Home » অনুবাদকৃত বইসমুহ » নুয়াইম বিন হাম্মাদের: আল ফিতান » খলীফাদেরকে চিনার উপায়

খলীফাদেরকে চিনার উপায়

  • 3000+ Premium WORDPRESS Themes and Plugins
  • Download PHP Scripts, Mobile App Source Code
  • হযরত আওয়াম ইবনে হাওশাব রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রোম দেশে বনু আসাদের জনৈক ব্যক্তি বলেন, তিনি তার গোত্রের এমন একজন থেকে বর্ণনা করেন যিনি ওমর রাযিঃ কে পেয়েছন। তিনি একদিন তার আসহাব অর্থাৎ, তালহা, যুবাইর, সালমান ও কাব রহঃ কে বললেন, আমি তোমাদেরকে এমন এক বিষয় সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করব, যদি তোমরা এ ব্যাপারে আমাকে মিথ্যা বল, তাহলে আমি, তোমরা সকলে ধ্বংস হয়ে যাবো। আমি তোমাদেরকে কসম দানের মাধ্যমে জিজ্ঞাসা করছি, আমার ব্যাপারে তোমাদের কিতাবে কি পেয়েছ, আমি খলীফা, নাকি বাদশাহ?
    জবাবে তালহা এবং যুবায়ের রহঃ বলেন, নিঃসন্দেহে আপনি আমাদেরকে এমন এক বিষয় সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করছেন, যেটা আমরা জানিনা, আমরা অতটুকু জানিনা যে, আপনি একজন খলীফা নাকি বাদশাহ। জবাবে হযরত ওমর রাযিঃ বললেন, যদি এটা বলে থাকো, তাহলে তুমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর কাছে গিয়ে কেনো বসে থাকতে। অতঃপর হযরত সালমান রহঃ বলেন, নিঃসন্দেহে আপনি প্রজাদের প্রতি ইনসাফের আচরন করেন, সকলের মাঝে বরাবর বন্টন করেন, প্রত্যেক প্রজাকে আপনি নিজের পরিবারের সদস্যের ন্যায় ভালোবসেন। মুহাম্মদ ইবনে ইয়াযিদ আরো বলেন, এবং আপনি কিতাবুল্লাহর বিধান মতে ফায়সালা করেন।
    এপর্যায়ে কাব রহঃ বলেন, আমার ধারনা মতে এই মজলিসে বাদশাহ খলীফার পরিচয় সম্বন্ধে আমার চেয়ে কেউ বেশি জানেনা। তবে সালমানকে আল্লাহ তাআলা ইলম এবং হেকমত পুরোপুরি ভাবে দান করেছেন। অতঃপর কাব রহঃ বলেন, আমি স্বাক্ষ্য দিচ্ছি, নিশ্চয় আপনি খলীফা, বাদশাহ নন। একথা শুনে হযরত ওমর রাযিঃ তাকে বললেন, তুমি সেটা কী ভাবে জানতে পারলে? জবাবে হযরত কাব রাযিঃ বললেন, আপনার সম্বন্ধে আমি কিতাবুল্লাহতে পেয়েছি। আতঃপর ওমর রাযিঃ বলেন, কিতাবুল্লাহতে কি আমার নাম উল্লেখ আছে? জবাবে হযরত কাব রহঃ বললেন, না, কিতাবুল্লাহতে আপনার নাম উল্লেখ না থাকলেও আপনার বৈশিষ্ট উল্লেখ রয়েছে। সেখানে উল্লেখ রয়েছে, প্রথমে নবুওয়ত হবে অতঃপর খেলাফত এবং রহমতে রুপান্তরিত হবে। বর্ণনাকারী মুহাম্মদ ইবনে ইয়াযিদ রহঃ বলেন, খেলাফত আলা মিনহাজিন্নুযুওয়ত হবে। অতঃপর পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াইকারী বাদশাহ রাষ্ট্র নায়ক হবে। বর্ননাকারী হুশাইম রহঃ আরো বলেন, জালেম এবং লড়াইকারী বাদশাহ ক্ষমতা গ্রহন করবে। এসব কথাশুনে হযরত ওমর রাযিঃ বলেন, সেসব কিছু আমার মাথার উপর দিকে অতিক্রম করলেও আমার আর আফসোস থাকবেনা।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৪০ ]

    হযরত কাব রহঃ থেকে বর্নিত, তিনি এরশাদ করেন, হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রাযিঃ বলেছেন, হে কাব! তোমাকে আমি আল্লাহর নামে কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, আমাকে তুমি খলীফা হিসেবে পেয়েছ, নাকি বাদশাহ হিসেবে? কাব রহঃ বলেন, বরং আমি তোমাকে খলীফা হিসেবে পেয়েছি। একথা শুনে হযরত ওমর রাযি তাকে কসম করতে বললে তিনি বলেন, আল্লাহর কসম!সর্বোত্তম খলীফাদের একজন এবং বরং যুগের মধ্যে উত্তম যুগের একজন ব্যক্তিত্ব।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৪১ ]

