মুসা ইবন উকবা উল্লেখ করেছেন যে ; হানযাল৷ (রা)-এর পিতা তার বুকে পদাঘাত করেছিল
এবং রলেছিল , তুই দুটো অপরাধ করেছিল ৷ এখানে আসতে আমি তােকে নিষেধ করেছিলাম ৷
আল্লাহর কসম , তৃইতাে আত্মীয় রৎসল এবং পিতৃভক্ত ছিলি ৷
ইবন ইসহাক বলেন এ সম্পর্কে ইবন শ্ ৷৷উব রলেছিল-
আমি অবশ্যই রক্ষা করব আমার সাথীকে এবং আমার নিজেকে সৃয় কিরণ তুলা একটি বর্শা
দ্বারা ৷ ইবন শাউব বলেন :
ণ্হ ইবন হারর আ মি ৷যদি প্ৰাতরোধ করতাম এবং উপন্থিত৷ না থাকতাম তবে তুমি যুদ্ধের
দিন কা ৷উকে তোমার ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্যে ৫পতেন৷ ৷
এ প্রস গে আবু সুফিয়ান ও একটি দীর্ঘ কবিত তা আবৃত্তি করেছিল ৷ আর হাসৃসান ইবন ছাবিত
প্রতুত্তেরে আরেকটি কবিতা আবৃত্তি করেছিলেন ৷
উহুদ যুদ্ধের শেষ পর্যড়ায়ও ফলাফল
ইবন হল হ৷ ক বলেন এরপর আলাহ্ তা আল৷ মুসলমানদের প্ৰতি তার সাহায্য অবতীর্ণ
ক রে ন ; তিনি : র ওয়াদ ৷ পুরণ করেন ৷ মুসলমানগণ শত্রুপক্ষকে অবিরত হত্যা করতে থাকেন
এবং ওদেরকে ছত্রড়ঙ্গ করে যেনলন ৷ কাফিরদের পরাজয় সুনিশ্চিত হয়ে উঠে ৷ ইয়াহ্য়৷ ইবন
আ ররাদ তীর পিতা আব্বাদ ইবন আরদুল্লাহ্ইবন যুরায়র থেকে এবং তিনি যুবায়র (রা) থেকে
বর্ণন৷ করেছেন যে , তিনি বলেছেন, ওই সময় হিনৃদৃ বিন্ত উতবার নুপুরের দিকে আমার নজর
পড়ে ৷ সে এবং তার সঙ্গিনী কুরায়শী মহিলারা পায়ের কাপড় গুটিয়ে দৌড়ে পালাচ্ছিল ৷ শত্রুপক্ষ
তাদের মালপত্র ছেড়ে ময়দান থেকে পালিয়ে যাওয়া র পর আমাদের তীরন্দাজ বাহিনী ওদের মাল-
পত্র সংগ্রহে বা৷ পািয় পড়ে ৷ আমাদের পশ্চাতের ণিবি পথ তারা শত্রুপক্ষের অশ্বারোহী বাহিনীর
জন্যে অবারিত করে দয় ৷ ফলে র ৷ পেছনের দিক থেকে এসে আমাদের উপর আক্রমণ
চালায় ৷ তখন জনৈক £ৰুষ্ট্ট৷ ৷ষক ঘোষণা দো ন্ যে , মুহাম্মাদ নিহত হয়েছেন ৷ এ অবস্থায় আমরা আবার র
পাল্টা আক্রমণ করলাম ৷ ওরা’ও আক্রমণ করল ৷ ওদের পতাকাবাহী নিহত হল ৷ কিন্তু ওদের
পাক্ষর কেউই পতাকাটি তুলে নিতে এগিয়ে আসছিল না ৷ জনৈক বিজ্ঞ ব্যক্তির বরাতে ইবন
ইসহাক যে, পতাকাটি দী ৷র্ঘক্ষণ মাটিতে পড়েই ছিল ৷ শেষে বনু হারিছ পােত্রীয় উমরা বিনৃত
ন্সালকাম৷ এসে তা লেতু নিল ৷ সে পতাকাটি কুরায়শদের নিকট নিয়ে পেল ৷ তারা পুনরায় সেটি
দৃঢ়ভাবে উত্তোলন করল ৷ ওদের ওই পতাকাটি ছিল বানু আবু তালহ৷ গোত্রের হারশী বালক
সাওয়াবেব হাতে ৷ সে ছিল ওদের শেষ পতাকবােহী ! পতাকা নিয়েই সে যুদ্ধ করছিল এক সময়
তার হাত দুটি কাটা গেল ৷ তারপর সে উপুড় হয়ে বলে তার বুক ঘাড় দিয়ে পতাকাটি ধরে রাখে ৷
শেষ পর্যন্ত পতাকা রক্ষার প্রা:চষ্টারত অবস্থায়ই নিহ্তয় হয় ৷ সে তখন বলছিল, হে আল্লাহ! আপনি
কি আমার ওমর ও অক্ষৰুঘত৷ গ্রহণ হস্-রেছেনঃ এ প্রেক্ষিতে হযরত হাসৃসান ইবন ছাবিত বলেছেন :
পতাকা নিয়ে তোমরা গৌরব করে থাক ৷ পতাকা বিষয়ে সবচেয়ে বেশী নিন্দনীয় ঘটনা ঘটল
যখন সেটি সাওয়াব ক্রীতদাসের হাতে দেয়৷ হল ৷
পতাকা বিষয়ক গৌরব তোমরা রেখে দিয়েছিরুল ল একজন গোলাম ও একজন বাদীর জন্যে ৷
সে মাটি মাড়িয়ে যায় ৷
তোমরা ধারণা করেছিলে আর মুর্থ লোকেরা তো অনেক কিছুই অনুমান করে থাকে ৷ কিন্তু
তা তো ৷য়থার্থছিল ৷
আমাদের যোদ্ধার৷ যেদিন মক্কায় তোমাদের মুখোমুখি হবে সেদিন তােমাদেরকে তারা
রক্তরঞ্জিত করবে না এ ধারণাটি ছিল ভ্রান্ত ৷
তার দৃহাত রওাক্ত হওয়া র দৃশ্যে আমি চোখ জুড়িয়েছি ৷ রক্তের খিযাবওে তা৷কে লাপাতেই
হবো
আমরা বিনৃত আলকামা ভুলুষ্ঠিত পতাকা তুলে নিয়েছিল সে বিষয়েও হযরত হাসৃসান (বা)
একটি কবিতা আবৃত্তি করেছিলেন ৷
ইবন ইসহাক বলেন, মসলমানগণ ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন ৷ তাদের কতক শত্রুর আক্রমণে
জখম হন ৷ সে দিনটি ছিল মুসলমানদের জন্যে বিপদ ও পরীক্ষার দিন ৷ কতক মুসলমানকে
আল্লাহ তাআলা শহীদের মর্যাদা দান করেন ৷ শেষ পর্যন্ত শত্রুরা রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর একেবারে
কাছা ৷কাছি এসে পড়ে ৷৩ তার প্রতি তারা পাথর নিক্ষেপ করে ৷ সেটি তার মুখের এক পাশে আঘাত
করে ৷ তার সম্মুখের একটি দাত শহীদ হয় ৷ মুখমণ্ডল রক্তাক্ত হয় ৷৩ তার ঠোট কেটে যায় ৷
আঘাতক৷ ৷রী হতভাপাটি ছিল উতব৷ ইবন আবু ওয়াক্কাস ৷ হুমায়দ আ৩ তাবীল হযরত আনাস (বা)
সুত্রে বংনাি কবেভ্রুঢ ন যে উহুদ দিবসে রাসুলুল্লাহ্ (সা ) এর সম্মুখের দাত ভেঙ্গে যায় ৷ তার
মুখমণ্ডল রক্তাক্ত হয়ে যায় ৷ তিনি রক্ত মুছতে মুছতে বলছিলেন “ যে জাতি তাদের নবীর চেহারা
রক্তাক্ত করে দেয় এ অপরাধে যে, তাদেরকে তিনি আল্লাহ্র দিকে আহ্বান করেন ওই জাতি কী
করে সফলতা লাভ করবে ? এই প্ৰস গে আল্লাহ তা জানা না ৷যিল করলেন :
তা ত্থাল্লাহ্ তাদের প্রতি ক্ষমাশীল হবেন নাকি৩ তাদেরকে শাস্তি দিবেন এই বিষয়ে আপনার করণীয়
কিইে নেই ৷ কারণ , তারা যালিম ৷ (৩আলে ইমরানষ্ ১২৮) ৷
ইবন জা ৷রীর তার ইতিহাস গ্রন্থে লিখেছেন, মুহাম্মাদ ইবন হুসায়ন সুদ্দী সুত্রে বর্ণনা
করেন, ইবন ক ৷সিয়৷ হারেহী ময়দানে উপস্থিত হল এবং রাসুলুল্লাহ্ (সা) ৫ক লক্ষ্য করে একটি
পাথর নিক্ষেপ করল ৷ ফলে৩ তার একটি সম্মুখের র্দাত শহীদ হল তার নাক ফেটে ৫পল এবং
পবিত্র মুখমওল রক্তাক্ত হয়ে গেল ৷ তিনি প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করলেন ৷ তার সাহাবীগণ ছত্রতঙ্গ
