প্রশ্ন
হুজুর বর্তমানে শবে বরাত কে কেন্দ্র করে বহুধরনে কর্মকান্ড প্রচলিত রয়েছে ৷ যেমন নির্ধারিত পদ্ধতি আমল, আতশবাজি, হালুয়া রুটি তৈরি, আলোকসজ্জা ইত্যাদি ৷ আবার কেউ শবে বরাতকে অস্বিকার করছে ৷ হাদীসে নাকি এ বিষয়ে কিছুই নেই ৷ এ বিষয়ে যদি বিস্তারিত জানাতেন উপকৃত হতাম ৷
উত্তর
শবে বরাতকে কেন্দ্র করে একদল না না রকম নাজায়েজ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকেন। অপর আরেক দল এই রাতের অস্তিত্বটাকেই অস্বীকার করেন। প্রথমে
শবে বরাত সপম্পর্কে সহিহ হাদিস উল্লেখ করছি। -হযরত মুয়াজ বিন জাবাল (রাঃ)থেকে বর্ণিত,রাসুল (সাঃ) এরশাদ করেছেন- আল্লাহ তায়ালা অর্ধ শাবানের রাতে(শবে বরাতে) সৃষ্টির দিকে (রহমতের) দৃষ্টি দেন।এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত সবাইকে মাফ করে দেন।
-সহীহ ইবনে হিব্বান ১২/৪৮১;আত-তারগীব ওয়াত- তারহীবে ২/১৩২ ৷
আয়েশা সিদ্দিকা রাঃ থেকে বর্নিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক শা’বানের ১৫ তারিখ রাত্রিতে পৃথিবীর আকাশে অবতরণ করেন অর্থাৎ রহমতে খাছ
নাযিল করেন। অতঃপর তিনি বণী কালবের মেষের গায়ে যত পশম রয়েছে তার চেয়ে বেশী সংখ্যক বান্দাকে ক্ষমা করে থাকেন”।
সুনানে তিরমিযি ২/১২১,১২২; মুসনাদে আহমাদ ৬/২৩৮ ৷
এছাড়াও বহু হাদীস দ্বারা এরাতের ফযিলত প্রমানিত ৷ তাই এ রাতের ফযিলত ও মর্যাদা কোন ভাবেই অস্বিকার করা যাবে না ৷ তবে এরাতে নির্ধারিত পরিমান বা নির্ধারিত পন্থায় কোন আনল বর্নিত নেই ৷ এবং তাকে উপলক্ষ করে হালুয়া রুটি তৈরি করা আলোকসজ্জা করা আতশবাজি করা ইত্যাদি সম্পুর্ন নাজায়েয ও বাড়াবাড়ি ৷
সুতরাং যারা শবে বরাতকে নিয়ে বাড়াবাড়ি করছেন তারাও ভুল করছেন,আর যারা একেবারে অস্বীকার করছেন তারাও ভুল করছেন। কারন হাদিসের মধ্যে কোন বাড়াবাড়ির কথাও নেই আবার অস্তিত্বহীনতাও বুঝা যায়না।
সহিহ পন্থায় এই রাতে কিছু করনীয় ও বর্জনীয় ৷
এই রাতে করনিয়ঃ
১) এই রাতে আল্লাহর রাসুল অনেক দীর্ঘ নামাজ পড়তেন। তাই নামায পড়া ৷ তবে নির্ধারিত পরিমান বা পদ্ধতি জরুরী মনে না করে ৷
২) পরের দিন রোজা রাখতেন।দলীল-
ﻗﻮﻟﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴﻼﻡ : ﺍﺫﺍ ﻛﺎﻧﺖ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ ﺷﻌﺒﺎﻥ ﻓﻘﻮﻣﻮﻟﻴﻠﻬﺎ ﻭﺻﻮﻣﻮﺍ
ﻧﻬﺎﺭﻫﺎ
রাসুল (সাঃ) বলেছেন -যখন অর্ধ শাবানের আসে- তোমরা সেই রাতে ইবাদত বন্দেগীতে কাটাও এবং পরের দিন রোজা রাখো। তাই পরদিন রোজা রাখা
বিঃদ্রঃ শবে বরাতের রোজা একটি ৷
৩) এই রাতে পুরুষদের জন্য কবরস্থানে যাওয়া এবং তাদের মৃত আত্মীয় স্বজনদের জন্য ইসালে সাওয়াব করা মুস্তহাব।
এই সম্পর্কে মুফতি শফি সাহেব অত্যন্ত চমৎকার অভিমত ব্যাক্ত করেছেন।তিনি বলেন রাসুল (সাঃ) যেহেতু জীবনে একবার মাত্র শবে বরাতের রাত্রে কবরস্থানে গিয়েছেন,কাজেই জীবনে একবার এই রাতে কবরস্থানে গেলেই মুস্তহাব আদায় হয়ে যাবে।
