সা’দ ইবনুর রাবী আল-আনসারী মদীনার খাযরাজ গোত্রের বনু আল-হারিস শাখার সন্তান। হায়সাম উল্লেখ করেছেন, ‘আবু রাবী’ তাঁর কুনিয়াত বা ডাকনাম। পিতা আর-রাবী ও মাতা হুযাইলা বিন্তু ইন্বা। সীরাত বিশেষজ্ঞরা তাঁর জন্মসন সম্পর্কে নীরব। (আনসাবুল আশরাফ- ১/২৪৪, তাবাকাত- ৩/৫২২, উসুদুল গাবা- ২/২৭৭)
সা’দ ইবনুর রাবী’র ইসলাম গ্রহণের সময়কাল সম্পর্কে মতভেদ দেখা যায়। আবু নু’য়াইম তাঁর ‘দালায়িল’ গ্রন্থে ’আকীল ইবন আবী তালিব ও যুহরী থেকে বর্ণনা করেছেন, প্রথম ’আকাবায়, যে বার ছয়জন ইয়াসরিববাসী মক্কায় রাসূলুল্লাহর হাতে সা. ইসলাম গ্রহণ করে বায়’য়াত করেন তাঁদের একজন ছিলেন সা’দ। সেই ছয় ব্যক্তি হলেনঃ ১. আস’য়াদ ইবন যুরারা ২. আবুল হায়সাম ইবন আত-তায়্যিহান ৩. আবদুল্লাহ ইবন রাওয়াহা ৪. সা’দ ইবনুর রাবী’ ৫. আন-নু’মান ইবন হারিসা ও ৬. ’উবাদা ইবনুস সামিত। (হায়াতুস সাহাবা- ১/১০৫) পক্ষান্তরে কোন কোন বর্ণনায় বুঝা যায়, তিনি দ্বিতীয় আকাবার বারো সদস্যের অন্যতম সদস্য ছিলেন। তিনি এই দ্বিতীয় ’আকাবায় ইসলাম গ্রহণে করেন। তৃতীয় আকাবায় তিহাত্তর মতান্তরে পঁচাত্তর জন লোকের সংগে তিনি যোগ দেন। হযরত রাসুলে কারীম সা. তাঁকে ও ’আবদুল্লাহ ইবন রাওয়াহাকে তাঁদের গোত্র বনু আল-হারিস ইবনুল খাযরাজের যুগ্ম ‘নাকীব’ বা দায়িত্বশীল নিয়োগ করেন। (তারীখুল ইসলাম ওয়া তাবাকাতুল মাশাহীর ওয়াল আ’লাম- ১/১৮১, তাবাকাত- ২/৫২২, উসুদুল গাবা- ২/২২৭)
ইবন হিশাম বর্ণনা করেনঃ হযরত রাসূলে কারীম সা. কুবা থেকে যে দিন মদীনায় উপস্থিত হন, মদীনার সকল শ্রেণীর মানুষ তাঁকে স্বাগতঃ জানায়। তিনি বিভিন্ন গোত্রের ভিতর দিয়ে চলছিলেন, আর সেই গোত্রের লোকেরা তাঁর বাহনের পথ রোধ করে তাদের ওখানে অবতরণের আবেদন জানাচ্ছিল। যখন তিনি বনু আল-হারিস ইবনুল খাযরাজের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন সা’দ ইবনুর রাবী খারিজা ইবন যায়িদ ও আবদুল্লাহ ইবন রাওয়াহা বনী হারিসার আরও কিছু লোক সংগে নিয়ে রাসূলুল্লাহর সা. সাওয়ারীর সামনে এসে দাঁড়িয়ে ’আরজ করলেনঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনি আমাদের সংখ্যা, সাজ-সর্যঞ্জাম ও প্রতিরক্ষার দিকে আসুন। (অর্থাৎ আপনাকে সম্মানের সাথে আশ্রয় দানের মত ক্ষমতা আমাদের আছে) রাসুল সা বললেনঃ তোমরা আমার বাহনের পথ ছেড়ে দাও। সে আল্লাহর নির্দেশ প্রাপ্ত। তাঁরা সবাই পথ থেকে সরে দাঁড়ালেন। (সীরাতু ইবন হিশাম- ১/৪৯৫)