হয়ে পড়লেন ৷ কেউ কেউ মদীনায় ফিরে গেলেন ৷ কেউ কেউ পাহাড়ের উপর পাথরের আড়ালে
আশ্রয় নিলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) সাহাবীদের ডেকে ডেকে বলছিলেন ৷৷’ ,এ ৷ @) ছুচু; প্রু’ ৷
থুা৷ আল্লাহর বান্দাগণ, এদিকে আমার নিকটে এসো ৷ আল্লাহর বা দাগণ, ৷ ৷ দবে আমার নিকট
এসো! ৩০ জন মুজাহিদ তার নিকট জমায়েত হলেন ৷ তারা রাসুলুল্লাহ্ ( সা ) এর আগে আগে
চলছি৫লন ৷ ইতিপুর্বে৩ তালহা ও সাহ্ল ইবন হ নীযন্ ছ ৷ড়া ৫কউই৩ার পক্রো ছিলন৷ ৷ হযরত তালহা
রাসুলুল্পাহ্ (সা ) ৫ক নিজ ৫দহদ্বার৷ আড়াল করে ৫রখেছিলেন ৷ হঠাৎ শত্রুপক্ষের একটি তীর এসে
তার হাতে বিদ্ধ হয় ৷ ওই হাত অসাড় হয়ে যায় ৷ উবাই ইবন খালড়াফ জ্বমাহী রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর
দিকে অগ্রসর হয় ৷ সে শপথ করেছিল যে, অবশ্যই যে রাসুলুল্লাহ্ (সা ৫ক হত্যা করবে ৷
রাসুলুল্পাহ্ (সা ) বলেছিলেন না, আমিই বরং৩ তাকে হত্যা করব ৷ তিনি বললেন, ও৫হ্ মিথুাক তুই
যাবি কোথায় ? রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাকে আক্রমণ করলেন এবং লৌহ বর্মের ফাকে আঘাত
করলেন ৷ যে সামান্য যখমী হল ৷ কিন্তু তার ব্যথায় জর্জরিত হয়ে সে ষাড়ের ম৩ চীৎকার করতে
ল্যাংল ৷ তার সাথীর৷ তাকে তুলে নিয়ে ৫গল ৷ তারা বলল, তোমার দেহে তো তেমন কোন যখম
৫নই,ত তাহলে তুমি এত অস্থির হচ্ছ ৫কন ? সে বলল, মুহাম্মাদ (সা)৫৩ তা বলেছেন যে তিনি
আমাকে অবশ্যই হত্যা করবেন ৷ এক্ষাণ যদি রাবীআ ও মুদার উভয় গোত্রও একত্রিত হত তবে
মুহাম্মাদ (সা) তাদের সকলকে হত্যা করতেন ৷ ওই সামান্য ক্ষ৫৩ র পবিণতিতে একদিন কিৎবা
তারও কম সময়ের ব্যবধানে তার মৃত্যু হয় ৷ ৫লাকজ৫নর মধ্যে গুজব র৫ট যায় যে , রাসুলুল্লাহ্
(সা) শহীদ হয়ে গিয়েছেন ৷ তখন পাহাড়ের উপরে পাথরের আড়ালে লুকিয়ে থাকা সাহাবীগণ
বললেন যে আমরা যদি একজন দুত ৫পতাম তাহলে আবদুল্লাহ ইবন উবাইর মাধ্যমে আবু
সুফিয়ানের নিকট নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন পাঠা তাম ৷ যে আমাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে দিত ৷
তারা আরো বললেন হে লোকজন ! মুহাম্মাদ ( সা) ৫তা শহীদ হয়েছেন ৷ মুশরিকর৷ তোমাদের
নিকট এসে ৫তামাদেরকে হত্যা করার পুর্বে ৫তামরা৫ তামাদের সম্প্রদায়ের নিকট ফিরে যাও ৷
আনাস ইবন নযর বললেন, হে লোকজন! মুহাম্মাদ (সা) যদি শহীদ হয়েও থাকেন তবে মুহাম্মা৫দর
(সা) প্ৰতিপালক ৫তা নিহত হননি ৷ সুতরাং মুহাম্মাদ (সা) যে উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করেছেন তােমরাও
সে উদ্দেশ্য যুদ্ধ করে যাও ৷ আনাস (বা) আরো বললেন ৫হ আল্লাহ ৷ ওরা যা বলেছে সে বিষয়ে
আমি আপনার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তারা বা করেছেত তার সাথে আমার কোন সম্পর্ক
নেই ৷ এরপর তিনি তরবারি হা৫ত যুদ্ধ করতে করতে শহীদ হয়ে গেলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)৩ তা
সাহাবীগণ৫ক আহ্বান করতে করতে পাথরের আড়ালে আশ্রয় গ্রহণকারীদের নিকট পৌছে
গেলেন ৷ তাকে চিনতে না পেরে জনৈক সাহাবী তার প্রতি তীর নিক্ষেপের জন্যে ধনুকে তীর তাক
করেন ৷ তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল! রাসুলুল্লাহ্ (সা) ৫ক পেয়ে তার সকলে পরম
আনন্দিত হন ৷ তিনি যখন দেখলেন যে, তার সাহাবীদের মধ্যে এখনও অনেক লোক আছেন যারা
তার নিরাপত্তা রক্ষা করতে ৩সচেষ্ট রয়েছেন, তখন তিনি আনন্দিত হলেন ৷ তারা সবাই একত্রিত
হলেন ৷ নিজেদের মধ্যে রাসুলুল্লাহ্ (না)-কে ফিরে পেয়ে তাদের সকল দুঃখ-কষ্ট দুর হয়ে গেল ৷
এবার তারা জয়-পরাজয় ও পাওয়া না পাওয়া সম্পর্কে আলোচনায় মশগুল হলেন, কারা শহীদ
হয়েছেন তা নির্ণয় ও আলোচনা করতে লাগলেন ৷ যায়৷ বলেছিল যে “মুহাম্মাদ (স ) নিহত হয়েছে
সুতরাং তোমরা নিজ সম্প্রদায়ের লোকজনের নিকট ফিরে যাও ৷ ” তাদের সম্পর্কে আল্লাহ
তা আল৷ নাযিল করলেন ৷গ্র
মুহাম্মাদ একজন রাসুলমাত্র ৷ তার পুর্বে বহু রাসুল গত হয়েছেন ৷ (৩-আলে ইমরান ;;
রাসুলুল্লাহ্ (সা ) ও তার সাথীদেরকে আক্রমণ করার জন্যে আবু সুফিয়ান পাহাড়ে আরোহণ
করল ৷ তাকে দেখে মুসলমানগণ পুর্বেকার সকল দুঃখ বেদনা ভুলে প্রতা৷ঘাতের জন্যে প্রস্তুত
হলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ ৷সা) বললেন, ওরা আমাদের উপর বিজয়ী হতে পারবে না ৷ তিনি এই দৃআ
পাঠ করলেন
হে আল্লাহ ! মুসলমানদের এই দল যদি নিহত হয় তবে পৃথিবীতে আপনার ইবাদত করার
কেউ থাকবে না ৷ এবার তিনি সাহাবীগণকে যুদ্ধের জন্যে আহ্বান জানাং লেন ৷ তারা শত্রুপক্ষকে
পাথর নিক্ষেপ করে পাহাড় থেকে নেমে যেতে বাধ্য করলেন ৷ আবু সুফিয়ান বলল ”হুবল
দেবতার জয় হোক ! হানযালার প্রতিশোধে হানযলাকে খুন করেছি, বদর দিবসের প্রতিশোধ উহুদ
দিবসে নিয়েছি ৷ এভাবে ইবন জারীর পুর্ণ ঘটনা উল্লেখ করেছেন ৷ এটি একটি গবীর পর্যায়ের
(একক) বর্ণনা এতে অনেক অগ্রহণযোপ্যতা রয়েছে ৷
ইবন হিশাম বলেন রুবায়হ্ ইবন আবদুর রহমান৩ তার পিতা, তার দাদা ৷আবু সাঈদ সুত্রে
বর্ণনা করেছেন যে , ইবন আবু ওয়াক্কাস রাসুলুল্লাহ্ (সা ) কে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়েছিল
এবং তাতে তার সামনে নীচের সারির ডান দিকের র্দাত ভেঙ্গে গিয়েছিল এবং তার নীচের ঠোট
