দেখাশুনার দায়িত্ব আবু লুবাবা বশীর ইবন আবদুল মুনযির-এর উপর ন্যস্ত করেন ৷
ইবন ইসহাক বলেনঃ রাসুলুল্লাহ্ (সা) সম্মুখে অগ্রসর হয়ে কারকারাতুল কিদর পর্যন্ত পৌছে
জানতে পারলেন আবু সফিয়ান ও তার সৈন্যরা পালিয়ে গেছে তাই তিনি সেখান থেকে
মদীনায় ফিরে যান ৷ মুসলমানরা সেখানে মু শরিকদের ফেলে যাওয়া প্রচুর রসদ সম্পদ লাভ
করেন ৷ মুশরিকরা তাদের বোঝা হালকা করার জন্যে এগুলো ফেলে যায় ৷ প্রাপ্ত মড়ালের মধ্যে
বেশীর ভাগ ছিল ছাতৃ ৷ এ কারণে এই যুদ্ধকে ছাত্র যুদ্ধ বা সাবীক যুদ্ধ বলা হয় ৷ মুসলিম
সেনাগণ বলেছিল ইয়া রাসুলাল্লাহ্ ৷ আমরা কি এটাকে জিহাদ হিসেবে গণ্য করতে পারি ?
তিনি বললেন, ছুক্লড়া ৷ ইবন ইসহাক বলেন : আবু সুফিয়ান এই অভিযান সম্পর্কে এবং সাল্লাম
ইবন মিশকামের প্রশংসায় নিম্নোক্ত কবিতা আবৃত্তি করে :
অর্থ ষ্ক মদীনায় বন্ধুতু স্থাপনের জন্যে আমি একজন লোককে বাছাই করেছি এবং এতে
আমি লজ্জিত বা নিন্দিত হইনি ৷
সাল্লাম ইবন মিশকাম আমাকে মুল্যবান লাল ও কাল মদ তৃপ্তি সহকারে পান করার অথচ
তখন আমি খুবই ব্যস্ত ছিলাম ৷
যখন তাকে সৈন্য দলের নেতৃতু প্রদান করা হলো তখন আমি বললাম সম্মান ও গনীমতের
সুসংবাদ গ্রহণ কর ৷ এর দ্বারা তাকে আমি বিব্রত করতে চাচ্ছিলাম না ৷ ভালভাবে চিন্তা করে
অগ্রসর হও ৷ কেননা, এ সম্প্রদায় কিন্তু নির্ভেজাল লুআই বংশের লোক ৷ জুরহুম থেকে বিচ্ছিন্ন
হয়ে যাওয়া লোক এরা নয় ৷
ইবন মিশকামের সাথে আমার সাক্ষাত কোন এক আরােহীর রাত্রের সামান্য বিরতিকালের
অবস্থানের মত ছিল, যে নেহাত অসহড়ায়ের সাহায্যের উদ্দেশ্যেই এসেছে ৷ বন্ধুত্বের কারণে নয় ৷
হযরত আলী ও ফাতিমার বিবাহ
ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম যুহ্রীর বরাতে আলী (যা) থেকে বর্ণনা করেন যে, হিজরী
২য সালে তিনি ফাতিমাকে সহধর্মিণী রুপে নিজ ঘরে তুলে আনেন ৷ এ প্রসঙ্গে হযরত আলী
(রা) বলেন : বদর যুদ্ধের গনীমত থেকে আমার অংশে একটি উট পাই ৷ ঐ দিন নবী করীম
(সা) ফায়’ থেকে প্রাপ্ত এক-পঞ্চমাংশ থেকে আরও একটি উট আমাকে প্রদান করেন ৷ এরপর
যখন আমি নবী দৃহিতা ফাতিমাকে ত্রী রুপে নিজ ঘরে তোলার সংকল্প করলাম, তখন বনু
কায়নুকার এক ইয়াহ্রদী স্বর্ণকারকে ঠিক করলাম যে, তাকে নিয়ে ইযখির ঘাস সংগ্রহ করবো
এবং পরে তা স্বর্ণকারদের নিকট বিক্রি করে প্রাপ্ত অর্থ আমার বিবাহের ওলীমায় খরচ করবো ৷
এ উদ্দেশ্যে যাত্রাকালে আমি আমার উট দৃটোর জন্যে গদি, বস্তা ও রশির ব্যবস্থা করছিলাম ৷
উট দুটোকে আমি জনৈক আনসারীর বাড়ীর পার্শে বসিয়ে রাখি ৷ আমার যা কিছু সংগ্রহ করার