    হযরত মুগীস আল আওযাঈ রহঃ বর্ণনা করেন, হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রাযিঃ হযরত কাবকে ডেকে পাঠালে তিনি উপস্থিত হওয়ার পর তাকে বললেন, হে কাব! তুমি আমার কি বৈশিষ্ট পেয়েছ, জবাবে কাব রহঃ বলেন, একজন লৌহ মানব খলীফা, যিনি আল্লাহর বিধান প্রয়োগের ক্ষেত্রে কাউকে ভয় করবেন না। তারপর এমন একজন খলীফা হবেন যাকে তার প্রজাগন খুবই নির্মম ভাবে হত্যা করবে। এরপর পর উক্ত উম্মতের উপর বিভিন্ন বালা মসিবত আসতে থাকবে।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৪২ ]

    সাঈদ ইবনে মুসায়্যাব রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন খলীফা তিনজন এবং অন্য সকল বাদশাহ, ১. আবু বকর রা. ২. উমর রা. ৩. উসমান রা. তখন তাকে বলা হল, আমরা আবু বকর রা. এবং উমর রা. কে চিনি তবে দ্বিতীয় উমর রা. কে? তখন তিনি বললেন যদি তোমরা বেঁচে থাক, তাহলে তার সাথে তোমাদের সাক্ষাৎ ঘটবে আর যদি তোমরা মৃত্যবরণ কর, তাহলে তোমাদের পরবর্তীতে তার আগমন ঘটবে।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৪৩ ]

    মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাক থেকে এরূপই বর্ণিত আছে, তবে তার সনদের মধ্যে হাবীব ইবনে হিন্দা আসলামী সাঈদ ইবনে মুসায়্যাব থেকে বর্ণনা করেন, এ কথাটি বৃদ্ধি করেছেন।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৪৪ ]

    হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে নুআঈম আল মুআফরী রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি কতিপয় শেখকে বলতে শুনেছি, যিনি সৎকাজের আদেশ করবেন এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করবেন তিনিই হবেন জমিনের উপর আল্লাহর খলীফা, আল্লাহর কিতাবের খলীফা এবং আল্লাহর রাসূলের খলীফা।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৪৫ ]

    হযরত আশআর ইবনে বুজাইর রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবু মুহাম্মদ আন নাহদী রহঃ এরশাদ করেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ এর পর কোনো বাদশাহ হবেনা।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৪৬ ]

    হযরত হাম্মাম রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন একদা আহলে কিতাবের একজন লোক এসে হযরত ওমর রাযিঃ কে বললেন, আসসালামু আলাইকুম, হে আরবদের বাদশাহ! তার কথা শুনে হযরত ওমর রাযিঃ বললেন, তোমাদের কিতাবে কি এমনই পেয়েছ? তোমরা কি এমন পাওনি যে প্রথমে নবী, অতঃপর খলীফা, এরপর আমীরুল মুমিনীন, তারপর হবে বাদশাহ। জবাবে তিনি বললেন, হ্যাঁ হ্যাঁ।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৪৭ ]

    বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আবু হোরায়রা রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, খেলাফত মদীনা থেকে পরিচালিত হলেও বাদশাহী হবে শাম দেশ থেকে পরিচালিত।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৪৮ ]

    হযরত সাঈদ ইবনে জুমহান রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর খাদেম সাফীনা রাযিঃ কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেন, দীর্ঘ ত্রিশ বৎসর পর্যন্ত আমার উম্মতের মধ্যে খলীফা থাকবে। বর্ণনাকারী মুহাম্মদ ইবনে ইয়াযীদ রহঃ বলেন, ত্রিশ বৎসর হিসাব করলে দেখা যায়, সেটা হযরত আলী রাযঃ এর খেলাফতের সর্বশেষ সময় পর্যন্ত। অতঃপর তারা হযরত সাফীনা রাযিঃ কে বললেন, এরা তো মনে করে হযরত আলী খলীফা নন। জবাবে হযরত সাফীনা রাযিঃ বলেন, একথাটি একমাত্র মারাত্নক অপরাধীগনই বলে থাকে।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৪৯ ]

    হযরত ইয়াহ ইয়া ইবনে আবু আমর আস শায়বানী রহঃ বলেন, যারা মসজিদে হারাম এবং মসজিদে বায়তুল মোকাদ্দাসের মালিক হতে পারেনি তারা খলীফাও হতে পারবেনা।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৫০ ]

