হযরত ইবনে শিহাব যুহরী রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার কাছে সংবাদ পৌঁছেছে, কালো ঝান্ডাবাহী সৈন্য বাহিনী খোরাসান থেকে আগমন করবে, তারা খোরাসান এলাকার পাহাড় থেকে নেমে আসলে সেখানে ইসলামের বিরোধীতা করতে আরম্ভ করে। কালো ঝান্ডাবাহী দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে আগত অনারবদের বিশাল সৈন্যবাহিনী।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৪৫ ]
হযরত উকবা ইব্নে আবী যয়নব রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বায়তুল মোকাদ্দাস আগমন করে তার দায়িত্বভার গ্রহণ করলেন। আমি তাকে বললাম হয়তো আপনি পশ্চিমাদের ব্যাপারে আশঙ্কা বোধ করছেন। জবাবে তিনি বললেন, না, আমি তাদের ব্যাপারে আশঙ্কা বোধ করছিনা। নিঃসন্দেহে তাদের ফেৎনা তত বেশি ব্যাপক হবেনা যতক্ষণ কালো ঝান্ডা বিশিষ্ট বাহিনী আত্মপ্রকাশ করবেনা। যদি তাদের আগমন হয়ে তাহলে তুমিও তাদের অনিষ্টতা থেকে বেঁচে থাক।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৪৬ ]
প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাছ রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হযরত আলী রাযিঃ কে বললাম, হে আবুল হাসান! আমাদের রাজত্বকাল কখন থেকে শুরু হবে, জবাবে তিনি বললেন, যখন তুমি দেখবে আহলে খোরাসানের কতক যুবক প্রকাশ পেয়েছে তখন তোমরা তাদের গুনাহ নিয়ে সন্তুষ্ট থাকবে আর আমরা সন্তুষ্ট থাকব তাদের সওয়াব নিয়ে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৪৭ ]
হযরত মুহাম্মদ ইবনুল হানাফিয়্যাহ রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বনু আব্বাছের জন্য খোরাসানের পক্ষ থেকে কালো ঝান্ডা বিশিষ্ট বিশাল এক বাহিনী আত্মপ্রকাশ করবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৪৮ ]
ইব্নে শিহাব যুহরী রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেছেন, লুকা’ ইবনে লুকা পৃথিবী বিজয় করবেন। হাদীস বর্ণনাকারী আব্দুর রব রাজ্জাক, হযরত শমর এর উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, তিনি হচ্ছেন, আবু মুসলিম।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৪৯ ]
হযরত ইবনে আব্বাছ রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি একদিন মুআবিয়া রাযিঃ এর কাছে আসলেন আমিও সেখানে উপস্থিত ছিলাম। হযরত মুআবিয়া রাযিঃ তাকে খুবই সম্মান করলেন। তিনিও সম্মানের প্রতিদান দিয়ে বললেন, হে আবুল আব্বাছ! তোমাদের জন্য কি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা থাকবে। জবাবে তিনি বললেন, হে আমীরুল মুমিনীন আমাকে এ দায়িত্ব থেকে ক্ষমা করুন। তিনি বললেন, আমাকে কি বলা যাবে? জবাবে তিনি বললেন, হ্যাঁ, সেটা অবশ্যি আখেরী জামানায়।
হযরত মুআবিয়া রাযিঃ বললেন, তোমাদের সাহায্যকারী কারা হবে? ইবনে আব্বাছ রাযিঃ বললেন, তারা হবে, আহলে খোরাসান। তিনি আরো বলেন, বনু হাশেম এবং বনু উমাইয়া, বনু উমাইয়া এবং বনু হাশেমের মাঝে বিভিন্ন সময় ঝগড়াÑফাসাদ হতে থাকলে সুফিয়ানীর আত্মপ্রকাশ ঘটবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৫০ ]