যুহরী ও মুহাম্মদ ইবন ইসহাক বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সা. সাদ ইবনুর রাবী ও আবদুর রহামান ইবন ’আউফের মধ্যে ভ্রাতৃ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে দেন। হযরত সা’দ তাঁর এই মুহাজির ভাইয়ের প্রতি যে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা দেখান দুনিয়ার ইতিহাসে তার কোন তুলনা পাওয়া যাবে না। অন্যান্য আনসারগণ নিজনিজ অর্থ-সম্পদ, জায়গা-জমি সবই অর্ধেক তাঁর দ্বীনী মুহাজির ভাইকে ভাগ করে দেন; কিন্তু হযরত সা’দ অর্থ-সম্পদ ছাড়াও একজন স্ত্রীকে তালাক দিয়ে তার দ্বীনী ভাইকে দেওয়ার প্রস্তাব করেন। আর আব্দুর রহমান যদিও সে সময় রিক্ত ও নিঃস্ব, তবে তাঁর অন্তরটি ছিল অত্যন্ত প্রশস্ত। তিনি সা’দের সব প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। এ সম্পর্কে আনাস ইবন ’আউফ থেকে বর্ণিত হয়েছেঃ সা’দ তাঁর দ্বীনি ভাইকে সংগে করে নিজ গৃহে নিয়ে যান এবং এক সাথে আহার করেন। তারপর বলেনঃ আল্লাহর নামে আপনি আমার ভাই। আপনার স্ত্রী নেই; কিন্তু আমার দুই স্ত্রী। একজনকে আমি তালাক দেব, আপনি তাঁকে বিয়ে করবেন। আব্দুর রহমান বলেনঃ আল্লাহর কসম! কক্ষনো না। সা’দ বললেনঃ আমার বাগানে চলুন, আধা-আধি ভাগ করে নিই। আব্দুর রহমান বললেনঃ না। আল্লাহ আপনার ছেলে-মেয়ে ও মাল-দৌলতে বরকত ও সমৃদ্ধি দান করুন। এসবের কোন কিছুই প্রয়োজন আমার নেই। আমাকে শুধু বাজারের পথটি একটু দেখিয়ে দিন। (আল-ইসাবা- ৩/২৬, উসুদুল গাবা- ২/২৭৮, তাবাকাত- ৩/৫২৩)
হযরত সা’দ বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। এ যুদ্ধে তিনি বনী মাখযুমের রিফা’য়া ইবন রিফা’য়াকে হত্যা করেন। (সীরাতু ইবন হিশাম- ১/৭১১, তাবাকাত- ৩/৫২৩)
উহুদ যুদ্ধের প্রাক্কালে মক্কার কুরাইশরা ব্যাপক প্রস্তুতি শুরু করলো। তাদের সেই সমর প্রস্তুতির খবর দিয়ে একটি চিঠি মক্কা থেকে রাসূলুল্লাহর সা. চাচা আব্বাস ইবন ‘আবদিল মুত্তালিব গোপনে মদিনায় রাসূলুল্লাহর সা. নিকট পাঠালেন। চিঠিতে তিনি তাদের প্রস্তুতির বিবরণ দিয়ে এ কথাও লিখেন যে, ‘তারা তোমাদের ওপর আপতিত হলে, তোমরা যা ভালো মনে কর তাই করবে এবং সেই জন্য প্রস্তুতি নাও।’ বনী গিফারের একটি লোক অত্যন্ত বিশ্বস্ততার সাথে কুবায় রাসূলুল্লাহর সা. হাতে চিঠিটি পৌঁছে দেয়। রাসূল সা. সর্বপ্রথম তা উবাই ইবন কা’বকে পড়তে দেন এবং গোপন রাখতে বলেন। তারপর সা’দ ইবনুর রাবী’র নিকট আসেন এবং তাঁকেও বিষয়টি অবহিত করেন। তাঁকেও কথাটি কারও নিকট ফাঁস না করার নির্দেশ দেন। রাসূল সা. চলে যাওয়ার পর সা’দের স্ত্রী সা’দকে জিজ্ঞেস করলোঃ রাসূল সা. তোমাকে কি বললেন?
