বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাযিঃ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেছেন, কিয়ামত সংঘটিত হবেনা যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো মানুষ অন্যের কবরের পার্শ্ব দিয়ে অতিক্রম করার সময় বালা-মসিবত ও ফিতনার কারণে এ আশা করবেনা যে, হায়! আমি যদি এ কবরের বাসিন্দা হতাম!
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৪১ ]
হযরত আবু হুমায়দ (রহঃ) বলেন, আমি হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) কে বলছে শুনেছি যে, অবশ্যই তোমাদের উপর এমন দিন আসবে, যে তোমাদের মধ্যে কেউ যখনা তার কোন ভাইয়ের কবরের পাশ দিয়ে হাটবে, তখন সে বলতে থাকবে হায়! আমি যদি তার স্থানে হতাম।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৪২ ]
হযরত আব্দুল্লাহ রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মানুষের মধ্যে এমন এক যুগ আসবে, মানুষ কারো কবরে এসে সেখানে শুয়ে পড়বে এবং বলতে থাকবে, হায়! আমি যদি এ কবরের একজন সদস্য হতাম! এটা অবশ্যই আল্লাহ তাআলার সাথে অগ্রীম সাক্ষাতের আশায় নয়, বরং সেটা হবে মারাত্মক মারাত্মক বালা-মসিবদ দেখার কারণে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৪৩ ]
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল সাঃ বলেছেন, ততদিন পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবে না যতদিন না কোন ব্যক্তি তার কোন ভাইয়ের কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম করবে। অতঃপর বলতে থাকবে হায়! আফসুস যদি আমি তোমার জায়গায় হতাম, (তাহলে কতইনা ভাল হত)।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৪৪ ]
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মানুষের উপর এমন যমানা আসবে যে, তখন তাতে তাদের কারো কাছে উত্তপ্ত গরমের দিনে ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করার চেয়ে মৃত্যু বরণ করা বেশি পছন্দ করবে, অতঃপর সে মৃত্যুবরণ করবেনা।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৪৫ ]
হযরত আব্দুল্লাহ রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মানুষের মধ্যে এমন এক যুগ আসবে, মানুষ অন্যদের কবরে এসে পশুর ন্যায় গড়াগড়ি খেতে থাকবে এবং খুবই আশাবাদি হয়ে বলবে,হায়! আমি যদি একবরের বাসিন্দা হতাম! এটা অবশ্যই আল্লাহ তাআলা সাথে সাক্ষাতের আশায় নয়,বরং এটা হচ্ছে,মারাত্মক বালা-মসিবতের সম্মুখিন হওয়ার কারণে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৪৬ ]
ভিন্ন সুত্রে উপরের হাদিস বর্নিত হয়েছে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৪৭ ]
হযরত আব্দুল্লাহ রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি এরশাদ করেন, কিয়ামত হবেনা, যতক্ষণ পর্যন্ত না মানুষ কোনো কবরের কাছে এসে চতুষ্পদ জন্তুর ন্যায গড়াগড়ি দিয়ে বলবেনা যে, হায়! আমি যদি একবরের বাসিন্দা হতাম।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৪৮ ]
হযরত আবতাত ইবনে মুনজির, আবু আশুরা আলহাজরামী থেকে বর্ণন করেন, তিনি বলেন, যদি তোমাদের হায়াত দীর্ঘ হয়, তাহলে তোমাদের হয়তো তার ভাইয়ের কবরে এসে তার থেকে উপকৃত হতে চেষ্টা করবে এবং বলবে, হায়! আমি যদি তোমার স্থলে হতাম তাহলে অবশ্যই মুক্তি পেয়ে যেতাম।
তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, হে আবু আযবাহ! গোত্রে নতুন কোনো সন্তান জন্মলাভ করলে তাকেও কি ঐ ফিতনা গ্রাস করে নিবে। জবাবে তিনি বললেন, এক প্রান্ত হতে তোমাদেরকে দুশমন হাতছানি দিয়ে ডাকতে থাকবে। এহেন পরিস্থিতিতে অন্য প্রান্ত হতে দুশমনের আরেকদল হামলা করে বসবে। তখন তোমাদের হুশ থাকবেনা যে, কোন দুশমন থেকে পলায়ন করবে। তখনই মূলতঃ উল্লিখিত সূরত প্রকাশ পাবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৪৯ ]
আবু আযবা হাজরামী থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যদি তোমাদের সামান্য একটু হায়াত বৃদ্ধি পায় তাহলে হয়তো এমন অবস্থা হবে, তোমাদের কেউ তার বন্ধুর কবরে এসে উক্ত কবরবাসীর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে বলবে, হায়! আমি যদি তোমার স্থলে হতাম তাহলে নিঃসন্দেহে মুক্তি পেয়ে যেতাম।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৫০ ]
হযরত কা’ব রহঃ থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন, অতিসত্ত্বর সমুদ্র এত বেশি কঠিন হবে, যার কারণে তার উপর কোনো জাহাজ চলতে পারবেনা এবং তেমনিভাবে স্থলভাগও এমন কঠিন হয়ে উঠবে ফলে কেউ তার উপর দিয়ে অতিক্রম করে নিজের ঘর পর্যন্ত পৌঁছতে পারবে না।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৫১ ]
বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযি রাযি বলেন, নিঃসন্দেহে মানুষের মাঝে এমন এক যুগ আসবে, যখন মানুষ বিভিন্ন ধরনের বালা-মসিবতের সম্মুখিন হওয়ার কারণে আকাঙ্খা করবে যে এবং তার পরিবার যেন বোঝাই করা মালবাহি জাহাজে আরোহন করবে এবং উক্ত জাহাজটি সমুদ্রের উত্তাল তরঙ্গমালা সমুদ্রে দুলতে থাকবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৫২ ]