হযরত সালামা ইবনে মাজনূন রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হযরত আবু হুরায়রা রাযিঃ কে বলতে শুনেছি, আমি আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাছ রাযিঃ এর ঘরে প্রবেশ করলে তিনি ঘরে দরজা বন্ধ করতে বলেন। এরপর জিজ্ঞাসা করেন, এখানে আমরা ছাড়া কি কেউ রয়েছে, জবাবে বলা হলো, না নেই। আমি গোত্রের বৈঠকের এক কিনারায় ছিলাম। অতঃপর আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাছ রাযিঃ বলেন, যখন তোমরা কালো পতাকাবাহী সৈন্যকে পূর্বদিক থেকে আসতে দেখবে তখন তোমরা ঘোড়াকে সম্মান করবে। কেননা, আমাদের দেশ মূলতঃ তারাই পরিচালনা করবে। হযরত আবু হুরায়রা রাযিঃ বলেন, অতঃপর আমি ইব্নে আব্বাছকে বললাম, আমি কি রাসূলল্লাহ সাঃ থেকে যা কিছু শুনেছি তা কি তোমার সামনে বর্ণনা করবনা। তার কথা শুনার সাথে সাথে ইবনে আব্বাছ রাযিঃ বললেন, তুমিও কি এখানে রয়েছ। জবাবে তিনি বললেন, হ্যাঁ। এরপর ইবনে আব্বাছ রাযিঃ বললেন, হ্যাঁ তুমি রাসূলুল্লাহ সাঃ থেকে যা শুনেছ তা বর্ণনা কর। অতঃপর আমি বললাম, রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি, যখন কালো পতাকাবাহী সৈন্য বহর প্রকাশ পাবে,তার প্রথম অংশে ফেৎনা, মধ্য ভাগে পথভ্রষ্টতা এবং শেষাংশে কুফরী।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৫১ ]
হযরত মাকহুল রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেন, আমার এবং বনু আব্বাছের কি হলো, তারা আমার উম্মতকে ঐক্যবদ্ধ করতঃ তাদেরকে কালো পতাকায় আচ্ছাদিত করছে। যার কারণে আল্লাহ তাআলা তাদেরকে আগুনের কাপড় পরিধান করাবেন।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৫২ ]
আবু বকর ইব্নে হাযম রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেছেন, লুকাঈ ইবনে লুকাঈ ক্ষমতাসীন হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবেনা।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৫৩ ]
হযরত হুজাইফা ইবনুল ইয়ামান রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি এরশাদ করেন, কিয়ামত সংঘটিত হবেনা যতক্ষণ লুকাঈ ইবনে লুকাঈ শাসনভার গ্রহণ করবেনা।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৫৪ ]
হযরত সাঈদ ইবনুল মুযাইয়্যার রহঃ থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেন, বনু আব্বাছের পক্ষে পূর্ব দিক থেকে কালো ঝান্ডা বাহী বিশাল এক সৈন্যবাহিনী প্রকাশ পাবে, অতঃপর তারা আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী কিছুদিন অপেক্ষা করবে। এরপর আবু সুফিয়ানের এক ছেলের নেতৃত্বে ছোট্ট কালো ঝান্ডাবাহী আরেক দল আত্মপ্রকাশ করবে। তারাও পূর্বদিক থেকে প্রকাশ পাবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৫৫ ]
বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আবু হুরায়রা রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি এরশাদ করেন, একশত পঁচিশ বৎসর পর আরবদের জন্য ধ্বংস ডেকে আনবে। মারাত্মক বিশৃঙ্খলাকালীন তাদের জন্য ধ্বংস হয়ে পড়বে। উক্ত ধ্বংস ডানা বিশিষ্ট প্রবাহমান বাতাসের ক্ষেত্রে যার চিৎকার পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে, এবং বাতাসও যার চিৎকার আলোড়ন সৃষ্টি করবে। এমন বাতাস যার আওয়াজ ক্ষীণ হয়ে আসবে। তাদের ধ্বংস দ্রুত মৃত্যুর চেয়ে ঘৃণিত ক্ষুধার চেয়ে এবং নীলাভ হত্যার চেয়েও। তাদের অপরাধের কারণে আল্লাহ তাআলা তাদের উপর বিভিন্ন ধরনের বালা-মসীবত চাপিয়ে দেয়া হবে। যার ফলে তাদের অন্তর কুফরীতে লিপ্ত হবে, তার পর্দা ছিন্ন করে নেয় এবং তাদের আনন্দ ভুলুন্ঠিত হয়ে যাবে। খবরদার! তাদের অপরাধের ভিত্তিতে পেরেক ইত্যাদি উপড়ে ফেলা হবে, ধনুকের ফিঁতা ছিড়ে ফেলবে, তীরের পালকগুলো ভেঙ্গে ফেলা হবে। তার পশম ছিড়া হবে। শুনে রাখ! ধ্বংস কুরাইশের জন্য তাদের কুফরীর কারণে, কখনো কখনো তারা এমন কথা বলবে যদ্বারা দ্বীনকে কলুসিত করে ফেলবে। যার ফলে তাদের ভয় উঠিয়ে নেয়া হবে, যাদের উপর বিশাল পর্দা ভেঙ্গে