এখানে লক্ষণীয় বিষয় হল কোন ভাবেই যেন বিদআতি কোন কাজ না হয়ে যায়।
৪) এই রাতে খুব দোয়া করা। কেননা আল্লাহর রাসুল বলেছেনঃ শাবানের ১৫ তারিখ রাতে আল্লাহর পক্ষ হতে একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা করেন,- আছে কি কোন ক্ষমা প্রার্থনাকারী,যাকে আমি ক্ষমা করবো। এমনিভাবে সকল বিষয়ের কথা উল্লেখ করা হয়।
৫) এই রাতে নির্দিষ্ট কোন নামাজ নেই। যত নফল
নামাজ পড়া যায় পড়বে ৷ তবে যাদের কাজা নামাজ বাকি আছে তাদের জন্য উত্তম হবে কাজা নামাজ গুলো আদায় করে নেয়া। কারন হাশরের মাঠে নফলের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবেনা,ফরজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।
এই রাতের বর্জনীয় আমল সমুহঃ ১) এই রাতে সম্মিলিত না হয়ে একাকী আমল করা
উত্তম।কারন সম্মিলিত হওয়ার ক্ষেত্রে আমলের
চাইতে ফেতনাটাই হওয়ার আশংকা বেশি। ২) আতশবাজি করা যাবেনা
৩) হালুয়া রুটি বিতরন কারা বা নিজ ঘরে তৈরি করা যাবেনা। কারন এতে অহেতুক সময় নষ্ট হয়, এবং বর্তমানে এটা একটা বড় ধরনের ফেতনার আকার ধারন করেছে।
৪) আলোকসজ্জা করা যাবেনা।
৫) মাইকে কুরআন তেলাওয়াত বা হামদ নাত পরিবেশন করে অন্যের আমলে ব্যাঘাত ঘটানো যাবেনা।
৬) কবরস্থানে ভিড় করা বা মেলা বসানো যাবেনা।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের কে এই রাতের সকল ফজিলত দান করুণ। উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷
শবে বরাত সপম্পর্কে সহিহ হাদিস উল্লেখ করছি। -হযরত মুয়াজ বিন জাবাল (রাঃ)থেকে বর্ণিত,রাসুল (সাঃ) এরশাদ করেছেন- আল্লাহ তায়ালা অর্ধ শাবানের রাতে(শবে বরাতে) সৃষ্টির দিকে (রহমতের) দৃষ্টি দেন।এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত সবাইকে মাফ করে দেন।
-সহীহ ইবনে হিব্বান ১২/৪৮১;আত-তারগীব ওয়াত- তারহীবে ২/১৩২ ৷
আয়েশা সিদ্দিকা রাঃ থেকে বর্নিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক শা’বানের ১৫ তারিখ রাত্রিতে পৃথিবীর আকাশে অবতরণ করেন অর্থাৎ রহমতে খাছ
নাযিল করেন। অতঃপর তিনি বণী কালবের মেষের গায়ে যত পশম রয়েছে তার চেয়ে বেশী সংখ্যক বান্দাকে ক্ষমা করে থাকেন”।
সুনানে তিরমিযি ২/১২১,১২২; মুসনাদে আহমাদ ৬/২৩৮ ৷
এছাড়াও বহু হাদীস দ্বারা এরাতের ফযিলত প্রমানিত ৷ তাই এ রাতের ফযিলত ও মর্যাদা কোন ভাবেই অস্বিকার করা যাবে না ৷ তবে এরাতে নির্ধারিত পরিমান বা নির্ধারিত পন্থায় কোন আনল বর্নিত নেই ৷ এবং তাকে উপলক্ষ করে হালুয়া রুটি তৈরি করা আলোকসজ্জা করা আতশবাজি করা ইত্যাদি সম্পুর্ন নাজায়েয ও বাড়াবাড়ি ৷
সুতরাং যারা শবে বরাতকে নিয়ে বাড়াবাড়ি করছেন তারাও ভুল করছেন,আর যারা একেবারে অস্বীকার করছেন তারাও ভুল করছেন। কারন হাদিসের মধ্যে কোন বাড়াবাড়ির কথাও নেই আবার অস্তিত্বহীনতাও বুঝা যায়না।
