জাহেলিয়াত আমলের কবিদের কাব্য সং কলন সাব যে মু অ ৷ল্লাকার ইমরুল কায়সের
অংশটুকু সর্বাধিক উন্নত ও প্রসিদ্ধ যার প্রথম পংক্তি হলো
এে
— দাড়াও, প্রিয়তমা ও তার বাসগৃহের বিরহে একটু কেদে র্ধনই ৷
ইমাম আহমদ (র) হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন
রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন : “ইমরুল কায়স জাহান্নড়ামপামী কবিদের পতাকাবাহী ৷ বিভিন্ন সুত্রে
হাদীসটি বর্ণিত হলেও এটির সনদ বিশুদ্ধ ৷
হাফিজ ইবনে আসাকির বলেছেন, ইক্রো কায়সের বংশ লতিকা হলো, ইমরুল কায়স
ইবন হাজার ইবন হারিছ ইবন আমর ইবন হুজ্বর ইবনে আমর ইবন মুআবিয়া ইবন হারিছ
ইবনে ইয়া’ রাব ইবন ছাওর ইবন মুর৩ তড়া ইবনে মু আবিয়া ইবন কিনৃদা ৷ উপনাম আবু ইয়াষীদ,
মতান্তরে আবু ওহাব ও আবুল হারিছ আল কিনদী ৷ তিনি দামেশক এলাকায় বাস করতেন ৷
তিনি তার কবিতায় ঐ এলাকার বিভিন্ন স্থানের উল্লেখ করেছেন ৷ তার দুটি পংক্তি নিম্নরুপঃ
এএে ব্লু
— “তোমরা দীড়াও, এসো, আমরা প্রিয়তমা
ও তার বাসস্থানের বিরহে একটু কেদে নিই,
যে বাসস্থান বালির টিলার চুড়ায় দাথুল ও হাওমাল ,
তৃযিহ ও মাকরাত নামক স্থানের মাঝে অবস্থিত ,
উত্তর ও দক্ষিণের বায়ু প্রবাহ সত্বেও যার চিহ্ন মুছে যায়নি ৷”
এইগুলি হ্ররান অঞ্চলের প্রসিদ্ধ স্থান ৷
হাফিজ ইবনে আসাকির অন্য এক সুত্রে বর্ণনা করেন যে আফীফ ইবন মাদীকরব
বলেছেন, আমরা একদিন রাসুলুল্লাহ (সা) এর নিকট বসা ছিলাম ৷ সে সময়ে ইয়ামানের একটি
প্রতিনিধি দল এসে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! ইমরুল কায়সের কবিতার দু’টি পংক্তির উসিলায়
আল্লাহ্ আমাদের জীবন রক্ষা করেছেন ৷ রাসুলুল্লাহ (সা) বললেন, তা কীভাবো তারা বলল,
আমরা আপনার সাথে সাক্ষড়াতের উদ্দেশ্যে আসছিলাম ৷ কিছুদুর এসে আমরা পথ হারিয়ে
ফেলি, ফলে সেস্থানে আমাদের তিনদিন অবস্থান করতে হয় ৷ অথচ আশেপাশে কোথাও পানি
পাওয়া যাচ্ছিল না ৷ অগত্যা গাছের ছায়ায় শুয়ে মৃত্যুবরণের উদ্দেশ্যে আমরা এক একজন এক
একটি খেজুর গাছ ও বাংলা গাছের নীচে চলে গেলাম ৷ আমাদের প্রাণ যায় যায় দশা হঠাৎ
দেখতে পেলাম, একজন উষ্ট্রড়ারােহী এগিয়ে তান্সেক্ষ্;ছ ৷ তাকে দেখে আমাদের একজন কবিতা
আবৃত্তি করল :;
অর্থাৎ প্রিয়া যখন বুঝতে পারল যে, ঘাট-ই তার লক্ষ্যস্থল, আরো বুঝল যে, তার
পার্শ্বদেশ আর র্কাধের মধ্যস্থুলের গোশত হহ্বন্:চ শুভ্রতা বিচ্চুরিত হচ্ছে, তখন সে জারিজের
নিকটস্থ সেই কুপে যেতে মনন্থ করল, যে কুপ ছায়া ও কীটাদার বৃক্ষে পরিপুর্ণ ৷
