আমিও আবু হাকীমা অর্থাৎ যামআর জন্যে ৰিলাপ করবো ৷ কেননা, আমার কলিজা জ্বলে
গেছে ৷ রাবী বলেন, ভৃত্য ফিরে এসে তাকে জামাল : এক মহিলা তার উট হারিয়ে যাওয়ায় এ
ভাবে ৰিলাপ করছে ৷ এ কথা শুনে আসওয়াদ একটি কবিতা আবৃত্তি করলো :
এফ্তে
ঐ মহিলা কি এ জন্যে ৰিলাপ করছে যে, তার একটা উট হারিয়ে গিয়েছে এবং এ ভাবে
বিনিদ্র রজনী কাটিয়ে দিচ্ছে ? একটা জওয়ান উট হারানাের জন্যে এরুপ ৰিলাপ কর না ৷ বরং
বদরের ঘটনার জন্যে ৰিলাপ কর ৷ সেখানে আমাদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে ৷
তুমি ৰিলাপ কর বদরে নিহত নেতাদের জন্যে; অর্থাৎ বনু হাসীস, বনু মাখবুম ও আবুল
ওয়ালীদের সন্তানদের জন্যে ৷
যদি তুমি ৰিলাপ করতে চাও, তবে আবু আকীল ও বীরা:শৃষ্ঠ হারিছের জন্যে ৰিলাপ কর ৷
এদের সকলের জন্যে তুমি ৰিলাপ করতে থাক, বিলড়াপে বিরতি দিও না ৷ আর আবু
হাকীমার (যামআ) সাথে তো কারও তুলনাই হয় না ৷
জেনে রাখ, ওদের মৃত্যুর পর এমন সব লোক নেতা হয়েছে, যদি বদরের যুদ্ধ সংঘটিত না
হত, তবে এরা কখনও নেতা হতে পারত না ৷
অনুহেদ
কুরায়শ যুদ্ধবন্দীদের মুতিপণ আদায়
ইবন ইসহাক বলেন বদর যুদ্ধের বন্দীদের মধ্যে একজন ছিল আবু ওয়াদ্দাআ ইবন
যাবীরাতুস সাহ্মী ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, মক্কায় তার এক ছেলে আছে ৷ যে খুব চতুর,
ব্যবসায়ী ও সম্পদশালী ৷ মনে হয় সে তার পিতাকে মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে নেয়ার জন্যে
তোমাদের কাছে আসবে ৷ কুরায়শরা যখন বলাবলি করছিল যে, তোমরা বন্দীদের ছাড়াবার
জন্যে খুব তাড়াহুড়া করবা না ৷ তা হলে মুহাম্মদ ও তার সংগীরা যুক্তিপণের পরিমাণ বৃদ্ধি করে
দেবে, তখন মুত্তালিব ইবন ওয়াদাআ (রড়াসুলুল্লাহ্ (না)-এর পুর্বকথিত সেই ছেলেটি) বলল,
তোমরা ঠিকই বলেছ, তাড়াহুড়া করা যাবে না ৷ কিত্তু এ কথা বলে সে নিজেই রাতের আধাবে
মক্কা থেকে বেরিয়ে মদীনায় এসে চার হাযার দিরহামের বিনিময়ে তার পিতাকে ছাড়িয়ে নিয়ে
চলে যায় ৷
এই ওদড়াআ হচ্ছে প্রথম বন্দী যাকে মুক্তিপণের বিনিময়ে ছাড়ান হয় ৷ এরপর কুরায়শরা
তাদের বন্দীদের মুক্ত করাবার জন্যে পর্যায়ক্রমে মুক্তিপণ পাঠাতে থাকে ৷ তখন মিকরায ইবন
হাফ্স ইবন আখয়াফ সুহায়ল ইবন আমরের যুক্তির ব্যাপারে আসলো ৷ তাকে বনু সালিম ইবন
আওফ গোত্রের মালিক ইবন দাখশাম বন্দী করেছিল ৷ এ প্রসঙ্গে সে নিম্নের স্বরচিত কবিতা
আবৃত্তি করল চ্
,
আমি তো সুহায়লকে বন্দী করেছি ৷ তাকে বাদ দিয়ে দলের অন্য কাউকে বন্দী করতে আমি
চাইনি ৷
খুনদুফ গোত্র এ বিষয়ে অবগত আছে যে, যখন তারা অত্যাচারিত হয় তখন মুকাবিলার
জন্যে একমাত্র সুহায়লই বীর পুরুষ হিসেবে অবির্ভুত হয় ৷
আমি ঠোটওয়ালা ( ঠোটকাটা)-কে আঘাত করলে সে নত হয়ে পড়ে এবং ঠোটকাটা
চিহ্নধারীর সাথে যুদ্ধ করতে আমি বাধ্য হই ৷
ইবন ইসহড়াক বলেন : সুহায়লের নীচের ঠোট কাটা ছিল ৷ ইবল ইসহাক বলেন : বনু
আমির ইবন লুআই গোত্রের মুহাম্মদ ইবন আমর ইবন আতা আমাকে বলেছেন যে উমর ইবন
খড়াত্তাব (রা) রাসুলুল্লাহ্ (সা)-কে বললেন : আমাকে অনুমতি ঢািা অ্যাম সুহায়লের সামনের
উপর-নীচের দুটো করে চারটা দীত উপড়ে ফেলি ৷ এতে তার জিহ্ব ৷ ঝুলে থাকবে ৷ ফলে আর
কখনও কোথাও দাড়িয়ে আপনার বিরুদ্ধে ভাষণ দিতে পারবে না ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন,