পড়বে। তাদের সৈন্য বাহিনী বিদ্রোহ শুরু করবে। তখনই আত্মপ্রকাশ করবে, বিলাপ করে ক্রন্দনকারীনিগন তাদের কেউ কেউ ক্রন্দন করবে দুনিয়ার জন্য, কেউ ক্রন্দন করবে দ্বীনের জন্য, কেউ কাঁদবে সম্মানিত জীবন যাপন করার পর লাঞ্চিতা হওয়ার কারণে, কেউ কান্নাকাটি করবে তার সন্তানগন ক্ষুধার্ত থাকার কারণে, কেউ কাঁদবে তার পেটের সন্তানের জন্য, অনেকে কাঁদবে তার গোলামের অসম্মান হওয়ার কারণে, কেউ কাঁদবে তার লজ্জাস্থান হালাল মনে করার কারণে, কেউকেউ কান্নাকাটি করবে তার রক্তপাত করার কারণে, কেউ ক্রন্দন করবে সৈন্যবাহিনীর জন্য, আবার কেউ কাঁদবে কবরের প্রতি আগ্রহী হয়ে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৫৬ ]
হযরত মুহাম্মাদ ইবনে আলী রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমার ধারনা যে, হযরত আলী রা. আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, একশত পঁচিশ বৎসর পর আরববাসীদের জন্য আসন্ন অনিষ্টতার কারণে দুর্ভোগ। আর তা হলো সেনাবহিনী সেনাবাহিনী কী? সেনাবাহিনীর মধ্যে দুর্ভোগ ও আশীর্বাদ রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে তীব্্রবেগে আগমনকারী বায়ু, উত্তাল ঝঞ্ঝা বায়ু এবং পশ্চাদগামী উত্তেজিত বায়ু। দুর্ভাগ্য তাদের জন্য ব্যাপক হত্যার কারণে, ধাবমান মৃত্যুর কারণে এবং ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের কারণে, সাথে সাথে তাদের উপর কঠিনভাবে বিপদ আসবে। তখন তাদের অন্তরকে কাফের বানিয়ে ছাড়বে, তাদের আনন্দকে বিনাস করে ফেলবে এবং তাদের গোপন বিষয়কে ফাঁস করে দেবে। খবরদার! তাদের গুনার কারণেই তাদের ধর্মচ্যুত ব্যক্তিরা প্রকাশ পাবে, তার কীলক অপসারন করা হবে এবং তার রশি ছিঁড়ে ফেলা হবে। কুরাইশদের জন্য তাদের নাস্তিকদের কারণে আফসোস! যেই নাস্তিক নতুন জিনিস তৈরী করবে, যা তাদের দ্বীনকে নোংরা করে দিবে, তার কারণে তাদের মর্যাদা ক্ষুন্ন করা হবে, তাদের পর্দা নষ্ট করা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে নিজেদের সেনাবাহিনী লেলিয়ে দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে ভাড়াটে বিলাপকারী ও ক্রন্দনকারীর ক্রন্দনের জন্য প্রস্তুত হবে। কিছু লোক দুনিয়াবী ক্ষতির জন্য কাঁদবে। আর কিছু লোক নিজের দ্বীনি ক্ষতির জন্য কাঁদবে। আর কিছু লোক মর্যাদা ক্ষুন্ন হওয়ার পর লাঞ্চনার কারণে কাঁদবে। আর কিছু লোক নিজেদের সন্তানের দুর্ভিক্ষের কারণে কাঁদবে। আর কিছু লোক নিজের গর্ভের সন্তানের কারণে কাঁদবে, আর কিছু লোক নিজেদের হেয় হওয়ার কারণে কাঁদবে। আর কিছু লোক নিজের লজ্জাস্থান রূপান্তরিত হওয়ার কারণে কাঁদবে। আর কিছু লোক নিজের রক্তপাতের কারণে কাঁদবে। আর কিছু লোক নিজেদের সেনাবহিনীর কারণে কাঁদবে, আর কিছু লোক নিজের কবরের আশায় কাঁদবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৫৭ ]
প্রখ্যাত সাহাবী হযরত সওবান রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি এরশাদ করেন, আমার এবং বনু আব্বাছের মাঝে কি হয়েছে, তারা আমার উম্মতকে একত্রিত করে তাদেরকে হত্যা করবে এবং কালো পোশাক পরিধান করাবে। যার কারণে আল্লাহ তাআলা তাদেরকে আগুনের পোশাক পরিধান করাবেন।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৫৮ ]
