শুনেছি, কোনো মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার পর কবরের কাছে দাঁড়িয়ে দুআ করলে মৃত ব্যক্তি নিজে সাহস পান এবং ফেরেশতাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সহজ হয়। কুরআন-হাদীসের আলোকে জানতে চাই, উক্ত কথাগুলো সঠিক কি না?
প্রশ্নোল্লিখিত কথা দুটির প্রায় কাছাকাছি বক্তব্য নির্ভরযোগ্য বর্ণনায় পাওয়া যায়। এক বর্ণনায় আছে, দাফন শেষে মৃত ব্যক্তির কবরের পাশে কিছু সময় অবস্থান করলে তার নিঃসঙ্গতাভাব দূর হয়।
অপর একটি বর্ণনায় মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার পর সেখানে তার মাগফিরাতের জন্য এবং সে যেন দৃঢ়তার সাথে ফেরেশতাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে সেজন্য দুআ করার কথা বর্ণিত হয়েছে।
বর্ণনা দুটি নিম্নে পেশ করা হল-
এক. আবদুর রহমান ইবনে শুমাছা আলমহরী রাহ. বলেন, আমর ইবনে আস রা. যখন মুমূর্ষ অবস্থায় ছিলেন তখন তার কাছে আমরা উপস্থিত ছিলাম। তিনি আমাদের বললেন, তোমরা যখন আমাকে দাফন করবে (প্রথমে আমাকে কবরে রেখে) আমার উপর পর্যাপ্ত পরিমাণ মাটি দিবে। এরপর একটি উট জবাই করে তার গোশত বণ্টন করতে যে পরিমাণ সময় লাগে ততটুকু সময় আমার কবরের পাশে অবস্থান করবে। যেন এর দ্বারা আমার নিঃসঙ্গতার ভীতি দূর হয়ে যায় এবং আমি আমার রবের প্রেরিত দূতকে বুঝে-শুনে জবাব দিতে পারি। (সহীহ মুসলিম ১/৭৬, হাদীস : ১২১; মুসনাদে আহমদ ৪/১৯৯)
সহীহ মুসলিমের ব্যাখ্যাকার উববী রাহ. বলেন, উক্ত হাদীসে মৃত ব্যক্তিকে দাফনের পর তার কবরের পাশে অবস্থান করার কথা এজন্য বলা হয়েছে যেন এ সুবাদে সে কবরের সওয়াল-জওয়াবে দৃঢ় থাকতে পারে।-শরহুল উববী ১/৩৮৬
অপর বর্ণনাটি হল, উসমান ইবনে আফফান রা. বলেন, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো মাইয়্যেতকে দাফন করার পর সেখানে অবস্থান করতেন এবং বলতেন, তোমরা তোমাদের ভাইয়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং দুআ কর। যেন আল্লাহ তাআলা তাকে দৃঢ়তার সাথে ফেরেশতাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার তাওফীক দান করেন। কেননা সে এখনই জিজ্ঞাসিত হবে। (সুনানে আবু দাউদ ২/৪৫৯, হাদীস : ৩২১৩
আরো দেখুন : আসসুনানুল কুবরা, বায়হাকী ৪/৫৬; ইলাউস সুনান ৮/৩৪২