আমি তার মুখ বিকৃত করব না ৷ তা হলে আল্লাহ আমার মুখ বিকৃত করে দেবেন ৷ যদিও আমি
নবী হই না কেন ৷
এ হাদীছটি মুরসাল বরং মু’যাল ৷ ১ ইবন ইসহাক বলেন : আমি আর ও জেনেছি, রাসুলুল্লাহ্
(সা) হযরত উমরকে এ প্রসঙ্গে আরও বলেছিলেন যে, ভবিষ্যতে সুহায়ল এমন ভুমিকাও
রাখতে পারে যা নিন্দনীয় হবে না ৷ (আমি ইবন কাহীর) বলি যে ভুমিকা হচ্ছে রাসুলুল্লাহ্
(না)-এর ইনতিকালের পর যখন গোটা আরবে বহু লোক মুরতড়াদ হয়ে যায় এবং মুনাফিকরা
মদীনায় সংঘবদ্ধ হয়, ইসলামের এ দুর্কিংকালে সুহায়ল মক্কায় ভাষণ বক্তৃতার মাধ্যমে লোকদের
সঠিক দীনের উপর অবিচল হয়ে থাকার ব্যপাড়ারে মুখ ভুমিকা পালন করেন ৷ এ সম্পর্কে শীঘ্রই
আলোচনা করা হবে ৷
ইবন ইসহড়াক বলেন : মিকরায সুহায়লের ব্যাপারে আলোচনা করে যখন তাদেরকে রাযী
করাল, তখন তারা বলল, ঠিক আছে আমাদের পাওনাটা দিয়ে দাও ৷ মিকরায বলল, তোমরা
তার স্থলে আমাকে বন্দী কর এবং তাকে ছেড়ে দাও ৷ সে গিয়ে তোমাদের মুক্তিপণ পাঠিয়ে
দেবে ৷ তার কথামত তারা সুহায়লকে ছেড়ে দিল এবং মুকরিযকে বন্দী করে রেখে দিল ৷ ইবন
ইসহাক এ স্থানে মুকরিষের একটি কবিতা উল্লেখ করেছেন ৷ কিন্তু ইবন হিশাম তা উল্লেখ
করেননি ৷ ইবন ইসহড়াকআবদুল্লাহ্ ইবন আবু বকর থেকে বর্ণনা করেন : বদর যুদ্ধের বন্দীদের
মধ্যে আমর ইবন আবু সুফিয়ড়ান সাখার ইবন হারবও ছিল ৷ ইবন ইসহাক বলেন তার যা
ছিল উকবা ইবন আবু মুআয়তের কন্যা ৷ কিন্তু ইবন হিশাম বলেছেন, তার মা আবু মুআয়তের
বোন ৷ ইবন হিশাম বলেন, তাকে বন্দী করেছিলেন আলী ইবন আবু তালিব ৷ ইবন ইসহাক
১ মুযাল হচ্ছে ঐ বর্ণনা যে বর্ণনার সনদে একাধিক রাবীর নাম অনুল্লিখিত থাকে ৷
বলেন ঘ্র আমার নিকট আবদুল্লাহ ইবন আবু বকর বর্ণনা করেন যে আবু সুফিয়ানকে বলা হল,
’ তোমার ছেলে আমরকে ঘুক্তিণণ দিয়ে ছাড়িয়ে আন ৷ সে বলল, আমার উপর কি একই সাথে
রক্ত ও আমার সম্পদ একত্রিত হবে ? তারা হানযা লাকে হত্যা করেছে ৷ এখন আবার আমরকে
মুক্তিণণ দিয়ে ছাড়িয়ে আনতে হবে ? ওকে তাদের হাতে থাকতে দাও ৷ যতদিন ইচ্ছা তারা ওকে
বন্দী করে রাখুক ! বর্ণনাকারী বলেন, আবু সুফিয়ানের ছেলে আমর মদীনায় বন্দী অবস্থায় ছিল ৷
এরই মধ্যে বনু আমর ইবন আওফের শাখাংপাত্র বনু মুআবিয়ার সাআদ ইবন নু’মান ইবন
আক্কাল উমরা করার উদ্দেশ্যে বের হন ৷ তার সাথে ছিল একটি দুগ্ধবভী উষ্টী ৷ বয়সে তিনি
ছিলেন একজন বৃদ্ধ মুসলিম ৷ বাকী” নামক স্থানে তিনি যেষগাল নিয়ে থাকতেন ৷ সেখান
থেকেই উমরার জন্যে যাত্রা করেন ৷ উমরা পালন করতে যাচ্ছেন বিধায় তিনি ধারণা করতে
পারেননি যে , তাকে মক্কায় আটকে রাখা হবে ৷ কারণ, কুরায়শদের সাথে চুক্তি ছিল কোন
লোক হজ্জ বা উমরা করতে আসলে তার সঙ্গে তারা ভাল ছাড়া মন্দ আচরণ করবে না ৷ কিন্তু
সুফিয়ান ইবন হারব তার প্রতি জুলুম করল এবং তার পুত্র আমরের বিনিময়ে তাকে মক্কায় বন্দী
করে রাখল ৷ এ প্রসঙ্গে আবু সুফিয়ান নিম্নোক্ত কবিতা আবৃত্তি করে :
হে ইবন আক্কালের দলের লোকেরা ! তোমরা এখন তার ডাকে সাড়া দাও ৷ তোমরা তো
পরস্পর প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছিলে যে এই বয়ােবৃদ্ধ নেতাকে শত্রুদের হাতে অর্পণ করবে না ৷
কেননা , বনু আমর দৃরাচার ও হীন প্রকৃতির বলে ধরা হবে যদি তারা আটককৃত বন্দীদের
মুক্তি না দেয় ৷ হাসৃসান ইবন ছাবিত (রা) এর জবাবে বলেন :
সাআদ যদি সেদিন মক্কায় মুক্ত অবস্থায় থাকত, তবে সে নিজে বন্দী হওয়ার আগে
তোমাদের অনেককেই হত্যা করতো ৷