    হযরত সাবাহ রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বনু উমাইয়া রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব ভার গ্রহন করার পর আর খেলাফত থাকবেনা। এভাবে মাহদী আঃ এর আগমন পর্যন্ত চলতে থাকবে।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৫১ ]

    হযরত উতবা ইবনে গাযওয়ান আসসুলামী রহঃ থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, খবরদার! এক সময় নবুওয়তের ধারাবাহিকতা বন্ধ হয়ে যাবে। তারপর থেকে বাদশাহদের হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা চলে যাবে।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৫২ ]

    হযরত হোজাইফা ইবনুল ইয়ামান রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি এরশাদ করেন, নিঃসন্দেহে হযরত উসমান রাযিঃ এর পর থেকে বনু উমাইয়ার মোট বারোজন বাদশাহ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহন করবে। তাকে বলা হলো, খলীফা! জবাবে তিনি বললেন, না বরং বাদশাহ হবে।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৫৩ ]

    উতবা ইবনে গাযওয়ান সুলামী রাযিঃ থেকে বর্নিত, তিনি এরশাদ করেন, যখনই কোনো নবুওয়তের আবির্ভাব হয়েছে তখনই তার পরবর্তী বাদশাহর আবির্ভাব ঘটেছে।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৫৪ ]

    হযরত সাঈদ ইবনুল মুসাইয়াব রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, খলীফা হবেন, সর্বমোট তিনজন। এছাড়া বাকিরা হবেন বাদশাহ। তাকে সেই তিনজনের নাম জানাতে বলা হলে তিনি বলেন, আবু বকর, ওমর এবং ওমর। তাকে বলা হলো, আমরা আবু বকর ও ওমরকে চিনতে পারলেও দ্বিতীয় ওমরকে তো চিনতে পারলামনা। জবাবে তিনি বলেন, যদি তোমা বেচে থাকো তাহলে অবশ্যই তার যুগ প্রাপ্ত হবে। আর যদি তোমরা জীবিত না থাকো তাহলে তোমাদের পরবর্তী সময়ে তার আগমন হবে।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৫৫ ]

    পূর্বের হাদীসের ন্যায়।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৫৬ ]

    হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি একদিন রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বললাম ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনার পররর্তী সময়ে রাষ্ট্র পরিচালনার এই দায়িত্ব কী ভাবে আদায় করা হবে। জবাবে তিনি বললেন, তোমার গোত্রে যতক্ষন কল্যান থাকবে ততক্ষন সেই দায়িত্ব পালনের যোগ্য তারাই হবে। অতঃপর ধ্বংস প্রাপ্ত হবে? জবাবে তিনি বললেন, তোমার গোত্র। আমি জানতে চাইলাম সেটা কেমনে? জবাবে রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন, মৃত্যু তাদেরকে গ্রাস করে নিবে। এবং মানুষ তাদের বিরুদ্ধে হিংসাত্নক হয়ে উঠবে।
    রাসূলুল্লাহ সাঃ এর পরবর্তী খলীফা বাদশাহর তালিকা
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৫৭ ]

    রাসূলুল্লাহ সাঃ এর খাদেম হযরত সাফীনা রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলরল্লাহ সাঃ মদীনার মসজিদ প্রতিষ্ঠাকালীন হযরত আবু বকর রাযিঃ একটি পাথর এনে রাখেন, অতঃপর হযরত ওসমান রাযিঃ এসে আরেকটি পাথর রাখেন। এই অবস্থা দেখে রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, এরা আমার পর খেলাফতের জিম্মাদারী করবে।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৫৮ ]

    উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ যখন মদীনার মসজিদ স্থাপন করছিলেন তখন হযরত আবু বকর রাযিঃ একটি পাথর নিয়ে এসে রেখ দেন, এরপর হযরত ওসমান রাযিঃ আরেকটি পাথর রাখেন এঅবস্থা দেখে রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন এরা আমার পর ধারাবাহিক ভাবে খেলাফতের জিম্মাদারী পালন করবে।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৫৯ ]