হযরত আবু আরদা আল-আশজাঈ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবু উমাইয়া আল-কলবী রহঃ ইয়াযিদ ইবনে আব্দুল মালিকের খেলাফতের সময় আমাদেরকে হাদীস বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, আমাদেরকে এমন একজন শেখ হাদীস বয়ান করেছেন, যিনি জাহেলী যুগও প্রাপ্ত হয়েছেন, বয়সের কারণে যার উভয় চোখের ভ্রু খসে পড়েছে। এমন একজন শেখের কাছে যুগের অবস্থা সম্বন্ধে করলে তিনি আমাদেরকে বনু উমাইয়ার ব্যাপারে খবর দিয়েছেন। এমন কি মরওয়ান ইবনে হাকাম খলীফা হওয়ার কথাও বলেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, কিছুদিন পর জাযিরা দিক থেকে কালো ঝান্ডাবাহী একদল সৈন্যের আত্মপ্রকাশ ঘটবে, যারা তোমাদের উপর রক্ত বন্যা প্রবাহিত করবে। এক পর্যায়ে তারা দিনের তৃতীয় প্রহরে দিমাশ্কে প্রবেশ করবে। দিমাশ্কবাসীদের থেকে দয়া-মায়া উঠিয়ে নেয়া হবে। পরবর্তীতে সেই দয়ামায়া আবারো ফিরে আসবে। তাদের অস্ত্রসস্ত্র ভুলুণ্টিত হয়ে যাবে, অতঃপর তারা সফর করতে থাকবে, এক পর্যায়ে তাদের সফর পশ্চিমে গিয়ে খতম হবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৫৯ ]
হযরত কা’ব রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি এরশাদ করেন, মাশরেকী শামীদের ফেৎনার পর হবে, বড় বড় রাজা বাদশাহদের পতন এবং আরববাসীদের বিভিন্ন লঞ্চনার সম্মুখিন হওয়া। এক পর্যায়ে পশ্চিমাদের আগমন ঘটবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৬০ ]
হযরত মুহাম্মদ ইব্নে আলী রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেছেন, দুই দলের পক্ষ থেকে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলার মাধ্যমে আমার উম্মতের ধ্বংস তরান্বীত হবে। একদল হবে বনু উমাইয়ার মাধ্যমে, আরেকদল হচ্ছে, বনু আব্বাছের পক্ষ থেকে। এরপর পথভ্রষ্টতার প্রতি আহ্বান করা হবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৬১ ]
হযরত কা’ব রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কিয়ামত সংঘটিত হবেনা, যতক্ষণ পর্যন্ত বনু আব্বাছের পক্ষে পূর্বদিক থেকে কালো পতাকাবাহী সৈন্যবাহিনীর আত্মপ্রকাশ হবেনা।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৬২ ]
পূর্বের হাদীসের মত।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৬৩ ]
হযরত ইবনে শিহাব যুহরী রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, পূর্বদিক থেকে কালো পতাকাবাহী বিশাল এক সৈন্যবাহিনীর আগমন ঘটবে, যাদের নেতৃত্বে থাকবে বিশাল উটের দেহের মত কিছু লোক। তারা খুবই বোধসম্পন্ন হলেও তারা হবে গ্রাম্য বংশের, তাদের নাম হবে উপনাম বিশিষ্ট। প্রথমে তারা দিমাশ্ক নামক শহরটি জয় করবে। এরপর তাদের অন্তর থেকে তিন প্রকারের দয়া মায়া তুলে নেয়া হবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৬৪ ]
হযরত আলী ইবনে আবু তালহা রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি এরশাদ করেন, কালো ঝান্ডা ধারন করে বিশাল এক সৈন্যবাহিনী দিমাশ্কে প্রবেশ করবে। এবং ব্যাপকহারে গনহত্যা চালাবে। তাদের নিদর্শন হবে, বক্শ, বক্শ।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৬৫ ]
হযরত আবু জাফর রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি এরশাদ করেন, যখন একশত উনত্রিশ বৎসর পূর্ণ হবে এবং বনু উমাইয়ার তলোয়ারসমূহ এখতেলাফের কারণে ব্যবহার হতে থাকবে এবং জাযিরার গাধাগুলো লাফিয়ে উঠবে। অতঃপর শামবাসীদের উপর বিজয়ী হলে একশত বিশ বৎসরের দিকে কালো ঝান্ডা বিশিষ্ট বাহিনীর আত্মাপ্রকাশ ঘটবে এবং আক্বাশের আগমনও হবে সেই জাতির সাথে। বড় লৌহখন্ডের ন্যায় তাদের অন্তরে কারো জায়গা থাকবেনা, তাদের জ্ঞান-বুদ্ধি হবে কাধ পর্যন্ত, তাদের কারো মধ্যে দুশমনের প্রতি কোনো দয়ামায়া থাকবেনা। তাদের নাম হবে উপনাম বিশিষ্ট, মূল গোত্র হবে গ্রামের সাথে সম্পৃক্ত। অন্ধকার রাত্রির ন্যায় কালো কাপড় পরিহিত থাকবে, তাদেরকে বনু আব্বাছের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে। মূলতঃ সেখানেই হবে তাদের রাজত্ব। সে যুগের প্রসিদ্ধ লোকজন তারা হত্যা করবে। এক পর্যায়ে তারা সবকিছু রেখে সমতল ভুমির দিকে পলায়ন করবে। এরপর তারাই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা চালাতে থাকবে পিছনে ফিতা বিশিষ্ট তারকার আত্মপ্রকাশ কিংবা তাদের মাঝে এখতেলাফ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৬৬ ]