হযরত আব্দ্ল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আমরাযি থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মানুষের মাঝে এমন এক যুগ আসবে, সম্মানী, সম্পদশালী ও পরিবার-পরিজন ওয়ালা লোক পর্যন্ত মৃত্যু কামনা করবে যেহেতু তারা তাদের নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের পক্ষ থেকে নানান ধরনের বালা-মসিবদের সম্মুখিন হবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৫৩ ]
বিশিষ্ট সাহাবী হযরত মু’তাজ ইবনে জাবাল রাযি, থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তোমরা এ পৃথিবীতে শুধুমাত্র ফিতনা ও বালা-মসিবতই দেখতে পাবে। যেকোনো বিষয় ধীরে ধীরে কঠিন হতে থাকবে। নেতৃত্বাস্থানীয় ব্যক্তিদের মধ্যে কঠোরতাই দেখতে পাবে। এমন বিষয় দেখবে যা তোমাদেরকে ভীতিকর করে তুলবে। কিন্তু তার পরবর্তী ধাপ এর থেকে আরো কঠিন ও ভয়াবহ হয়ে উঠবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৫৪ ]
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এমন সময় আসন্ন হবে যে, ওলামাগনের নিকট লাল বর্ণের স্বর্ণের চেয়েও মৃত্যু বেশী পছন্দনীয় হবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৫৫ ]
হযরত উমায়র ইবনে ইসহাক বলেন, আমরা আলোচনা করতে ছিলাম যে, মানুষের থেকে সর্ব প্রথম ভালোবাসা (বন্ধুত্য) উঠে যাবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৫৬ ]
হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাঃ থেকে ফিতনার আলোচনা শুনেছি। অতঃপর আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ তা কখন হবে? রাসূল সাঃ বললেন, যখন কোন ব্যক্তি তাব বন্ধু থেকে নিরাপদ পাবেনা।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৫৭ ]
হযরত হামাম ইবনে ওতাইবা রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মানুষের মধ্যে এমন এক যুগ আসবে যদ্বারা কোনো বিজ্ঞলোকে চক্ষু শীতল হবে না।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৫৮ ]
বিশিষ্ট সাহাবী হযরত যোয়ায ইবনে জাবাল রাযি থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন তোমরা দেখবে বিনা অপরাধে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, মিথ্যার কারণে মানুষকে টাকা-পয়সা দেয়া হচ্ছে, আর মানুষের মধ্যে নাস্তিক মুরতাদ হওয়া, সন্দেহ করা ও অভিশাপ দেয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে তখন তোমাদের মধ্যে যারা মারা যেতে চাও তারা যেন মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৫৯ ]
হযরত আবু সালামা (রহঃ) বলেন, আমি হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) কে বলতে শুনেছি যে, মানুষের উপর এমন এক যমানা আসবে যে, তখন আলেমের কাছে লাল স্বর্ণের চেয়েও মৃত্যু বেশী পছন্দনীয় হবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৬০ ]
হযরত যায়েদ ইবনে ওয়াহাব রাযি থেকে বর্ণিত, তিনি হযরত আব্দুল্লাহ রাযি কে বলতে শুনেছেন, নিঃসন্দেহে ফিতনা ধীরে ধীরে একের পর এক আসতে থাকবে। উক্ত ফিতনার সময় যারা মারা যেতে চায় তারা যেন মৃত্যু গ্রহণ করে নেয়।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৬১ ]
হযরত যায়েদ ইববে ওয়াহাব বিশিষ্ট সাহাবী হযরত হোজাইফা ইবনুল ইয়ামান রাযি থেকে বর্ণনা করেন, তিনি এরশাদ করেন ঃ ফিতনার স্থিতিশীলতা হচ্ছে, যখন তরবারিকে খাপবদ্ধ করা হয় আর ফিতনার তীব্রতা হচ্ছে, যখন তরবারিকে খাপমুক্ত করে নাঁঙ্গা করা হবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৬২ ]
বিশিষ্ট সাহাবী হযরত হোযাইফা রাযি হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ফিতনার জন্য কিছুটা স্থিতিশীলতা ও কিছুটা তীব্রতা রয়েছে। এ ধরনের তীব্র ফিতনার সময় কেউ মৃত্যুবরণ করতে চাইলে যেন মৃত্যুকে গ্রহণ করে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৬৩ ]
হযরত আবু উসমান রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি এর সাথে বসা ছিলাম হঠাৎ তার উপর চড়–ই পাখির মল এসে পড়লে তিনি যেগুলোকে তার আঙ্গুল উঠিয়ে নিয়ে বললেন, আমার কাছে আমার পরিবার-পরিজন ও সন্তান-সন্তুতি মৃত্যুবরণ করা এর থেকেও অনেক সহজ। এরপর বর্ণনাকারী বললেন,আল্লাহর কসম! তাঁর একথার দ্বারা কি উদ্দেশ্য আমরা বুঝতে পারলামনা।এক পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের ফিতনা আসতে থাকল। অতঃপর আমরা বললাম, এটা সেই ফিতনা তাদের উপর পতিত হতে থাকে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৬৪ ]