    হযরত আমের শাবী রহঃ বনু মুসতালিকের এক লোক থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমার গোত্র বনু মুসতালিক আমাকে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট প্রেরন করেন, যেন একথা জিজ্ঞাসা করা হয়, রাসূলুল্লাহ সাঃ পরবর্তী আমরা সাদকা ইত্যাদি কার কাছে দিবে, অতঃপর আমি তার কাছে আসলে, আমার সাথে হযরত আলী ইবনে আবু তালেব রাযিঃ এর সাথে সাক্ষাৎ হয়। তিনি আমার আসার কারন জিজ্ঞাসা করলে আমি বললাম যে, আমার গোত্র বনু মুসতালিক আমাকে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর কাছে প্রেরন করেছে, যেন আমি তাকে জিজ্ঞাসা করি যে, তার পর আমরা কার হাতে সাদকা দিব। একথা শুনে হযরত আলী রাযিঃ বললেন, হ্যা তুমি তার কাছে জিজ্ঞাসা করে আমার কাছে এসে সে সম্বন্ধে জানাবে। অতঃপর সে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর কাছে এসে বললেন, আমাকে আমার গোত্র পাঠিয়েছে, যেন আপনাকে জিজ্ঞাসা করি যে, আপনার পর সাদকা ইত্যাদি আমরা কার হাতে দিব। জবাবে রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, আমার পরবর্তী সাদকা ইত্যাদি তোমরা আবু বকরের হাতে প্রদান করবে। রাসূলুল্লাহ সাঃ এর কাছ থেকে জবাব শুনে তিনি হযরত আলী রাযিঃ এর কাছে এসে কথাটি জানালেন। অতঃপর আলি রাযিঃ বললেন, আবার রাসূলুল্লাহ সাঃ এর কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করো, হযরত আবু বকর রাযিঃ এরপর কার হাতে সাদকা প্রদান করবে। এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাঃ কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জবাব দিলেন, আবু বকর এর মৃত্যুর পর তোমরা সাদকা ওমরের হাতে দিবে। কথাটি এসে হযরত আলী রাযিঃ কে বললে, তিনি বলেন তুমি আবারো গিয়ে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর কাছে জানতে চাও ওমরের মারা যাওয়ার পর সাদকা কার হাতে দিবে। এ প্রস্তাব নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর কাছে আসলে জবাবে তিনি বলেন, তোমরা ওমরের পর ওসমান ইবনে আফফান এর হাতে সাদকা ইত্যাদি প্রদান করো। ঐ লোক রাসূলুল্লাহ সাঃ এর কাছ থেকে ফিরে এসে হযরত আলী ইবে আবু তালেব রাযিঃ এর কাছে এসে কথাটি বললে তিনি বললেন, তুমি আবারো গিয়ে জিজ্ঞাসা করো ওসমান ইবনে আফফান এর পর কার কাছে সাদকা দিবে। জবাবে বনু মুসতালিকের লোকটি বললেন, এরপর পূনরায় তার কাছে যেতে আমার লজ্জা বোধ হচ্ছে।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৬০ ]

    হযরত আমর ইবনে লাবীদ রাযিঃ বর্ননা করেন, একদিন রাসূলুল্লাহ সাঃ জনৈক গ্রাম্য লোক থেকে বাকিতে একটি উট ক্রয় করে। লোকটি ফিরে যাওয়ার সময় হযরত আলি ইবনে আবু তালেব রযিঃ এর সাথে তার সাক্ষাৎ হলে তিনি লোকটিকে বললেন, যদি আল্লাহ তাআলা তার রাসূল কে মৃত্যু দান করেন তাহলে তোমার পাওনা কার কাছ থেকে উসূল করবেন একথা শুনে লোকটি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে জিজ্ঞাসা করলেন ইয়া রাসূলুল্লাহ, যদি আপনার মৃত্যু এসে যায় তাহলে আমার পাওনা কার কাছ থেকে উসূল করবো? জবাবে রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন, তোমার হক্ব আবু বকরের কাছ থেকে নিবে। অতঃপর লোকটি ফিরে আসলে আবারো আলী রাযিঃ এর সাথে তার দেখা হয়। তার কাছে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার পরবর্তী হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাযিঃ থেকে আমার পাওনা উসুল করতে বলেছন, একথা বলে তিনি চলে যেতে চাইলে হযরত আলী রাযিঃ বললেন, যদি আবু বকর আবু বকর মৃত্যু বরন করে তাহলে কার কাছ থেকে উসূল করবে। অতঃপর গ্রাম্য লোকটি আবারো রাসূলুল্লাহ সাঃ এর কাছে গিয়ে বললেন, যদ আবু বকর মারা যায় তাহলে কার কাছ আমার পাওনা উসূল করব? জবাবে রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন, ওমরের কাছ থেকে তোমার পাওনা বুঝে নিবে। লোকটি ফিরে আসলে তার সাথে পূনরায় আলীর সাক্ষাৎ হয়। এবং আল্লাহর রাসূলের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, আবু বকর মারা গেলে ওমরই তোমার পাওনা পরিশোধ করবে। একথা শুনে হযরত আলী রাযিঃ বললেন, যদি ওমর মারা যায় তাহলে কার কাছে চাইবে? লোকটি বললেন তুমি ঠিকই বলেছ, অতঃপর সে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর কাছে গিয়ে বলল, ইয়া রাসূলুল্লাহ সাঃ যদি ওমর মৃত্যু বরন করে তাহলে আমার হক্ব কে দিবে? জবাবে রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন, তখন তোমার পাওনা ওসমান ইবনে আফফান থেকে বুঝে নিবে। রাসূলুল্লাহ সাঃ এর কথাটি শুনে উক্ত লোকটি চলে আসার সময় আবারো হযরত আলী রাযিঃ এর সাথে সাক্ষাৎ হয় এবং রাসূলুল্লাহ সাঃ এর জবাবের কথা জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমি তখন আমার পাওনা ওসমান ইবনে আফফান থেকে উসূল করব। অতঃপর আলী রাযিঃ বললেন, যদি ওসমান ইবনে আফফান মারা গেলে কি করবে? একথা শুনে লোকটি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন ইয়া রাসূলুল্লাহ যদি ওসমান ইবনে আফফান মৃত্যু বরন করে তাহলে আমার পাওনা কার কাছ থেকে উসূল করব। জবাবে রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন, যদি ওসমান ইবনে আফফান মত্যু বরন করে তখন তোমাকে আমার নিকট প্রেরন কারী থেকে তোমার পাওনা উসূল করবে।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৬১ ]

