আধুনিককালে মানুষের শিক্ষা-দীক্ষার নানান চমকপ্রদ দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে এবং তাদের পাঠাভ্যাসও বৃদ্ধি পেয়েছে সমানতালে। মানুষ বই, কিতাব, পত্র-পত্রিকা, ফিল্ম ও অন্যান্য মিডিয়ায় অবগাহন করে পাশ্চাত্য ও প্রাচ্যের শিক্ষা-সংস্কৃতি গিলছে গোগ্রাসে। অথচ অধিকতর পাঠাভ্যাস এবং অধ্যয়নযোগ্য করে তুলা উচিত হলো রাসূলে আরাবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সীরাত। কেননা, যুগ-যুগান্তর ধরে মানুষ যে জ্ঞান, পাণ্ডিত্য, মনীষা, মেধা ও মুক্তির সাধনা করে এসেছে, রাসূলে আরাবীতে এসে তা পূর্ণতা পেয়েছে। মানুষের কালান্তরের ন্যায়, সততা, পবিত্রতা, আধ্যাত্মিকা, মনুষ্যত্ব তথা মানবিক গুণাবলীরর সামগ্রিক সাধনা তাঁর মাঝে এসে চূড়ান্ত আকৃতি পেয়েছে। আরবিতে “আল-ইনসানুল কামিল”, ইংরেজিতে ঋঁষষ গধহ, বাংলায় পূর্ণ মানব বলে একটি কথা আছে। ধরার বুকে সেই পূর্ণ মানব হওয়ার একমাত্র যোগ্য ব্যক্তি হলেন পেয়ারা নবী, করুণার ছবি রাসূলে আরাবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তাঁর সার্বিক জীবনাদর্শ একটি পরিপূর্ণ উম্মতের জীবনাদর্শ। তাঁর গোটা জীবন ইসলামের জীবন্ত ব্যাখ্যা। কাজেই কেবল ধর্মগুরু হিসেবেই নয়, বরং একজন পূর্ণমানব হিসেবেও মুহাম্মদ সাঃ কে অধ্যয়ন করা, তাঁর সীরাত বিষয়ে তথ্যনির্ভর, সহীহ-শুদ্ধ গ্রন্থ পড়ে দেখা সকলের-ই উচিত। কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা, নিত্যনৈমিত্তিক পাশ্চাত্য ও প্রাচ্যের সকল আপডেট অধ্যয়নে থাকলেও সীরাত অধ্যয়নে উম্মতের অবহেলা ও উদাসীনতা ব্যাপক। সাধারণ লোক শুধু নয়, মুষ্টিমেয় কিছু সংখ্যক ব্যতীত অনেক আলেম- উলামারও পেয়ারা নবী সাঃ সম্পর্কে পড়াশোনা অবিশ্বাস্য রকম অল্প। সীরাত পাঠের এই দৈন্যদশা ঘুচিয়ে পাঠকমণ্ডলীকে সীরাতমুখী করার প্রয়াসে নিচে সীরাত অধ্যয়নের কতিপয় গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হলো।
ক) সীরাত অনুকরণীয় আদর্শ ঃ মানবজীবনের এমন কোন দিক নেই, যা প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে স্পর্শ করেনি। এমন কোন অনুভূতি নেই যা তিনি অনুভব করেন নি।
কি ব্যবহারিক, কি আধ্যাত্মিক, কি ইহলৌকিক, কি পারলৌকিক সমস্ত কিছুই তাঁর জীবন ও সাধনাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে। ফলে তাঁর জীবনাদর্শ সর্বকালের সমগ্র মানবজাতির জন্য অনুকরণীয় আদর্শ। জীবন পথের আলোর মশাল ও দিকনির্দেশনা স্বরূপ।
(১) নবীয়ে রহমত-৩৫
কুর’আনের প্রায় চল্লিশের অধিকবার নবীজী অনুকরণীয় হওয়ার ঘোষণা বিবৃত হয়েছে।
(২) মাজমুউল ফাতাওয়া ১/৪
আল্লাহ তা’য়ালা বলেনঃ ”
لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِمَنْ كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَذَكَرَ اللَّهَ كَثِيرًا