সা’দঃ তোমরা মা নিপাত যাক। তোমার তা শোনার কি প্রয়োজন?
স্ত্রীঃ আমি তোমাদের সব কথা শুনেছি। এই বলে তিনি সব কথা সা’দকে শোনান। সা’দ ইন্নালিল্লাহ পাঠ করে বললেনঃ দেখছি, তুমি আমাদের কথা আঁড়ি পেতে শুনে থাক। সা’দ তাঁর স্ত্রীকে সংগে করে রাসূলুল্লাহর সা. নিকট হাজির হলেন এবং সব ঘটনা খুলে বলার পর আরজ করেন ইয়া রাসূলুল্লাহরঃ আমার ভয় হচ্ছে, খবরটি হয়ত ছড়িয়ে পড়বে, আর আপনি ধারণা করবেন আমিই তা ছড়িয়েছি। রাসূল সা. বললেনঃ বিষয়টি ছেড়ে দাও। (আনসাবুল আশরাফ-১/৩১৩-৩১৪)
হিজরী তৃতীয় সনে সংঘটিত উহুদ যুদ্ধে তিনি অংশগ্রহণ করেন এবং অত্যন্ত বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করে শাহাদাত বরণ করেন। তাঁকে একদল প্রতিপক্ষ যোদ্ধা পরাস্ত করে হত্যা করে। (আল-আ’লাম- ৩/১৩৪, উসুদুল গাবা- ২/২৭৭, আনসাবুল আশরাফ- ১/৩৩০) তাঁর দেহে তীর-বর্ষার মোট বারোটি আঘাত লাগে। তিনি যখন মুমূর্ষু অবস্থায় যুদ্ধের ময়দানে পড়ে আছেন তখন মালিক ইবন দুখশান তাঁর কাছে এসে জিজ্ঞেস করেনঃ মুহাম্মাদ সা. নাকি নিহত হয়েছেন, তুমি জান? সা’দ জবাব দেন, তিনি নিহত হলেও আল্লাহ চিরঞ্জীব, তাঁর মৃত্যু নেই। তুমি তোমার দ্বীনের পক্ষে জিহাদ কর। মুহাম্মাদ সা. তো তাঁর রবের বাণী ও দ্বীনের বিধি-বিধান পৌঁছানের দায়িত্ব পূর্ণরূপে পালন করে গেছেন। (আনসাবুল আশরাফ- ১/৩২৭, তাবাকাত- ৩/৫২৩)
উহুদের যুদ্ধ মেষে হযরত রাসূলে কারীম সা. বললেনঃ কেউ সা’দ ইবনুর রাবীর খোঁজ নিয়ে আসতো। এক ব্যক্তি বললেনঃ আমি যাচ্ছি। যারকানী বলেন, লোকটি পড়ে থাকা লাশগুলির চারপাশে চক্কর দিয়ে সা’দের নাম ধরে জোরে ডাক দিলেন। কোন সাড়া পাওয়া গেলোনা। কিন্তু যখন তিনি এই কথা বলে চিৎকার করলেন যে, রাসূলুল্লাহ সা. তোমার খোঁজে আমাকে পাঠিয়েছেন। তখন ক্ষীণকণ্ঠের একটা আওয়াজ ভেসে এল; আমি মৃতদের মধ্যে। তখন তাঁর জীবনের শেষ মুহূর্ত। শ্বাস-প্র্শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে, জিহ্বাও আয়ত্তে নেই। অন্য একটি বর্ণনা মতে, লোকটি যখন তাঁর খোঁজে ঘুরাঘুরি করছে, তখন সা’দই তাঁকে ডাক দেন। যাই হোক, সেই অবস্থায় সা’দ তাঁকে বললেন, রাসূলুল্লাহকে সা. আমার সালাম পৌঁছিয়ে বলবেন, আমাকে বারোটি আঘাত করা হয়েছে। আমিও আমার হত্যাকারীকে হত্যা করেছি। আর আনসারদের বলবেন, যদি দুর্ভাগ্যবশতঃ রাসূল সা. নিহত হন, আর তোমাদের