সহিহ পন্থায় এই রাতে কিছু করনীয় ও বর্জনীয় ৷
এই রাতে করনিয়ঃ
১) এই রাতে আল্লাহর রাসুল অনেক দীর্ঘ নামাজ পড়তেন। তাই নামায পড়া ৷ তবে নির্ধারিত পরিমান বা পদ্ধতি জরুরী মনে না করে ৷
২) পরের দিন রোজা রাখতেন।দলীল-
ﻗﻮﻟﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴﻼﻡ : ﺍﺫﺍ ﻛﺎﻧﺖ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ ﺷﻌﺒﺎﻥ ﻓﻘﻮﻣﻮﻟﻴﻠﻬﺎ ﻭﺻﻮﻣﻮﺍ
ﻧﻬﺎﺭﻫﺎ
রাসুল (সাঃ) বলেছেন -যখন অর্ধ শাবানের আসে- তোমরা সেই রাতে ইবাদত বন্দেগীতে কাটাও এবং পরের দিন রোজা রাখো। তাই পরদিন রোজা রাখা
বিঃদ্রঃ শবে বরাতের রোজা একটি ৷
৩) এই রাতে পুরুষদের জন্য কবরস্থানে যাওয়া এবং তাদের মৃত আত্মীয় স্বজনদের জন্য ইসালে সাওয়াব করা মুস্তহাব।
এই সম্পর্কে মুফতি শফি সাহেব অত্যন্ত চমৎকার অভিমত ব্যাক্ত করেছেন।তিনি বলেন রাসুল (সাঃ) যেহেতু জীবনে একবার মাত্র শবে বরাতের রাত্রে কবরস্থানে গিয়েছেন,কাজেই জীবনে একবার এই রাতে কবরস্থানে গেলেই মুস্তহাব আদায় হয়ে যাবে।
এখানে লক্ষণীয় বিষয় হল কোন ভাবেই যেন বিদআতি কোন কাজ না হয়ে যায়।
৪) এই রাতে খুব দোয়া করা। কেননা আল্লাহর রাসুল বলেছেনঃ শাবানের ১৫ তারিখ রাতে আল্লাহর পক্ষ হতে একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা করেন,- আছে কি কোন ক্ষমা প্রার্থনাকারী,যাকে আমি ক্ষমা করবো। এমনিভাবে সকল বিষয়ের কথা উল্লেখ করা হয়।
৫) এই রাতে নির্দিষ্ট কোন নামাজ নেই। যত নফল
নামাজ পড়া যায় পড়বে ৷ তবে যাদের কাজা নামাজ বাকি আছে তাদের জন্য উত্তম হবে কাজা নামাজ গুলো আদায় করে নেয়া। কারন হাশরের মাঠে নফলের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবেনা,ফরজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।
এই রাতের বর্জনীয় আমল সমুহঃ ১) এই রাতে সম্মিলিত না হয়ে একাকী আমল করা
উত্তম।কারন সম্মিলিত হওয়ার ক্ষেত্রে আমলের
চাইতে ফেতনাটাই হওয়ার আশংকা বেশি। ২) আতশবাজি করা যাবেনা
৩) হালুয়া রুটি বিতরন কারা বা নিজ ঘরে তৈরি করা যাবেনা। কারন এতে অহেতুক সময় নষ্ট হয়, এবং বর্তমানে এটা একটা বড় ধরনের ফেতনার আকার ধারন করেছে।
৪) আলোকসজ্জা করা যাবেনা।
৫) মাইকে কুরআন তেলাওয়াত বা হামদ নাত পরিবেশন করে অন্যের আমলে ব্যাঘাত ঘটানো যাবেনা।
৬) কবরস্থানে ভিড় করা বা মেলা বসানো যাবেনা।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের কে এই রাতের সকল ফজিলত দান করুণ। উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
শবে বরাতের ফজিলত আল কাউসার
শবে বরাত সম্পর্কে হাদিস
শবে বরাতের ফজিলত ও গুরুত্ব
শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস
শবে বরাতের আমল
শবে বরাতে করণীয় ও বর্জনীয়
শবে বরাতের গোসলের ফজিলত
শবে বরাত 2023