    বিশিষ্ট সাহাবী হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক রাত্রে জনৈক নেককার লোক আবু বকর রাযিঃ এর ন্যায় এক লোককে স্বপ্নে দেখেন, যিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর মৃত্যুর পর হযরত ওমর রাষ্ট্রীয় দায়ীত্ব গ্রহন করেন, তার মৃত্যুর পরপরই হযরত ওসমান রাযিঃ ক্ষমতাসীন হন। হযরত জাবের রাযিঃ বলেন, আমরা সেখান থেকে দাড়িয়ে গেলে বলতে থাকলাম, নেককার লোকটি হচ্ছেন হযরত রসূলুল্লাহ সাঃ আর অন্যরা হলেন, তার পরবর্তী দায়িত্বপ্রাপ্ত খোলাফায়ে কেরাম।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৬২ ]

    হযরত ওকবা ইবনে আওস আস সাদুসী রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযিঃ এরশাদ করেছন, আবু বকর পরবর্তী হযরত ওমর দায়িত্বশীল হবেন, তিনি একজন লৌহ মানব তুল্য। তারপর যিনি খলীফা হবেন, তার নাম হচ্ছে ওসমান ইবনে আফফান, তিনি হচ্ছেন যুননূর। তাকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হবে। তাকে আল্লাহ তাআলার রহমতের বিরাট একটি অংশ দান করা হবে। হযরত মুআবিয়া রাযিঃ এবং তার পুত্র মুকাদ্দাস এলাকার অধিকারী হবেন। উপস্থিত লোকজন বললেন, আপনি কি হাসান হুসাইন রাযি এর কথা বলবেন না। এ প্রশ্ন শুনে তিনি তার কথাটি আবারো বললেন, এক পর্যায়ে তিনি মোয়াবিয়া ও তার পুত্রের কথা বলে সিফাহ, সালাম, মনসূর, জাবের, আল আমীন, গোত্রপতি সহ আরো অনেকের কথা বলেন, প্রত্যেকে একেকজন স্বতন্ত্র ব্যক্তি হবে এবং একজনের সাথে আরেকজনের কোনো মিল থাকবেনা। তাদের প্রত্যেকজন কাব ইবনে লুআই এর বংশ ধর হবেন। তাদের মধ্যে জনৈক লোক হবেন কাহতানের বাসিন্দা। তাদের কেউ কেউ মাত্র দুই দিন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকতে পারবেন। তাদের একজনকে বলা হবে, আপনি আমাদের অনুগত হয়ে যান, না হয় অবশ্যই তোমাকে হত্যা করবো। এভাবে বলার পরও আনুগত্য স্বীকার না করায় তাকে হত্যা করা হয়।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৬৩ ]

    বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইমর ইবনুল আস রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইয়ারমুকের যুদ্ধের দিন একটি বইয়ে দেখতে পেলাম যে, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরপর হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাযিঃ খলীফা নির্বাচিত হওয়ার পর মৃত্যু বরন করলে যিনি খলীফা হবেন, তার নাম হচ্ছে, ওমর আল ফারুক। তিনি লৌহ মানবের মধ্যে গন্য হবেন। তার পরবর্তী যিনি খলীফা নিযুক্ত হবেন, তার নাম হচ্ছে, ওসমান যুননূরাইন। তাকে রহমতের বিরাট একটি অংশ দেয়া হবে, কেননা তাকে নির্মম ভাবে শহীদ করা হবে। পরবর্তীতে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হবেন, সিফাহ, মানসূর, মাহদী, আল আমীন, সালাহ, আফিয়া। অতঃপর খুবই অত্যাচারীগন ক্ষমতা লাভ করবে। তাদের ছয়জন হবেন, কাব ইবনে লুআই এর বংশধর। আরেকজন হবেন, কাহতান গোত্রের। এদের প্রত্যেকে এমন নেককার হবেন, যার ন্যায় দ্বিতীয় কাউকে দেখা যাবেনা, বর্ননাকারী মুহাম্মদ ইবনে সিরীন রহঃ বলেন, আবুল জিলদ এরশাদ করেছেন, মানুষের আমল অনুযায়ী তাদের উপর বাদশাহ দেয়া হবে।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৬৪ ]

    পূর্বের ন্যায়।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৬৫ ]

    পূর্বের ন্যায়, তবে সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, তোমরা তাদের পর আর তাদের মত কাউকে পাবেনা।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৬৬ ]

    হযরত সাঈদ ইবনে আব্দুল আজীজ রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেন, দুইজন ওমর তোমাদের জিম্মাদারী পালন করেন,, এরপর দুই ইয়াযিদ ক্ষমতাসীন হবেন, দুই ওলীদ ক্ষমতার অধিকারী হবেন, অতঃপর দুই মারওয়ান ক্ষমতার মালিক হবেন, অতঃপর দুই মুহাম্মদ ক্ষমতাসীন হবেন। হযরত সুফিয়ান ইবনুল লাইল রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হাসান ইবনে আলী রাযিঃ কে বলতে শুনেছি, তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছেন, এমন এক লোক ক্ষমতার মালিক হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত কিয়ামত হবেনা, যে লোকের মলনালী হবে প্রসস্থ, তার খাদ্যনালী খুবই বড় হবে, যার কারনে সে অধিক ভক্ষন করলেও পেট ভরবেনা এবং তৃপ্ত হতে পারবেনা।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৬৭ ]

    হযরত হেলাল ইবনে ইয়াসাফ রহঃ বর্ণনা করেন, তিনি হচ্ছেন, ঐ লোক যাকে হযরত মোয়াবিয়া রাযিঃ ওসমান রাযিঃ, পরবর্তী খলীফা সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করার জন্য রোমের আমীরের নিকট পাঠিয়েছিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, রোমের শাসক একটি পুস্তক আনতে বললে সেটা দেখে বললেন, ওসমান ইবনে আফফান পরবর্তী খলীফা হবেন তোমাকে প্রেরনকারী মোয়াবিয়া।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৬৮ ]

    হযরত আবু সালেহ রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি এরশাদ করেন, একদা খলীফা ওসমান ইবনে আফফানের সাথে মোয়াবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান রাযিঃ ভ্রমন করছিলেন, চলার পথে জনৈক গায়ক কবিতা আকারে বলছিলেন, ওসমান ইবনে আফফান পরবর্তী আমীর হবেন, আলী ইবনে আবি তালেব, শক্ত সমর্থ পুরুষ সকলে তার উপর রাজী থাকবে।
    বর্ণনাকারী কাব রহঃ বলেন, কাফেলার এক পার্শ্বে হযরত মোয়াবিয়া ধূসর রংয়ের একটি খচ্চরের উপর আরোহন করে চলছিলেন। ঐ সময় কাব বলেন, আলীর পরবর্তীতে আমীর হবেন, ধূসর রংয়ের বাহনের উপর আরোহী লোকটি।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৬৯ ]

    হযরত হারেস ইবনে ইয়াযিদ রহঃ থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, আমি উতবা ইবনে রাশেদ আস সাদাফী কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি আব্দুল্লাহ ইবনে আমরের বের হওয়ার অপেক্ষায় ছিলাম তিনি বলেন, আমি এক্ষুনি আব্দুল্লাহ ইবনে আমরকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, জাব্বারদের পর জনৈক জাব্বারের আবির্ভাব হবে, যদ্বারা আল্লাহ তাআলা উম্মতে মুহাম্মাদিয়াদেরকে শাস্তি দিবেন। এরপর মাহদী, মানসূর সালাম এবং গোত্রের জিম্মাদারগন ক্ষমতাশালী হবেন। এসময় পার হওয়ার পর যদি তোমার মৃত্যুর সামর্থ্য থাকে তাহলে যেন সে মারা যায়।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৭০ ]