তা সংগ্রহ করে নিয়ে এসে দেখলাম, উট দৃটোর কুজ কেটে ফেলা হয়েছে এবং উভয় উটের
বক্ষ বিদীর্ণ করে কলিজা খুলে নেয়া হয়েছে ৷ এ দৃশ্য দেখে আমি আমার অশ্রু সংবরণ করতে
পারলাম না ৷ আমি নিকটস্থ সোকদেরকে জিজ্ঞেস করলাম, এ কাজ কে করেছে ? তারা জানলে,
আবদুল মুত্তালিবের পুত্র হামযা এ কাজ করেছেন ৷ এখন তিনি এ ঘরের মধ্যে আনসারদের কিছু
মদ্যপায়ীদের সাথে মদপান করছেন ৷ সেখানে তার সাথে আছে তার গায়িকা দাসী ও কতিপয়
সঙ্গী-সাথী ৷ গায়িকাটি গানের ছন্দে বলেছিল, “ ওহে হামযা ! মোটাতাজা ট্ষ্ট্রদ্বয়ের উপর ঝাপিয়ে
পড় ৷” এ কথা শুনে হামযা তলোয়ার হাতে উট দৃটোর উপর ঝাপিয়ে পড়ে ওগুলাের কুজ কেটে
নিলেন আর তাদের তখন পেট চিরে কলিজা বের করে নিয়ে আসলেন ৷ হযরত আলী বলেন
আমি তখন নবী করীম (না)-এর নিকট চলে গেলাম ৷ তখন তার কাছে যায়দ ইবন হারিছা
উপস্থিত ছিল ৷ আমাকে দেখেই তিনি বুঝতে পারলেন যে, আমি কোন সমস্যার সম্মুখীন
হয়েছি ৷ তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কী :হয়েছে ? আমি বললড়াম, ইয়া রাসুলাল্লাহ্ !
আজকের ন্যায় বেদনাদায়ক ঘটনার সম্মুখীন আমি কখনও হইনি ৷ হামযা আমার উট দুটোর
উপর জুলুম করেছেন ৷ তিনি উট দুটির কৃজও পেট কেটে ফেলেছেন ৷ এখন তিনি ঐ ঘরের
মধ্যে একদল মদ্যপায়ীর সাথে অবস্থান করছেন ৷ তখন নবী করীম (না) তার চড়াদরখানা চেয়ে
নিলেন এবং তা গয়ে দিয়ে সেদিকে রওনা হলেন ৷ আর আমি ও যায়দ ইবন হারিছা তাকে
অনুসরণ করে চললাম ৷ হেটে হেটে তিনি ঐ ঘরের কাছে গিয়ে পৌছলেন যে ঘরে হামযা
অবস্থান করছিলেন ৷ তিনি অনুমতি চইিলেন ৷ অনুমতি পেয়ে ভিতরে প্রবেশ করে তিনি
হামযাকে তার কৃতকর্মের জন্যে ভব্লুসনা করতে লাগলেন ৷ হামযা তখন নেশআেস্ত ৷ চোখ দুটো
লাল ৷ তিনি নবী করীমের প্রতি দৃষ্টিপাত করলেন ৷ তারপর দৃষ্টি উপরে উঠিয়ে তার হীর্টুর দিকে
তাকালেন ৷ এরপর দৃষ্টি আরও উপরে উঠিয়ে তার চেহারার দিকে তাকালেন এবং বললেন,
তোমরা তাে আমার পিতার গোলাম ৷ একথা শুনে নবী করীম (সা) বুঝবেন যে, হামযা এখন
ণ্নশাগ্রস্ত ৷ তইি তিনি পেছনের দিকে হেটে সেখান থেকে বেরিয়ে পড়লেন ৷ আর আমরাও তার
সাথে বেরিয়ে আসলাম ৷
ইমাম বুখারী কিতড়াবুল মাগাযীতে ঘটনাটি এ ভাবে বর্ণনা করেছেন ৷ মাগাযী ছাড়া বুখারী
শরীফে আরও বহু স্থানে বিভিন্ন শব্দমালায় এ ঘটনার বর্ণনা আছে ৷ এ থেকে প্রমাণিত হয় যে
বদর যুদ্ধের গনীমত থেকে খুমুস বা পঞ্চমাংশ বের করা হয়েছিল ৷ কিন্তু আবু উবায়দ কাসিম
ইবন সাল্লাম কিতাবুল অড়ামওয়াল গ্রন্থে বলেছেন যে, বদর যুদ্ধের গনীমত বণ্টনের্ পর খুমুসের
বিধান অবতীর্ণ হয় ৷ তবে অনেবেইি এ মতের বিরোধিতা করেছেন ৷ যেমন ইমাম বুখারী, ইবন