পংক্তি দৃটো শুনে আরোহী বলল, এগুলো করে কবিতাঃ সে তো আমাদের দৃর্দশা দেখে
ফেলেছে ৷ আমরা বললাম , এগুলো ইমরুল কায়সের কবিতা ৷ আরোহী বলল, আল্লাহর শপথ,
সে একট্রুও মিথ্ঙ্কু৷ বলেনি ৷ তোমাদের পার্শ্ববর্তী এই জায়গাটিই জারিজ ৷ সত্যি সত্যি আমরা
তাকিয়ে দেখলাম যে, আমাদের ও কুপটির মাঝে দুরতু মাত্র পঞ্চাশ হাতের ৷ ফলে আমরা
হড়ামাগুড়ি দিয়ে সেখানে গেলাম ৷ দেখলাম, তা ইমরুল কায়সের বিবরণ অনুযায়ী হুবহু ছায়া ও
র্কাটাদার বৃক্ষবেষ্টিত একটি কুয়া ৷ এ কাহিনী শুনে রাসুলুল্লাহ (সা) বললেন,
সােকটি দৃনিয়াতে বহুল আলোচিত, পরকালে কেউ তার কথা জিজ্ঞাসাও করবে না,
দৃনিয়াতে সে স্ন্থান্ত, পরকালে লাঞ্ছিত; তার হাতে কবিদের পতাকা থাকবে, তাদেরকে
জাহান্নামের দিকে পরিচালিত করবে ৷
কালবী লিখেছেন, ইমরুল কায়স একবার পিতৃ হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য পতাকা
উড়িয়ে বনু আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য রওয়ানা হয় ৷ তাবালা নামক স্থানে ছিল যুল-খুলসা
নামক একটি মুর্তি ৷ আরবরা তার নিকট লটারী টানত ৷ ইমরুল কায়স সেন্থানে পৌছে লটারী
টানল ৷ কিন্তু লটারীতে নেতিবাচক তীর উঠে আসে ৷ ফলে সে আরও দু’বার লটারী টানে ৷
তাতেও ঐ একই ফল হয় ৷ ইমরুল কায়স ক্ষিপ্ত হয়ে ভীরগুলি ভেঙ্গে যুল খুলনার মুখের উপর
ছুড়ে যাবে এবং বলে যে, তোর বাবা যদি খুন হতো, তবে তুই আমার কাজে বাধ সাধতে না ৷
এই বলে সে বনু আসাদ গোত্রের উপর বাপিয়ে পড়ে এবং তাদের অনেককে হত্যা করে ৷
ইবৃপুল কালবী বলেন, এরপর ইসলামের অভ্যুদয় পর্যন্ত ইমরুল কায়স কখনো যুলশ্
থুলসার নিকট লটারী টানেনি ৷
কথিত আছে যে, ইমরুল কায়স কোনো এক যুদ্ধে রোমের বাদশা কায়সারের বিজয়ে তার
ভুয়সী প্রশংসামুলক কবিতা রচনা করে ৷ কিন্তু, কাজ্জিত পুরস্কার না পেয়ে পরে সে উল্টে৷ তার
নিন্দাসুচক কবিতা রচনা করে ৷ কথিত আছে, রোম সম্রাট বিষ থাইয়ে তাকে হত্যা করে ৷
আসীব নামক একটি পাহাড়ের সন্নিকটে জনৈক মহিলার কবরের পার্থে তাকে সমাধিস্ত করা
হয় ৷ পরে সেখানে নিম্নের পংক্তি দুটি লিখে রাখা হয়েছে-
মোঃহুশ্ঙা
— হে আমার প্রতিবেশিনী!নি ৪সন্দেহে আমাদের সাক্ষাতস্থুল নিকটেই ৷ আসীব পর্বত
যতদিন টিকে থাকবে, আমিও এখানে ততদিন অবস্থান করব ৷ হে প্রতিবেশিনী! তুমি আমি
দু জন-ই এখানে মুসাফির ৷ আর এক ঘুসাফির অপর মুসাফির-এর চ্যাত্মীয়েরই মত ৷
ঐতিহাসিকগণ বলেন, সাতটি মুআল্লাকাই কা বা শরীফে ঝুলিং;; রাখা হয়েছিল ৷ তার
কারণ, আরবদের নিয়ম ছিল যে , তাদের কেউ কো ন কবিতা রচনা করলে যে তা কুরায়শদের