    হযরত কাব রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলা হযরত ইসমাঈল আঃ এর বংশধরদের মধ্যে মোট বারোজন জিম্মাদার প্রেরন করবেন। তাদের সর্বোত্তম ও আফজাল হচ্ছেন, হযরত আবু বকর রাযিঃ হযরত ওমর রাযিঃ হযরত ওসমান যুননূরাইন রাযিঃ যাকে মাজলূম ও নির্মমভাবে শহীদ করা হবে। যিনি দ্বিগুন প্রতিদান প্রাপ্ত হবেন।
    আরেকজন ক্ষমতার অধিকারী হয়ে শাম দেশের শাসক থাকবেন, তার পুত্র, সিফাহ, মানসূর, সালাহ এবং আফিয়াহ।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৭১ ]

    ইয়াদূম আল হিময়ারী রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি তাবী ইবনে আমের রহঃ কে বলতে শুনেছেন, সিফাহ নামক শাসক দীর্ঘ চল্লিশ বৎসর পর্যন্ত জীবিত থাকবেন তাওরাত নামক আসমানী কিতাবে তার নাম তাইরুস সামা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৭২ ]

    হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি এরশাদ করেন, অতিসত্ত্বর বেশ কয়েকজন খলীফা এই উম্মতের দায়িত্বভার গ্রহন করবেন, তাদের প্রত্যেকে নেককার এবং সালেহ হবেন। তাদের হাতেই অনেক ভূখন্ড জয় হবে। প্রথম বাদশাহ এর নাম হবে জাবের। বর্ণনাকারী ইবনে নুআইম রহঃ বলেন, তার হাতে আল্লাহ তাআলা মানুষদের উপর জুলুম করবেন। দ্বিতীয় ব্যক্তি হবেন আল মুফরাহ। তিনি ছানা বিশিষ্ট পাখির মত হবেন।তৃতীয় বাদশাহ হবেন, যুল আসাব, তিনি দ্বীর্ঘ চল্লিশ বৎসর পর্যন্ত ক্ষমতাসীন থাকবে। তাদের পর পৃথিবীতে আর কোনো কল্যান বাকি থাকবেনা। বর্ননাকারী বলেন, যুল আসাব আর কি বলা হয়েছে সেটা আমি ভুলে গিয়েছে। তবে তিনি ভাল লোক ছিলেন।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৭৩ ]

    হযরত মুগীছ আল আওযায়ী রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বর্ননা করেন, একদিন হযরত ওমর রাযিঃ কাব রহঃ কে জিজ্ঞাসা করেন যে, তার সম্বন্ধে কাব কি জানতে পেরেছে, জবাবে কাব রহঃ বলেন, সে একজন লৌহ মানব হবে এবং আল্লাহ তাআলার বিধান সাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোনো ভর্ৎসনাকারীর ভর্ৎসনাকে ভয় পাবেনা। অতঃপর ওমর বললেন, এরপর কি বলা হয়েছে? জবাবে হযরত কাব রহঃ বললেন, আপনার পর এমন একজন খলীফা হবেন, যাকে তার উম্মতও প্রজাগন নির্মমভাবে হত্যা করবে। অতঃপর ওমর রাযিঃ জিজ্ঞাসা করেন, এরপর কি হবে। জবাবে হযরত কাব রহঃ বলেন, হযরত ওসমান কে হত্যা করার পর বিভিন্ন ধরনের ফেৎনাও বালা মসীবতের আত্নপ্রকাশ হবে।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৭৪ ]