জারীর প্রমুখ ৷ আমরা তাফসীর গ্রন্থে এবং এই কিতড়াবেও ইতােপুর্বে এ মতটি যে ভুল তা
বিস্তারিত আলোচনা করেছি ৷ এ ঘটনায় হামযা ও তার সঙ্গীদের মদ্যপান প্রশ্নে বলা হয়েছে যে,
তখনও মদ্যপান নিষিদ্ধ হয়নি ৷ তদুপরি হযরত হামযা (রা) উহুদ যুদ্ধে শাহাদতবরণ করেন ৷
আর মদ্যপান নিষিদ্ধ হয় উহদ যুদ্ধের পরে ৷ এ হাদীছ থেকে দলীল গ্রহণ করে আলিমগণ
বলেছেন যে, নেশাগ্রস্ত লোকের জ্ঞান রহিত হয়ে যায়শ্ এ কারণে তালাক১ ম্বীকারােতি ও
অন্যান্য ক্ষেত্রে তার কথা অগ্রাহ্য করা হয় ৷ ফিক্হশাত্রে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত রয়েছে ৷ ইমাম
আহমদ (র) সুফিয়ানের বরাতে আলী (রা) থেকে বর্ণনা করেন ৷ আলী (রা) বলেন, আমি
রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর কন্যাকে বিবাহ করার জন্যে তড়াকে প্রস্তাব দেয়ার সংকল্প করলাম ৷ কিন্তু
মনে মনে ভাবলাম আমার তো কোন অর্থ-সম্পদ নেই ৷ কিছু দিন পর পুনরায় সংকল্প করশাম
এবং তার নিকট এসে প্রস্তাব দিলাম ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কাছে
কোন অর্থ-সম্পদ আছে কি ৷ আমি বললাম, সেই ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, আমি তোমাকে ঐ
দিন যে খিতমী বর্মঢি দিয়েছিলাম তা কোথায় ৷ আমি বললাম, সেটি তো আমার কাছেই আছে ৷
তিনি বললেন, আমার নিকট নিয়ে এসো ৷ এরপর আমি সে বর্মঢি রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর নিকট
পৌছিয়ে দিলাম ৷ ইমাম আহমদ তার ম্মুসনাদ’ গ্রন্থে এ ভাবেই বর্ণনা করেছেন ৷ তবে এর
সনদের মধ্যে একজন অজ্ঞাত পরিচয় বর্ণনাকারী রয়েছেন ৷ আবু দাউদ ইসহাক ইবন ইসমাটলে
সুত্রে ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেনঃ হযরত ফাতিমার সাথে আলীর বিবাহ হয়ে
গেলে রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেনঃ ফাতিমাকে (মহর হিসেবে) কিছু দাও ! আলী (রা) বললেন,
আমার কাছে দেয়ার মত কিছুই নেই ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, তোমার খিতমী বর্মটি কোথায় ৷
এ হাদীছ ইমাম নাসাঈ হারুন ইবন ইসহাক সুত্রে আইয়ুব সাখতিয়ানী থেকে অনুরুপ বর্ণনা
করেছেন ৷ ইমাম আবু দাউদ কাহীর ইবন উবায়দ হিমসী সুত্রে জনৈক সাহাবী থেকে বর্ণনা
করেন যে, হযরত আলীর সাথে ফাতিমার বিবাহ হয়ে যাওয়ার পর আলী তাকে বাসর বয়ে নিয়ে
আসতে মনস্থ করেন ৷ কিত্তু ফাতিমাকে কিছু না দেয়া পর্যন্ত রাসুলুল্পাহ্ তা করতে নিষেধ
করেন ৷ আলী বললেন, ইয়া রাসুলাল্পাহ৷ আমার কাছে তো তেমন কিছুই নেই ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)