নিকট পেশ করত ৷ কুরায়শদের অনুমোদন পেলে সম্মানার্থে তা কাবার গায়ে ঝুলিয়ে রাখা হত ৷
এভাবে একত্রিত হতে হতে ৩এই সাত টি মুআল্লাকা একত্রিত হয়ে যায় ৷ত তার প্রথমটি হল ইমরুল
কায়স ইবন হজর এর রচিত, যার প্রথম প ন্ক্তিটি পুর্বে উল্লেখ করা হয়েছে ৷
দ্বিতীয় মুআল্লাকা নাবিগা যুবিয়ানীর রচিত, যার নাম ছিল যিয়াদ ইবন মুআবিয়া, মতান্তরে
যিয়াদ ইবন আমর ইবন মুআবিয়া ইবন যাবার ইবন জাবির ইবন ইয়ারবু ইবন গায়য ইবন
মুররা ইবন আউফ ইবন সাদ ইবন যুবৃইয়ান ইবন বাপীয ৷ তার প্রথম পংক্তি হলো :
— উলইয়া ও সানাদে অবস্থিত হে আমার প্রিয়ার গৃহ ৷ সে অতীত হয়ে গেছে আর তার
বিরহ অনেক দীর্ঘ হয়ে গেল ৷
তৃতীয় মুআল্লাকার রচয়িত ৷ যুহায়র ইবনে আবু সুলামী রবীয়া ইবনে বিয়াহ আল-মুযানী ৷
যার প্রথম পংক্তিং
— দাররাজ ও মুতাছাল্লামের কঠিন ভুখণ্ডে অবস্থিত এই নীরব ধ্বংস ভুপ-ই কি আমার
প্রিয়ত মা উম্মে আওফা র স্মৃতি?
চতুর্থ ঘুআল্লাকার রচয়িতা হলো, তারফ৷ ইবনুল আবৃদ ইবন সুফিয়ান ইবন সাদ ইবন
মালিক ইবন ষুবাইআ ইবন কায়স ইবন ছালাবা ইবন উকবাে ইবন সাব ইবন আলী ইবন
বকর ইবন ওয়ায়েল ৷ যার প্রথম পংক্তি৪
ছাহমাদের পাথুরে অঞ্চলে আমার প্রিয়া খাওলার বাসগৃহে র স্মৃতি নারীদের মহিলাদের
হাতের অবশিষ্ট উলকি রেখার ন্যায় ঝলমল করছে বলে মনে হয় ৷
পঞ্চম মুআল্লাকার রচয়িতা অড়ানত বা ইবন শাদ্দাদ ইবন মুআবিয়া ইবন কুরাদ ইবন
মাখবুম ইবন রবীয়া ইবন মালিক ইবন পালিব ইবন ক্তায় আ ইবন “আবাস আল আবাসী ৷
তার প্রথম পংক্তি হলো
আগেকার কবিরা এমন কোন অপুংতাি রেখে যাননি, যা পুরণ করা বাকী রয়েছে ৷
তােমাতে অনেক আন্দাজ অনুমানের পর তুমি তাে প্রিয়ার পৃহের সন্ধান পেয়েছ ৷
ষষ্ঠ মুআল্লাকার রচয়িতা বনী তামীমের আলকামা ইবন আবদা ইবন নু মান ইবন করেন ৷
তীর প্রথম পংক্তি হলো০ ং
তােমাকে নিয়ে আমার সৌন্দর্য পিয়াসী প্রাণ উচ্ছসিত হলো যখন যৌবন বিগত প্রায়
এবং বার্ধক্য এসে হানা দিলো ৷
সপ্তম মুআল্লাকার রচয়িতা লাবীদ ইবন মালিক ইবন জাফর ইবন কিলাব ইবন রবীয়া
ইবন আমির ইবন সাসআে ইবন মুয়াবিয়া ইবন বকর ইবন হাওয়াযিন ইবন মনসুর ইবন
ইকরিমা ইবন খাসফা ইবন কায়স ইবন আয়লান ইবন মুযার ৷ এই সপ্তম মুঅড়াল্লাকাকে
আসাময়ী প্রমুখ পণ্ডিত সাত মুআল্লাকার অন্তর্ভুক্ত বলে স্বীকার করেন না ৷ তার প্রথম পংক্তি
হলো :
-মিনার যে গৃহে আমার প্রিয় কখনো তার সময় কখনো দীর্ঘ সময় অবন্থ ন করতো, তার
চলে যাওয়ার ফলে সব বিরান হয়ে গেছে ৷ মিনার গাওল ও রিজা ৷ম নামক স্থানও এখন সম্পুর্ণ
জনবসতি শুন্য ৷
আবুউবায়দা আসমায়ী ও মুবারবাদ প্রমুখ পণ্ডিতপণ অভিমত ব্যক্ত করেছেন যে, আরেকটি