আব্দুস সালাম ইব্নে মাসলামা রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবু কুবাইল রহঃ কে বলতে শুনেছি, তিনি বনু উমাইয়া সম্বন্ধে আলোচনা করতে গিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। পরবর্তীতে বললেন, অতিসত্ত্বর তাদের পর কালো ঝান্ডা বিশিষ্ট লোকজন ক্ষমতাসীন হবে। দীর্ঘদিন পর্যন্ত তারা ক্ষমতায় থাকারপর তাদের দুইজন গোলামের হাতে বায়আত গ্রহন করা হবে। তারা উভয়জন ক্ষমতাসীন হওয়ার পর দীর্ঘদিন পর্যন্ত তাদের মাঝে এখতেলাফ লেগেই থাকবে। একপর্যায়ে শামীদের পক্ষ থেকে তিন প্রকারের ঝান্ডাবাহীদের আত্মপ্রকাশ ঘটবে। তাদের আবির্ভাব হওয়ার পরপর রাজত্ব হাতছাড়া হয়ে যাবে। মিশরে যখন আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুল্লাহ আমীরুল মুমিনীনের পক্ষথেকে কোনো সংবাদ পাঠ করা হবে, পরবর্তীতে আব্দুল্লাহ ইবনে আ. রহমান আমীরুল মুমিনীনের পক্ষ থেকে কোনো পায়গাম ঘোষণা হওয়া পর্যন্ত তাদের রাজত্ব আর বাকি থাকবে না। তিনি হবে পশ্চিমাদের ধারকবাহক নিকৃষ্টতম শাসক। তারা মিশর-শামসহ অনেক দেশকে বিরানভূমিতে পরিনত করবে। যখন শামদেশে তাদের রাজত্ব দৃঢ় হতে থাকবে তখনই কালো পতাকা এবং অন্য তিন পতাকাবাহী সৈন্যদল জমায়েত হবে। তেমনিভাবে পশ্চিমে অবস্থিত //লোকজন পশ্চিমাদের উপর শাসনক্ষমতা চালাবে। তারা সকলে শাম ও মিশরবাসীদের বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শনের জন্য জমায়েত হবে। এবং যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে যাবে। উক্ত যুদ্ধে তিন ধরনের ঝান্ডাবাহীরা জয়লাভ করবে এবং বর্বরের রাজত্বের ইতিঘটবে, একপর্যায়ে তাা কালো ঝান্ডার অধিকারীদের সাথে তাদের ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হবে এবং ক্ষমতা তাদেরও হাতছাড়া হয়ে যাবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৬৭ ]
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাছ রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তারকাছে এক লোকের আগমন ঘটে,তার নিকট হোজাইফা রাযিঃও বসা ছিলেন। তিনি বলেন, হে ইবনে আব্বাছ! আল্লাহ তাআলার বাণি …….(্আরবী হবে) পাঠ করার পর কিছুক্ষণ মাথা ঝুকিয়ে রাখে এবং কিছুক্ষণ পর্যন্ত অন্যমনস্ক হয়ে থাকে। অতঃপর সে আয়াত আরেকবার তিলাওয়াত করে নেয়। যার কারণে কেউ কোনো উত্তর দেয়নি। হযরত হোজাইফা রাযিঃ বলেন, আমি তোমাকে সংবাদ দিব, যদ্বারা জানতে পারব কি কারণে অপছন্দ করা হয়েছিল। উল্লিখিত আয়াত আহলে বাইতের একলোক সম্বন্ধে নাযিল হয়, যাকে আব্দুল ইলাহ এবং আব্দুল্লাহ বলা হয়। যে মাশরিকের নদীসমূহ থেকে একটি নদীর পার্শ্বে এসে অবস্থান গ্রহণ করে। যার উপর দুইটি শহর প্রতিষ্ঠা করা হয়, যদ্বারা এক নদী দুই খন্ড হয়ে যায়। যে শহরে প্রত্যেক জালেম শাসক একত্রিত হবে। বর্ণনাকারী আরতাত বলেন, যখন ফুরাত নদীর তীরে কোনো শহর প্রতিষ্ঠিত করা হবে, অতঃপর আমরা কাওয়াসিন ও কাওয়াসিলের সাথে কথা বলবো। এবং তোমরা তোমাদের দ্বীন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে, যেমন কোনো মহিলা তার লজ্জাস্থান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এমনকি লঞ্ছনা থেকেও নিষেধ করতে পারবেনা। আর যখন ইরাক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া জমিনের পার্শ্বে দুই নদীর মধ্যবর্তী স্থানে একটি শহর প্রতিষ্ঠা করা হয় তখনই দুহ্ইামার ফেৎনা প্রকাশ পাবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৬৮ ]