বললেন, তোমার বর্মঢি দিয়ে দাও ৷ এরপর আলী তার বর্মঢি ফাতিমাকে প্রদান করার পর বাসর
ঘরে যান ৷
ইমাম বায়হাকী তার দালাইল’ গ্রন্থে আবু আবদুল্লাহ হাফিয-এর মাধ্যমে মুজাহিদ সুত্রে
আলী (রা) থেকে বর্ণনা করেন ৷ হযরত আলী (রা) বলেন : রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর নিকট ফাতিমা
বিবাহের প্রস্তাব আসে ৷ তখন আমার এক দাসী আমাকে বলল, আপনি কি জানেন রাসুলুল্পাহ্র
কাছে ফাতিমার বিবাহের প্রস্তাব এসেছে ৷ আমি বললাম , তা তো আমি না ৷ দসী বলল, হ্যা তার
সম্পর্কে প্রস্তাব এসেছে ৷ আপনি কেনো রাসুলুল্লাহ্র নিকট যাচ্ছেন না ৷ আপনি গেলে তিনি
আপনার সাথেই ফাতিমাকে বিবাহ দিবেন ৷ আমি বললাম, আমার কাছে তো তেমন কিছুই
নেই, যা দিয়ে বিবাহ করতে পারি ৷ দাসী বললো, আপনি ণ্গলে রাসুলুল্লাহ্ (সা) আপনার সাথে
তাকে বিবাহ দিবেন ৷ হযরত আলী বলেন, দাসীর বারবার অনুরোধে অবশেষে আমি রাসুলুল্লাহ্
(সা)-এর নিকট গেলাম ৷ কিত্তু যখন তার সম্মুখে গিয়ে বসলাম, তখন আমি নির্বাক হয়ে
গেলাম ৷ আল্লাহর কসম ! তার প্রভাব ও ভয়ে আমি কোন কথাই বলতে পারলাম না ৷ রাসুলুল্লাহ্
(সা) তখন আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কেন এসেছ, তোমার কোন প্রয়োজন আছে কি ৷
আমি চুপচাপ বসে থাকলাম ৷ এরপর তিনি বললেন, সম্ভবত তুমি ফাতিমাকে বিবাহের প্রস্তাব
দেয়ার জন্যে এসেছ৷ আমি বললাম, জী ছুব্রুড়া ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, তোমার কাছে কোন
মাল আছে যা মহরানা হিসেবে প্রদান করে তাকে হালাল করে নেবে ৷ আমি বললাম ইয়া
রাসুলাল্লাহ্ ৷ আল্পাহ্র কলম! আমার কাছে সে রকম কিছুই সেই ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন,
যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে তোমাকে আমি যে বর্মটি দিয়েছিলাম, তা কী করেছ ৷ কসম আল্লাহর ৷ সেই
খিতামী বর্মটির মুল্য হবে চার দিরহাম ৷ আমি বললাম, সে বর্মটি আমার নিকট আছে ৷ এরপর
১ হানাফী মাযহাব অনুসারে ণ্নশথেস্ত ব্যক্তির তসােকও কার্যকরী হয়ে যায় ৷ -সম্পাদকদ্বয়
রাসুলুল্লাহ্ (সা) ফাতিমাকে আমার সাথে বিবাহ দিলেন এবং বললেন, বর্মটি তার নিকট পাঠিয়ে
দাও ৷ এতে যে তোমার জন্যে হালাল হয়ে যাবে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর কন্যা ফাতিমার বিবাহের
এটাই ছিল দেনমহর ৷
ইবন ইসহড়াক বলেন, হযরত আলীর ঔরসে ফাতিমার গর্ভে তিন পুত্র ও দুই কন্যা সন্তান
জন্মগ্রহণ করেন ৷ পুত্রত্রয় হচ্ছেন হাসান, হুসাইন ও মুহ্সিন ৷ কিন্তু যুহ্সিন শিশুকালেই ইন্তিকাল
করেন ৷ আর কন্যাদ্বয় হলেন উম্মে কুলছুম ও যয়নব ৷ বায়হাকী আতা ইবন সাইব সুত্রে আলী