হযরত আবুল আহওয়াছ রহঃ বলেন, একদা আমরা বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি এর ঘরে গিয়ে দেখি তার সন্তানদেরকে নিয়ে তিনি বসে আছেন। তার ছেলেগুলো দেখতে উজ্জ্বল দিনারের ন্যায় সুন্দর। তাদের সৌন্দর্য দেখে আমরা খুবই আশ্চর্য হতে থাকলাম। অতঃপর হযরত আব্দুল্লাহ আমাদেরকে বললেন, মনে হয় তোমরা এদের কারণে আমার উপর ইর্ষান্বীত হয়েছ, জবাবে আমরা বললাম, আল্লাহর কসম! নিঃসন্দেহে এমন ছেলেদের ক্ষেত্রে প্রত্যেক মুসলমান পুরুষ ইর্ষা করবে। আমাদের কথা শুনে তিনি তার ছোট্ট ঘরটির ছাদের দিকে মাথা উঠালেন। এদিকে ঘরের জীর্ণ ছাদে কিছু পাখি বাসা বেঁধেছে এবং উক্ত বাসায় ডিমও দিয়েছে। অতঃ তিনি বললেন, কসম যে সত্ত্বার যার হাতে আমার জীবন! আমার এ সন্তানদের কবরে মাটি দেয়া আমার নিকট অনেক-অনেক পছন্দনীয় এদের উপর ঐ হিংস্র পাখির বাসাগুলো পতিত হয়ে তাদের ডিম ভেঙ্গেঁ যাওয়া থেকে। উক্ত হাদীসের বর্ণনকারী হযরত ইবনুল মোবারক বলেন, এটা মূলতঃ তাদের উপর আসন্ন ফিতনার ভয়ে বলেছেন।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৬৫ ]
হযরত হোজাইফা ইবনুল ইয়ামান রাযি বলেন, হে আবুততোফাইল! তোমার কি অবস্থা হবে, যখন আমাদের উপর বিভিন্ন ধরণের ফিতনা আসতে থাকবে। তখন সর্বোত্তম মানুষ হবে প্রত্যেক ধনী লোক যারা তাদের ধনাঢ্যতা গোপন রাখবে।
অতঃপর আবুত্ তোফাইল রহঃ বলেন, তখন কি অবস্থা হবে, নিশ্চয় সেটা আমাদের প্রতি এমন দার করা যদ্বারা মানুষ নিম্নস্তরে পতিত হবে এবং নিক্ষিপ্ত হবে অনেক গভীরে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৬৬ ]
হযরত নোমান ইবনে মোকাররিনি রহঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,রাসুলুল্লাহ যা, এরশাদ করেছেন, ফিতনা এবং যুদ্ধবিগ্রহকালীন যারা এবাদতের ওপর অটল থাকবে তারা আমার প্রতি হিজরত করার প্রতিদান প্রাপ্ত হবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৬৭ ]
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযি থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলার কাছে অতি পছন্দনীয় বস্তু হচ্ছে ‘আল গুরাবা’। অর্থাৎ গরীব-মিসকীনগণ। তার কাছে গুরাবা কারা জানতে চাইলে জবাবে তিনি বললেন, যারা তাদের দ্বীনসহকারে এদিক সেদিক পলায়ন ও আত্মগোপন করতে থাকবে, এক পর্যায়ে হযরত ঈসা ইবনে মারইয়ম আঃ এর সাথে মিলিত হবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৬৮ ]
হযরত কিনানা রাযি থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা রবীয়ার অধীন থাকাকালীন একদা হয়রত যুবাইর রাযি ও তার কিছু আসহাব কে সাথে নিয়ে আমাদের কাছে আসলেন। এদিকে আমদের গোত্রপতিগণ আলী রাযি এর সাথে মিলিত হলেন, এবং আমরা সকলে একত্রিত হয়ে পরামর্শ করছিলাম। আমাদের কেউ কেউ বলল, হয়তবা আমরা এর সাথে গিয়ে থাকলে আমাদের সরদারগণ আলীর সাথে থাকবে। তখন আমরা তাদের সাথে কিভাবে মোকাবেলা করব! আমরা আবার বললাম, আমরা মোকাবেলার জন্য বের হলে উভয় দল যখন একে অপরের সামনা সামনি হবে তখন আমরা তাদের সাথে মিলিত হয়ে যাব। আবার আমাদের কেউ কেউ পরামর্শ দিল, এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত হতে পারছিনা। তাহলে এমন হতে পারে যে, আমরা তাদের কাছে অনুমতি প্রার্থনা করব, অনুমতি মিললে আমরা নিরাপদে পৌঁছে যেতে পারব। না হয় আমরা আমাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকব। এক পর্যায়ে আমাদের দলবল সহকারে হযরত যোবাইর রাযি, এর কাছে এসে বললাম, আমাদের মুসলমানগণ কাদের সাথে থাকবে। জবাবে তিনি বললেন, কেন! তাদের মাওলার সাথে থাকব। তার কথা শুনে আমরা বললাম, আমাদের মওলাগণ হযরত আলীর সাথে রয়েছেন। বর্ণনাকারী বলেন, এটা শুনে তার অবস্থা এমন হল যেন আমরা তার মুখে পাথর নিক্ষেপ করলাম। এরপর বেশ কিছুক্ষন চুপ থেকে বললেন, আমরা এটাকেই ভয় করে আসছিলাম।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৬৯ ]
হযরত আবু সালেহ থেকে বর্ণিত, যখন হযরত আলী রাযি কিছু বাহাদুর পুরুষের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করলেন, তখন বললেন, এ ধরনের ঘটনা সংঘটিত হওয়ার বিশ বৎসর পূর্বে মৃত্যুবরণ করাটাই আমার নিকট অতি পছন্দনীয় ছিল।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৭০ ]
হযরত হাসান থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, হযরত আলী রা. ধারণা করেন, তিনি যে আমল করেছেন কোন আমলই করেননি। এবং আম্মার রা. ধারণা করেন তিনি যে আমল করেছেন কেমন যেন কোন আমলই করেননি। অনুরূপ ত্বলহা রা.ও ভয় করেন তিনি যে আমল করেছেন কেমন যেন কোন আমলই করেননি। এবং যুবায়ের রা. ও তদ্রুপ ধারণা করেন তিনি যে আমল করেছেন কেমন যেন কোন আমলই করেননি। তারা সকলে এমন এক জাতির নিকট আবতরণ করলেন যাদের গ্রন্থসমূহ সুসজ্জিত, আখেরাতবাসী। তখন তারা এদের মাঝে যুদ্ধ বাধিয়ে দিলেন।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৭১ ]