বকর ইবনে আব্দুল্লাহ রহঃ থেকে বর্ণিত, ইউসুফ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম একদিন মরওয়ান ইবনে হাকামের ঘরের পার্শ্ব দিয়ে যাচ্ছিলেন, অতঃপর তিনি বললেন,উম্মতে মুহাম্মদিয়ার ধ্বংস মূলতঃ এই ঘর থেকে প্রকাশ পাবে। এভাবে চলতে থাকবে খোরাসানের পক্ষ থেকে কালো পতাকাবাহী সৈন্যবাহিনীর আত্ম প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৬৯ ]
হযরত কা’ব রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,বনু আব্বাছের পক্ষে কালো ঝান্ডাবাহী সৈন্যের আত্মপ্রকাশ করে শাম দেশে ছাউনি ফেলবে এবং তাদের হাতে আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক অত্যাচারী এবং শত্রুদেরকে হত্যা করাবেন। যাদেরকে পঁয়তাল্লিশ দিন পর্যন্ত আটকে রাখবে সেখানে সত্তর হাজারের বিশাল এক বাহিনী প্রবেশ করে। যাদের লক্ষণ হবে, আমিত, আমিত। এরপর ধীরে ধীরে যুদ্ধ বন্ধ হতে থাকে। তাদের রাজত্ব সাত কিংবা নয় বৎসর স্থায়ী থাকবে.এভাবে চলতে চলতে তিয়াত্তর বৎসর পর তাদের হাত থেকে ক্ষমতা চলে যাবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৭০ ]
হযরত আব্দুল্লাহ ইব্নে আবুল আশআছ আল-লাইসী রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বনু আব্বাছের সাহায্যে দুই ধরনের ঝান্ডা আত্মপ্রকাশ করবে,যার প্রথমটির শুরু সাহায্য সম্বলিত এবং দ্বিতীয় হলো, শাস্তি, তোমরা তাদেরকে কোনো অবস্থাতেই সাহায্য করবেনা, আল্লাহ তাআলাও তাদেরকে সাহায্য করবেননা। দ্বিতীয়টির শুরু হবে শাস্তি এবং শেষ হচ্ছে, কুফরীর মাধ্যমে। সে হিসেবে তাদের কখনো সাহায্য করবেনা এবং আল্লাহ তাআলাও সাহায্য করা থেকে বিরত থাকবেন।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৭১ ]
সাঈদ ইবনে যুরআ রহঃ বলেন, আমি নউফ বুকালীকে বলতে শুনেছি, তিনি তার ছাত্রদেরকে বলেন, এই বৎসর দিমাশ্কে প্রকাশ পাবে মুছে যাওয়া, একত্রিত হওয়া এবং জটলা পাকানো। তাদের খুন হওয়া লোকদেরকে দ্রুত গতিতে বের করে আনা হবে এবং তাদের নারীদের পেট ফেঁড়ে ফেলা হবে। এ মর্মে হযরত কা’ব রহঃ বলেন, অতিসত্ত্বর এধরনের মানুষ দুই দলে বিভক্ত হয়ে পূর্বদিক থেকে আত্মপ্রকাশ করবে। তাদের সাথে কালো পতাকা থাকবে, যাতে লেখা থাকবে তোমাদের অঙ্গীকার, তোমাদের বাইয়াত আমরা অবশ্যই পূর্ণ করবো, অতঃপর আমরা সেখানে অবস্থান গ্রহণ করব। এরপর তারা এসে হিম্স এবং উপকুলের পার্শ্বে একটি গীর্জার মধ্যবর্তী স্থানে ছাউনি ফেলবে। তাদের বিরুদ্ধে আরেক কাফেলা এগিয়ে যাবে এবং তাদেরকে সমূলে উৎখাত করবে। এরপর তারা দিমাশকের দিকে এগিয়ে যাবে এবং সেটাকেও পুরোপুরি জয় করবে। তাদের নিদর্শন হবে, ‘আকবিল,আকবিল’ অর্থাৎ বক্শ বক্শ। তাদের অন্তর থেকে দয়ামায়া উঠিয়ে নেয়া হবে। অবশ্যই এটা হবে দিনের তৃতীয় প্রহরে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৭২ ]