অবশ্যই তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহর মধ্যে রয়েছে অনুপম আদর্শ, তাদের জন্য যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রত্যাশা করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে। ( সুরা আহযাব-২১)
এ থেকে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বাণীসমূহ ও কার্যাবলী উভয়ই অনুসরণ অনুকরণের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্যতা জানা যায়। আর রাসূলের পরিপূর্ণ, নিখুঁত অনুসরণের জন্যে গভীরভাবে সীরাত অধ্যয়নের গুরুত্ব অনস্বীকার্য।
খ) আমল যাচাইয়ের নিক্তি সীরাতঃ কোন আমল বা কাজ ইসলামি শরীয়তের তুলাদণ্ডে উত্তীর্ণ আর কোন আমলটি ইসলামী আইনে অনুত্তীর্ণ তা যাচাইয়ের নিখুঁত নিক্তি হলো সীরাত। ইসলামের ব্যানারে বর্ণিত, প্রচারিত সকল আমাল-ই রাসূলে আরাবীর সীরাতের নিক্তিতে মেপে দেখতে হয়। যেই আমল রাসূলের এই সীরাত ও সুন্নাতের মানদণ্ডে ঠিকে সেটিই সঠিক আর যেটি ঠিকেনা সেটি অশুদ্ধ, বর্জনীয় বলে বিবেচিত। এক্ষেত্রে সুফিয়ান ইবনে উয়াইনার বক্তব্য উল্লেখযোগ্য, যা খতীবে বোগদাদী রহ. তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘আল-জামে লি-আখলাকির রাওয়ী ওয়া আদাবিস সামে’ এর মুখবন্ধে উল্লেখ করেছেন, “নিঃসন্দেহে এটা সর্বজন স্বীকৃত বিষয় যে, রাসূল সা. এর সীরাত হলো ইসলামের সকল বিষয়ের সত্যাসত্যের অন্যতম মানদণ্ড। সুতরাং, সকল আমালকে তাঁর জীবনাচার, স্বভাব-চরিত্রের নিক্তিতে মেপে দেখতে হবে। যা কিছু এর সাথে সামঞ্জস্য রাখবে, তাই সত্য। আর যা কিছু সামঞ্জস্য রাখবেনা তা অসত্য।” কাজেই সঠিক ও শুদ্ধ উপায়ে আমল করতে চাইলে সীরাতের পাঠের বিকল্প নেই।
গ) কুর’আন অনুধাবনের সহায়ক সীরাতঃ
জগতের সকল কালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহাপুরুষের উপর অবতীর্ণ হয়েছিল জগতের সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ পবিত্র আল-কুর’আন। তিনি ছিলেন সেই কুর’আনের প্রতিবিম্ব। আর তাঁর জীবন ছিল কুর’আনের সর্বশ্রেষ্ঠ তরজমা ও তাফসির। এদিকে ইঙ্গিত করেই হযরত আয়েশা রাজি. বলেছেন, যখন তাঁর কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল রাসূল সাঃ এর সীরাত ও আখলাক সম্পর্কে, তিনি বলেছিলেন” তাঁর আখলাক (সীরাত) ছিল আল-কুর’আন।” অর্থাৎ কুর’আন করীম হলো রাসূল সাঃ এর জীবনচরিতের সংরক্ষিত ও লিখিত নমুনা। আর তাঁর জীবনী হলো কুর’আনের আমলী রূপরেখা। (৩) নবীজীর আদর্শ ও আমাদের জীবন বাস্তবতা-১০)
কাজেই যে কেউ তাফসীরের কিতাব অধ্যয়ন করতে চায়, তাকে অবশ্যই সীরাত অধ্যয়ন করতে হবে। কারণ, কুর’আনের বহু আয়াত নাযিলের পশ্চাতে এমন প্রেক্ষাপট রয়েছে, যা সরাসরি রাসূল সাঃ এর সীরাত এর সাথে সম্পর্কিত। সীরাতের জ্ঞান ব্যতিরেকে উক্ত কুর’আনী আয়াতের মর্ম উদ্ধার করা সম্ভব নয়। এ থেকেও সীরাত পাঠের গুরুত্ব ফুটে উঠে।