হযরত ঈসা ইবনে উমর থেকে বর্ণিত তিনি বলেন আমি এক বৃদ্ধ ব্যক্তি কে আমর ইবনে র্মুরার নিকট হাদীস বর্ণনা করতে শুনেছি, তিনি বলেন আব্দুল্লাহ আমর বলেন আমি তাঁকে ব্যতিত আর কারো নিকট এই বিষয়ে বার বার বলতে দেখিনি, আমি এই আয়াত পড়তেছিলাম “ নিশ্চয় আপনি মৃত্যবরণ করবেন এবং তারা ও মৃত্যবরণ করবে অতপর কিয়ামত দিবসে তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট ঝগড়া করবে। (যুমার:৩১) আর আমার ধারণা ছিল, এটা আহলে কিতাবদের সম্পর্কে, এক পর্যায়ে আমাদের কতিপয় লোক কতিপয় লোকদের চেহারায় তরবারী দ্বারা আঘাত আনল তখন আমাদের বুঝতে আর বাকি রইল না যে এটা আমাদের মধ্যে হবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৭২ ]
হযরত হাসান থেকে বর্ণিত, তিনি আল্লাহ বাণী বলেন “ এবং সেই বিপর্যয়কে ভয় কর, যা বিশেষভাবে তোমাদের মধ্যে যারা জুলুম করে কেবল তাদেরকেই আক্রান্ত করবে না।” বলেন আল্লাহর শপথ, নিশ্চয়ই জাতি জানে যখন এই আয়াত অবতীর্ণ হয়, আর তা হল, এই ফিৎনার সাথে একদল লোক রুক্ষভাষা ব্যবহার করবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৭৩ ]
হযরত কয়েস বিন উবাদ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি হযরত আলী রা. কে বললাম, এ বিষয়ে রসূলুল্লাহ সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম কি আপনাকে কোন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেনে? তখন তিনি বলেন, এ ব্যাপারে রসূলুল্লাহ সা. আমাকে এমন কোন প্রতিশ্রুতি দেননি যা মানুষের সাথে করেননি। তবে মানুষ হযরত উসমান রা. এর উপর আক্রমন করে শহিদ করে ফেলেন। তাই তাদের এ কর্ম খুবই খারাপ এবং আমার কর্মও খারাপ। তখন আমি দেখলাম এ ব্যাপারে আমি বেশী হকদার, তাই আমি তার উপর লাফিয়ে পড়লাম। সুতরাং আল্লাহ তায়ালাই এ ব্যাপারে সর্বজ্ঞ যে আমরা ভুল করেছি না সঠিক করেছি।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৭৪ ]
আলী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রসূলুল্লাহ সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম নেতৃত্বের ব্যাপারে আমাদের কোন সিদ্ধান্ত দেননি যার উপর আমরা আমল করব। এ বিষয়টি আমি নিজে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সুতরাং যদি তা সঠিক হয় তাহলে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে। আর যদি তা ভুল প্রমানিত হয় তাহলে এর দায়িত্ব আমাদের উপর বর্তাবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৭৫ ]
আবু হাশেম আল কাসেম বিন কাসির থেকে বর্ণিত আমাদেরকে কয়েস খারেফি বর্ণনা করেন যে, তিনি হযরত আলী রা. কে বলতে শুনেছে তিনি বলেন, আমাদেরকে হযরত আবু বকর রা. ্ও হযরত উমর রা. এর পরবর্তীতে এক ফিৎনা গ্রাস করেছে। আর তা উহা যা আল্লাহ তাআলা চেয়েছেন।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৭৬ ]
মুহাম্মাদ বিন উবাইদুল্লাহ বর্ণনা করেন, আমি আবুদ্দুহাকে হাসান ইবনে আলী রা. থেকে আলোচনা করতে শুনেছি, তিনি সুলাইমান ইবনে সুরাদকে বলেন আমি আলী রা. কে দেখেছি যখন যুদ্ধ তীব্রবেগে লেগে গেল তখন তিনি আমার নিকট আশ্রয় নিয়ে বললেন, হে হাসান! হায় আফসোস যদি এর বিশ বৎসর পূর্বে আমি ইন্তেকাল করতাম।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৭৭ ]
হযরত তামীম ইবনে সালামা রা. বলেন, আমাকে সুলাইমান ইবনে সুরাদ আল খুযায়ী বলেন আমাকে হাসান ইবনে আলী রা. বলেন আমি আলী রা. কে দেখলাম যখন পুরুষের মাঝে তরবারী উঠে পড়ল তখন তিনি আমার নিকট সাহায্য চেয়ে বললেন হে হাসান! হায় আফসোস আমি যদি এই দিনের বিশ বৎসর পূর্বে ইন্তেকাল করতাম।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৭৮ ]
হযরত সুলাইমান ইবনে সুরাদ থেকে বর্ণিত তিনি হযরত হাসান ইবনে আলী রা. থেকে বর্ননা করে বলেন, আমীরুল মুনিীনন এক বিষয়ে ইচ্ছা পোষণ করেছেন। তখন ঐ বিষয়টি পর্যায়ক্রমে আসতে লাগল। তখন তিনি আর কোন উপায় খুজে পেলেন না।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৭৯ ]
হযরত সুলাইমান ইবনে সুরাদ থেকে বর্ণিত তিনি হযরত হাসান ইবনে আলী রা. থেকে বর্ননা করেন, হযরত হাসান বলেন, আমি হযরত আলী রা. কে বলতে শুনেছি তিনি বলেন, তখন তিনি তরবারীর প্রতি দৃষ্টি দিলেন যখন মানুষকে পাকড়াও করে ফেলেছে। হে হাসান এগুলো সবই আমাদের মাঝে ঘটছে। হায় আফসোস! যদি আমি বিশ অথবা চল্লিশ বৎসর পূর্বে ইন্তেকাল করতাম।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৮০ ]
হযরত মাসরুক থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন হযরত উসমান রা. এর ব্যাপারে মানুষ যুদ্ধে লিপ্ত হল। তখন আমি হযরত আয়েশা রা. এর নিকট এসে তাকে বললাম, আপনি আপনার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা থেকে বেচেঁ থাকুন। তখন তিনি বললেন, হে বৎস তুমি খারাপ কথা বলছ। আমার নিকট আসমান থেকে আল্লাহর আযাব ব্যতীত অন্য কোন জিনিস যমীনে পতিত হওয়া কোন মুসলমানের রক্তপাতের সাহায্য করার থেকে উত্তম। আর এটা এ কারণে যে, আমি এক স্বপ্ন দেখি, আমি কেমন যেন একটি ছোট টিলার উপর আছি এবং আমার পাশে ছাগল আর বড় বড় গরুর পাল রয়েছে। তখন লোকেরা সেগুলি কুরবানী করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল এমনকি আমি গরুর আওয়াজ শুনতে পেলাম। হযরত আয়েশা বলেন, তখন আমি সেই ছোট টিলা থেকে