মাওলানা ওমর আলী রাহ. সম্পর্কে মাওলানা ইসহাক ওবায়দীর অভিব্যক্তিটি পড়ে বেশ উপকৃত হয়েছি। আল্লাহ তাআলা তাঁকে জাযায়ে খায়ের দান করুন আমীন। কিন্তু এই প্রবন্ধে ‘ইসলামী বিশ্বকোষ’কে বেশ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অথচ আমি আগে এটিকে এতটা গুরুত্ব দিতাম না। তাই প্রশ্ন জাগে, বাস্তবিকই কি এটি নির্ভরযোগ্য? জানালে উপকৃত হব।
সার্বিক বিবেচনায় এই বিশ্বকোষটিকে নির্ভরযোগ্য বলা মুশকিল। তবে এটাও ঠিক যে, কিছু বিষয়ের উত্তম ও নির্ভরযোগ্য কিছু প্রবন্ধ এতে রয়েছে। বিশেষত সঠিক চিন্তা-চেতনার অধিকারী মুহাক্কিক আলেম কর্তৃক যেসব প্রবন্ধ রচিত হয়েছে তা নিঃসন্দেহে সঠিক ও নির্ভরযোগ্য। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে, এর অধিকাংশই হচ্ছে প্রাচ্যবিদদের রচিত বিভিন্ন প্রবন্ধের হুবহু অনুবাদ। আর কিছু প্রবন্ধ এমনও আছে, যা অপরিপক্ক আলেম কর্তৃক রচিত, যাদের সরাসরি ইসলামী মাসাদির থেকে জ্ঞান অর্জনের যোগ্যতা নেই। যারা বিভিন্ন অনুবাদ ও দ্বিতীয় পর্যায়ের কিতাবগুলো সামনে রেখে লিখে থাকেন। এ জাতীয় রচনা তথ্যের দিক থেকেও গ্রহণযোগ্য নয়, দ্বীন শিখা তো পরের কথা।
মাওলানা ওমর আলী রাহ.-এর একটি বিশেষ কীর্তি এই যে, যখন তিনি মাওলানা আবুল হাসান আলী নদভীসহ অন্যান্য মুহাক্কিক আলেমের সোহবত লাভ করেন আর তাঁর কাছে প্রাচ্যবিদদের ইসলাম-বিদ্বেষ স্পষ্ট হয় সাথে এই রচনার অন্যান্য ত্রুটি-বিচ্যুতির প্রতিও তার দৃষ্টি নিবদ্ধ হয় তখন তিনি অনেক মেহনত করে এই মর্মে রেজুলেশন পাশ করিয়ে নেন যে, রচনাটি নতুনভাবে সংশোধন করা হবে। এর জন্য একটি‘সম্পাদনা বোর্ড’ও গঠন করা হয়।
আমার জানা মতে, এই বোর্ড এখনও তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। যদি তাঁরা গভীরভাবে পুনঃসম্পাদনা করেন এবং সে অনুযায়ী সংকলনটি পুনঃপ্রকাশ করা হয় তাহলে ইনশাআল্লাহ রচনাটির অবস্থাআগের চেয়ে ভালো হবে বলে আশা করা যায়।
মাওলানা ইসহাক ওবায়দী সাহেবও এই রচনাটিকে নির্ভরযোগ্য বলেননি; বরং তাঁর উদ্দেশ্য হল বাংলা ভাষা-যার রচনা-ভাণ্ডার ‘ইলমী’ কাজ থেকে প্রায় শূন্য-সে ভাষায় এই বিরাট সংকলন তৈরি হওয়াও কম কথা নয়?