সে হত্যা করতে৷ ধারাল তলােয়ার দিয়ে কিৎবা নাবআ কাঠের তৈরি তীর দিয়ে , যে তীর
নিক্ষেপ কালে ধনুক থেকে সশব্দে বেরিয়ে যায় ৷
বর্ণনড়াকারী বলেন, বনু আমর ইবন আওফ-এর লোকজন রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সাথে
সাক্ষাত করে তাকে সাআদ সম্পর্কে সংবাদ জানিয়ে নিবেদন করলো : তিনি যদি আমর ইবন
আবু সুফিয়ানকে তাদের হাতে সমর্পণ করেন, তা হলে তার বিনিময়ে তারা তাদের লোককে
ছাড়িয়ে আনবে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) আমরকে তাদের হাতে সমর্পণ করেন ৷ তখন তারা আমরকে
তার পিতা আবুসুফিয়ানের নিকট পাঠিয়ে দেয় ৷ ফলে আবু সুফিয়ান সাআদ (রা ) কে মুক্ত করে
দেয় ৷ ইবন ইসহাক বলেনঃ বদর যুদ্ধের বন্দীদের মধ্যে রাসুল (না)-এর জামাতা তার কন্যা
যয়নবের স্বামী আবুল আস ইবন রবী’ ইবন আবদুল উঘৃযা ইবন আবদে শামস ইবন উমাইয়াও
ছিলেন ৷ ইবন হিশাম বলেন : তাকে বন্দী করেছিল বনু হারাম গোত্রের খিরাশ ইবন সাম্মা ৷ ইবন
ইসহাক বলেন : আবুল আস ছিলেন সম্পদে, বিশ্বস্ততায় ও ব্যবসা-বাণিজেব্র মক্কার একজন
বিশিষ্ট ব্যক্তি ৷ তার মা হলো বিনত খুওয়ায়লিদ ছিলেন খাদীজা বিনত খুওয়ায়লিদের বোন ৷
হযরত খাদীজা (রা)৩ তার কন্যা যয়নবকে আবুল আসের সাথে বিবাহ দেয়ার জন্যে রাসুলুল্লাহ
(না)-এর নিকট প্রস্তাব করেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) খাদীজাব কোন কথা সাধারণত প্রত্যাখ্যান
করতেন না ৷ এ ছিল ওহী অবতীর্ণ হওয়ার পুর্বের ঘটনা ৷ এ ছাড়া বাসুলুল্লাহ্ (সা) আবু
লাহাবের পুত্র উতবার সাথে তার কন্যা রুকাইয়৷ মত তান্তরে উম্মে কুলছুমকে বিবাহ দেন ৷
(ইসলাম প্রচারের পর) আবু লাহাব কুরায়শদের বলল, তোমরা মুহাম্মদকে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত রাখার
ব্যবস্থা কর ৷ এ উদ্দেশে ৷সে তার পুত্র উতবাকে বলল, তুমি মুহাম্মদের কন্যাকে তালাক দাও
পিতার নিদ্যেশ উতবা ত্রীকে বাসর রাতে র পুর্বেই তালাক দিয়ে দেয় ৷ তারপর হযরত উছমান
ইবন আফ্ফান তাকে বিবাহ করেন ৷ এরপর কুরায়শর৷ আবুল আসের কাছে গিয়ে বলল , তুমি
তোমার শ্ৰীকে তালাক দাও ৷ তা’হলে তুমি কৃরায়শদের যে কোন সুন্দরীকে চাও, তার সাথে
তোমাকে বিবাহ দেব ৷ আবুল আস বললেন, আল্লাহর কসম, আমি আমার শ্ৰীকে ত্যাগ করবো
না এবং তার স্থলে অন্য কোন কুরা ৷য়শী শ্ৰীলোককে বিবাহ করা আ ৷মি পসন্দও করি না ৷
ইবন ইসহাক বলেন রাসুলুল্লা হ্ (সা) জামা৩ ৷ হিসেবে আবুল আসের প্রশং সা করতেন ৷
ইবন কা ৷হীর বলেন, আবুল আসের প্রশংসামুলক হাদীছ সহীহ্ গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে ৷ পরবর্তীতে
আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করব ৷ ইবন ইসহাক বলেন : মক্কায় রাসুলুল্লাহ্র ক্ষমতা অর্জিত না
হওয়ায় তিনি সেখানে হালাল-হারামের বিধান দিতেন না ৷ যয়নবের ইসলাম গ্রহণের ফলে
আবুল আসের সাথে তার বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায় ৷ কিন্তু রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাদের বিবাহ
বিচ্ছেদ করে দিতে সক্ষম ছিলেন না ৷ (আমি ইবন কাহীর ) বলি , মুশরিকদের সাথে
মুসলমানদের বিবাহ হারাম হওয়ার বিধান ৬ষ্ঠ হিজবীতে হুদাযবিয়ার সন্ধির বছরে প্রবর্তিত হয় ৷
এ বিষয়ে পরে আলোচনা করা হবে ৷ ইবন ইসহাক বলেন০ ং ইয়াহ্ইয়া ইবন আব্বাদ সুত্রে