হযরত আলী ইব্নে আবু তালের রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন তোমরা কালো পতাকা বিশিষ্ট বাহিনী দেখতে পাবে তখন তোমরা মাটিকে আকড়ে ধরে থাকবে, হাত-পা নাড়া চড়া করা যাবেনা। একপর্যায়ে দুর্বল জাতিরা জয়লাভ করবে। লোহার ধাতব্য অংশের ন্যায় তাদের অন্তরে কোনো রেখাপাত হবেনা। তারাই হবে ক্ষমতাসীন। যারা কোনো ওয়াদা, অঙ্গীকার পূরন করবেনা। তারা মানুষকে হক্বের দিকে আহবান জানালেও তাদের মাঝে হক্বের লেশমাত্র থাকবেনা। তাদের নাম হবে উপনাম বিশিষ্ট, নিসবত হবে গ্রামের দিকে, তাদের জ্ঞান-বুদ্ধি নারীদের জ্ঞান-বুদ্ধির ন্যায় দুর্বল হবে। এক সময় তারা পরস্পরের সাথে সংঘাতে লিপ্ত হবে। এরপর যাকে ইচ্ছা, আল্লাহ তাআলা তাকে বিজয়ী করবেন।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৭৩ ]
হযরত আব্দুল্লাহ ইব্নে মাসউদ রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি এরশাদ করেন, জাযিরার দিক থেকে জনৈক লোক আত্মপ্রকাশ করবে এবং মানুষদেরকে মারাত্মকভাবে পাড়াতে থাকবে ও রক্তপাত করবে। এরপর খোরাসান থেকে আরেকজন লোক বনু হাশেমের তার ভাইকে হত্যা করার পর আগমন করবে। যার নাম হবে আব্দুল্লাহ। সে দীর্ঘ চল্লিশ বৎসর পর্যন্ত ক্ষমতাসীন থাকবে। সে মারা যাওয়ার পর তার পরিবারের দুই জনের মাঝে মারাত্মক মতবিরোধ দেখা দিবে। তাদের উভয়ের নাম হবে একধরনের। এদের মধ্যে ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হলে খলীফার এক নিকটআত্মীয় জয়লাভ করবে। অতঃপর বনুল আসকাবের মাঝে আলামত দেখা দিবে এবং ফিঁতা বিশিষ্ট এক তারকা উদিত হবে। ফলে তাদের হাত থেকে রাজত্ব এমনভাবে চলে যাবে, কখনো তারা আর ক্ষমতাসীন হতে পারবেনা।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৭৪ ]
হযরত কা’ব রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আহলে শামের সবচেয়ে নেককার লোক হচ্ছে, আহলে হিম্সের কালোঝান্ডা বিশিষ্ট বাহিনী, আর সবচেয়ে নিকৃষ্ট হচ্ছে, দিমাশ্কবাসী।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৭৫ ]
হযরত হাফ্সা রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন তোমরা শুনতে পাবে,মাশরিকের দিকথেকে একটি কাফেলা এগিয়ে আসছে, যাদের অবস্থা দেখে লোকজন আশ্চর্য্য হয়ে যাবে, তখনই কিয়ামতের সময় অনেক ঘনিয়ে আসবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৭৬ ]
বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আবু হুরায়রা রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা তার অসুস্থতার কথা শুনে তাকে দেখতে এসেছি। তার সম্মুখে হযরত মুআবিয়া রাযিঃ এর কথা বললে, তিনি রাগান্বিত হয়ে কঠোর ভাষা ব্যবহার করলেন। অতঃপর আবু হুরায়রা রাযিঃ হোসাইন ইবনে আলী রাযিঃ কে বললেন, তিনি যেন তোমার উপর বড়ত্ব দেখাতে না পারে। কসম সেই সত্ত্বার যার হাতে আমার প্রাণ! যদি দুনিয়ার আয়ু মাত্র একদিন বাকি থাকে, আল্লাহ তাআলা সেই দিনকে দীর্ঘায়িত করে বনু হাশেমের জন্য খেলাফত কায়েম করাবেন।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৭৭ ]
হযরত রাশেদ ইব্নে দাউদ সানআনী রহঃ তার সনদের সাথে বর্ণনা করেন, তিনি এরশাদ করেন, বনু উমাইয়ার খেলাফত বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার পর একজন রাখালের আত্মপ্রকাশ হবে। পৃথিবীর সকলে তার কাছে এসে জমায়েত হবে। তাদের কারণে আল্লাহ তাআলা এই উম্মতকে আবার দিবেন।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৭৮ ]