থেকে বর্ণনা করেন : রাসুলুল্লাহ্ (সা) ফতিমাকে বিরাহােত্তর বিদায়কালে উপচৌকন হিসেবে
একটি পশমী চাদর, একটি পানির মশক ও ইযখির ঘাসভর্তি একটি চামড়ার বালিশ প্রদান
করেন ৷ ইমাম বায়হাকী আবু আবদুল্লাহ ইবন মানদা রচিত কিতাবুল মাআরিফা’ থেকে উদৃধতি
দিয়ে বর্ণনা করেছেন যে, হযরত আলী ফাতিমাকে বিবাহ করেন হিজরী প্রথম সালের পর এবং
ঘরে তুলে আনেন তার পরবর্তী সালে ৷
বায়হাকীর বর্ণনা মতে, ফতিমার সাথে আলীর বাসর হয় তৃতীয় হিজরীর প্রথম দিকে ৷ কিন্তু
উপরোল্লিখিত উষ্ট্ৰদ্বয়ের ঘটনা থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় যে, বদর যুদ্ধের অল্প দিন পরেই বাসর
হয় এবং সে হিসেবে ২য় হিজরীর শেষ দিকেই হওয়া প্রমাণিত হয় ৷
অনুশ্নেদ
হিজরী দ্বিতীয় সালে সংঘটিত কয়েকটি ঘটনা
(১) উন্মুল মু’মিনীন হযরত আইশার সাথে রাসুলে করীমের বিবাহের বিস্তারিত বর্ণনা
আমরা ইতােপুর্বে দিয়ে এসেছি ৷ (২) এবং ঐ বছরে সংঘটিত প্রসিদ্ধ যুদ্ধসমুহের উল্লেখ
ইভােপুর্বে করা হয়েছে এবং সে প্রসঙ্গে মুমিন ও মুশরিকদের খ্যাতনামা ব্যক্তিদের মধ্যে যারা
মৃত্যুবরণ করেছিলেন, তাদের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে ৷ যেমন বদর যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর
আনসার ও মুহাজিরদের মধ্য থেকে মোট চৌদ্দ জন শহীদ হন ৷ অন্যদিকে কুরায়শ মুশরিক
বাহিনীর সত্তরজন নিহত হয় ৷ (৩) বদর যুদ্ধের অল্প কিছুদিন পর আবু লাহাব আবদুল উষ্যা
ইবন আবদুল ঘুত্তালিবের মৃত্যু হয় ৷ (৪ ) বদর যুদ্ধে মুশরিকদের শোচনীয় পরাজয় ও মু’মিনদের
মহাবিজয়ের সুসংবাদ নিয়ে যায়দ ইবন হারিছা ও আবদুল্লাহ ইবন রাওয়াহা যখন মদীনায়
পৌছেন, তখন তারা দেখেন যে, রাসুলুল্পাহ্ (সা)-এর কন্যা রুকাইয়া ইনতিকাল করেছেন এবং
তার দাফন কাজও সম্পন্ন হয়েছে ৷ অসুস্থ রুকাইয়াকে দেখাশুনা করার জন্যে রাসুলুল্লাহ্র
নির্দেশক্রমে তার স্বামী হযরত উছমান ইবন আফফান মদীনায় অবস্থান করছিলেন ৷ এ কারণে
উছমানকে বদরের গনীমতের অংশ প্রদান করা হয় এবং কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাকে পুরস্কার
দান করবেন ৷ (৫) এই বছরে কিবলা পরিবর্তন হয় এবং (৬) মুকীম অর্থাৎ বাড়ীতে
অবস্থানকারীদের সালাতের রাকআত সংখ্য বৃদ্ধি করা হয় ৷ (৭) এই সালে রমাযানেৱ রোযা
ফরয হয় ৷ (৮) এ বছরেই যাকাতের নিসাব নির্ধারণ করা হয় এবং (৯) সাদাকায়ে ফিতরা
ওয়াজিব করা হয় ৷ (১০) এসময়ে মদীনার যুশরিকরা মুসলমানদের নিকট বশ্যতা স্বীকার করে
এবং (১১) মদীনার ইয়াহ্দী সম্প্রদায় যথা বনু কায়নুকা, বনু নবীর, বনু কুরায়যা ও বনু