায়। তবে, এসব উৎস থেকে আসা অর্থ ব্যাংক তার মূল আয়ের মাঝে অন্তর্ভুক্ত না করে শরীয়াহ কাউন্সিলের নির্দেশিত পন্থায় ব্যয় করে।
❑ তাহলে আমি এতদিন বেতন বাবদ ব্যাংক থেকে যে অর্থ গ্রহণ করেছি তাও কি হারাম?
আমরা আশা করা যায়, বিগত সময়ে ব্যাংকে কাজ করার জন্য আল্লাহ্ আপনার গুনাহ্ ক্ষমা করবেন। এই সময়ে আপনি যা আয় করেছেন এবং ঐ অর্থ দিয়ে যেসব কাজ করেছেন তাতে কোন সমস্যা নেই, যদি এই বিষয়ে আপনি ইসলামের বিধান না জেনে থাকেন।
সূদী ব্যাংকের বিষয়টি স্পষ্ট। তাই এটি থেকে দূরে থাকা আবশ্যক। ইসলামী ব্যাংকের ব্যাপারেও সতর্ক হতে হবে। কেননা আল্লাহ তা‘আলা সূদকে হারাম করেছেন এবং সূদখোরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন১। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, সূদগ্রহীতা, সূদ দাতা, সূদের দলীল লেখক এবং সূদের সাক্ষী সকলের উপর আল্লাহর লা‘নত। আর (পাপের দিক দিয়ে) তারা সকলে সমান২।
অতএব সূদী ব্যাংকে চাকুরীজীবি সূদ ভক্ষণকারীর ন্যায় গোনাহগার হবে এবং তার যাবতীয় উপার্জনও হারাম হবে। কিয়ামতের দিন পাপীদের কৃতকর্ম সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘আর আমরা তাদের কৃতকর্মসমূহের দিকে অগ্রসর হব। অতঃপর সেগুলিকে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত করব’৩।
——————
১. বাক্বারাহ ২/২৭৮-৭৯
২. মুসলিম হা/১৫৯৮, মিশকাত হা/২৮০৭
৩. ফুরক্বান ২৫/২৩