    হযরত কাব রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি এবং ইয়াশু স্বাক্ষাৎ করেন, যিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নবী হিসেবে প্রেরীত হওয়ার পূর্বের কিতাব সমূহের আলেম ছিলেন, তারা উভয়জন পৃথিবীতে সংঘটিত হওয়া বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলেন। এক পর্যায়ে ইয়াশু রহঃ বলেন, জনৈক নবীর আত্নপজকাশ হবে এবং তার দ্বীন অন্যান্য দ্বীনের উপর প্রাধান্য বিস্তার করবে। তার উম্মতগন ও অন্য সকল উম্মতের উপর আধিক্য অর্জন করবে। তারা সৎকাজের আদেশ করবে এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে। এসব কথা শুনে কাব বললেন, আপনি সঠিক কথাই বলেছেন, অতঃপর ইয়াশু তাকে বললেন, হে কাব! তাদের বাদশাহদের সম্বন্ধে আপনি কি কিছু জানেন? জবাবে হযরত কাব রহঃ বলেন, হ্যা, তাদের মধ্যে মোট বারোজন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহ করবেন। তাকে শহীদ করার পর আল আমীন ক্ষমতাধীন হবেন। তাকেও নির্মম ভাবে শহীদ করা হবে, অতঃপর বাদশাহদের প্রথম ব্যক্তি রাষ্ট্র পরিচালনা করার পর মৃত্যু বরন করবেন। এরপর সাহেবুল আহরাছ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর মারা যাবেন। অতঃপর সাহেবুল আসাব ক্ষমতার মালিক হবেন। তিনিই হচ্ছেন, বাদশাহদের মধ্যে সর্বশেষ মৃত্যু বরনকারী। তারপর সাহেবুল আলামাত ক্ষমতার মালিক হওয়ার পর মারা যাবে। ইবনু মাহেক আযযাহাবিয়্যাতকে হত্যা করার পর পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরনের ফেৎনা ফাসাদ ছড়িয়ে পড়বে। ঐ সময় থেকে যাবতীয় বালা মসীবত দেখা যাবে এবং মানুষের কাছ থেকে ভ্রাতৃত্ববোধ উঠে যাবে। অতঃপর সাহেবুল আলামতের বংশধর থেকে চারজন বাদশাহ ধারাবাহিক ভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের দুইজন এমন হবেন যাদের জন্য কোনো বই পুস্তক পাঠ করা হবেনা, আরেকজন কয়েক মাত্র রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্টিত হওয়ার পর নিজের বিছানায় মৃত্যু বরন করবেন। আরেকজন বাদশাহর আবির্ভাব হবে জারফ নামক এলাকার দিক থেকে তার হাতেই যাবতীয় বিশৃঙ্খলার সূচনা হবে এবং তার অধীনে শাহী মুকুট চূর্ণ বিচূর্ণ করা হবে। তিনি একশত বিশদিন পর্যন্ত হিমসের শাসনভার পালন করবেন। তার প্রতি তার ভূখন্ড থেকে এক ধরনের আতংক এগিয়ে আসবে যা তাকে এখান থেকে চলে যেতে বাধ্য করবে। অতঃপর জারফ নামক এলাকাতেও বালা মসীবত প্রকাশ পাবে। যার কারনে তাদের পরস্পরের মাঝে মারাত্নক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৭৫ ]

    হযরত ইউনুছ ইবনে মায়সারা আল জাবলানী রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেছেন। উক্ত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা মদীনা থেকে পরিচালিত হবে, পরবর্তীতে সেটা শাম দেশের দিকে চলে যাবে, অতঃপর জাযিরা থেকে পরিচালিত হবে অতঃপর ইরাক থেকে অতঃপর বায়তুল মোকাদ্দাস থেকে, যখন রাষ্ট্র ক্ষমতা বায়তুল মোকাদ্দাস থেকে পরিচালনা হতে থাকবে মূলতঃ তখনই সেটা ধূলিস্যাৎ হয়ে যাবে। যারাই সেখান থেকে বের হবে উক্ত সমস্যা তাদেরকেও গ্রাস করে নিবে।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৭৬ ]

    হযরত আরতাত ইবনে মুনজির রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার নিকট রাসূলুল্লাহ সাঃ থেকে সংবাদ পৌছেছে, তিনি এরশাদ করেন, নবুওয়াতী দায়িত্ব আমার পরে তিন স্থান থেকে পরিচালিত হবে, মক্কা, মদীনা এবং শাম। এই তিন স্থান থেকে উক্ত দায়িত্ব সরে আসলে, সেটা আর কিয়ামত পর্যন্ত ফিরে আসবেনা।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৭৭ ]

    হযরত কুরাব ইবনে আবদে কুলাল থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, হযরত কাব এ আহবার রহঃ আমাদেরকে সংবাদ দিয়েছেন, নিশ্চয় খলীফা মানসূর পনের খলীফার পাচ নম্বর খলীফা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৭৮ ]

    হযরত কাব রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি এরশাদ করেন, মানসূর সংবাদ দিয়েছেন, খলীফা মানসূর বনূ হাশেম থেকে হবেন।
    [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৭৯ ]

    সম্পর্কিত পোস্ট:


    নোটঃ খলীফাদেরকে চিনার উপায় Download করতে কোন ধরনের সমস্যা হলে আমাদেরকে জানান। যোগাযোগ করতে এখানে ক্লিক করুন।

    মীযান জামাতের সমস্ত কিতাব PDF Download

    নাহবেমীর জামাতের কিতাব PDF Download

    হেদায়াতুন নাহু জামাতের কিতাব PDF Download

    কাফিয়া জামাতের কিতাব PDF Download

    শরহে জামী জামাতের কিতাব PDF Download

    জালালাইন জামাতের কিতাব PDF Download

    মেশকাত জামাতের কিতাব PDF Download

    দাওরায়ে হাদিসের কিতাব সমূহ PDF Download

    মাদানী নেসাবের কিতাবসমূহ PDF Download

    Leave a Comment

    This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.