সাঈদ ইবনে মুরছিদ আবুল আলিয়া রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি এরশাদ করেন, আমি শুরাহবীল ইবনে যি হেমাযাহর সাথে ইবনুল আ’সালের বাড়ির পার্শ্বে বসা ছিলাম, হঠাৎ খুবই বয়স্ক এক শেখ লাঠির উপর ভর করে আগমন করেন, যার চোখের উপরের অংশ চোখের উপর এসে পড়েছে। উক্ত শেখকে আহবান জানালে তিনি এসে বসলেন। তাকে বলা হলো আপনার কতটুকু স্মরণ হয়? জবাবে তিনি বলেন, কতক অশ্বরোহীকে আমি বিক্ষিপ্তভাবে বসে থাকতে দেখছি। তারা পরস্পর বলছে যে, অতি সত্ত্বর এ ভূখন্ডে মুসলমানরা জয়লাভ করবে। তাদের জন্য আল্লাহ তাআলা জলভাগ এবং স্থলভাগের ধনভান্ডার উম্মোচন করে দিবেন। তাদের লম্বা চুল, দীর্ঘ বল্লম এবং দামী পোশাক দ্বারা সকলের পরিচয় লাভ করা যাবে। তাদের সর্বশেষ বাদশাহকে স্বজনপ্রীতির কারণে হত্যা করা হবে। তাদের দস্তর খানায় টাকা পয়সা এবং বিভিন্ন প্রকারের খাবার রাখা হলেও সেগুলো দ্বারা তারা তৃপ্ত হতে পারবেনা।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৭৯ ]
বিশিষ্ট সাহাবী হযরত হুজাইফা ইবনুল ইয়ামান রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, পূর্বদিক থেকে জনৈক লোক আত্মপ্রকাশ করে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর পরিবারের প্রতি আহবান জানাবে। অথচ সে আত্মীয়তার দিক দিয়ে অনেক দূরের হবে। ঐ সময় কালো ঝান্ডার লক্ষণসমূহ প্রকাশ পেতে থাকবে। তারা প্রাথমিক অবস্থায় সাহায্যপ্রাপ্ত হলেও পরবর্তীতে কুফরীর দিকে ধাবিত হবে। আরবের নি¤œ শ্রেণীর লোকজন, অনারব, পলায়নকৃত গোলাম এবং বাহিরের আশ্রয় নেয়া লোকজন তার অনুসরন করবে। তাদের আলামত হচ্ছে কালো, দ্বীন হচ্ছে, শিরক করা এবং তাদের অধিকাংশ হবে খৎনা বিহীন। এরপর হুজায়ফা রাযিঃ ইবনে ওমর রাযিঃ কে বললেন, হে আবু আব্দুর রহমান! উক্ত ফেৎনা কিন্তু তোমাকে গ্রাস করবেনা। জবাবে আব্দুল্লাহ বললেন, তবে আমি আমার পরবর্তীদের জন্য সেগুলো বর্ণনা করে যাব। তিনি বলেন, তারা সবকিছু ধ্বংস করে দিবে, দ্বীনকে হলক করবে অর্থাৎ, ধ্বংস করবে। যাদের দ্বারা আক্রান্ত হয়ে অর্জিনিয়াল আরব, নেককার অনারব, সম্পদশালী, কোকাহাযে //কেরাম সকলে ধ্বংস হয়ে পড়বে। ধীরে ধীরে সবকিছু নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৮০ ]
হযরত হাসান ইব্নে মুহাম্মদ ইবনে আলী রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বনু উমাইয়া উচ্চ শিখরে উন্নীত হতে থাকবে। এক পর্যায়ে পূর্ব দিকে থেকে কালো ঝান্ডার অধিকারী বাহিনী আত্মপ্রকাশ করবে। এবং তাদেরকে গনহারে হত্যা করে রাজত্ব ছিনিয়ে নিবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৮১ ]
হযরত হাসান এবং মুহাম্মদ ইবনে সীরিন রহঃ থেকে বর্ণিত, তারা উভয়জন বলেন, খোরাসানের দিক থেকে কালো ঝান্ডার অধিকারী বিশাল বাহিনী আগমন করবে। এবং বিজয়ী হতে থাকবে। এভাবে চলতে চলতে খোরাসানে গিয়ে আবারো তাদের রাজত্ব নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৮২ ]
হযরত আব্দুল্লাহ ইব্নে জারীন রহঃ হযরত আলী রাযিঃ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, তাদের ধ্বংস হবে মূলতঃ যেখান থেকে তাদের আবির্ভাব হয়েছিল।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৮৩ ]
হযরত আবু হুরায়রা রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেছেন, খোরাসান থেকে কালো ঝান্ডার অধিকারী বিশাল বাহিনীর আগমন ঘটবে। কেউ তাদের মোকাবেলা করতে পারবেনা। তাদের রাজত্ব বায়তুল মোকাদ্দাস পর্যন্ত হবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৮৪ ]
হযরত কা’ব রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সে দিন বেশী দূরে নয় ইরাকবাসীকে চামড়া ঘষার ন্যায় ঘষে ফেলা হবে, শাম দেশকে এমন কষ্টে ফেলা হবে যেমন চুল উপরানোর সময় কষ্ট হয়। মিশরবাসীদের এমনভাবে ফুলানো হবে যেমন, টোসা ইত্যাদি ফুলে যায়। আর তখনই খোদা প্রদত্ব সিদ্ধান্ত এসে পৌঁছবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৮৫ ]