জখম হয়েছিল ৷ আর আবদুল্লাহ ইবন শিহাব (যুহবী) তার কপাল ফাটিয়ে দিয়েছিল ৷ আবদুল্লাহ
ইবন কামিয়া তার মখমণ্ডল যখম করে দিয়েছিল ৷৩ নব শিরস্ত্রাণের দুটো কড়া তার কপালের পাশে
ঢুকে গিয়েছিল, তিনি একটি গর্ভে পড়ে মনে ৷ মুসলমানপণ যেন যুদ্ধ করার সময় গর্ভে পড়ে যায়
সেজন্যে আবু আমির পুর্বেই ওইসব গর্ত খুড়ে রেখেছিল ৷ তখন হযরত আলী( (রা) রাসুলুল্লাহ্
(সা ) এর হাত ধরলেন ৷ আবুতালহ৷ (বা) তবে টেনে তুললেন ৷ তিনি সোজা হয়ে দাড়ালেন,
আৰু সাঈদের পিতা মালিক ইবন সিনান রাসুলুল্লাহ্ (না) এর চেহারা মুবাবক থেকে রক্ত চুষে নিয়ে
গিলে ফেললেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (না) বললেন, যার রক্তের সাথে আমার রক্ত মিশেছে জাহান্নামের
আগুন কোন দিন ত ৷কে স্পর্শ করবে না ৷
কাতাদা উল্লেখ করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ্ ( সা ) যখন কাত হয়ে পড়ে গিয়েছিলেন তখন তিনি
অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন ৷ আবু হুয়ায়ফার আযাদকৃত দাস সালিম সেখানে উপস্থিত হয়ে তাকে
তুলে বসালেন এবং মুখমণ্ডলের রক্ত মুছে দিলেন ৷ চেতনা ৷ফিরে আসলে তিনি বলছিলেন,
নিজেদের নবী যাদেরকে আল্লাহর পথে ডাকেন আর এ অবস্থায়৩ তারা নবীর প্ৰতি এ আচরণ করে
সে সম্প্রদায় সফলতা অর্জন করবে কেমন করে ? এ প্রেক্ষিতে আল্লাহ্ তা অ ৷ল৷ নাযিল করলেন :
(৩-আলে-ইমরান : ১২৮) ৷ ইবন জারীর এরুপ বর্ণনা করেছেন ৷
এটি একটি মুরসাল বর্ণনা ৷ এ বিষয়ে বিস্তারিত বনাি একটি আলাদা অধ্যায়ে আসবে ৷
বর্ণনাকারী বলেন, আমার মতে ওই দিবসের প্রথমভাগে মুসলমানদের বিজয় হচ্ছিল ৷ ঐ
সময়ে তারা ক ৷ফিরদেরকে পরা স্ত করেই যাচ্ছিলেন ৷ এ বিষয়ে অ ৷ল্লাহ্ তাআলা বলেনঃ
আল্লাহ তোমাদের সাথে তার প্রতিশ্রুতি পুর্ণ করেছিলেন যখন তোমরা আল্লাহ্র
অনুমতিত্রুমে তাদেরকে বিনাশ করছিলে যে পর্যন্ত না তোমরা সাহস হারালে এবং নির্দেশ সম্বন্ধে
মতভেদ সৃষ্টি করলে এবং যা তোমরা ভালবাস তা তোমাদেরকে দেখাবার পর তোমরা অবাধ্য
হলে ৷ তোমাদের কতক ইহকাল চাচ্ছিলে এবং কতক পরকাল চাচ্ছিলে ৷ এরপর তিনি পরীক্ষা
করার জন্যে £তামাদেরকে তাদের থেকে ফিরিয়ে দিলেন ৷ অবশ্য তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা
করলেন এবং আল্লাহ্ মু’মিনদের প্ৰতি অনুগ্নহশীল ৷ স্মরণ কর , যখন (তামরা উপরের দিকে
ছুটছিলে এবং পেছনে ফিরে কা রাে ৷প্রতি ৩লক্ষ্য করছিলে না ৷ আর রাসুল তোমাদেরকে পেছন দিক
থেকে আহ্বান করছিলেন ৷ ফলে তিনিও তামাদেরকে বিপদের উপর বিপদ দিলেন যাতে তোমরা
যা হারিয়েছ অথবা যে বিপদণ্ তামাদের উপর এস্যেছত তার জন্যে দুঃখিত না হও ৷ তোমরা যা কর
আল্লাহ্ তা বিশেষভাবে অবহিত ৷ ( ৩ আলে-ইমরা ৷ংন : ১ ৫২ ১৫৩)
ইমাম আহমদ (র) বলেন, আব্দুল্লাহ — ইবন আব্বাস (রা)-এর বরাতে বলেছেন,
আল্লাহ তাআলা উহুদ দিবসে আমাদেরকে যেমন সাহায্য করেছিলেন অন্য কোন সময় তেমনটি
করেননি ৷ বর্ণনাকারী বলেন , তাতে আপত্তি উঠলে তিনি বললেন, যারা আমার বক্তব্য প্রত্যাখ্যান
করে তাদের ও আমার মাঝে মীমাৎসাক৷ রী হল আল্লাহ্র কিতাব ৷ উহুদ দিবস সম্পর্কে আল্লাহ
তা ৷আল৷ ৷নিজেই বলেছেনং : এ
আল্লাহ্ তোমাদেরকে দেয়৷ প্রতিশ্রতি পুর্ণ করেছেন যখন তোমরা তার অনুমতিক্রমে
ওদেরকে বিনাশ করছিলে ৷ :,; শব্দের ব্যাথ্যায় ইবন আব্বাস (রা) বলেন ) অর্থ হত্যা
করা
( এ ০এ০দ্বু৷ (৩ আলে ইমরানং ১৫২) এটি! দ্বারা পিরিপথে নিয়োজিত তারন্দাজ বাহিনীকে)
বুঝানো হয়েছে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) গিরিপথে তীরন্দাজদের নিয়োজিত করেছিলেন ৷ তিনি
বলেছিলেন, তোমরা আমাদের পশ্চাৎদিক রক্ষা করবে ৷ তোমরা যদি আমাদেরকে দেখ যে,
আমরা সবাই নিহত হচ্ছি তবু তোমরা ৷ঐ পথ ছেড়ে আমাদের সাহায্যের জন্যে আসবে না ৷ আর
যদি দেখ যে, আমরা বিজয়ী হয়ে গনীমভ্রু তব মাল সংগ্রহ করছি তবু তোমরা আমাদের সাথে যোগ
দিবে না ৷ পরবত্তীচ্চিত রাসুলুল্লাহ্ (না) যখন পনীমতের মাল সংগ্রহ করছিলেন এবং মুশরিকদের
জান মাল দখলকে যখন বৈধ ঘোষণা করলেন তখন গিবিপথে প্ৰহরারত৩ ৩তীবন্দাজগ ণ হুমড়ি খেয়ে
নীচে নেমে এলেন ; তারপর তার শত্রু সৈন্যদের মধে৷ ঢুকে গিয়ে গনীমত সং গ্রহে ব্যস্ত হয়ে
পড়েন ৷ সাহাবীগণের সাবিগুলাে পরস্পর মিলে মিশে যায় ৷ বংনািকরী তার দুহাতের আঙ্গুলগুলাে
একটির ফাকে আরেকটি ঢুকিয়ে দেখান যে, তাদের সারি এমনিভ ৷বে সংলগ্ন হয়ে গিয়েছিল ৷
তীরন্দাজগণ গিরিপথ খালি করে দেয়ায় শত্রু বাহিনীর অশ্বারোহী সৈন্যরা ঐ পথে এসে সে
পশ্চাৎদিক থেকে মুসলমানদের উপর আক্রমণ করে ৷ অকম্মাৎ আক্রান্ত হয়ে সাহাবিগণ একে
অন্যকে চিনতে না€ পরে পরস্পরকে আক্রমণ করতে যাবেন ৷ এভাবেই বহু মুসলমান নিহত হন ৷
ঐ দিবসের প্রথম ভাগ রাসুলুল্লাহ (সা) ও তার সাহাবীগণের প ক্ষ ছিল ৷ ফলে তখন মুশরিকদের
সাত মতাম্ভরে নয় জন পতাকা ৷বাহী সৈন্য মুসলমানদের হাতে নিহত হয় ৷ পরবর্তীতে শত্রুদের
আক্রমণে হতভম্ব হয়ে মুসলমানগণ পাহাড়ের দিকে ছুটতে থাকেন ৷ কিন্তু যেখানে গুহ৷ আছে
বলে ধারণা ছিল সেখান পর্যম্ভ৩ ৷রা পৌছতে পারেননি ৷ এসময়ে শয়তান চীৎকা ৷র দিয়ে বলেছিল,
“মুহাম্মাদ নিহত হয়েছেন ৷ এই ঘোষণা র সত্যতা র কেউ সন্দেহ করেননি ৷ বনািকা রী বলেন , ঐ
ঘোষণা সত্য বলে আমরা তাই বিশ্বাস করে যাচ্ছিলাম ৷ হঠাৎ দেখি রড়াসুলুল্লাহ্ (সা) দুই সাদের
