মাওলানা সা’দ সাহেবের ব্যাপারে দারুল উলূম দেওবন্দের আজকের ফতওয়া-
১৩ জুমাদাল উলা ১৪৩৯ হিজরি রোজ বুধবার দারুল উলূম দেওবন্দ থেকে মাওলানা সাদ সাহেব সম্পর্কে সর্বশেষ অবস্থান জানিয়ে দারুল উলূমের ওয়েবসাইটে একটি ‘ওয়াদাহাতনামা’ [অবস্থান স্পষ্টিকরণ প্রজ্ঞাপন] জানানো হয়েছে।
বাংলাভাষী পাঠকদের জন্যে অনুবাদ করা হচ্ছে। সাথে সাথে মহান আল্লাহর শোকর আদায় করছি যে, তিনি আমাদের জন্যে দারুল উলূম দেওবন্দের মত বাতিঘর দিয়েছেন। মহান আল্লাহ দারুল উলুমকে সমস্ত বাতিলের শকুনি চোখ থেকে নিরাপদ রাখুন। আমীন!
বি ইসমিহি তাআলা-
হযরত মুসা আলাইহিস সালামের ঘটনা থেকে জনাব মাওলানা মুহাম্মদ সাদ সাহেবের রুজু ঘোষণার পর থেকে বিগত ক‘দিন ধরে দেশ-বিদেশ থেকে অনেকেই দারুল উলূম দেওবন্দের অবস্থান সম্পর্কে নিয়মিত প্রশ্ন করে চলেছেন।
যার পরিপ্রেক্ষিতে এ কথা স্পষ্ট করা দরকার যে, শুধু মুসা আলাইহিস সালামের ঘটনার ব্যাপারে মাওলানা সাদ সাহেবের রুজু সম্পর্কে আমরা আশ্বস্ত হয়েছি; কিন্তু দারুল উলূম দেওবন্দের [পূর্ব ঘোষিত] অবস্থানে মাওলানার যেই অাদর্শিক গুমরাহির ওপর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল, তা প্রত্যাহার করা এখনো সম্ভব নয়। কারণ, একাধিকবার রুজু করার পরও ক্ষণে-ক্ষণে মাওলানা সাদ সাহেবের মুখ থেকে একের পর এক এমন নিত্য-নতুন আলোচনা শোনা যাচ্ছে, যেখানে সেই আগের মতই একান্তই নিজস্ব ইজতিহাদ, ভুল দলিলবাজি ও দাওয়াতের মেহনত সম্পর্কে তার নিজস্ব চিন্তাধারার ওপর কুরআন-সুন্নাহর ভুল প্রয়োগ পরিলক্ষিত হচ্ছে। যার কারণে শুধু দারুল উলূম দেওবন্দ সংশ্লিষ্ট উলামায়ে কেরামই নন; অন্যান্য হকপন্থী আলেমগণও মাওলানার সামষ্টিক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে মারাত্মক অসন্তুষ্ট।
আমরা মনে করি, আকাবির রহিমাহুমুল্লাহুর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সামান্য বিচ্যূতিও তীব্র ক্ষতিকর। মাওলানাকে অবশ্যই নিজ বয়ানের মাঝে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। পূর্বসূরীদের পথের পথিক হয়ে শরিয়তের ভাষ্য থেকে নিজের পক্ষে ইজতিহাদের এই ধারাবাহিকতা বন্ধ করতে হবে। কেননা মাওলানার এই মূলচ্যূত ইজতিহাদপনা দেখে আমাদের মনে হচ্ছে, খোদা না খাস্তা তিনি এমন এক নতুন সংগঠন তৈরি করতে উদ্যোগী হয়েছেন, যা আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ; বিশেষত আমাদের আকাবির রহ. এর মতাদর্শ থেকে ভিন্ন হবে। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে আকাবির-আসলাফের পথের ওপর অবিচল রাখুন। আমীন।
যারা দারুল উলূম দেওবন্দের কাছে বারবার শরণাপন্ন হচ্ছেন, তাদেরকে পুনরায় অবহিত করা হচ্ছে যে, তাবলীগ জামাতের অভ্যন্তরীণ মতভেদের সঙ্গে দারুল উলূমের কোনো সম্পর্ক নেই। প্রথম দিন থেকেই আমরা সেই ঘোষণা জানিয়ে আসছি। এতদসত্ত্বেও যখনই কারো ভুল চিন্তাধারা ও মতাদর্শ সম্পর্কে দারুল উলুমকে জিজ্ঞেস করা হবে, দারুল উলুম সবসময় উম্মাহকে পথ দেখানোর চেষ্টা করবে। এ কাজটিকে দারুল উলূম নিজের শারঈ এবং দ্বীনী দায়িত্ব মনে করে।
স্বাক্ষর করেছেন,
১. মাওলানা আবুল কাসেম নোমানি দা.বা.।
২. মাওলানা আরশাদ মাদানি দা.বা.।
৩. মুফতি সাঈদ আহমদ পালনপুরি দা.বা.।
১৩ জুমাদাল উলা ১৪৩৯ হিজরি।
৩১শে জানুয়ারি, ২০১৮। রোজ বুধবার।
(একপাশে দারুল উলূম দেওবন্দের অফিসিয়াল সিলমহর অঙ্কিত রয়েছে।)