অবতরন করতে লাগলাম। তখন আমার এই মর্মে খারাপ লাগল যে, রক্তের উপর দিয়ে অতিক্রম করব ফলে তা থেকে আমার কিছু লেগে যাবে এবং এটাও আমি অপছন্দ করলাম যে আমি আমার কাপড় উত্তোলন করলে শরীরের যে অংশ প্রকাশ পেলে আমি অপছন্দ করি তা খুলে যাবে। ইতিমধ্যে আমার নিকট দুইজন লোক অথবা দুটি বলদ এসে আমাকে নিয়ে ঐ রক্ত অতিক্রম করল। হুসাইন বলেন, আমাদেরকে আবু জামীলা বর্ণনা করেন, জামাল যুদ্ধের দিনে আমি যখন তাকে (আয়েশা) তার উট আক্রমন করতে দেখলাম তখন তার নিকট আম্মার ও মুহাম্মাদ ইবনে আবু বকর এসে তার জিন কেটে দিলেন। অতপর তাকে তার হাওযাযে উঠিয়ে আবু খলাফের ঘরে প্রবেশ করলেন। তখন আমি সেদিন এক বিপদগ্রস্থ ব্যক্তির উপর ঘরবাসীর ক্রন্দনের আওয়াজ শুনলাম। আয়েশা বললেন, এরা কারা? লোকেরা বলল এরা তাদের সাথীদের উপর ক্রন্দন করছে। তিনি বলেন আমাকে বের কর আমাকে বের কর।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৮১ ]
হযরত শা’বী আয়েশা রা. থেকে বর্ণনা করেন। হযরত আয়েশা রা. স্বপ্নে দেখলেন কেমন জানি আমি একটি ছোট টিলার উপর আছি এবং তার পাশে ছাগল ও বড় বড় গরুর পাল রয়েছে। তখন এক লোক তার ব্যাপারে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। অতপর হযরত আয়েশা রা. হযরত আবু বকর রা. এর নিকট এ ঘটনা বর্ণনা করলেন। তখন হযরত আবু বকর রা. বলেন, যদি তোমার সপ্ন সত্য হয়ে থাকে তাহলে তোমাকে কেন্দ্র করে এক দল মানুষ হত্যা করা হবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৮২ ]
আওয়াম ইবনে হাওশাব থেকে বর্ণিত তিনি বলেন আমার গোত্রের জামী নামক এক ব্যক্তি আমার নিকট বর্ণনা করেন, আমি আমার মায়ের সাথে আয়েশা রা.এর নিকট প্রবেশ করলাম। তখন তাঁকে আমার মা বললেন, জামাল যুদ্ধের দিন আপনার সফর কেমন ছিল? তিনি উত্তর দেন, এটা তকদীরের ফয়সালা ছিল।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৮৩ ]
হযরত আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, তাঁকে হযরত আলী রা., ত্বলহা রা. এবং যুবায়ের রা. সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল। তখন তিনি উত্তর দিলেন তারা এমন এক জাতি যাদের জন্য এক অতীত ইতিহাস রচিত হয়েছে এবং তাদেরকে এক ফিৎনায় আগ্রাসন করেছে। সুতরাং তাদের বিষয় আল্লাহ তায়ালার নিকট অর্পণ কর।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৮৪ ]
হযরত ইয়াযিদ ইবনে আবু হাবীব থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, আমার সাহাবীদের থেকে সংঘটিত হবে। অর্থাৎ তাদের মধ্যেই ফিৎনা সংঘটিত হবে। আল্লাহ তায়ালা তাদের অগ্রগামীদেকে ক্ষমা করে দিবেন। যদি কোন জাতি পরবর্তীতে তাদের অনুসরন করে, তাহলে আল্লাহ তায়ালা তাদেরক জাহান্নামে ধরাশয়ী করবেন।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৮৫ ]
কয়েস ইবনে সাআদ খারেফী থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি হযরত আলী রা. কে এই মিম্বারের উপর বলতে শুনেছি, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অগ্রগামী হয়েছেন আর হযরত আবু বকর রা. নামায পড়েছেন আর হযরত উমর রা. তৃতীয় পর্যায়ে এসেছেন। অতপর আমাদেরকে এমন এক ফিৎনায় পদদলিত করেছে যা আল্লাহর ইচ্ছায় ছিল।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৮৬ ]
হযরত মুহাম্মাদ ইবনে হাতিব থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, হযরত আলী রা. কে বলা হল, নিশ্চয়ই তারা আমাদের নিকট হযরত উসমান রা. সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবে তখন আমরা কী উত্তর দিব? তখন তিনি বলেন, তোমরা বল, তিনি তো ঐ সমস্ত লোকদের অন্তর্ভুক্ত যাদের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেন, “ যারা ঈমান রাখে ও সৎকর্মে রত থাকে এবং (আগামীতে যেসব জিনিস নিষেধ করা হয় তা থেকে) বেঁচে থাকে ও ঈমানে প্রতিষ্ঠিত থাকে আর তারপরও তাকওয়া ও ইহসান অবলম্বন করে। আল্লাহ ইহসান অবলম্বনকারীদেরকে ভালবাসেন।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৮৭ ]
হযরত আয়েশা রা. রসূলুল্লাহ থেকে বর্ণনা করেন এবং আওয়াম ইব্রাহীম তাইমী থেকে বর্ণনা করেন, তিনি রসূলুল্লাহ সা. থেকে বর্ণনা করেন। রসূলুল্লাহ সা. এরশাদ করেন, তিনি তার স্ত্রীদেরকে বলেন, তোমাদের মধ্যে থেকে কাউকে দেখে হাওআবের কুকুর (অধিক পানি বিশিষ্ট প্রশস্তময় জায়গার কুকুর) ঘেউ ঘেউ করবে। যখন আয়েশা অতিক্রম করল তখন কুকুর ঘেউ ঘেউ করল। তখন আয়েশা এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন, তখন তাকে বলা হল, এটা হাওআবের পানি। তখন আয়েশা রা. বলেন, আমার প্রবল ধারণা, আমি প্রত্যাবর্তন করব। তখন তাকে বলা হল হে উম্মুল মুমিনীন, নিশ্চয় আপনি মানুষের মাঝে সংশোধন করবেন।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৮৮ ]