মাঝখানে র্দাড়িয়ে মাথা তুলেছেন ৷ হাটার সময়ে তিনি একটু ঝুকে হাটতেন তা দেখে আমরা
তাকে চিনে ফেলি ৷ তাকে দেখে আমরা এত খুশী হলাম যে, আমরা আমাদের নিহত আহতদের
কথা ভুলেই গোলাম ৷ আমরা এমন হয়ে যাই যেন আমাদের কিছুই হয়নি ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)
আমাদের দিকে উঠে এলেন ৷ তিনি বলছিলেন “ঐ সম্প্রদায়ের উপর আল্লাহর প্রবল পষব ও
অসন্তুষ্টি কঠিনভাবে নেমে আসুক , যারা আল্লাহর রাসুলের মুখমণ্ডল রক্তে রঞ্জিত করেছে ৷ আবার
তিনি বললেন :
হে আল্লাহ! ওরা যেন আমাদের উপর বিজয়ী হতে না পারে ৷ এসব বলতে বলতে রাসুলুল্লাহ্
(সা) আমাদের নিকট এসে পৌছলেন ৷ তিনি কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলেন ৷ তখন শোনা গেল যে,
পাহাড়ের পাদদেশ থেকে আবু সুফিয়ান চীৎকা ৷র করে বলছে “হুবলের জয় হোক ৷ হুবল দেবতার
জয় হোক ৷ আবুকাবাশার পুত্র (রাসুলুল্লাহ্) কো ৷থায় ? আবুকুহাফ৷ র পুত্র (আবু বকর ছিদ্দীক (বা)
কোথায় ? খাত্তাবের পুত্র (উমর রা কোথায় ? উমর (রা) বললেন, আমরা কি ওর কথার জবাব
দেবাে না ? রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, হা ৷ আবুসুফিয়ান বলল, হুবল দেবতার জয় হোক ৷ জবাবে
উমর (রা) বললেন, আল্লাহ সর্বোচ্চ ও সুমহান ৷ আবু সুফিয়ান বলল, হে খাত্তারের পুত্র ! আজকের
কর্মকান্ডে হুবলের চোখ জুড়িয়েছে ৷ এখন ভুমি পারলে তাকে অতিক্রম করে যাও ৷ আবু সুফিয়ান
বলল, আবুকাবাশার পুত্র কোথায় ? আবুকুহাফার পুত্র কোথায় এবং খাত্তাবের পুত্র কোথায় ?
উমর (রা) বললেন, এই যে, রড়াসুলুল্লাহ্ (সা), এই আবু বকর (রা ) এবং এই যে, এখানে আমি
উমর ৷ আবু সুফিয়ান বলল, আজকের দিন হল বদর দিবসের প্ৰতিশোধের দিন ৷ যুগ ৷আবর্তাশীল ৷
যুদ্ধ বা ৷লতির ন্যায় পালাক্রমে হা৩ বদল হয় ৷ উমর (রা) বললেন, উভয় পক্ষে সমান সমান নয় ৷
আমাদের নিহত ব্যক্তিগণ থাকবে জান্নাতে আর তোমাদের নিহতর৷ থাকবে জ হান্নামে ৷ আবু
সুফিয়ান বলল, তোমরা কি৩ ৷ই বিশ্বাস কর, তবে তে তা আমরা ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত ৷ এরপর আবু
সুফিয়ান বলল, তোমরা চামাদের পক্ষে নিহত লোকদের মধ্যে কতক লোককে কর্তিত অঙ্গ
পাবে ৷ আমরা নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা কিন্তু ঐ রকম কাজ করার সিদ্ধান্ত দেইনি ৷ এ সময় তার মধ্যে
জাহিলিয়া৷তের অহমিকা জেগে উঠল ৷ সে বলল, ঐ অঙ্গ কর্তনের যে ঘটনা ঘটেছে তাতে অবশ্য
আমরা অসন্তুষ্টও নই ৷ এই বর্ণনা করেন ইবন আবু হাতিম ৷ আরো মুসতাদরাক হাকিম এবং
বায়হাকী (র ) এর আদ দাল ৷ইল গ্রন্থের ৷৩ তারা বর্ণনা করেছেন, সুলায়মান ইবন দাউদের বরাতে ৷
এটি একটি গরীব পর্যায়ের বর্ণনা ৷ এটি ইবন আব্বাস (না)-এর ৰুরস ল বণনাগুলাের একটি ৷
এটির সমর্থনে অন্যান্য বর্ণনা রয়েছে ৷ সাধ্যমত আমরা সেগুলো উল্লেখ করব ইনশাআল্লাহ ৷
ইমাম বুখারী (র ) বলেন, উবায়দুল্লাহ্ ইবন মুসা ধারা (যা) এর বরাতে বলেন যে, বরাতে উহুদ
যুদ্ধের বর্ণনা দিতে গিয়ে অতিরিক্ত বলেছেন, উহুদের দিন আমরা সেনাপতি আব্দুল্লাহ তার
র্তীরন্দাজদের ঘাটি ত্যাগ করতে দেখে বললেন, রাসুলুল্লাহ (সা) তো আমাদের অঙ্গীকার নিয়েছেন
যে, আমরা যেন এই ন্থ ন ত্যাগ না করি ৷ কিন্তু তারা তার কথা মানেননি ৷ ফলে যুদ্ধের অবস্থা
পরিবর্তিত হয়ে যায় ৷ ৭০ জন সাহাবী তাতে নিহত তহন ৷ আবু সুফিয়ান তখ্যা বেরিয়ে আসে এবং
বলে, তোমাদের মধ্যে কি মুহাম্মাদ (সা) আছেন ? রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, তোমরা তার কথার
কোন উত্তর দিও৷ না ৷ সে বলল, ৫৩ামাদের মধ্যে কি আবুকুহড়াফার পুত্র আছে ? রাসুলুল্লাহ্ (সা)
বললেন, কো ন উত্তর দিবে না ৷ সে বলল, তোমাদের মধ্যে কি থাত্তা ৷বের পুত্র আছে ? কোন উত্তর
না পেয়ে সে বলল, ওরা সবাই নিশ্চয়ই নিহত ৩হয়েছে ৷ জীবিত থাকলে অবশ্যই উত্তর দিত ৷
হযরত উমর (রা) নিজেকে সংযত রাখতে পারলেন না ৷ তিনি বললেন, (হ আল্লাহর দৃশমনা
তার কথা মিথ্যা, যাতে তই দৃশ্চিভাগ্রস্ত থাকিস এজন্যে আল্লাহ তা আলা তাদেরকে বহাল
তাবয়তে রেখেছেন ৷ আবুসুাফয়ান বলল, হুবল দেবতার জয় হোক ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন,
ওর কথার জবাব দাও ! সাহাবিগণ বললেন, কী জবাব দিব ? রাসৃলুল্লাহ্ (সা) বললেন, তোমরা
বল, “আল্লাহ সর্বোচ্চ আল্লাহ সুমহান ৷ আবু সুফিয়ান বলল, আমাদের উঘৃয৷ আছে, তোমাদের
উঘৃয৷ নেই ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, ওর কথার জবাব দাও ৷ সাহাবাগণ (রা ) বললেন, কী জবাব
দিব ? তিনি বললেন যে, তোমরা বল “আল্লাহ আমাদের মাওল৷ ও প্রভু তোমাদের প্রভু নেই ৷
আবু সুফিয়ান বলল, আজকের এই দিবস বদর দিবসের বাংলা ও প্রতিশোধ , আর যুদ্ধ হল বালতির
ন্যায় হাত বদলের ব্যাপার ৷ তোমাদের নিহতদের মধ্যে তোমরা অঙ্গকর্ভিত লোক খুজে পাবে ৷
আমি কিন্তু তা করার নির্দেশ দিইনিত ৷ তবে আমি তাতে অখুশীও নই ৷ এই হাদীছ ইমাম বুখারী
(র)-এর একক বর্ণনা ৷
ইমাম আহমদ ও মুসা বারা ইবন আযিব (বা) সুত্রে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷ তাতে
একথা ও আছে আব্দুল্লাহ ইবন জুবায়র (বা ) এর নিয়স্ত্রণাধীন সৈন্যগণ বললেন (হ সাথিগণ
পনীমতের মাল ৷ তোমাদের সাথিগণ ওে ৷ যুদ্ধের ময়দানে বিজয়ী ৷ আর অপেক্ষা কিসের ?