আইশা (রা) থেকে বর্ণিত ৷ তিনি বলেন, মক্কাবাসীরা যখন তাদের বন্দীদের ছাড়াবার জন্যে
মুক্তিপণ দিয়ে পাঠ৷ ৷,ল তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর কন্যা যয়নব তার স্বামী আবুল আসেয় মুক্তির
জন্যে মুক্তিপণ হিসেবে কিছু মাল দিয়ে পাঠান ৷ ঐ সালের মধ্যে একটা হারও ছিল ৷ হযরত
খাদীজা এ হারটি যয়নবের গলায় পরিয়ে আবুল আসের ঘরে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন ৷ আইশা
(বা) বলেন, হারটি দেখে রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর হৃদয় অত্যন্ত তারাক্রান্ত হয়ে ওঠে ৷ তিনি
লোকদেরকে বললেন, যদি তোমরা ভাল মনে কর, তবে যয়নবের বন্দীকে বিনা মুক্তিপণে ছেড়ে
দাও এবং সে যে মাল পাঠিয়েছে তা তাকে ফেরত দিয়ে দাও ৷ সাহাবাগণ বললেন, জী হী৷ ইয়া
রাসুলাল্লাহ্ ! সে রকমই করা হবে৷ এরপর তারা আবুল আসকে মুক্তি দিলেন এবং যয়নবের
প্রেরিত সমস্ত মালামাল ফেরত পাঠালেন ৷ ইবন ইসহাক বলেন : বদরের বন্দীদের মধ্যে যাদের
বিনা মুক্তিপণে রাসুলুল্লাহ্,(সা) অনুগ্রহ করে যুক্তি দিয়েছিলেন, তাদের যে নাম আমাদের কাছে
পৌছেছে তারা হলেন : বনু উমাইয়ার আবুল আস ইবন রাবী’, বনু মাখযুমের মুত্তালিব ইবন
হানতাব ইবন হাবিছ ইবন উবায়দ ইবন উমর ইবন মাখবুম ৷ হাবিছ ইবন খাযরাজ গোত্রের
কোন একজন তাকে বন্দী করে ৷ তাকে তাদের হারুজী ছেড়ে দেয়৷ হয় ৷ কিন্তু তারা তাকে মুক্ত
করে দেয় ৷ এরপর সে তার সম্প্রদায়ের কাছে চলে যায় ৷ ইবন ইসহাক বলেন : রাসুলুল্লাহ্ (সা)
আবুল আসের নিকট থেকে এই ওয়াদ৷ নিয়েছিলেন যে, তিনি মক্কায় ফিরে গিয়ে যয়নবকে
মদীনায় আসার সুযোগ করে দিবেন ৷ আবুল আস তার এ ওয়াদ৷ পুরণ করেছিলেন ৷ সামনে এ
বিষয়ে আলোচনা আসছে ৷ পুর্বেই আলোচনা করা হয়েছে যে, রাসুলুল্লাহ্র চাচা আব্বাস এবং
তার দুই ভাতিজা আকীল ও নাওফিলকে একশ’ উকিয়া স্বর্ণের বিনিময়ে মুক্তি দেয়৷ হয় ৷ ইবন
হিশাম বলেন : আবুল আসকে যিনি বন্দী করেছিলেন তার নাম আবু আইয়ুব খালিদ ইবন
যায়দ ৷ ইবন ইসহাক বলেন : সায়ফী ইবন আবু রিফড়াআ ইবন আইয ইবন আবদুল্লাহ ইবন
উমর ইবন মাখয়ুমকে তার গ্রেফতারকারীদের হাতেই ছেড়ে দেয়া হয় ৷ তারা তাকে এই শর্ভে
যুক্তি দেন যে, সে ফিরে গিয়ে নিজেই মুক্তিপণ পাঠিয়ে দিবে ৷ কিংস্তু ফিরে গিয়ে সে আর
ঘুক্তিপণ পাঠায়নি ৷ এ প্রসঙ্গে হাস্সান ইবন ছাবিতের কবিতা :
“ওয়াদা রক্ষা করার লোক সায়ফী নয় ৷ সে হয়তো ক্লান্ত শৃগালের ন্যায় কো ন পানির ঘাটে
পড়ে রয়েছে ৷ ”
ইবন ইসহাক বলেনঃ আবু ইয়য৷ আমর ইবন আবদুল্লাহ ইবন উছমান ইবন উহায়ব ইবন
হুযাফা ইবন জুমাহ ছিল অভাবী লোক, অনেক কন্যা সন্তানের পিতা ৷ সে আবেদন করল, ইয়া
রাসুলাল্লাহ্ ! আপনি নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, আমার কোন সহায়-সম্পদ নেই, আমি অভাবী
ও অনেকগুলো সন্তানের পিতা ৷ তাই আমার উপর অনুগ্রহ করুন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (না) তার প্রতি
অনুগ্নহ দেখালেন ও এই মর্মে প্রতিশ্রুতি নিলেন যে, সে তার বিরুদ্ধে কাউকে সাহায্য করবে
না ৷ আবু ইয্য৷ রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর এ অনুগ্রহের কথা স্মরণ করে তার প্রশংসায় বলেন :
(কবিতা)
“এমন ব্যক্তি কে আছে, যে আমার পক্ষ থেকে আল্লাহর রাসুল মুহাম্মদকে এ বা৩ ৷ঢি পৌছে
দািব যে, আপনি সত্য এবং আল্লাহ প্রশং সা র অধিকারী ৷”