হযরত মা’মর ইবনে তাউস থেকে বর্ণিত, তাউস তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন আর তার পিতা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম. থেকে বর্ণনা করেন, হুযুর সা. তার স্ত্রীদের কে বলেন, তোমাদের মধ্যে সে কে? যাকে দেখে অমুক জায়গার পানির কুকুর ঘেউ ঘেউ করবে। হে হুমায়রা (লাল রমনী) তুমি সতর্ক থাক অর্থাৎ আয়েশা রা.।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৮৯ ]
হযরত আবু হুযাইল থেকে বর্ণিত, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ এবং হুযাইফা রা. বসে ছিলেন। এমতাবস্থায় এক রমনীকে উটের উপরে রেখে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, যিনি নতুন জিনিষ উদ্ভাবন করেছে। তখন তাদের একজন তার সাথীকে বলল, নিশ্চয় ইনিই তিনি, তখন অপরজন বলল, না নিশ্চয় তার চারপাশের্^ দীপ্তি রয়েছে। আর তারা তার দ্বারা আয়েশা রা. কে উদ্দেশ্য নিলেন।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৯০ ]
হযরত হাসান থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, কয়েস বিন উবা রা. হযরত আলি রা. কে বলেন আপনার এই সিদ্ধান্ত কি আপনাকে হুযুর সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম দিয়েছেন না আপনার নিজের সিদ্ধান্ত? তখন হযরত আলি রা. কয়েসকে বলেন এর দ্বারা আপনি কি বুঝাতে চেয়েছেন? তখন তিনি বলেন, আমাদের ধর্ম আমাদের ধর্ম (সম্পর্কে) সতর্ক থাকা চাই, তখন হযরত আলী রা. বলেন, এই সিদ্ধান্ত আমারই সিদ্ধান্ত যা আমি বুঝেছি।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৯১ ]
আবুত তুফাইল থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি হুযাইফা ইবনে ইয়ামান রা. কে বলতে শুনেছি তিনি বলেন, আমি যদি তোমাদেরকে বলি যে, তোমাদের মাতা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করবে। তাহলে তোমরা আমাকে সত্যায়ন করবে? তখন লোকেরা বলল, এটাও কি ঘটবে? তিনি বলেন, এটা সত্য।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৯২ ]
যুবায়ের ইবনুল আওয়াম রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন এই আয়াত অবতীর্ণ হয় “ তোমরা ঐ ফিৎনাকে ভয় কর যেই ফিৎনা বিশেষ ভাবে তাদের কে পাকড়াও করবেনা যারা অত্যাচার করে না। অথচ আমরা তখন প্রচুর লোক। তখন আমরা আশ্চার্য হতে লাগলাম, এই ভেবে যে, এই ফিৎনা টি কী? এবং আমরা বলতাম সেই ফিৎনা কি? যা আমাদের নিকট এসে পৌছবে, এক পর্যায়ে তা আমরা দেখলাম।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৯৩ ]
হযরত মুহাম্মাদ বিন সিরীন থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, হযরত আলী রা. বলেন যে আমি আশাবাদী যে, আমি এবং হযরত উসমান রা. ঐ লোকদের অন্তর্ভূক্ত যাদের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা ঘোষনা করেছেন। “আমি তাদের অন্তর থেকে হিংসা-বিদ্বেষ বের করে দিয়েছি ফলে তারা ভাই ভাই হয়ে উচু আসনে মুখামুখি হয়ে বসেন। (হিযর:৪৭)
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৯৪ ]
হযরত মুররা ইবনে কা’আব রা. থেকে বর্ণিন তিনি বলেন, আমি রসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এক ফিৎনার কথা আলোচনা করতে শুনেছি, তো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিৎনার বিষয় বিষদভাবে আলোচনার মাধ্যমে আমাদের নিকটবর্তী করে ফেললেন। এমন সময় হযরত উসমান রা. অতিক্রম করলেন। তখন হুযুর সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন এই ব্যক্তি সেদিন হকের উপর থাকবে। বর্ণনাকারী বলেন, তখন আমি হযরত উসমান রা. এর নিকট দাঁড়িয়ে গেলাম এবং তার দুই বাহু ধরে হুযুর সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট নিয়ে গেলাম। আর তার মাথা খুলে দিলাম, কেননা তিনি কাপড় দ্বারা মাথা ঢেকে রেখেছিলেন। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল ইনি? রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন ইনিই। তখন দেখা গেল তিনি উসমান ইবনে আফ্ফান রা.। এবং খালেদ বলেন কাব ইবনে র্মুরা এবং আবুল আসআস সনআনির কথা উল্লেখ করেননি।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৯৫ ]
হযরত শাকীক রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি সাহল ইবনে হুনাইফ রা. কে সিফ্ফীন যুদ্ধের সময় বলতে শুনেছি। তিনি বলেন, হে মানুষ! তোমরা নিজেদের সিদ্ধান্তকে অপবাদ দিচ্ছ। আল্লাহর শপথ, আবু জান্দালের দিবস আমাার নিজের ব্যাপারে ধারণা করলাম যদি আমি সক্ষম হতাম যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিষয়কে প্রতিহত করার তাহলে অবশ্যই করতাম। আল্লাহর শপথ, আমরা যখনই কোন বিষয়ের কারণে নিজেদের কাধের উপর তরবারী উত্তোলন করি, তখন আল্লাহ তায়ালা আমাদের জ্ঞাত বিষয়কে অধিক সহজতর করে দেন তোমাদের এই বিষয় ব্যতিত। বর্ণনাকারী আ’মাশ বলেন শকীকের অবস্থা এমন ছিল যখন তাকে প্রশ্ন করা হত আপনি কি সিফফীন যুদ্ধে উপস্থিত ছিলেন? তিনি উত্তর দেন হ্যাঁ/ আর তা নিকৃষ্টতম সিফ্ফীন।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৯৬ ]