ঘ) সীরাত অধ্যয়ন রাসূলের প্রতি ভালোবাসার প্রকৃষ্ট প্রমাণ ঃ একজন মুসলমান হিসেবে প্রত্যেক মুসলিমের কাছে-ই প্রাণাধিক প্রিয়পাত্র ও ভালোবাসার পাত্র হওয়া উচিত পেয়ারা নবী সাঃ। স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামীন রাসূলের এই ভালোবাসাকে আমাদের উপর আবশ্যক করে দিয়ে বলেনঃ ”
قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّونَ اللَّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللَّهُ وَيَغْفِرْ لَكُم من ذُنُوبَكُمْ ۗ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَحِيمٌ
বল, ‘যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস, তাহলে আমার (রাসূল) অনুসরণ কর, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’। (সূরা আলে-ইমরান-৩১)
রাসূল সাঃ নিজেই ইরশাদ করেনঃ
فَوَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لاَ يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى أَكُونَ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ وَالِدِهِ وَوَلَدِهِ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ সেই আল্লাহর শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তোমাদের কেউ প্রকৃত মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষন না আমি তার নিকট তার পিতা ও সন্তানাদির চেয়ে অধিক ভালবাসার পাত্র হই।(সহিহ বুখারী, হাদিস নং ১৪)
আর রাসূলের প্রতি ভালোবাসার চারা হৃদয়পটের রোপণ করতে তাঁর সীরাতের গভীর অধ্যয়ন লাগবে। যে যত বেশি সীরাতের গভীরে অবগাহন করবে, সে তত বড় রাসূল প্রেমিকে রূপ নিবে। তার আচার-আচরণ, চলাফেরা সকল কাজে রাসূলের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠবে। কারণ,সীরাত অধ্যয়নে রাসূলের প্রতি মুহব্বত আর ভালোবাসা প্রগাঢ় হয়।
জীবদ্দশায় রাসূলের কাছে দুনিয়ার বুকে রাসূলকে সবচেয়ে বেশি অপছন্দকারী ব্যক্তি এসে,তাঁর অনুপম আদর্শ আর নিরুপম চরিত্র মাধুর্যে বিমুগ্ধ হয়ে রাসূলকে প্রাণাধিক প্রিয় হিসেবে গ্রহণ করে নিতে বাধ্য হত। সুমামাহ ইবনে উবনু উসালের মুখ থেকেই শুনি “হে মুহাম্মদ! আল্লাহ্র কসম! ইতোপূর্বে আমার কাছে যমিনের উপর আপনার চেহারার চেয়ে অধিক অপছন্দনীয় কোন চেহারা ছিলোনা। কিন্তু এখন আপনার চেহারা-ই আমার কাছে সকল চেহারা অপেক্ষা অধিক প্রিয়।” (বোখারী-৪৩৭২, মুসলিম-১৭৬৪)
অতএব, সীরাতপাঠে রাসূলের ভালোবাসা প্রগাঢ় হওয়ার পাশাপাশি তাঁর সুন্নাহ জীবনে বাস্তবায়ন করে আল্লাহর ইবাদত ও নির্দেশ পালনের পূণ্য হাসিল হয়।
ঙ) সীরাত ঈমান মজবুতির সোনালি সোপানঃ
রাসূল সাঃ ঈমান,ইসলাম প্রচারের পথে কত বাধাবিপত্তি আর ঝড়ঝাপটা সয়েছেন তার সবিস্তার আলোচনা সীরাতে সোনার হরফে লিখা রয়েছে। ফলে সীরাত অধ্যয়নে রাসূলের এসব বিপদ-মুসিবত সহ্য করার ঘটনাবলি পড়ার মাধ্যমে ঈমান আরো শক্তিশালী ও দুর্ভেদ্য হয়। আল্লাহ তা’য়ালা বলেনঃ”
أَمْ لَمْ يَعْرِفُوا رَسُولَهُمْ فَهُمْ لَهُ مُنْكِرُونَ