একজনও জীবিত ফিরে যাও, আল্লাহকে মুখ দেখানোর যেগ্য তোমরা থাকবে না। কারণ, ‘লাইলাতুল আকাবায়’ (আকাবার রাত্রি) তোমরা রাসূলুল্লাহর সা. জন্য জীবন উৎসর্গ করার শপথ নিয়েছিলে। কোন কোন বর্ণনায় এই ব্যক্তির নাম উবাই ইবন কা’ব বলা হয়েছে। তিনি সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় সা’দের পবিত্র রূহ তাঁর নশ্বর দেহ তেকে বেরিয়ে যায়। (তাবাকাত- ৩/৫২৩-২৪, আল-ইসতীয়াব- ২/৩৪, তাহজীবুল আসমা ওয়াল লুগাত- ১/২১০, আল-ইসাবা- ২/২৭)
হযরত উবাই ইবন কা’ব ফিরে এসে রাসূলুল্লাহকে সা. সা’দের অন্তিম কথাগুলো পৌঁছালে তিনি বলেন, আল্লাহ তার ওপর করুণা বর্ষণ করুন। জীবন-মরণ উভয় অবস্থায় সে আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে উপদেশ দিয়েছেন। (উসুদুল গাবা- ২৭৭) উহুদের অন্য এক শহীদ ইবন যায়িদ ও সা’দকে উহুদের প্রান্তরে একই কবরে দাফন করা হয়। খারিজা ছিলেন সম্পর্কে সা’দের চাচা।
সা’দের মৃত্যুর পর তাঁর ভাই জাহিলী প্রথা অনুসারে তাঁর সকল সম্পত্তি দখল করে নেয়। সা’দ গর্ভবতী স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তান রেখে যান। তখনও মীরাসের (উত্তরাধিকার) আয়াত নাযিল হয়নি। জাবির ইবন আবদিল্লাহ বর্ণনা করেন। সা;দের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী একদিন তাঁর দুই কন্যাকে সংগে করে রাসূলুল্লাহর সা. নিকট এসে বলেনঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ! এরা সা’দের কন্যা। ওদের পিতা উহুদে শাহাদাত বরণ করেছে। আর ওদের চাচা সকল সহায় সম্পত্তি আত্মসাৎ করে বসেছে, ওদেরকে কিছুই দেয়নি। অর্থ-সম্পদ ছাড়া ওদের বিয়ে শাদী হবে কেমন করে? রাসূল সা বললেনঃ আল্লাহ তা’য়ালা ওদের ব্যাপারে ফায়সালা দেবেন। এর পরই সূরা নিসার ১১ নং আয়াতের এই অংশটুকু নাযিল হয়ঃ ‘যদি কন্যা কেবল দুই-এর অধিক হয় তাহলে তাদের জন্য পরিত্যাক্ত সম্পত্তির দুই-তৃতীয়াংশ।’
উপরোক্ত আয়াত নাযিলৈর পর হযরত রাসুলে কারীম সা. মেয়ে দু’টির চাচাকে ডেকে নির্দেশ দেনঃ সা’দের পরিত্যাক্ত সম্পত্তির দুই-তৃতীয়াংশ তার দুই মেয়েকে, এক-অষ্টমাংশ তাদের মাকে দেওয়ার পর বাকীটা তুমি গ্রহণ কর। (আল-ইসাবা- ২/২৭, তাবাকাত- ৩/৫২৪, উসুদুল গাবা- ২/২৭৮, তাহজীবুল আসমা ওয়াল লুগাত- ১/২১০, তাছাড়া ইমাম আহমাদ, আবু দাউদ, তিরমিজি ও ইবন মাজা এই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন)