আব্দুল্লাহ ইবন জুবায়র (বা) বললেন৪ রাসুলুল্লাহ্ (সা)৫ত তােমাদেরকে কী বলে দিয়েছিলেন তা কি
তামরা ভুলে গিয়েছ ? তারা বললেন, “আল্লাহর কসম আমরা ওদের নিকট যাব এবং গনীমতের
অংশ নিব ৷ ওরা যখন গিরিপথ ছেড়ে ময়দানে নেমে এলেন তখন তাদের অবস্থার পরিবর্তন
ঘটল ৷ যুদ্ধের মোড় পাল্টে গেল ৷ত তারা বিজয়ের পর এবার পরাজিত হলেন ৷ এটি হচ্ছে (কুরআন
বর্ণিত) রাসুলুল্লাহ্ (সা)ত তাদেরকে পেছন থেকে ডাকা মাত্র ১২ জন ছাড়া কেউ সেখানে ছিলেন
না ৷ সেদিন আমাদের ৭০ জন লোক শহীদ হন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) ও তার সাথিগণ বদর দিবসে
মৃশরিকদের ১৪০ জন লোককে নিহত ও বন্দী করেছিলেন ৷ তন্মধ্যে ৭০ জন নিহত হয়েছিল আর
৭০ জন বন্দী হয়েছিল ৷
তারপর এ রিওয়ায়াংতও পুর্বোল্লিখিত আবু সুফিয়ান ও উমর (রা)-এর মধ্যকার বাক্য
বিনিময়ের বর্ণনা রয়েছে ৷ এ বর্ণনাটি ইমাম বুখারী (ব) যুহড়ায়র ইবন মুআবিয়া থেকে সংক্ষিপ্ত
আকারে উদ্ধৃত করেছেন ৷ ইসরাঈল সুত্রে আবুইসহাক থেকে তার একটি দীর্ঘ বর্ণনা ইতিপুর্বে
উল্লিখিত হয়েছে ৷
ইমাম আহমদ বলেন, আফফান আনাস ইবন মালিক (রা ) থেকে বর্ণনা করেন যে,
তিনি বলেছেন, উহুদ দিবসে মুশরিকগণ রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর উপর প্রচন্ড আক্রমণ চালিয়েছিল ৷
এক পর্যায়ে তার সাথে মাত্র ৭ জন আনসারী সাহাবী এবং একজন কৃরায়শী সাহাবী ছিলেন ৷ তিনি
বললেন, কেউ যদি কাফির শত্রুদেরকে আমার নিকট থেকে সরিয়ে দিতে পারে তবে সে জান্নাতে
আমার সাথী হতে পারবে ৷ একথা শুনে একজন আনসারী সাহাবী এগিয়ে এলেন এবং
কাফিরদেরকে সরিয়ে দেয়ার লক্ষে যুদ্ধ শুরু করলেন এবং শেষ পর্যন্ত শহীদ হলেন ৷ শত্রুগণ
দ্বিতীয়বার রাসুলুল্লাহ্ (সা)-কে ঘিরে ফেলল ৷ তিনি বললেন, “যে ব্যক্তি ওদেরকে সরিয়ে দিয়ে
সে জান্নড়াতে আমার সাথী হবে ৷ এ ঘোষণা শুনে অন্য একজন সাহাবী এগিয়ে এলেন এবং যুদ্ধ
করে শহীদ হলেন ৷ এভাবে ৭ জন সাহাবীই শহীদ হয়ে গেলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা ) বললেন, আমার
এ সাহাবীগণের প্রতি সুবিচার করা হয়নি ৷
মুসলিম (র) এই হাদীছ হুদবা ইবন খালিদ সুত্রে হাম্মাদ ইবন সালড়ামা থেকে বর্ণনা করেছেন ৷
বায়হাকী তার দালাইল’ গ্রন্থে তার সনদে উমারা ইবন গুয্রা সুত্রে আবু যুবায়র থেকে বর্ণনা
করেছেন যে , জাবির (রা ) বলেছেন, উহুদ দিবসে মুসলিম সৈন্যগণ রাসুলুল্লাহ্ (সা)-কে ছেড়ে
ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় ৷ মাত্র ১ ১জন আনসারী সাহাবী এবং তালহা ইবন উবায়দুল্লাহ্ তার সাথে ছিলেন ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা) তখন পাহাড়ে আরোহণ করছিলেন ৷ ইতেড়ামধ্যে মুশরিকগণ তাদের কাছাকাছি
এসে পৌছে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেন, ওদেরকে প্রতিরোধ করার কি কেউ নেই ন্ হযরত তালহা
(রা ) বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্! আমি আছি ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, হে তালহা ! তুমি যেমন
আছ তেমন থাক ৷ তখন একজন আনসারী সাহাবী বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্ ! আমি আছি ৷ এ
কথা বলে তিনি রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর প্রতিরক্ষার্থে যুদ্ধ শুরু করলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) ও তার অন্য
সাথিগণ উপরের দিকে উঠে গেলেন ৷ ইতোমধ্যে উক্ত আনসারী সাহাবী শহীদ হলেন এবং
শত্রুগণ রাসুলুল্লাহ্ ( সা)-এর কাছাকাছি পৌছে গেল ৷ তিনি বললেন , ওদেরকে প্রতিরোধ করার কি
কেউ নেই ? হযরত তালহা (বা ) পুর্বের ন্যায় বললেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) র্তাকে পুর্বের ন্যায় উত্তর
দিলেন, তখন একজন আনসারী সাহাবী বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্ ! আমি আছি ৷ এ বলে তিনি যুদ্ধ
শুরু করলেন ৷ ইতোমধ্যে রাসুলুল্লাহ্ (সা) ও তার অবশিষ্ট সাহাবীগণ আরো উপরে উঠে গেলেন ৷
কিছুক্ষ্যণর মধ্যে আনসারী সাহাবী শহীদ হয়ে গেলেন ৷ এরপর রাসুলুল্লাহ্ (সা) একাধিকবার
পুর্বের মত আহ্বান করলেন ৷ হযরত তালহা (বা) তার প্রভৃতির কথা জানালেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)
তাকে বিরত রাখলেন ৷ অন্য একজন আনসারী সাহাবী অনুমতি চাইলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)
অনুমতি দিলেন ৷ তারা একের পর এক যুদ্ধ করে শহীদ হয়ে গেলেন ৷ শেষ পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ্