নাকি তারা তাদের রাসূলকে চিনতে পারেনি, ফলে তারা তাকে অস্বীকার করছে? (সূরা মুমিনুন-৬৯)
বলা চলে, সীরাত অধ্যয়ন অমুসলিমকে ইসলামের প্রতি প্রলুব্ধ করে আর মুসলিমের ঈমানের মাঝে মজবুতি আনে। তাই দেখা যায়, সহস্র অমুসলিম সীরাতে রাসূল অধ্যয়ন করতে, নিজেকে নবীজীর সীরাতের মাঝে সমর্পণ করে দিয়েছেন। এই অর্থে ইমাম মুসলিম রহ. বর্ণনা করেন,
عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ رَجُلاً، سَأَلَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم غَنَمًا بَيْنَ جَبَلَيْنِ فَأَعْطَاهُ إِيَّاهُ فَأَتَى قَوْمَهُ فَقَالَ أَىْ قَوْمِ أَسْلِمُوا فَوَاللَّهِ إِنَّ مُحَمَّدًا لَيُعْطِي عَطَاءً مَا يَخَافُ الْفَقْرَ . فَقَالَ أَنَسٌ إِنْ كَانَ الرَّجُلُ لَيُسْلِمُ مَا يُرِيدُ إِلاَّ الدُّنْيَا فَمَا يُسْلِمُ حَتَّى يَكُونَ الإِسْلاَمُ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا عَلَيْهَا .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, জনৈক লোক রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে দু’ পাহাড়ের মাঝামাঝি ছাগলগুলো চাইলে তিনি তাকে তা দিয়ে দিলেন। অতঃপর সে লোক তার গোত্রের নিকট প্রত্যাবর্তন শেষে বলল, হে আমার জাতি ভাইয়েরা! তোমরা ইসলাম কবূল কর। আল্লাহর শপথ! মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অভাবের আশঙ্কা না করে দান করেন।
আনাস (রাঃ) বলেন, যদিও মানুষ শুধু ইহকালের উদ্দেশ্যেই ইসলাম গ্রহণ করে তবুও ইসলাম গ্রহণ করতে না করতেই ইসলাম তার কাছে পৃথিবী এবং পৃথিবীর সকল প্রাচুর্যের চাইতে অধিকতর প্রিয় হয়ে যায়। (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৫৯১৫)
চ) সীরাত সৌভাগ্যের জিয়নকাঠিঃ
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সীরাত মানবজীবনের সৌভাগ্যের চাবিকাঠি। সীরাত অনুসরণ- অনুকরণ এবং দৈনন্দিন জীবনে এর বাস্তবায়ন ছাড়া কারো পক্ষেই পার্থিব কিংবা অপার্থিব কোন সফলতার আশা করা বোকামি। ইমাম ইবনুল কায়্যিম রহ. বলেনঃ “যেহেতু দুনিয়া-আখেরাতের একমাত্র সফলতা আর সকল সৌভাগ্য রাসূলের পদাঙ্ক অনুসরণের মাঝেই নিহিত। কাজেই প্রত্যেক ঐ ব্যক্তির উচিত যে নিজের জীবনে কল্যাণ, সফলতা আর সৌভাগ্য কামনা করে, সে যেন নবীজীর সীরাত অধ্যয়ন করে। এতে করে সে রাসূলকে চিনতে পারবে। রাসূলের সত্যিকার অনুসারী হতে পারবে। ” যাদুল মা’আদ-১/৩৬)
এভাবে ক্রমান্বয়ে সীরাত পাঠের গুরুত্ব তুলে ধরতে গেলে শত পৃষ্ঠার বৃহদাকার গ্রন্থ রচনা করা সম্ভব। তবে এত দীর্ঘ আলোচনার অবতারণা না এনে পাঠকবর্গের নিকট অধমের কামনা থাকবে, উম্মত হিসেবে ভালোবাসার দাবি থেকে হলেও প্রত্যেকের ঘরে দয়ার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবন চরিতের একটি করে কপি যেন স্থান পায়। এবং তা পঠিতও হয়। আল্লাহ তা’য়ালা আমাদের রাসূলের সাচ্চা আশেক হিসেবে কবুল করুন। আমিন।
হামেদ বিন ফরিদ আহমদ