আমাদের এলাকায় কয়েকদিন আগে একজন মহিলা মারা গেছেন। দূর-দূরান্ত থেকে তার আত্মীয়স্বজনরা জানাযায় শরিক হওয়ার জন্য এসেছিলেন। মৃতের পরিবার অনেক বড়। আত্মীয়-স্বজন অনেক বেশি। আর তারা সম্পদশালীও। আগত আত্মীয়দের খানা খাওয়ানোর জন্য ঐ মহিলার স্বামী একটি গরু জবাই করে খানার ব্যবস্থা করেন। আর অনেকেই এখন এভাবে আয়োজন করে খানার ব্যবস্থা করে থাকে। কিন্তু কেউ কেউ বলছেন, মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে ঐ দিন আগত আত্মীয়দের জন্য এভাবে খানার আয়োজন করাটা বেদআত। তাদের এ কথা কতটুকু সঠিক? কুরআন-হাদীসের আলোকে প্রমাণসহ জানালে কৃতজ্ঞ হব।
জানাযা ও দাফনের উদ্দেশ্যে দূর থেকে আগত আত্মীয়স্বজনের জন্য মৃত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে খানাপিনার ব্যবস্থা করা নাজায়েয নয়। তবে এ ব্যবস্থা গ্রহণ শুধু এ ধরনের আত্মীয়স্বজনের প্রয়োজনে মেহমানদারির উদ্দেশ্যেই হতে হবে। মৃত্যু উপলক্ষে যেয়াফতের উদ্দেশ্যে না হতে হবে। কেননা কারো মৃত্যু উপলক্ষে যেয়াফতের উদ্দেশ্যে খানাপিনার আয়োজন করা জায়েয নয়। হাদীস শরীফে এসেছে, জারীর ইবনে আবদুল্লাহ রা. বলেন, আমরা মৃতের বাড়িতে লোক সমাগম হওয়া এবং সমবেত লোকদের উদ্দেশ্যে মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে খাবার আয়োজন করাকে ‘নিয়াহা’ (জাহেলীযুগের নিষিদ্ধ শোক-বিলাপ) গণ্য করতাম।-সুনানে ইবনে মাজাহ ১/২৫২
প্রকাশ থাকে যে, দূর থেকে আগত আত্মীয়স্বজনের মেহমানদারির প্রয়োজনে খানাপিনার ব্যবস্থা করা যদিও জায়েয তথাপি এ সময় মৃতের পরিবার যেহেতু শোকাহত থাকে তাই মেহমানদারির দায়িত্ব তাদের উপর চাপানো উচিত নয়। বরং জানাযা ও দাফন শেষে দীর্ঘ সময় ঐ বাড়িতে অবস্থান না করাই বাঞ্ছনীয়। এ ধরনের ক্ষেত্রে আগত আত্মীয়স্বজনদের উচিত নিজ উদ্যোগে মৃতের শোকসন্তপ্ত পরিবারের জন্য সাধ্য অনুযায়ী খানাপিনার এন্তেজাম করা। যেন তারা নিজেদের খানা প্রস্ত্তত করার ঝামেলা থেকেও বাঁচতে পারে।
-সুনানে ইবনে মাজাহ ১/৫৫২; ফাতহুল কাদীর ২/১০২; আলমুগনী ইবনে কুদামা ৩/৪৯৬; ইলাউস সুনান ৮/৩৩০; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাদ্দুর ১/৩৮৩