গত বছর জুন মাসে এক বাড়িওয়ালার সাথে আমার এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা অগ্রীম ও মাসিক তের হাজার টাকা ভাড়া হিসেবে বাড়ি ভাড়ার কথা হয়। একই সময়ে বাড়িওয়ালা ঠিক সমান মাপ ও মানের একই তলার আরেকটি ফ্ল্যাট আরেক ব্যক্তির কাছে এ চুক্তিতে ভাড়া দেয় যে, অগ্রীম এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা দিলে ভাড়া বারো হাজার আর ত্রিশ হাজার টাকা অগ্রীম জামানত দিলে মাসিক ভাড়া তের হাজার টাকা হবে। এই আলোচনার প্রেক্ষিতে তাদের মধ্যে অগ্রীম ত্রিশ হাজার ও মাসিক তের হাজার টাকার ভাড়ার চুক্তি সম্পাদিত হয়। কিন্তু আমি যখন জুলাই মাসে অগ্রীম এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা দিতে যাই তখন তিনি সেচ্ছায় স্বপ্রণোদিত হয়ে মাসিক ভাড়া বারো হাজার টাকা করেন। প্রথম দশ মাস অগ্রীম টাকা থেকে এক লক্ষ বিশ হাজার টাকা কাটা যাবে। বাকী ত্রিশ হাজার টাকা জামানত হিসাবে রয়ে যাবে। কিন্তু বাড়িওয়ালা ও অন্যদের সাথে কথা বলে এই কথা প্রায় নিশ্চিত যে, আমার ভাড়া এক হাজার টাকা কম হওয়া অগ্রীম টাকা অন্যজনের চেয়ে বেশি হওয়ার কারণে হয়েছে। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে, মাসিক আলকাউসার ২০১৫ জুন-জুলাই সংখ্যায় ছাপাÑ রিবার প্রচলিত কয়েকটি রূপ শীর্ষক প্রবন্ধের তের নম্বরে বাড়ি ভাড়ার ক্ষেত্রে সিকিউরিটি বেশি দিলে ভাড়া কমিয়ে দেওয়া শিরোনামের অধীনে যে মাসআলা বলা হয়েছে তার প্রেক্ষিতে এই একহাজার টাকা কম দেওয়া সুদ বলে গণ্য হবে কি? যদি সুদ হয় তাহলে এখন করণীয় কী?
মাসিক আলকাউসারের উক্ত প্রবন্ধে সিকিউরিটি মানি সম্পর্কে যে মাসআলাটি বলা হয়েছে তা প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। কেননা প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বাড়ির মালিক আপনার ভাড়া একহাজার টাকা কমিয়ে দিয়েছে দশ মাসের ভাড়া বাবত ১,২০,০০০/= টাকা অগ্রীম দিয়ে দেওয়ার কারণে। এই ১,২০,০০০/= টাকা সিকিউরিটি মানি নয়; বরং তা এ্যাডভান্স তথা অগ্রীম ভাড়া। আর কিছু ভাড়া অগ্রীম পরিশোধ করে দিলে ভাড়াদাতা যদি মূল ভাড়ার পরিমাণ যুক্তিসঙ্গতভাবে কিছুটা কমিয়ে দেয় তবে তা নাজায়েয নয়। আর সিকিউরিটি মানি ভাড়াদাতার নিকট ঋণ হিসাবে থাকে। তাই এই অর্থের কারণে ভাড়ার পরিমাণ কমিয়ে দিলে তা ঋণ দিয়ে ঋণগ্রহীতা থেকে অতিরিক্ত সুবিধা গ্রহণের অন্তর্ভুক্ত, যা সুদ ও হারাম।
-আসসুনানুল কুবরা, বাইহাকী ৫/৫৭৩; আলমাবসূত, সারাখসী, ১৪/৩৫; মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়্যাহ, মাদ্দাহ ৪৬৮; আলমাআয়ীরুশ শরইয়্যাহ পৃ. ১৪৮