আপনি সত্য ও হিদায়াতের দিকে আহ্বান করে থাকেন ৷ আপনার সভ্যতার উপর মহান
আল্লাহর পক্ষ থেকে সাক্ষী বিদ্যমান ৷
আপনি আমার্দের মধ্যে এমন উচ্চ মর্যাদা লাভ করেছেন, যার স্তরসমুহ অতিক্রম করা
যেমন সহজ, তেমন কঠিন ৷
আপনার সাথে যায়৷ যুদ্ধ করে, তারা দৃর্ভাগা আর যাদের সাথে আপনার সন্ধি হয়, তারা
সৌভাগ্যবান ৷
কিন্তু আমি যখন বদর যুদ্ধ ও তাতে অংশগ্রহণকারীদের কথা স্মরণ করি , তখন হতাশা ও
অন্যুশাচনায় আমি মুহ্যমানঃ হয়ে পড়ি ৷ ”
ইবন কাহীর বলেন০ ং এই আবু ইয্য৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সাথে কৃত ওয়ড়াদা ভত্প করে ৷
মুশরিকরা তার জ্ঞান বুদ্ধি নিয়ে উপহ স করতো ৷ ফলে সে পুনরায় তাদের সাথে যোগ দেয় ৷
সে মুশরিকদের পক্ষে উহুদের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে পুনরায় বন্দী হয় ৷ এবারও সে রাসুলুল্লাহ্
(না)-এর একটু অনুগ্রহ প্রার্থনা করে ৷ কিন্তু রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, তোমাকে এ বার ছাড়া
, হবে না ৷ তুমি তাে অনুগ্রহের কথা ভুলে গিয়ে বলবা যে আমি ঘুহান্মদকে দুবার ধৌকা
দিয়েছি ৷ তখন৩ তাকে হত্যা করা হয় ৷ উহুদ যুদ্ধের বর্ণনায় এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে ৷
কথিত আছে, এ ঘটনা প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেছিলেন
অর্থাৎ মু মিন একই গর্ত থেকে দু ’বার দং শিত হয় না’ ৷ এ প্রবাদ বাক্যটি রাসুলুল্লাহ্র
পুর্বে আর কারও থেকে শোনা ৷যায়নি ৷
ইবন ইসহাক বলেন চ মুহাম্মদ ইবন জা’ফর ইবন যুবায়র আমার নিকট উরওয়৷ ইবন
যুবায়র থেকে বর্ণনা করেছেন যে, বদর যুদ্ধে কুরায়শদের বিপর্যয়ের পর উমায়র ইবন ওয়াহব
জুমাহী এক দিন হাতীমে-কা’বার কাছে সাফওয়ান ইবন উমাইয়ার সা৷,থ বসে ছিল ৷ উমায়র
ছিল কুরায়শদের মধ্যে এক জঘন্যপ্ৰকৃতির দুষ্কৃতকারী নেতা ৷ মক্কায় রাসৃলুল্লাহ্ (না) ও তার
সাহাবাগণকে যর বানির্যাতন করত তাদের সাথে শত্রুত৷ পোষণ করত সে ছিল তাদের
অন্যতম ৷ তার ছেলে ওয়াহব ইবন উমায়র বদর যুদ্ধে বন্দী হয় ৷ ইবন হিশাম বলেন : যুরায়ক
গোত্রের রিফাআ ইবন রাফি’ তাকে বন্দী করেছিলেন ইবন ইসহাক বলেন৪ মুহাম্মদ ইবন
জাফর উরওয়৷ থেকে বর্ণিত ৷ উমায়র বদর যুদ্ধে কুয়োয় নিক্ষিপ্তদের মর্মান্তিক পরিণতির
কথা আলোচনা করলো ৷ বর্ণনা শুনে সাফওয়ান বলল, আল্লাহর কসম ৷ এদের নিহত হওয়ার পর
আমাদের বেচে থাকার কোন সার্থকতা নেই ৷ উমায়র তাকে বলল, তুমি ঠিকই বলেছ ৷ আল্লাহর
কসম! আমার উপর যদি এমন ঋণের বোঝা না থাকতো, যা পরিশোধ করার কোন ব্যবস্থা
আমার সেই ৷ আর যদি আমার সন্তানাদি না থাকতাে আমার অবর্তমানে যাদের ধ্বংস হয়ে
যাওয়ার আশংকা আছে, তবে আমি গিয়ে অবশ্যই মুহাম্মদকে হত্যা করে দিতাম ৷ আরও কারণ
হল, আমার ছেলে তাদের হাতে বন্দী আছে ৷ বর্ণনাকারী বলেন সাফওয়ান ইবন উমাইয়া
সুযোগ বুঝে বলল, তোমার ঋণের দায়িতৃ আমার তামার, পক্ষ থেকে আমি তা পরিশোধ
করবো ৷ তোমার সন্তানর৷ আমার সন্তানদের সাথে থাকবে ৷ যতদিন তারা বেচে থাকবে, আমি
তাদের দেখাশুনা করবো ৷ আমার থাকবে আর তারা পাবে না, এমনটি কখনও হবে না ৷ তখন
উমায়র সাফওয়ানকে বলল, তা হলে বিষয়টি আমার ও তোমার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাক ৷
সাফওয়ান বলল, তা-ই করবো ৷ বর্ণনাকারী বলেন, “উমায়র তার তরবারি ধারাল ও বিষাক্ত
করে নিল ৷ তারপর মদীনায় গিয়ে পৌছল ৷ এ সময় হযরত উমর ইবন খাত্তাব (বা) কতিপয়