(না)-এর সাথে তালহা (রা ) ব্যতীত কেউই রইলেন না ৷ শত্রুপণ এসে তাদের দুজনকে ঘিরে
ফেলল ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা ) বললেন, ওদেরকে প্রতিরোধ করবে কে ? তালহা (রা ) বললেন ইয়া
রাসুলাল্লাহ্ (সা) ! আমি প্রতিরোধ করব ৷ তার পুর্বের সাহাবীগণের ন্যায় তিনি যুদ্ধ শুরু করলেন ৷
তার হাতের আঙ্গুলগুলাে কেটে গেল ৷ তিনি বললেন আহ্ ! রাসুলুল্লাহ্ (সা ) বললেন, তুমি যদি
আহ্ না বলে বিসৃমিল্লাহ বলতে তবে ফেরেশতাপণ তোমাকে আকাশে তুলে নিতেন ৷ লোকজন
তোমার দিকে তাকিয়ে দেখত ৷ ওরা তোমাকে নিয়ে আসমান উঠে যো:তন ৷ তারপর রাসুলুল্লাহ্
(সা) পাহাড়ের উপরে অবস্থানরত তার অন্যান্য সাহাবীদের নিকট গিয়ে পৌছলেন ৷
ইমাম বুখারী (র ) আব্দুল্লাহ্ ইবন আবু শায়বা কায়স ইবন আবু হাযিম থেকে বর্ণনা
করেন, তিনি বলেছেন যে, আমি দেখেছি আবু তালহা (বা ) এর হাত অব” হয়ে রয়েছে ৷ সে হাত
দ্বারা তিনি উহুদ দিবসে রাসুলুল্লাহ্ (সা ) কে রক্ষা করেছিলেন ৷ সহীহ্ বুখারী ও মুসলিম গ্রন্থে মুসা
ইবন ইসমাঈল ৷
আবুউছমান নাহ্দী থেকে বর্ণনা করেন যে , তিনি বলেছেন, যে দিবস গুলোতে যুদ্ধ
হয়েছে সেগুলোর একটিতে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সাথে অবস্থা ও সাদ (রা) ব্যতীত কেউ ছিলেন
না ৷ তারা নিজেরা এটি বর্ণনা করেছেন ৷
হাসান ইবন আরাফা বলেন, — সাদ ইবন আবু ওয়াক্কাস (রা ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি
বলেছেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা ) উহুদ দিবসে তার ভীরের খনি থেকে আমাকে তীর বের করে
দিয়েছিলেন এবং আমাকে বলেছিলেন আমার পিতা-মাতা তোমার জন্যে কুররানী হোক ! তুমি
তীর ছুড়তে থাক ৷ ইমাম বুখারী (র ) আন্দুল্লাহ্ ইবন মুহাম্মাদ সুত্রে মারওয়ান থেকে এটি উদ্ধৃত
করেছেন ৷
সহীহ্ বুখাবী গ্রন্থে আন্দুল্লাহ্ ইবন শাদ্দাদ সুত্রে আলী ইবন আবু তালিব (রা ) থেকে বর্ণিত ৷
তিনি বলেন, সাদ ইবন মালিক (আবু ওয়াক্কাস) ব্যতীত অন্য কারো ক্ষেত্রে রাসুলুল্লাহ্ (সা) তার
পিতা-মাতা দু’জন কুরবড়ান হওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন বলে আমি শুনিনি ৷ উহুদ দিবসে আমি
শুনেছি, রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলছিলেন, হে সাদ ! তুমি তীর ছুড়তে থাকে৷ ৷ আমার পিতা-মাতা
তোমার জন্যে কুরবানী হোন ৷
মুহাম্মাদ ইবন ইসহাক বলেন, সালিহ ইবন কায়সন সাদ (রা)-এর পরিবারের জনৈক
সদস্যের সুত্রে সাদ (রা) থেকে বর্ণনা করেছেন যে , তিনি রাসুলুল্লাহ্ (না)-কে রক্ষায় তীর নিক্ষেপ
করেছেন ৷ সাদ (রা) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ্ (না)-কে দেখেছি যে, তিনি আমাকে ভীরের
যোগান দিয়ে যাচ্ছিলেন এবং বলছিলেন , আমার পিতা-মাতা তোমার জন্যে কুরবানী হোক ! তু
তীর ছুড়তে থাকে৷ ৷ কখনো কখনো তিনি আমাকে ফলকবিহীন তীর দিয়েছেন আমি তা নিক্ষেপ
করছিলাম ৷
সহীহ্ বুখারী ও সহীহ্ মুসলিমে ইব্রাহীম ইবন সাদ সাদ ইবন আবু ওয়াক্কাস
(রা)-এর বরাতে বলেছেন, আমি উহুদের দিবসে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর ডানে ও বামে দুজন লোক
দেখেছিলাম তাদের পরিধানে ছিল সাদা পোশাক ৷ তারা দৃজনে এত প্রচন্ড যুদ্ধ করেছেন যে , এমন
যুদ্ধ আমি তার আগেও দেখিনি পরেও দেখিনি ৷ তিনি তাতে জিবরাঈল ও মীকাঈল (আ)-কে
বুঝিয়েছেন ৷
ইমাম আহমদ বলেন, আফ্ফান আমাকে জানিয়েছেন আনাস ইবন মালিক (রা) থেকে যে
উহুদ দিবসে আবৃত তালহা রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সম্মুখে অবস্থান নিয়ে তীর নিক্ষেপ করছিলেন ৷ নবী
করীম (সা) তার পেছনে দাড়িয়ে নিজেকে আড়াল করছিলেন ৷ আবু তালহা (বা) দক্ষ তীরন্দাজ
ছিলেন ৷ তিনি যখন তীর নিক্ষেপ করতেন তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা ) মাথা তুলে দেখতেন যে, তীরটি
কােথায়গ্ গিয়ে পড়ছে ৷ আর আবু তালহা তখন তার ঘাড় উভু করে দিতেন এবং বলতে তন, ইয়া
রাসুলাল্লাহ্ (সা) ! আমার পিতা-মাতাআপনার জন্যে কুরবানী হোন, শত্রুর নিক্ষিপ্ত কোন তীর যেন
আপনার শরীরে না লাগে ৷ আমার বক্ষ আপনার বক্ষের জন্য ঢালারুপ রইল ৷ আবু তালহা (রা)
রাসুলুল্পাহ্ (সা)-এর সম্মুখে দাড়াতেন এবং বলতেন, ইয়া রাসৃলাবুব্রাহ্ (সা) ৷ আমি শক্ত সামর্থ
লোক বটে , যে কোন প্রয়োজনে আপনি আমাকে যে কোন স্থানে পা-স্রাতে পারেন এবং যে কোন
কাজের নির্দেশ দিতে পারেন !
