ক) আমাদের এলাকায় এক ব্যক্তি মসজিদের পাশে এক খন্ড জমি ক্রয় করে মাদরাসার নামে ওয়াকফ করে দেয়। কিন্তু মাদরাসা এখনো প্রতিষ্ঠা করা হয়নি। ভবিষ্যতে মাদরাসা করার পরিকল্পনা রয়েছে। এলাকার কিছু লোক ঐ জমিতে কলা, পেপে ইত্যাদি চাষাবাদ করে থাকে এবং তা বিক্রি করে মসজিদের উন্নয়নের কাজে ব্যয় করে।
এখন জানার বিষয় হল-
ক. এভাবে মাদরাসার সম্পদ মসজিদের জন্য ব্যয় করা জায়েয হবে কি না? যদি না হয় তবে পূর্বে ব্যয়কৃত অর্থের হুকুম কী?
খ) মসজিদের মাল মসজিদের ভিতরে বিক্রি করার ব্যাপারে শরীয়তের হুকুম কি? জানালে কৃতজ্ঞ হব।
ক) মাদরাসার জন্য ওয়াকফকৃত জমির আয়ের মালিক মাদরাসা। মাদরাসা প্রতিষ্ঠা না হলেও মাদরাসার জন্যই এ জমির আয় রেখে দেওয়া জরুরি। তাই অন্য কেউ মাদরাসার জমিতে চাষাবাদের ক্ষেত্রে দুটি বিষয় নিশ্চিত করতে হবে-এক. মাদরাসা কর্তৃপক্ষ/মুতাওয়াল্লির অনুমতি নেওয়া।
দুই. ঐ জমি ব্যবহারের জন্য মাদরাসা ফান্ডে নিয়মিত ভাড়া আদায় করা। এ টাকা কোনো আমানতদার ব্যক্তির নিকট জমা রাখতে হবে, যা ভবিষ্যতে মাদরাসা প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর সেখানে ব্যয় হবে। আর মসজিদ কর্তৃপক্ষের উপর কর্তব্য হল, এতদিন ধরে ঐ জমি চাষাবাদ করার কারণে এর ন্যায্য ভাড়া মাদরাসা কর্তৃপক্ষের নিকট বুঝিয়ে দেওয়া।-রদ্দুল মুহতার ৪/৩৬০; কিতাবুল ওয়াকফ, পৃষ্ঠা : ২০৩
খ) মসজিদের মালামালও মসজিদের ভেতরে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করা জায়েয নেই। মসজিদ আল্লাহ তাআলার ঘর। ইবাদত-বন্দেগীর স্থান। ক্রয়বিক্রয়ের জায়গা মসজিদ নয়। তাই মসজিদের মালামালও বেচাকেনার প্রয়োজন হলে মসজিদের বাইরে তা সম্পন্ন করতে হবে।
হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, মসজিদ আল্লাহর যিকর, নামায ও কুরআন তিলাওয়াতের জন্য নির্ধারিত স্থান। (সহীহ মুসলিম, হাদীস : ২৮৫)
অপর একটি বর্ণনায় রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে ক্রয়বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন।-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ১০৭৯; আলবাহরুর রায়েক ২/৩০৩; রদ্দুল মুহতার ২/৪৪৯