মুসলমানের সাথে বদর যুদ্ধ সম্পর্কে আলাপ-আলোচনা করছিলেন ৷ এ যুদ্ধে আল্লাহ
মুসলমানদের যে সম্মান দান করেছেন এবং শত্রুদের যে গােচনীয় অবস্থা দেখিয়েছেন, যে
বিষয়গুলো তারা স্মরণ করছিলেন ৷ এমন সময় হযরত উমর দেখতে পেলেন, উমায়র ইবন
ওয়াহব মসজিদের দরজায় তার উট থামিয়েছে এবং কাধে তার তরবারি ঝুলছে ৷ হযরত উমর
(রা) বললেন, এই যে কুকুরটি আল্লাহর দুশমন উমায়র ইবন ওয়াহব, সে কোন অসৎ উদ্দেশ্য
ছাড়া এখানে আসেনি ৷ সেই তো আমাদের মাঝে ফাসাদ সৃষ্টি করেছিল এবং বদর যুদ্ধে
আমাদের সৈন্যসংখ্যা সম্পর্কে অনুমান করে শত্রুদেরকে জানিয়ে দিয়েছিল ৷ এরপর তিনি
রাসুলুল্পাহ্ (সা)-এর কাছে গিয়ে বললেন, হে আল্লাহর নবী এই যে আল্লাহর দুশমন উমায়র
ইবন ওয়ড়াহব র্কাধে তরবারি ঝুলিয়ে এখানে এসেছে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, তাকে আমার
কাছে নিয়ে এসো ৷ বর্ণনাকারী বলেন, উমর এসে ঝুলন্ত তরবারি তার ঘাড়ের সাথে চেপে রেখে
বুকের কাপড় জড়িয়ে ধরলেন এবং সাথী আনসারদের বললেন, তোমরা রাসুলুল্লাহ্র কাছে গিয়ে
রস এবং এ দুরাচাবের ব্যাপারে সতর্ক থাক ৷ কেননা, একে বিশ্বাস করা যায় না ৷ এরপর তিনি
তাকে রাসুলুল্লাহ্র কাছে নিয়ে গেলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) যখন তাকে এ অবস্থায় দেখলেন যে,
উমর তার ঘাড়েই তরবারি লাগিয়ে রেখেছেন, তখন তিনি বললেন “হে উমর ! তাকে ছেড়ে
দাও হে উমায়র! আমার কাছে এসো ৷ উমায়র রাসুলুল্লাহ্র কাছে গিয়ে বলল, ৷;শু£ৰু ন্;ক্ট্রা
সৃপ্রভাত৷ এটাই ছিল তাদের মধ্যে প্রচলিত জাহিলী যুগে পরস্পরের প্রতি সম্ভাষণ ৷ রাসুলুছুন্বত্ত্বহ্
(সা) বললেন, হে উমায়র তোমার সম্ভাষণ অপেক্ষা উত্তম সম্ভাষণের ব্যবস্থা দিয়ে আল্লাহ
আমাদের সম্মানিত করেছেন ৷ আর তা হলো সালাম’ (অড়াসসালামু অলায়কুম) , যা হবে
জান্নাতীদের সম্ভাষণ ৷ সে বলল, হে মুহাম্মদ ৷ আল্লাহর কসম৷ আমি এ বিষয়ে এখনই অবগত
হলাম ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন : উমায়র! তুমি কি জন্যে এসেছ ? সে বলল, আমি এসেছি
আপনাদের হাতে আটক এই বন্দীর মুক্তির জন্যে ৷ তার ব্যাপারে দয়া করুন ৷ রাসুল (সা)
বললেন, তবে তোমার কাধে তরবারি কেন ? সে বলল, আল্পাহ্ তরবারির অমঙ্গল করুন ৷ তা
কি আমাদের কোন কাজে এসেছে ? রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, সত্যি করে বল, কী উদ্দেশ্যে
এসেছ? সে বলল, ঐ বিষয় ছাড়া আমি আর কােন উদ্দেশ্যে আসিনি ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ বললেন
কিছুতেই তা নয়, বরং ভুমি ও সাফওয়ান ইবন উমাইয়া হাতীমে বসে বদবের কুয়াের নিক্ষিপ্ত
কুরায়শদের সম্পর্কে আলোচনা করছিলে ৷ তুমি না বলেছিলে! আমার যদি ঋণের বোঝা এবং
সন্তানদের ভরণ পোষণের দায়িতৃ না থাকতো, তবে আমি অবশ্যই বেরিয়ে গিয়ে মুহড়াম্মদকে
হত্যা করে দিতাম ৷ তখন সাফওয়ান ইবন উমাইয়া তোমার ঋণ ও সন্তানের দায়িতু এই শর্তে
গ্রহণ করে যে, তুমি আমাকে হত্যা করে দিবে ৷ অথচ আল্লাহ তোমার ও তোমার উদ্দেশ্যের
মাঝে অন্তরায় হয়ে আছেন ৷ তখন উমায়র বলল, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আপনি আল্লাহর রাসুল ৷
ইয়া রাসুলাল্পাহ! আপনি আকাশের যে সব সংবাদ আমাদের শুনাতেন এবং আপনার উপর যে
সকল ওহী অবতীর্ণ হতো, আমরা তা সবই অবিশ্বাস করতাম ৷ আর এ বিষয়টি আমি ও