ইমাম বুথারী (বা) বলেন, আবু আমার আনায (রা) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি
বলেছেন, উহুদ দিবসে যুসলমানগণ রাসুলুল্লাহ্ (সা )কে রেখে ছত্রভঙ্গ হয়ে যান; কিন্তু আবুতালহা
(বা) তার ঢাল নিয়ে প্রাচীর রুপে রাসুলুল্লাহ্ (সা)এর সম্মুখে দাড়িয়ে থাকেন ৷ তিনি দ্রুত ও দক্ষ
তীরন্দাজ ছিলেন ৷ সেদিন তার হাতে ২ থেকে ৩টি ধনুক ভেঙ্গে যায় ৷ কোন সৈনিক তৃণীর নিয়ে
সেখান দিয়ে যেতে থাকলে রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলতেন, তোমার তীরগুলাে আবু তালহা (রা)ষ্কে
দিয়ে দাও ৷ মাঝে মাঝে রাসুলুল্লাহ্ (সা) মাথা উচিয়ে তাকাতেন এবং ময়দানের লোকজনের
অবস্থা দেখতেন ৷ তখন আবুতালহা বলতেন, আমার পিতা-মাতা আপনার জন্যে কুরবানী হোন,
আপনি মাথা তুলবেন না নতুন শত্রুপক্ষের তীর আপনার পায়ে লাগতে পারে ৷ আমার বক্ষ আপনার
বক্ষের জন্য ঢালরুপে রইল, আমি আইশা (রা) ও উম্মু সুলায়মকে দেখেছিলাম সেদিন যে, তারা
পায়ের গোছার উপর কাপড় গুটিয়ে ছুটোছুটি করছেন যে, আমি তাদের পায়ের গোছা দেখতে
পাচ্ছিলাম ৷ তারা পিঠে করে পানির মশক বহন করছিলেন এবং আহতদেরকে পানি পান
করাচ্ছিলেন ৷ তারপর ফিরে যেতেন এবং পানি ভরে এনে পুনরায় পান করাতেন ৷
ওই দিন আবু তালহা (রা) এর হাত থেকে দুবার কিৎবা তিনবারত তরবারি পড়ে গিয়েছিল ৷
বুখারী (রা) আবুতালহা (রা) এর বরাতে বলেছেন উহুদ দিবসে যারাত তন্দ্রামপ্ন হয়েছিলেন
আমি ছিলাম তাদের একজন ৷ আমার হাত থেকে কয়েকবার তরবারি পড়ে গিয়েছিল ৷ আমি সেটি
উঠাই আবার সেটি পড়ে যায় ৷ আবার উঠাই আবার পড়ে যায় ৷ বুথারী (র) এভাবে সনদ
বিহীনভাবে নিশ্চয়তা জ্ঞাপক ভাষায় এটি বর্ণনা করেছেন ৷ কুরআন মজীদের আয়াত তার বর্ণনা
সমর্থন করে ৷ আল্লাহ তা আলা ণ্ট্রু
-এরপর দুংখের পর তিনি তে তামাদেরকে প্রদান করলেন প্ৰশান্তি তন্দ্র রুপে যা তোমাদের
একদলকে আচ্ছন্ন করেছিল ৷ এবং একদল জাহেলী যুগের অজ্ঞের ন্যায় আল্লাহ সম্বন্ধে অবাস্তব
ধারণা করে নিজেরাই নিজেদেরকে উদ্বিপ্ন করেছিল এ বলে যে, আমাদের কি কোন অধিকার
আছে ’ বলুন, সমস্ত বিষয় আাল্লাহ্রই ইখতিয়ারে ৷ যা তারা আপনার নিকট প্রকাশ করে না তারা
তাদের অম্ভরে তা গোপন করে রাখে ৷ আর বলে, এই ব্যাপারে আমাদের কোন ইখতিয়ার
থাকলে আমরা এই স্থানে নিহত হতাম না ৷ বলুন, যদি তোমরা তোমাদের নিজ বাড়ীতে অবস্থান
করতে তবু নিহত হওয়া যাদের অবধারিত ছিল তারা নিজেদের মৃতৃব্রুস্থানে বের হত; তা এজন্যে
যে, আল্লাহ তোমাদের অম্ভরে যা আছে তা পরিশোধ করেন ৷ অম্ভা;র যা আছে আল্লাহ সে
সম্পর্কে বিশেষ অবহিত ৷
যে দিন দৃদল পরস্পরের সম্মুখীন হয়েছিল সেদিন তোমাদের মধ্য হতে যারা পৃষ্ঠ প্রদর্শন
করেছিল তাদের কোন কৃতকর্মের কারণেই শয়তান তাদের পদস্থালন ঘটিয়েছিল ৷ অবশ্য আল্লাহ
তাদেরকে ক্ষমা করেছেন ৷ আল্লাহ ক্ষমা পরায়ণ ও পরম সহনশীল ৷ (৩ আলে ইমরান :
১৫৪ ১ ৫৫ ) ৷
বুখারী বলেন, আবদান উছমান ইবন মাওহিব সুত্রে বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি হভ্রুজ্জর
উদ্দেশে বায়তুল্লাহ্ শরীফে এসেছিল ৷ সে দেখতে পেল যে, কতক লোক বসে আছে ৷ সে
বলল, বসে থাকা লোকদের পরিচয় কী ? একজন উত্তর দিল, এরা কুরায়শ বংশের লোক ৷ সে
বলল, ওদের শায়খ কে ? উত্তর এল, ইবন উমার (রা) ৷ সে ইবন উমর (রা)-এর নিকট এসে
বলল, আমি আপনাকে কিছু প্রশ্ন করব, আপনি উত্তর দিবেন তো ? এরপর প্রশ্ন আকারে সে বলল,
আল্লাহর ঘরের কসম , আপনি কি জানেন যে, উহুদ দিবসে উছমান (রা ) যুদ্ধের ময়দান থেকে
পালিয়ে গিয়েছিলেন ? তিনি উত্তর দিলেন, হা ৷ এবার সে বলল, তাহলে আপনি এও জানেন যে,
তিনি বদর দিবসে অনুপস্থিত ছিলেন, যুদ্ধে অংশ নেননি ? ইবন উমার (রা ) বললেন হা জানি ৷ সে
বলল, তিনি যে, বায়আত-ই-রিযওয়ান অনুষ্ঠানে উপ ত ছিলেন না তা কি আপনি জানেন ? ইবন
উমার (রা ) বললেন, হা , জানি বটে ৷ ইবন উমার (বা) এর উত্তর শুনে সে আনন্দে তকবীর ধ্বনি
দিয়ে উঠল ৷ ইবন উমার (রা) তাকে বললেন, এদিকে আস ! তুমি আমাকে যে বিষয়ে জিজ্ঞেস
করেছ সেগুলো সম্পর্কে আমি তোমাকে ব্যাখ্যা শুনাই ৷ বন্তুতঃ হযরত উছমান (বা ) উহুদের
ময়দান থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন সে সম্পর্কে আমি আল্লাহকে সাক্ষ্য রেখে বলছি যে, আল্লাহ
তাআলা নিজে ওই দোষ ক্ষমা করে দিয়েছেন ৷ বদর যুদ্ধে তিনি এজনাে অনুপ ত ছিলেন যে,
রাসুলুল্পাহ (সা )-এর কন্যা ছিলেন তার শ্রী ৷ তিনি ছিলেন অসুস্থ ৷ শ্ৰীর সেবার জন্যে ঘরে থাকার
অনুমতি দিয়ে রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাকে বলেছিলেন একজন লোক বদরের যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে যে
ছাওয়াব পারে তুমি ঘরে থেকেও সে ছাওয়ড়াব এবং গনীমতের অংশও পাবে ৷ আর বায়অড়াত-ই
রিযওয়ানে তিনি অনুপ ত ছিলেন এজন্যে যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাকে মক্কায় পাঠিয়েছিলেন তার
নিজের প্রতিনিধিরুপে ৷ মক্কা নগরীতে দ্বিতীয় কেউ যদি হযরত উছমান অপেক্ষা অধিক
সন্মানযোগ্য হত তবে রাসুলুল্লাহ (সা) তাকে না পাঠিয়ে সেই লোকটিকেই পাঠাতেন ৷ বন্তুতঃ
রাসুলুল্লাহ (সা) তাকেই পাঠিয়েছিলেন ৷ হযরত উছমান (রা) মক্কায় যাওয়ার পর বায়আত-ই
-রিযওয়ান অনুষ্ঠিত হয় ৷ ওই অনুষ্ঠানে রাসুলুল্লাহ্ (সা) তার জ্ঞান হাতের দিকে ইঙ্গিত করে
বলেছিলেন, এটি উছমানের হাত ৷ এরপর বাম হাতে ডান হাত রেখে বলেছিলেন এটি উছমানের
(রা) পক্ষে শপথ! হে আগন্তুক , এ ব্যাখ্যা নিয়ে তুমি দেশে ফিরে যাও ৷ ইমাম বুখারী (র) এই
হাদীছটি অন্য জায়গায় ও উদ্ধৃত করেছেন ৷ ইমাম তিরমিযী এটি উদ্ধৃত করেছেন আবু আওয়ানা
সুত্রে উছমান ইবন আবদুল্লাহ ইবন মাওহিব সুত্রে ৷
উমাবী বর্ণনা করেছেন, তার মাগাযী গ্রন্থে ইবন ইসহাক থেকে ৷ তিনি বলেছেন যে, ইয়াহয়া
ইবন আব্বাদ আমার নিকট বর্ণনা করেছেন ৷ তার পি৩ ৷ থেকে, তিনি তার দাদা থেকে ৷ তিনি