হযরত রাসূলে কারীম সা. যখন সা’দের কন্যা ও স্ত্রীদের জন্য এই ফায়সালা দান করেন তখনও মাতৃগর্ভের সন্তানের কোন মীরাস বা উত্তরাধিকার নির্ধারিত হয়নি। এই ঘটনার অনেক পরে গর্ভের সন্তানের মীরাস্ দেওয়ার বিধান হয়। সা’দের স্ত্রীগর্ভের সেই সন্তানটি ভূমিষ্ট হয়। তাঁর নাম রাখা হয় উম্মু সা’দ বিনতু সা’দ এবং পরবর্তীকালে তিনি যায়িদ ইবন সাবিতের স্ত্রী হন। খলীফা হযরত ’উমারের রা. খিলাফতকালে যায়িদ তাঁর স্ত্রীকে বললেন, তুমি ইচ্ছা করলে তোমার পিতার মীরাসের ব্যাপারে আমীরুল মুমিনীনের সাথে কথা বলতে পার। বর্তমানে তনি গর্ভের সন্তানদের মীরাসের অংশ দান করছেন। উম্মু সা’দ বললেনঃ আমি আমার বোনদের কাছে কিছুই দাবী করবো না। (আনসাবুল আশরাফ- ১/৩৩৮)
সেই জাহিলী আরবে যখন লেখার খুব কম প্রচলন ছিল, হযরত সা’দ লেখা জানতেন। (তাবাকাত- ৩/৫২২, তাহজীবুল আসবা- ১/২১০) যেহেতু তিনি গোত্রীয় নেতার সন্তান ছিলেন, তাই শিক্ষার বিশেষ সুযোগ লাভ করেছিলেন এবং লেখাও শিখেছিলেন। হযরত রাসূলে কারীমের সা. মুখ থেকে শোনা কিছু হাদীসও মুখস্থ করেছিলেন। (উসুদুল গাবা- ২/২৭৮)
তাঁর ’ঈমানী জোশ ও রাসূলুল্লাহর সা. প্রতি প্রবল ভালোবাসার প্রকাশ ঘটেছিল আকাবার বাই’য়াত, উহুদের যুদ্ধ এবং মৃত্যুর পূর্বে করে যাওয়া অসীয়াতের মধ্যে।
এই সব কারণে সাহাবায়ে কিরামের নিকট হযরত সা’দের একটা বিশেষ মর্যাদা ও সম্মান ছিল। তাঁর এক কন্যা একবার হযরত আবু বকরের রা. নিকট আসলে তিনি তাঁর বসার জন্য নিজের কাপড় বিছিয়ে দেন। তা দেখে হযরত উমার রা. জিজ্ঞেস করেনঃ মেয়েটি কার? খলীফা বললেনঃ এ সেই ব্যক্তির মেয়ে- যিনি তোমার ও আমার চেয়ে উত্তম ছিলেন। আবার প্রশ্ন করলেনঃ এমন মর্যাদা কি জন্য? বললেনঃ তিনি রাসূলুল্লাহর সা. জীবদ্দশায় জান্নাতে পৌঁছে গেছেন আর তুমি-আমি এখনও এখানে পড়ে আছি। (আল-ইসাবা- ২/২৭)
আবু বকর আয-যুবায়রী বর্ণনা করেনঃ এক ব্যক্তি খলীফা আবু বকরের কাছে গিয়ে দেখলেন, তিনি সা’দ ইবনুর রাবীর ছোট্ট একটি মেয়েকে বুকের মধ্যে নিয়ে তার লালা মুছে দিচ্ছেন ও চুমু খাচ্ছেন। লোকটি জিজ্ঞেস করল, মেয়েটি কে? তিনি জবাব দিলেন, এ এমন এক ব্যক্তির মেয়ে যিনি তোমার ও আমার চেয়ে উত্তম। এ সা’দ ইবনুর রাবীর মেয়ে। তিনি ছিলেন ’আকাবার নাকীব, বদরের যোদ্ধা ও উহুদের শহীদ। (সীরাতু ইবন হিশাম- ২/৯৫)