সাফওয়ান ব্যতীত অন্য কেউ জানে না ৷ সুতরাং আল্লাহর কসম আমি নিঃসন্দেহে বলতে পারি,
এ সংবাদ আপনাকে আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানায়নি ৷ সকল প্রশংসা সেই আল্লাহর, যিনি
আমাকে ইসলামের পথ দেখালেন ও এই স্থানে এনে দিলেন ৷ এরপর সে সত্যের সাক্ষ্য প্রদান
করে ৷ এরপর রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন : তোমরা তোমাদের দীনী ভাইকে দীনের জ্ঞান দান কর ,
তাকে কুরআন শিক্ষা দাও এবং তার বন্দীকে ছেড়ে দাও ৷ সাহাবাগণ নির্দেশ মতে তাই করলেন ৷
একদা উমায়র বলল : ইয়া রাসুলাল্লাহ্! এতকাল ধরে আমি আল্লাহর নুর নির্বাপিত করার
কাজে ছিলাম তৎপর এবং যারা আল্লাহর দীনের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিল তাদেরকে নির্যাতন করার
ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর ৷ এখন আমি চাই, আমাকে অনুমতি দিন, মক্কায় গিয়ে আমি তাদেরকে
আল্লাহর রাসুল ও ইসলামের দিকে আহবান জানাই ৷ হয়তো আল্লাহ তাদেরকে হিদায়াত দান
করবেন ৷ আর যদি তারা হিদায়াত না হয়, তবে বাতিল দীনে থাকার কারণে আমি ঐরুপ শাস্তি
দিব, যেরুপ শাস্তি দিতাম আপনার সাথীদেরকে সত্য দীনে থাকার কারণে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (মা)
তাকে অনুমতি দিলেন ৷ অনুমতি পেয়ে সে মক্কায় চলে যায় ৷ এদিকে উমায়র ইবন ওহাহব যখন
মক্কা থেকে বের হয়ে আসছিল, তখন থেকেই সাফওয়ান মক্কাবাসীদের কাছে বলে আসছিল,
তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ কর, অল্প দিনের মধ্যেই এমন এক ঘটনা জানতে পারবে, যা তোমাদের
বদরের ব্যথা-রেদনা ভুলিয়ে দেবে ৷ সে মদীনা থেকে আগত প্রতিটি কাফেলার কাছেই উমায়র
সম্পর্কে খোজ-খবর নিচ্ছিল ৷ অবশেষে এক কাফেলা এসে তাকে উমায়বের ইসলাম গ্রহণ
সম্পর্কে সং দে দিল ৷ সড়াফওয়ান তখন শপথ নিল যে সে আর কখনষ্হৃ৷ তার সাথে কথা বলবে
না এবং কোন প্রকার সাহড়ায্যও তাকে দেবে না ৷ ইবন ইসহাক বলে উমায়র মক্কায় এসে
অবস্থান করেন এবং মানুষকে ইসলামের দিকে আহ্বান করতে থাকেন ,কউ তার বিরোধিতা
করলে তাকে কঠোর শাস্তি দিতেন ৷ ফলে তার হাতে অনেকেই ইসলদ্বমগ্রহণ করে ৷ ইবন
ইসহাক বলেন : উমায়র ইবন ওয়াহব অথবা হারিছ ইবন হিশাম যে কোন একজন বদর যুদ্ধের
দািন ইবলীসকে প্রত্যক্ষ ভাবে দেখেছিল, যখন সে পশ্চাদপসরণ করে পালিয়ে যাচ্ছিল এবং এ
কথা বলতে বলতে যাচ্ছিল যে, “তোমাদের সাথে আমার কোন সম্পর্ক রইল না, তোমরা যা
দেখতে পাও না, আমি তা দেখি ৷ ” বদর যুদ্ধে সেদিন ইবলীস মুদলাজ গোত্রের নেতা সুরাকা
ইবন মালিক ইবন জুশাম এর আকৃতি ধারণ করে এসেছিল ৷
অনুচ্ছেদ
এ স্থলে ইমাম মুহাম্মদ ইবন ইসহাক বদর যুদ্ধ প্রসঙ্গে কুরআনে অবতীর্ণ আয়াত অর্থাৎ সুরা
আনফালের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত বিশদভাবে এবং সুন্দরভাবে ব্যাথ্যা-বিশ্নেষণ করেছেন ৷
আমরা আমাদের তাফসীর গ্রন্থে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি ৷ আগ্রহী পাঠকদের
সেখান থেকে অধ্যয়ন করার পরামর্শ দেয়া হল ৷
অনুচ্ছেদ
এ পর্যায়ে এসে ইবন ইসহাক বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুসলমানদের নাম লিপিবদ্ধ
করেছেন ৷ তিনি প্রথমে যুদ্ধে অংশ্যাহণকারী মুহড়াজিরদের নাম, তারপর অংশগ্রহণকারী অড়ানসার
আওস ও খাযরাজদের নাম উল্লেখ করেছেন ৷ শেষের দিকে বলেছেন ও মুসলিম যুহাজির ও
