রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যমযমের পানি দাঁড়িয়ে পান করেছেন তাই আমরাও দাঁড়িয়ে পান করি। এক আলেম হজ্ব করে যমযমের পানি নিয়ে এলে আমরা তা দাঁড়িয়ে পান করলাম। তখন তিনি ধমক দিয়ে বসিয়ে দেন এবং বলেন, আল্লাহর রাসূল ভীড় থাকার কারণে যমযমের পানি দাঁড়িয়ে পান করেছেন। তাই ভীড় থাকলে যমযমের পানি দাঁড়িয়ে পান করা জায়েয অন্যথায় জায়েয নেই।
জানার বিষয় হল, যমযমের পানি পান করার সুন্নত তরীকা কী? দয়া করে জানালে উপকৃত হব।
যমযম পানি সাধারণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে-বসে দুভাবেই পান করা জায়েয। ভীড় না থাকলে দাঁড়িয়ে পান করা জায়েয নেই-প্রশ্নের এ কথা ঠিক নয়। ভীড় ছাড়াও যমযম পানি দাঁড়িয়ে পান করা যে জায়েয আছে এ সম্পর্কে ফিকহ-ফাতাওয়ার অনেক কিতাবে এবং হাদীসের শরাহগ্রন্থসমূহে উল্লেখ আছে। যেমন আলমুহীতুল বুরহানী ১/১৭৯; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৫; শরহুল মুনইয়াহ ৩৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৪৪; উমদাতুল কারী ৯/২৭৮; মিরকাতুল মাফাতীহ ৮/১৬৫-১৬৬
উপরন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যমযম পানি দাঁড়িয়ে পান করেছেন-এ হাদীসের ভিত্তিতে বহু ফকীহ ও মুহাদ্দিস যমযম পানি দাঁড়িয়ে পান করাকে উত্তম ও আদব বলেছেন। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন শামসুল আইম্মা হালওয়ানী রাহ., শাইখুল ইসলাম খাহারযাদা রাহ. (আলমুহীতুল বুরহানী ১/১৭৯), ইবরাহীম হালাবী রাহ. (শরহুল মুনইয়াহ ৩৬), মোল্লা আলী কারী রাহ. (শরহুশ শামায়েল ১/২৫০), সহ প্রমুখ ফকীহ ও হাদীসবিশারদ।
আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মূলত ভীড়ের কারণেই যমযম দাঁড়িয়ে পান করেছেন এটি কোনো সুনিশ্চিত ও চূড়ান্ত কথা নয় এবং তা হাদীস ও আছার দ্বারা প্রমাণিতও নয়; বরং ফিকহ ও হাদীসবিশারদগণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দাঁড়িয়ে যমযম পান করার সম্ভাব্য কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছেন। তন্মধ্যে একটি ভীড়ের কারণকেও উল্লেখ করেছেন। তারা আরো যে সমস্ত কারণকে উল্লেখ করে থাকেন তা হল,
১. যমযম পানি দাঁড়িয়ে পান করাও যে জায়েয তা বুঝানোর জন্য।
২. বসার যথাযথ ব্যবস্থা না থাকা অর্থাৎ পান করার স্থানটি ভেজা বা স্যঁতস্যঁতে হওয়ার কারণে তিনি দাঁড়িয়ে পান করেছেন।
সুতরাং এ সব কারণের মধ্যে শুধু একটিকে গ্রহণ করে বাকিগুলোকে এড়িয়ে যাওয়া আদৌ ঠিক নয়।