বলেন যে, আমি রাসুলুল্লাহ্ (না)-কে বলতে শুনেছি যে, উহুদ দিবসে লোকজন তাকে ছেড়ে
ছত্রভঙ্গ হয়ে গিয়েছিলেন ৷ তাদের কেউ কেউ আওয়াস পাহাড়ের ঘিষ্ন্ারীতে অবস্থিত সুবাক্কায় গিয়ে
উঠেছিল ৷ উছমান ইবন আফফান এবং সাদ ইবন উছমান আনসারীগিয়ে উঠেছিলেন মদীনায়
নিকটবর্তী আওয়াস পাহাড়ের লাগোয়া জালআবে ৷ তারা সেখানে তিনদিন ছিলেন ৷ তারপর ফিরে
এসেছিলেন ৷ ঐতিহাসিকগণ মনে করেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা)এদের সম্পর্কে বলেছিলেন,
“ তোমরা তো পাহাড় অতিক্রম করে মদীনায় কাছ কাছি গিয়ে পৌছে ছিলে ৷”
মােদ্দা কথা, বদর যুদ্ধে যা যা ঘটেছিল তার কিছু কিছু উহুদ যুদ্ধেও ঘটেছিল ৷ যেমন যুদ্ধ
চলাকালে তন্দ্রাভাব সৃষ্টি হওয়া ৷ এটি হল আল্লাহর সাহায্য ও সহায়৩ ৷র প্রেক্ষিতে অম্ভরের
প্ৰতিপুর্ণ নির্ভরশীল ও তাওয়াক্কুলকা ৷রী ৷ বদর যুদ্ধ প্রসঙ্গে নাবিলবৃন্রুন্থশ্ আল্লাহ তা আলাব বাণী ; ৷
(৮ আনফালঘ্র ১ ১ ) এর বা৷থ্যায় আমরা এ বিষয়ে আলোচনা
করেছি ৷ উহুদ যুদ্ধ সম্পর্কে আল্লাহ তা আলা বলেছেন ও
— এরপর দুঃখের পর তিনি তােমার্দেরকে প্রদান করলেন
প্রশান্তি তন্দ্রারুপে যা ৫৬ ৷মাদের একদলকে আচ্ছন্ন করেছিল ৷ (৩ আলে ইমরান ং১৫৪ ) ৷
অথ৷ ৷ৎ ঈম৷ ৷ানদ রদের ওই৩ তন্দ্র৷ আচ্ছন্ন করে ফেলেছিল ৷ ইবন মাসউদ (রা) প্রমুখ জ্ঞা ৷ন বিশা ৷রদগণ
তা বলেছেন ৷ তারা বলেছেন যে, যুদ্ধের সময় তন্দ্র৷ ৷ভাব সৃষ্টি হওয়া ছিল ঈমানের নিদর্শন আর
নামাযে তন্দ্র৷ সৃষ্টি হওয়া ঘুনাফিকীর পরিচায়ক ৷ এজন্যেই উক্ত আয়াতে তন্দ্র৷ বিষয়ক আলোচনার
পর বলা হয়েছে আর একদল জাহেলী যুগে র অজ্ঞের ন্যায়
আল্লাহ সম্বন্ধে অবাস্তব ধারণা করে নিজেরাই নিজেদেরকে উদ্বিপ্ন করেছিল ৷)
উহুদের যুদ্ধের সাথে বদরের যুদ্ধের আরেকটি সামঞ্জস্য এই ছিল যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা)
বদরের যুদ্ধে যেমন আল্লাহর সাহায্য কামনা করেছিলেন উহুাদর যুদ্ধেও৩ তিনি আল্লাহর সাহায্য
কামনা করেছিলেন ৷ বদরের যুদ্ধে৩ তিনি বলেছিলেন
-হে আল্লাহ ! আপনি যদি ইচ্ছা করেন যে, দুনিয়াতে আপনার ইবাদত আর না হোক ,তবে
আর আপনার ইবাদত করা হবে না) ৷ উহুদের যুদ্ধে তার সাহায্য কামনা সম্পর্কে ইমাম আহমদ
বলেছেন যে , আবদুস সামাদ আনাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) উহুদ
দিবসে বলছিলেন :৷ — হে আল্লাহ! আপনি যদি চান যে, দুনিয়াতে
আপনার ইবাদ৩ না হোক তবে তাই হয়ে) ৷ ইমাম মুসলিম (ব ) হাজ্জাজ হাষ্মাদ ইবন
সালাম৷ (রা) সুত্রে এটি উদ্ধৃত করেছেন ৷ বুখারী (রা) বলেন, আব্দুল্লাহ ইবন মুহাম্মাদ
জাবির ইবন আবদৃল্লাহ্ (বা) সুত্রে বলেছেন যে, এক ব্যক্তি উহুদ দিবসে রাসুলুল্লাহ্ (না)-কে
বলেছিল যে, আমি যদি যুদ্ধে নিহত হই তবে আমার স্থান কোথায় হবে ? রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন,
তোমার স্থান হবে জান্নাতে ৷ একথা শুনে সেই ব্যক্তি তার হাতে থাকা থেজুরগুলাে ফেলে দিয়ে
যুদ্ধে শরীক হন এবং যুদ্ধ করতে করতে শহীদ হয়ে যান ৷ মুসলিম (র) এবং নাসাঈ (র) এই
হাদীছ বর্ণনা করেছেন সুফিয়ান ইবন উয়ায়না থেকে ৷ বদরের যুদ্ধ বিষয়ক আলোচনায় উল্লিখিত
উমায়র ইবন হাম্মামের ঘটনার সাথে এই ঘটনার মিল রয়েছে ৷
উহুদ দিবসে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর আহত হওয়া প্রসঙ্গ
বুখাবী (র) “উহুদ দিবসে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর যখম হওয়া” প্রসঙ্গে লিখেন ইসহাক ইবন
নাসর আবুহুরায়রা (বা) এর বর৷ তে বলেন যে রাসুলুল্লাহ্ (সা ) বলেছেন০ :
সেই জন সমষ্টির উপর অ ল্লাহব পয় ৷ কঠিনতর হোক যায়া
আল্লাহ্ট্রুৰু নবীর সাথে এ আচরণ করেছে ৷ একথা বলার সময় তিনি৩ তার সম্মুখে শহীদ হওয়া
দাতের দিকে ইঙ্গিত করেন ৷ তিনি আরো বলেছেন, আল্লাহ্র গযব কঠিনতর হোক সেই ব্যক্তির
প্রতি আল্লাহর পথে রাসুলুল্লাহ্ (সা) স্বহস্তে যাকে হত্যা করেছেন ৷ মুসলিম (র ) আব্দুর রায্যাক
সুত্রে এই মর্মে হাদীস বংনাি করেছেন ৷
তবে তার শেযাৎশে রয়েছে যারা বাসুলুল্লাহ্ (সা) এর পবিত্র মুখমণ্ডল রক্তাক্ত করেছে তাদের
প্রতি আল্লাহর গযব তীব্রতর হোক ৷
ইমাম আহমদ বলেন, আফ্ফান আনাস (র৷ ) থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা )
উহুদ ৷দরসে তার পবিত্র মুখমণ্ডল থেকে রক্ত মুছতে মুছতে বলছিলেন “সেই সম্প্রদায় কেমন
করে সফলকাম হয়ে যারা তাদের নবীর মুখ যখম করে দিয়েছে এবং তার দাত ভেঙ্গে দিয়েছে ৷
একথা বলার সময় তিনি আল্লাহর দরবারে দুঅ৷ করছিলেন ৷ ওই পরিস্থিতিতে আল্লাহ্ তাআলা
নাযিল করলেন :
(ও আলে-ইনরান হু; ১২৮) ৷ মুসলিম (র) কানবী সুত্রে হাম্মাদ ইবন সালাম৷ থেকে উক্ত
হাদীছ বর্ণনা করেছেন ৷
ইমাম আহমদ (র) হুশায়ম আনাস (রা) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, উহুদের যুদ্ধে
রাসুলুল্লাহ্ (সা )-এর সম্মুখেব একটি দাত শহীদ করে দেয়৷ হয় এবং তার পবিত্র মুখমওল যখম
করে দেয়৷ হয়, তার মুখণ্ডল রেয়ে রক্ত পড়ছিল ৷ এ অবস্থায় তিনি বলছিলেন, যে নবী তাদেরকে
আল্লাহর পথে ডাকছেন যারা সে নবীর প্রতি এ অমানবিক আচরণ করে তারা (কমন করে
সফলকাম হবো তফা আল্লাহ তা জানা তার প্রতি নাযিল করলেন
ইমাম বুখারী বলেন, কুত৷ য়বা আবু হাযিম থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি সাহ্ল ইবন
সাদকে বলতে শুনেছেন যখন তাকে রাসুলুল্লাহ্ (সা ) এর আঘাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হচ্ছিল ৷
উত্তরে তিনি বলছিলেন যে, আল্লাহর কলম রাসুলুল্লাহ্ (সা ) এর ক্ষতন্থ ন কে ধুয়ে দিচ্ছিলেন, কে
পানি ঢেলেছিলেন এবং তাকে কী চিকিৎসা দেয়৷ হয়েছিলত ৷ও আমি জানি ৷ নবী কন্যা ফাতিমা
ক্ষতস্থান ধুয়ে দিচ্ছিলেন ৷ ঢালে করে পানি ঢেলে দিচ্ছিলেন হযরত ৩আলী (বা ) ৷ হযরত ফাতিমা
যখন দেখলেন যে, পানিতে রক্ত ঝর৷ বন্ধ হচ্ছে না বরং তা রেড়েই চলেছে তখন তিনি এক