অড়ানসার যারা সরাসরি যুদ্ধে অং গ্রহণ করেছেন, আর র্ষারা সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে যাননি, কিন্তু
তাদেরকে গনীমতের অংশ ও পুরস্কার দেয়া হয়েছে, র্তাদের সর্বমোট সংখ্যা তিনশ’ চৌদ্দ
(৩১৪) জন ৷ এদের মধ্যে মুহাজির তিরাশি (৮৩), আওস গোত্রের একষট্টি (৬১) এবং খাযরাজ
গোত্রের একশ সত্তর (১৭০) জন ৷ ইমাম বুখারী তার সহীহ্ গ্রন্থে বদরী সাহাবীগণের নাম
আরবী বর্ণনামালায় ক্রম অনুযায়ী উল্লেখ করেছেন ৷ তবে তিনি প্রথমে রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর নাম
তারপরে আবু বকর, উছমান ও আলী (রা)-এর নাম লিখেছেন ৷ এই গ্রন্থে বদরী মুসলমানদের
নাম আরবী বর্ণমালা অনুযায়ী লেখা হল ৷ তবে হাফিয যিয়াউদ্দীন মুহাম্মদ আবদুল ওয়াহিদ
রচিত আহকামুল কবীর’ গ্রন্থের অনুসরণে সর্বপ্রথম বদরীদের মহান নেতা শ্রেষ্ঠ আদম সন্তান
ঘুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর নাম উল্লেখ করা হল ৷
বদরী সাহাবীদের নাম
আরবী বংমািলা অনুযায়ী
আলিফ আদ্যাক্ষর বিশিষ্ট নামসমুহ
১ উবাই ইবন কাআব আন-নাজ্জারী ৷ ইনি ছিলেন সায়িদুেল কুবৃর৷ অর্থাৎ–প্রধান কুরআন
বিশেষজ্ঞ ৷
২ আরকাম ইবন আবুল আরকাম ৷ আবুল আরকামের আসল নাম আবদে মানাফ (ইবন
আসাদ ইবন আবদুল্লাহ ইবন উমর ইবন মাযুয়ম) আল-মাখয়ুমী ৷
৩ আসআদ ইবন ইয়াযীদ ইবন ফড়াকিহ্ ইবন ইয়াযীদ ইবন খালদা ইবন আমির ইবন
আজলান ৷
৪ আসওয়াদ ইবন যায়দ ইবন ছালাব৷ ইবন উবায়দ ইবন ৷ এ হচ্ছে মুসা ইবন
উক্বার অভিমত ৷ কিন্ত উমাবী এ নামে সন্দেহ করে বলেছেন, তার নাম সাওয়াদ ইবন
রুযাম ইবন ছালাবা ইবন উবায়দ ইবন আদী ৷ এ দিকে ইবন ইসহাকের উদ্ধৃতি দিয়ে
ৰুসালামা ইবন ফাযল এ ব্যক্তির নাম বলেছেন সাওয়াদ ইবন যুরায়ক ইবন ছালাবা ৷
আর ইবন আইয এ লোকের নাম বলেছেন-সাও য়াদ ইবন যায়দ ৷
৫ উসায়র ইবন আমর আ নসা ৷রী আ বু সালীত ৷ কারও মতে উসায়র ইবন আমর ইবন উমাইয়৷
ইবন লাওযান ইবন সালিম ইবন ছাবিত খাযরাজী ৷ অবশ্য মুসা ইবন উকবা বদরী
সাহাবীগণের মধ্যে এ নাম উল্লেখ করেননি ৷
৬ আনড়াস ইবন কড়া তাদ৷ ইবন রাবীআ ইবন খালিদ ইবন হারিছ আল আওসী ৷ মুসা ইবন
উকবা এ নাম এ ভাবে বলেছেন ৷ বিভু উমাৰী তার সীরাত গ্রন্থে আনাস’ এর স্থলে
উনায়স বলেছেন ৷
ইবন কাহীর বলেন : রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর খাদিম আনাস ইবন মালিক প্ৰসংগে উমর ইবন
শাবাতা নুমায়রী ছুমামা ইবন আনাস সুত্রে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, আনাস ইবন
মালিককে জিজ্ঞেস করা হল, আপনি কি বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন ? জবাবে তিনি
বললেন, বদরে না গিয়ে আমি কোথায় থাকবাে অকল্যাণ হোক তোমার ! মুহাম্মাদ ইবন সাআদ
আনাস ইবন মালিকের আযাদকৃত গোলাম সুত্রে বর্ণিত ৷ তিনি আনাস ইবন মালিককে
জিজ্ঞেস করেন : আপনি কি বদরের যুদ্ধে উপস্থিত ছিলেন , ? তিনি বললেন, তোমার অকল্যাণ
হোক, বদরের যুদ্ধ থেকে কোথায় আমি অনুপস্থিত ছিলাম ? মুহাম্মাদ ইবন আবদুল্লাহ্ আনসারী
বলেন০ ং আনাস ইবন মালিক রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সাথে বদর যুদ্ধে গিয়েছিলেন ৷ বয়সে তিনি
ছোট ছিলেন ৷৩ তাই রাসুলুল্লাহ্র খিদমতে নিয়োজিত থাকতেন ৷ শায়খ হাফিজ আবুল হ জ্জাজ
আল-মিযযী তার তাহযীব গ্রন্থে বলেনং : আনসড়ারী এরুপ বলেছেন, কিভ্ অন্য কোন মাগাযী
লেখক এটা উল্লেখ করেননি ৷