হযরত আসওয়াদ বিন কয়েস থেকে বর্ণিত তিনি এক ব্যক্তি থেকে বর্ণনা করেন, তিনি হযরত আলী রা. থেকে, হযরত আলী রা. জামাল যুদ্ধের দিন বলেন, নিশ্চয় রসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট নেতৃত্বের ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত দেননি তবে এই বিষয়টি আমরা নিজেরা বুঝে নিয়েছি। সুতরাং যদি তা সঠিক হয়ে থাকে তবে আল্লাহর পক্ষ থেকে। আর যদি কোন ভুল হয় তাহলে তা আমাদের উপরে বর্তাবে। অতপর হযরত আবু বকর রা. খলিফা নিযুক্ত হলেন এবং তিনি ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করলেন। অতপর হযরত উমর রা. খলিফা নিযুক্ত হলেন এবং তিনিও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করলেন। এমনকি দ্বীনকে সম্মুখে নিয়ে গেলেন। অতপর অনেক জাতি দুন্য়িা অন্বেষন করতে লাগল। আল্লাহ তায়ালা যাদেরকে চান তাদেরকে ক্ষমা করেন। আর যাদেরকে মনে চান শাস্তি দেন।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৯৭ ]
হযরত আবু ওয়েল থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি আম্মার রা. কে এই মিম্বারের উপর বলতে শুনেছি, নিশ্চয়ই আয়েশা ছিদ্দিকা রা. দুনিয়া ও আখিরাতে উভয় জায়গায় তোমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রী তবে তিনি হলেন পরীক্ষা যা তোমাদের থেকে নেওয়া হয়েছে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৯৮ ]
হযরত আবু ওয়েল থেকে বর্ণিত তিনি বলেন সাহল ইবনে হুনাইফ সিফ্ফীন যুদ্ধের সময় বলেন, হে মানুষ, তোমরা নিজেদেরকে অপবাদ দিচ্ছ। আমরা হুদায়বিয়ার সময় রসূলুল্লাহ সা. এর সাথে ছিলাম। যদি আমরা সেদিন যুদ্ধ করা সমীচীন মনে করতাম তাহলে ঐ সন্ধি অবস্থায় অবশ্্যই আমরা যুদ্ধ করতাম যা রসূল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং মুশরিকদের মাঝে ছিল।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৯৯ ]
হযরত হুযাইফা ইবনে ইয়ামান রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন হাউযের নিকট বিভিন্ন জাতি আমার কাছে উপস্থিত হবে। যাদেরকে আমিও চিনব এবং তারাও আমাকে চিনবে, তবে আমি ব্যতিত তারা সবাই কাঁপতে থাকবে, তখন আমি আরজ করলাম হে আমার প্রতিপালক এরা আমার সাহাবা, এরা আমার সাহাবা, তখন আল্লাহ তায়ালা বলবেন, নিশ্চয়ই আপনি জানেন না, আপনার অবর্তমানে তারা কি নতুন জিনিস উদ্ভাবন করেছে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২০০ ]
হযরত যুহরী রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লামের সাহাবা ভরপুর থাকা সত্বেও ফিৎনা প্রবল বেগে উত্তেজিত হবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২০১ ]
হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লামের এর নিকট প্রবেশ করলাম যেই অবস্থায় উসমান রা. তার সামনে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লামের সাথে চুপিসারে কথা বলছেন। তখন আমি তার কথোপকথন কিছুই বুঝতে পারলামনা তবে উসমান রা. এর কথা হে আল্লাহর রাসূল, অন্যায় ভাবে না শত্রুত বশত, অন্যায় ভাবে না শত্রুত বশত? তবে অনুধাবন করতে পারলাম না সেটা কি এক পর্যায়ে উসমান রা. শাহাদত বরণ করলেন। তখন আমি নিশ্চিতভাবে বুঝতে পারলাম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম নিশ্চয়ই তার হত্যার বিষয় উদ্দেশ্য নিয়েছিলেন। আয়েশা রা. বলেন আমি পছন্দ করিনি যে, উসমান রা. এর নিকট কিছু পৌঁছাক, তবে আমার নিকট তার মত জিনিস পৌঁছল। তবে আল্লাহ তায়ালা নিশ্চয়ই জানেন আমি তার হত্যাকে পছন্দ করিনা যদি আমি তার হত্যা পছন্দ করতাম, তাহলে আমাকে হত্যা করা হত। আর এটা তখন যখন তার হাওদায বর্শা দ্বারা নিক্ষেপ করা হয়, এমনকি তা শল্লীর মত হয়ে পড়ে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২০২ ]
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি আয়েশা রা. এর নিকট প্রবেশ করত সালাম প্রদান করে বললাম হে আম্মা! তখন তিনি বললেন হে ছেলে! তোমার প্রতিও সালাম। বর্ণনাকারী বলেন আমি তাকে বললাম কুরাইশদের নিফাকী করা সত্ত্বে কোন জিনিষ আপনাকে আমাদের নিকট বের হতে বাধ্য করল? তিনি বলেন এটা নিয়তির ফয়সালা ছিল।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২০৩ ]
হযরত ইব্রাহীম এবং খালেদ হায্যা হাসান থেকে বর্ননা করে বলেন হযরত আলী রা. বলেন, নিশ্চয় আমি আশা রাখি যে, আমি, ত্বলহা ও যুবাইর ঐ সমস্ত লোকদের অন্তর্ভূক্ত হব। যাদের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন তারা পরস্পর ভাই ভাই মুখামুখি হয়ে আসনে বসবেন। (হিযর:৪৭)
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২০৪ ]
হযরত রিবয়্যি ইবনে হিরাশ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন জুনাইদ ইবনে সাওদা আলী রা. এর নিকট তখন তিনি বললেন, আল্লাহ তায়ালা এর চেয়ে ইনসাফকারী, তখন আলী রা. এর উপর জোরেসোরে চিৎকার করেন বর্ণনাকারী বলেন, আমি ধারণা করলাম যে, প্রাসাদ ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। অতপর বলেন যদি আমরাই না হই তাহলে আর কারা হবে?