কসীদা এমনও রয়েছে, যার রচয়িতা কে তা অজ্ঞাত ৷ তার প্রথম পংক্তিটি হলো৪
-টিলাণ্ডলোত প্রশ্নকারী কোন প্ৰতুত্তের প্রায়ঃ নাকি কথা না বলার ব্যাপারে প্রিয়ার কোন
শপথ রয়েছে? এটি একটি সুদীর্ঘ অনবদ্য কবিতা ৷ এই পংক্তিমালায় অনেক অনেক সুন্দর ব্যাখ্যা
রয়েছে ৷
আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া (২য় খণ্ড) ৫৩-
উমাইয়া ইবন আবুস সাল্ত ছাকাফী
হাফিজ ইবন আসাকির বলেন, উমাইয়া ইবন আবুসৃ স্যলত-এর বংশ লতিকা নিম্নরুপঃ
উমাইয়া ইবন আবুস সালত আব্দুল্লাহ ইবন আবী রবীয়া ইবন আওফ ইবন আক্দ ইবন আয্যা
ইবন আওফ ইবন ছাকীফ ইবন মুনাব্বিহ ইবন বাক্ব ইবন হড়াওয়াযিন আবু উছমান, তাকে
আবুল হাকাম ছাকাফী বলা হত ৷ তিনি জাহিলিয়তের যুগের একজন কবি ৷ ইসলামের পুর্বে
তিনি দামেশকে আগমন করেন ৷ কেউ কেউ বলেন, তিনি সরল পথের অনুসারী এবং জীবনের
শুরু থেকেই ঈমানের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন ৷ পরবর্তীতে তার ঈন্মস্টনবিচ্যুতি ঘটে ৷ পবিত্র
কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা তার কথাটি উল্লেখ করেহ্যেহু ! আয়াতটি হল :
তাদেরকে ঐ ব্যক্তির বৃত্তান্ত পড়ে শোনাও, যাকে আমি দিয়েছিলাম নিদর্শন,
তারপর যে তা বর্জন করে ও শয়তান তার পেছনে লাগে, আর সে বিপথগামীদের অন্তর্ভুক্ত
হয় ৷ (৭ আরাফ : ১৭৫)
যুবাইব ইবনে বাক্কার বলেন, এর কন্যা হচ্ছে রুকাইয়া আবদ শাম্স ইবন আবদ মানড়াফ
করি উমাইয়া ইবন আবুস্ সাল্ত এর মা ৷ আবুসৃ সালত এর মুল নাম রবীয়া ইবন ওহ্ব
ইবন আল্লাজ ইবন আবু সালামা ইবনে ছাকীফ ৷
অন্যরা বলেন, উমাইয়ার পিতা ছিলেন তায়েফের বিখ্যাত কবিদের একজন ৷ উমাইয়া ছিল
এদের মধ্যে সর্বাধিক খ্যাতিমান ৷
আব্দুর রাঘৃযাক ছাওরী সুত্রে বর্ণনা করেন যে, আব্দুল্লাহ ইবন আমর (বা) উপরোক্ত
আয়াতের ব্যাখ্যার বলেছেন, এই আয়াতে উমাইয়া ইবনে আবুস্ সাল্তের প্রতিই ইঙ্গিত করা
হয়েছে ৷
আবু বকর ইবনে মরদুইয়া নাফে’ ইবনে আসিম ইবনে মাসউদ হতে বর্ণনা করেন যে,
তিনি বলেন, আমি একদিন এমন একটি মজলিসে উপস্থিত ছিলাম, যেখানে আব্দুল্লাহ ইবন
আমরও ছিলেন ৷ সেই মজলিসে এক ব্যক্তি সুরা আরাফের পুর্বোক্ত আয়াত পাঠ করলে
আব্দুল্লাহ ইবন আমর (রা) জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কি জান, লোকটি কে? উত্তরে কেউ
বলল, লোকটি হচ্ছে সাইফী ইবন রাহিব ৷ কেউ বলল, বালআম নামক বনী ইসরাঈলের জনৈক
ব্যক্তি ৷ আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা) বললেন, না ৷ প্রশ্ন করা হল, তবে লোকটি কে? তিনি