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২০৫ ]
হযরত সুলাইমান ইবনে সুরাদ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, নিশ্চয়ই আমার নিকট আমিরুল মুমিনীন আলী রা. সম্পর্কে এমন কিছু কথার অংশ পৌঁছেছে, যা আমার উপর এমনভাবে প্রভাব ফেলছে যেমন তিরস্কার ও ভীতিপ্রদর্শনের কারণে হয়ে থাকে। তখন আমি দ্রুত তার নিকট রওয়ানা দিয়ে এমন সময় পৌঁছলাম যখন তিনি জামাল যুদ্ধ থেকে ফারেগ হলেন। তখন আমি হাসান রা. এর সাথে সাক্ষাৎ করে বললাম, নিশ্চয়ই আমার নিকট আমিরুল মুমিনীন আলী রা. সম্পর্কে এমন কিছু কথার অংশ পৌঁছেছে, যা আমার উপর তিরস্কার ও ভীতিপ্রদর্শনের ন্যায় প্রভাব ফেলছে। কারণ হয়ে থাকে তখন আমি দ্রুত তার নিকট রওয়ানা দিলাম এই মর্মে যে, আমি তাঁর নিকট উযরখাহী করব অথবা আমার অন্তর থেকে তা বের করে দিব। তখন হাসান রা. বললেন হে সুলাইমান! খোদার কসম নিশ্চয়ই আমিরুল মুমিনীন এ কারণে মর্যদাবানের রক্ত থেকে অপছন্দ করতেন। নিশ্চয় আমিরুল মুমিনীন এক বিষয়ের ইচ্ছা পোষন করেছেন, তবে তা পালাক্রমে আসতে লাগল। তাই তিনি আর কোন উপায় খুঁজে পাননি। আর আমিরুল মুমিনীন এর পক্ষ থেকে আমিই তোমার জন্য যথেষ্ট।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২০৬ ]
হযরত সুলাইমান ইবনে সুরাদ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি হযরত আলী রা, এর নিকট এমতাবস্থায় পৌঁছলাম যখন তিনি জামাল যুদ্ধ থেকে ফারেগ হন। তিনি আমাকে দেখে বললেন হে ইবনে সুরাদ! তুমি দুর্বল হয়ে স্থানচ্যুত হয়ে পড়েছ এবং আল্লাহ তায়ালা তোমার সাথে কি আচরণ করবেন তার অপেক্ষা করছ? তখন আমি বললাম হে আমিরুল মুমিনীন, নিশ্চয়ই সফর অনেক লম্বা আর আল্লাহ তায়ালা অনেক বিষয় অবশিষ্ট রেখেছেন যার মধ্যে তুমি তোমার শত্রুকে বন্ধু থেকে চিনতে পারবে। যখন তিনি দ-ায়মান হলেন আমি হাসান ইবনে আলী রা. কে বললাম আমিা তোমাকে দেখছি যে, তুমি আমার থেকে বেপরওয়া হয়ে গেছো অথচ আমি তার সাথে উপস্থিত হতে অনুরাগী। তখন তিনি বললেন ইনি তোমাকে উহাই বলেন যা তুমি বলছ। আর জামাল যুদ্ধের দিন যখন কিছু মানুষের নিকট গেল, তখন তিনি আমাকে বলেন, হে হাসান তোমার আম্মা ধ্বংশ হোক। অথবা তোমার মাতা তোমাকে হারাক। আল্লাহর কসম এর পর আর কোন কল্যাণ দেখিনি।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২০৭ ]
হযরত মুহাম্মাদ ইবনে আলী রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, হযরত আলী রা. বলেন যদি উসমান রা. আমাকে সিরার নামক স্থানে ভ্রমন করান তাহলে তার কথা শুনব ও অনুসরণ করব।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২০৮ ]
হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আল্লাহর শপথ আমার আশা কখনই আমি উসমান রা. সম্পর্কে কোন বাক্য উল্লেখ করিনি। আর আমি দুনিয়ায় জীবন যাপন কুষ্টরোগী ও কুশ্রী অবস্থায় করেছি। উসমান রা. এক আঙ্গুল যা দ্বারা তিনি আসমানে দিকে ইঙ্গিত করেন তা আলি রা. এর পূর্ণ যমীন থেকে উত্তম।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২০৯ ]
হযরত আউফ ইবনে মালেক আশযায়ী রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বর্ণের সিকলের একটি টুকরা যা মালে গনীমতের অবশিষ্ট অংশ ছিল নিজের লাঠির অগ্রভাগ দ্বারা উত্তোলন করলেন অতপর তা পড়ে গেল পুনরায় আবার উত্তোলন করে বললেন, যখন তা এর চেয়ে অধিক হবে তোমাদের অবস্থা তখন কি হবে? তখন কেউ কোন উত্তর দিল না। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জনৈক সাহাবা বলেন। আল্লাহর শপথ আমরা আশা করি যদি আল্লাহ তায়ালা এর চেয়ে অধিক পরিমান দেন তাহলে কিছু লোক ধৈর্য্য ধারন করবে তারা ধৈর্য্য ধারণ করবে এবং কিছু লোক ফিৎনায় নিপতিত হবে। তখন রসূলুল্লাহা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, হয়তবা তুমি তাতে নিকৃষ্টতম ফিৎনায় পতিত হবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২১০ ]
হযরত উহবান গিফারীর মেয়ে থেকে বর্ণিত যে আলী রা. উহবানের নিকট এসে বললেন কিসে তোমাকে আমার অনুসরণ করতে বাধা দিচ্ছে। প্রতিউত্তরে তিনি বলেন আমাকে আমার বন্ধু এবং আপনার চাচাত ভাই উপদেশ দিয়েছেন, যে ভবিষ্যতে বিভিন্ন দলে ভিভক্ত হয়ে পড়বে এবং ফিৎনা এবং মতবিরোধ দেখা দিবে। যখন এমনটি ঘটবে তখন তুমি নিজের তরবারী ভেঙ্গে ফেল, নিজের ঘরে বসে থাক, এবং কাঠ দ্বারা তরবারী তৈরী কর।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২১১ ]
আবু জানাব থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি ত্বলহা রা. এর নিকট উপস্থিত হলে তিনি বলেন, আমি অনেক মাথার খুলির নিকট উপস্থিত, তবে আমি কোন তীর দ্বারা আঘাত করিনি এবং কোন তরবারী দ্বারাও না। আর আমার ধারণা, এদুটি এখান থেকে কর্তন করা হয়েছে, অর্থাৎ তার হাতল। আর আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম না।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২১২ ]
হযরত কাইস ইবনে আব্বাদ রাযি থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমরা আম্মার রাযিঃ কে বললাম, তোমাদের এই যুদ্ধ সম্বন্ধে আপনার অভিমত কি? এ সম্পর্কে কি আপনার কোনো সিদ্ধান্ত রয়েছে| কেননা, সিদ্ধান্ত বা রায় এর ক্ষেত্রে সঠিক বা ভূল উভয়টি রয়েছে অথবা এসব ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর পক্ষ থেকে কোনো দিক নির্দেশনা রয়েছে, যা আপনাদেরকে দেয়া হয়েছে। জবাবে তিনি বললেন, এসম্বন্ধে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর পক্ষ থেকে কোনো দিক নির্দেশনা দেননি।
ফেৎনা কালীন সম্পদ ও সন্তানাদি কম হওয়া মুস্তাহাব এবং তখন কোন ধরনের সম্পদ রাখা উত্তম সে প্রসঙ্গে
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২১৩ ]